পঞ্চম কাণ্ড। পঞ্চম প্রপাঠক
প্রথম অনুবাক
মন্ত্র- যদেকেন সংস্থাপয়তি যজ্ঞস্য সন্তত্যা অবিচ্ছেদায়ৈাঃ পশবো যে মুস্করা যদৈন্দ্রাঃ সকোহগ্নিভ্য আ লভ্যন্তে দেবতাভাঃ সমদং দত্যাগ্নেয়ন্ত্রিত যাজ্যানুবাক্যাঃ কুৰ্য্যাদ্যদাগ্নেয়ন্তেনাহগ্নেয়া যত্রিষ্টুভস্তেনৈাঃ সমৃদধ্যৈ ন দেবতাভ্যঃ সমদং দধাতি বয়বে নিযুত্বতে পরমা লভতে তেজোহগ্নের্ধায়ু জেস এষ আ লভ্যতে তস্মাদ্যত্রিয় বায়ুঃ বাতি তদ্রিয়ঙগ্নিহতি স্বমেব তত্তেজোহন্বেতি যন্ন নিযুত্বতে স্যাদুন্মাদ্যোমানো নিযুত্বতে ভবতি যজমানস্যা নুম্মাদায় বায়ুমতী শ্বেতবতী যাজ্যানুবাক্যে ভবতঃ সতেজস্তায় হিরণ্যগর্ভঃ সমবর্তােগ্র ইত্যাঘারমা ঘারয়তি প্রজাপতির্বৈ হিরণ্যগর্ভ প্রজাপতেরনুরূপত্বায় সৰ্বাণি বা এস রূপাণি পশুনাং প্ৰত্যা লভ্যতে যচ্ছমণস্তং পুরুষাণাং রূপং যত্ত্বপরস্তদানাং যদন্যতোদম্ভগবাং যদব্যা ইব শান্তদবীনাং যদজশুদজানাং বায়ুর্বৈ পশূনাং প্রিয়ং ধাম যদ্বায়ব্যো ভবতেত্যমেবৈনমভি সঞ্জানানাঃ পশব উপ তিষ্ঠন্তে বায়ব্যঃ কাৰ্যতঃ প্রজাপত্যাত ইত্যাহুদ্বায়ব্যং কুৰ্য্যাৎ প্রজাপতেরিয়াদ্যৎ প্রাজাপত্যং কুৰ্য্যাঘায়োঃ ইয়াদ্যদ্বায়ব্যঃ পশুৰ্ভবতি তেন বায়োনৈতি যপ্রজাপত্যঃ পুরোশো ভবতি তেন প্রজাপতেনৈতি যদ্বাদশকপালনে বৈশ্বানরান্নৈতত্যাগ্নাবৈষ্ণবমেকাদশকপালং নিৰ্বপতি দীক্ষিষ্যমাশোহগ্নিঃ সৰ্ব্বা দেবতা বিষ্ণুৰ্যজ্ঞে দেবতাশ্চৈব যজ্ঞং চাইরভতেইগ্নি রবমো দেবতানাং বিষ্ণুঃ পরমো যদাগ্নাবৈষ্ণবমেকাদশকপালং নিৰ্বপতি দেবতাঃ এবোভয়তঃ পরিগৃহ্য যজমানোহব রুন্ধে পুরোশেন বৈ দেবা অমুম্মিল্লোঁক আধুবন চরুণাহস্মিন্যঃ কাময়েতামুষ্মিল্লোঁক ঋধুয়ামিতি স পুরোডাশং কুৰ্ব্বীতামুল্পিন্নেৰ লোক ঋধোতি যদষ্টাকপালস্তোনাহগ্নেয়ো যকিপালস্তেন বৈষ্ণবঃ সমৃদধ্যৈ যঃ কাময়েস্মিল্লোঁক ঋধুয়ামিতি সচরুং কুব্বীতাগ্নেধৃতং বিষ্ণোস্তণ্ডুলাম্মাৎ চরুঃ কার্যোহম্মিন্নেব লোক ঋগ্রােত্যাদিত্যো ভবতী যং বা অদিতিরস্যামের প্রতি তিষ্ঠত্যথো অস্যামেবাধি যজ্ঞং তনুতে যো বৈ সম্বরমুখ্যমভৃত্বাইগ্নিং চিনুতে যথা সামি গর্ভোহবপদ্যতে তাদৃগেব তদর্তিমাচ্ছেদ্বৈশ্বানরং স্বাদশকপালং পুরস্তাব্বিপেৎ সম্বৎসরো বা অগ্নিশ্বৈানররা যথা সম্বৎসরমাদ্বা কাল আগতে বিজায়ত এবমেব সম্বৎসরমাদ্বা আগতেহগ্নিং চিনুতে নাহর্তিমাচ্ছত্যেষা বা অগ্নেঃ প্রিয়া তনুদ্বৈশ্বানরঃ প্রিয়ামেবাস্য তনুবমব রুদ্ধে ত্ৰীণ্যেতানি হবীংষি ভবন্তি এয় ইমে লোকা এষাং লোকানাং রোহায় ॥১॥
মর্মার্থ- সায়ণাচার্য বলেন-দীক্ষণীয়েষ্টিরাদ্যানুবাকে ত্রিহবিরীরিতা–অর্থাৎ এই অনুবাকে দীক্ষণীয়েষ্টি ও ত্রিহবি দান সম্পর্কিত মন্ত্র কথিত হয়েছে। সায়ণাচার্য কৃত বিস্তৃত ভাষ্য সাধারণের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় বিধায় তার মর্মার্থ দেওয়া হলো না ॥১॥
.
দ্বিতীয় অনুবাক
মন্ত্র- প্রজাপতি প্রজাঃ সৃষ্ঠা প্ৰেণাহনু বিশস্তাভ্যঃ পুনঃ সবিতুৎ নাশক্লোৎ সোহবীরবদিং স যো মেতঃ পুনঃ সঞ্চিনবদিতি তং দেবাঃ সমন্বিন্ততো বৈ ত আধুবন্যৎ সমন্বিন্তচ্চিত্যস্য চিত্যত্বং য এবং বিদ্বানগ্নিং চিনুত ঋধোত্যের কস্মৈ কমগ্নিশ্চীয়ত ইত্যাহুরগ্নিবান অসানীতি বা অগ্নিশ্চীয়তেইগ্নিবানেব ভবতি কস্মৈ কমগ্নিশীয়ত ইত্যাহুবো মা বেদমিতি বা অগ্নিশীয়তে বিদুরেনং দেবাঃ কস্মৈ কমগ্নিশ্চীয়ত ইত্যাহুহ্যসানীতি বা অগ্নিশ্চীয়তে গৃহব ভবতি কস্মৈ কমগ্নিশীয়ত ইত্যাহু পশুবানসানীতি বা অগ্নিঃ চীয়তে পশুমানেব ভবতি কস্মৈ কমগ্নিশ্চীয়ত ইত্যাহুঃ সপ্ত মা পুরুষ উপ জীবানিতি বা অগ্নিশীয়তে এয়ঃ প্রায় প্রত্যঞ্চ আত্মা সপ্তম এতাবন্ত এবৈনমনুমিল্লাঁক উপ জীবন্তি প্ৰজাপতি রমিচিকীষত তং পৃথিব্রাবীম্ন মধ্যগ্নিং চেষ্যসেহতি মা ধক্ষ্যতি সা ত্বহতি দহ্যমানা বি ধবিষ্যে স পাপীয়ান ভবিষ্যগীতি সোহব্রবীত্তথা বা অহং করিষ্যামি যথা ত্বং নাতিধ্যতীতি স ইমামভ্যমৃশৎ প্রজাপতিত্ত্বা সাদয়তু তয়া দেবতায়াহঙ্গি রষদ সীদেতীমামেবেষ্টকাং কৃতোপাধানতিদাহায় ষৎ প্রত্যগ্নিং চিধীত তদভি মৃশেৎ প্রজাপতিত্ত্বা সাদয়তু তয়া দেবতয়াহঙ্গিরস্ববা সীদ ইতীমামেবেষ্টকাং কৃতোপ ধুত্তেহনতিদাহায় প্রজাপতিরকাময়ত প্ৰ জায়েয়েতি স এতমুখ্যমপশ্যং সম্বৎসরমবিভত্ততে বৈ স প্রাজায়ত তস্মাৎ সম্বৎসরং ভাৰ্য্যঃ বৈ জায়তে তং বসবোহ ব্ৰ প্ৰ মজনিষ্ঠা বয়ং প্র জায়াম ইতি তং বসুভাঃ প্রাযচ্ছত্তং শ্ৰীণ্যহান্যৰিভরুস্তেন ব্রীণি চ শতান্যসৃজস্ত ত্রয়স্ত্রিংশতং চ তম্মাহৎ ভাৰ্য্যঃ প্রৈব জায়তে তা রুদ্রা অব্ৰুব প্র যুয়মজনিং বয়ং প্র জায়ামহা ইতি তং রুদ্রেভ্যঃ প্রাচ্ছন্তং সহান্যবিভরুস্তেন ব্রীণি চ শতান্যসৃজত এয়স্ত্রিংশতং চ তস্মাৎ ষডহং ভ্যৰ্য্যঃ ৰৈ জায়তে তানাদিত্যা অব্ৰুব প্র যুয়মজনিং বয়ম্ প্ৰ জায়াম ইতি তমাদিত্যেভ্যঃ প্রাচ্ছন্তং দ্বাদশান্যবিতরুনে জীণি চ শতান্যসৃজন্ত ত্রয়স্ত্রিংশতং চ তস্মাদ্বাদশাহং ভাৰ্য্যঃ ৰৈ জায়তে তেন বৈ তে সহশ্রমসৃজন্তোখাং সহস্রতমীং য এবমুখ্যং সাহং বেদ এ সহস্রং পশুনাগ্নোতি৷৷ ২।
[সায়ণাচার্য বলেন-চয়নস্য বিধিস্তস্য ফলমুখ্যস্য ধারণম্। অনুবাকে দ্বিতীয়ে হি তদেত্ৰয়মীরিতম৷৷ অর্থাৎ এই অনুবাকে অগিচয়নের বিধি এবং অগিচয়নের ফল সম্পর্কিত মন্ত্র কথিত হয়েছে।]
