নিমবাগানের মানুষেরা আলি কেনানকে ফুলতলির বাস উঠিয়ে দিয়ে নিমবাগানে উঠে আসতে যথেষ্ট অনুরোধ করেছে। এখন নিমবাগানের মানুষ তাকে তাদের গৌরব বলে ভাবতে আরম্ভ করেছে। এ কথা আলি কেনানের মনেও একাধিক বার জেগেছে। কিন্তু ফুলতলির বাঁধানো কবরটি ছেড়ে দিতে তার মন চায় না। এই করবটি দিয়েই তার এতোদূর প্রতিষ্ঠা। নাড়ির বন্ধনের মতো ফুলতলির প্রতি একটা টান অনুভব সে না করে পারে না। তা ছাড়া সে ভয়ানক হুঁশিয়ার। সবদিক নিশ্চিত না হয়ে কোনো কাজ করে না। এখনো পর্যন্ত আলি কেনান ফুলতলি আর নিমবাগানে পালা করে যাওয়া আসা করেই কাটাচ্ছে। ফুলতলিতে মাঝেমাঝে অনুপস্থিত থাকলেও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ইমাম সাহেব একা চালিয়ে নিতে পারবেন। ইমাম সাহেবের বিস্তর পরিবর্তন ঘটে গেছে। তিনি আলিকেনানের দ্বিতীয় সত্তা হয়ে উঠেছেন। সাদা তহবন্দ এবং বকের পাখার মতো সাদা পাঞ্জাবি পরেন। তাঁর গায়ে গতরে চেকনাই লেগেছে। আগের মিনমিনে ভাবটি আর নেই। লোকজন পরিপূর্ণ আস্থা সহকারে তার হাত থেকে তাবিজ এবং পানি পড়া গ্রহণ করে। আলি কেনানই তো ইমাম সাহেবের প্রাণে ফুঙ্কার দিয়ে তার ভেতর থেকে একজন ব্যক্তিত্বকে টেনে বের করে এনেছে। পাশাপাশি একটা ভয়ও আলি কেনানের আছে। তাবিজ-কবজ পানি পড়া দেয়া ইমাম সাহেবদেরই পেশা। আলি কেনান একজন বহিরাগত। এক নাগারে বেশীদিন যদি সে অনুপস্থিত থাকে তাহলে ইমাম সাহেব তাকে একদিন বেদখল করতে পারে। মক্কেলদের সঙ্গে ইমাম সাহেবের সরাসরি সংযোগ ঘটে গেছে। তিনি ইচ্ছে করলে, তাকে বেদখল করতে পারেন। আলি কেনান জানে ইমাম সাহেবের দিলে এখনো তেমন হিম্মত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মানুষের বদলে যেতে কতোক্ষণ। এসব তো গেলো বাইরের কথা। কেনো সে ফুলতলি ছেড়ে যেতে এখনো প্রস্তুত নয়, তার অন্য একটি গভীর কারণও আছে। সে আর ছমিরন ছাড়া সে কথা কেউ কোনোদিন আঁচ করতে পারবে না। ছমিরনের সঙ্গে অবাধ গোপন মিলনে ব্যাঘাত ঘটে এমন কোনো কাজ সে করতে পারবে না। প্রাণ গেলেও না।
আলি কেনানের জীবন অত্যন্ত মসৃণভাবে চলে আসছে। সত্যি বলতে কি সে নিজেকে মনে মনে একজন বুজুর্গ ব্যক্তি হিসেবে ভাবতে আরম্ভ করেছে। কেননা সে যা করতে চাইতো আপনা থেকেই হয়ে যাচ্ছিলো। সমস্ত প্রকৃতি তার একান্ত সংগোপন মনের কথা যেনো শুনতে পেতো। কোনো কোনো রাত্রিবেলা উন্মুক্ত আকাশের গ্রহ নক্ষত্রের দিকে তাকালে তার আকাঙ্খর বেগ এতো প্রবল, এতো তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠে যে তার মনে হয় সে গ্রহ নক্ষত্রের গতি পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সে অনুভব করে তার চেতনায় বিদ্যুত সঞ্চারিত হচ্ছে। এই রকম সুখের সময়টিতে ছোট্টো একটি ঘটনায় তাকে চাঁদের অপর পিঠ দেখতে হলো। একদিন সন্ধ্যেবেলা সে