অধ্যায়: ৮
“ও মা! কী সুন্দর মানিয়েছে তোকে! ফিটিংটাও একদম ঠিকঠাক। ফিগার সুন্দর হলে সবকিছুই মানায়। হ্যাঁ রে, তোর পছন্দ হয়েছে তো!”
“মাসি, এত সুন্দর বুনেছ যে, গ্রীষ্মকালেও পরে ঘুরতে ইচ্ছে করছে।”
“ইয়ার্কি মারিস না তো, ফাজিল কোথাকার! বোস, আজ তোর জন্য পূরণপুরি বানানো করিয়েছি। খা।”
“মাসি, সকালে মা আজ ঢাকাই পরোটা খাইয়ে দিয়েছে যে!”
“তাতে কী! এই বয়সে অত ভেবেচিন্তে খেতে নেই। জয়াকে হাতে ধরে শিখিয়েছি পূরণপুরি কী করে বানাতে হয়। ওর রান্নার হাত ভাল। বসে শান্তিমতো খা তো! দুপুরে না হয় একমুঠো ভাত কম খাবি। সোয়েটারটা খুলে দে, একটা ক্যারিব্যাগে ভরে দিচ্ছি।”
“মাসি, জয়া এখন ঠিক আছে তো!”
“আর বলিস না। সেই আগের বয়ফ্রেন্ডটার জন্য কত কান্নাকাটি, কত গলা শুকোনো, ওমা! দু’মাসও যায়নি, শুনছি আবার একটা জুটিয়ে ফেলেছে। কী ঘেন্না বল তো! এত তাড়াতাড়ি শেলেটের লেখার মতো কাউকে মুছে ফেলা যায় জানতুম না বাবা! পারেও এরা!”
“মাসি, তোমাকে কিন্তু আর মানুষ করা গেল না। একটু আধুনিক হও তো!”
“রক্ষে কর বাবা! আর আমাকে এই এক্সচেঞ্জ অফারের যুগে এনে ফেলিস না তো!”
ফোনটা এল। একটু রাতের দিকে।
“হাই রাজু! আমি ইলিনা।”
“হাই ইলিনা!”
“আমি কি তোমার সঙ্গে একটু কথা বলতে পারি?”
“নিশ্চয়ই ইলিনা।”
“আমি কিন্তু খুব টকেটিভ, ভীষণ বকবক করি। কিন্তু জানো তো, হঠাৎ আমার সব কথা হারিয়ে গিয়েছিল। একদিন কথাগুলো পাখিদের মতো উড়ে উড়ে বহুদূর চলে গেল, আমার কাছে আর একটাও কথা ছিল না। আবার অনেকদিন পর কথা ফিরে আসছে, যেমন পাখিরা বিকেলে ঘরে ফিরে আসে, তেমনই একে-একে ঝাঁকে-ঝাঁকে। এখন আমার ভিতরে কেবল কিচিরমিচির কথা আর কথা। অনেক-অনেক কথা। শুনবে?”
“নিশ্চয়ই। আমি নিজে কথা ভাল বলতে পারি না, কিন্তু চুপটি করে খুব মন দিয়ে শুনতে পারি। আই অ্যাম আ গুড লিসনার।”
“জানো রাজু, আমি যখন বড় হব, আর-একটু বড় হব…”
——