মর্মার্থ- পুরাকালে কোনও সময়ে প্রজাপতি সকল প্রজাগণের মধ্যে প্রবিষ্ট হন। কিন্তু সেই প্রজাগণের নিকট হতে আপন কোনও রূপে পুনরায় উদ্ভবিত (প্রকাশিত) হতে সক্ষম হলেন না। সেই অবস্তায় স্থিত হয়ে প্রজাপতি বললনে–এই প্রজাগণের মধ্যে হতে যে আমাকে চয়ন করে পুনরায় সম্ভবিত করতে পারবে, সেই সমৃদ্ধি প্রাপ্ত হবে। সেই কথা শ্রবণ পূর্বক দেবগণ প্রজাপতিরূপ অগ্নিকে ইষ্টকার দ্বারা চয়ন করে পুনরায় তাকে সম্ভবিত করলেন। ফলে, দেবগণ ঋদ্ধি (অর্থাৎ সমৃদ্ধি) লাভ করলেন। অগ্নিকে সম্যক্ চয়ন করা হয়েছিল বলে অগ্নির নাম হয় চিতি। ব্ৰহ্মবাদিগণের মধ্যে কোন কোন জন জিজ্ঞাসা করেন–কি কামনায় এই অগ্নিচয়ন করণীয়? তার উত্তরে কোন ব্রহ্মবাদী বলেন–আমি শাস্ত্রীয় অগ্নিযুক্ত হবে, এই কামনা পূর্বক অগ্নিচয়ন করণীয়। (ইতি কাময়িত্বাহমগ্নিশ্চীয়ত)। সেই নিমিত্ত অগ্নিচয়ন করলে পরবর্তী ক্রতুর যোগ্য শাস্ত্রীয় অগ্নি যুক্ত হয় (শাস্ত্রীয়াগ্নি এব ভবতি)।-স্বর্গস্থ সকল দেবতা যজমানরূপী আমাকে সম্যক এইরকম ভাবে যজ্ঞানুষ্ঠানে সামর্থ্য প্রদান করুন, আমি যেন শাস্ত্রীয় সর্বকর্মের অনুষ্ঠানে সমর্থ গৃহস্থ হতে পারি, আমি যেন পশুসমৃদ্ধি লাভ করতে পারি–ইত্যাদি কামনা করে অগ্নিচয়ন কর্তব্য।–আমি যেন পূর্ববর্তী তিনপুরুষ (অর্থাৎ পিতা, পিতামহ ও প্রপিতামহ) এবং পরবর্তী তিন পুরুষ (অর্থাৎ পুত্র, পৌত্র ও প্রপৌত্র) এবং মধ্যবর্তী স্বয়ং (অর্থাৎ নিজে)–এই সপ্তপুরুষের রক্ষক হতে পারি এই কামনা পূর্বক অগ্নিচয়ন করলে স্বর্গে ও ইহলোকে এই রকম রক্ষক হওয়া যায়। পুরাকালে কোনও সময়ে প্রজাপতি পৃথিবীর উপরে অগ্নিচয়নে ইচ্ছা করেন। তখন চয়নার্থী প্রজাপতিকে পৃথিবী এই কথা বলেন-হে প্রজাপতি! আমার উপরে অগ্নিচয়ন করবেন না; যদি করেন, তাহলে আমি অত্যন্ত দহ্যমান হয়ে পুরলুণ্ঠিত হবে এবং আমার উপরে স্থিত আপনিও কম্পিত হবেন। এর ফলে আপনি পাপিষ্ঠ (তথা দরিদ্র) হবেন। এই কথা শ্রবণ করে প্রজাপতি বলেন-বেশ, আমার চীয়মান অগ্নি (অর্থাৎ চয়নকৃত অগ্নি) যাতে তোমাকে অধিক তাপ দিতে না পারেন, সেই রকম করছি। এই কথা বলে প্রজাপতি বক্ষ্যমান মন্ত্রে ভূমিকে স্পর্শ করলেন। মন্ত্র-হে ভূমে! ত্বমাদ্যকারণভূতামাদ্যপ্রজাপতিরূপয়া….. অর্থাৎ হে ভূমি! তুমি আদি কারণভূত প্রজাপতিরূপ দেবতার দ্বারা রক্ষিত হয়ে অঙ্গিরা ঋষিগণ কর্তৃক অগ্নিচয়ন কর্মকালে যেমন স্থির হয়ে স্থাপিত ছিলে, সেইরকম স্থির হয়ে উপবিষ্ট হও। এই মন্ত্রের সাথে স্পর্শ পূর্বক সর্ব ভূমিকে ইষ্টকারূপ করায় (ভূমিমিষ্টকামেব কৃত্ব) অগ্নি আর ভূমির শরীরাভ্যন্তরে প্রবেশ করেন না। অর্থাৎ অগ্নি স্বয়ং নিজেকে অতি-দগ্ধ করেন না (স্বাত্মানমতিদহতি)। এইভাবে ইষ্টকার উপরে অগ্নিচয়ন করলে ভূমিভাগ অতি তাপ প্রাপ্ত হয় না (অতিদাহো না ভবতি) ২।
.
তৃতীয় অনুবাক
মন্ত্র- যজুষা বা এষা ক্রিয়তে যজুষা পচ্যতে যজুষা বি মুচ্যতে যদুখা সা বা এষৈতহি যাতযামী সা ন পুনঃ প্ৰযুজ্যেত্যাহুরগ্নে যুগ্ধা হি যে তব যুক্ষা হি দেবহুতমাং ইত্যুখায়াং জুহোতি তেনৈ বৈনাং পুনঃ প্র যুক্তে তৈনাযাতযামী যো বা অগ্নিং যোগ আগতে যুক্তি যুঞ্জানেম্বগ্নে যুম্ফা হি যে তব যুম্ফা হি দেবহুতমাং ইত্যাহৈষ বা অগ্নেৰ্যোস্তৈনেবৈনং যুক্তি যুঙক্তে যুঞ্জানেষু ব্ৰহ্মবাদিনো বদন্তি ন্যভগ্নিশ্চেতব্যা উত্তানা ইতি বয়সাং বা এষ প্রতিময়া চীয়তে যদগ্নির্যন্ন্যঞ্চং চিনুযাৎ পৃষ্টিত এনমাহুতয় ঋচ্ছেয়ুদত্তানং ন পতিতুং শকুয়াদসুবর্গোহস্য স্যাৎ প্রাচীনমুত্তান পুরুষশীর্ষমুপ দধাতি মুখত এবৈনমাহুতয় ঋচ্ছন্তি নোত্তানং চিনুতে সুবর্গোহস্য ভবতি সৌৰ্য্যা জুহোতি চক্ষুরেবাম্মিন প্রতি দধাতি দ্বিৰ্জ্জুহোতি দে হি চক্ষুষী সমান্যা জুহোতি সমানং হি চক্ষুঃ সমৃদধ্যৈ দেবাসুরাঃ সংযত্তা আসন্তে বামং বসু সন্ন্যদধত তদেবা বামভৃহবৃঞ্জত তদ্বামভৃততা বামভৃত্তং যদ্বামভৃতমুপদধাতি বামমেব তয়া বসু যজ্ঞমানো ভ্রাতৃব্যস্য বৃক্তে হিরণ্যমূল্পী ভবতি জ্যোতির্বৈ হিরণ্যং জ্যোতিৰ্বামং জ্যোতিষৈবাস্য জ্যোতিৰ্বামং বৃক্তে দ্বিজুৰ্ভবতি প্রতিষ্ঠিত্যৈ ॥৩॥
[সায়ণাচার্য বলেন–অথ তৃতীয়ানুবাক উখাহোমাদিকমভিধীয়তে–অর্থাৎ, এই তৃতীয় অনুবাকে উখাহোম ইত্যাদির কথা ব্যক্ত হয়েছে]
মর্মার্থ– এই উখা (পাকস্থলী বা হাঁড়ি) বহু যজুঃ-মন্ত্রে সম্পাদ্যমান হয়েছে। এইভাবে বহুধা প্রযুক্ত হওয়ার কারণে সারহীন (গতসারা) হওয়ায় উখাকে পুনরায় সারযুক্ত করার নিমিত্ত (সসারত্বসম্পাদনায়) অগ্নে যুম্ফা হি ইত্যাদি, অর্থাৎ হে অগ্নি! আপনি যাগানুষ্ঠান করুন ইত্যাদি দুটি মন্ত্রে হোমানুষ্ঠান করতে হবে। এই হোমের দ্বারা উখাকে পুনরায় সারসম্পন্ন প্রয়োগযোগ্য করা হয়ে থাকে। যে যজমান যোগকাল সমাগত হলে প্রমত্ত না হয়ে অগ্নিকে যুক্ত করেন, সেই যজমান অগ্নিযোগানুষ্ঠাতা যজমানগণের মধ্যে নিজেও অগ্নিযোগানুষ্ঠাতা বলে পরিগণিত হন (অগ্নিযোগানুষ্ঠাতেতিব্যপদেশাহো ভবতি)।–হে অগ্নে! ত্বং যুক্তো ভবেতি, অর্থাৎ হে অগ্নি! আপনি যুক্ত হোন–এই মন্ত্রের উচ্চারণের দ্বারা অগ্নির যোগ সম্পন্ন হয়ে থাকে। (৫ম কাণ্ডের ২য় প্রপাঠকের ৮ম অনুবাকের পূণাং তস্যোপ দধ্যানুপদস্যদেবানুমত্তি এই বাক্যসমূহে এই হোমব্রাহ্মণ বিধৃত আছে)। চিত (চয়নকৃত) অগ্নি অধোমুখে স্থিত হলে, সেই অধোমুখত্বের কারণে সকল আহুতি তার পৃষ্ঠভাগে প্রদত্ত হয় এবং তা অগ্নিকে প্রাপ্ত হয়; অগ্নি ঊর্ধ্বমুখে স্থিত হলে পক্ষের দ্বারা আকাশে গমন করতে সমর্থ হয় না। এবং ঊর্ধ্বে গমনের অভাবে স্বর্গের কোন মঙ্গল হয় না। এই দোষ দুটি পরিহারের নিমিত্ত অগ্নিকে পুরুষের শীর্ষদেশের ন্যায় স্থাপন কর্তব্য। শিরস্থ (মাথার) কেশভাগ যেমন উপরে স্থিত হয়, গলদেশের নিম্নে যায় না, সেইরকম সেখানে আহুতি প্রদান করলে আহুতিগুলি মুখপ্রদেশে অগ্নিকে প্রাপ্ত হয়; কিন্তু পশ্চাৎ দিকে নয় (ন তু পৃষ্ঠতঃ)। –চিত্রং দেবানা ইত্যাদি সূর্যমন্ত্রের দ্বারা হোম করণীয়। সূর্য হলেন চক্ষুর অভিমানী দেবতা, সেই কারণে এই মন্ত্রের দ্বারা পুরুষষীর্ষে চক্ষুরিন্দ্রিয় সম্পাদিত হয়। [অতঃপর বামভৃৎ নামে আখ্যায়িত ইষ্টকার উপধান (ব্রতবিশেষ)কথিত হচ্ছে–পুরাকালে দেবতা ও অসুরগণ যুদ্ধে উদ্যত হলে উভয় পক্ষ তাদের নিজ নিজ ধনসমূহ গোপন পূর্বক কোন স্থানে সম্য রক্ষা করেছিলেন। তখন দেবগণ বামভৃৎ আখ্যায়িত ইষ্টকার দ্বারা অসুরগণের ধনসমূহ বিনাশ করেন। (বামের দ্বারা হরণ বা নাশ করার জন্য ব্যুৎপত্তিগতভাবে হ-কার স্থানে ভ-কার হওয়ায় বামভৃৎ নাম সম্পন্ন হয়েছিল)। অতএব যজমানও এই বামভূৎ উপধানের দ্বারা শত্রুগণের ধন বিনাশ করে থাকেন (ভ্রাতৃব্যস্য ধনং বিনাশয়তি) ॥৩॥
.