হুজরাখানায় শুয়েছিলো। শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছিলো। তাছাড়া আকাশটাও ছিলো মেঘলা। মেঘ করলে অকারণে আলি কেনানের মন বিগড়ে যায়। তাই কোথাও বের হয়নি। নারী কণ্ঠের একটা খিলখিল হাসি তার কানে আসে। জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখে ছমিরনের মেয়ে আনজুমন। আনজুমন তো বটেই কিন্তু সে হাসাহাসি করছে কার সঙ্গে? ভালো করে চেয়ে দেখে জেলফেরত আসামী কালাম আনজুমনের একটা হাত ধরে আছে। আর আনজুমন কখনো খিলখিল করে হেসে তার দিকে ঝুঁকছে, কখনো সরে আসছে। টিমটিম করে জ্বলা বাতিটির আলোয় আলি কেনান আনজুমনের মুখ দেখতে পায়, দেখতে পায় তার পরিণত স্তনগুলি। ছমিরনের মেয়ে আনজুমন এতো সুন্দর। আলি কেনানের মাথায় তৎক্ষণাতই রক্ত চড়ে যায়। তার ইচ্ছে হয়েছিলো, দুটোকেই কেটে গাঙের পানিতে বাসিয়ে দেয়। সে তুল কালাম কাণ্ড করে বসতো কিন্তু নানা কথা ভেবে সে চুপ করে গেলো। আজকাল তাকে অনেক কিছু বুঝে সমঝে চলতে হচ্ছে। একটা সামান্য ভুলের জন্য যদি পাড়ায় প্রচার হয়ে যায় তার এখানে কেষ্ট লীলা চলছে, তাহলে তাকে বেশ বিপদের মধ্যে পড়তে হবে। মানুষের আস্থাই তো এই পেশার একমাত্র অবলম্বন। আগ পাছ নানা কথা চিন্তা করে মনের রাগ মনের মধ্যে হজম করে ফেললো।
সেদিন রাতে ছমিরন তার ঘরে এলে আলি কেনান বিস্ফোরণ ঘটায় : মাগি খবর রাহস তর মাইয়া ঘরে লাঙ ঢুকাইবার শুরু করছে।
কথার পিঠে কথা বলা ছমিরনের অভ্যাস নয়। সে আলি কেনানকে একজন অসাধারণ মানুষ বলে মেনে নিয়েছে। আলি কেনান তাকে নিয়ে যা ইচ্ছে করে। আপত্তি করেনি কোনো ব্যাপারে। এতো বড় একজন মানুষ আলি কেনান, সে কথা মনে করে ছমিরন আত্মপ্রসাদ অনুভব করেছে। তার ওই আত্মসন্তুষ্টির আরো একটা কারণ আছে। সে মনে করে দুনিয়ার সব পুরুষ এক রকম। তার দীর্ঘ জীবনের এটাই অভিজ্ঞতা। আলি কেনানকে সে অন্য রকম মনে করেছিলো। এখন বিজয়িনীর একটা গোপন পুলক সে অনুভব না করে পারে না। পেটের মেয়ে আনজুমনকে ছমিরন ভীষণ ভালোবাসে। তার সন্তান একটাই। ওই মেয়ের জন্য সে জীবনে অনেক কষ্ট করেছে। তার নামে এসব কথা সহ্য করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ালো। সরাসরি প্রতিবাদ না করেও বললো,
এইডা কি কন আপনে? আপনেরে আমার আনজুমনের নামে কেউ কিছু লাগাইছে নি? আলি কেনান বললো,
মাগি লাগাইব কেডা, আমি হাঁঝবেলা আপন চউকে দেখছি তর মাইয়া কালাম হারামজাদার লগে হাইস্যা কতা কইতাছে। আর হে তর মাইয়ার বুনি টিপতাছে। একটু বাড়িয়ে বললো।
আপনে আপন চউকে দেখছেন? ছমিরন জানতে চাইলো,
মাগি তর লগে মিছা কতা কইতাছি নাকি। আমি কি মিছা কতা কই?
এবার ছমিরন মেয়ের পক্ষ সমর্থন করে বললো,
মাইয়া আমার অত খারাপ নয়। আপনের মানুষ গুলান অরে খারাপ করবার চাইছে। আপনে হেরারে দাবরাইয়া দিবার পারেন না?
