সামনে দেখা : সাল বিশ হাজার এক
…কিন্তু কোনো গ্যালাক্সিতে যেহেতু তারা মনের চেয়ে দামী কোনোকিছুই পায়নি তাই এর নতুন ভোরকেই সবচে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে, সৃষ্টি করেছে… সব জায়গায়। পরিণত হয়েছে কৃষাণে। তাদের চাষের জমি অনন্ত নক্ষত্রবীথি। কখনো বুনেছে তারার জগতের চারা, কখনো পেয়েছে দারুণ ফসল।
মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে ফসল ফলানো বাদও দিতে হয়েছে, দিতে হয়েছে পুড়িয়ে…
.
এবং গত কয়েক প্রজন্ম ধরে ইউরোপানরা একটু এদিক সেদিক অভিযানের সাহস পায়। তারা চির উজ্জ্বল দিনের প্রান্ত ছেড়ে একটু একটু যেতে পারে রাতের প্রান্তে। সেখানে আজও হয়ত সেই বরফ পাওয়া যাবে যেটা তাদের এক সময় ছেয়ে রেখেছিল। লক্ষ বছর ধরে। এমনকি কেউ কেউ সেখানে থেকেও গেছে; নিচ থেকে উঠে আসা উজ্জ্বল কিন্তু তাপহীন ঠাণ্ডা সূর্য ডুবে যাওয়া আর নানা অজানা ভয়কে জয় করতে।
এর মধ্যেই সেইসব নবীন অভিযাত্রী আবিষ্কার করে বসেছে যে মহাবিশ্ব তাদের কল্পনার চেয়েও অবাক করা। নিপ্রভ সাগরগুলোতে তারা যে স্পর্শকাতর চোখ পেতে রেখেছিল তা ভালই ফল দেয় আজকাল। আকাশে হাজারো নক্ষত্র আর চলন্ত নানা জিনিস দেখা যায় আশপাশে। তারা অ্যাস্ট্রোনমির ভিত গেঁথে দিয়েছে…পুরোহিতরা সব নক্ষত্রকে নাম দিয়েছে একেক দেবতা করে। এমনকি কোনো কোনো দুঃসাহসী তার সাদামাটা জীবনটাকে বয়ে নিয়ে বলে বেড়াচ্ছে যে তাদের এ বিরাট দুনিয়াই সব নয়। আরো হাজার ভুবন আছে কালো আকাশের বুকে।
সাগর থেকে উঠে আসার পর পরই তাদের জগতে বিস্ফোরণের মতো বিবর্তন হয়ে যায়; বরফ গলার সাথে সাথে। আজ তারা দূরের নক্ষত্রদেবদের তিনটা ভিন্ন শ্রেণীতে ফেলতে শিখেছে। সবচে গুরুত্বপূর্ণ হল কাছের সূর্য। কোনো কোনো লোকগাঁথায় পাওয়া যায় যে সূর্যটা সব সময় সেখানে ছিল না। কেউ কেউ এসব বিশ্বাসও করে। এর জন্ম হয়েছে হঠাৎ। প্রাকৃতিকভাবে ধীরে জন্মেও থাকতে পারে। কেউ আত্মবিশ্বাসের সাথে বলে বেড়ায়, হঠাৎ সূর্যটার জন্মের সময় ইউরোপার অনেক অনেক প্রাণী চিরতরে হারিয়ে গেছে। যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাও ভাল। সেই ছোট অনড় নক্ষত্র জীবনদায়িনী।
হয়ত ঠাণ্ডা সূর্য তার ভাই। সে কোনো খারাপ কাজের জন্য শাস্তি পেয়ে থাকতে পারে-তাই হয়ত স্বর্গের দরজা থেকে অনেক দূরে ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে ওকে। আসলে এ ছোট সূর্যটা নিয়ে সাধারণ ইউরোপানের মধ্যে কোনো চিন্তাই নেই। সারাক্ষণ যারা প্রশ্ন করে বেড়ায়, তাদের দেখা যায় এ নিয়ে ভাবতে।
এটা সত্যি, তাদের অন্ধকার অভিযানে ঐ জিনিসগুলো ভালই সাহায্য করে। যারা সেই আঁধার দেশের যাত্রী, তারা একটা দাবী করত সব সময়। কেউ বিশ্বাস করে কেউ করে না। কালো আকাশটা নাকি দূরের সূর্যের মতো আরো অগণিত আলোয় আলোয় ভরা। সেগুলো ঠাণ্ডা সূর্যের চেয়েও অনেক অনেক ছোট দেখায়। একেকজন একেক উজ্জ্বলতা নিয়ে মিটমিট করে। তাদের অবস্থান নির্দিষ্ট।
এ স্থিরচিত্র ছাড়াও তিনটা চলন্ত জিনিস খুবই জটিল হিসাব মেনে মেনে চলে, এত কঠিন হিসাব কেউ বের করতে পারবে না। শুধু বোঝা যায়। আর আকাশের বাকিদের থেকে ত্রিকন্যা অনেক বড়। তারা বাড়ে আবার কমে, কখনো চাকতি, কখনো আধ-চাকতি, আবার কখনো একেবারে চিকণ, বাঁকা…
তারা অবশ্যই মহাবিশ্বের আর সব জিনিসের চেয়ে উজ্জ্বল, আরো আরো কাছে। কারণ তাদের পরিবর্তনশীল পিঠের চিত্র প্রায় স্পষ্ট দেখা যায়।
অবশেষে সবাই মেনে নিয়েছে যে আরো দুনিয়া থাকতে পারে। কিন্তু দু একজন পাগলাটে ছাড়া কেউ মানতে রাজি নয় সেসব বিশ্ব ইউরোপার মতো বড় বা গুরুত্বপূর্ণ। এদের মধ্যে একটার রাতের আকাশ বিরাট বিরাট আঠার মতো লালচে গোলায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, ব্যাপারটাকে ইউরোপানরা বুঝতে পারে না শত চেষ্টা করেও। তাদের পরিবেশে আজো কোনো অক্সিজেন নেই। তাই তারা আগুনকে বুঝতেও পারবে না। মাঝে মাঝে ভিতর থেকে অনেক অনেক কী যেন আসে বেরিয়ে, সেই সূর্যের কাছাকাছি বিশ্বটায়। এটা নিশ্চই থাকার মতো জায়গা নয়। এমনকি ইউরোপার রাতের প্রান্তের চেয়েও খারাপই হবে। তাদের কাছে এক নরক হয়ে দেখা দেয় সেটা।
বাইরের আরো দূরের দু চাকতি একটু শান্ত এলাকা। কিন্তু কিছু কিছু হিসাবে আরো বেশি রহস্যময়। যখন তাদের উপর রাত নেমে আসে তখন আলোর ঝলকানি দেয় দেখা। কিন্তু সেই আলো আরো ভিন্ন, আরো দ্রুত পরিবর্তনশীল। তারা একটা স্থির উজ্জ্বলতায় জ্বলে চলে। চলছে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায়; যদিও প্রজন্মান্তরে সে এলাকা বিবর্তিত হয়।
কিন্তু সবচে অবাক করে সেই ছোট ছোট সূর্যগুলো। মিটমিটে। আলোর আকাশে সেগুলোও মাঝে মাঝে চলন্ত দেখায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজেদের সূর্যের জীবন্ত প্রাণীর আলো হিসাব করে ইউরোপানরা বলে যে মিটমিটে আলোও জীবন্ত প্রাণীর আধার। কিন্তু তাদের সম্ভাব্যতার ভাবনা এ চিন্তাটাকে নাকচ করে দেয়। তার পরও কোনো কোনো পাগলাটে ইউরোপান বিশ্বাস করে যে, সেই সূর্যগুলো, সেই দুনিয়াগুলোতে আছে জীবন।
এ ছাড়াও একটা কঠিন যুক্তি রয়ে যায়। তারা যদি জীবিতই হয়, তো কখনো ইউরোপায় আসে না কেন?
তারপরও লোকগাঁথা চলে। হাজার প্রজন্ম আগে, এ ভূমির বিজয়ের পর সেসব আলোর কোনো কোনোটা অনেক কাছাকাছি এসেছিল। কিন্তু ইউরোপার মাটির মুখ দেখার আগেই বিস্ফোরিত হয়েছে মহাকাশে। অবাক ব্যাপার, কঠিন ধাতুর বৃষ্টি হয়েছে তখন। সেসব দেব-ধাতু-খণ্ডকে আজও পুজো দেয়া হয়।
কিন্তু কোনো কিছুই কালো, লম্বা, বিশাল, একশিলাস্তম্ভের মতো পবিত্র নয়। সেই অকল্প অতীত থেকে সেটা দাঁড়িয়ে আছে একপিঠ সূর্যের দিক দিয়ে। অন্য পিঠটা ইউরোপার আঁধার অংশে ফেরানো। সবচে লম্বা ইউরোপানের চেয়েও দশগুণ বড়, যদি সে তার শুঙ্গকে সবচে বেশি প্রসারিত করে, তবু। এটাই রহস্য আর অনতিক্রম্যতার প্রকাশ। এটাকে কেউ কোনোদিন ছুঁয়ে দেখেনি। শুধু দূর থেকে বন্দনা করা যায়। চারপাশে ছড়িয়ে আছে ক্ষমতার বৃত্ত, যারাই যেতে চেষ্টা করে তাদেরকেই বাধা দেয়।
অনেকের বিশ্বাস এটাই সে ক্ষমতা যা আকাশের সব আলোকে নিয়ন্ত্রণ করে। একবার যদি বিগড়ে যায় তো তারা তাদের মাতৃ সাগর আর উৎস মহাদেশে নেমে মিশে যাবে। তখুনি তাদের উদ্দেশ্য যাবে জানা।
.
