দ্বিষষ্টিতম অধ্যায় – কামাখ্যা-বিবরণ
ভগবান্ বলিলেন,–যেহেতু আমার সহিত কাম চরিতার্থ করিবার জন্য মহাগিরিতে আগমন করিয়াছিলেন, এই নিমিত্ত নীলকূট পৰ্বতে নির্জনস্থা দেবী কামাখ্যা নামে কথিত হইয়াছেন। ১
ইনি কামিনী, কামদা, কামা, কান্তা এবং কামাদি দায়িনী; যেহেতু ইনি কামাঙ্গনাশিনী এই হেতু ইনি কামাখ্যা নামে উক্ত হইয়াছেন। ২
এই কামাখ্যা দেবীর বিশেষ মাহাত্ম্য শ্রবণ কর,–এই কামাখ্যা দেবীই প্রকৃতিরূপে সমুদয় জগৎকে নিয়োজিত করিতেছেন। ৩।
মহামায়াবিমোহিত হইয়া বিষ্ণু যখন মধু ও কৈটভাসুরের সংহারের নিমিত্ত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হন, তখন এই কামাখ্যা দেবীই তাহাকে মোহিত করেন। ৪
দৈনন্দিন প্রলয়কালে ভগবান্ গরুড়ধ্বজ, প্রসুপ্ত হইলে তাহার কর্ণ বিবর হইতে মধু ও কৈটভ নামে দুইটি দানব নির্গত হয়। ৫
কূৰ্ম্ম-পৃষ্ঠ-স্থিতা পৃথিবী প্রলয়জলে নিমগ্না হইয়াছিলেন, যোগনিদ্রা মহা মায়া ঐ পৃথিবীকে বিশীর্ণাবস্থায় অবলোকন করেন। ৬।
তখন ঈশ্বরী মহামায়া পৃথিবীকে দৃঢ়তর করিতে অভিলাষী হইয়া উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন, কিরূপে পৃথিবী দৃঢ় হয়। ৭।
এই প্রলয়কালে পৃথিবী যেন ঘৃতের মত জলে ভাসিতেছে, কিন্তু সৃষ্টিকালে এইরূপ অবস্থায় থাকিলে কিরূপে প্রজা ধারণ করিতে সমর্থ হইবে। ৮
সৃষ্টিরূপিণী জগন্মাতা এইরূপ চিন্তা করিয়া বিষ্ণুর নিকট গমন করিয়া উপায় স্থির করিলেন। ৯
তিনি সেই জগৎপতি জগন্নাথকে প্ৰসুপ্ত অবস্থায় প্রাপ্ত হইয়া বাম হস্তের কনিষ্ঠার অগ্রভাগ তাঁহার কর্ণে প্রবেশ করাইলেন। ১০
সেই জগৎ-প্রসবিনী যোগনিদ্রাদেবী ঐরূপে কর্ণবিবরে অঙ্গুলী প্রবেশ করাইয়া নখের অগ্রভাগ দ্বারা কর্ণস্থিত মলকে চূর্ণ করিলেন। সেই বাম কর্ণের মল হইতে মধু নামে অসুর উৎপন্ন হইয়াছিল। ১১
তাহার পর, দেবী দক্ষিণ হস্তের কনিষ্ঠার অগ্রভাগ দক্ষিণকর্ণে প্রবেশ করাইলেন এবং সেই দক্ষিণ কর্ণ হইতেও মল প্রাপ্ত হইলেন। ১২
সেই মলও অঙ্গুলীদ্বয়ের অগ্রভাগ দ্বারা চূর্ণ করিয়াছিলেন। ১৩
সেই মল হইতে কৈটভ নামে বড় বলবান মহা-অসুর উৎপন্ন হইল। ১৪।
যেহেতু প্রথম অসুর উৎপন্ন হইয়াই মধুপান করিবার প্রার্থনা করিয়াছিল, এই নিমিত্ত মহাদেবী তাহার নাম মধু রাখিয়াছিলেন। ১৫
দ্বিতীয় অসুর উৎপন্ন হইয়াই মহামায়ার হস্তে কীটের মত শোভা পাইয়া ছিল, এইজন্য দেবী স্বয়ং তাহার নাম কৈটভ রাখিয়াছিলেন। ১৬
মহামায়া সেই দুই অসুরকে বলিলেন, তোমরা হরির সহিত যুদ্ধ কর। তাহা হইলে হরি তোমাদিগের প্রাণসংহার করিবেন। ১৭