চতুর্থ অনুবাক
আপো বরুণস্য পত্নয় আসা অগ্নিরভ্যধ্যায়ত্তাং সমভবত্তস্য রেতঃ পরাহসতত্তদিয়মবদ্যদদ্বিতীয়ং পরাহপতত্তদসাবভদিয়ং বৈ বিরাডসৌ স্বরাড় যদ্বিরাজাবুবদধাতীমে এবোপ ধওে যদ্বা অসৌ রেতঃ সিঞ্চচতি তদস্যাং প্রতি তিষ্ঠতি তৎ প্র জায়তে তা ওষধয়ঃ বীরুধো ভবন্তি তা অগ্নিত্তি য এবং বেদ বৈ জায়তেহাদো ভবতি যো রেতস্বী স্যাৎ প্রথমায়াং তস্য চিত্যামুভে উপদধ্যাদিমে এবাস্মৈ সমীচী রেতঃ সিঞ্চততা যঃ সিক্তয়েতাঃ স্যাৎ প্রথমায়াং তস্য চিত্যামন্যামুপ দধ্যাদুত্তমায়ামন্যাং রেত এবাস্য সিক্তমাভ্যামুভয়তঃ পরি গৃহাতি সম্বৎসরং ন ক ন প্রত্যবরোহেন্ন হীমে কং চন প্রত্যবরোহতদেন য়োতং যো বা অপশীর্ষণমগ্নিং চিনুতেহপশীর্ষাহমুম্মলোঁকে ভবতি যঃ সশীর্ষাণং চিনুতে সশীর্ষাহমুম্মিল্লোঁকে ভবতি চিতিং জুহোমি মনসা ঘৃতেন যথা দেবা ইহাহগমন্বীতিহোত্রা ঋতাবৃধঃ সমুদস্য বয়ুনস্য পত্ন জুহোমি বিশ্বকৰ্মণে বিশ্বাহহাহমর্ত্যং হবিরিতি স্বয়মাতৃপ্লামুপধায় জুহোতি এতদ্বা অগ্নেঃ শিরঃ সশীর্ষাণমেবাগ্নিং চিনুতে সশীর্ষাহমুম্মিল্লোকে ভবতি য এবং বেদ সুবর্গায় বা এষ লোকায় চীয়তে যদগ্নিস্তস্য যদযথাপূৰ্ব্বং ক্রিয়তেহসুবর্গমস্য তসুব গেঁাহগ্নিশ্চিতিমুপধায়াভি মৃশেচ্চিত্তিমচিত্তিং চিনবদ্বি বিম্বা পৃষ্ঠেব বীতা বৃজিনা চ মাত্ৰায়ে চ নঃ স্বপত্যায় দেব দিতিং চ রাস্বাদিতিমুরুষ্যেতি যথাপূৰ্বমেবৈনানমুপধত্তে প্রাঞ্চমেনং চিনুতে সুবর্গোহস্য ভবতি ॥৪॥
[সায়ণাচার্য বলেন–উখাহুতিঃ পুংশির বামভৃচ্চ তৃতীয়কে। অথ চতুর্থে রেতঃসিগাদ্যা উচ্যন্তে। অর্থাৎ তৃতীয় অনুবাকে উখা-আহুতি (বা উখাহোম), পুরুষশীর্ষ ও বামভৃৎ-এর কথা বলা হয়েছে। অতঃপর এই চতুর্থ অনুবাকে রেতঃসিক হোম সম্পর্কে কথিত হয়েছে।]
মর্মার্থ- বরুণপত্নী জলদেবীগণের কথা মনে মনে চিন্তা করে (একদা) অগ্নি কামুক হয়ে উঠেছিলেন। ফলে, উত্তেজনা বশে তার রেতঃ (বীর্য) স্খলিত হয়। প্রথম বারে সেই রেতঃ থেকে এই পৃথিবী গঠিত হয়। দ্বিতীয়বারে স্খলিত রেতঃ থেকে দুলোকের উৎপত্তি হয়। পৃথিবী বিবিধরকম প্রাণী ধারণ পূর্বক বিরাজমান হওয়ার কারণে বিরাট নামে অভিহিত হয়। দ্যুলোক স্বতন্ত্ররূপে বিরাজিত হওয়ার কারণে স্বরাষ্ট্র নামে পরিচিতি লাভ করে। বিরাট ও স্বরাট–এই শব্দোপেত মন্ত্র দুটির দ্বারা উপধান (অগ্নিস্থাপনরূপ ব্রতবিশেষ পালন) করলে দ্যুলোক ও ভূমিতে প্রতিষ্ঠা লাভ হয়। দ্যুলোক-দেবতা যখন বৃষ্টিরূপে রেতঃ সিঞ্চন করেন, তখন সেই রেতঃ ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে নানা আকারে উৎপন্ন হয়। এই উৎপন্ন সামগ্রী হলো–ব্রীহি (ধান্যবিশেষ), যব ইত্যাদি ওষধিসমূহ এবং নাগবল্পী (তাম্বুলীলতা) ইত্যাদিরূপ সকল বীরুধ (বিস্তৃত লতা)। জঠরাগ্নির দ্বারা সেগুলি অক্ষিত হয়। যিনি এই রকম জানেন, তিনি অন্নদাতা হয়ে থাকেন। রেতস্বী (অর্থাৎ রেতঃশালী) যুবা চিত অগ্নিতে দ্যুলোক ও পৃথিবীলোকের উদ্দেশে,–উভয় হোমই অনুষ্ঠিত করবেন। অগ্নিচয়ন পূর্বক এক বৎসরের পূর্তি পর্যন্ত কোন সমাগত বয়োবৃদ্ধ ও বিদ্যাবৃদ্ধের প্রতি অভ্যুত্থান ইত্যাদি করবেন না। (অর্থাৎ বয়োবৃদ্ধ ও জ্ঞানবৃদ্ধ ব্যক্তিও সমাগত হলে তাকে সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্ত উত্থিত হয়ে দণ্ডায়মান হবেন না)। দ্যু ও ভূমি বিরাট বলে এর অনুষ্ঠানকারী যুবা তার অপেক্ষা কোন উৎকৃষ্ট পুরুষকে সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্ত প্রত্যুত্থান করবেন না। (অর্থাৎ প্রত্যুত্থান না করে হোম বা যাগানুষ্ঠানে সংযত বা আচারযুক্ত হয়ে থাকবেন–এটাই এই ব্রতের নিয়ম) ॥৪॥
.