আলি কেনান ছমিরনকে কখনো মুখে মুখে কথা বলতে শুনেনি। আজ তর্ক করবার প্রবৃত্তি দেখে বললো,
মাগি তর মাইয়া অত খারাপ নয়! কাপড় খুইল্যা দেখ। গাঙ বানাইয়া দিছে। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সে ছমিরনকে একটা চড় দিয়ে বসে। চড় খেয়ে মেয়ে মানুষটি ঘুরে পড়ে যায়। তার সব শঙ্কা, সব দ্বিধা কোথায় চলে যায়। সে আলি কেনানের চোখে চোখ রেখে তেজের সঙ্গে বললো,
মাইয়া লাঙ ঢুহাইছে, বেশ ভালা করছে। আপনেও তো আমার লাঙ। তয় কি অইছে? ভবিষ্যতে কিছু দেখলে মুখ বন্ধ কইর্যা থাকপেন। আপনে মুখ খুললে, আমিও খুলুম। আল্লাহ আমারেও জবান দিছে হেইডা মনে রাইখেন। ঝাড়টা পা দিয়ে সরিয়ে সে হুজরাখানা থেকে বেরিয়ে এলো। নিজের ঘরে গিয়ে আনজুমনকে মারতে মারতে একদম মাটিতে লুটিয়ে দিলো। আলি কেনানের আফশোস হতে থাকলো,
ছমিরনকে চড়টা দিয়ে সে ভালো করেনি।
তারপর দিন মনে পাথরের মতো একটা অপরাধবোধের বোঝা নিয়ে আলি কেনানের ঘুম ভাঙ্গে। রোজকার অভ্যেস মাফিক আজকেও ছমিরন এসে হুজরাখানা ঝাট দিয়ে গেছে। চোখাচোখিও হয়েছে। কিন্তু দৃষ্টিতে বিদ্যুৎ খেলে যায়নি। মাত্র এক রাতের ব্যবধানে তারা একে অন্যের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আলি কেনান তার আলখেল্লা পরলো। লোকজনদের দর্শনও দিলো। তবে কারো সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা বলা সম্ভব হলো না। সে মনে করতে লাগলো চার দিকের মানুষ তার দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের দৃষ্টিতে ঘৃণা এবং অবজ্ঞা। মাঝে মাঝে আলি কেনানের মনে হতো, অসীম ক্ষমতা তার। শরীরের মধ্যে কোথাও এক জোড়া পাখা জন্ম নিয়েছে। ইচ্ছে করলে সে উড়ে যেতে পারে। বুকের ভেতর থেকে একটা বোধ বুদবুদের মতো জেগে তার সমগ্র সত্তা আচ্ছন্ন করে ফেললো। আহা তার পাখা জোড়া কাটা পড়েছে। এখন সে নেহায়েত ধুলোর জীব। সীরসৃপের মতো বুকে ভর দিয়েই তাকে ধুলোর ওপর দিয়ে চলতে হবে।
তার চোখে পড়লো কালাম, জেল ফেরত দাগী আসামী কালাম কবরের ওপাশে বসে বিড়ি টানছে। আড় চোখে এদিক ওদিকে তাকাচ্ছে। আলি কেনান বুঝতে পারে, তার চোখ আনজুমানকে তালাশ করছে। দুয়েকবার তার সঙ্গে চোখাচোখিও হলো। আলি কেনান আঁচ করতে পারে কালাম তার দিকে প্রতিপক্ষের দৃষ্টি নিয়ে তাকাচ্ছে। তার অর্থ আলি কেনানের কাছে অত্যন্ত প্রাঞ্জল।
তুমি যদি মায়ের সঙ্গে ঘুমোতে পারো আমি মেয়ের সঙ্গে আশনাই করতে পারবো না কেনো? তোমার যেমন ক্ষুধা আছে, আমারও তেমনি ক্ষুধা। তোমাতে আমাতে তফাৎ কোথায়? আহা আলি কেনান এক জায়গায় কালামের সমান হয়ে গেলো। তার চাইতে মৃত্যু তার জন্য ভালো ছিলো।
মরপুর মাজারের দুই বগলে লাঠি ভর দেয়া বুড়োটির কথা তার মনে পড়ে গেলো। বুড়ো এক রাতে আপন মনে গুন গুন করে গান গাইছিলো :
‘ফকিরি সহজ কথা নয়। লম্বা চুলে তেল মাখিলে ফকিরি পাইতা নয়।‘ তার দিকে জ্বলজ্বলে চোখ মেলে তাকিয়ে বলেছিলো,
অ মিয়া ফকিরি করবার ত খুব ভঙ্গিটঙ্গি করতে আছো, ফকিরির মানে বোঝ? আলি কেনান জবাব দেয়নি। সে ফকিরির অর্থ বোঝে না। বুঝতেও চায় না। কিচ্ছু না জেনে, না বুঝে তার দিনকাল তো মন্দ কাটছে না। অধিক কি প্রয়োজন? সেই বুড়ো যাকে আলি কেনান মনে মনে ভয় পায় এবং ঘৃণা করে, কাটা কাটা ভাষায় বলেছিলো :
