৬৫. লেখকের কথা
উপন্যাসে ভূমিকা, লেখকের বক্তব্য কিংবা কৈফিয়ত দেবার প্রথা নেই। কিন্তু আমার কিছু ঋণ স্বীকারের দায় আছে। এই উপন্যাসের পশ্চাৎপটে আছে সমসাময়িক ইতিহাস, বেশ কিছু রাজনৈতিক পালাবদল, কিছু আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বকে উপস্থিত করা হয়েছে সরাসরি। এই সব তথ্য আমি সংগ্রহ করেছি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও বহু গ্রন্থ থেকে। কোনো কোনো আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা থেকে সরাসরি উদ্ধৃতি দিয়েছি, যেমন, জাহানারা ইমামের পারিবারিক ঘটনাটি আমি পেয়েছি তাঁর যুদ্ধকালীন ডায়েরি থেকে, যা পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাসের মাঝে মাঝে পৃষ্ঠার নীচে ফুটনোট বড় বিসদৃশ দেখায়, তাই দেওয়া হয়নি। কিন্তু মূল সূত্র বুঝতে না পেরে কিছু কিছু পাঠক আমার তথ্য সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। উপন্যাসটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের মাঝপথেই বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার কয়েকটি পত্র-পত্রিকায় আমার রচনার অংশবিশেষ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। একটি উদাহরণ দিচ্ছি, পঁয়ষট্টি সালের যুদ্ধের সময় ভারত-পাকিস্তান দুই ভূখণ্ডেই নতুন করে ধর্মীয় উন্মাদনার বিস্ফোরণ ঘটেছিল, তা বীভৎস ও বিচারবুদ্ধিহীন তো বটেই, এক এক সময় হাসির খোরাকও জুগিয়েছে। তারই একটি ছোট্ট ঘটনা এই যে, ঢাকার কয়েকজন মৌলবী জেহাদ ঘোষণা করে ছোট ছোট টিনের তলোয়ার কোমরে ঝুলিয়ে মসজিদে যেতেন নামাজ পড়তে। জেহাদের সময় ওটা সুন্নত। কোনো কোনো সমালোচক মনে করেছেন, এটা আমার স্বকপোলকল্পিত বিদ্রূপ বা অজ্ঞতা। প্রথম অভিযোগটি একেবারেই সত্য নয়। দ্বিতীয়টি অধসত্য হতে পারে। পঁয়ষট্টির যুদ্ধের সময় আমি ঢাকা শহরে ছিলাম না। তকালীন পরিবেশের বিবরণ আমি পেয়েছি কয়েকটি গ্রন্থে, তার মধ্যে এই বিশেষ ঘটনাটি, পূর্ব পাকিস্তানের এক সময়ের মুখ্যমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খান রচিত স্বৈরাচারের দশ বছর’ গ্রন্থ থেকে হুবহু উদ্ধৃত।
উপন্যাস মূলত কল্পনারই লীলাভূমি, তা তথ্যে ভারাক্রান্ত করা যায় না। তবু কোনো কোনো ঘটনার বিবরণ পাঠ করে কিছু কিছু উৎসুক পাঠক আমার কাছে জানতে চেয়েছেন যে ঐ সব। বিষয়ের বিস্তৃত বিবরণ কোন্ গ্রন্থে পাওয়া যায়। তাঁদের সুবিধের জন্য এবং আমার ঋণ স্বীকারের কর্তব্যবোধে এখানে একটি সংক্ষিপ্ত গ্রন্থতালিকা দিচ্ছি। কিছু বই ইতিমধ্যেই হস্তান্তরিত হয়েছে বলে নাম দেওয়া গেল না।
১। একাত্তরের দিনগুলি–জাহানারা ইমাম
২। আমি বিজয় দেখেছি–এম আর আখতার মুকুল
৩। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে রফিকুল ইসলাম।
৪। আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর–আবুল মনসুর আহমদ
৫। স্বাধীনতা ‘৭১ (দুই খণ্ড)–কাদের সিদ্দিকী।
৬। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মরণে–মযহরুল ইসলাম সম্পাদিত
৭। ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস বশীর আলহেলাল
৮। স্বৈরাচারের দশ বছর–আতাউর রহমান খান
৯। কাজী নজরুল ইসলাম : জীবন ও কবিতা–রফিকুল ইসলাম
১০। পাকিস্তানী রাজনীতির বিশ বছর তফাজ্জল হোসেন (মানিক মি)
১১। কোরআন শরীফ ভাই গিরিশচন্দ্র সেন অনুবাদিত
১২ হেরা পর্বতের সেই কোহিনূর শাহ সূফী আলহাজ শেখ শামউদ্দিন আহম্মদ
১৩। মধ্যবিত্ত সমাজের বিকাশ : সংস্কৃতির রূপান্তর–আবদুল মওদুদ
১৪। সেই যে আমার নানারঙের দিনগুলি যোবায়দা মির্যা
১৫। ভারত যখন স্বাধীন হচ্ছিল–মাওলানা আবুল কালাম আজাদ
অনুঃ মাওলানা আবদুল্লাহ
বিন সাঈদ জালালাবাদী।
১৬। বাংলাদেশের সন্ধানে মোবাশ্বের আলী।
১৭। বাংলার মধ্যবিত্তের আত্মবিকাশ–কামরুদ্দীন আহমদ
১৮। জয়বাংলা, মুক্তিফৌজ ও শেখ মুজিব–কলহন।
১৯। পাক ভারতের রূপরেখা প্রভাসচন্দ্র লাহিড়ী
২০। ভাসানীর কাগমারি… সংগ্রাম শাহ আহমদ রেজা
২১। জাতীয়তাবাদ বিতর্ক–মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর সম্পাদিত
২২। আমরা স্বাধীন হলাম–কাজী সামসুজ্জামান।
২৩। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম–গাজীউল হক।
২৪। কথামালার রাজনীতি (১৯৭২-৭৯) রেজোয়ান সিদ্দিকী
২৫। একাত্তরের ঘাতক ও দালালেরা কে কোথায় মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্র
২৬। শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ–রশীদ হায়দার সম্পাদিত
২৭। প্রতিরোধ সংগ্রামে বাংলাদেশ সত্যেন সেন
২৮। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ–মিজানুর রহমান মিজান সম্পাদিত।
২৯। পাকিস্তান কোন পথে–গৌরীশঙ্কর চৌধুরী।
৩০। প্রভুপাদ সৎস্বরূপ দাস গোস্বামী।
৩১। চারু মজুমদারের ঐতিহাসিক আটটি দলিল–শহীদ স্মরণ কমিটি।
৩২। Society and politics in East Pakistan–Badruddin Umar
৩৩। A Aish-E-Chinar–Sheikh Abdullam
৩৪। Dacca–Sharif Uddin Ahmed
৩৫। Financing the rural poor–Razia S. Ahmed
৩৬। Witness to Surrender – Siddique Salik
৩৭। The Rape of Bangladesh–Anthony Mascarenhas
৩৮। In the Wake of Naxalbari–Sumanta Bannerjee
৩৯। The Naxalite Movement–Sankar Ghosh
৪০। Naxalbari and After–A Frontier Anthology ইত্যাদি