যদি তোমরা নিজমুখে প্রার্থনা কর যে, হে বিষ্ণো! তুমি আমাদিগকে বধ কর, তাহা হইলেই তিনি তোমাদিগকে বধ করিবেন, নতুবা হরিও তোমাদিগকে বধ করিতে সমর্থ হইবেন না। ১৮
এইরূপে মহামায়া কর্তৃক মোহিত হইয়া সেই অসুরদ্বয় বারংবার বিষ্ণুর শরীরে ভ্রমণ করিতে করিতে নাভি-পদ্মস্থিত ব্রহ্মাকে দেখিতে পাইল। ১৯
তখন তাহারা সেই ব্রহ্মাকে বলিল;–অদ্য আমরা তোমাকে এই স্থানেই বধ করিব। অতএব যদি তুমি জীবিত থাকিতে ইচ্ছা কর, তবে বিষ্ণুকে জাগরিত কর। ২০
অনন্তর, ব্রহ্মা ভীত হইয়া বহুবিধ স্তব দ্বারা যোগনিদ্রা জগৎ-প্রসূ মহামায়াকে প্রসন্ন করিয়াছিলেন। ২১
অনন্তর দেবী, জগতের আত্মস্বরূপ ব্রহ্মা কর্তৃক চিরকাল স্তুত হইয়া প্রসন্না হইলেন এবং সেই ব্যগ্রচিত্ত ব্ৰহ্মাকে বলিলেন-হে মহাভাগ! কি নিমিত্ত আমার স্তব করিলে? ২২।
আমি তোমার কি কাৰ্য্য করিব, তাহা শীঘ্র বল, আমি অদ্যই তোমার সেই কাৰ্য্য করিব। ২৩
তখন মহাত্মা বিধাতা মহামায়াকে বলিলেন, যে পর্যন্ত এই মধুকৈটভ আমাকে না মারিয়া ফেলে, তাহার মধ্যে আপনি জগন্নাথকে প্রবোধিত করুন এবং এই অসুর মধু ও কৈটভকে সম্মোহিত করুন। ২৪
জগতের আত্মস্বরূপ ব্ৰহ্মা কর্তৃক এইরূপ উক্ত হইয়া দেবী মহামায়া নারায়ণকে প্রবোধিত এবং মধু ও কৈটভকে মোহিত করিলেন। ২৫
অনন্তর ভগবান্ হরি প্রবুদ্ধ হইয়া ব্রহ্মাকে ভীত এবং ঘোররূপ অসুরদ্বয় মধু এবং কৈটভকে দেখিতে পাইলেন। ২৬
অনন্তর ভগবান্ জনার্দন সেই অসুরদ্বয়ের সহিত যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। কিন্তু সেই বীর মধু ও কৈটভকে পরাভূত করিতে সমর্থ হইলেন না। ২৭
অনন্তও ফণার অগ্রভাগ দ্বারা সেই যুধ্যমান মধু, কৈটভ এবং নারায়ণ–এই তিন বীরকে বহন করিতে অসমর্থ হইলেন। ২৮
অনন্তর ব্রহ্মা, অর্ধযোজন বিস্তৃত এবং অর্ধযোজন আয়ত একটি শিলারূপা স্থিতিশক্তি করিলেন। ২৯
নারায়ণ সেই শিলার উপর দণ্ডায়মান হইয়া তাহাদিগের সহিত যুদ্ধ করিতে লাগিলেন এবং সেই শিলাও তাহাদের সহিত জলের মধ্যে প্রবেশ করিল। ৩০
সেই শক্তি জলে মগ্ন হইলে ভগবান নারায়ণ পঞ্চসহস্র বৎসর জলের মধ্যে থাকিয়া সেই অসুরদ্বয়ের সহিত নিরন্তর বাহুযুদ্ধ করেন। ৩১
তখন জগৎপতি বিষ্ণু, সেই উভয় অসুরকে বধ করিতে অসমর্থ হইলেন, তখন তাহার অতিশয় চিন্তা হইল; বিধাতারও অত্যন্ত ভয় ও চিন্তা হইল। ৩২
তদনন্তর সেই বলদর্পিত অসুরদ্বয় পুনঃপুনঃ জগন্মাতার মহামায়ায় বিমোহিত হইয়া আপনারাই বিষ্ণুকে বলিল। ৩৩
হে মাধব! তোমার যুদ্ধনৈপুণ্যে আমরা তুষ্ট হইয়াছি, তুমি বর প্রার্থনা কর। এক্ষণে আমরা সত্য বলিতেছি, তুমি যাহা অভিলাষ করিবে, আমরা তাহাই সম্পাদন করিব। ৩৪
তাহাদের সেই বাক্য শ্রবণ করিয়া ভগবান গরুড়ধ্বজ বলিলেন, হে মহা বলদ্বয়! তোমরা আমার বধ্য হইবে। ৩৫
