2 of 2

৬৯. রেণুর একটা নিজস্ব জগৎ

রেণুর একটা নিজস্ব জগৎ আছে। তাদের এত বড় বাড়িটাতে অনেক মানুষজন, কিন্তু অন্য কারওর সঙ্গেই যেন তাকে ঠিক মেলানো যায় না। রেণু সকলের সঙ্গে মিশে আনন্দ এবং হইচই করতে পারে, আবার এক এক সময়ে সে একদম আলাদা হয়ে যায়। তার সমবয়সি কিংবা বয়সে বড়দের মধ্যেও কেউ কেউ তাকে একটু যেন ভয় পায়। ভয় কিংবা সমীহ। অথচ এর কারণটা কেউ বুঝিয়ে বলতে পারবে না। কেউ কোনও খারাপ কথা ওর সামনে বলে ফেললে, রেণু চুপ করে তার মুখের দিকে চেয়ে থাকে, সেই সময় ওর মুখে একটা দুঃখের রেখা ফোটে, কিন্তু বলে না কিছুই।

এইসব বনেদি বাড়িতে অনেক লোক একসঙ্গে থাকলেও ভেতরে ভেতরে রেশারেশি থাকে অনেক রকম। এক ছাদের নীচে অনেকগুলো গোষ্ঠী তৈরি হয়ে যায়, বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও। অমুক নাকি তমুক সম্পর্কে এইসব কথা বলেছিল, এই রকম একটা কিছু সূত্র ধরেই এক ঘরের সঙ্গে আরেক ঘরের মনোমালিন্য হয়ে যায়, কথা ঠিক বন্ধ হয় না, মুখের হাসি শুকনো হয়ে যায় শুধু। কিছু দিন আগে বাড়ির দারোয়ানের কাছে দুই গিন্নি দু’রকম নির্দেশ দেবার উপলক্ষে বিষ্ণুর মা আর রেণুর মায়ের মধ্যে মন কষাকষি হয়ে গেছে। এইসব সময়ে দু’ঘরের ছেলেমেয়েদের যাতায়াতও খুব একটা ভালো চোখে দেখা হয় না। বিষ্ণু অবশ্য বিলেতে চলে গেছে। বিষ্ণুর মা’র আর ছেলেপুলে নেই–এবং তার যাবতীয় বাৎসল্য রস ওই ছেলের ওপরেই খরচ হয়ে গেছে। তিনি সাধারণ অল্প বয়সি ছেলেমেয়েদের পছন্দ করেন না।

রেণু কিন্তু এসব ভূক্ষেপ করে না। সে যখন তখন কাকিমার ঘরে আসে। কেন না বিষ্ণুর বই কেনার বাতিক ছিল, প্রচুর বই সে রেখে গেছে, রেণু সেই বইগুলির সদব্যবহার করে। বিষ্ণুর মা ঠিক আপত্তি করতে গিয়েও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেন না। শুধু বলেন, দেখিস ছেড়েটেড়ে না যেন। ওর যা বইয়ের ওপর মায়া!

রেণু মুচকি হেসে বলে, ন’কাকিমা এই বইটার মলাট কিন্তু ছিঁড়ে গেছে!

তিনি আঁতকে ওঠেন। তাড়াতাড়ি এসে মহামূল্য সম্পদের মতন বইখানা তুলে নেন। সেটার গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করতে করতে বলেন, ইস, তুই এটা ছিঁড়ে ফেললি? এত দামি বইখানা?

রেণু বলে, এই বইয়ের মলাটটা ছোড়দা থাকবার সময়েই ছিঁড়েছিল। আপনি কিছুই দেখেন না।

সত্যি তখন ছেঁড়া ছিল?

হ্যাঁ। ছিড়লেই বা। বই তো পড়তে গেলে একটু-আধটু ছিঁড়বেই!

