৭.১ সপ্তম কাণ্ড। প্রথম প্রপাঠক

সপ্তম কাণ্ড। প্রথম প্রপাঠক

প্রথম অনুবাক

মন্ত্র- প্রজননং জ্যোতিরগ্নির্দেবতানাং জ্যোতির্বিরাষ্ট্র ছন্দং জ্যোতির্বিরাড়বাচোহগৌ সং তিষ্ঠতে বিরাজমভি সং পদ্যতে তস্মাত্তম্ফোতিরুচ্যতে ঘৌ স্তোমৌ প্রাতঃসবনং বহতো যথা প্রাণসচাপানশ্চ বৌ মাধ্যনিং সবনং যথা চক্ষুশ্চ শ্রোত্রং চ ঘৌ তৃতীয়সবনং যথা বা চ প্রতিষ্ঠা চ পুরুষসম্মিততা বা এষ যজ্ঞোহস্তুরিঃ যং কামং কাময়তে মেতেনাভ্যনুতে সৰ্ব্বং হ্যরিণাহভ্যশ্নতেইগ্নিষ্টোমেন বৈ প্রজাপতিঃ প্রজা অসৃজত তা অগ্নিষ্টোমেনৈব পৰ্য্যগত্তাসাং পরিগৃহীতানাম তরোত্যহপ্রবত তস্যানুহায় রেত আহদত্ত তগর্দভে ন্যমার্ট তস্মার্পতভা ঘিরে অথো আহুড়বায়াং নামর্ভিতি তস্মাদ্বড়বা দ্বিরে অথো আহুরোষধীযু নামাঙিতি তম্মদোষধয়োনহভ্যক্তা রেভ্যথো আহুঃ প্রজাসু মার্ডিতি তস্মাদ্যমৌ জায়েতে তম্মাদখতেরো ন প্র জায়ত আত্তরেতা হি তম্মাহিষ্যনবকুপ্তঃ সৰ্ব্ববেদসে বা সহস্রে বাহবপ্তোহতি হ্যপ্রবত য এবং বিদ্বানগ্নিষ্টোমেন যজতে প্রাজাতাঃ প্রজা জনয়তি পরি প্রজাতা গৃহাতি তস্মাদাহুর্জ্যেষ্ঠযজ্ঞ ইতি প্রজাপতিৰ্ব্বাব জ্যেষ্ঠঃ স হেতেনাগ্ৰেহযজত প্রজাপতিরকা ময়ত প্ৰ জায়েয়েতি স মুখস্ত্রিবৃতং নিরমিমীত তমগ্নির্দৈবতাহসজ্যত গায়ত্রী ছন্দো রথস্তরং সাম ব্রাহ্মণো মনু ব্যাণামজঃ পশুনাং তত্তে মুখ্য মুখতো হ্যসৃজ্যস্তোরসো বাহুভ্যাং পঞ্চদশং নিরমিমীত তমিন্দ্রো দেবতাহসৃজ্যত ত্রিষ্টুচ্ছলো বৃহৎ সাম রাজনন্যা মনুষ্যাণামবিঃ পশুনাং তম্মত্তে বীৰ্য্যাবন্তো বীৰ্য্যাদ্ধ্যসৃজ্যন্তে মধ্যতঃ সপ্তদশং নিরমিমীত তং বিশ্বে দেবা দেবতা অম্বসৃজ্যস্ত জগতী ছন্দো বৈরূপং সাম বৈশ্যো মনুষ্যাণাং গাব পশুনাং তস্মাত্ত আদ্যা অন্নধান্যসৃজ্যস্ত তস্মাদ্ভুয়াংসোহন্যেভ্যো ভূয়িষ্ঠা হি দেবতা অজন্ত পত্ত একবিংশং নিরমিমীত মনুষ্ঠুছদঃ অজ্যত বৈরাজং সাম শূদ্রো মনুষ্যাণমশ্বঃ পশূনাং তস্মাত্তেী ভূতসংক্রামিণাবশ্ব শূদ্র তস্মাচ্ছদ্রো যজ্ঞেইনবকুপ্তো ন হি দেবতা অম্বসৃজ্যত তস্মাৎ পাদাবুপ জীবতঃ পত্তো হ্যসৃজ্যেতাং প্রাণা বৈ ত্রিবৃদৰ্ধমাসাঃ পঞ্চদশঃ প্রজাপতিঃ সপ্তদশস্ত্রয় ইমেলোকা অসাবাদিত্য একবিংশ এতন্বি এতে শ্রিতা এতস্মিন্ প্রতিষ্ঠিতা য এবং বেদৈম্মিন্নেব শ্ৰয়ত এতস্মিন প্রতি তিষ্ঠতি৷ মন্ত্রভাষ্যং (সায়ণাচার্য-কৃতং) বর্ণন্তে সপ্তমে কাণ্ডে মন্ত্রাঃ কেইপ্যশ্বমেধগাঃ। জ্যোতিষ্টোমঃ সোমাগপ্রকৃতিঃ স তু সপ্তধা ॥ অগ্নিষ্টোমমা জ্যোতির্ভেদৈৰ্মলপ্ৰকৃতিরাদিমঃ।। স্তোমা জ্যোতীংষি যস্যাসৌ জ্যোতিষ্টোমঃ স ঈরিতঃ ॥ ত্রিবৃৎপঞ্চদশঃ সপ্তদশঃ স্তোমাস্ক্রয়ো মতাঃ। তথৈকবিংশ এতানি জ্যোতীংষীত্যভ্যধাচ্ছুতিঃ ।। সোহয়মেতাদৃশশা জ্যোতিষ্ঠোম আদৌ বিধীয়তে। [সায়ণাচার্য বলেন–প্রথমেহনুবাকে সোম্যগানামাদ্যো জ্যোতিষ্টোমস্তদীয়সপ্তসংস্থানামাদ্যসংস্থারূপো হগ্নিষ্টোমশ্চেত্যুভয়ং বিহিত। সুতরাং, এই প্রথম অনুবাকে সোমযাগের বিহিত জ্যোতিষ্টোম ও অগ্নিষ্টোম উভয়ের কথা বিবৃত হয়েছে।

মর্মার্থ মনুষ্যগণের মধ্যে প্রজা-উৎপাদন হলো জ্যোতি, (কারণ অপত্যরহিত মনুষ্যের ম্লানমুখ তমঃসদৃশ); দেবতাগণের মধ্যে অগ্নি হলেন জ্যোতি, (কারণ গৃহমধ্যে অন্য দেবতাগণ অপেক্ষা অগ্নিই অধিক জ্যোতির্ময়); ছন্দের মধ্যে বিরাট ছন্দ জ্যোতি। স্তোত্ৰীয়াখ্যা বাক্য সম্বন্ধিনী বিরাট উপলক্ষিতা দশ সংখ্যায় অগ্নি প্রতিপাদিত হয়েছে (সমাপ্যতে)। অতএব সোমযাগের অগ্নিরূপত্ব ও বিরাট্ররূপত্ব সিদ্ধ।–লোকজগতে প্রাণ ও অপান যেমন পুরুষের জীবন নির্বাহ করে, সেইরকম ত্রিবৃৎস্তোম (বহিঃষ্পবমানাখ্যং স্তোমং) ও পঞ্চদশস্তোম প্রাতঃসবন নির্বাহ করে। যেমন চক্ষু ও শ্রোত্র পুরুষের রূপদর্শন ও শব্দগ্রহণ ব্যবহার সম্পন্ন করে, তেমনই পঞ্চদশ স্তোম ও সপ্তদশ স্তোম মধ্যন্দিন সবন নির্বাহ করে। পুরুষের বাগিন্দ্রিয় ও পাদেন্দ্রিয় যেমন বচন ও গমন ব্যবহার সম্পন্ন করে, তেমনই সপ্তদশ ও একবিংশ স্তোম তৃতীয় সবন নির্বাহ করে। এইভাবে স্তোমের দ্বারা নিষ্পন্ন সোম্যগ পুরুষসদৃশ, কিন্তু কোনও অঙ্গে নন নয় (নতু স্থূরিঃ)। এই রকম স্তোমরূপত্বে সিদ্ধ হয়ে জ্যোতিরূপ স্তোমগুলি এখানে ব্যুৎপন্ন হওয়ায় এই জ্যোতিষ্টোম নাম। [১ম কাণ্ডের ৮ম প্রপাঠকের ১৩শ অনুবাকে রাজসূয় প্রকরণে সামব্রাহ্মণের উদাহরণে স্তোমের স্বরূপ কথিত হয়েছে]। সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সম্পন্ন পুরুষ যেমন সকল কর্ম সাধনে সমর্থ হয়, সেইরকম এই সম্পূর্ণ জ্যোতিষ্টোমের দ্বারা সর্ব কামনার প্রাপ্তি ঘটে।–পুরাকালে সৃজনেচ্ছু প্রজাপতি অগ্নিষ্টোম যাগ সাধন পূর্বক প্রজা সৃষ্টি করেন তাঁদের আপন অধীন করেন। এই সম্পর্কে বিদিত হয়ে যিনি অগ্নিষ্টোম যাগের অনুষ্ঠান করেন, সেই অগ্নিষ্টোমযাজী প্রজা প্রাপ্ত হয়ে থাকেন।–ইত্যাদি ॥১।

[সায়ণাচার্য বলেন–অথ তত্র স্তোমানাং মুখ্যত্বং দর্শয়িতুং দ্বিতীয়েইনুবাকে স্তোমানাং সম্ভয়কারিত্বং তাবদাদৌ দর্শয়তি।-পূর্ব অনুবাকে যে স্তোমের কথা বলা হয়েছিল, এই দ্বিতীয় অনুবাকে সেই স্তোমের প্রশংসা প্রসঙ্গে সেগুলির যুক্তকরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে]

.