বাঁইচ্যা থাকার একশ একটা পথ আছে, সময় থাকতে বাইছা লও একটা। এই পথ তোমার নয়। ক্ষুরের ধারের ওপর দিয়ে চলা। তুমি পারবানা একবার পিছলাইয়া গেলে বুঝবা পরিণাম। ফকিরি অইল গিয়া মিয়া অনন্ত অসীমেরে কোলে লইয়া হগল সময় বইস্যা থাকা। আল্লারে চামড়ার চউকে কেডা দেখছে। এই অনন্ত অসীমই তো আল্লাহ। আমাগো দ্বীনের নবী মেরাজে গেছিলেন, হেইড্যা আর কিছু নয়, অনন্ত অসীমের মধ্যে লয় অইয়া গেছিলেন।
আলি কেনান মনে করে এসেছে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠিত মাজারের পেছনে তার মতো করিতকর্মা কোনো মানুষের ফন্দিফিকির কাজ করেছে।
আসল বস্তু কিছু নেই। আজকে তার চিন্তার সীমাবদ্ধতা কে যেনো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো। কিছু কিছু মানুষ দুনিয়াতে ছিলো বা এখনো আছে যারা অনন্ত অসীমকে কোলে নিয়ে জিন্দেগী কাটিয়ে দিতে পেরেছেন। এই ধরনের কিছু মানুষ দুনিয়াতে ছিলেন বলেই, আলি কেনানের মতো মানুষেরা ফন্দিফিকির করে বাঁচতে পারে। ফকিরি করার ভান করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে যেতে পারে। আলি কেনান অনুভব করে অতো উর্ধ্বে ওঠার ক্ষমতা তার নেই। দুর্বল পা তাকে অতোদূরে নিয়ে যেতে পারবে না। তার কাদার পা।
একদিন বিহান বেলা ছমিরনের কান্নার শব্দ শুনে তার ঘুম ভাঙে। মেয়ে মানুষটি বুক চাপড়ে কাঁদছে :
হায়রে আল্লাহ আমার এত বড় বাশ কেডা করলো। আমার নাবালেগ মাইয়ারে যাদুটোনা কইর্যা কেডা লইয়া এলো।
আলি কেনান বুঝতে পারে, কালাম, হ্যাঁ কালামের কাজ। ঐ হারামজাদাই ছমিরনের মেয়েটি নিয়ে ভেগেছে। প্রথমে তার ভীষণ রাগ হলো।
কালামকে চরম শাস্তি দেয়ার সংকল্পে তার হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আসে। আনজুমনকে সেদিন দেখার পর থেকে তার রক্তে রক্তে একটা অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছিলো। তবে একটা বিষয় বিবেচনা করে মনকে সংযত করতে হলো। আনজুমনতো তারই বাড়ির পোষা মুরগি। এক সময়ে আপনা থেকেই তার হাতে এসে পড়বে। একটা বিরাট পরাজয় তার ঘটে গেলো। চীকার করে আকাশ পাতাল তোলপাড় করার মতো ভাবাবেগ তার মনে জন্মেছিলো। কিন্তু অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে চুপ করে থাকলো।
আলি কেনানের তীক্ষ্ণ ঘ্রানশক্তি দিয়ে বুঝে ফেললো, তার ক্ষয় শুরু হয়েছে। এই ফুলতলিতে থাকলে সে আর পতন ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। তাকে নতুন জায়গা খুঁজে বের করতে হবে এবং যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব। স্বভাবতই নিমবাগানের চিন্তাটাই তার মনে এলো। বেলা বাড়লে শিষ্যদের ডেকে বললো,
কলন্দরি বাবা খোয়বে আইস্যা কইয়া গেছেন, ই হান থাইক্যা দুই দিনের মধ্যে নিমবাগানে চইল্যা যাইতে অইবো। সে কথা না বাড়িয়ে চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়েই বসলো। শিষ্যেরা পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে জানে বু আলি কলন্দর বাবার নির্দেশ হেরফের করবার উপায় নেই। একমাত্র ছমিরনই বুঝতে পারলো আলি কেনান পালাচ্ছে। এ ছাড়া তার আর উপায় কি? দুদিন বাদে আনজুমন আর কালামের কথা উঠবে। নাড়াচাড়া পড়ার আগেই কেটে পড়ছে। সে কি করবে? হ্যাঁ তাকেও যেতে হবে বৈকি। বুকটা ভেঙে যাচ্ছে। কিন্তু আলি কেনানের সঙ্গে সে নিশির অদৃশ্য বাঁধনে আটকা পড়েছে। সেখান থেকে পালাবে কোথায়?