বিষ্ণুর মায়ের মন তবু খুঁতখুঁত করে। পরবর্তী বিলেতের চিঠিতে তিনি অন্যান্য কথার পর বইখানার নাম উল্লেখ করে এটাও জানতে চান যে, মলাটটা সত্যিই ছেঁড়া ছিল কিনা। বিষ্ণু তখন স্কটল্যান্ডে এক বান্ধবীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে, সেখানে এক নিঝুম সন্ধ্যায় বান্ধবীর কাছে মায়ের চিঠি পড়ে শোনায়। তখনই সে ঠিক করে, রেণুকে একটা চিঠি লিখতে হবে।

রেণুদের বাড়ির ছেলেরা এখনও কেউ চাকরি করে না। অবস্থা অনেক পড়ে এসেছে। তবু নানান বাড়িভাড়া আর বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার থেকে চলে যায়। বাড়িখানার অবস্থা অনেক জীর্ণ হয়েছে, সারাবার দায়িত্ব কারওর নেই। সিঁড়িতে একদা কার্পেট পাতা থাকত, তা ছিঁড়ে ঝুলিঝুলি হয়ে গেছে কবে। লণ্ঠনগুলোতে ময়লা জমে আছে। একতলার বারান্দার দেওয়ালগুলোতে ড্যাম্পের ছাপ–একটুক্ষণ তাকালেই নানা রকম অতিকায় জন্তুর অবয়ব কল্পনা করা যায়।

পুরনো কলকাতার ক্ষয়িষ্ণু বংশগুলির মতন এবাড়িতেও মাঝে মাঝে হঠাৎ এক একটা কেলেঙ্কারির ঝড় আসে। হঠাৎ জানা যায়, কোন জ্যাঠামশাই হরিদ্বারে গিয়ে গোপনে আর একটা বিয়ে করে এসেছিলেন, তার বংশধর একদিন এসে সম্পত্তির অংশ দাবি করে। শুরু হয় মামলা-মকদ্দমা। কিংবা, কোনও ঘরের পুত্রবধূ–যে তার বাপেরবাড়ির বড়লোকি চাল নিয়ে সব সময় দেমাক দেখাত–তাদের নাকি বাড়ি বন্ধক পড়েছে। তখন অন্যান্য ঘরে এই নিয়ে বেশ সরস আড্ডা জমে ওঠে।

আর মামলা-মকদ্দমা তো লেগেই আছে। রেণুর ছোটকাকা এখন সব মামলা টামলা পরিচালনা করেন। এর মধ্যেই তার মাথায় টাক পড়েছে।

রেণুর বড়দাদা দিল্লিতেই ব্যবসা করছেন, কলকাতায় আসেন খুব কম। তিনি বিয়ে করেছেন একটি পাঞ্জাবি মেয়েকে, সেই বউ প্রথম বার কলকাতায় এসে শাশুড়ির সামনে সিগারেট খেয়েছিল। ওদের ছেলেমেয়েরা বাংলাতে কথা বলতেই শেখেনি।

সুপ্রকাশ বছর দুয়েক আগে মেনেনজাইটিস রোগে হঠাৎ মারা যায়। তার স্বাস্থ্য ছিল চমৎকার, প্রাণশক্তি ছিল অন্য অনেকের চেয়ে বেশি, তবু কেন সে পৃথিবীতে বেশি দিন বেঁচে থাকার অধিকার পেল না কে জানে। তার বিয়ের কথাবার্তা সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল, বিয়ের তারিখের ঠিক এক মাস আগে সে অসুখে পড়ে, তার ভাবী বধূ তার মৃতদেহের সামনে অবর্ষণ করে গেছে। মেয়েটির এখন বিয়ে হয়ে গেছে অন্য জায়গায়–তবু রেণুর সঙ্গে তার বন্ধুত্ব আছে।