পঞ্চম অনুবাক
মন্ত্র- বিশ্বকৰ্মা দিশাং পতিঃ স নঃ পশূন পাতু সোহম্মান পাতু তস্মৈ নমঃ প্রজাপতী রুদ্ৰো বরুণোহগ্নিৰ্দিশাং পতিঃ স নঃ পশূন পাতু সোহস্মন্ পাতু তস্মৈ নম এততা বৈ দেবতা এতেষাং পশূনামধিপতয়েস্তাভ্যো বা এষ আ বৃশ্চ্যতে যঃ পশুশীর্ষাণুপদধাতি হিরণ্যেষ্টকা উপ দত্যেতাভ্য এব দেবতাভ্যো নমস্কররাতি ব্রহ্মবাদিনঃ বদন্ত্যগ্নেী গ্রাম্যান পন প্রদধাতি শূচাহরণ্যানপঁয়তি কিং তত উচ্ছিষতীতি যদ্ধিরণ্যেষ্টকা উপদধাত্যমৃতং বৈ হিরণ্যমমৃতেনৈব গ্রাম্যেভ্যঃ পশুভ্যো ভেষজং করোতি নৈনা হিনস্তি প্রাণণা বৈ প্রথমা স্বমাতৃন্না ব্যানো দ্বিতীয়াহোনস্তৃতীয়াইনু প্ৰাণ্যাৎ প্রথমাং স্বয়মাতৃম্নমুপধায় প্রাণেনৈব প্রাণং সমর্জয়তি ব্যন্যাৎ দ্বিতীয়ামুপাধায় ব্যানেনৈব ব্যানং সমৰ্দ্ধত্যপান্যাৎ তৃতীয়ামুপধায়াপানেনৈপানং সমৰ্দ্ধয়ত্যথো প্রাণৈরেবৈনং সমিন্ধে ভূর্ভুবঃ সুবরিতি স্বয়মাতৃগ্না উপ দধাতীমে বৈ লোকাঃ স্বয়মাতৃগা এভিঃ খলু বৈ ব্যাহৃতীভিঃ প্রজাপতিঃ প্রাজায়ত যতোভির্ব্যাহৃতীভিঃ স্বয়মাতৃগ্না উপদধাতী মানেব লোকানুপধায়ৈষু লোকেধি প্র জায়তে প্রাণায় ব্যানায়াপনায় বাঁচে ত্বা চক্ষুষে ত্বা তয়া দেবতয়াহঙ্গিরস্বদবা সীদাগিনা বৈ দেবাঃ সুবর্গং লোকমজিগাং সন্তেন পতিতুং নাশকুবন্ত এতাশ্চতঃ স্বয়মাতৃদ্মা অপশ্যন্তা দিপাদধত তেন সৰ্ব্বতশ্চক্ষুষ সুবর্গং নোকমায়ন্যচ্চতঃ স্বয়মাতৃগ্না দিক্ষুপদধাতি সর্বতশ্চক্ষুষৈব তদগ্নিনা যজমানঃ সবর্গং লোকমেতি ॥৫॥ [সায়ণাচার্য বলেন–অথ পঞ্চমে হিরণ্যেষ্টকাদা উচ্যন্তে–অর্থাৎ–এই অনুবাকে হিরণ্য-ইষ্টক ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে]
মর্মার্থ— বিশ্বকর্মা সকল দিকের পালক, তিনি আমাদের এবং আমাদের পশুসমূহকে রক্ষা করুন। সেই বিশ্বকর্মার উদ্দেশে নমস্কার (জ্ঞাপন করি)। প্রজাপতি, রুদ্রদেব, বরুণদেব ও অগ্নিদেব–এই চারজন চারটি দিকের অধিপতি (পতিঃ), এঁরা আমাদের রক্ষা করুন। অশ্ব, বৃষ ইত্যাদি শুক্ৰল পুরুষভেদ (বৃষ্ণিবঃ) পশুসমূহের স্বামিভূত দেবতা হলেন বিশ্বকর্মা ইত্যাদি দেবতাগণ। পশুশীর্ষ উপধানের (অর্থাৎ ব্রতবিশেষের) পালনে এঁরা অনিষ্টকারী হয়ে থাকেন; এই কারণে (তাদের সেই অনিষ্টকরণের ইচ্ছার পরিহারের নিমিত্ত) হিরণ্য-ইষ্টকা (হিরণ্যখণ্ড-নির্মিত ইষ্টকা) স্থাপন পূর্বক তাদের নমস্কার কর্তব্য।–(প্রকারান্তরে হিরণ্যেষ্টকার প্রশংসা কথিত হচ্ছে) ব্রহ্মবাদিগণ যজমান-সম্বন্ধীয় সর্বকর্মের উপদ্রবজনিত বিষয়ে পরস্পর কথোপকথাচ্ছলে বলে থাকেন-জগতে (লোকে) দুরকম পশু আছে–গ্রাম্য পশু ও আরণ্য পশু। অশ্ব ইত্যাদি গ্রাম্য পশুর দ্বারা যজমান চীয়মান অগ্নিকে স্থাপিত করেন; ময়ুর ইত্যাদি আরণ্য পশুসমূহকে অগ্নির শোকের দ্বারা যোজিত করা হয়। এই উভয় পশু ভিন্ন আর কোন পশুর দ্বারা যাগ কর্তব্য, কি নাম সেই পশুর? অতএব দেখা যাচ্ছে, এই যজমান-সম্বন্ধীয় ব্যাপার সর্বকর্মের উপদ্রবস্বরূপ বা কষ্টকর। এর উত্তরে বলতে শোনা যায়–না, এটি কষ্টকর ব্যাপার নয়; কারণ হিরণ্য-ইষ্টিকার উপধান করলে (অর্থাৎ হিরণ্যনির্মিত ইষ্টকা স্থাপন পূর্বক ব্রতপালন করলে) গ্রাম্য ও আরণ্য পশুসমূহ হিংসা ইত্যাদি দোষ প্রাপ্ত হয় না। অতঃপর প্রথম-মধ্যম-উত্তম এই তিন বৃত্তিক্রমে প্রাণ, ব্যান ও অপানরূপ স্বয়মাতৃদ্মা ইত্যাদি চিতি বা ইষ্টকার দ্বারা উপধানের নিমিত্ত অগ্নি স্থাপন কর্তব্য। প্রথম স্বয়মাতৃগ্ন চিতি অগ্নির প্রাণের উচ্ছ্বাস ঘটায়, মধ্যম চিতি প্রাণ-অপান-ব্যানের স্তম্ভন করে, তৃতীয় বা উত্তম চিতিও অগ্নির শ্বাসক্রিয়া ঘটায়। এইভাবে এর দ্বারা অগ্নির প্রাণ ইত্যাদির সম্বর্ধন ঘটে। অতঃপর ক্রমানুসারে তিনটি ব্যাহৃতি (ভূর্ভুবস্বঃ ইত্যাদি লোক-সপ্তাত্মক মন্ত্র বিশেষের দ্বারা) হোম কর্তব্য। হে পূর্ব ইত্যাদি দিকস্থায়ী স্বয়মাতৃগ্না! আমাদের প্রাণ, ব্যান, অপান, বাক্য ও চক্ষুর বা দৃষ্টির সিদ্ধির নিমিত্ত তোমার উপধান (স্থাপন) করছি। যিনি তোমার স্বামিভূত (প্রভুস্বরূপ) দেবতা, তার অনুগ্রহে (পূর্ববর্তী) অঙ্গিরা ঋষিগণের অগ্নিচয়নকার্যের অনুসরণে এই স্থানে স্থির হয়ে উপবেশন করা (সীদোপবিশ)। পুরাকালে কোনও সময়ে দেবগণ চীয়মান অগ্নির সাধনে স্বর্গপ্রাপ্তির নিমিত্ত ইচ্ছান্বিত হয়েছিলেন (স্বর্গং প্রাপ্তমৈচ্ছন; কিন্তু তা সাধন করেও স্বর্গপ্রাপ্ত হতে সক্ষম হলেন না। সেই নিমিত্ত শক্তিসাধনত্বসম্পন্ন স্বয়মাতৃগ্নার উপধান করে তার সর্বদিক অবগতির দ্বারা চক্ষুলাভ করে স্বর্গপ্রাপ্ত হলেন। এই নিমিত্ত স্বয়মাতৃগ্নার মন্ত্রে চক্ষুষেত্ব ইত্যাদি, অর্থাৎচক্ষুর নিমিত্ত তোমাকে ইত্যাদি মন্ত্র যুক্ত করণীয়। এই হেতু এই চারটি স্বয়মাতৃগ্না ইষ্টকা চারটি দিকে উপধান করে সর্বদিক অবগতি-কারক চক্ষুর সাথে অগ্নির দ্বারা স্বর্গপ্রাপ্তি ঘটে (স্বর্গং স্নোতি) ॥৫॥
.
ষষ্ঠ অনুবাক
মন্ত্র- অগ্ন আ যাহি বীতয় ইত্যাহাহুতৈবৈনমগ্নিং দূতং বৃণীমহ ইত্যাহ হহৈনৈং বৃণীতেহগিনাইগ্নিঃ সমিধ্যত ইত্যাহ সমিদ্ধ এবৈনমগ্নিবৃত্রাণি জঘনদিত্যাহ সমি এবাম্মিন্নিন্দ্ৰিয়ং দধাত্যগ্নেঃ স্তোমং মনামহ ইত্যাহ মনুত এবৈন মেতানি বা অহ্নাং রূপাণি অহমেবৈনং চিনুতেহবাহ্নাং রূপাণি রুদ্ধে ব্ৰহ্মবাদিনো বদন্তি কস্মাৎ সত্যাদ্যাতক্ষীরন্যা ইষ্টকা অযাতযায়ী লোকণেত্যৈাগী হি বাম্পত্যেতি ব্রয়াদিন্দ্রাগ্নী চ হি দেবানাং বৃহস্পতিশ্চাতযামানোহনুচরবতী ভবত্যজামিত্বায়া ভ্যহনু চরত্যাত্মা বৈ লোকম্পূর্ণ প্রাণোহনুপ্তস্মাৎ প্রাণঃ সৰ্বাণ্যঙ্গান্য চরতি তা অস্য সুদদোহসঃ ইত্যাহ তস্মাৎ পরুষি-পরুষি রসঃ সোমং শ্রীণন্তি পায় ইত্যাহান্নং বৈ পৃশ্যম্নমেবাব রুন্ধেহকো বা অগ্নিরকোহমমমমেবা রুদ্ধে জন্মন্দেবানাং বিশস্ত্রি নোচনে দিব ইত্যাহেমানেবান্মৈ লোকান জ্যোতিষ্মতঃ করোতি যো বা ইষ্টকানাং প্রতিষ্ঠাং বেদ প্রত্যেক তিষ্ঠতি তয়া দেবতায়াহঙ্গির স্বদবা সীদেত্যাহৈ বা ইষ্টকানাং প্রতিষ্ঠা য এবং বেদ প্রত্যেক তিষ্ঠতি ॥৬৷৷
[সায়ণাচার্য বলেন-ষষ্ঠেহাং রূপিদয়ঃ কথ্যন্তে অর্থাৎ এই অনুবাকে দিবসের রূপ ইত্যাদি কথিত]
মর্মার্থ- অগ্ন আ যাহি বীতয় ইত্যাদি, অর্থাৎ অগ্নি! আপনি আগত হন-ইত্যাদি আনমূলক পাঁচটি মন্ত্র হলো দিবসের রূপ। প্রথম মন্ত্র আয়াহী–এই উক্তির দ্বারা অগ্নির আহ্বান জ্ঞাপিত হয়। দ্বিতীয় বৃণীমহ উক্তির দ্বারা অগ্নির বরণ (পশ্চাদ্বরণং) প্রতীত হয়। তৃতীয় সমিধ্যত উক্তির দ্বারা অগ্নির সমিন্ধন (সম্যক দীপ্তি) প্রতীয়মান হয়। চতুর্থ মন্ত্র বৃত্রাণি জঘনদিতি-র দ্বারা শত্রুবধের সামর্থ্য বোধিতব্য হয় এবং পঞ্চমে মনামহ উক্তির দ্বারা অগ্নির মননের কথা ব্যক্ত হয়েছে। (প্রথম চারটি মন্ত্র পূর্ববর্তী কাণ্ডগুলির ভিন্ন ভিন্ন প্রপাঠকে ব্যাখ্যাত হয়েছে। যেমন, প্রথম ও দ্বিতীয় মন্ত্র হোতৃকাণ্ডে প্র বো বাজা–এই অনুবাকে কিংবা ২য় কাণ্ডের ৫ম প্রপাঠকে সামিধেনীব্রাহ্মণে, তৃতীয় মন্ত্রটি যত্ত্বা হৃদা অনুবাকে (১কা, ৪. ৪৬অ.), চতুর্থটি চতুর্থ কাণ্ডের তৃতীয় প্রপাঠকের ত্রয়োদশ অনুবাকে ব্যাখ্যাত; ইত্যাদি। পঞ্চম মন্ত্রটি শাখাস্তরগত)। পাঁচটি দিনে যথাযথ চিতিতে উপধান অর্থাৎ ইষ্টকা স্থাপনরূপ এই পাঁচটি মন্ত্র দিবসের রূপ (এতৈর্মন্ত্রৈরুপধেয়ানামিষ্টকানামহ্নাং রূপাণীত্যেতন্নামধেয়)। সেই উপধানের বা ইষ্টকা স্থাপনের দ্বারা সর্বদা অর্থাৎ প্রতিদিন অগ্নির চয়ন করা হয় (অগ্নিং চিতবান্ ভবতি) এবং কালবিশেষ অর্থাৎ দিবসের স্বরূপ প্রাপ্ত হয়। ব্ৰহ্মবাদীগণ বলে থাকেন–একবার চিতিতে মন্ত্রের দ্বারা অগ্নির উপধান করলে তার গতসারত্ব হয়; তাহলে বারবার কেন তার উপধান করা হয়? এর উত্তরে বলা হয়–ইন্দ্রগ্নী বা বৃহস্পতি-এই মন্ত্রপাঠের জন্য ইন্দ্রদেব, অগ্নিদেব ও বৃহস্পতিদেব অতিশয়রূপে তার সামর্থ্য প্রদান করেন বলে কখনও তা গতসারা হয় না (অর্থাৎ তার সার বা বল গত হয় না। একটি মন্ত্রের দ্বারা পুনঃ পুনঃ উপধানের ফলে আলস্য হতে পারে, সেই কারণে ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্র পাঠ কর্তব্য; তাতে আলস্য হবে না (তদালস্যং ন ভবতি)। লোকং পৃণ এই রকম মন্ত্র পাঠ করা কর্তব্য; এই মন্ত্রে আত্মা শরীর, অনুচররূপ দ্বিতীয় অনুষ্টুপছন্দস্ক প্রাণরূপ। ফলে প্রাণবায়ু সর্ব শরীরে সঞ্চরবান্ হবে। যো বা ইষ্টকানাং প্রতিষ্ঠাং বেদ ইত্যাদি মন্ত্রের দ্বারা উপধানে ইষ্টকার প্রতিষ্ঠা হয়ে থাকে ॥৬॥
[সায়ণাচার্য বলেন–সপ্তমে যুপৈকত্বদীচ্যন্তে। অর্থাৎ–এই সপ্তম অনুবাকে একযুপ ইত্যাদির বিধি সম্পর্কে বলা হয়েছে।]
.