ইউরোপানরা হয়ত জেনে অত্যন্ত অবাক হবে, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাবে যে এ কালো মনোলিথকেও সেই মনগুলো নিয়ন্ত্রণ করে যারা ঐ ঘুরতে থাকা আলোর জন্য দায়ী। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তাদের ইচ্ছামতো সেই আলোর চাকতিগুলো নির্দিষ্ট নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছে। সময় আসার আগে মনোলিথ কখনোই যোগাযোগের অনুমতি দেবে না।
সে সময় যখন আসবে… যখন, হয়ত যখন ইউরোপানরা রেডিও আবিষ্কার করবে, সেদিনই তাদের হাতের কাছে অনবরত বিস্ফোরণের শব্দগুলো ধরতে পারে… সেদিন একশিলাস্তম্ভ তার সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে। এটা হয়ত প্রাণীগুলোকে মেশার সুযোগ করে দিবে, নয়ত দিবে না। সেদিন ইউরোপা আর সেই অন্য সযত্ন গ্রহটার প্রাণীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হতেও পারে।
এমন সেতু হয়ত কখনোই সম্ভব না। এই দুই অতি অপরিচিত সচেতনতা পাশাপাশি কখনোই চলতে পারবে না। এমন হলে তাদের যে কোনো এক দল সৌরজগতে রাজত্ব করবে।
কারা করবে তা এখনো কেউ জানে না।
এমনকি জানে না ঈশ্বরেরাও।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
অবশ্যই, আমার প্রথম ধন্যবাদটা স্ট্যানলি কুবরিকের জন্য। তিনি অনেক অনেক দিন আগে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আক্ষরিক অর্থে সার্থক সায়েন্স ফিকশন। মুভির কোনো আইডিয়া আছে কিনা।
তারপর, ধন্যবাদ যাবে আমার বন্ধু এবং এজেন্ট (দুটো একসাথে নয়) স্কট মারডিথের কাছে। মাথা খাটানোর জন্য তার কাছে পাঠিয়েছিলাম মুভির দশ পাতার একটা আউটলাইন। আরো ব্যাপকতার জন্য, আরো নিখুঁত কাজ তুলে আনার জন্য, ইত্যাদি, ইত্যাদি…
আর যাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা বাকী :
সিনর জর্জ লুই ক্যালিক, রিও ডি জেনিরো, যাঁর চিঠি আমাকে এই ঘটনার সিকুয়্যাল তৈরিতে ভীষণভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে। (আর পরে, বছরের পর বছর আমি হয়তো বলেই যাব, বলেই যাব, এ সিকুয়্যেল হবারই কথা)।
প্যাসাডোনার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির সাবেক পরিচালক ড. ব্রুস মারি আর ড. ফ্র্যাঙ্ক জর্ডন ল্যাগ্রেঞ্জ-ওয়ান নির্ণয়ে সহায়তা করেছিলেন। আইও- বৃহস্পতির ল্যাগ্রেঞ্জ। আমি অবশ্য আরো অনেক আগে থেকেই পৃথিবী- চাঁদ ল্যাগ্রেন্স নিয়ে মাতামাতি করতাম (স্টেশনারি অর্বিটস জার্নাল অব দ্য ব্রিটিশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, ডিসেম্বর, ১৯৪৭) কিন্তু আমার পক্ষে আরো লাখো সমীকরণ মেলানো অসম্ভব ছিল, এমনকি আমার হাল জুনিয়র, বিশ্বস্ত এইচ/পি ৯১০০ এ এর সাহায্য নিয়েও করা মুশকিল।
নিউ আমেরিকান লাইব্রেরি ছিল ২০০১: এ স্পেস ওডিসির কপিরাইট অধিকারী। ৫১ নং অধ্যায়ের কথা নিয়েছি তা থেকে (২০০১: এ স্পেস ওডিসির ৩৭ নং অধ্যায়। এমনকি ৩০ এবং ৪০ অধ্যায়েও এর সহায়তা নিতে হয়েছে।
ঊনসত্তুরে হাজার কাজের মাঝে ইউ এস ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের জেনারেল পটার আমাকে এসকট দেখিয়েছিলেন যা পৃথিবীর সবচে বড় গর্তগুলোর অন্যতম।
ওয়েন্ডেল সলোমন্স, রাশিয়ান ভাষা নিয়ে খুব সহায়তা করেছেন (এবং রাশলিস), সময়ে সময়ে উৎসাহ যুগিয়েছেন জাঁ মাইকেল জার, ভ্যাঙ্গেলিস আর অতুলনীয় জন উইলিয়ামস।
ওয়েটিং ফর দি বারবারিয়ানস দ্রষ্টব্য।
উপন্যাসটা লেখার সময়ই আমি দেখতে পাই যে ইউরোপার রিফুয়েলিং বিষয়ে একটা পেপার লেখা হয়েছে, আউটার প্ল্যানেট স্যাটেলাইট রিটার্ন মিশনস ইউজিং ইন সিটু প্রোপ্যালান্ট প্রোডাকশন, লিখেছিলেন অ্যাস, স্ট্যানকট, নিয়েহক, আর কুড়া (অ্যাস্টা অ্যাস্ট্রোনটিকা এইট, পাঁচ-ছয়, মে-জুন উনিশশো একাশি।)।
আত্ম-শিখন প্রক্রিয়ার (জন ভন নিউম্যান মেশিন) মেশিন, বিশেষত অপার্থিব খনি কর্ম করার ব্যাপারে সিরিয়াস কাজ করেছেন ভন জিয়াংহ সেন এবং ভাব্রো। নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারে (দ্রষ্টব্য, সেলফ রেপ্লিকেশন সিস্টেম-নাসা টেকনিক্যাল মেমোরেন্ডম ৭৩০৪১) যারা বৃহস্পতিতে এমন সেলফ রেপ্লিকেটিং সিস্টেম হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন তাদের বলছি হিসাব দেখতে যেখানে ষাট হাজার বছরের জায়গায় বিশ বছর যথেষ্ট।
এম. রস এবং এফ. রি লরেন্স লিভারমোর ল্যাবরেটরিতে কর্মরত। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এ দুই গবেষক দেখিয়েছেন যে গ্যাস জায়ান্টের ভিতরের কোরটা হীরা হওয়ার সম্ভাবনা প্রকট। তাঁদের গবেষণা ছিল ইউরেনাস আর নেপচুন নিয়ে। আমার তো মনে হয় যে ওই দুটো বাদ দিয়ে বরং গ্রহরাজের ভিতরে এমন একটা হীরা থাকার সম্ভাবনা প্রকট। ডি বিয়ার্স ইচ্ছা করলে কথাটা টুকে রাখতে পারে।
আ মিটিং উইথ সেডুসা (ইন দ্য উইন্ড ফ্রম দ্য সান) ছোট গল্পটা দেখলেই বৃহস্পতির জীবনের ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। কার্ল সাগানের কসমস এর দ্বিতীয় অংশেও এ নিয়ে বিস্তর লেখা আছে। তা বই দেখে তোক বা টিভি সিরিয়াল, পাওয়া যাবে সহজেই।
ইউরোপার বরফের ভেতরটা সে কারণেই তরল থাকার কথা যে জোয়ারে আইওর আগুন বর্ষা উদ্বেলিত হয়। বৃহস্পতির জোয়ার। স্টার অ্যান্ড স্কাই ম্যাগাজিনে রিচার্ড সি হল্যান্ড প্রথমে এ ধরনের ব্যাপার ঘটার সম্ভাবনার কথা বলেন। (দ্য ইউরোপা এনিগমা, ১৯৮০) এই চমৎকার আইডিয়াটা নিয়ে অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই আপ্লুত হয়েছেন। (নাসার ইনস্টিটিউট অব স্পেস স্টাডিস, ড. রবার্ট জ্যাস্ট্রো এ নিয়ে সম্ভাব্য গ্যালিলীয় অভিযানের পরিকল্পনাও করেছেন।
সর্বোপরি ভ্যালেরি এবং হেক্টর,
লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের জন্য,
ক্যারেন, মিষ্টি চুমুতে
প্রতিটা অধ্যায়ের বারোটা বাজানোয়:
স্টিভ, এখানে থাকায়,
কলম্বো, শ্রীলঙ্কা,
জুলাই, ১৯৮১- মার্চ ১৯৮২
বইটা আর্কাইভ থ্রি মাইক্রোকম্পিউটারে লেখা হয়েছিল। সফটওয়্যার ছিল ওয়ার্ডস্টার। একটা পাঁচ ইঞ্চি ডিস্কেটে করে পাঠানো হয়েছিল কলম্বো থেকে নিউ ইয়র্কে। শেষ বেলার কারেকশন সম্প্রচার করা হয় পাদুকা আর্থ স্টেশন থেকে, ইন্ডিয়ান ওশেন ইন্টোলসেট-১৫ এর মাধ্যমে।
স্যার আর্থার চার্লস ক্লার্ক