যদি তোমাদের আমাকে কিঞ্চিৎ দেয় হয়, তবে এই বর প্রদান কর। এই কথা শুনিয়া তাহারা বলিল, তোমার নিকট হইতেই আমাদের বধ শোভা পায়। ৩৬-৩৭।
অতএব আমাদিগকে সেই স্থানে বধ কর, যেখানে এক্ষণে জল নাই। তাহাদের এই বাক্য শ্রবণ করিয়া ভগবান্ গরুড়ধ্বজ, ব্রহ্মাকে এবং আমাকে শীঘ্র ডাকিয়া সঙ্কেতে এই কথা বলিলেন। ৩৮
সেই ব্ৰহ্মশক্তি শিলাকে শীঘ্র উদ্ধৃত করিয়া এইরূপে ধারণ কর যে, আমি তাহার উপর অবস্থান করিয়া ঐ মহাবলদ্বয়কে বধ করিতে সমর্থ হইব। ৩৯
অনন্তর ব্রহ্মা এবং আমি যেই শিলাকে উদ্ধৃত করিলাম, তাহার মধ্যে পূৰ্বভাগে আমি পৰ্বতরূপ ধারণ করিয়া উপরে থাকিয়া সেই শিলাকে ভেদ করত রসাতলে প্রবেশ করিলাম। ৪০
ঈশানকোণে কূৰ্ম্মও পৰ্বতরূপে সেই শিলাকে ধারণ করিলেন। ৪১
বায়ুকোণে অনন্ত এবং নৈর্ঋতকোণে জগদীশ্বরী জগদ্ধাত্রী মহামায়া স্বয়ং শৈলরূপ ধারণ করিয়া অবস্থান করিতে লাগিলেন। ৪২
অগ্নিকোণে ভগবান পরমেশ্বর বিষ্ণু স্বয়ং অপর একরূপে অবস্থিত হইয়া সেই ব্ৰহ্মশক্তি শিলাকে ধারণ করিয়াছিলেন। ৪৩
মধ্যে ব্রহ্মা, আমি এবং আর একটি বরাহ অবস্থান করিতে লাগিল। ৪৪
অনন্তর জগতের আধারস্বরূপ জগৎপতি বিষ্ণু, বরাহের পৃষ্ঠোপরি অবস্থান করিয়া সেই অধোগত শিলাকে অবষ্টম্ভন করত নিজের বামজঘনে যত্নপূর্বক তাহাদের মস্তক স্থাপন করিয়া এবং সমুদয় বলদ্বারা উহা আক্রমণ করত সেই মহাবীর মধু ও কৈটভের মস্তক চক্র দ্বারা পৃথিবী ভিন্ন স্থানে শরীর হইতে এক একটি করিয়া পৃথক্ করিলেন। ৪৫-৪৭
এবং সেই ব্রহ্মশক্তি শিলা দেবগণকর্তৃক মুহুর্মূহুঃ যত্নপূর্বক ধৃত হইয়াও অধোগত হইল। ৪৮
অনন্তর জগৎপতি বিষ্ণু, ব্ৰহ্মশক্তি শিলাকে যত্নপূর্বক উদ্ধৃত করিয়া সেই মৃত মধু ও কৈটভের শরীরে স্থাপিত করিলেন। ৪৯
অনন্তর পৃথিবী উদ্ধৃত হইলে, তোয়রাশিদ্বারা ক্লেদিত পৃথিবীকে তাহাদের মেদের বিলেপন দ্বারা দৃঢ় করিলেন। ৫০
সেই মেদের বিলেপন প্রাপ্ত হওয়ায় পৃথিবী দেবী অদ্যপি দেব মানুষ রাক্ষসগণকর্তৃক মেদিনী বলিয়া গীত হন। ৫১
অনন্তর সমুদয় প্রাণি-সৃষ্টির পর বহুকাল গত হইলে আমি ভাৰ্য্যার্থী হইয়া দক্ষকন্যাকে বধূরূপে গ্রহণ করিলাম। সেই দক্ষকন্যা–-“যদি তুমি উহার অনিষ্ট কর, তাহা হইলে আমি প্রাণত্যাগ করিব” পিতাকে এইরূপ প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ করিয়া আমার প্রেয়সী ভাৰ্য্যা হইয়াছিলেন। ৫২-৫৩
অনন্তর দক্ষ, যজ্ঞ করিয়া সমস্ত চরাচরকে নিমন্ত্রণ করিল, কেবল আমাকে এবং সতীকে নিমন্ত্রণ করিল না, সেই অনিষ্ট কার্যহেতুক সতী প্রাণত্যাগ করিলেন। ৫৪
অনন্তর আমি মোহে অবসন্ন হইয়া সতীর সেই মৃতদেহ স্কন্ধে বহন করত ইতস্ততঃ ভ্রমণ করিতে করিতে সেই পীঠস্থান প্রাপ্ত হইলাম। ৫৫