এ বাড়ির ছেলেমেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাওয়াই নিয়ম। বিধবা, স্বামীতে নেয় না, এ রকম মহিলা এবাড়িতে আছেন কয়েক জন, কিন্তু আঠেরো বছরের বেশি কোনও কুমারী মেয়ে নেই। রেণু সদ্য আঠেরো বছর পার হয়েছে। অংশুর বিয়ে হয়ে গেছে, একটি বাচ্চাও হয়েছে–লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে অংশু–এখন সে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে আলাদা হবার তালে আছে।

এবাড়ির দুটি ছেলেমেয়েই শুধু ব্যতিক্রম। বিষ্ণু আর রেণু। বিষ্ণু কবে ফিরবে ঠিক নেই। রেণু ছেলেবেলায় আর যাদের সঙ্গে খেলা করত, তারা সবাই এখন কী রকম বদলে গেছে। ছেলেমানুষি ভাব কারওর মধ্যে নেই। হয় ভদ্দরলোক ভদ্দরলোক অথবা গিন্নি গিন্নি ধরনধারণ।

রেণুর মা সরল সাদাসিধে মানুষ, কিন্তু বড্ড অভিমানী। অনেকগুলো শোক দুঃখ পেয়ে মাথাটাও যেন একটু গোলমাল হয়ে গেছে। আগে খুব হাসিখুশি ছিলেন। এখন কথায় কথায় বাড়ির অন্য শরিকদের সঙ্গে ঝগড়া করেন। তিনি যদি ঘুণাক্ষরেও টের পান যে, কেউ তাঁকে সহানুভূতি কিংবা করুণা দেখাতে আসছে, তা হলেই তিনি দপ করে জ্বলে উঠবেন। আর সবকিছুই গেছে, শুধু রয়ে গেছে বনেদি তেজ।

রেণুই তার মাকে সামলে রাখবার চেষ্টা করে। এক এক সময় সে তার মাকে ধমকও দেয়। কিন্তু অংশু বা তার স্ত্রীকে কখনও ভুলেও একটা কঠিন কথা বলে না।

এই বাড়ির পরিবেশ যেন রেণুকে স্পর্শ করে না। সে পড়াশুনো নিয়ে ডুবে থাকে, কলেজে যায়, ঠিক সময় বাড়িতে ফিরে আসে, রেডিয়োর সঙ্গে গলা মিলিয়ে গান গায়, বাচ্চাদের সঙ্গে হুটোপুটি করে। কিন্তু বাড়ির বড়রা কেউই রেণুর কাছে মনের কথা বলবে না। সবাই অনুভব করে, রেণু তাদের থেকে অনেক দূরে সরে গেছে।

রেণু এখনও ঠিক টাকাপয়সার হিসেব বোঝে না। তার কখনও কিছু দরকার হলেই সে বাদলকে হুকুম করে। দুর্লভ কোনও বই, ঠিক কালো রঙের পেনের কালি, ন্যাশনাল লাইব্রেরির কার্ড–এসবকিছুই বাদলকে এনে দিতে হয়। রেণু কখনও ভাবে না, বাদল কোথা থেকে পয়সা জোগাড় করবে। সে শুধু বোঝে, সে যখন তার দাদাদের কাছে। থেকে কিছু চাইতে পারবে না, তখন বাদল ছাড়া আর কার কাছে চাইবে?

বাদল রেণুকে কিছুই বুঝতে দেয় না। ধার করে হোক যেমন করেই হোক, ঠিক সময় জিনিসটা নিয়ে আসবেই।

বাদল এম. এ ক্লাসে ভরতি হয়নি। তার বাবা খরচ চালাবার বিষয়ে কী একটা মন্তব্য। করেছিলেন, সেই অভিমানে সে আর পড়ল না। সত্যিই তো, তার বাবার কোনও রোজগার নেই, পড়াশুনো চালাবার খরচ আসবে কোথা থেকে!