স্যাটেলাইট বিজ্ঞানের জনক ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ স্পেস ট্র্যাভেল সায়েন্স ফিকশন রাইটার আর্থার চার্লস ক্লার্ক। জীবিতদের মধ্যে তিনিই পৃথিবীর সেরা কল্পবিজ্ঞানী। দ্বিতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার অফ সায়েন্স ফিকশন। সবচে বেশি রাশ টেনে রাখেন এস এফ এর কল্পনায়। মহাকাশের কোথায় অভিযান করলে কী হবে তা তিনি অত্যন্ত বিস্তারিত ব্যাখ্যার সাহায্যে বলে দিয়েছেন মানুষ মহাকাশে যাবার আগেই।
নিজদেশ ইংল্যান্ড ছেড়েছুঁড়ে দ্বীপরাজ্য শ্রীলঙ্কায় বাস করেন সেই প্রথম যৌবন থেকে। তাঁর কাছে এস এফ সব সময় সিরিয়াস ব্যাপার, হেলাফেলার ছেলেখেলা নয়। ওডিসি সিরিজের পঞ্চম বইটার জন্য এস এফ এর ইতিহাসে সবচে মোটা অঙ্কের সম্মানী পেয়েছেন। রঁদেভু উইথ রামা এবং ফাউন্টেনস অব প্যারাডাইস দুটোই হুগো এবং নেবুলা প্রাইজ পেয়েছে। এ দু পুরস্কার এস এফ এর ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ। এ মানিক-জোড় পূর্ণ হয়েছে মাত্র আট-নবার। তার আর সব পুরস্কারের স্রোতও কম যায় না। মহাকাশ ও সমুদ্র নিয়ে রচনার সংখ্যা শতেক ছাড়াবে।
একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী, বিজ্ঞান গবেষণার পৃষ্ঠপোষক, সামরিক অফিসার, স্কুবা ডাইভার, স্পেস মিশনের ধারাভাষ্যকার-উপদেষ্টা, চলচ্চিত্র নির্মাতা, এবং শ্রেষ্ঠ কল্প-বিজ্ঞানবিদের চেয়েও তার বড় পরিচয়, তিনি এস এফ জগতের এক প্রধান দিকনির্দেশক। প্রতিটা রচনা নির্দিষ্ট দিকনির্দেশ করে। কোনো শখ হিসেবে কিম্বা
জাদুর মতো করে বিজ্ঞান কল্পকাহিনী প্রচারে তিনি একমত নন। মানুষ এবং মানুষের সবটুকুর সাথে ভবিষ্যৎ আর মহাকাশের মেলবন্ধন রচনায়, সে সময়ের ভাবনা, মূল্যবোধ, চিরায়ত মানবিকতা নিয়েই তার কাজ। একজন ভবিষ্যৎ নির্দেশক হিসেবে পোপের দাওয়াতও পেয়েছেন।
মোটা দাগে তিন চারটা বৈশিষ্ট্য বলে দিলে প্রথমেই বলা যায়, মহাকাশ, ভয়, জাতিগত অভেদ, রাজনীতি আর রসিকতা তার রচনায় থাকবেই।
অনেক বয়েস হয়ে গেছে, চলাফেরা করতে পারেন না তেমন। তাও লেখা ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত আর্থার ক্লার্ক হার মানবেন না।
নির্ঘণ্ট:
১. এস ই টি আই: সার্চ ফর এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্স। অপার্থিব বুদ্ধিমত্তার খোঁজ-সেটি। এরিসিবোর জন্ম হয়েছে মূলত সেটির জন্য।
২. এরিসিবো: এরিসিবো অবজার্ভেটরি। পুর্টেরিকোর কাছাকাছি। তেষট্টি সালে বিশ্বের সবচে শক্তিশালী রেডিও টেলিস্কোপটা বসানো হয়। তিনশো পাঁচ মিটার ব্যাস। আজো বিশ্বের সবচে বড় ডিশ। অনেক মহাজাগতিক আবিষ্কারের কারণ এটা। বলা হয়। অ্যালিয়েনদের খোঁজে বসানো হয়েছে।
৩. এন সি এ: ন্যাশনাল কাউন্সিল অব অ্যাস্ট্রোনটিক্স; মহাকাশ বিষয়ে জাতীয় কর্তৃপক্ষ। নাসার স্থানে পরে আসবে। কল্পিত।
৪. কসাক: রাশিয়ার এক জাতি। এক অপরাজেয় যোদ্ধার দল। এখানে দু অর্থেই।
৫. টাইকো মনোলিথ: টাইকো হল চাঁদের এক জ্বালামুখ, ৮৭ কিলোমিটার চওড়া। মনোলিথ অর্থ এক পাথরে তৈরি স্তম্ভ। টাইকো মনোলিথ চাঁদের বুকে পাওয়া (কল্পিত) কালো একশিলাস্তম্ভ। [২০০১: আ স্পেস ওডিসি]
৬. সি আই এ : সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি। আমেরিকার পররাষ্ট্র গোয়েন্দা সংস্থা।
৭. ডপলার পরিবর্তন: বিজ্ঞানী ডপলার আবিস্কৃত ক্রিয়া। গতির কারণে শব্দ উপলব্ধির পরিবর্তন। দাঁড়ানো লোকের পাশে চলন্ত ট্রেনের শব্দ শুধু বাড়ে-কমেই না, বরং শব্দের গঠনও অন্যরকম মনে হয়। ব্যাখ্যা দেন ডপলার। এ থেকে শব্দ বা আলো দেখেই বস্তুর গতি পাওয়া যায়।
৮. ত্বরণ: সময়ের সাথে বেগ বৃদ্ধির হার। তবে কখনো কখনো হ্রাসের হারও বোঝায়।
৯. নাসা: ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স এন্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। ইউ এস মহাকাশ সংস্থা।
১০. আয়োনোস্ফিয়ার: বাতাসের এক স্তর। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উপরের এ স্তরটা চার্জিত পরমাণু আর মৌল কণায় ভরা। সূর্যালোকের প্রভাবে এ আয়ন সৃষ্টি হয়। এখান থেকে রেডিও ওয়েভ ফিরে আসে।
১১. ক্লিপ হ্যাঙ্গার: যেখানে আটকে রেখে মহাকাশযান ঠিক বা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
১২. পেরিজি: কোনো গ্রহের অথবা মহাকাশে ঘুরতে থাকা অন্য বস্তুর (ডিসকভারি) কক্ষপথ বা বিচরণ পথের যে বিন্দুটা পৃথিবীর সবচে কাছে। পেরিজোভ বুঝালে পৃথিবীর জায়গায় বৃহস্পতি বসবে।
১৩. দাচা: রাশিয়ার গ্রাম্য এলাকার বাড়ি। এখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বাসনের জায়গা। যেমন সাইবেরিয়া। কম্যুনিস্ট রাশিয়ায় রাষ্ট্রীয় কাজের কথা ফাঁস করলে নির্বাসন দেয়া হত। অভ্যন্তরীন উন্নয়নে কম্যুনিজম প্রবক্তা স্ট্যালিন ব্যাপক প্রচলন করে।
১৪. ম্যাগনেটোস্ফিয়ার: চৌম্বক স্তর। যেখানে চৌম্বকত্বের একটা প্রভাব বিদ্যমান।
১৫. বুফে: ইচ্ছামতো নিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা। এক সারে সব খাবার থাকার পর যে যারটা তুলে নিয়ে খেতে পারে। মূলত ব্যবস্থাটা দাঁড়িয়ে খাবার জন্য, এখন পরিবর্তিত।
১৬. কিলাওয়া: হাওয়াইয়ের এক আগ্নেয়গিরি। চার কি.মি. লম্বা আর সাড়ে তিন কি.মি. চওড়া এর জ্বালামুখ। সবচে বড় উদগীরণ প্রায় দেড় কি.মি. উঁচু।
১৭. জন ভন নিউম্যান: প্রাথমিক যুগের কম্পিউটারের মহারথী। প্রথম দিকের মেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
১৮. তুরিং: ব্রিটিশ গণিতবিদ অ্যালান ম্যাথিসন তুরিং ১৯৩৭ সালে তুরিং মেশিন আবিষ্কার করেন। তিনি পৃথিবীর প্রথমদিকের একজন হ্যাকার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান কোড ভেঙেছেন। সবচে বড় অবদান তুরিং টেস্ট। বুদ্ধিমান কম্পিউটারের অথবা অন্য যন্ত্রের বুদ্ধিমত্তা পরিমাপ পদ্ধতি।
১৯. ইউ এস এস আর : ইউনিয়ন অব সোভিয়েত সোশালিস্ট রিপাবলিক। বিশ্বের প্রথম এবং সবচে শক্তিমান সমাজবাদী রাষ্ট্র, ১৯২২ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত ছিল। মূল রাশিয়া ছাড়াও দশ বারোটা প্রদেশ ভাগ হয় কমুনিস্ট পার্টি ক্ষমতা থেকে সরে গেলে।
২০. রুপিয়ার্ড কিপলিং: প্রথম দশ নোবেল বিজয়ী লেখক-কবির একজন। ব্রিটিশ। দি জাঙ্গল বুকের স্রষ্টা। আরো অনেক উপন্যাস, তিনশতরও বেশি ছোটগল্প লেখেন।
২১. হাইবারনেশন: শীতস্তম্ভ/শীতন্দ্রিা। মূলত সাপ জাতীয় প্রাণীর শীতে ঘুমিয়ে থাকা। মানুষের ক্ষেত্রে কল্পিত প্রক্রিয়া যাতে ঘুমন্ত শরীরে কম তরল খাবার দিলেই চলবে। তাপমাত্রা সাধারণত–২৭২ ডিগ্রী সে. বা ১ কেলভিন। বয়স একশ ভাগের এক ভাগও বাড়ে না। ভার্ন ধারণা দেন। পরে সব লেখক ও বিজ্ঞানী তত্ত্ব হিসেবে নেন।