যোগনিদ্রা-প্রভাবে যেখানে যেখানে পর্যায়ক্রমে সেই সতীর অঙ্গ খসিয়া পড়িয়াছিল, সেই সকল স্থান অতি পবিত্র বলিয়া খ্যাত হয়। ৫৬
ঐ কুজিকা-পীঠে সতীর যোনিমণ্ডল পতিত হয় এবং মহামায়া দেবীও সেই যোনিতে বিলীন হইয়া থাকেন। ৫৭
পর্বতরূপী আমাতে সেই যোনিমণ্ডল পতিত হইলে এবং তাহাতে যোগ নিদ্রা বিলীন হইলে, সেই পৰ্বত নীলবর্ণ হইয়াছিল। ৫৮
সেই মহামায়ার গাঢ় আক্রমণ হেতুক সেই শৈল, পাতাল-তলে প্রবেশ করিল, তখন ব্রহ্মা তাহাকে ধারণ করিলেন। ৫৯
সেই চতুর্মুখ ব্ৰহ্মা, পূৰ্বে ব্রহ্মশক্তি শিলাকে ধারণ করিবার নিমিত্ত পৰ্বত রূপ ধারণ করিয়াছিলেন। সেই পৰ্বতরূপেই আমাকে ধারণ করিলেন। ৬০
মায়া কর্তৃক গাঢ় আক্রান্ত ব্ৰহ্মা, পৰ্বতরূপে পর্বরূপী আমাকে ধারণ করিতে অশক্ত হইয়া অধোগত হইলেন। ৬১
অনন্তর আমি বরাহে সংসক্ত হইলে সেই শৈলরূপধারী মাধব, শৈলরূপী আমাকে ধারণ করিতে উদ্যম করিলেন। ৬২
ঐ বরাহও পৰ্ব্বতরূপে পৃথিবীকে ধারণ করিয়া আমার সহিত অধোগমন করত পৃথিবীতে নিখাতের মত অবস্থান করিতে লাগিলেন। ৬৩
এক একটা শত যোজন করিয়া উচ্চ পৰ্বতত্রয় যখন অধোগত হইল, তখন মহাদেবী তাহাদের সকলকেই ধারণ করিলেন। ৬৪
ঐ পৰ্বতত্রয়ের শেষ পর্বতটি একক্রোশ মাত্র উচ্চ। ৬৫
যেহেতু সেই মহাদেবী একাই নিখিল জগতের প্রকৃতি, সেই জন্য সেই জগৎ প্রসব-কারিণীকে ব্রহ্মা বিষ্ণু এবং শিব–ধারণ করিয়া রহিয়াছেন। ৬
ঐ পৰ্বতগণের মধ্যে পূৰ্বদিকস্থিত ব্ৰহ্মশৈল, উহাকে দেবগণ শ্বেত নামে অভিহিত করেন। আমার মূর্তি শৈল–নীল নামে কথিত হয়। ৬৭
সেই নীলপৰ্বত মধ্যস্থিত এবং পীঠ, উহা ত্রিকোণ, দেখিতে উদূখলের মত এবং ব্রহ্মা ও বরাহের মধ্যে বিরাজমান। ৬৮
শৈলরূপী বরাহ চিত্র নামে প্রসিদ্ধ। উহা সকলের পশ্চাৎ অবস্থিত এবং সর্বাপেক্ষা দীর্ঘ। ৬৯
ঈশানকোণে মহাদ্যুতি কুৰ্ম্ম, যে পৰ্বতরূপে অবস্থান করিতেছেন, ঐ পর্বত মণিকর্ণ নামে খ্যাত এবং দেবসমূহ কর্তৃক সেবিত। ৭০
বায়ুকোণে অনন্ত, যে শৈলরূপে অবস্থিত হইয়াছিলেন, উহার নাম মণিপর্বত; উহা মাধবের প্রিয়। ৭১
ঐ বায়ুকোণে মহামায়া, যে গিরিরূপে অবস্থান করিতেছেন, ঐ গিরির নাম গন্ধমাদন; উহা সৰ্ব্বদা মহাদেবের প্রিয়। ৭২
বরাহপৃষ্ঠের উপরিভাগে যেখানে ভগবান হরি ঐ অসুরদ্বয়ের শিরচ্ছেদ করিয়াছিলেন, সেই স্থানে পাণ্ডু নামে একটি শিলা উৎপন্ন হইয়াছে। ৭৩
ব্ৰহ্মশক্তি শিলার মধ্যে এবং পূর্বভাগে যে পৰ্বত অবস্থিত, উহার নাম ভস্মাচল। ৭৪
কুব্জিকা-পীঠ নামে প্রসিদ্ধ এইরূপ পুণ্যতম ক্ষেত্রে নীলপৰ্বতের অগ্রভাগে মহামায়াদেবী আমার সহিত সর্বদা নির্জনে বাস করেন। ৭৫