সপ্তম অনুবাক
মন্ত্র- সুবৰ্গায় বা এষ লোকায় চীয়তে যদগ্নিৰ্ব্বজ্র একাদশিনী যদয়াবেকাদশিনীং মিনুয়াদ্বজ্রেণৈনং সুবর্গালোকান্তধ্যাদ্যম মিনুয়াৎ স্বরুভি পশুষ্যৰ্দ্ধয়েদেকযুপং মিনোতি নৈনং বজ্রেণ সুবর্গাল্লোকাদধাতি ন স্বরুভিঃ পশুন ব্যkয়তি বি বা এষ ইন্দ্রিয়েণ বীৰ্য্যেৰ্দ্ধতে যোহল্পিং চিম্বধিক্ৰামত্যৈন্দ্রিয়া ঋচাইক্ৰমণং প্রতীষ্টকামুপদধ্যামেন্দ্রিয়েণ বীর্যেণ বধ্যতে রুদ্ৰো বা এষ যদগ্নিস্তস্য তিঃ শরব্যাঃ প্রতীচী তির্যনুচী তাভ্যো বা এষ আ বৃশ্চ্যতে যোহগিনং চিনুতেহগ্নিং চিত্বাতিধন্বমযাচিং ব্রাহ্মণায় দদ্যাক্তাভ্য এব নমস্করোত্যথোতাভ্য এবাত্মানং নিষ্ক্রীণীতে যত্তে রুদ্র পুরঃ ধনুস্তদ্বততা অনু বাতু তে তস্মৈ তে রুদ্র সম্বৎসরেণ নমস্করোমি যত্তে রুদ্র দক্ষিণা ধনুস্তঘাত্যে অনু বাতু তে তস্মৈ তে রুদ্র পরিবৎসরেণ নমস্কয়োমি যত্তে রুদ্র পশ্চাদ্ধদ্বাতো অনু বাতু তে তস্মৈ তে রুদ্রেদাবৎসরেণ নমস্কয়োমি যত্তে রুদ্রোত্তরাস্তৎ বাতো অনু বাতু তে তস্মৈ তে রুদ্রেদুবৎসরেণ নমস্কায়োমি যত্তে রুদ্রোপরি ধনুস্তদাতো অনু বাতু তে তস্মৈ তে রুদ্র বৎসরেণ নমস্কারোমি-রুদ্ৰো বা এষ যদগ্নিঃ স যথা ব্যাঘ্রঃ ক্রুদ্ধস্তিত্যেং বা এষ এতৰ্হি সঞ্চিতমেতৈরূপতিতে নমস্কারৈরেবৈনং শময়তি যেহগ্নয়ঃ পুরীষ্যাঃ প্রবিষ্টাঃ পৃথিবীমনু। তেষাং ত্বমত্তমঃ প্র নো জীবাতৰে সুৰ।। আপং ত্বাহগ্নে মনসাহপং দ্বাগ্নে তপাসাহপং ত্বাহগ্নে দীক্ষয়াহপং জাহগ্ন উপসদ্ভিপং ত্বাংগ্নে সুত্যয়াহপং ত্বাহগ্নে দক্ষিণাভিরাপং ত্বাহগ্নেহভৃথে নাহপং ত্বাহগ্নে বশয়াহপং ত্বাহয়ে স্বগাকারোণেত্যাহৈ বা অগ্নেরা প্তিস্তয়ৈবৈনমাগ্নেতি ॥৭॥ মর্মার্থ-যে অগ্নি এই স্বর্গলোকের নিমিত্ত চয়ন করা হয় (চীয়তে), তা একযুপদশিনী ও বজ্রসমানা করতে হবে। এই বিষয়ে সূত্রোক্ত উপধান বিধিতে বলা হয়েছে–যে উপধানকর্তা চয়নকালে অগ্নিকে অতিক্রম করেন, তাঁর ইন্দ্রিয় সামর্থ্য বিযুক্ত বা বিনষ্ট হয়। এই যে অগ্নি, তিনি রুদ্ররূপ ক্রুর দেবতা; এই নিমিত্ত তাকে ধনুর দ্বারা চয়ন কর্তব্য। (কারণ কুরের সাথে সখ্যতা শরের দ্বারা করণীয়)। হে রুদ্র! পূর্বদিকে আপনার যে ধনু আছে, তার অনুসরণপূর্বক বায়ু প্রবাহিত হোক (বাতু প্রসরতু)। (কি নিমিত্ত? না,) তার সহায়তা নিমিত্ত। হে রুদ্র! আপনার ধনুতে যখন বায়ুর আনুকুল্য ঘটে, তখন তখন নিক্ষিপ্ত বাণ শীঘ্র আপনার সাহায্যে গমন করে থাকে। হে রুদ্র! আপনার ধনুঃকে প্রথমতঃ এক সম্বৎসরব্যাপী নিরন্তর নমস্কার করছি। তারপর দ্বিতীয় পরিবৎসরব্যাপী, তৃতীয় ইন্দাবৎসরব্যাপী, চতুর্থ অনুবৎসরব্যাপী এবং পঞ্চম বৎসরব্যাপী যথানুক্রমে আপনাকে নিরন্তর নমস্কার করছি। (জগতে ক্রুদ্ধ ব্যাঘ্র ভক্ষণোদ্যত হয়ে যেমন ভয়ঙ্কর গর্জন করে থাকে, সেইভাবে চিত-অগ্নি উপস্থানে (উপাসনায়) উগ্র হয়ে উঠলে সেই মন্ত্রগত নমস্কারের দ্বারা তাকে শান্ত করা হয়) ॥৭॥
[সায়ণাচার্য বলেন–অষ্টম উপস্থানাদিকমুচ্যতে। অর্থাৎ এই অষ্টম অনুবাকে উপস্থান অর্থাৎ উপাসনা ইত্যাদি বিষয় কথিত হয়েছে।]
.