২২. ক্ল্যাভিয়াস বেস: চাঁদে আমেরিকানদের মানব বসতি। [২০০১: আ স্পেস ওডিসি]
২৩. ব্রীফকেস কম্পিউটার: লেখকের কল্পনা। বর্তমানে সত্যি। ল্যাপটপ কম্পিউটার।
২৪. অর্বিট: কক্ষপথ। যে পথে গ্রহ, উপগ্রহ ঘোরে/পরমাণুতে যে পথে ইলেক্ট্রন ঘোরে।
২৫. পুটোনিয়াম: অতি তেজস্ক্রিয় মৌল। বাহক মানুষ হলে মারা যেতে পারে। সব সময় এর নিউক্লিয়াস ভেঙে যাচ্ছে এবং ভিতর থেকে রেডিও অ্যাকটিভ রে রূপে আণবিক কণিকা বেরুচ্ছে। ফলে দুটো ভিন্ন নতুন মৌল গঠিত হচ্ছে।
২৬. লেজার: লাইট ইমিশন বাই স্টিমুলেটেড ইমিশন অফ রেডিয়েশন। উদ্দীপিত তেজ নিঃসরণের মাধ্যমে আলো বাড়ানো। সহজে ছড়ায় না, বরাবর যায়। এর কিছু ধরন আছে যা দিয়ে ধাতব পদার্থ গলে। সিডি, প্রিন্ট সহ অনেক কিছুই এর উপর চলছে।
২৭. নিউটনের প্রথম সূত্র: মহাবিশ্বের প্রতিটা বস্তুকণা প্রতিটাকে তাদের যুক্তকারী সরলরেখায় আকর্ষণ করে। বলের মান বস্তু দুটোর ভরের গুণফলের সমানুপাতিক, দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক।
২৮. ভিউফোন: ভার্নের মতে টেলিফোট। দেখা ও শোনার যন্ত্র। জাপানে আছে।
২৯. শাখারভ ড্রাইভ: রাশিয়ান মহাকাশযানের ইঞ্জিন। কাল্পনিক। শাখারভকে সম্মাননা।
৩০. প্রিন্সিপিয়া: ফিলোসসাফি ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা-প্রাকৃতিক দর্শনের গাণিতিক নিয়ম। গতিসূত্র, মহাজাগতিক নিয়ম ও মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব সহ নিউটনের আরো অনেক যুগস্রষ্টা কাজ এ বইতেই মোলশো সাতাশি সালে প্রকাশ পায়।
৩১. থার্মো নিউক্লিয়ার: তাপ পারমাণবিক। দেড় কোটি ডিগ্রী সে. তাপ হয় এ ফিউশনে।
৩২. প্রোপ্যাল্যান্ট: বিশেষত রকেট বা স্পেসশিপের জ্বালানি-সমন্বয়। এতে ফুয়েল বা জ্বালানি এবং এর সাথে অক্সিডাইজার থাকে।
৩৩. ম্যাগনেটো হাইড্রো ডাইনামিক: পানি ব্যবহার করে যে যন্ত্র আগুনের শিখা উৎপন্ন করতে পারে। আগুনটা জলশক্তিকে কাজে লাগায়।
৩৪. ব্যালে: বিখ্যাত ইউরোপিয়ান ক্লাসিক নাচ। থিয়েটারে জন্ম। আনুষ্ঠানিক ও দ্র।
৩৫. অটোসে: যে ঘড়ি সময় বলবে অ্যালার্মের বদলে। সহজেই তৈরি করা সম্ভব।
৩৬. বার্বিকিউ: খোলা আকাশের নিচে গ্রিলে করে ঘুরিয়ে আগুনে ঝলসে মাংস বা মাছ খাবার ব্যবস্থা। গ্রিল্ড চিকেনের আসল রূপ। পিকনিকে নিজেরা করা হয়।
৩৭. ফোকাস: যে দূরত্ব থেকে সবচেয়ে স্পষ্ট ছবি পাওয়া যায়। অন্য কথায়, কোনো লেন্সের সাপেক্ষে সব আলো যে বিন্দুতে মিলিত হয় (উত্তল লেন্সে); অথবা মিলিত হচ্ছে বলে মনে হয় (অবতল লেন্সে)।
৩৮. বি বি সি: ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন। পৃথিবীখ্যাত সরকারি সংবাদ সংস্থা।
৩৯. বিশাল লাল দাগ/গ্রেট রেড স্পট: বৃহস্পতির বিখ্যাত হ্যারিকেন। সারা বছর পুরো গ্রহের বিষুব এলাকা দাপড়ে বেড়ায় ঘণ্টায় ৩৬০ কি.মি. বেগে। গড়পড়তা আকৃতির ভিতর তিনটা পৃথিবীকে রেখে দেয়া যাবে। রঙ ইটের লাল থেকে ধূসরও হয়।
৪০. তাপ ফলক: কোনো আস্তরণ যা তাপ শোষণ করে। ভবিষ্যতের স্পেসশিপ কোনো বায়ুমণ্ডলে ঘষা খেয়ে তাপ উৎপন্ন হওয়ায় পুড়ে শেষ হতে পারে, এটা ঠেকাবে।
৪১. ভাস্বর গ্যাস: খুব গরম হলে আলো ছড়ায় এমন গ্যাস।
৪২. সরণ: সরে যাওয়া। পদার্থবিদ্যায়, বস্তু এক স্থান থেকে আরেক স্থানে গেলে তাদের মধ্যবর্তী সংযোজক সরল রেখার পরিমাণ বা ন্যূনতম দূরত্ব।
৪৩. অর্বিটাল মেকানিক্স: যে কোনো নক্ষত্র, গ্রহ বা উপগ্রহের একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব থাকে যেখান থেকে অন্য কোনো বস্তু আকৃষ্ট হয়ে সরাসরি নেমে আসে না, বরং চারপাশে পাক খায়। পথকে বলে অর্বিট এবং অর্বিট বিষয়ক বল, গতিবিদ্যা ও গাণিতিকতাই অর্বিটাল মেকানিক্স।
৪৪. বাংক: জাহাজ বা বিমানে মালামাল রাখার জায়গা।
৪৫. আনলগ: লগ অফ। কোনো একজনের বা একটা বিষয়ের সক্রিয়তা বন্ধ করা। কম্পিউটারে একাধিক ব্যবহারকারী থাকলে মেশিন বন্ধ না করে ঐ ব্যবহারকারীর পুরো সক্রিয়তা বন্ধ করে দেয়া।
৪৬. সাইফার: মেসেজের গোপন ভাষা। কোড। গোয়েন্দা কার্যক্রমে ব্যবহৃত।
৪৭. হলোমেমরী মডিউল: লেখকের নিজ হাতের লেখাকে বলে হলোগ্রাফ। সায়েন্স ফিকশনে কোনো কিছুকে মূল আকারে কিন্তু কৃত্রিমভাবে ধরতে পারলে এটা বলা হয়। যেমন, মানুষের ত্রিমাত্রিক ছবি। এর মডিউল মানে হলোগ্রাফিক মেমরির ধারক আলাদা যন্ত্র। কাল্পনিক।
৪৮. গ্যাস ফ্লো মাইক্রোকন্ট্রোলার: গ্যাসীয় প্রবাহের ন্যূনতম নিয়ন্তা।
৪৯. ইনফ্রারেড সেন্সর: যে যন্ত্র অদৃশ্য আলোকরশ্মি বা অবলোহিত রশ্মি ধরতে পারে।
৫০. হিট সিকিং মিসাইল: তাপীয় বস্তুর পেছনে দৌড়ানো ক্ষেপণাস্ত্র। বিমানের পেছন থেকে তাপ বেরোয়। সামনে লেসার সেন্সর থাকায় মিসাইল এঁকে বেঁকে যাওয়া বিমানকেও ধ্বংস করতে পারে। আছে স্মোক ও সাউন্ড সিকিং মিসাইল।
৫১. জিওফিজিক্স: ভূমি বিষয়ক পদার্থবিদ্যা।
৫২. প্রোপ্যাল্যান্ট ট্যাঙ্ক: এখানে স্পেসশিপের জ্বালানির ট্যাঙ্ক।
৫৩. গ্যালিলিও : চার শতক আগের বিখ্যাত ইতালীয় অ্যাস্ট্রোনোমার, পদার্থ বিজ্ঞানী, পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের প্রবর্তক, রিফ্রাকটিং টেলিস্কোপের আবিষ্কর্তা, পড়ন্ত বস্তু ও পেণ্ডুলামের সূত্রের প্রবর্তক।
৫৪. যোহান্স কেপলার: প্রখ্যাত জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং কল্পবিজ্ঞানের জন্মের আগের সায়েন্স ফ্যান্টাসি লেখক। গ্রহের গতি নিয়ে ব্রিসূত্র দেন এবং নিউটন তা কাজে লাগান। সংক্ষেপে: ১. প্রতি গ্রহ অর্বিট ধরে ডিম্বাকার পথে চলে। ২. গ্রহকেন্দ্র-সূর্যকেন্দ্রের লাইন তথা পেরিজি বা দূরত্ব কম হলে গ্রহগতি বাড়ে। ৩. একবার সূর্যকে ঘুরতে যে সময় লাগে তা পিরিয়ড। দু গ্রহের পিরিয়ডের বর্গ সূর্য থেকে তাদের দূরত্বের ঘন এর সমানুপাতিক।
৫৫. কসমোনট: রাশিয়ান মহাকাশ বিজ্ঞানী। এঁদের অ্যাস্ট্রোনট বলা হয় না।
৫৬. পারসিভাল লোয়েল: প্রখ্যাত ভবিষ্যৎ বক্তা। অনেক কথাই সত্যি হয় বলে প্রচারণা থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করেন তা ভাঁওতাবাজি। পরে ভাঁওতাবাজি প্রমাণিত।
৫৭. মঙ্গল গ্রহ বিষয়ক প্রচারণা: আগে বিজ্ঞানীরা বলতেন মঙ্গল গ্রহে খাল আছে। তাঁরা দেখেছেন। কম ক্ষমতার দূরবীনের কারণে এমন মনে হতো। এটা খুবই বিখ্যাত। আবার অনেকে খ্যাতির জন্য বলে বেড়াতেন ও বই লিখতেন যে মঙ্গলের সভ্যতা দেখেছেন বা প্রাণী দেখেছেন। দুটোই ভুল।