সতীর বিশীর্ণ যোনিমণ্ডল পৰ্বতে পতিত হইয়া প্রস্তরত্ব প্রাপ্ত হইয়াছে,, সেই প্রস্তরময় যোনিতে কামাখ্যা দেবী অবস্থান করেন। ৭৬
যে মনুষ্য ঐ শিলাকে স্পর্শ করে, সে অমরত্ব প্রাপ্ত হয়, অমর হইয়া ব্ৰহ্ম সদনে গমন করত পরিণামে মোক্ষ প্রাপ্ত হয়। ৭৭
যে শিলাতে ভগবতী কামেশ্বরী অবস্থান করেন, তাহার মাহাত্ম্য অদ্ভুত; যাহার গুহ্যদেশ প্রাপ্ত হইয়া লৌহও ভস্ম হয়। ৭৮
সেই শিবদায়িনী কামাখ্যাদেবী, সকল লোকের মোহের নিমিত্ত এবং আমার প্রীতির নিমিত্ত প্রত্যহ পঞ্চ মূর্তি ধারণ করেন। ৭৯
আমিও পঞ্চমুখে পঞ্চভাগে সেই কামেশ্বরীস্থানে অবস্থান করি, পূর্বভাগে ঈশানরূপে এবং ঐরূপই প্রধান। ৮০
ঈশান কোণে তৎপুরুষ, তাহার সমীপে অঘোর, বায়ুকোণে সদ্যোজাত এবং বামদেব। ৮১
হে নরশ্রেষ্ঠ বেতাল ও ভৈরব! দেবীরও পঞ্চমূর্তির কীৰ্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ কর; উহা দেবতাদিগেরও গুহ্য। ৮২
কামাখ্যা, ত্রিপুরা, কামেশ্বরী, শিবা, সারদা,–ইহারা সকলেই মহোৎসাহ, কাম, রূপ এবং গুণ দ্বারা অলঙ্কৃত। ৮৩।
শিলারূপ যোনিমণ্ডলে আমি লিঙ্গত্ব প্রাপ্ত হইলে, সকল দেবগণ প্রস্তর প্রাপ্ত হইয়া শৈলরূপ ধারণ করিলেন। ৮৪
যেমন আমি শিলারূপী হইয়াও নিজরূপে কামাখ্যাদেবীর সহিত রমণ করি সেইরূপ অপর দেবতাগণও শিলারূপে আচ্ছন্ন হইয়াও নিত্য নির্জনে সঙ্গত হইয়া নিজ নিজ রূপ ধারণপূর্বক রমণ করিয়া থাকেন। ৮৫-৮৬
ব্রহ্মা, বিষ্ণু, রুদ্র, সমুদয় দিকপালগণ এবং অন্যান্য দেবগণ, সর্বদা আমার অনুকুল হইয়া কামরূপিণী কামাখ্যা দেবীর উপাসনার নিমিত্ত এই স্থানে অবস্থান করেন। ৮৭-৮৮
সদাশিব যে নীল-শৈলরূপ ধারণ করিয়াছেন, উহা ত্রিকোণাকার এবং মধ্যে নিম্ন। উহার মধ্যে ছত্ৰিশশক্তি-সমন্বিত সুচারু মণ্ডল। ৮৯
তাহাতে মনোভবনির্মিত কামগুহা। ঐ গুহাভ্যন্তরে শিলাতে অধিষ্ঠিত শিলারূপিণী মনোহর গুহা। ঐ যোনি দীর্ঘে এক-বিতস্তি পরিমিত এবং একুশ অঙ্গলি আয়ত। ৯০
ক্রমশঃ সূক্ষ্মরূপে বিনির্মিত এবং ভস্মশৈলানুগামিনী। উহা সিন্দুর ও কুঙ্কুমের মত রক্তবর্ণা, সৰ্ব্বকামপ্রদায়িনী। ৯১
ঐ যোনিতে নিত্য পঞ্চরূপা, মূলভূতা, সনাতনী, জগদ্ধাত্রী, মহামায়া, কামাখ্যা দেবী ক্রীড়া করেন। ১২
ঐ স্থানে দেবীকে বেষ্টন করিয়া মূলভূতা সনাতনী পূর্বোক্ত শৈলপুত্রাদি আটটি যোগিনী অবস্থান করেন। ৯৩
হে ভৈরব! তাহাদের পীঠানুগত নাম একত্র শ্রবণ কর। ৯৪
গুপ্তকামা, শ্রীকামা, বিন্ধ্যবাসিনী, কোটীশ্বরী, বনস্থা, পাদদুর্গা, দীর্ঘেশ্বরী এবং ভুবনেশ্বরী-কামাখ্যা দেবীর এই অষ্টযোগিনী পীঠদেবতা এবং নিজ নিজ পীঠের নামানুসারে বিখ্যাত। ৯৫-৯৬
হে ভৈরব! এই স্থানে সমুদয় তীর্থই জলরূপে অবস্থান করিতেছে এবং সৌভাগ্যনামে পুণ্যদায়িনী একটি অল্প সরোবরও আছে। ৯৭
সেই সরস্বতীর তীরে কমলনামে প্রসিদ্ধ স্বর্ণ-নির্মিত কামাখ্যা দেবীর বালকরূপী বিষ্ণু বাস করেন। ৯৮
দেবীর অঙ্গে লক্ষ্মী এবং সরস্বতী ইহ্যাঁরা অবস্থিত। লক্ষ্মী, ললিতা এবং মাতঙ্গী নামে প্রসিদ্ধ। ৯৯
সেই শৈলে পূর্বভাগে দেবীর দ্বারে প্রিয় পুত্র গণপতি সিদ্ধ নামে বিখ্যাত হইয়া অবস্থান করিতেছেন। ১০০
সেই মহাশৈলে কল্পবৃক্ষ এবং কল্পবল্লী, দেবীর রুচিকর তিন্তিড়ী এবং অপরাজিতারূপে পরিণত হইয়া অবস্থান করিতেছেন। ১০১
যেস্থানে হরি জঘনে মধু-কৈটভকে রাখিয়া শিরচ্ছেদ করেন, সেইস্থানে পাণ্ডুনাথনামে বরাহ অবস্থিত রহিয়াছে। ১০২
উহার সমীপে ব্ৰহ্মকুণ্ড; পূর্বকালে উহা ব্ৰহ্মাকর্তৃক নির্মিত হয়। ১০৩
হে ভৈরব! আমার ঈশাননামে যে মস্তক, ইহাই সিদ্ধেশ্বর-সংজ্ঞক শিলাময় সিদ্ধকুণ্ডরূপে মধ্যে অবস্থিত ইহা জান। ১০৪
তাহার সমীপে গয়াক্ষেত্র এবং বারাণসী, যোনিমণ্ডল-সদৃশ কুণ্ডরূপ ধারণ করিয়া অবস্থিত রহিয়াছে। ১০৫
তাহার সমীপে সুধাসারপূর্ণ অমৃতকুণ্ড অবস্থিত। উহা আমার প্রীতির নিমিত্ত ইন্দ্র, সমস্ত দেবগণের সহিত মিলিত হইয়া স্থাপিত করেন। ১০৬
আমার বামদেবনামে যে মস্তক আছে, উহাই শ্রীকামেশ্বরনামক মহাপবিত্র কামকুণ্ডরূপে–তাহার সমীপে অবস্থান করিতেছে। ১০৭
সিদ্ধ এবং কামকুণ্ডের মধ্যে কেদার নামে ক্ষেত্র অবস্থিত। উহা চতুর্দশ ব্যাম দীর্ঘ এবং ছায়াচ্ছত্র নামেও অভিহিত হয়। ১০৮
তাহার সমীপে গুপ্তকামা নামে শৈলপুত্রী গুপ্তকুণ্ডের মধ্যে কামেশনামক প্রস্তরে সংস্থিত। ১০৯
কামেশ্বর শিলার পূর্বভাগে কামাখ্যার অবয়বীভূত শিলা সর্বদা সংযুক্ত এবং উহার অপরভাগে যোনিমণ্ডল সংসক্ত। ১১০
কাম এবং কামাখ্যার মধ্যস্থিত পীঠে কাল-রাত্রি দীর্ঘেশ্বরী নামে অবস্থিত এবং সীমা-ভাগে প্রচণ্ডিকা বাস করেন। ১১১
কামাখ্যা প্রস্তরের প্রান্তভাগে কুষ্মাণ্ডী যোগিনী, পীঠানুগত কোটিশ্বরী নামে যোনিরূপে অবস্থিত। ১১২
আমার অঘোর নামে যে মস্তক আছে, উহা কামাখ্যা দেবীর দক্ষিণপীঠে অবস্থিত; পরমপদ-প্রার্থিগণ উহাকে ভৈরব নামে কীৰ্ত্তন করেন। ১১৩
ভৈরবের সমীপে ভৈরবীনামে চামুণ্ডাদেবী অবস্থান করেন। ইনি অষ্টনায়িকার অন্যতম চণ্ডমূণ্ড নামক অসুরদ্বয়ের সংহারকারিণী এবং ভক্তের মনোবাঞ্ছা-পূরণকারিণী। ১১৪
কাম এবং ভৈরবের মধ্যে স্বয়ং সুরনদী সকল জগতের হিত এবং কামাখ্যা দেবীর প্রীতির নিমিত্ত অবস্থিত। ১১৫
আমার সদ্যোজাত-নামক মস্তক, পীঠে আম্রাতকেশ্বর নামে প্রসিদ্ধ। উহা শ্রীভব নামক গহ্বরে অবস্থিত এবং দেবর্ষিগণকর্তৃক সেবিত। ১১৬
ঐ স্থানেই যোনিরূপিণী দুর্গা নামে নায়িকা আছেন, ইহা জান। ঐ নায়িকা দেবগণের মধ্যে নিত্য সিদ্ধকামেশ্বরী নামে বিখ্যাত। ১১৭
ঐ স্থলে কল্পবল্লীসমম্বিত আম্ৰাতক নামে একটি কল্পবৃক্ষ আছে, তাহার পত্র কখন পুরাতন হয় না এবং ছায়া অতি বিস্তৃত। ১১৮
আম্রাতকের নিকটে আমার প্রীতিবৃদ্ধির নিমিত্ত গঙ্গা নদী স্বয়ং উত্থিত হইয়াছেন, উহার পীঠনাম সিদ্ধ-গঙ্গা। ১১৯
পুষ্করক্ষেত্র, পীঠে আম্ৰাতক নামে প্রসিদ্ধ হইয়াছে এবং ঈশানকোণে তৎপুরুষাখ্য আমার মস্তক অবস্থিত রহিয়াছে। ১২০
হে ভৈরব! উহার পীঠে ভুবনেশ্বর নামে প্রসিদ্ধ এবং ভুবনেশ্বরের গহ্বর ভুবনানন্দ নামে অভিহিত হয়। ১২১
তাহার নিকটে সুরভি, শিলারূপে কামধেনু নামে প্রসিদ্ধি প্রাপ্ত হইয়া অবস্থান করিতেছেন। তিনি পীঠে সকলের কামনা পূরণ করেন। ১২২
আমার মধ্য ভাগে অতি প্রচণ্ড মহাভৈরব নামে যে শরভমূর্তি আছে, উহা ঐ স্থানে কোটিলিঙ্গ নামে প্রসিদ্ধ। ১২৩
উহা পঞ্চভাগে পঞ্চ প্রকার মূর্তিতে হইয়াছে। পশ্চাৎভাগে আমি অতি প্রীতি সহকারে ভৈরব নামে অবস্থান করি। ১২৪
মহাগৌরী নামে সিদ্ধরূপিণী যে যোগিনী আছেন, তিনি ব্ৰহ্মপৰ্ব্বতের ঊর্ধ্বে শিলারূপে অবস্থান করিতেছেন। ১২৫
তিনি অতিশয় সৌন্দর্য্যশালিনী এবং ভুবনেশ্বরী নামে প্রসিদ্ধ। যেখানে পৰ্বতরূপী-আমাতে ব্ৰহ্মা সংসক্ত হইয়াছেন, সেই স্থানেই তিনি অবস্থিত। ১২৬
সেই স্থানে অপরাজিতা নামে কল্পবল্লী আছেন। কামধেনুর অদূরে পূর্ব ভাগে মহেশ্বর-যোনিরূপা শ্রীকামাখ্যা অবস্থিত। ১২৭।
চণ্ডিকা নামে যে যোগিনী আছেন, সেই সৰ্ব্বকাম-শুভপ্ৰদা শুভরূপিণীকে অগ্নিকোণ অবস্থিত জানিও। ১২৮
চন্দ্রঘণ্টা নামে যোগিনী, পীঠে বিন্ধ্যবাসিনী বলিয়া প্রসিদ্ধ হইয়াছেন। এবং স্কন্দমাতা নামে যোগিনী, পীঠে বনবাসিনী নামে সিদ্ধ হইয়াছেন। ১২৯
পীঠানুসারে কাত্যায়নীর ‘পাদদুর্গা’ এই নাম হইয়াছে। সেই শিবদায়িনী নীলশৈলের নৈর্ঋত-প্রান্তে অবস্থিত। ১৩০
আমারই মূৰ্ত্ত্যন্তর পাষাণরূপ-ধারী নন্দী, পীঠানুসারে হনুমান্ নামে প্রসিদ্ধ হইয়া পশ্চিমদ্বারে অবস্থান করিতেছে। ১৩১
ঔর্ব বলিলেন,–অমিত-তেজাঃ শম্ভুর এইরূপ বাক্য শ্রবণ করিয়া বেতাল এবং ভৈরব সমুৎসুক-চিত্তে তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন। ১৩২
বেতাল ও ভৈরব বলিলেন,–হে তাত! পীঠক্রম এবং দেবীর পূজার ক্রম শুনিলাম। হে শঙ্কর! এক্ষণে পঞ্চ মূর্তির বিষয় শ্রবণ করিতে ইচ্ছা করি। ১৩৩
হে বৃষধ্বজ! এক্ষণে পঞ্চমূর্তির রূপ, সমগ্র মন্ত্র, যন্ত্র এবং তন্ত্র আমাদিগের নিকট কীৰ্ত্তন করুন। ১৩৪
ঈশ্বর বলিলেন,–হে বেতাল! হে ভৈরব! কামাখ্যাদেবীর পঞ্চমূর্তির মন্ত্র তন্ত্র রূপ এবং কল্প পৃথক্ পৃথক্ করিয়া বলিতেছি শ্রবণ কর। ১৩৫
কামস্থ কামমধ্যস্থ কামদেবতাদ্বারা পুটিকৃত, কামী কামদেবদ্বারা কমনীয় বস্তুর কামনা করিবে এবং কমনীয় বস্তুকে কামে নিয়োজিত করিবে। ১৩৬
হে ব্রহ্মা, জ্যেষ্ঠ ব্যঞ্জন পরম শান্ত। প্রথমে ক্রমে ক্রমে উহা সুধাযুক্ত করিবে। চন্দ্রবিন্দু সহিত ইহা কামাখ্যার বীজ বলিয়া অভিহিত হয়। ১৩৭-১৩৮
এই বীজ ধর্মপ্রদ এবং কাম মোক্ষ এবং অর্থপ্রদ। ইহা পরম রহস্য এবং অন্যত্র দূর্লভ। যে নরশ্রেষ্ঠ গুরুবক্ত্র হইতে কর্ণকুহরে ইহা শ্রবণ করে, সে অখিল কামনার বস্তু প্রাপ্ত হইয়া শিবলোকে পূজ্য হয়। ১৩১
ইহা সঙ্কলিত শ্রুতির সার, দেবগণের কণ্ঠের অদ্বিতীয় হার-স্বরূপ, নিখিল পাপ-হরণকারী এবং ধরার আনন্দদায়ী। ইহা মনুষ্যকে সুনয়, শুভযশ ও গোদ্বারা যুক্ত করে এবং সমস্ত অশিব ও বিঘ্নের ধ্বংস করে। ১৪০
যাহা ধ্যানকারীদিগের দণ্ডপাণি হইয়া যম-ভয় নিবারণ করে, প্রণয়কারী সুনয়-সংস্থিত দেবলোক, মর্ত্যলোক এবং আকাশ ব্যাপিয়া অবস্থিত, পরমপদ বিতরণকারী, শুদ্ধ, দুর্ভাগ্যের জীর্ণকারী এবং শিবপদস্বরূপ কামাখ্যাদেবীর এই গুহ্য মন্ত্র শ্রবণ কর। ১৪১
তাহার নাম কর্ণ-মধ্যস্থিত আকাশমার্গে সঙ্গত, নীতিমার্গের একমাত্র আশ্রয় এবং বহু ভূতির নিমিত্ত সমর্থ; আর যাহার শক্তি সুরগণদিগের গণনার কুণ্ডলীস্বরূপ; হতাশ ব্যক্তিগণকর্তৃক সেইরূপ চিন্তনীয়। ১৪২
যাহার কর্ণ সূৰ্য্য এবং চন্দ্র সংযুক্তি বর্ণ রক্ত ও ঈষৎ পীত, মণি এবং সুবর্ণ নির্মিত বিচিত্র-ভূষণ, কর্ণে দোলায়মান এবং নেত্র তিনটী; হস্ত–বর এবং অভয়দানে নিরত এবং যিনি অক্ষসূত্রধারিণী, প্রণত সুর এবং নরগণের ঈশ্বরী সেই সিদ্ধ কামেশ্বরী; যিনি অরুণ কমলোপরি পদ্মাসনে উপবিষ্ট, যাহার শরীর নবযৌবনে শোভিত, যিনি মূক্তকেশী, শোভন-হারশালিনী, শব-হৃদয়ে অধিষ্ঠাত্রী, স্থূল এবং উন্নতস্তনদ্বয়শোভিনী এবং যাহার আস্য–বাল সূৰ্য-সদৃশ উজ্জ্বল, তিনিই সৰ্ব্বকামেশ্বরী। ১৪৩-১৪৪
সেই কামেশ্বরী দেবী বিপুল বিভব-প্রদায়িনী, স্মেরবক্ত্রা, সুকেশী, ললিত নখর-দন্তশালিনী এবং অর্ধচন্দ্রে অলঙ্কৃত, কাম প্রস্তরে অবস্থিত যোনিমুদ্রা দ্বারা উল্লাসিনী, পবনের মত গমনসমর্থা এবং প্রসিদ্ধ-স্থান-ভাগিনী। ১৪৫
এই বিদ্যুৎ এবং অগ্নিসদৃশ প্রকাশ-শালিনী দেবীকে–প্রার্থী সাধক, ধর্ম অর্থ-প্রভৃতির নিমিত্ত চিন্তা করিবে। হে বেতাল ও ভৈরব। এক্ষণে শ্রীর প্রতিষ্ঠাকারী কল্প ও তন্ত্র পৃথক পৃথকৃ শ্রবণ কর। ১৪৬
প্রথমে একটি মণ্ডল করিয়া তাহা পরে পুষ্পযুক্ত চন্দনদ্বার অঙ্কিত করিবে, পূৰ্বে দেবীতন্ত্রে লেখনের যেরূপ ক্রম উক্ত হইয়াছে, এস্থলে প্রথমে সেইরূপ ক্রমের অনুষ্ঠান করিবে। ১৪৭
দ্বিষষ্টিতম অধ্যায় সমাপ্ত। ৬২