দ্বিতীয় অনুবাক

মন্ত্র- প্রাতঃসনে বৈ গায়ত্রণ ছন্দসা ত্রিবৃতে তোমায় জ্যোতির্দধদেতি ত্রিবৃতা ব্রহ্মবর্ডসেন পঞ্চদশায় জ্যোতির্দধদেতি পঞ্চদশেনৌজসা বীণে সপ্তদশায় জ্যোতির্দধদেতি সপ্তদশন প্রাজাপত্যেন প্রজননেনৈকবিংশায় জ্যোতির্মধদেতি স্তোম এব তৎস্তোমায় জ্যোতির্দধদেত্যথো ম এব স্তোমমভি প্রণয়তি যাবন্তো বৈ তোমাস্তাবন্তঃ কামাস্তাবন্তো নোকাস্তাবন্তি জ্যোতীংয্যেতাবত এব স্তোমানেবতঃ কামানেতাবতো লোকানেবন্তি জ্যোতীংষ্যব রুন্ধে ॥ ২॥

মর্মার্থ– উল্লিখিত নির্দেশগুলি কেবলমাত্র যজ্ঞসাধনের ক্ষেত্রেই আবশ্যক; সুতরাং এগুলির মর্মার্থ এখানে অপ্রয়োজনীয় ॥২॥

 [সূত্রকারের উক্তি–অগ্নিষ্টোমঃ প্রথমযজ্ঞোহতিরামেকে পূর্বং সমামন্তি–অতিরাত্র হলো অগ্নিষ্টোমের প্রথম যজ্ঞ। এখানে সেই অতিরাত্রের বিধি ও সংশ্লিষ্ট স্তোমসমূহের প্রশাংসা বিধৃত হয়েছে]

.

তৃতীয় অনুবাক

মন্ত্র- ব্ৰহ্মবাদিনো বদন্তি স ত্বৈ যজেত যোহগ্নিষ্টোমেন যজমানোহথ সৰ্বস্তোমেন যজেতেতি যস্য ত্রিবৃতমন্তর্যন্তি প্রাণাস্তস্যান্তৰ্যন্তি প্রাণেষু মেহপ্যসদিতি খলু বৈ যজ্ঞেন যজমানো যজতে যস্য পঞ্চদশমন্তর্যন্তি বীৰ্য্যং তস্যান্তৰ্যন্তি বীর্যে মেংপ্য সদিতি খলু বৈ যজ্ঞেন যজমানো যজতে যস্য সপ্তদশমন্তর্যন্তি প্রজাং তস্যান্তবন্তি প্রজায়াং মেহপ্যসদিতি খলু বৈ যজ্ঞেন যজমানো যজতে যস্যৈকবিংশমর্যন্তি প্রতিষ্ঠাং তস্যান্তৰ্যন্তি প্রতিষ্ঠায়াং মেইপ্যসদিতি খলু বৈ যজ্ঞেন যজমানো যজতে যস্য ত্ৰিণমন্তং তস্য নক্ষত্রিয়াং চ বিরাজমন্তর্যন্ত্যতু মেহপ্যসন্ন ক্ষত্রিয়ায়াং চ বিরাজীতি খলু বৈ যজ্ঞেন যজমানো যজতে যস্য ত্রয়স্ত্রিংশমর্ষন্তি দেবতাস্তস্যান্তস্তি দেবতাসু মেহপ্যসদিতি খলু বৈ যজ্ঞেন যজমানো যজতে যো বৈ স্তোমানামবমং পরমং গচ্ছন্তং বেদ পরমতামেব গচ্ছতি ত্রিবৃদৈ স্তোমানামবমস্ত্রিবৃৎ পরমো য এবং বেদ পরমতামেব গচ্ছতি ॥৩ ।

মর্মার্থ- যে পুরুষ অগ্নিষ্টোমের অনুষ্ঠান করেন, তিনি পুনরায় সেই সকল স্তোমের দ্বারা যাগ করলে মুখ্য যাগকারী হন (যষ্টেতি)–ব্রহ্মবাদীগণ বলেন। সেই নিমিত্ত সর্ব স্তোমের দ্বারা অনুষ্ঠান করা বিধি। অগ্নিষ্টোমে ত্রিবৃৎ ইত্যাদি চারটি এবং অতিরাত্রে ব্রিণব ও ত্রয়স্ত্রিংশ নামে দুটি স্তোম বিদ্যমান।–যে যজমানের যাগে ঋত্বিকগণ ত্রিবৃৎ স্তোমকে অন্তরিত (অর্থাৎ পরিহার) করেন, সেই যাগে প্রাণরূপ স্তোমের পরিহারে তাঁরা যজমানের প্রাণও অন্তরিত করেন। এরকম করতে নিষেধ করা হয়েছে। অয়ং যজমানো হি মে ইত্যাদি, অর্থাৎ এই যজমান প্রাণযুক্ত হোন এইরূপে যজ্ঞের অনুষ্ঠান অভিপ্রেত; সেই নিমিত্ত ত্রিবৃৎস্তোম অবশ্যম্ভাবী।–এইরকম পঞ্চদশস্তোমের অন্তরায়ে যজমানের বীর্যের অন্তরায় ঘটে। এরকম করতে নিষেধ করা হয়েছে। এই যজমান বীর্যযুক্ত হোন এইভাবে যজ্ঞের অনুষ্ঠান অভিপ্রেত; সেই কারণে পঞ্চদশস্তোম অপরিহার্য।–এইভাবে সপ্তদশ স্তোমের অন্তরায়ে যাতে যজমানের প্রজাবর্গের অন্তরায় না ঘটে; কিংবা একবিংশস্তোমের অন্তরায়ে যাতে যজমানের প্রতিষ্ঠার অন্তরায় না ঘটে; কিংবা ব্রিণবস্তোমের অন্তরায়ে যাতে যজমানের ঋতুসমূহের অন্তরায় না ঘটে; কিংবা ব্রয়স্ত্রিংশস্তোমের অন্তরায়ে যাতে যজমানের দেবতাগণ অন্তর্হিত না হন; সেইভাবে যজ্ঞানুষ্ঠান কর্তব্য ॥৩॥

[সায়ণাচার্য বলেন–তৃতীয় অনুবাকে একদিন সাধ্য অতিরাত্র যাগের কথা বলা হয়েছে। চতুর্থ অনুবাকে দ্বিরাত্র যাগের কথা বলা হয়েছে।চত্বারো হি দ্বিরাত্রভেদাঃ]

.