অষ্টম অনুবাক
মন্ত্র- গায়ণে পুরস্তদুপ তিতে প্রাণমেবাস্মিন্দধাতি বৃহদ্রথন্তরাভ্যাং পক্ষাবোজ এবাস্মিধাতৃতুস্থাষজ্ঞযজ্ঞিয়েন পুচ্ছমৃতুধের প্রতি তিষ্ঠতি পৃষ্ঠেরুপ তিতে তেজো বৈ পৃষ্ঠানি তেজ এবাস্মিন্দধাতি প্রজাপতিরগ্নিমসৃজত সোহম্মাৎ সৃষ্টঃ পরাঙৈত্তং বায়বন্তীয়েনাবারয়ত তদ্বারবতীয়স্য বারবত্তীয়ত্বং শ্যৈতেন শ্যেতী অকরুত তচ্ছৈতস্য শ্যৈতত্বম যদ্বারবতীয়েনোপতিতে বারয়ত এবৈনং শ্যৈতেন শ্যেতী কুরুতে প্রজাপতেহৃদয়েনাপিপক্ষং প্রত্যুপ তিষ্ঠতে প্রেমাণমেবাস্য গচ্ছতি প্রাচ্যা ত্বা দিশা সাদয়ামি গায়ত্ৰেণ ছন্দসাহগিনা দেবতয়াহয়েঃ শীষ্ণাহগ্নেঃ শির উপ দধামি দক্ষিণয়া ত্বা দিশা সাদয়ামি ত্রৈভেন ছন্দসেণে দেবতয়াহগ্নেঃ পক্ষেণাগ্নেঃ পক্ষমূপ দমি প্রতীচ্য ত্বা দিশা সাদয়ামি জাগতেন ছন্দস্য সবিত্রা। দেবতয়াহগ্নেঃ পুচ্ছেনাগ্নেঃ পুচ্ছমুপ দধামুদাচ্যা ত্বা দিশা সাদয়াম্যানুষ্ঠুভেন ছন্দ মিত্রাবরুণাভ্যাং দেবতায়াহগ্নেঃ পক্ষেণাগ্নেঃ পক্ষমুপ দধামর্জায়া ত্বা দিশা সাদয়ামি পাঙক্তেন ছন্দ বৃহস্পতিনা দেবত্বয়াইগ্নেঃ পৃষ্ঠেনাগ্নেঃ পৃষ্ঠমুপ দমি যো বা অপাত্মানমগ্নিং চিনুতেহপাত্মাহমুম্মিল্লোঁকে ভবতি যঃ সাত্মানং চিনুতে সাত্মাহমুন্মিল্লোঁকে ভবত্যাত্মেকা উপ দত্যেষ বা অগ্নেরাত্মা সাত্মানমেবাগ্নিং চিনুতে সাত্মাহমুমিল্লাকে ভবতি য এবং বেদ ॥৮॥
মর্মার্থ– গায়ত্রী ইত্যাদি সামবিশেষের নাম। তৎসবিতুর্বরেন্যম–অর্থাৎ সেই সবিতাদেবের বরণীয় তেজের ধ্যান করি–এই ঋক গায়ত্রী হতে উৎপন্ন; তার দ্বারা শিরোভাগের উপস্থান করলে এই অগ্নিতে প্রাণ স্থাপিত হয়। এইভাবে তামিদ্ধি হবামহ এই ঋক্ হতে বৃহৎ সাম, অভিত্বা শুর নোনুম এই ঋক্ হতে রথস্তর সাম উৎপন্ন। এগুলির দ্বারা পক্ষদ্বয়ের (অর্থাৎ শরীরের পার্শ্বভাগ দ্বয়ের) উপস্থান করলে এই অগ্নিতে বল সম্পাদিত হয়ে থাকে। এই ভাবে পুচ্ছ-উপস্থানের দ্বারা ঋতুর প্রতিষ্ঠা, পৃষ্ঠস্তোত্রগত সামের দ্বারা অগ্নির শরীরকান্তি প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয় কথিত হয়েছে। অশ্বং ন ত্বা বারবস্ত এই ঋক্ বারবন্তীয় সাম হতে উৎপন্ন, অভি প্র বঃ সুরাধসম এই ঋক শ্যৈত সাম হতে উৎপন্ন। এই সাম দুটির দ্বারা শ্রোণিদ্বয়ের উপস্থানে অন্যত্র গমন নিবারিত হয় (বা স্বাধীন করা হয়)। (শাখান্তর অনুসারে শৈত্যস্থানে বামদেব্য উক্ত হয়। প্রজাপতেহৃদয় নামক স্তোভের (শব্দের) দ্বারা উপস্থানে অগ্নি প্রীতিপ্রাপ্ত হন। ইত্যাদি এবং অধুনা (শেষে) আত্মেষ্টকার উপস্থানের বিধি কথিত ॥৮॥
[সায়ণাচার্য বলেন-নবম আহুত্যাদিমভিধীয়তে। সূত্রকার বলেন–অগ্নে উদধে যা ত ইষুযুর্ব নামেতি পঞ্চাহজাহুতীহুত্বা। অর্থাৎ–এই নবম অনুবাকে আহুতি ইত্যাদি বিষয় কথিত হয়েছে। সেই সম্পর্কিত ইযুবা নামক পঞ্চ-আজাহুতি, প্রোক্ষণ ইত্যাদির কথা উক্ত হয়েছে]
.
নবম অনুবাক
মন্ত্র- অগ্ন উদধে যা ত ইয়ুথুবা নাম তয়া নো মৃড় তস্যান্তে উপ জীবন্তো ভূয়াম্মাগ্নে দুর্থ গহ্য কিংশিল বন্য যা ত ইযুবা নাম তুয়া নো মৃড় তস্যাত্তে নমস্যাস্ত উপজীবন্তো ভূয়াশ্ম ১. পঞ্চ বা এতেহগ্নয়ো যচ্চিতয় উদধিরে নাম প্রথমো দুঃ দ্বিতীয়ো গহস্তৃতীয়ঃ, কিংশিশ্চতুর্থো বন্যাঃ পঞ্চমন্তেভো যদাহুতীর্ন জুহুয়াদধ্বং চ যজমানং চ প্ৰ দহেয়ূর্যদেতা আহুতীর্জহোতি ভাগধেয়েনৈবৈনাময়তি নাহৰ্ত্তিমাচ্ছত্যধ্বন যজমানো বাঙ্গ আসন্নসোঃ প্রাণোহক্ষ্যোশ্চক্ষুঃ কর্ণয়োঃ শ্রোত্রং বাহুবোৰ্ব্বলমুরুবোয়োজোহরিষ্টা বিশ্বান্যঙ্গানি তনুঃ তনুবা মে সহ নমস্তে অস্তু মা মা হিংসীরপ বা এতস্মাৎ প্রাণাঃ ক্রামস্তি যোহল্পিং চিন্বন্নধিক্রামতি বাষ্ম আসন্নসোঃ প্রাণ ইত্যাহ প্রাণানবাহত্নহ্মত্তে যো রুদ্ৰো অগ্নৌ যো অল্প য ওষধীষু যোরুদ্ৰো বিশ্বা ভুবনাহবিবেশ তস্মৈ রুদ্রায় নমো অহুতিভাগা বা অন্যে রুদ্রা হবির্ভাগঃ অন্যে শতদ্রীয়ং হুত্বা গাবীধুকং চরুমেতেন যজুষা চরমায়ামিষ্টকায়াং নি দধ্যাঙগধেয়েনৈবৈং শময়তি তস্য হৈ শতরুদ্ৰীয়ং হুতমত্যাহুস্যৈতদগ্নৌ ক্ৰিয়ত ইতি বসবা রুদ্রৈঃ পুরস্তাৎ পান্তু পিতা যমরাজানঃ পিতৃভিক্ষিণতঃ পান্তাদিত্যাস্তা বিশ্বৈৰ্দেবৈঃ পশ্চাৎ পান্তু দুতানা মারুতত মরুরুিত্তরতঃ পাতু দেবাস্তুজ্যেষ্ঠা বরুণরাজানোহধস্তাস্কোপরিষ্টাচ্চ পান্তু ন বা এতেন পুতো ন মেধ্যো ন পোক্ষিতো যদেনমতঃ প্রাচীনং প্রোক্ষতি যৎসঞ্চিতমাজ্যেন লোক্ষতি তেন পূতনে মেধ্যস্তেন প্রেক্ষিতঃ ॥৯॥
মর্মার্থ- (উদধি কোনও অগ্নির নাম)। উদধিনামক হে অগ্নি! পরশরীরে সহসা মিশ্রিত বা বিদ্ধ হওয়ার নিমিত্ত ইষুযুর্ব নামক আপনার যে বাণ আছে, সেই যুবা-অভিধেয় বাণের দ্বারা আমাদের সুখী করুন (সুখয়)। আপনার সেই বাণের উদ্দেশে নমস্কার করছি। আপনার সেই বাণের প্রসাদে আমরা সমীচীনভাবে জীবনযুক্ত হবে। এখানে উল্লেখিত দুধ, গহ্য, কিংশিল, বন্য ইত্যাদি শব্দসমূহ ইষুযুর্বার মতো অগ্নির এক একটি নামবিশেষ। সেই নামাত্মক অগ্নিগণের বাণ আমাদের সুখী করুক–এটাই প্রতিপাদ্য।৯।
[সায়র্ণাচার্য বলেন–দশমে সর্পাহুত্যাদিকমুচ্যতে। অর্থাৎ এই দশম অনুবাকে সর্প-আহুতির কথা ব্যক্ত হয়েছে। সূত্রকার বলেন–সমীচী নামক প্রাচী দিকবর্তী ছয় সর্পকে দধি দুগ্ধ মিশ্রণের দ্বারা আহুতি প্রদান পূর্বক পরিচর্যা এই অনুবাকের বিষয়বস্তু] ।
.