৫৮. টেলিস্পেকট্রোমিটার: স্পেকট্রোমিটার (আলোর বর্ণালী সৃষ্টি করে বর্ণালী পরিমাপ করার যন্ত্র) বসানো টেলিস্কোপ।
৫৯. সিম্পরিও: ভবিষ্যতের কল্পিত ঘটনার ধারাবাহিকতা। বড় মিশন শুরুর আগে অনেকগুলো সম্ভাব্যতা নিয়ে কাজ হয়; প্রতিটার প্রবাহ দেখা হয়-এটাই সিম্পরিও।
৬০. স্লিপিং কোকুন: যে ঘেরাটোপে মহাকাশচারীরা ঘুমায়। কাল্পনিক।
৬১. মে ডে ফ্রিকোয়েন্সি: জাহাজের পাঠানো উদ্ধার বা বিপদ সংকেতের ফ্রিকোয়েন্সি।
৬২. লার্ভা: ডিম থেকে বেরিয়ে পিউপা হওয়ার আগ পর্যন্ত একটা পোকা যে স্তরে থাকে।
৬৩. ট্যাক্সোনমিস্ট: শ্রেণীবিন্যাসবিদ। জীবকে সঠিকভাবে তালিকাভুক্ত করে জীববিজ্ঞান সহজ ও সমৃদ্ধ করেন।
৬৪. অ্যাস্টেরয়েড গ্রহাণুপুঞ্জ: মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝের গ্রহাণু বলয়। ধারণা করা হয় একটা বিশাল গ্রহ কোনো দুর্ঘটনায় টুকরো টুকরো হয়ে তারই কক্ষপথে সূর্যকে কেন্দ্র করে এখনো ঘুরছে।
৬৫. গ্লোবাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক: কল্পিত নেটওয়ার্ক। যে কোনো মানুষ কোথায় আছে তা বের করা যাবে। অনেকটা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম অথবা ল্যাপটপে ইন্টারনেট বা মোবাইল ফোনের প্রক্রিয়া।
৬৬. হ্যাং গ্লাইডার: এই পাখাওয়ালা অযান্ত্রিক যানে চড়ে উঁচু থেকে পড়ে চিলের মতো উড়তে উড়তে নামা যায়।
৬৭. জি এম টি: মানবকেন্দ্রিক বিশ্বের প্রমাণ সময়। গ্রীনিচ মিন টাইম। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত গ্রীনিচ মানমন্দিরের সময়।
৬৮. গ্যালি: জাহাজের রান্নাঘর। সাইনাস ইরিডিয়াম: এখানে, চান্দ্র এলাকা।
৭০. বে অফ রেইনবো: রঙধনু সাগর। চান্দ্র এলাকা।
৭১. করোনা: সূর্যের চারধারের লালচে আলোর ছটা। মেরুপ্রভাও বলা হয়।
৭২. অ্যাস্টেরয়েড বেন্ট: গ্রহাণুপুঞ্জ যে বিস্তৃতি নিয়ে ছড়ানো। দেখতে বেল্টের মতো। যেন সৌর জগতের ভিতরের দিকের অংশকে দেয়াল তুলে আলাদা করা হয়েছে।
৭৩. স্ল্যাগ শামুক: এক ধীর শামুক। দাগ রেখে রেখে এগিয়ে যায়।
৭৪. এক্সোবায়োলজিস্ট: শরীরের বাইরের বিজ্ঞানবিষয়ক জীববিজ্ঞানী।
৭৫. মন্দন: সময়ের সাথে সাথে বেগ হ্রাসের হার।
৭৬. টু জি: পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের দ্বিগুণ অভিকর্ষ।
৭৭. অ্যারোব্রেকিং: মহাকাশে থেমে যাওয়া। কল্পিত।
৭৮. ভিক্টোরিয়ান আর্ট শিল্পের একটা যুগ। বিশেষত রাণী ভিক্টোরিয়ার সময়।
৭৯. হ্যারিকেন: এক প্রকার ঘূর্ণিঝড়। বিষুব রেখার কাছে উষ্ণ সাগরে তৈরি হয়ে উত্তর বা দক্ষিণ যে কোনো মেরুর দিকে যায়।
৮০. স্পার্টা নগরী: গ্রীসের সবচে শক্তিময় বিখ্যাত নগরী। পৌরাণিক বীর যোদ্ধারা এ নগররাষ্ট্র রক্ষায় লড়ত। বীরত্বের উদাহরণ দেয়া হয়।
৮১. এক্সপান্ডেবল অটোম্যাটিক পোব: শিপের মূল শরীর থেকে বেরিয়ে এসে পরীক্ষা-গবেষণার যন্ত্র।
৮২. পো: বিখ্যাত আমেরিকান ছোটগল্প লেখক। আমেরিকান সায়েন্স ফিকশন ও ফ্যান্টাসির মহানায়ক।
৮৩. সময় দীর্ঘায়ন: শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে বিবেচিত আইনস্টাইনের তিন দশকের গবেষণার ফল; পদার্থবিদ্যার জটিলতম দিকের একটা। সহজ কথায়, ধরা যাক কোনো মহাকাশযান আলোর গতির প্রায় কাছাকাছি চলছে, (কারণ তাঁর মতে আলো-গতি অসম্ভব) তাহলে ওটার ভিতরে আলোর প্রায় কোনো গতি থাকার কথা নয়। কিন্তু তিনি প্রমাণ করেছেন যে কোনো গতিতে চলা বস্তুতে আলোর গতি একই। কিন্তু প্রায় আলোর গতিতে ওটা যদি এক বছর যায়, তাহলে এক বছরের সাথে আরো প্রায় এক বছর যুক্ত হবে। কারণ যে কোনো বিষয় ঘটলে সেটা আলোর গতির কারণেই প্রাণী দেখে, মানে, আলোর গতিই ঘটনা, আর ঘটনার প্রবাহই সময়। মহাকাশযানে এক বছর কাটলে পৃথিবীতে কেটে যাচ্ছে দু বছর। এটাই আইনস্টাইনীয় সময় দীর্ঘায়ন।
৮৪, ভদকা: রাশিয়ান ডিস্টিন্ড মদ। শস্য থেকে তৈরি।
৮৫. নিউটনকে ধন্যবাদ: এখানে, মহাকর্ষ ও বল বিষয়ক সূত্র ও সমীকরণ বের করায়।
৮৬. ফ্লাইং সসার: অচিহ্নিত উড়ন্ত বস্তু। ইউ এফ ও। কোটি কোটি মানুষ মনে করে যে এগুলোতে করে মহাকাশের অচেনা বাসিন্দারা এসে আমাদের পৃথিবী ঘুরে গেছে।
৮৭. ভেক্টর: এ রাশির একই সাথে মান ও দিক থাকে। যেমন, পশ্চিমে দশ কিমি. সরণ: দিক পশ্চিম, মান দশ কি.মি. হাইড্রোকার্বন: জৈব যৌগ। হাইড্রোজেন ও কার্বনের যৌগ ও তাদের সাথে বিক্রিয়ায় সৃষ্ট যে কোনো নতুন যৌগ।
৮৯, পাই: বৃত্তের ব্যাস ও পরিধির অনুপাত। আশ্চর্যজনকভাবে প্রকৃতির অনেক কিছুর সাথেই সম্পর্ক রয়েছে। মান তিন দশমিক এক চার থেকে শুরু। শেষ নেই।
৯০. মেগাটন: দশ লাখ টন।
৯১. অ্যাম্পিয়ার: বিদ্যুৎ প্রবাহের একক। সহজে, এক ইউনিট (কুল) চার্জ একটা ক্রস সার্কিটের ভিতর দিয়ে এক সেকেন্ডে প্রবাহিত হলে তা এক অ্যাম্পিয়ার।
৯২. দ্য লর্ডস অব দ্যা রিংস: দ্য ফেলোশিপ অব দ্য রিং, দ্য টু টাওয়ার, দ্য রিটার্ন অব দ্য কিং-এ তিন যুগান্তকারী উপন্যাস। অ্যাডভেঞ্চার এবং পৌরাণিক; ছায়াছবিও হয়েছে। টোকিন এর লেখক।
৯৩. থ্রাস্টার: অতি ছোট রকেট, মহাকাশযানে বা মহাকাশচারীর পোশাকে যুক্ত থাকে।
৯৪. কন্ট্রোল ও লাইফ সাপোর্ট মডিউল: শিপের বিশেষ অংশ। এখানে-মূল জায়গাটুকু। মডিউল আলাদাভাবে প্রায় সম্পূর্ণ সিস্টেম বা যন্ত্র-সমন্বয় হিসেবে কাজ করবে, কিন্তু আসলে সাব সিস্টেম; হয়ত কোনো কম্পিউটারের অংশ। যেমন যোগাযোগ মডিউল।
৯৫. ইমার্জেন্সি হ্যাঁচ: হ্যাঁচ কোনো জাহাজের ছোট দরজা। এখানে, বিশেষ প্রয়োজনে যান্ত্রিক সহায়তা সহ অথবা ছাড়া যেটা খোলা যায় তা ইমার্জেন্সি হ্যাঁচ।
৯৬. প্লাজমা: কিছু ক্ষেত্রে পদার্থের ত্রি-অবস্থা ছাড়াও প্লাজমা ও লিকুইড ক্রিস্টাল হতে পারে। প্রায় গ্যাসের মতো প্লাজমা অবস্থা। একটা জলপাইকে পরমাণু মনে করে বিচিকে নিউক্লিয়াস আর খাদ্য অংশকে ইলেক্ট্রন ধরলে যখন অনেক জলপাই একত্রে গরম করে ভর্তা করা হয়-তখনকার মিশ্র পরিবেশের সাথে এর তুলনা চলে। প্লাজমার অতি পাতলা মনিটর ও লিকুইড ক্রিস্টালের সামান্য ভারী মনিটর থাকলেও আমরা বিশাল পিকচার টিউব ব্যবহার করি। তারকায় প্লাজমা প্রচুর। বজ্র এর তৈরি। পৃথিবীতে প্রায় তৈরি হয়ই না। কমপক্ষে ৪০ হাজার ডিগ্রী সে. উত্তপ্ত জমার নিউক্লিয়াস অসম্ভব গতি পায়। তাই ড্রাইভ তৈরি করলে শিপের প্রচ- গতি আসবে।
৯৭.. স্পেসশিপের বিড়াল: ক্লার্কের এক সুখ্যাত ছোটগল্প আছে যেটায় এক অভিযাত্রী তার ছোট্ট শিপ নিয়ে একা বেরুনোর পর কাপড়ের খস খস শব্দ পায়। সে মনে করে এ শিপের আগের মৃত চালকের আত্মা সেটা। আসলে এক বিড়াল শুয়ে ছিল। ক্লার্ক গল্পটাকে ভবিষ্যতের নাটক হিসেবে কল্পনা করে এ উপন্যাসে তথ্যটুকু নিয়েছেন।
৯৮. রিয়্যাক্টর: যে যন্ত্রের বা স্থাপনার ভিতরে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে তেজ-বিক্রিয়া হওয়ায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ ও তাপশক্তি উৎপন্ন হয়।
৯৯. অ্যামোনিয়া: এক নাইট্রোজেন ও চার হাইড্রোজেনের যৌগ। জীবনের প্রথম উপাদানের একটা।
১০০. ডন কুইক্সোট: আদর্শে অবিচল ব্যক্তিকে বোঝায়। সার্ভান্টেসের ডন কুইক্সোট ডি লা মাঙ্কা বইয়ের নায়কের নাম অনুসারে আসে। শ্যাঙ্কো তার চাকর।
১০১. অ্যাটিচ্যুড কন্ট্রোল জেট: এসব ছোট জেট শিপের শুধু পেছনে না থেকে সবদিকে থাকে, ফলে স্পেসশিপের অবস্থান ও দিক বদলানো সহজ হয় (কাল্পনিক)।
১০২. সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট: কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ। কম্পিউটারের মূল ইউনিট। গাণিতিক/যুক্তি অংশ, কন্ট্রোল ইউনিট ও স্মৃতি ইউনিটে বিভক্ত।
১০৩. নন কন্ডাক্টর: এখানে বিদ্যুৎ অপরিবাহী। কম্পিউটারের পাওয়ার সাপ্লাই কাটতে যদি বিদ্যুৎ পরিবাহী ব্লেড রাখা হয় তাহলে তার ভিতর দিয়েই কাজ চলতে থাকবে।
১০৪. ডায়াগনস্টিক প্রোগ্রাম: এ দিয়ে কম্পিউটারের সমস্যা, সমাধানের পথ ও সমাধান তিনই সম্ভব।
১০৫.. ভয়েস রিকগনিশন: কম্পিউটার নিয়ে সবচে বড় আশার একটা। এখনো কণ্ঠ শুনে সব বুঝতে পারে না। তবে এখন অফিস এক্সপি দিয়ে আমাদের দেশের মানুষ ৭০% কথা বোঝাতে সক্ষম। মাইক্রোসফটের অফিস ২০০৩ আসছে। দু-এক বছরেই হয়তো আমরা মুখে আদেশ দিয়েই পিসিকে সব কাজ করাতে ও সব কথা কম্পোজ করতে পারব।
১০৬. স্পিচ সিন্থেসিস: সহজ অর্থে, কথায় প্রাণ আনা। মানুষ পরিবেশ, পরিস্থিতি, গুরুত্ব ও নিজের মানসিকতা অনুসারে কথা বলে। এক সুরে বলে না। এ বিশাল প্রক্রিয়া গড়াই স্পিস সিন্থেসিস।
১০৭. ফোনিমি: কোনো ভাষার মূল প্রয়োজনীয় উচ্চারণ। আওয়াজগুলো বুঝলে ঠিকভাবে পুরো ভাষা বলা যাবে।
১০৮. ইন্টারপ্রিটেশন: এখানে, কম্পিউটারের নিজের মতো অনুবাদ করা। যেমন: সুরকার সুর খাতায় লিখতে পারেন, যিনি না জেনে শুধু লেখা দেখে সুরটা তুলবেন তাকে কিছুটা নিজের মতো সাজাতে হয়।
১০৯. সাইবারনেটিক্স: এমন এক বিজ্ঞান যার কাজ সিস্টেম (যন্ত্র-সমম্বয়, একটা যন্ত্র নয়, একটা কাজে লিপ্ত নয়-যেমন কম্পিউটার) নিয়ে। সিস্টেমের গঠন, আদর্শ ও
১১০. প্রয়োজনীয় অবস্থা, নিজে পুনরায় উৎপাদন, কাজের ধারা এবং শিক্ষার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে। দান্তে: ইতালিয়ান লেখক দান্তে অ্যালিঘরি মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ কবি। দ্য ডিভাইন কমেডি পৃথিবীসেরা এক মহাকাব্য। সর্বকালের এক জ্ঞানী লেখক।
১১১. ল্যাগ্রেন্স: ইতালীয় অ্যাস্ট্রোনোমারের নামে। দু গ্রহ/উপগ্রহের মাঝের মুক্তবিন্দু।
১১২. কৃষ্ণ বস্তু: যা শতভাগ আলো (এবং সব তেজস্ক্রিয় এনার্জি) শোষণ করে। বাস্তবে নেই। সব কালো জিনিসই কিছুটা শোষণ করে, বড়জোর ৯৬%।
১১৩. প্রেশার ডোম: কল্পিত। বিস্তৃত এলাকা জুড়ে বায়ুচাপ ও গ্যাস রাখতে কাঁচের বিশাল গোল ঢাকনা তৈরি করে তার ভিতরে মানুষের বসবাস উপযোগী পরিবেশ গড়ার এলাকা।
১১৪. নিউমেরোলজিস্ট: সংখ্যাতত্ত্ববিদ। এটা ঠিক জ্যোতিষ তত্ত্ব নয়। এরা মনে করে মহাবিশ্ব সংখ্যার রাজত্ব এবং ভাগ্য সংখ্যার উপর নির্ভর করে। জ্যোতিষের মতো এও অবৈজ্ঞানিক সংস্কার।
১১৫. গ্রেট পিরামিড: গির্জার বড় পিরামিড। ৪৫০ ফিট উঁচু। ১৩ একর জায়গায় ২.৫ টন করে ওজনের বিশ লাখের উপর পাথরে তৈরি। মূল বিস্ময় সেখানে না। এর গঠন নির্দিষ্ট একটা তারা নির্দেশ করে। একটা বিশেষ রেখা পৃথিবীকে সমান দু ভাগ করে এবং এতে এমনিতেও পচনের বদলে খাদ্য শুকিয়ে যায় প্রায়ই। এর সংখ্যাতাত্ত্বিক অনেক গুরুত্ব ও রহস্য আছে।
১১৬. স্টোনহেঞ্জ: ঝুলন্ত প্রস্তর। ইংল্যান্ডের এক বিস্ময়। বিরাট বিরাট লম্বা পাথরকে বৃত্তাকারে দাঁড় করিয়ে তারও উপরে বিশাল পাথর বসিয়ে বানানো হয়েছিল ঘরের মতো। ৫০০০ বছর আগে। হয়ত উপজাতীয় উপাসনালয়। এখনো সে গঠনটার চল্লিশ ভাগ দাঁড়িয়ে ও দশভাগ পড়ে আছে সেখানে।
১১৭. ইস্টার দ্বীপ: চিলি থেকে ৩৭০০কি.মি, পশ্চিমে ১৬৬ বর্গ কি.মি. র পাথুরে দ্বীপ। প্রথমদিকের অধিবাসীরা মোয়ি নামে প্রচুর অদ্ভুত মূর্তি তৈরি করে। বেশিরভাগ ১১-২০ ফুট, কোনো কোনোটা ৪০ ফুট এবং ওজন ৯০ টন। পুরো মূর্তি আস্ত আগ্নেয় শিলা কেটে তৈরি। কোনোটার মাথায় আলাদা শিলার বিশাল হ্যাট। অত উপরে ওঠানো আজো কঠিন। দ্বীপের অবস্থান-গঠনেও প্রচুর রহস্য।
১১৮. নাজকা লাইনের দিগংশ: খ্রিষ্ট্রের আগে-পরে দক্ষিণ পেরুর এক সভ্যতা নাজকা। মরুভূমিতে বুক কাঁপানো কিছু কাজ আছে। মাইলের পর মাইল লম্বা বিভিন্ন পথ তারা বানায় কঠিন পাথরের বুক চিরে। কিন্তু এর পুরো গঠনে অনেক আকার দেখা দেয়। সবচে বেশি আলোড়ন ফেলে তারার অবস্থান সূচক লাইন ও এদের দিগংশের রহস্যগুলো। আছে প্রচুর জ্যামিতিক হিসাব।
১১৯. ভর: বস্তুর পরিমাণ। ভরের উপর অভিকর্ষ কাজ করলে যা হয় তা ওজন। সহজ ভাবে, প্রায় পঁচানব্বই গ্রাম ভরের বস্তুর ওজন একশ গ্রাম, মাধ্যাকর্ষণ পাঁচ গ্রাম।
১২০. ফিতাকৃমি: আধুনিক কম্পিউটারে যাকে বলে ভাইরাস। জীব নয়। এমন কিছু প্রোগ্রাম যা নির্দিষ্ট কাজ করে অবৈধভাবে।
১২১. চৌম্বকীয় ফিতা: ক্যাসেট ও ফ্লপি ডিস্কে থাকে, এর চৌম্বক অণুকে বদলেই রেকর্ড হয়। এরপর কম্পিউটারে আসে লেজার নিয়ন্ত্রিত কণাভিত্তিক ডিস্ক, যেমন হার্ডডিস্ক, সিডি। এরপর আসবে হালের মতো হলো-মেমোরি-বাস্তব পরিবেশকে সবাসরি অডিও ও ভিডিও হিসেবে বাস্তবে ধরে রাখা ত্রিমাত্রিক স্মৃতি।
১২২. ইউ এস এস সি: ইউনাইটেড স্টেটস স্পেস ক্র্যাফট।
১২৩. সাইকোসিস: মানসিক রোগের সাথে শারীরিক অসুখ। ভয়াল হতে পারে।
১২৪. সিজোফ্রেনিয়া: অযৌক্তিক, বিভ্রান্তিকর পথে চিন্তা করার মানসিক রোগ।
১২৫. প্যারানোয়া: বেশি আত্মগ্লানিতে ভোগা, অতি সতর্কতা, অতি গোপনীয়তার মনোরোগ।
১২৬. গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ: ভূমির কাছাকাছি পানিতে লাখো প্রবাল কীট মরে জমে যদি পানির নিচে বা একটু উপরে উঁচু অঞ্চল গড়ে তবে তা কোরাল রিফ বা প্রবাল প্রাচীর। অস্ট্রেলিয়ার ২০০০ কি. মি.র এ প্রাচীর পৃথিবীতে বৃহত্তম, নয়নাভিরাম।