চতুর্থ অনুবাক

মন্ত্র- অঙ্গিরসো বৈ সমাসত তে সুবর্গং লোকমায়তেষাং হবিম্মাংশ্চ হবিকৃচ্চাহীয়েতাং তাবকাময়েতাং সুবর্গং লোকমিয়াবেতি বেতং দ্বিরামপশ্যতাং মাইহরতাং তেনাযজেতাং ততো বৈ তৌ সুবর্গং লোকামৈতাং য এবং বিদ্বান দিরাত্রেণ যজতে সুবৰ্গমেব লোকমেতি বৈতাং পূৰ্বেণাহ্নাহগচ্ছতামুত্তরেণ অভিপ্লবঃ পূৰ্ব্বমহর্ভবতি গতিরুত্তরং জ্যোতিষ্টেমোহগ্নিষ্টোমঃ পূর্বমহর্ভবতি তেজস্তেব রুন্ধে সন্তো মোহতিরাত্র উত্তরং সৰ্ব্বস্যাহপ্তৈ সর্বস্যাবরুদধ্যৈ গায়ত্ৰং পুৰ্ব্বেহহৎসাম ভবতি তেজো বৈ গায়ত্রী গায়ত্রী ব্রহ্মবর্ডসং তেজ এব বহ্মচঁসমাত্মন্ধন্তে ত্ৰৈষ্ঠুভমুত্তর ওজো বৈ বীৰ্য্যং ত্রিষ্টুগোজ এব বীৰ্যমাত্মন্ধত্তে রথন্তবরং পূৰ্বে অহসাম ভবতীয়ং বৈ রথস্তরমস্যামের প্রতি তিষ্ঠতি বৃহদুত্তরেহসৌ বৈ বৃহদমুয্যামের প্রতি তিষ্ঠতি তদাহুঃ কৃ জগতী চানুষ্টুপচেতি বৈখানসং পূর্কেহঁহসাম ভবতি তেন জগত্যৈ নৈতি যোড়শ্যত্তরে তেনানুষ্ঠুভোহথাহু্যৎ সমানেহৰ্দ্ধমাসে স্যামন্য তরস্যাহ্নে বীৰ্য্যমনু পদ্যেত্যেমাবাসারাং পূর্বমহর্ভরত্যুত্তরস্মিমুত্তরং নানৈবাৰ্দ্ধমাসয়োর্ভবততা নানাৰীৰ্যে ভবতো হবিষ্মন্নিধনং পূর্বমহর্ভবতি হবিস্তৃন্নিধনমুত্তরং প্রতিষ্ঠিত্যৈ ॥৪॥

মর্মার্থ– অঙ্গিরস মহর্ষিগণ যখন সত্র (যজ্ঞ) অনুষ্ঠিত করে স্বর্গপ্রাপ্ত হন, তখন তাদের মধ্যে হবিষ্মন্ ও হবিস্তৃৎ নামে দুজন পুরুষ স্বর্গপ্রাপ্তির পক্ষে হীন ছিলেন, অর্থাৎ স্বর্গলাভের অনুপযুক্ত ছিলেন। তারা তখন স্বর্গপ্রাপ্তির কামনায় পুনরায় দ্বিরাত্র নামে আখ্যাত যাগ সাধন পূর্বক স্বর্গ প্রাপ্ত হন। অতএব অন্যেও স্বর্গপ্রাপ্তির নিমিত্ত দ্বিরাত্র যাগ করেন। (এরপর দিনবিশেষ, স্তোমবিশেষ, দিনভেদে সামবিশেষ ইত্যাদি কথিত হয়েছে) ॥৪॥

[সায়ণাচার্য  বলেন–অথ ত্রিরাত্রং বিধাতুং কাচিদারব্যায়িকোচ্যতে। অর্থাৎ–এই পঞ্চম অনুবাকে ত্রিরাত্র যাগের বিধান প্রসঙ্গে সৃষ্টির ক্ৰম কথিত হয়েছে]

.

পঞ্চম অনুবাক

মন্ত্র- আপো বা ইদমগ্রে সলিলমাসীত্তস্মিন্ প্রজাপতিৰ্বায়ুৰ্ভুত্বাহচরৎ স ইমামপশ্যত্তাং বরাহো ভূত্বাহহরাং বিশ্বকর্মা ভূত্বা ব্যামার্ট সাইপ্ৰথত সা পৃথিবীভত্তং পৃথিব্যে পৃথিবিত্বং তস্যামশ্রাম্যৎ প্রজাপতিঃ স দেবানসৃজত বসূন রুদ্ৰানাদিত্যান্তে দেবাঃ প্রজাপতিমব্রুবন প্র জায়াম ইতি সোহব্রবীৎ যথাহহং যুম্মাংশুপসাহসৃক্ষ্যেবং তপসি প্রজননমিচ্ছব্বামিতি তেভ্যোহগ্নিমায়তনং প্রাযচ্ছদেতেনায়তনেন শ্রাম্যতেতি তেহগিনায়তনেনাশ্ৰাম্যন্তে সম্বৎসর একাং গামসৃজন্ত তাং বসুভ্যো রুদ্রেভ্য আদিত্যেভং প্রাচ্ছনেতাং রক্ষধ্বমিতি তাং বসবো রুদ্ৰা আদিত্য অরক্ষন্ত সা বসুভ্যো রুদ্রেভ্য আদিত্যেভ্যঃ প্রাজায়ত ত্রণি চ শতানি ত্রয়স্ত্রিংশতং চাথ সৈব সহস্রতম্যভবত্তে দেবাঃ প্রজাপতিমব্রুবসহস্রেণ নো যাজয়েতি সোহগ্নিষ্টোমেন বসুনযাজয়ত্ত ইমং লোকমজয়ন্তচ্চাদদুঃ স উথ্যেন রুদ্রানজয়ন্তেহস্তরিক্ষমজয় যুচ্চাদদুঃ সোহতিরাত্রেণাহদিত্যানযাজয়ত্তেহমুং লোকমজয়ন্তচ্চাদদুস্তদন্তরিক্ষম ব্যবৈত তস্মাদ্ৰা ঘাতুকা অনায়তনা হি তস্মাদাদু শিথিলং বৈ মধ্যম মহস্ত্রিরাত্রস্য বি হি তদবৈতেতি ত্রৈভং মধ্যমস্যাহ্ন আজ্যং ভবতি সংযুনানি সূক্তানি শংসতি ষোড়শিনং শংসত্যহ্নো ধৃত্যা অশিথিলম্ভাবায় তম্মাত্রিরাত্র স্যাগ্নিক্টোম এব প্রথমমহঃ স্যাদঘোথথ্যাহথাতিরাত্ৰ এষাং লোকানাং বিধৃত্যৈ শ্রীণিত্রীণি শতন্যচীনাহমব্যবচ্ছিন্নানি দদাতি এষাং লোকানামনু সন্তত্যৈ দশতং ন বিচ্ছিন্দ্যাধিরাজং নেদিচ্ছিনদানীত্যথ যা সহস্রতম্যাসীত্তস্যামিশ্চ বিষ্ণুশ্চ ব্যাযচ্ছেতাং স ইন্দ্ৰোহমন্যতানয়া বা ইদং বিষ্ণুঃ সহস্রং বক্ষত ইতি তস্যামকল্পেতাং দ্বিভাগ ইন্দ্ৰস্তৃতীয়ে বিষ্ণুদা এযাহব্যচ্যত উভা জিগ্যথুরিতি তাং বা এমচ্ছাবাকঃ এব শংসত্যথ যা সহস্রতমী সা হোত্রে দেয়েতি হোতারং বা অভ্যতিরিচ্যতে যতিরিচ্যতে হোতাহনাপ্তস্যাপয়িতাহথাহহুরুন্নেত্রে দেয়েত্য তিরিক্তা বা এষা সহস্রস্যাতিরিক্ত উন্নেতর্বিজামথাইহুঃ সর্বেভঃ সদস্যেভ্যো দেয়েত্যথাহহুরুদাকৃত্যা সা বশং চরেদিত্যথাহহুব্রহ্মণে চাগ্নীধে চ দেয়েতি দ্বিভাগং ব্ৰহ্মণে তৃতীয়মগ্নীধ ইন্দ্রো বৈ ব্রহ্মা বৈষ্ণবোহল্পীদ্যথৈব তাবকল্পেতা মিত্যথাহহুর‍্যা কল্যাণী বহুরূপা সা দেয়েত্যযাহহুৰ্ষা দিরূপোভয়তনী সা দেয়েতি সহস্য পরিগৃহীত্যৈ তদ্বা এতৎসহস্যায়নং সহস্রং স্তোত্রীয়াঃ সহস্রং দক্ষিণাঃ সহস্রসম্মিতঃ সুবর্গো লোকঃ সুবর্গস্য লোস্যাভিজিত্যৈ ॥৫॥