দশম অনুবাক
মন্ত্র- সমীচী নামাসি প্রাচী দিক্তস্যান্তেগিরধিপতিরসিতে রক্ষিতা যাধিপতির্যশ্চ গোপ্তা তাভ্যাং নমস্তেী নো মৃড়য়তাং তে যং দ্বিমো যশ্চ নো দেষ্টি তং বাং জম্ভে দধামম্যাজস্বিনী নামাসি দক্ষিণা দিক্তস্যাস্ত ইন্দ্রোহধিপতিঃ পৃদাকুঃ প্রাচী নামাসি প্রতীচী দিক্তস্যান্তে সোমোহধিপতিঃ স্বজোহবস্থাবা নামাদীচী দিক্তস্যান্তে বরুণোহধিপতিস্তিরিশ্চরাজিরধিপত্নী নামাসি বৃহতী দিক্তস্যান্তে বৃহম্পতিরধিপতিঃ শ্বিত্রো বশিনী নামাসীয়ং দিক্তস্যান্তে যমোহধিপতিঃ কল্মষগ্রীবো রক্ষিতা যাধিপতির্যশ্চ গোপ্তা তাভ্যাং নমস্তেী নো মৃড়য়তাং তে যং দ্বিা যশ্চ নো দ্বেষ্টি তং বাং জন্তে দধাম্যেতা বৈ দেবতা অগ্নিং চিতং রক্ষন্তি তাভ্যো যদাহুতীর্ন । জুহুয়াদধ্বর্য্যং চ যজমানং চ ধ্যায়েহূর্যদেতা আহুতীৰ্জ্জুহোতি ভাগধেয়েনৈ বৈনাময়তি নাহর্তিমাচ্ছত্যধ্বর্ন যজমানো হেতয়ো নাম স্থ তেষাং বঃ পুরো গৃহা অগ্নিৰ্ব ইষবঃ সলিলো নিলিম্পা নাম ই তেষাং বো দক্ষিণা গৃহাঃ পিতরো ব ইষবঃ সগো বজ্ৰিণো নাম স্থ তেষাং বঃ পশ্চাদগৃহাঃ স্বপ্নে বা ইষবো গহুনোহবস্থাবানো নাম স্থ তেষাং ব উত্তরাদগুহা আপোৰ ইষবঃ সমুদ্ৰোহধিপতয়ো নাম স্থ তেষাং ব উপরি গৃহা বর্ষং ব ইষবোহবস্বান্ ক্ৰব্যা নাম স্থ পার্থিবাস্তেষাং ব ইহ গৃহাঃ অন্নং ব ইষবো নিমিযো বাতনামং তেভ্যো বো নমস্তে নো মৃড়য়ত তে ষং দ্বিন্মো যশ্চ নো ঘেষ্টি তং বো জম্ভে দমি হুতাদে বো অনন্য দেবা অহুদোহন্যে তানগ্নিচিদে বোভয়ান প্রীতি দয়া মধুমিশ্রেণেতা আহুতীর্ল্ডহোতি ভাগধেয়েনৈবৈনান প্রীণাত্যথো খারিষ্টা বৈ দেবা অহুতাদ ইতি অনুপরিক্রামং জুহোত্যপরিবর্গ মেবৈমান প্রণাতীমং শুনমুজুবন্তং ধয়াপাং প্রপাতমগ্নে সরিরস্য মধ্যে। উৎ সংজু মধমতমূৰ্ব সমুদ্রিয়ং সনমা বিশখ। যো বা অগ্নিং প্রযুজ্য ন বিমুঞ্চতি যতাহশ্বে যুক্তোহবিমুচ্যমানঃ ক্ষুধ্য পরাভবত্যেবমস্যাগ্নিঃ পরা ভবতি তং পরাভবন্তং যজমানোহনু পরা ভবতি সোহগ্নিং চিত্বা সূক্ষঃ ভবতী স্তনমূৰ্জং ধয়াপামিত্যাজ্যস্য পূর্ণাং সুচং জুহোত্যেষ বা অগ্নেৰ্বিমোকো বিমুচ্যৈবাশ্ম অরমপি দধাতি তস্মাদাহুর্যশ্চৈবং বেদ যশ্চ ন সুধায়ং হ বৈ বাজী সুহিতো দধাতীত্যগ্নিৰ্ব্বাব বাজী তমেব তৎপ্রণাতি স এনং প্রীতঃ প্রণাতি বলীয়ান্ ভবতি ॥১০৷৷
মর্মার্থ- (সমীচী নামের ব্যুৎপত্তি এই যে, প্রাচী বা পূর্বদিকে প্রাতঃকালে প্রবর্তিত অনুষ্ঠানে পূজিত হওয়ার কারণে পূর্বদিক সমীচী নামে অভিহিত)। হে প্রাচি (বা পূর্বদিক)! তুমি সমীচী অভিধায় ভূষিত, এই কারণে অগ্নিদেব তোমার স্বামী বা অধিপতি, কৃষ্ণসর্প তোমার রক্ষক। তোমার সেই অধিপতি ও রক্ষকের উদ্দেশে নমস্কার করছি; তারা উভয়ে আমাদের সুখী করুন (সুখয়তা)। সেই সুখী হওয়ার নিমিত্ত আমরা যে জনকে হিংসা করি এবং শত্রুরূপে আমাদের যারা দ্বেষ করে সে দুরকম শত্রুকে তোমার অধিপতি অগ্নির ও তোমার রক্ষক কৃষ্ণসর্পের বিদারিত (বিস্তারিত) আস্যে অর্থাৎ মুখবিবরে স্থাপন করছি। (এইভাবে পরপর যোজিতব্য। উল্লেখ্য-ওজস্বিনী বা বলবতী হলো দক্ষিণ দিকের নাম। পৃদাকুঃ হলো অজগর সর্প। প্রকর্ষের সাথে সায়ংসন্ধ্যায় পূজিত হওয়ার কারণে পশ্চিম (প্রতীচী) দিক প্রাচী নামেও অভিহিত। স্বজঃ অর্থে স্বাধীনবল সর্প। কটকবলয়াকার রেখাযুক্ত সর্প হলো তিরশ্চরাজিঃ। অধিপালয়তি অর্থে ঊর্ধ্ব দিকের নাম। প্রৌঢ়ত্বাদ বৃহতী। যে সর্পের শাসধারণের দ্বারা আপন শরীর উচ্ছনতা অর্থাৎ স্ফীত হয়ে থাকে তাকে শিত্র বলে। ভূমিরূপয়া অর্থে অবধাদিকের নাম। যে সর্পের গ্রীবা কৃষ্ণ, তা কল্মষগ্রীবঃ। ইত্যাদি)।১০৷৷
[সায়ণাচার্য বলেন-অগ্নিশেষমবস্থাপ্যাশ্বমেধশেষভূতা একাদশিনঃ পশবো বিধীয়ন্তে। একাদশানাং পশুনাং সমুহ একাদশিনী। স চৈকৈকস্মিন্ননুবাক একৈকা বিধীয়তে। অর্থাৎ–এই একাদশ অনুবাকে অশ্বমেধের শেষ একাদশ সংখ্যক পশুর আলভন (বলিপ্রদান) বিষয় কথিত হয়েছে।]
.
একাদশ অনুবাক
মন্ত্র- ইন্দ্রায় রাজ্ঞে সূকরো বরুণায় রাজ্ঞে কৃষ্ণো যমায় রাজ্ঞ ঋশ্য ঋষভায় রাজ্ঞে গবয়ঃ শালায় রাজ্ঞে গৌরঃ পুরুষরাজায় মর্কটঃ ক্ষিপ্রশ্যেনস্য বর্তিকা নীলঙ্গোঃ ক্রিমিঃ সোমস্য রাজ্ঞ কুলুঙ্গঃ সিন্ধোঃ শিংশুমায়রা হিমবতো হস্তী ॥১১।
মর্মার্থ- দেবরাজ ইন্দ্রের উদ্দেশে সূকর অর্থাৎ বরাহ আলম্ভ (বধ বা স্পর্শ কর্তব্য। এই রকমে জলের রাজা বরুণের উদ্দেশে কৃষ্ণমৃগ; ধর্মের রাজা যমের উদ্দেশে ঋষ্য (মৃগবিশেষ); ঋষভের অর্থাৎ গোসমূহের রাজার উদ্দেশে গবয় (গলকম্বলহীন গরুর ন্যায় পশুবিশেষ); অরণ্যের রাজা শার্দুলের উদ্দেশে গৌরমৃগ; পুরুষগণের রাজা বা প্রধানের উদ্দেশে মর্কট বা বানর; ক্ষিপ্রগতি শকুনিরাজের উদ্দেশে বর্তিক (চটকসদৃশ) পক্ষীবিশেষ; সরীসৃপগণের রাজা নীলপ্রভ নামক সর্পবিশেষের উদ্দেশে গোময়পিণ্ডকারী ক্রিমি (বা কীট); ঔষধিরাজ সোমের (চন্দ্রের) উদ্দেশে কুলুঙ্গ (কুরতহরিণ), চিত্ৰক বা চিতাবাঘ কটুকস্বর; সমুদ্ররাজ সিন্ধুর উদ্দেশে শিশুমার নামক গ্রাহ (বা হাঙর), এবং পর্বতরাজ হিমবত বা হিমালয়ের উদ্দেশে হস্তী আলভন করণীয় ॥১১৷৷
[একাদশ অনুবাকে একাদশ সংখ্যক পশুর আলভন বিষয় কথিত হয়েছে। অতঃপর এই দ্বাদশ অনুবাকে এবং এর পরবর্তী দ্বাদশটি অনুবাকে আরও কিছু পশুর আলভন বিষয় কথিত হয়েছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ ১৮শ অনুবাক পর্যন্ত মর্মার্থ দেওয়া হলো] ।
.
দ্বাদশ অনুবাক
মন্ত্র- ময়ুঃ প্রজাপত্য উলোহলীষ্মো বৃষদংশস্তে ধাতুঃ সরস্বত্যৈ শারিঃ শ্যেতা পুরুষবা সরস্বতে শুকঃ শ্যেতঃ পুরুষবাগরণ্যোহজো। নকুলরঃ শকা তে পৌষ্ণা বাঁচে ক্রৌঞ্চঃ ॥১২৷৷
মর্মার্থ- প্রজাপতি দেবতার উদ্দেশে ময়ু (তুরঙ্গবদন কিশুরুষ বা কিন্নর অথবা আরণ্য ময়ুর)। আলভন কর্তব্য। এইভাবে অপরাপর দেবতার উদ্দেশে ভিন্ন ভিন্ন পশুর আলভন কর্তব্য। যেমন ধাতৃদেবতা, সরস্বতীদেবতা, পুষাদেবতা প্রভৃতির উদ্দেশে কাক, উলুক, দিব্যকর্ণ, হলী অর্থাৎ তৃণভোজী প্রাণীগণের হিংসক তথা সিংহ, বৃদংশ মার্জার, শেতলোহিতবর্ণা শুকস্ত্রী শারি, পুরষের ন্যায় বাক্যোচ্চারণে স্যাৰ্থ শুকপক্ষী, আরণ্য-অজ বা শরভ, নকুল, শকা বা মক্ষিকা, দীর্ঘকর্ণ মৃগবিশেষ, দারুণস্বর ক্রৌঞ্চনামক পক্ষিবিশেষ ইত্যাদি। [শুক্লযজুর্বেদের ২৪শ অধ্যায়ের ৩১শ মন্ত্রে এগুলি উল্লিখিত আছে] ১২।
.
ত্রয়োদশ অনুবাক
মন্ত্র- অপাং নপত্রে জযষা নাক্রো মকরঃ কুলীয়ন্তেকুপারস্য বাঁচে পৈঙ্গরাজো ভগায় কুখীতক আতী বাহমোদবির্বদা তে বায়ব্যা দিগভ্যশ্চকঃ ॥১৩৷৷
মর্মার্থ- অপাং নগ্ধা নামক দেবতার উদ্দেশে জষবৎ তুণ্ডশালী মকর আলভন কর্তব্য। সমুদ্র দেবতার উদ্দেশে নক্ৰ (অর্থাৎ দীর্ঘতুণ্ড হঙির বা দীর্ঘপুচ্ছ মৎস্যবিশেষ), পর্যস্ততুণ্ড মকর ও কুলীকয় (বহুপান অর্থাৎ বহু জলীয় দ্রব্যের গলাধঃকরণকারী মৎস্যবিশেষ; বাক্-দেবতার উদ্দেশে পৈঙ্গরাজ (রক্ত-অক্ষশালী, সমুদ্রতরঙ্গে বিচরণকারী মহাপক্ষী) ও চকোর; ভগদেবতার উদ্দেশে কুষীতক (অর্থাৎ সমুদ্র-কাক); বায়ুদেবতার উদ্দেশে আতী (কুরঙ্গী), চাষপক্ষী, বাহস (পৃষ্ঠে ক্ষুল্লশঙ্খবাহী জন্তু) দর্বিদা (জলপক্ষী) ও মকুকুট; এবং দিক্-দেবতার উদ্দেশে চক্রবাক নামক প্রসিদ্ধ পক্ষী আলভন কর্তব্য ॥১৩।
.