বাদল এখন সকালে-বিকেলে দুটো টিউশানি করে। আর চাকরির জন্য দরখাস্ত পাঠাচ্ছে। তার বন্ধুরা হইহই করে ইউনিভার্সিটিতে যায়, কফি হাউসে আড্ডা মারে– বাদল সেসব জায়গা থেকে দূরে থাকে। আড্ডা দিতেও যেতে চায় না। বন্ধুরা কখনও এসে জেরা করলে সে চাল মেরে বলে, ক্লাসে গিয়ে পড়াশুনো করা মানে সময় নষ্ট।’ কোনও মাস্টার আমাকে আর কিছু শেখাতে পারবে না!

গোপনে গোপনে সে অবশ্য তার সাবজেক্টের এম. এ. কোর্সের সিলেবাস জোগাড় করে রেখেছে। তিন বছর পরে প্রাইভেটে পরীক্ষা দেওয়া যায়–তখন পরীক্ষা দেবে কিনা সে ভেবে দেখবে।

রেণুও বাদলের এম এ না-পড়ার কারণটা ঠিক বুঝতে পারেনি। সে বাদলের জীবনের সবকিছু জানে, বাদল তো তার শুধু বন্ধু বা প্রেমিক নয়, আবাল্য সঙ্গী–তবু আজকাল সব সময় ওর মনের ভাব ধরতে পারে না।

বাদল রেণুদের বাড়িতে আসাও বন্ধ করে দিয়েছে। রেণুর মামলাবাজ ছোটকাকা বাদলকে একদিন অপমান করেছিলেন। বাদল সে-দিন রেণুকে ডাকতে আসছিল, সদর দরজার কাছেই ছোটকাকার সঙ্গে দেখা। তিনি বললেন, কী হে বাদলকুমার কেমন আছ?

এক একজন মানুষের সঙ্গে এক একজনের কিছুতেই জমে না। বাদল কোনও দিনই এই ছোটকাকাটিকে পছন্দ করতে পারেনি। দেখা হলেই তিনি নানা রকম কথা বলার চেষ্টা করেন। মুখ-মিষ্টি লোক, তবু এঁর স্বভাবে কী রকম যেন একটা ভাঙ্গার ব্যাপার। আছে।

বাদল সংক্ষেপে বলল, ভালো।

তারপর সে ভেতরে ঢুকতে যাচ্ছিল, ছোটকাকা আবার বললেন, বিষ্ণু তো নেই, কার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছ? অংশুও তো বেরিয়ে গেল দেখলাম।

রেণুর সঙ্গে একটা দরকার আছে।

অ!

এই ‘অ’ কথাটা উচ্চারণের মধ্যে এমন একটা কিছু ছিল যে বাদলের সর্বাঙ্গ জ্বলে গেল। সে থমকে দাঁড়াল। ছোটকাকা দারোয়ানের সঙ্গে কী একটা কথায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। বাদল কি তার সামনে গিয়ে বলবে, আপনি ওই রকম ভাবে অ বললেন কেন? কিন্তু এ রকম প্রশ্ন করা যায় না। অন্তত বাদল তা পারবে না।

ওপরে না উঠে সে ফিরে যেতে লাগল। ছোটকাকা তাই দেখে বললেন, ও কী চলে যাচ্ছ কেন? রেণুকে ডেকে দেব? তুমিই ওপরে উঠে যাও না!

না, থাক, দরকার নেই।

তারপরই বাদল রেণুকে জানিয়ে দিয়েছে, বিষ্ণু না-ফেরা পর্যন্ত সে আর ওই বাড়িতে কখনও যাবে না। রেণু অনেক পেড়াপেড়ি করেছে, বাদল শোনেনি।

ওই বাড়িতে তো যায়ই না, ওই রাস্তা দিয়েও পারতপক্ষে হাঁটে না। ওই দিকেই কাছাকাছি একটা জায়গায় তাকে সন্ধ্যাবেলা টিউশানি করতে যেতে হয়–সে তখন অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকে।