মর্মার্থ- (পৃথিবীর উৎপত্তি প্রসঙ্গে আখ্যায়িকা)–ইদানীং দৃশ্যমান এই গিরি-নদী-সমুদ্রযুক্ত পৃথিবী উৎপত্তির পূর্বে কেবল সলিল (জল) ছিল। সেই সলিলে কোন প্রাণীর অস্তিত্বমাত্র ছিল না। তখন প্রজাপতি মূর্ত (ভূতাত্মক) শরীরের অবস্থানযোগ্য স্থানের অভাবে বায়ুরূপ ধারণ পূর্বক সেই সলিলের সর্বত্র বিচরণ করতে থাকেন। এবং এইভাবে বিচরণ করতে করতে সেই সলিলে নিমগ্ন ভূমি দর্শন করে স্বয়ং বরাহরূপী হয়ে দন্তের অগ্রভাগের দ্বারা সেই ভূমিকে ধারণ করে সলিলের উপরে আহরণ করে আনেন। এবং আহরণের পর রাহরূপ পরিত্যাগ করে বিশ্বকর্মা রূপধারী হয়ে সেই ভূমিকে বিশেষভাবে পরিষ্কার (মার্জনং) পূর্বক তার দ্রবদ্রব্য (বা আর্দ্রতা) অপনীত করে তাকে বিস্তৃত করেন। তখন সর্বপ্রাণীর আধারভূতা এই পৃথিবী দৃশ্যমান হয়। সেই হতে এই পৃথিবী নামটি সম্পন্ন হয়।–(অতঃপর ক্রমে দেবসৃষ্টি ও গোসৃষ্টি দেখানো হচ্ছে)–তখন সেই ভূমিতে আপন মূর্তিতে অবস্থিত হয়ে সৃষ্টি করতে ইচ্ছুক হয়ে তপস্যা করতে থাকেন। সেই তপস্যার সামর্থ্যে তিনি প্রথমে বসুগণ, রুদ্রগণ ও আদিত্যগণকে সৃষ্টি করেন। সেই বসু ইত্যাদি দেববর্গ প্রজাপতির প্রতি প্রজা উৎপাদনের উপায় জিজ্ঞাসা করলেন (পপ্রচ্ছ)। প্রজাপতি তাদের তপস্যার দ্বারা প্রজা উৎপাদনের উদ্দেশে তপস্যার আধারভূত অগ্নির উদ্দেশে হোম করতে বললেন। তারা সম্বৎসর ব্যাপী সেই হোম সাধন পূর্বক শেষে একটি গাভী সৃষ্টি করলেন (গামসৃজন্ত)। প্রজাপতি সেই গাভীটিকে রক্ষার নিমিত্ত বসুদেবতাগণকে দান করলেন। বসুগণের দ্বারা রক্ষিতা সেই গাভী বসুগণের নিমিত্ত তিনশত তেত্রিশ সংখ্যক গাভী উৎপাদন করে (গবাং শতত্রয়ং ত্রয়স্ত্রিংশতং চোৎপাদয়ামাস)। তখন প্রজাপতি (সেই পূর্বোক্ত) গাভীটি রক্ষার নিমিত্ত রুদ্রদেবতাগণকে দান করলেন। সেই গাভী রুদ্রগণের নিমিত্তও সেইরকম (অর্থাৎ তিনশ তেত্রিশটি) গাভী উৎপাদন করলো। তখন প্রজাপতি সেই গাভীটি রক্ষার নিমিত্ত আদিত্যদেবতাগণকে দান করলে সেই গাভী আদিত্যগণের নিমিত্তও সমসংখ্যক (অর্থাৎ তিনশ তেত্রিশটি) গাভী উৎপাদন করে। এই তিনটি পর্যায় গ্রহণ পূর্বক শ্রুতি একটি বাক্যে যুক্ত করে। তিন ভাবে বাক্যকে বিভাজিত করে যুক্ত করণীয় (তত্র ত্রেধা বাকং বিভজ্য যোজয়িতব্য এবং সত্যেকোনসহস্রং গাবং সম্পন্ন–এইভাবে এক-কম সহস্র অর্থাৎ নয়শত নিরানব্বই সংখ্যক গাভী সম্পন্ন হলো এবং সেই সঙ্গে পুর্বোক্ত গাভীটি সংযুক্ত করে সহস্র সংখ্যার পুরণ হয়েছে।–(সহস্র দক্ষিণাযুক্ত ত্রিরাত্ৰগের সাধন) বসু-রুদ্র-আদিত্যগণ সকলে মিলিত হয়ে অতঃপর প্রজাপতির নিকট গো-সহস্র দক্ষিণাযুক্ত যজ্ঞ সাধনের নিমিত্ত প্রার্থনা করেন। সেই প্রজাপতি সেই তিন-নামী দেবগণেকে তিন ভাগে বিভাজিত করে তিন দিনক্রমে অগ্নিষ্টোম, উথ্য ও অতিরাত্র যাগানুষ্ঠানের পরামর্শ দান করলেন। সেই মতো তাঁরা দ্বাদশস্তোত্র অগ্নিষ্টোম, পঞ্চদশস্তোত্র উকথ্য এবং একোনত্রিংশ-স্তোত্র অতিরাত্র যাগের অনুষ্ঠান করলেন। এবং এর দ্বারা তারা তিন লোক জয় করেন (তৈর্লোকত্রয়মজয়) ও নিজ নিজ গোধন দক্ষিণারূপে ঋত্বিগণকে দান করেন। (এরপর ত্রিরাত্রযাগের হবিৰ্বিশেষ, সহস্র দক্ষিণাদানের বিকল্প নিয়ম, সহস্ৰদানোপেত কর্মের প্রশংসা ইত্যাদি কথিত হয়েছে) ॥৫॥

[সায়ণাচার্য বলেন-যষ্ঠেহনুবাকে সহস্রতমীং প্রশস্য তদঙ্গভূতং হোমাদিকমুক্ত। অর্থাৎ-ষষ্ঠ অনুবাকে সহস্র দক্ষিণাযুক্ত অতিরাত্রের প্রশংসা পূর্বক তার অঙ্গভূত হোম ইত্যাদি কথিত হয়েছে ]

.

ষষ্ঠ অনুবাক

মন্ত্র- সোমো বৈ সহমবিত্তমিন্দ্রোহবিত্তেী যনো ন্যাগচ্ছত্তাবীদ মেহত্ৰা পীত্য হী ইত্যক্রতাং স যম এক্যাং বীৰ্য্যং পৰ্য্যপশ্যদিয়ং বা অস্য সহস্য বীর্যং বিভীতি তাবব্রবীদিয়ং মমাতেবয়োরিতি তাবব্রতাং সৰ্বে বা এতদেতস্যাং বীৰ্য্যম পরি পশ্যামোহংশমা হরাম ইতি তস্যামংশমাহহরম্ভ তামঞ্জু প্রবেশয়সোমায়োদেহীতি সা রোহিণী পিঙ্গলৈকহায়নী রূপং কৃত্বা ত্রয়স্ত্রিংশতা চ ত্রিভিশ্চ শতৈঃ সহোদৈত্তম্মদ্রোহিণ্যা পিঙ্গলয়ৈকহায়ন্যা-সোমং ক্রীণীয়াদ্য এবং বিদ্বান রোহিণ্যা পিঙ্গলয়ৈকহায়ন্যা সোমং ক্রীণতি ত্রয়স্ত্রিংশতা চৈবাস্য ত্রিভিশ্চ শতৈঃ সোমঃ ক্রীতত ভবতি সুক্ৰীতেন যজতে তামন্স প্রবেশয়ন্নিায়োদেহীতি সা রোহিণী লক্ষ্মণা ষষ্ঠৌহী বাত্রয়ীং রূপং কৃত্বা ত্রয়স্ত্রিংশতা চ ত্রিভিশ্চ শতৈঃ সহোদৈত্তম্মদ্রোহিণীং লক্ষ্মণাং পণ্ঠেীহীং বাত্রীং দদ্যাদ্য এবং বিদ্বান রোহিণীং লক্ষ্মণাং ষষ্ঠেীহীং বাত্রীং দদাতি ত্রয়স্ত্রিংশ চ্চৈস্য ত্রীণি চ শতানি সা দত্তা ভবতি তাম বেশয়ন্যমায়োদেহীতি সা জরতী মূখা তজ্জঘন্যা রূপং কৃত্বা এয়স্ত্রিংশতা চ ত্রিভিশ্চ শতৈঃ সহোদৈত্ত আজ্জরতীং মূখাং তজ্জঘন্যামনুস্তরণীং কুৰ্বীত য এবং বিদ্বাঞ্জরতীং মূখাং তজ্জঘন্যামনুস্তরণীং কুরুতে জয়স্ত্রিং শচ্চৈবাস্য ত্রীণি চ শতানি সাহমুষ্মিংল্লোকে ভবতি বাগেব সহস্রতমী তস্মাৎ বরো দেয়ঃ সা হি বরঃ সহস্রামস্য সা দত্তা ভবতি তস্মাদ্বয়ো ন প্রতিগৃহ্যঃ সা হি বরঃ সহস্রমস্য প্রতিগৃহীতং ভবতীয়ং বর ইতি ক্ৰয়াদথান্যাং ক্ৰয়াদিয়ং মমতি তথাহস্য তত্সহস্রমপ্রতিগৃহীতং ভবতু ভয়তএনী স্যাত্তদাহুরন্যত এনী স্যাৎ সহস্রং পরস্তাদেমিতি যৈব বরঃ কল্যাণী রূপসমৃদ্ধা সা স্যাৎ বরঃ সমৃদধ্যৈ তামুত্তরেণাহগ্নীং পৰ্য্যাণীয়াহহবনীয়স্যান্তে ত্রোণকলশমব ঘ্রাপয়েদা জিঘ্ৰ কলশং মহুরুধারা পয়স্বত্যা ত্বা বিশবিঃ সমুদ্ৰমিব সিন্ধবঃ সা মা সহ আ ভজ প্রজয়া পশুভিঃ সহ পুনৰ্মাহবিশতাদ্র চিরিতি প্ৰজযৈবনং পশুভী রয্যা সম্ অৰ্দ্ধয়তি প্রজাবান পশুমান্ রয়িমান ভবতি য এবং বেদ তয়া সহাহগ্নীপ্ৰং পরেত্য পুরস্তাৎ প্রতীচ্যাং তিষ্ঠ্যাং জুহুয়াদুভা জিগ্যথুন পরা জয়েথে ন পরা জিগ্যে কতরশ্চনৈনোঃ ইন্দ্ৰশ্চ বিষ্ণো যদপশৃধেথাং ত্রেধা সহস্রং বি তদৈরয়েথামিতি ত্রেধাবিভক্তং বৈ ত্রিরাত্রে সহস্রং সাহীমেবৈং কয়রাতি সহস্রস্যৈবৈনাং মাত্রা করোতি রূপাণি জুহোতি রূপৈরেবৈং সমৰ্দ্ধয়তি তস্যা উপোয় কর্ণমা জপেদিড়ে রহেদিতে সরস্বতি প্রিয়ে প্রেয়সি মহি বিশ্রত্যেতানি তে অগ্নিয়ে নামানি সুকৃতং মা দেবেষু ক্ৰতাদিতি দেবেভ্য এবৈনমা বেদয়ত্যন্বেনং দেবা বুধ্যন্তে ॥৬॥