চতুর্দশ অনুবাক
মন্ত্র- বলায়াজগর আখুঃ সৃজয়া শয়ন্তে মৈত্ৰা মৃত্যবেহসিতে মনবে স্বজঃ কুম্ভীনসঃ পুঙ্করসাদো লোহিতাহিন্তে স্বাস্থা প্রতিশ্রুৎকায়ৈ বাহসঃ ॥১৪
মর্মার্থ- বল নামে আখ্যায়িত দেবতার উদ্দেশে অজগর নামক মহাসর্প (মহেরগঃ); মিত্র দেবতার উদ্দেশে আখু (মুষিক বা শুকর), সৃজায়া (নীলমক্ষিকা, শুক্লসর্প, নীলমহিষ) ও শরৎক (অর্থাৎ কৃকলাস বা কাঁকলাস); মৃত্যু দেবতার উদ্দেশে কৃষ্ণ সর্প; মনদেবতার উদ্দেশে স্বজ (অর্থাৎ সর্পবিশেষ, যা গর্তের মধ্যে স্বয়ং জন্মায়); তষ্টা বা তৃষ্টা বা তন্টু দেবতার উদ্দেশে কুম্ভীনস (স্বাপশীল অর্থাৎ নিদ্রাতুর বৃহৎ সর্পবিশেষ), পুষ্করসাদ (পুর নামক নাগবিশেষ) বা ভ্রমরও শ্বেতলোহিত সর্প; এবং প্রতিশ্রুতি দেবতার উদ্দেশে বাহস বা কল্পপ্রমাণ সর্প আলভন কর্তব্য । ১৪।
.
পঞ্চদশ অনুবাক
মন্ত্র- পুরুষমৃগশ্চমসে গোর্ধ কালকা দাব্বাঘাটন্তে বনম্পতীনামেণ্যকে কৃষ্ণো । রাত্রিয়ে পিকঃ জিঙ্কা নীলশী তেহ্যমণে ধাতুঃ ককটঃ ॥১৫৷৷
মর্মার্থ- চন্দ্রদেবতার উদ্দেশে পুরুষমৃগ অর্থাৎ নরমুখশালী মৃগবিশেষ; বনস্পতিদেবতার উদ্দেশে একটি গোধা, একটি কালকা (বা সরটা অর্থাৎ কৃকলাস) ও একটি দ্রুমকুট্টক বা সারস পক্ষী আলভন কর্তব্য। রাত্রিদেবতার উদ্দেশে কৃষ্ণমৃগ; অমা দেবতার উদ্দেশে পিক (কোকিল), ক্ষিকা (রক্তমুখী বানরী) ও নীলশীষ্ণী (কৃষ্ণশিরস্কা), ধাতৃদেবতার উদ্দেশে একটি কঙ্কট (অর্থাৎ বিলবাসী কর্কট) আলভন কর্তব্য ॥১৫।
.
ষোড়শ অনুবাক
মন্ত্র- সৌরী বলাকর্শো ময়ুরঃ শ্যেনস্তে গন্ধৰ্ব্বাণাং বসূনাং কপিঞ্জলো রুদ্রাণাং তিত্তিরী রোহিং কুণাচী গোলত্তিকা তা অপ্সরসামরণ্যায় সৃমরঃ ॥১৬।
মর্মার্থ- সূর্যদেবতার উদ্দেশে বলাকা আলভন কর্তব্য। একটি ঋশ্য একটি ময়ূর ও একটি শ্যেনপক্ষী গন্ধর্বদেবতাগণের উদ্দেশে; বসুদেবগণের উদ্দেশে একটি কপিঞ্জল; রুদ্রগণের উদ্দেশে একটি পুরুষস্বরশালী তিত্তিরী; অপ্সরোগণরূপ দেবতাগণের উদ্দেশে রোহিত (ঋশ্য মৃগের স্ত্রী), গৃহগোধিকা ও খঞ্জরীটকা; এবং অরণ্যদেবতার উদ্দেশে চমর (মৃগবিশেষ) আলভন কর্তব্য। ১৬৷৷
.
সপ্তদশ অনুবাক
মন্ত্র- পৃষতে বৈশ্বদেবঃ পিত্বো ন্যক্কুঃ কশন্তেহনুমত্যা অন্যবাপোর্ধমানাং মাসাং কশ্যপঃ কৃয়িঃ কুটরুদ্দাত্যৌহস্তে সিনীবাল্যৈ বৃহস্পতয়ে শিৎপুটঃ ॥১৭৷ মর্মার্থ-পৃষতঃ অর্থাৎ শ্বেতবিন্দু সহ নানাবর্ণযুক্ত অঙ্গশালী (শবলাঙ্গ) মৃগ বৈশ্যদেবের উদ্দেশে আলভন কর্তব্য। অনুমতি নামী রাত্রি দেবতার উদ্দেশে একটি পিত্ব (ব্যাঘ্র), একটি ন্যক্কু (হরিণ) ও একটি ঋক্ষ (কশমৃগ) আলভন কর্তব্য। এইভাবে অর্ধমাস রূপা দেবতার উদ্দেশে কশ্যপ, কয়ি ও কুটরু নামক তিনটি মৃগবিশেষ আলভন করণীয়। সিনীবালী দেবতার উদ্দেশে একটি দত্যৌহ (ডাকপক্ষী) ও একটি কালকণ্ঠ (নীলকণ্ঠ পক্ষী); এবং বৃহস্পতি দেবতার উদ্দেশে একটি শিৎপুট (মার্জারের ন্যায় জন্তু বিশেষ) আলভন কর্তব্য। ১৭।
.
অষ্টাদশ অনুবাক
মন্ত্র- শকা ভৌমী পান্ত্রঃ কশো মান্থীলবস্তে পিতৃমৃতুনাং জহকাসম্বৎসরায় লোপা কপোত উলুকঃ শশস্তে নৈঋতাঃ কৃকবাকুঃ সাবিত্রঃ ॥১৮৷
মর্মার্থ- ভূমি দেবতার উদ্দেশে একটি মক্ষিকা আলভন কর্তব্য। এই ভাবে পিতৃদেবতাগণের উদ্দেশে একটি পাস্ত্র ও একটি কশ নামক পক্ষীবিশেষ ও একটি মান্থীলব (জলকুকুট); ঋতুরূপ দেবতাগণের উদ্দেশে একটি জহকা (বিলবাসী শৃগাল); সম্বৎসররূপী দেবতার উদ্দেশে একটি লোপা (শ্মশান-শকুনি); নৈঋত দেবতার উদ্দেশে একটি কপোত, একটি উলুক ও একটি শশক; এবং সাবিত্র বা সবিতা দেবতার উদ্দেশে একটি কৃকবাকু (অরণ্য-কুকুট) আলভন কর্তব্য ॥১৮৷৷
[অবশিষ্ট ছয়টি অনুবাক, অর্থাৎ, একোনবিংশ থেকে চতুর্বিংশ অনুবাক পর্যন্ত মন্ত্রগুলির অর্থ উপযুক্ত মর্মার্থ অনুসারে বোধিতব্য। অবশ্য এগুলিরও অধিকাংশ ব্যাখ্যা বা মর্মার্থ শুক্লযজুর্বেদের ২৪শ অধ্যায়ের বিভিন্ন মন্ত্রের মধ্যে প্রাপ্তব্য]
.
ঊনবিংশ অনুবাক
মন্ত্র- রুকূ রৌদ্রঃ কৃকলাসঃ শকুনিঃ পিঞ্জকা তে শরব্যায়ৈ হরিণো মারুততা ব্ৰহ্মণে শান্তরক্ষুঃ কৃষঃ শ্বা চতুরক্ষো গৰ্ভস্ত ইতরজনানামগয়ে ধুভক্ষা৷ ১৯।
.
বিংশ অনুবাক
মন্ত্র- অলজ আন্তরিক্ষ উদ্ৰো মদঃ প্লবতেহপামদিত্যৈ হংসসাচিরিন্দ্রাণ্যৈ কীৰ্শা গুপ্ৰঃ শিতিকক্ষী বাম্রাণসন্তে দিব্যা দ্যাপৃথিব্যা শ্ববিৎ৷৷ ২০
–
.
একবিংশ অনুবাক
মন্ত্র- সুপর্ণঃ পাৰ্জনন্যা হংসো বৃকো বৃদংশন্ত ঐন্দ্রা অপামুদ্ৰোহৰ্যমণে লোপাশঃ সিংহো নকুলো ব্যাঘ্ৰস্তে মহেন্দ্রায় কামায় পরস্বান্ ॥২১।
.
দ্বাবিংশ অনুবাক
মন্ত্র- আগ্নেয়ঃ কৃষ্ণগ্রীবঃ সারস্বতী মেযী বড়ুঃ সৌম্যঃ পৌষ্ণঃ শ্যামঃ শিতিপৃষ্ঠো বাম্পত্যঃ শিমল্লা বৈশ্বদেব ঐন্দ্রোহরুণো মারুতঃ কল্মষঃ ঐন্দ্রাগ্নঃ সংহিতোহথোয়ামঃ সাবিত্রো বারুণঃ পেত্বঃ ॥২২৷
.
ত্রয়োবিংশ অনুবাক
মন্ত্র- অপরো গোমৃগন্তে প্রজাপত্যা আগ্নেয়ো কৃষ্ণগ্রীবৌ ত্বাগ্রেী লোমশসথে শিতিপৃষ্ঠেী বাম্পত্যে ধাত্রে পৃষোদরঃ সৌৰ্যো বলক্ষঃ পেত্বঃ ২৩।
.
চতুর্বিংশ অনুবাক
মন্ত্র- অগ্নয়েহনীতে রোহিতাঞ্জিরনড়নখোরামৌ সাবিত্রৌ পৌষ্ণো রজতনাভী বৈশ্বজেবৌ পিশঙ্গেী তৃপরেী মারুতঃ কলাষ আগ্নেয়ঃ কৃষ্ণোহজঃ সারস্বতী মেৰী ৰারুণঃ কৃষ্ণ একশিতিপাৎ পেত্বঃ ॥২৪৷৷