১২৭. টোভারিশ: কমরেড। কিন্তু শব্দটা আসলে সোভিয়েত বিপ্লবের নেতা ভাদিমির উলিয়ানোফ (ইলেচ) লেনিনের এক বিখ্যাত বক্তব্যের শুরু।
১২৮. কমরেড: এক ঘরের লোক, এক জাহাজের নাবিক। কমুনিস্টরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যকে কমরেড বলে সম্বোধন করে।
১২৯. অ্যারিস্টোক্র্যাট: প্রাচীন অভিজাত শ্ৰেণী। তথাকথিত শ্রেষ্ঠ ও শাসক দল। কিছু গ্রিক দার্শনিক মনে করতেন তিন শ্রেণী প্রয়োজন-প্রথমরা এমন, দ্বিতীয় সৃষ্টিশীল শ্রেণী ও তৃতীয় হবে দাস। কিন্তু বর্তমানের সমাজবিজ্ঞান এমন মনে করে না।
১৩০. লাল দনো নক্ষত্র: রেড জায়ান্ট স্টার। তারার বিভিন্ন বয়স ও স্তর আছে। মধ্যম ভরের কোনো তারকার কোরের সব হাইড্রোজেন হিলিয়াম হয়ে গেলে আর ফিউশন না হওয়ায় বাইরের চাপে নক্ষত্র ভেঙে পড়ে ভেতরে। এবারে অতি তাপ হয়। তাই সামান্য হাইড্রোজেন যে ফিউশন দেয় তাতে নক্ষত্র অতি বিস্তৃত হয়ে পড়ে। ঠিকমতো বিস্তার হলে বাইরের অংশ ঠা-া হয়ে লালচে হয়।
১৩১. সাদা বামন: হোয়াইট ডোয়া। আর জ্বালানি না থাকলে আমাদের সূর্যের আধাআধি ভর ও পৃথিবীর সমান আকার হয়ে যায় তারকার। বেশিরভাগ তারার শেষ জীবন এমন। সূর্যও একদিন শ্বেত বামন হবে।
১৩২. গ্যালাক্টিক কোর: নীহারিকা হল তারকা, ধুলা আর গ্যাসের একেক অঞ্চল যা মহাকর্ষের কারণে একত্র থাকে। শতকোটি থেকে লক্ষকোটি তারা থাকতে পারে। কোনো কোনো গ্যালাক্সি সর্পিল চাকতির মতো। তাই সুনির্দিষ্ট মধ্যাঞ্চল বের করা যায় যেখানে ঘনত্ব বেশি, এরও ভেতরে কিছু নেই, সেখানে সময় তৈরি হবে, বস্তু গঠিত হবে, নক্ষত্র জন্ম নিবে অকল্প সময় পরে। এ রহস্যময় অঞ্চলই কোর বা কেন্দ্র।
১৩৩. ক্যাওস: জটিল অনিয়মিত বহুমাত্রিক বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। এখানে সৃষ্টিপূর্ব এলাকা।
১৩৪. নেবুলা: মহাজাগতিক ধুলা/গ্যাস/মেঘ। আগে গ্যালাক্সিকে এ নাম দেয়া হত ধুলা মনে করে, পরে শব্দটাকে সম্মান করে রেখে দেয়া হয়।
১৩৫. মিল্কি ওয়ে: আমাদের দুধ সাগর নীহারিকা। কমপক্ষে দশ হাজার কোটি নক্ষত্র এতে আছে। এরা পরস্পর আকৃষ্ট হয়ে কাছাকাছি আসতে নিয়ে কেন্দ্রের দিকে পেঁচিয়ে যায় সাপ-কু-লীর মতো, উল্টোমতে, কোর থেকে সৃষ্টি শুরু হয়ে প্যাচাতে প্যাচাতে বাইরের দিকে বেরোয়। তাই বাইরের দিকে সৃষ্টি সুষম, তাই আমরা বাইরের দিকে এবং সভ্য প্রাণী। একলাখ আলোকবর্ষ এর ব্যাস!
১৩৬. শক্তিমান হওয়া আয়োনোস্ফিয়ার: আণবিক বিস্ফোরণে আয়োনোস্ফিয়ারের আয়ন হাজার গুণ বেড়ে গেলে প্রতিফলন ক্ষমতাও হাজার গুণ বাড়ে।
১৩৭. ডিজনিঃ ওয়াল্ট ডিজনি। বিশ্বখ্যাত আঁকিয়ে, প্রযোজক, কার্টুন নির্মাতা, শিশু বিনোদন বিশেষজ্ঞ, ডিজনিল্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা।
১৩৮. লিজ: পাথুরে একটু উঁচু যে অংশ থাকে পানির নিচে, বিশেষত ঝর্না থেকে পাথর পড়ে লিজ সৃষ্টি হয়।
১৩৯. কেনেথ আর্নন্ড: সাতচল্লিশে এ অসামরিক পাইলট ইউ এফ ও দেখে (বলা হয়) প্রথম নাম দেন ফ্লাইং সসার বা উড়ন্ত চাকি। সব ইউ এফ ওরই এখন এ নাম।
১৪০. ডাউনিং স্ট্রিট: সবচে অভিজাত ইংলিশ এলাকা। ১০ নম্বরটি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন। ১১ নং বাসা এক্সচেকার চ্যান্সেলরের।
১৪১. আর্কিওলজিস্ট: নৃতত্ত্ববিদ। মানুষ, তার পরিবেশ-সমাজ-গঠন-সভ্যতার বিশেষজ্ঞ।
১৪২. গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন: যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫০ কি.মি. লম্বা ও ১.৫ কি. মি. চওড়া নয়নাভিরাম গিরিখাত।
১৪৩. ওভাল রুম: ১৮২০ সালের আসবাবে সাজানো মার্কিন প্রেসিডেন্টের নীল ডিম্বাকার রিসিপশন।
১৪৪. ক্রেমলিন: রাশিয়ার মূল প্রশাসনিক ভবন। আগে জারের মহল ছিল।
১৪৫. দ্যিজে ভুঃ কোনো কিছু আগে একবার হয়েছে এমন মনে হওয়া।
১৪৬. ফ্রয়েড: অস্ট্রেলীয় এ চিকিৎসক মানব মনের গতি প্রকৃতি নিয়ে যুগান্তকারী মতবাদ দেন। দেখান, মানুষের মনোরোগের বেশিরভাগ কারণ তার অবচেতন মন। আর অবচেতনতায় ছেলেবেলার কোনো ব্যথা লুকিয়ে থাকে। এছাড়াও মনের তিন ভাগ করেন এবং স্বপ্নের ব্যখ্যা দেন।
১৪৭. আই বি এম: ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস কর্পোরেশন। ল্যাপটপ থেকে মেইনফ্রেম পর্যন্ত নির্মাতা। কম্পিউটার বিবর্তনের নিয়ামক। মেকিনটোশ এর সাথে মিশে আইম্যাক কম্পিউটার করছে।
১৪৮. পোলিওজোয়িক: তিনটা এনসাইক্লোপিডিয়া, তিনটা ডিকশনারি ও একটা ডিকশনারি অব সায়েন্স ঘেঁটে অর্থ বা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
১৪৯. ক্রিটোকিয়াস: তিনটা এনসাইক্লোপিডিয়া, তিনটা ডিকশনারি ও একটা ডিকশনারি অব সায়েন্স ঘেঁটে অর্থ বা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
১৫০.. প্রাণী বা উদ্ভিদের জ্যামিতিক সম্ভাবনাঃ প্রকৃতিতে প্রতিটি জীবের নির্দিষ্ট অনুপাত সব সময় বজায় থাকে, নাহলে পুরো পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়। খাদ্য-খাদক নির্ভরতা ঠিক থাকে না। কিন্তু এ সব ঠিক থাকা না থাকা সবই একটা জ্যামিতিক অনুপাত মেনে চলে, যে কোনো প্রাণী নাক গলালে নষ্ট হয়। বর্তমানে মানুষ।
১৫১. অকেন্দ্রিক: যে জীবকে কোনো কেন্দ্রে ভাগ করা যায় না। যেমন অ্যামিবা।
১৫২. প্লাঙ্কটন: অতি সূক্ষ্ম ভাসা-শ্যাওলা।
১৫৩. বিড়াল গোষ্ঠী: পাঁচ কোটি বছর আগের মোয়াসিক প্রাণীর বংশধর। বাঘ, সিংহ, বিড়াল, বাঘডাস এবং এ জাতীয় প্রাণী।
১৫৪. এটমোস্ফিয়ার: চাপের একক। আবার বায়ুম-লও বোঝায় পুরো বানান লিখলে।
১৫৫. ইউফোরিয়া: অকল্পনীয় ও ব্যাখ্যাহীন আনন্দ বা শিহরণ। কিছু কিছু নেশায় সাময়িকভাবে এ শারীরিক আনন্দ পাওয়া যায়।
১৫৬. স্যামন: খাওয়ার মাছের মধ্যে সবচে দামী। আট প্রজাতির। উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের মাছ।
১৫৭. চামড়ায় চাপ: বাতাস আমাদের প্রচ- চাপ দেয় এবং একই সাথে পৃথিবী প্রচ-ভাবে টানে বলে দেহের বিভিন্ন গ্যাস তরল বা সঙ্কুচিত-বায়বীয় থাকে, বেরিয়ে যায় না। মহাশূন্যে তা নেই, তাই চামড়া ফেটে ভিতরের সব গ্যাস বেরুতে চায়।
১৫৮. স্ট্রেস পিল: যে ট্যাবলেট খেলে শরীর শান্ত হয় ও আঘাত সহ্য করে-কাল্পনিক। আসলে বাস্তব বা অবাস্তব ঝুঁকির মুখে শরীর দ্রুত যে সাড়া দেয় তাই স্ট্রেস। আরেক ভাবে, বিপদ বা মানসিক অশান্তির মুখে শরীর-মন যে প্রস্তুতি নেয় তাই স্ট্রেস রিয়্যাকশন।
১৫৯, মেমোরি ব্লক: ঠিক বর্তমান কম্পিউটার-হার্ড ডিস্কের মতো। কাজ একই, স্মৃতি সংরক্ষণ।
১৬০. রেডিও অ্যাকটিভ: যেসব পরমাণুর নিউক্লিয়াস নিজে নিজে পরিবর্তিত হয়ে হয়ে অন পরমাণুতে পরিণত হতে থাকে সেগুলোই তেজস্ক্রিয়। আলফা বা বিটা কণিকার বিচ্ছুরণ এমনকি গামা রশ্মির বিকীরণও হতে পারে। তাতে পদার্থের নিউক্লিয়াসের ইলেক্ট্রন-প্রোটন-নিউট্রন ভারসাম্য বদলে যায়, তাই হয়ে যায় অন্য পরমাণু। বেরুনো রশ্মিগুলোর ভর ও ভেদ করার ক্ষমতা থাকায় তা ক্ষতিকর।
১৬১. ব্রাউনীয় গতি: রবার্ট ব্রাউন বিখ্যাত উদ্ভিদবিদ, জীবকোষের নিউক্লিয়াসের আবিষ্কারক ও নামকারক, বৃহত্তম ফুল সুমাত্রার তিন ফুট ছড়ানো জায়ান্ট র্যফ্লেসিয়ার নামকারক, ব্রিটিশ মিউজিয়ামের কিউরেটর, উদ্ভিদ ফসিলের গবেষক হলেও তিনি পদার্থবিদ্যার এক বিরাট আবিষ্কার করেছেন। গ্যাসীয় আর তরল পদার্থের মধ্যে সব সময় থাকা গতির আবিষ্কারক ও ব্যাখ্যাকারী। প্রতি গ্যাস কণা স্থিতিস্থাপক, যত তপ্ত থাকে-তত নড়াচড়া করে যেদিক খুশি, একে অন্যকে ধাক্কা দেয় এবং এভাবে গ্যাস পাত্রের উপর ৯০ ডিগ্রী কোণে সব সময় চাপ দেয়-এটাই ব্রাউনীয় গতি।
১৬২. মেইনফ্রেম: বর্তমানে বোঝানো হয় এমন কম্পিউটারকে যা একটা ঘর দখল করে এবং যার সি পি ইউ মোটামুটি ফ্রিজ বা আলমিরার সমান, ব্যবহার করতে পারে ২০-৫০ জন। আকৃতিতে মেশিনের বিভক্তি: সুপার-মেইনফ্রেম-মিনিফ্রেম-মাইক্রো কম্পিউটার। কিন্তু ক্লার্কের সময় সি পি ইউ-কেই মেইন ফ্রেম বলা হত। এ দিয়ে বিরাট ধাতব দেহ বোঝাতো।
১৬৩.. ভ্যাটিক্যান: খ্রিস্টানদের সবচে বড় সম্প্রদায় রোমান ক্যাথলিকদের ধর্মীয় ও প্রশাসনিক সদর, ধর্মগুরু পোপের শহর, ইতালির রোম শহরের ভিতর দেয়াল ঘেরা মাত্র ১০৯ একরের ক্ষুদ্রতম স্বাধীন রাষ্ট্র, দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চিৎকার করলে শোনা যায়। কোনো স্ত্রী প্রজাতির প্রাণী নেই এবং প্রবেশ করেনি শতাব্দী ধরে।
১৬৪. নিউট্রিনো: তিনটা চার্জহীন কণিকার একটা নাম। ভর অত্যন্ত কম, আলোর গতি। ফিউশন বা একাধিক পরমাণু এক হয়ে যাওয়া এবং মৌল কণা ভাঙা-এ দু পথে তৈরি হয়, তাই সূর্য থেকে প্রচুর আসে। তিন ধরনের নিউট্রিনো চার্জ পেলে তিন ধরনের অন্য কণিকায় পরিণত হয়।
১৬৫. স্পেকট্রোস্কোপ: আলোর বর্ণালী দেখার যন্ত্র, যাতে টেলিস্কোপ লাগানো। বর্ণালিবীক্ষণ যন্ত্র।
১৬৬. ইকো সাউন্ডার: এটা শব্দ পাঠায় এবং তা ফিরে এলে সময় এবং শব্দের গতি হিসেব করে সাগরের গভীরতা জানাতে পারে। সাগরের জাহাজগুলোর সব সময় পানির গভীরতা জানতে হয়। ১৬৭. সিসমিক: ভূমিকম্প শুরুর আগে ও তখন ভূগর্ভে শিলাস্তরে ভাঙন হলে এ কম্পন উঠে আসে।
১৬৮, বিম ট্রান্সপোর্টার: কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন। প্রত্যেক বস্তু মৌল কণিকায় গঠিত, তাই যদি হুবহু সে বস্তুর পরমাণুতে মৌল কণিকার অর্বিটসহ সব ঠিকমতো জেনে নেয়া যায়, তাহলে হুবহু আরেকটা বস্তু তৈরি করা সম্ভব হবে অন্য কোনো দূরত্বে এ বস্তুকে বিলীন করে দিয়ে-এ তত্ত্বের ভিত্তিতে সায়েন্স ফিকশনে মানুষকেও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানো যায়। ডিবাগিং: প্রোগ্রাম তৈরির পর তা চূড়ান্ত করার আগে ভুলগুলো দেখা, বের করা ও শুদ্ধ করা বা সারানোর প্রক্রিয়া। সাধারণত প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের সাথেই ডিবাগিং প্রোগ্রাম দেয়া থাকে।
১৬৯. ডিবাগিং: প্রোগ্রাম তৈরির পর তা চূড়ান্ত করার আগে ভুলগুলো দেখা, বের করা ও শুদ্ধ করা বা সারানোর প্রক্রিয়া। সাধারণত প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের সাথেই ডিবাগিং প্রোগ্রাম দেয়া থাকে।
১৭০। টলস্টয় অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক। রাশিয়ান। নীতি ও ধর্মচিন্তাবিদ; সমাজসেবী। যুগ কাঁপানো সার্থকতম ঐতিহাসিক উপন্যাস ওয়্যার এন্ড পিস এবং আনা কারেনিনার লেখক। ক্যানো: জংলীদের লম্বা নৌকা। দেশে আগে এমন তালের খোলের নৌকা ছিল।
১৭২. রেডিয়ান: তেজকণা বিকীরণের একক।
১৭৩, ফাজ: অর্থ খাদক। কিন্তু শুধু টি-২ ব্যাকটেরিওফাজকে বোঝায়। সরল ভাইরাস। শরীরের বাইরে মৃতের মতো, কিন্তু পায়ের দিকের আকশি দিয়ে নির্দিষ্ট ব্যাক্টেরিয়ার গা ধরতে পারলে নিজের ডি এন এ-টাকে চালান করে দেয় ভিতরে। দ্রুত প্রচুর পরিমাণে আলাদাভাবে নানা অঙ্গ গড়ে ওঠে। পুরো ব্যাক্টেরিয়াকে গ্রাস করে মাথা-লেজ-আঁকশি ডি এন এ মিলে মিলে পরিণত হয় নতুন কাজে। তিন-চারশ নতুন ভাইরাসের চাপ সহ্য করতে না পেরে মৃত শরীরটাও ফেটে যায়, ফাজ যায় বেরিয়ে।
১৭৪.. ব্যাকটেরিয়াম: এককোষী জীবন্ত (ভাইরাস জীবন্ত) ক্ষুদ্রতম জীবাণু যা প্রকৃতিতে সাড়া দেয়। অনেক ধরনের। চারপাশ ভরা। একমাত্র এরাই পচনের জন্য দায়ী। উপকারী, অপকারীও।
১৭৫. ডি এন এ: ডি অক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড। কোষ নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোমে ও শক্তি উৎপাদক মাইটোকন্ড্রিয়াতে থাকা প্যাচানো সিঁড়ির মতো একটা বিশাল অণু। এতে জীবটির সব বৈশিষ্ট্যের জিন থাকে।
১৭৬. কুইন্টিলিয়ন: আমেরিকা ও ফ্রান্সের হিসেবে একের পিছনে আঠারো শূন্য থাকলে যে সংখ্যা হয়। অর্থাৎ দশ হাজার কোটি কোটি। জার্মানি ও ব্রিটেনের হিসেবে একের পেছনে ত্রিশটা শূন্য।
১৭৭. সুপারনোভা: এ নক্ষত্র সূর্যের চেয়ে শত কোটি গুণ উজ্জ্বল হয়ে বিস্ফোরিত হয়ে পরে নিভু নিভু হয়। পুরো গ্যালাক্সিকে আলোয় ভাসাতে পারে। কিছু নক্ষত্র বিবর্তনের পথ ধরে সুপারনোভা হয়।
১৭৮. গামা: সবচে ভারী তেজস্ক্রিয় রশি। আলফা আর বিটা এরচে হাল্কা।
১৭৯. নিউট্রন: চার্জহীন কেন্দ্র-কণিকা। ধরা হয় এতে একটা ইলেক্ট্রন ও এক প্রোটন আছে। হাইড্রোজেন ছাড়া এটি সহজলভ্য।
১৮০. আলফা: নিউক্লিয়াস ভেঙে নতুন পরমাণু তৈরির সময় বেরোয় এ তেজস্ক্রিয় কণা। দুই প্রোটন আর দুই নিউট্রন থাকে, তাই একে হিলিয়াম নিউক্লিয়াসও বলে। বিটা কণার চেয়ে ৭৩০০ গুণ ভারী।
১৮১. সব দেবতার পিতা: গ্রিক দেবতা জিউস বা রোমান দেবতা জোভ। অন্য নাম জুপিটার। হারকিউলিসের পিতা, দেবরাজ। মিথোলজির প্রাণপুরুষ। জুপিটারের আরেক অর্থ বৃহস্পতি। দেবতা আর বৃহস্পতি দুজনেই বজ্র দেয়, সবচে বড়-তাই গ্রহরাজকে দেবপিতা বলেছেন লেখক।
১৮২. ফিউশন: একাধিক পরমাণুর নিউক্লিয়াস মিলে গিয়ে নতুন অন্য মৌলিক পরমাণু সৃষ্টির প্রক্রিয়া। সাধারণ পারমাণবিক বিক্রিয়া নয়, নিউক্লিয়ার। হাইড্রোজেন বোমাতে এভাবে নতুন পরমাণু সৃষ্টির সময় ইউরেনিয়ামের নিউক্লিয়ার বা এটম বোমার চেয়েও অত্যন্ত বেশি শক্তি নির্গত হয়।