 মর্মার্থ- পুরাকালে কোনও সময়ে সোমদেব সহস্র গো লাভ করেছিলেন। তাঁর অনুগমন করে ইন্দ্রদেবও সেইরকম সহস্র গো লাভ করেছিলেন। যমও সেই সোম ও ইন্দ্রের নিকট হতে ঈঙ্গিত ভাগ আদায়ের নিমিত্ত তাদের প্রতি আগমন করলেন; এবং বললেন-আমাকেও কিছু ভাগ প্রদান করো। তাঁরা সাদরে তা অঙ্গীকার (বা স্বীকার করলে যম তাঁদের দ্বিসহস্র গো-র মধ্যে হতে পরীক্ষাপূর্বক একটি গো-কে সমর্থ বলে নির্ধারণ করলেন। তখন ইন্দ্রদেব ও সোমদেব বললেন–আমরা সকলে মিলিত হয়ে এই উত্তম গবির শক্তি (বীর্য) পরীক্ষা করে এর এক একটি অংশ স্বীকার (গ্রহণ) করব–এই রকম বিচারপূর্বক তারা সেইরকমই করতে উদ্যোগী হলেন। (সোমের প্রথম অংশ হরণের প্রকার)–তারা তিনজনে মিলিত হয়ে সেই উত্তমা গাভীটিকে জলে প্রবেশ করালেন এবং বললেন, সোমদেবের যেমন রূপ, সেইরকম যোগ্য রূপ গ্রহণ করে জল হতে উদ্গত হও। তখন সেই গাভী জল হতে উগমনের বেলায় তাদের প্রার্থিত রূপ গ্রহণ করে আগত হলো। (তার রূপ স্পষ্টীকৃত হলো) রোহিণী শরীরা অর্থাৎ লোহিতবর্ণা, পিঙ্গলাক্ষী ও এক সম্বৎসর-বয়স্কা এইরকম লাবণ্যযুক্তা ও রূপশালিনী হয়ে সে জল হতে উদ্গত হলো এবং সঙ্গে এইরকম আরও তিনশত তেত্রিশসংখ্যক গাভী আনয়ন করলো। যেহেতু সোমদেবের নিমিত্ত সে রোহিণী ইত্যাদি রূপ ধারণ করেছিল; সেই কারণে রোহিণীশরীরা (লোহিতবর্ণা), একবৎসর-বয়স্কা ও পিঙ্গলচক্ষুবিশিষ্টা গাভীর বিনিময়ে সোম ক্রয় করা হয়। তার দ্বারা সোম ক্রীত হওয়ার অর্থ তিনশত তেত্রিশটি গাভীর দ্বারা সোমের ক্রয়। সেই নিমিত্ত সুক্ৰীত সোমের দ্বারা যায় অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।–(অতঃপর ইন্দ্র কর্তৃক সেই গাভীর অংশহরণের প্রকার দেখানো হচ্ছে)–সেই রোহিণী লক্ষণা অর্থাৎ শৃঙ্গ-পুচ্ছ ইত্যাদি অঙ্গসৌষ্ঠবযুক্ত চতুর্বর্ষা (পষ্ঠৌহী), দর্শনমাত্রই মানসক্লেশ-অপহন্ত্রী ইন্দ্রের যোগ্য রূপা গাভী ইন্দ্রের গৃহীতব্যা হলো। সুতরাং এই রূপবিশিষ্টা গাভীই যজ্ঞের দক্ষিণারূপে প্রদেয়। (অতঃপর যমের অংশহরণের প্রকার)–জরতী অর্থাৎ বৃদ্ধা, মূখা অর্থাৎ রোষণশীলা, জঘন্যা অর্থাৎ অত্যন্ত কুরূপা, জরা ইত্যাদি গুণযুক্ত কার্যকারিণী–এমন গাভী যমের অংশভূতা হলো।–(প্রকারান্তরে সহস্র গাভীর প্রশংসা)–এই যে সহস্র গাভীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ গাভী তিনরকম রূপ ধারণ করে জলে হতে উগতা হয়েছিল তিনি বাগদেবতা। যেহেতু এটি বাগদেবতার রূপ, সেই হেতু সহস্র দক্ষিণাযুক্ত যাগে বাগদেবতার উদ্দেশে যজমানের এইরকম শ্রেষ্ঠ গাভীবিশেষ প্রদান কর্তব্য। এতে সহস্র গাভী দেওয়া হয়। (অতঃপর প্রকারান্তরে লক্ষণবিধি, সহস্র গাভীর পক্ষান্তরবিধি, গাভীর আম্রাপণে মন্ত্রের উৎপত্তি, আম্রাপণের ফল, হোমাঙ্গভূত মন্ত্র, সহস্র দক্ষিণার মন্ত্রভাগের তাৎপর্য, তার অঙ্গভূত জপবিধি, মন্ত্রাবলী এবং মন্ত্রের তাৎপর্য কথিত হয়েছে) ॥৬॥

[সায়ণাচার্য বলেন–ষষ্ঠেইনুবাকে সহস্রতমীং প্রশস্য তদঙ্গভূতং হোমাদিকমুক্ত। অথ সপ্তমে তদানং বিধীয়তে। অর্থাৎ–সপ্তম অনুবাকে সহস্রতমী দিনের বিধি সম্পর্কে বলা হয়েছে]।

.

সপ্তম অনুবাক

মন্ত্র- সহস্রতম্যা বৈ যজমানঃ সুবৰ্গং লোকমেতি সৈনং সুবর্গং লোকং গময়তি সা মা সুবৰ্গং লোকং গময়েত্যাহ সুবৰ্গমেবৈনং লোকং গময়তি সা মা জ্যোতিষ্মন্তং লোকং গময়্যোহ জ্যোতিষম্মস্তমেবৈনং লোকং গময়তি সা মা সৰ্বান্ পুণ্যাল্লোঁকা গময়েত্যাহ সর্বানেবৈনং পুণ্যাল্লোঁকা গময়তি সা মা প্রতিষ্ঠাং গময় প্রজয়া পশুভিঃ সহ পুনৰ্মাহবিশতায়িরিতি প্রজয়েবৈনং পশুভী রয্যাং প্রতিষ্ঠাপয়তি প্রজাবান পশুমান রয়িমান ভবতি য এবং বেদ তামগ্নীধে বা ব্ৰহ্মণে বা হোত্রে বোপ্পাত্রে বাহৰ্যবে বা দদ্যাৎ সহস্রমস্য সা দত্তা ভবতি সহস্রমস্য প্রতিগৃহীতং ভবতি ষস্তামবিদ্বান প্রতিগৃতি তাং প্রতি গৃহীয়াদেকাহসি ন সহস্ৰমেকাং ত্বা ভূতাং প্রতি গৃমি ন সহস্ৰমেকা মা ভূতাহবিশ মা সহস্ৰমিত্যেকামেবৈনাং ভূতাং প্রতি গৃতি ন সহস্রং য এবং বেদ স্যোনাহসি সুষদা সুশে সোনা মাহবিশ সুষদা মাহবিশ সুশেবা মাহবিশ ইত্যাহ স্যোনৈবেনং সুষদা সুশেবা ভূতাহবিশতি নৈনং হিনস্তি ব্ৰহ্মবাদিনো বদন্তি সহস্রং সহস্রতম্যন্বেতী সহস্রতমীং সহস্রামিতি যৎ প্রাচীমুসৃজেৎ সহস্রং সহস্রতম্যম্বিয়াৎ সহস্রমপ্রজ্ঞাত্রং সুবর্গং লোকং ন প্র জানীয়াৎ প্রতীচীমুৎস্যজতি তাং সহমনু পৰ্য্যাবর্ততে সা প্রজাতী সুবর্গং লোকমেথি যজমানমভসৃজতি ক্ষিপ্রে সহস্রং প্র জায়ত উত্তমা নীয়তে প্রথমা দেবান গচ্ছতি ॥৭॥

মর্মার্থ- যজমান এই সহস্র গাভীর মধ্যে শ্রেষ্ঠাটির দ্বারা স্বর্গলোক প্রাপ্ত হন। এইটিই তাকে স্বর্গলোক প্রাপ্ত করায়। সেই নিমিত্ত সা মা সুবর্গং লোকং গময়েতি অর্থাৎ হে সহস্রতমি! তুমি আমাকে স্বর্গলোক প্রাপ্ত করাও মন্ত্র পঠনীয়। সেইরকম সা মা জ্যোতিষ্মন্তং লোকং….(অর্থাৎ আদিত্যলোক প্রাপ্ত করাও) এবং সা মা সর্বান্ পুণ্যাল্লোঁকান্ .. (অর্থাৎ ইন্দ্রলোক ইত্যাদি সকল লোক প্রাপ্ত করাও) মন্ত্র পঠনীয়। এইভাবে ঐ ঐ লোকে প্রতিষ্ঠা অর্থাৎ স্থির অবস্থান এবং পশুগণ সহ ধন লাভের প্রার্থনা জানানো হয়েছে। (অতঃপর সহস্রতমি দানের বিধি, প্রতিগ্রহদোষ পরিহারের নিমিত্ত সেই প্রতিগ্রহ মন্ত্র ইত্যাদি উল্লেখিত হয়েছে) ॥৭॥

[সায়ণাচার্য  বলেন–সপ্তমে সহস্রতমীদানমুক্ত। তাবতা পঞ্চমমারভ্য ত্রিধনুবাকে্যু গর্গত্রিরাত্রঃ সমাপিতঃ। অথষ্টমনবময়োদ্বেী চতুরাত্ৰাবুচ্যতে। অর্থাৎ সপ্তম অনুবাকে সহস্রতমী দানের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম অনুবাক পর্যন্ত গর্গ-ত্রিরাত্রের কথা সমাপ্ত হয়েছে। এবার অষ্টম অনুবাকে এবং পরবর্তী নবম অনুবাকে মোট দুটি চতুরাত্র সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই অষ্টম অনুবাকে অত্রির চতুরাত্র নিরূপিত ]

.

অষ্টম অনুবাক

মন্ত্র- অত্রিরদদাদৌৰ্বায় প্রজাং পুত্রকামায় স রিরিচানোহমন্যত নিবীৰ্য্যঃ শিথিলো যাতযামা স এতং চতুরামপশ্যমাহহরত্তেনাযজত তততা বৈ তস্য চত্বারো বীরা আহজায়ন্ত সুহোতা সূক্ষ্মাতা স্বপ্ন্যুঃ সুসভেয়ো য এবং বিদ্বাংশ্চতুরাত্রেণ যজত আহস্য চত্বরো বীরা জায়ন্তে সুহোতা সুতা স্বৰ্য্য সুসভেয়ো যে চতুর্বিংশাঃ পবমানা ব্ৰহ্মবর্ডসং তৎ য উদ্যন্তঃ স্তোমাঃ শ্ৰীঃ সাহত্ৰিং শ্রদ্ধাদেবং যজমানং চত্বারি বীৰ্য্যাণি নোপানমস্তেজ ইন্দ্রিয়ং ব্রহ্মবর্ডসমন্নাদ্যং স এতাংশ্চতুরশ্চ তুটোমান সোমানপশ্যত্তানাহহরত্তৈরজত তেজ এব প্রথমেনাবারুন্ধেয়িং দ্বিতীয়েন ব্ৰহ্মবষ্ঠসং তৃতীয়েনান্নাদ্যং চতুর্থেন য এবং বিদ্বাংশ্চতুরতুষ্টোমান সোমানাহরতি তৈজতে তেজ এব প্রথমেনাব রুগ্ধ ইন্দ্রিয়ং দ্বিতীয়েন ব্রহ্মবর্ডসং তৃতীয়েনান্নাদ্যং চতুর্থেন যামেবাত্রেঋদ্ধিমাপ্নোত্তমেব যজমান ঋধেতি ॥৮৷৷

মর্মার্থ- উর্বের পুত্র ছিলেন ঔর্ব। তিনি পুত্রকামী হয়ে অত্রির নিকট পুত্র যাচ্ঞা করলে অত্রি তাকে আপন প্রজা (পুত্র) দান করেছিলেন। তারপর সন্তানরহিত হয়ে রিক্ত মনে চিন্তা করতে লাগলেন–আমি প্রজা-উৎপাদনের সামর্থ্যরহিত (নির্বীর্য) ও কার্যে অক্ষম (শিথিল) হয়েছি। অতএব যাতযাম অর্থাৎ গতসার হয়েছি এমন বিচার করে তিনি প্রজা-উৎপাদনের সাধক, (নিম্পাদক) চতুরাত্র অনুষ্ঠানের নিমিত্ত নিশ্চয় (মনস্থির করলেন। এই উদ্দেশে তিনি চতুরাত্রের উপযোগী সামগ্রী আহরণ করে যাগ করবেন। এর ফলে তার সুহোত্র ইত্যাদি চারটি পুত্ৰ উৎপন্ন হয়েছিল। তার মধ্যে হৌত্র, ঔাত্র ও আধ্বর্য যজ্ঞের প্রয়োগে ও উপদেশে কুশল হয়েছিলেন। এইভাবে অন্যেও চতুরাত্র যাগের দ্বারা পুত্র লাভ করে থাকে। (অতঃপর বহিষ্পবমান, মাধ্যন্দিনপবমান, আর্ভবপবমান-এই তিনটির স্তোমবিশেষ; পবমান ব্যতিরিক্ত অপর স্তোত্রের স্তোমবৃদ্ধি; চতুরাত্রের বিকার ইত্যাদি কথিত হয়েছে)।৮৷৷

[সায়ণাচার্য বলেন-অর্থ নবমে জামদগ্ন্যাশ্চতুরাত্রো নিরূপ্যতে। অর্থাৎ–এই অনুবাকে জমদগ্নির চতুরা নিরূপিত হয়েছে।]

.

নবম অনুবাক

মন্ত্র- জমদগ্নিঃ পুষ্টিকামশ্চতুরাত্রেণাযজ স এতা পোষাং অপুষ্যত্তস্মাৎ পলিতৌ জামদগ্নিয়ৌ ন সং জানাতে এতানের পোন পুষ্যতি য এবং বিদ্বাংশ্চরাত্রেণ যজতে পুরোডাশিন্য উপসদো ভবন্তি পশবো বৈ পুরোডাশঃ পশুনেবাব রুন্ধেহং বৈ পুরোশোহমেবাব রুন্ধেহ দঃ পশুমান ভবতি ষ এবং বিদ্বাংশ্চতুরাত্রেণ যজতে ॥৯॥

 মর্মার্থ– চতুরাত্র যাগে লোকপ্রসিদ্ধ পুত্র(প্রজা), পশু, ধন ও পুষ্টি সম্পাদিত হয়। যখন জমদগ্নি পুষ্টিকামনায় এই যাগ প্রবর্তন করেন, তখন তিনিও এগুলি লাভ করেন; এবং তাঁর বংশে উৎপন্ন কেউই কখনও দরিদ্র হননি। (অতঃপর অগ্নি, অশ্বিন, বিষ্ণু, সূর্য, সবিতা, ধাতা, মরুৎ, বৃহস্পতি, মিত্র, বরুণ, ইন্দ্র ইত্যাদি দেবগণের উদ্দেশে পুরোডাশ নির্বপণের বিধি কথিত হয়েছে)।–যিনি এইসব বিদিত হয়ে চতুরা যাগের অনুষ্ঠান করেন, তিনি অন্নভক্ষক (অন্নাদঃ) ও পশুমান্ হয়ে থাকেন৷৷৯৷৷

[সায়ণাচার্য বলেন–দশমে পঞ্চরাত্রোহভিধীয়তে–অর্থাৎ চতুরাত্রের পর এবার এই অনুবাকে পঞ্চরাত্র যাগের কথা বলা হয়েছে]

.