আজকাল ধুতি পরে বাদল, শীত এসে গেছে বলে গায়ে একটা র‍্যাপার জড়িয়ে নেয়। সিগারেট ধরিয়ে সে মন্থর ভাবে রাস্তা দিয়ে হাঁটে–মনে হয় যেন জগৎ-সংসার সম্পর্কে তার কোনও আগ্রহ নেই। এই কলকাতার মানুষের ভিড়ের মধ্যে সে মিশে যাবে, তাকে আর আলাদা করে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কবিতা লেখা সে একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে।

রেণুর সঙ্গে প্রায়ই বাইরে দেখা হয়। কিংবা রেণুই বাদলদের বাড়িতে যায়। কলেজ থেকে ফেরার সময় সে ওই বাড়ির কাছে বাস থেকে নেমে পড়ে। বাদল বাড়িতে না থাকলেও সে তার মায়ের সঙ্গে গল্প করে কিংবা বাদলের বইপত্র ঘাঁটে। বাদলের পুরনো বি. এ. ক্লাসের খাতাগুলোর সাদা পাতায় ছবি আঁকে সে, কবিতার খাতাটা খুঁজে পায় না।

এবাড়িটা এখন ভীষণ ভাবে ফাঁকা লাগে। সারি সারি ঘর তালাবন্ধ পড়ে আছে। চিররঞ্জন হঠাৎ খুব বুড়ো হয়ে পড়েছেন, হিমানীর শুচিবায়ু হয়েছে। এই বয়সেও তিনি কপাল চাপড়ে বলেন, বাবা কার সঙ্গে যে আমার বিয়ে দিল, জীবনটাই নষ্ট হয়ে গেল!

বাদলের জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর রেণু ফিরে যাচ্ছে এমন সময় মোড়ের কাছে বাদলের সঙ্গে দেখা। বাদল দুটি ছেলের সঙ্গে খুব তর্কে মত্ত ছিল, রেণু একটু দূরে দাঁড়াল। চার পয়সার চিনে বাদাম কিনল সময় কাটাবার জন্য। একটু বাদে বাদল এসে বলল, কী রে, কখন এসেছিলি?

অনেকক্ষণ।

আজ কলেজে যাসনি?

হ্যাঁ। কেন যাব না।

দুপুরবেলা তোদের কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম।

আজ দুপুরে তো আমার বেরোবার কথা ছিল না।

তবু দাঁড়িয়ে ছিলাম, যদি দেখা হয়।

বাঃ, আমি তোমার বাড়িতে এসে বসে আছি, আর তুমি এমনি এমনি রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছ।

বাদল রেণুর কাছ থেকে বাদাম নিয়ে ভাঙতে থাকে। একটু অন্যমনস্ক হয়ে যায়। তারপর আবার চোখ তুলে বলল, আজ সকালে তুই কী করছিলি?

কেন?

এই ধর, সাড়ে আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত? তোর সঙ্গে তখন আমার ভীষণ দরকারি একটা কথা বলার ছিল। তক্ষুনি দেখা করা দরকার। কিন্তু কী করে করব?

বাঃ, আমাদের বাড়িতে গেলেই হত।

না, আমি তখন মনে মনে দারুণ ভাবে তোর কাছে ডাক পাঠাতে লাগলাম। রেডিয়ো ট্রানসমিশানের মতন। আমি ভেবেছিলাম সেই ডাক শুনে তোকে চলে আসতেই হবে। তুই শুনতে পাসনি?

রেণু বলল, না। তোমার কী হয়েছে বলো তো। ক’দিন ধরেই কী রকম যেন মনখারাপ দেখছি?

রেণু তোর কাছে আমি একটা জিনিস চাই। কাল দুপুরে তিনটের সময় আমাদের বাড়িতে আসবি? তখন মা বাবা বাড়িতে থাকবেন না।

রেণু একটু চুপ করে থেকে বলল, আচ্ছা আসব।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *