দ্বশীতিতম অধ্যায় – ব্ৰহ্মপুত্রের উৎপত্তিবিবরণ
মার্কণ্ডেয় বললেন,–হে দ্বিজবরগণ! রাজা সগর, ঔৰ্ব ঋষির কথা শুনিয়া হর্ষোৎফুল্লচিত্তে জিজ্ঞাসা করিলেন। ১
ব্ৰহ্মপুত্ৰ লৌহিত্য, অমোঘগর্ভে উৎপন্ন হইলেন কিরূপে? কমলাসন, শান্তনুপত্নীতে উপগত হইলেন কিরূপে? ২
পিতামহ ব্রহ্মার ঔরসে, পরস্ত্রীগর্ভে পুত্র উৎপন্ন হইল কেমন করিয়া? হে দ্বিজোত্তম! আমি এতৎসমস্ত শ্রবণ করিতে ইচ্ছা করি;-বলিতে আজ্ঞা হয়। ৩
ঔর্ব বলিলেন,–হে মহামতি রাজশ্রেষ্ঠ! আমি এই ব্ৰহ্মপুত্ৰ লৌহিত্যের বিস্তৃত উপাখ্যান কীৰ্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। ৪
প্রধান বর্ষ হরিবর্ষে শান্তনু নামে একজন মহাভাগ জ্ঞানবান তপোনিষ্ঠ মুনি ছিলেন। ৫
হিরণ্যগর্ভ-মুনির কন্যা তৃণবিন্দুর আশ্রমে প্রসূতা অমোঘা নাম্নী মহাসতী শান্তনুর ভাৰ্য্যা ছিলেন। ৬
শান্তনু, অমোঘার সহিত, কখন সীমা-পৰ্বত কৈলাসে, কখন চন্দ্রভাগার উৎপাদক বৃহৎ লোহিতসরোবর তীরে, কখন বা গন্ধমাদন পৰ্বতে বাস করিতেন। ৭
একদিন, সেই তপস্বী, নিজ পুষ্পোদ্যানের বনমধ্যে বহুতর পক্ক ফল চয়ন করিতে গমন করেন। ৮
ইত্যবসরে সর্বলোক-পিতামহ ব্রহ্মা, যথায় শান্তনু-ভার্য্যা অমোধ্য বর্তমান ছিলেন, তথায় গমন করিলেন। ৯
সুর-সুন্দরী সদৃশী অতিসুরূপা যুবতী অমোঘাকে দেখিয়া ব্রহ্মা মদন-মোহিত ও ইন্দ্রিয় বিকারপ্রাপ্ত হইলেন। ১০
কাম-পীড়িত ব্ৰহ্মা উদগতেন্দ্রিয় হইয়া সেই মহাসতীকে ধরিবার জন্য সম্মুখে ধাবমান হইলেন। ১১
মহাসতী অমোঘা, বিধাতাকে দৌড়িয়া আসিতে দেখিয়া “না-না, এরূপ করিবেন না” ইত্যাদি বলিতে বলিতে পর্ণ-শালার অভ্যন্তরে যাইলেন। ১২
তৎক্ষণাৎ দ্বার রুদ্ধ করিয়া ভিতর হইতে সক্রোধে ব্রহ্মাকে বলিতে লাগিলেন। ১৩।
আমি মুনিপত্নী, স্বেচ্ছাক্রমে কদাচ গর্হিত কাৰ্য্য করিব না; আর যদি বলাৎকার কর, তাহা হইলে শাপ দিব। ১৪
রাজন! অমোঘা এই কথা বলিলে, শান্তনু মুনির আশ্রমে বিধাতার রেতস্খলন হইল। ১৫
রেতস্থলন হইলে, ব্রহ্মা হংসযানে আরোহণ করিয়া লজ্জাপূর্ণ চিত্তে সত্বর নিজ আশ্ৰমাভিমুখে গমন করিলেন। ১৬
বিধাতা চলিয়া যাইলে শান্তনু, নিজ-আশ্রমে আসিলেন; আসিয়া হংস কুলের পদচিহ্ন দেখিলেন। ১৭
ভূতল-পতিত অনল-সন্নিভ ব্রহ্মবীৰ্য নিরীক্ষণপূর্বক পর্ণশালার অভ্যন্তরে অবস্থিতা অমোঘাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “সুভগে! এখানে কি হইয়াছিল? ১৮
এই যে পক্ষীদিগের পদচিহ্ন এবং অলৌকিক বীৰ্য্য পতিত রহিয়াছে–এ কি?” অমোঘা শান্তনুর কথা শুনিয়া ব্যাকুলভাবে ক্রোধবিবর্ণ-বদনে সেই মুনিবরকে বলিতে লাগিলেন। ১৯
একজন কমণ্ডলুধারী চতুর্ন্মুখ হংস-বিমানে এখানে আসিয়া আমাকে সম্ভোগ করিতে প্রার্থনা করে। ২০
তাহার পর আমি এই পর্ণশালার মধ্য হইতে তাহাকে ভর্ৎসনা করিলে, সে স্খলিত-বীৰ্য্য হইয়া আমার শাপভয়ে এখান হইতে পলায়ন করে। ২১
শান্তনু! যদি সমর্থ হন, তদ্বিষয়ে প্রতিকার করুন। তবে ইহা স্থির জানিবেন, কোন প্রাণীই আমাকে বলাৎকার করিতে সমর্থ নহে। ২২
শান্তনু, অমোঘার কথা শুনিয়া বুঝিলেন, স্বয়ং ব্রহ্মাই এখানে আসিয়া ছিলেন; ইহা স্থির করিয়া ধ্যান করিতে লাগিলেন। ২৩।
জগতের হিতার্থে তীর্থোৎপাদন দেবগণের উপস্থিত কাৰ্য্য; মুনি দিব্য জ্ঞানবলে তাহা অবগত হইয়া এবং তাঁহার পরিণাম চিন্তা করিয়া নিজ পত্নীকে বলিলেন। ২৪-২৫
অমোঘে! ত্রিভুবনের হিতার্থে এবং দেবকার্য্যের সিদ্ধির জন্য আমার অনুমতিক্রমে এই ব্ৰহ্ম-বীর্য পান কর। ২৬
স্বয়ং ব্রহ্মা তোমার নিকটে আসিয়াছিলেন; তোমাকে না পাইয়া মহৎ কাৰ্য সাধনোদ্দেশে এই বীৰ্য্য আমাদিগের উভয়কে সমর্পণ করিয়া নিজালয়ে গিয়াছেন; এখন তুমি আমার কথা রাখ। ২৭
অমোঘা, শান্তনুর সেই কথা শ্রবণে অত্যন্ত লজ্জিত হইয়া মহামুনি স্বামীকে প্রণামপূর্বক তাহাকে সান্ত্বনা দিবার জন্যই বলিতে লাগিলেন। ২৮
তুমি আমার প্রতি ক্ৰোধ করিও না, আমি অপরের বীৰ্য্য ধারণ করিতে পারিব না; সে বিষয় মনে স্থান দিও না। ২৯
যদি নিতান্তই এ কাজ করিতে হয়, তাহা হইলে তুমি এই তেজ পান করিয়া আমাতে নিষেক কর। ৩০
অনন্তর, শান্তনু–অমোঘার এই যুক্তিযুক্ত সত্যবাক্য শ্রবণ করিয়া স্বয়ং সেই ব্ৰহ্ম-বীর্যপানপূর্বক অমোঘার গর্ভে নিষেক করিলেন। ৩১
শান্তনু এইরূপে ব্ৰহ্মতেজ সংক্রামিত করিলে, অমোঘা সতী,–ত্রিভুবনের হিতার্থে গর্ভবতী হইলেন। ৩২
যথাকালে সেই অমোঘার গর্ভ হইতে জলরাশি ভূমিষ্ঠ হইল; দেখেন, সেই জলরাশির মধ্যে রত্নমালা-বিভূষিত, নীলাম্বরপরিধান, কিরীটধারী, ব্রহ্মার ন্যায় আরক্ত গৌরবর্ণ, চতুর্ভূজ, পদ্ম-বিদ্যা-ধ্বজ-শক্তিধারী শিশুমার-মস্তকে আরূঢ় একটি পুত্র; ঐ জলরাশি এবং বর্ণিতদেহ উভয়ই তাঁহার শরীর। ৩৩-৩৪
লোকমঙ্গলকর শান্তনু, তদ্রূপে উৎপন্ন সেই ব্ৰহ্মপুত্ৰকে–চারিটি পর্বতের মধ্যস্থলে স্থাপন করিলেন। ৩
উত্তর পার্শ্বে কৈলাস, দক্ষিণ-পার্শ্বে গন্ধমাদন, পশ্চিমে জারুধিপৰ্বত, আর পূৰ্বে সম্বৰ্তকাদি পৰ্বতশ্রেণী। ৩৬
ব্ৰহ্মপুত্ৰ, সেই পৰ্বতরাজির মধ্যে, কুণ্ডরূপে শারদ শুক্ল-শশধরের ন্যায় ক্রমে বাড়িতে লাগিলেন। ৩৭
ব্রহ্মা, সেই জলরাশি-মধ্যগত নিজ পুত্রের নিকট আসিয়া তদীয় শরীর শুদ্ধির জন্য যথাক্রমে সমুদয় সংস্কার সম্পাদন করিলেন। ৩৮
এইরূপে বহুকাল অতীত হইলে ব্ৰহ্মপুত্র, জলরাশিরূপে পাঁচ যোজন বৃদ্ধি পাইলেন। ৩৯
দেব-দেবী, অপ্সরোগণ, দ্বিতীয় সাগরসদৃশ মনোহর সেই শীত-নিৰ্ম্মল-সলিল ব্ৰহ্মপুত্ৰ কুণ্ডে স্নান ও তদীয় জল পান করিতে লাগিলেন। ৪০
তখন প্রতাপবান জমদগ্নিপুত্র পরশুরাম পিতার অনুমতিক্রমে মাতৃবধরূপ ঘোরতর অকার্য করেন। ৪১
তৎপরে মাতৃহত্যা-পাপ মোচনের জন্য পিতৃ-উপদেশে সেই ব্ৰহ্মপুত্র নামক মহাকুণ্ডে স্নান করিতে যান। ৪২
তথায় স্নান ও তদীয় জল পান করিয়া তিনি মাতৃহত্যা পাপ হইতে মুক্ত হন। তখন জামদগ্ন্য লোকহিতাভিলাষে পরশু-সাহায্যে উপযুক্ত পথ করিয়া ক্ষণমধ্যে ব্ৰহ্মপুত্ৰকে পৃথিবীতে অবতারিত করেন। ৪৩
সগর বলিলেন,–জমদগ্নিপুত্র রাম নিজমাতাকে বধ করিলেন কেন? তাহার মাতার নাম কি? রাম জননী কাহার কন্যা? আর মুনিতনয় পরশু রাম, তাদৃশ মহাবল ক্রুরতর হইলেন কিরূপে? ৪৪
সেই বীরবর এতাদৃশ যুদ্ধকুশল যে, তিনি ক্ষত্রিয়গণকে নির্মল করিয়া ছিলেন। ৪৫
হে মুনিবর! আমি এতৎসমস্ত শ্রবণ করিতে ইচ্ছা করি; যদি গোপনীয় হয়, তথাপি তাহা আমার নিকট যথার্থরূপে কীৰ্ত্তন করুন। ৪৬
ঔৰ্ব বলিলেন,–রাজন! জমদগ্নি-পুত্রের চরিত্র শ্রবণ কর, তিনি যে কারণে ক্রুরতর হইয়াছিলেন ও মাতৃবধ করিয়াছিলেন তাহাও শুন। ৩৭
রাজন্! ভৃগু ব্রহ্মার পুত্র, ঋচীক ভৃগুর পুত্র; পূৰ্ব্বকালে ঋচীক বিবাহ করিবার মানসে বিচরণ করত কান্যকুজে গমন করেন। ৪৮
তিনি অরণ্যমধ্যে জহ্লুমুনির বংশোৎপন্ন নৃপশ্রেষ্ঠ কুশিকপুত্র গাধি তপস্যা করিতেছেন দেখিতে পাইলেন। ৪৯
পুত্রাভিলাষে ভাৰ্য্যাসহ তপঃপরায়ণ অরণ্যস্থিত গাধিরাজের দেবকন্যাসদৃশী গুণবতী এক কন্যা হইয়াছিল, ভৃগুপুত্র ঋচীক সেই কন্যাকে বিবাহ করিবার নিমিত্ত নৃপশ্রেষ্ঠ গাধির নিকট প্রার্থনা করেন। ৫১
অনন্তর রাজা ঋচীককে বলেন,-সুমহাত্মা ব্রাহ্মণকে কন্যাদান করা আমার উচিত বটে, কিন্তু শুল্ক গ্রহণ করা আমাদিগের কুলধর্ম। ৫২
তাহা আবার যে সে শুল্ক নহে–যে ব্যক্তি এক কর্ণ-কৃষ্ণ-বর্ণ চন্দ্রবৎ বিশদ প্রভ এক সহস্র অশ্ব শুল্ক প্রদান করে, তাহাকেই আমরা কন্যাদান করিয়া থাকি। ৫৩
ঋচীক বলিলেন;–হে রাজন্। আমি তোমাকে তাদৃশ এক সহস্র অশ্ব দিব; কিন্তু কিছুকাল প্রতীক্ষা কর, আমি সেই অশ্ব লইয়া আসি। ৫৪
গাধি, ভৃগুপুত্রের নিকট “তাহাই হউক” বলিয়া স্বীকার করিলেন। ঋচীকও অশ্ব আনিবার জন্য কান্যকুব্জের গঙ্গাতীরে গমন করিলেন। ৫৫
ভৃগুপুত্র, তথায় যাদসাং পতি বরুণকে আরাধনা করিয়া বরুণদত্ত সহস্র অশ্ব প্রাপ্ত হইলেন। ৫৬
হে নৃপবর! তিনি যে স্থানে সেই অশ্ব প্রাপ্ত হন, তাহা “অশ্বতীর্থ” নামে বিখ্যাত মহাফলজনক তীর্থস্থান। ৫৭
বরুণদত্ত গঙ্গাজলোত্থিত সহস্র অশ্ব গ্রহণ করিয়া ঋচীকমুনি গাধির নিকট গমন করিলেন। ৫৮
ক্ষীর সমুদ্র, যেমন নারায়ণকে লক্ষ্মীসম্প্ৰদান করিয়াছিলেন গাধি, সহস্র অশ্ব গ্রহণ করিয়া সেইরূপ নিজ দুহিতা কল্যাণী সত্যবতীকে ঋচীক-হস্তে সম্প্রদান করিলেন। ৫৯
ঋচীক, অনিন্দিতা গাধি-নন্দিনীকে ভাৰ্যারূপে লাভ করিয়া হৃষ্টচিত্তে নিজ আশ্রমে ইচ্ছানুরূপ তাঁহার সহিত বিহার করিতে লাগিলেন। ৬০
জ্ঞানী ভৃগু,–পুত্র দার-পরিগ্রহ করিয়াছেন শুনিয়া পুত্রবধূ দর্শনার্থ ঋচীকাশ্রমে আগমন করিলেন; পুত্রবধূ দেখিয়া আনন্দিতও হইলেন। ৬১
দেবগণ-বন্দিত মহর্ষি ভৃগু আসীন হইলে, সেই বধূ-বর যথাযোগ্য তদীয় পূজা করিয়া কৃতাঞ্জলিপুটে তদীয় সম্মুখে দণ্ডায়মান রহিলেন। ৬২
অনন্তর ভৃগু, অত্যন্ত প্রীত হইয়া নিজ পুত্রবধূকে বলিলেন;– “বরবৰ্ণিনি! বাঞ্ছিত বর প্রার্থনা কর; অদেয় বা অত্যন্ত কঠিন হইলেও আমি তোমাকে তাহা প্রদান করিব”। ৬৩
অনন্তর সত্যবতী, আপনার জন্য বেদপারগ তপোনিষ্ঠ পুত্র এবং মাতার জন্য অমিতবিক্রমশালী বীরপুত্র প্রার্থনা করিলেন। ৬৪
ভৃগু, “ইহাই হইবে” বলিতে বলিতেই ধ্যানমগ্ন হইয়া মনে মনে সমস্ত দেখিয়া যত্নসহকারে শ্বাস পরিত্যাগ করিলেন। ৬৫
তাঁহার নিঃশ্বাস-বায়ু হইতে দুইটী চরু নিঃসৃত হইল। ভৃগু পুত্রবধুকে সেই চরু দুইটি দিয়া বলিলেন। ৬৬
পুত্রবধূ সত্যবতি! এই দুইটি চরু গ্রহণ কর, তুমি এবং তোমার মা তোমরা ঋতু-স্নান করিয়া তদ্দিনে ইহা ভোজন করিও। ৬৭
তোমার মা, পুত্র প্রসবের জন্য অশ্বত্থবৃক্ষ আলিঙ্গন করিয়া এই আরক্ত চরুটী ভোজন করিবেন। ৬৮
তুমি, উড়ুম্বর বৃক্ষ আলিঙ্গন করিয়া এই শুক্লবর্ণ চরুটী ভোজন করিবে; তাহাতে তোমার অত্যুৎকৃষ্ট কীর্তিমান তপোধন পুত্র হইবে। ৬৯
ভৃগু এই বলিয়া ইচ্ছামত স্থানে গমন করিলেন, বরবর্ণিনী সত্যবতীও সত্বর ভর্তার সহিত পিতৃমাতৃ-সন্নিধানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। ৭০
অনন্তর, ঋতু-স্নানদিবসে সত্যবতী, ভ্রমক্রমে অশ্বত্থবৃক্ষ আলিঙ্গন করিয়া আরক্তবর্ণ-চরু ভোজন করিলেন, আর তাঁহার মাতা বীৰ্য্য-শূন্য শুক্লবর্ণ চরু ভোজন করিলেন। ৭১
দিব্য-জ্ঞানসম্পন্ন মহর্ষি ভৃগু, সেই বৈপরীত্য অবগত হইয়া তথায় আগমন পূৰ্ব্বক পুত্রবধূকে বলিলেন। ৭২
ভদ্রে! তুমি চরুভোজন ও বৃক্ষালিঙ্গনে বৈপরীত্য করিয়া ফেলিয়াছ। ৭৩
এই জন্য তোমার পুত্র ক্ষত্রিয়াচারী ব্রাহ্মণ হইবে; আর তোমার মাতার পুত্র ব্রাহ্মণাচারী ক্ষত্রিয় হইবে। ৭৪
ভৃগু, এই কথা বলিলে, সাধ্বী সত্যবতী, গুরু ভূগুকে প্রসন্ন করিয়া বলিলেন,–আমার পৌত্র এতাদৃশ হউক। পুত্র যেন ব্রাহ্মণাচার ব্রাহ্মণই হয়। ভৃগু, “তথাস্তু” বলিয়া তথায় অন্তর্হিত হইলেন। ৭৫-৭৬
অনন্তর, গাধি-নন্দিনী সত্যবতী যথাকালে তেজস্বী জমদগ্নিকে প্রসব করিলেন, আর তদীয় জননী তপোনিধি বিশ্বামিত্রকে প্রসব করিলেন। ৭৭
জমদগ্নি, অবিলম্বে চতুর্বেদ অধ্যয়ন করিলেন; আর ধনুৰ্বেদবিদ্যা সেই মহাত্মার স্বতঃসিদ্ধ হইল। ৭৮
বিশ্বামিত্রও অচিরকাল মধ্যে চতুর্বেদ এবং সমস্ত ধনুর্বেদে পারদর্শী হইলেন। ৭৯
অবশেষে তপস্যা-বলে ব্রাহ্মণও হইয়াছিলেন। ৮০
জাজ্বল্যমান তেজস্বী মহাতপা জমদগ্নি মুনি, বেদ-বিদ্যা ও তপঃপ্রভাবে সূৰ্য্যবৎ দীপ্তি পাইতে লাগিলেন। ৮১ দ্বশীতিতম অধ্যায় সমাপ্ত। ৮২