দশম অনুবাক

মন্ত্র- সম্বৎসররা বা ইদমেক অসীৎ সোহকাময়তষ্ঠুনসৃজেয়েতি স এতং পঞ্চরাত্র মপশ্যমাহহরত্তেনাযজত ততো বৈ স ঋতুনসৃজত য এবং বিদ্বান্ পঞ্চরাত্রেণ যজতে থৈব জায়তে ত ঋতবঃ সৃষ্টা ন ব্যাবৰ্ত্তন্ত ত এতং পঞ্চরাত্রম পশ্যমাহহরন্তেনাযজন্ত ততো বৈ তে ব্যাবৰ্তম্ভ য এবং বিদ্বান্ পঞ্চরাত্রেণ যজতে বি পাপনা ভ্রাতৃব্যেণাহবৰ্ত্ততে সাৰ্বসেনিঃ শৌচেয়োহকাময়ত পশুমাৎস্যামিতি স এতং পঞ্চরাত্ৰমাহহরত্তেনাযজত তততা বৈ স সহস্রং পশু প্ৰাহপোদ্য এবং বিদ্বান পঞ্চরাত্রেণ যজতে প্র সহস্রং পশূন্যপোতি ববরঃ প্রাবাহণিরকাময়ত বাচঃ প্রবদিতা স্যামিতি স এতং পঞ্চরাত্রমা অহরত্তেনাযজত তততা বৈ স বাচঃ প্রবদিত্যাহভবদ্য এবং বিদ্বান পঞ্চরাত্রেণ যজতে প্রবদিতেব বাচো ভবত্যথো এনং বাচস্পতি রিত্যাহুরনাপ্তশ্চতৃরাত্রোতিরিক্তঃ ষড্রাত্রোহথ বা এষ সম্প্রতি যজ্ঞো যৎ পঞ্চরাত্রা য এবং বিদ্বান্ পঞ্চরাত্রেণ যজতে সম্প্রত্যেব যজ্ঞেন যজতে পঞ্চরাত্রো ভবতি পঞ্চ বা ঋতবঃ সম্বৎসরঃ ঋতুষেব সম্বৎসরে প্রতি তিষ্ঠত্যথো পঞ্চাক্ষরা পঙক্তিঃ পাঙক্তো যজ্ঞো যজ্ঞমেবাব রুন্ধে ত্রিবৃদগ্নিষ্টোমো ভবতি তেজ এবাব রুন্ধে পঞ্চদশো ভবতীন্দ্রিয়মেবাব রুন্ধে সপ্তদশশা ভবত্যন্নাদ্যস্যাবরুধ্যা অথো প্রৈব তেন জায়তে পঞ্চবিংশোহগ্নিস্টোমো ভবতি প্রজাপতেরাস্ত্যৈ মহাব্রতবানন্না দ্যস্যাবরুদধ্যৈ বিশ্বজিৎ সর্বপৃষ্ঠোহতিরাত্রো ভবতি সর্বস্যাভিজিত্যৈ ॥১০৷৷

মর্মার্থ– এই বসন্ত ইত্যাদি ঋতুভেদযুক্ত কালস্বরূপ ঋতুর উৎপত্তির পূর্বে প্রজাপতি সম্বৎসররূপে এক ছিলেন; (অর্থাৎ ঋতুগুলির উৎপত্তি হওয়ার পূর্বে কেবলমাত্র একটি সম্বৎসরের অস্তিত্ব ছিল, কোন বিভাগ ছিল না)। তিনি ঋতুসৃষ্টির ইচ্ছায় অন্বিত হয়ে পঞ্চরাত্র যাগের অনুষ্ঠান সৃষ্টি করেন (অনুষ্ঠায় সৃষ্টিবা। এইরকমে অন্যজনেও পুত্রকামনায় (প্ৰজাকামাস্তেন) এই যাগের  দ্বারা পুত্র উৎপাদন করে থাকেন।–প্রজাপতি কর্তৃক সৃষ্ট হয়ে বসন্ত ইত্যাদি ঋতুদেবতাগণ নিজ নিজ ঋতুচিহ্নের কোন বিশেষ পার্থক্য প্রাপ্ত না হয়ে পঞ্চরাত্রের অনুষ্ঠান পূর্বক সেই সেই পার্থক্য প্রাপ্ত হয়েছিলেন। এই রকমে অন্যজনেও এই যাগের অনুষ্ঠানের দ্বারা পাপ ও শত্রুগণ হতে বিয়োগ প্রাপ্ত হন। (অতঃপর এই পঞ্চরাত্র যাগের দ্বারা পশুপ্রাপ্তি, সভায় বক্তৃতাদানের কামনাকারীর কামনাপূর্তি, এমন বহুবিধ ফলসাধন ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে দিনগত পঞ্চসংখ্যার প্রশংসা ও পঞ্চরাত্রের অবয়বভূত পঞ্চ দিবসের কথা বলা হয়েছে) ॥১০।

[সায়ণাচার্য  বলেন-..একাদশমারভ্য প্রপাঠক সমাপ্তিপর্যন্তমশ্বমেধমন্ত্র উচ্যন্তে। অর্থাৎ–অতঃপর একাদশ অনুবাক থেকে প্রপাঠকের সমাপ্তি পর্যন্ত (২০শ অনুবাক পর্যন্ত) অশ্বমেধ যজ্ঞের মন্ত্রাবলী উক্ত হয়েছে]

.

একাদশ অনুবাক

মন্ত্র- দেবস্য বা সবিতুঃ প্রসবেশ্বিনোৰ্ব্বাহুভ্যাং পুষ্ণো হস্তাভ্যামা দ্বদ ইমামগৃণ রশনামৃতস্য পূৰ্ব্ব আয়ুষি বিদথেষু কব্যা।। তয়া দেবাঃ সুতমা বভূবুঋতস্য সামসরমারপত্নী। অভিধা অসি ভুবনমসি যন্তাহসি ধৰ্ত্তাহসি সোহগ্নি বৈশ্বানরং সপ্রথসং গচ্ছ স্বাহাকৃতঃ পৃথিব্যাং যন্তা রাস্তাহসি যমনো ধৰ্ত্তাহসি ধরুণঃ কৃষ্যৈ ত্বা ক্ষেমায় ত্বা রয্যে ত্বা পোয় ত্বা পৃথিঝৈ ত্বাহন্তরিক্ষায় ত্বা দিবে ত্ব সতে ত্বাহাসতে ত্বহত্ত্যস্ত্ৰেীষধীড়ষ্যা বিশ্বেভ্যস্তা ভূতেভ্যঃ ॥১১।

মর্মার্থ- একাদশ হতে বিংশ অনুবাকের মন্ত্র)–মন্ত্রগুলির অর্থ মন্ত্রপাঠ মাত্রই বোধনীয়। ১১-২০।

.

দ্বাদশ অনুবাক

 মন্ত্র- বিভূৰ্মাত্রা প্রভূঃ পিত্রাহশখাহসি হয়োহস্যতত্যাহসি নবোহস্যাহসি সপ্তিরসি। বাজ্যসি বৃষাহসি নৃমণা অসি যয়ুর্ণামাস্যাদিত্যানাং পত্বান্বিহ্যগ্নয়ে স্বাহা স্বাহেন্দ্রাগ্নিভ্যাং স্বাহা প্রজাপতয়ে স্বাহা বিশ্বেতভা দেবেভ্যঃ স্বাহা সৰ্বাভভ্যা দেবতাভ্য ইহ ধৃতিঃ স্বাহেহ বিধৃতিঃ স্বাহেহ রতিঃ স্বাহেহ রমতিঃ স্বাহা ভূরসি ভুবে ত্বা ভব্যায় ত্বা ভবিষ্যতে ত্ব বিশ্বেভ্যন্তা ভূতেভ্যো দেবা আশাপালা এতং দেবেলভ্যাংশং মেধায় পোক্ষিতা গোপায়ত ॥১২৷

.

ত্রয়োদশ অনুবাক

মন্ত্র- আয়নায় স্বাহা প্ৰায়ণায় স্বাহোদভ্রাবায় স্বাহোতায় স্বাহা শূকারায় স্বাহা শূকৃতায় স্বাহা পলায়িতায় স্বাহাইপলায়িতায় স্বাহাহবল্পতে স্বাহা পরাবল্পতে স্বাহাহয়তে স্বাহা প্রয়তে স্বাহা সৰ্ব্বস্মৈ স্বাহা ॥১৩

.

চতুর্দশ অনুবাক

মন্ত্র- অগ্নয়ে স্বাহা সোমায় স্বাহা বায়ৰে স্বাহাইপাং মোদায় স্বাহা সবিত্রে স্বাহা সরস্বতৈ স্বাহেন্দ্রায় স্বাহা বৃহস্পতয়ে স্বাহা মিত্রায় স্বাহা বরুণায় স্বাহা সৰ্বম্মৈ স্বাহা ॥১৪৷

.

পঞ্চদশ অনুবাক

মন্ত্র- পৃথিব্যৈ স্বাহাহন্তরিক্ষায় স্বাহা দিবে স্বাহা সূৰ্য্যায় স্বাহা চন্দ্রমসে স্বাহা নক্ষত্রেভ্যঃ স্বাহা প্রাচ্যৈ দিশে স্বাহা দক্ষিণায়ৈ দিশে স্বাহা প্রতীচৈ দিশে স্বাহোদীচ্যৈ দিশে স্বাহোৰ্ধায়ৈ দিশে স্বাহা দিগভ্যঃ স্বাহাইবান্তরদিশাভ্যঃ স্বাহা সমাভ্যঃ স্বাহা শরভ্যঃ স্বাহাহহোরাত্রেভ্যঃ স্বাহাহৰ্দ্ধমাসেভ্যঃ স্বাহা মাসেভ্যঃ স্বাহৰ্ত্তভ্যঃ স্বাহা সম্বৎসরায় স্বাহা সস্মৈ স্বাহা ॥১৫৷৷

.

ষোড়শ অনুবাক

মন্ত্র- অগ্নয়ে স্বাহা সোমায় স্বাহা সবিত্রে স্বাহা সরস্বত্যৈ স্বাহা পুষ্ণে স্বাহা বৃহস্পতয়ে স্বাহাইপাং মোদায় স্বাহা বয়বে স্বাহা মিত্রায় স্বাহা বরুণায় স্বাহা সর্বম্মে স্বাহা ॥১৬৷৷

.

সপ্তদশ অনুবাক

মন্ত্র- পৃথিব্যে স্বাহাহন্তরিক্ষায় স্বাহা দিবে স্বাহাহগ্নয়ে স্বাহা সোমায় স্বাহা সূৰ্য্যায় স্বাহা চন্দ্রমসে স্বাহাইহ্নে স্বাহা রাত্রিয়ৈ স্বাহ…বে স্বাহা সাধবে স্বাহা সুক্ষিত্যৈ স্বাহ ক্ষুধে স্বাহাহহশিতিম্নে স্বাহা রোগায় স্বাহা হিমায় স্বাহা শীতায় স্বাহাহতপায় স্বাহাহরণ্যায় স্বাহা সুবর্গায় স্বাহা লোকায় স্বাহা সৰ্ব্বম্মৈ স্বাহা ॥১৭৷

.

অষ্টাদশ অনুবাক

মন্ত্র- ভুবো দেবানাং কৰ্ম্মণাহপসস্য পথ্যাহসি বসুভির্দেবেভিতেয়া গায়ত্ৰেণ ত্ব ছন্দসা যুনজ্জি বসন্তেন ত্বত্ত্বনা হবিষা দীক্ষায়ামি রুদ্রেভির্দেবেভিতেয়া ত্রৈভেন ত্বা ছন্দসা যুনজি গ্রীষ্মেণ ত্বনা হবিষা দীক্ষায়াম্যাদিত্যেভির্দেবে ভিতেয়া জাগতেন ত্বা ছন্দা যুনষ্মি বর্ষাভিত্তুনা হবিষা দীক্ষয়ামি বিশেভির্দেবেৰ্ভিতেয়াহভেন ত্বা ছন্দসা যুনজ্জি শরদা ত্বত্ত্বনা হবিষা দীক্ষয়াম্যজিরোভিদ্দেবেতিৰ্দেতয়া পাঙক্তেন ত্বা ছন্দসা যুন হেমন্তশিশি রাভ্যাং ত্বনা হবিষা দীক্ষয়াম্যাহহং দীক্ষামরুহমৃতস্য পত্নীং গায়ত্রেণ ছন্দ ব্ৰহ্মণা চৰ্ত্তং সত্যেহধাং সত্যমৃতেহধাম মহীমু ষু সুত্রামাণমিহ ধৃতিঃ স্বাহেহ বিধৃতিঃ রতিঃ স্বাহেহ রমতিঃ স্বাহা ॥১৮৷৷

.

ঊনবিংশ অনুবাক

মন্ত্র- ঈঙ্কারায় তাহেক্তৃতায় স্বাহা ক্রন্দতে স্বাহাহবক্রন্দতে স্বাহা প্ৰাথতে স্বাহা প্রভোথতে স্বাহা গন্ধায় স্বাহা ঘৃতায় স্বাহা প্ৰাণায় স্বাহা ব্যানায় স্বাহাইপানায় স্বাহা সন্দীয়মানায় স্বাহা সন্দিতায় স্বাহা বিচূত্যেমানায় স্বাহা বিচুত্তায় স্বাহা পলায়িষ্যমাণায় স্বাহা পলায়িতায় স্বাহোপরংস্যতে স্বাহোপরতায় স্বাহা নিবেক্ষ্যতে স্বাহা নিবিশমানায় স্বাহা নিবিষ্টায় স্বাহা নিষ্যস্যতে স্বাহা নিষীদতে স্বাহা নিষপ্লায় স্বাহা আসিয্যতে স্বাহাহসীনায় স্বাহাইসিতায় স্বাহা নিপৎস্যতে স্বাহা নিপদ্যমানায় স্বাহা নিপন্নায় স্বাহা শরিষ্যতে স্বাহা শয়ানায় স্বাহা শয়িতায় স্বাহা সম্মীলিষ্যতে স্বাহা সম্মীলতে স্বাহা সম্মীলিতায় স্বাহা স্বপ্স্যতে স্বাহা স্বপতে স্বাহা সুপ্তায় স্বাহা প্রভ্যেস্যতে স্বাহা প্রবুধ্যমানায় স্বাহা প্রবুদ্ধায় স্বাহা জাগরিষ্যতে স্বাহা জাগ্রতে স্বাহা জাগরিতায় স্বাহা শুশ্রুষমাণায় স্বাহা শৃথতে স্বাহা তায় স্বাহা বীক্ষিষ্যতে স্বাহা বীক্ষমাণায় স্বাহা বীক্ষিতায় স্বাহা সংহাস্যতে স্বাহা সঞ্জিহানায় স্বাহোজ্জিহানায় স্বাহা বিবৎর্সতে স্বাহা বিবর্তমানায় স্বাহা বিবৃত্তায় স্বাহেখাস্যতে স্বাহোত্তিতে স্বাহোখিতায় স্বাহা বিধবিষ্যতে স্বাহা বিধুম্বানায় স্বাহা বিধূতায় স্বাহোক্রংস্যতে স্বাহোৎ ক্ৰমতে স্বাহোক্রান্তায় স্বাহা চক্ৰমিষ্যতে স্বাহা চক্রম্যমাণায় স্বাহা চক্ৰমিতায় স্বাহা কণ্ডুয়িষ্যতে স্বাহা কয়মানায় স্বাহা কয়িতায় স্বাহা নিকষিষ্যতে স্বাহা নিকষমাণায় স্বাহা নিকষিতায় স্বাহা যদত্তি তস্মৈ স্বাহা যৎ পিবতি তস্মৈ স্বাহা যন্মেহতি তস্মৈ স্বাহা যচ্ছকৃৎ করোতি তস্মৈ স্বাহা রেতসে স্বাহা প্রজাভ্যঃ স্বাহা প্রজননায় স্বাহা সৰ্ব্বম্মৈ স্বাহা ॥১৯।

.

বিংশ অনুবাকমন্ত্র- অগ্নয়ে স্বাহা বয়বে স্বাহা সূৰ্য্যায় স্বাহৰ্ত্তমস্যতস্যৰ্তমসি সত্যমসি সতাস্য সত্যমসৃতস্য পন্থা অসি দেবানাং ছায়াহমৃতস্য নাম তৎসত্যং যত্তং প্রজাপতি রস্যধি যদস্মিৰাজিনীব শুভঃ স্পর্ধন্তে দিবঃ সুণে বিশোহপো বৃণানঃ পবতে কব্য পশুং ন গোপা ইৰ্যঃ পরিজনা ॥২০।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *