আটশো দুইতম রজনী :
এবার সে আর একটা নতুন কাহিনী বলতে শুরু করে :
এক অত্যন্ত গরীবদম্পতি সারাদিন ধরে শহরের পথে পথে ভুট্টার খই বিক্রি করে বেড়াতো। ওদের পরমাসুন্দরী একটি কন্যা ছিলো।
শহরের কাজী একদিন মেয়েটির মা বাবার কাছে তার পার্ণি প্রার্থনা করলো। কাজী সাহেব পাত্র হিসাবে ফেলনা বলা চলে না। বয়সটাই একটুখানি যা বেশি—তা বেশিই বা বলা যায় কি করে, আশী বছরে কি আর কেউ শাদী নিকা করে না? তবে চেহারাটা তেমন খুবসুরত নয়। আড়ালে কু-লোকে বাঁদর হনুমান বলে। কিন্তু দেখতে তাদের মতো হলে আসলে তো আর বাঁদর বেবুন নয় সে। তা ছাড়া পুরুষ মানুষের আবার রূপ-জৌলুসের কী দরকার। পয়সা কড়ি কেমন আছে, কেমন কামায় সেই কথাই তো আসল। সে দিক থেকে কাজী সাহেবের জুড়ি নাই। ঘুষের টাকায় কেঁপে কেঁপে সে কলাগাছ হয়ে গেছে। বাড়ি ঘর-দোর, ধন-দৌলতের কোনও অভাব নাই। মেয়ের বাবা বললো, আমি রাজি।
সেইদিনই কাজীর সঙ্গে শাদী হয়ে গেলো মেয়েটির।
কাজী সাহেব তার বার্ধক্য এবং চেহারার দৈন্য ঢাকতে প্রতিদিন নতুন নতুন নানারকম উপহার উপঢৌকনে ভরে দিতে লাগলো তার নব-পরিণীতা তরুণী বেগমকে। কিন্তু যত মন-ভোলানো বাহারী রংদার বস্তুই উপহার দিক সে, একটি সোমত্ত ভরা-যৌবনের নারীকে তুষ্ট করার মত আসলি-উপহার দিতে অপারগ হলে কোন মেয়ে ক্ষমা করতে পারে তার স্বামীকে? স্বভাবতই ঐ সব ফালতু উপহার উপঢৌকনে তার মন ভরে না। কিন্তু কীই বা করতে পারে সে। অসহায় অবলা এক নারী, তাই, নীরবে মুখ বুজে সহ্য করে সব। নিষ্কাম নিস্তেজ জড় পদার্থের মতো সারাদিন রাত বিছানায় পড়ে থাকে।
কাজী সাহেব কোসিসের কোনও ত্রুটি রাখে না। ঘড়ি ঘড়ি এসে বেগম সাহেবার খোঁজ খবর নিয়ে যায়। মোলায়েম করে মন-ভোলানো অনেক রকম রস-কথা বলে চাঙ্গা করার প্রয়াস করে। কিন্তু শুধু কথায় কী আর চিড়ে ভেজে, সুপ্তকাম-তরুণী-ভার্যা ফিরেও তাকায় না নপুংসক কাজীর দিকে।
কাজী সাহেব তার দপ্তরের কাজের চাপের দরুণ এক খুবসুরত নওজোয়ান পেশকার বহাল করলো। ছেলেটি দেখতে যেমন সুন্দর এ আদব-কায়দাও তেমনি। খুব নম্র, বিনয়ী, মৃদুভাষী।
কাজী সাহেব কাজের অছিলায় ছেলেটিকে অন্দরে পাঠায় মাঝে মাঝে। বেগম সাহেবার খোঁজ-খবর দেখা-শোনা করতে বলে। ছেলেটি একান্ত অনুগত কর্মচারীর মতো যথাযথ আদেশ পালন করে চলে।
এইভাবে কিছুদিনের মধ্যে দুই তরুণ-তরুণীর মধ্যে লজ্জা-শরমের ব্যবধান ধীরে ধীরে অন্তর্হিত হয়ে সেখানে এক নতুন সম্পর্কের সেতু গড়ে ওঠে। তার নাম মহব্বত।
কাজী সাহেব অভিজ্ঞ মানুষ। সবই সে অনুমান করতে পারে। একটি জোয়ান ছেলে আর যুবতী মেয়ে একত্রে হলে কী কী ঘটতে পারে, তা তার অজানা নয়। কিন্তু কিছুই যেন সে আঁচ করতে পারে না এই রকম অজ্ঞ নির্বোধের ভান করে থাকে।
ক্রমশঃ প্রেমের প্রথম পর্ব শেষ হলে একদিন কাজী-বেগম দু’হাত বাড়িয়ে পেশকার ছেলেটিকে বুকে টেনে নেয়। তার এতদিনের সুপ্ত কামনা লেলিহান বহ্নিশিখা হয়ে ছেলেটির জাগ্রত যৌবনকে গ্রাস করে ফেলতে চায়। সে আহ্বানে ছেলেটিই বা সাড়া না দিয়ে পারে কি করে? হাজার হাজার টাকার সাজ-পোশাক গহনা অলঙ্কারে কাজী সাহেব যা দিতে পারেনি, সে বস্তু কানায় কানায় ভরে দেয় তাকে ঐ ছেলেটি।
বেগমের মুখে হাসি দেখে কাজী সাহেব খুশিতে ডগমগ হয়ে ওঠে।
প্রেমের বড় বিচিত্র গতি। মেয়েটি ওর জানালায় রুমাল ঝুলিয়ে রাখতো। সাদা আর লাল রঙের দু’খানা রুমাল ঝুলাতো সে। যখন সাদা রুমাল ঝুলতো বুঝতে হবে কাজী সাহেব বাড়িতে নাই। আর যখন লাল রঙের রুমাল ঝুলত বুঝতে হবে, এখন নয়, এখন এসো না, কাজী সাহেব ঘরেই আছে। এইভাবে প্রেমিকা নারী তার দয়িতকে বুঝিয়ে দিত, কখন আসতে হবে এবং কখন আসতে হবে না।
এইভাবে কাজীর চোখে ধুলো দিয়ে ওদের মহব্বত মিলন যথারীতি চলছিলো। কিন্তু চিরদিন চললো না।
একদিন বিকেলে কাজী সাহেব কাজে বেরুলেন। বললেন, বড় লোকের বাড়িতে শাদী আছে। রাতে আর ফিরতে পারবো না, বিবিজান।
বিবিজান তো আনন্দে নেচে উঠলো। ঘর-দোরে গোলাপ জল ছিটালো। কুসুম-সজ্জায় শয্যা রচনা করলো। তারপর জানলায় একখানা সাদা রুমাল মেলে দিয়ে পালঙ্কে শুয়ে প্রিয়-মিলনের সুখ-স্বপ্নে আচ্ছন্ন হয়ে রইলো।
একটু পরেই দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়ার শব্দে ধরমড় করে উঠে বসে সে। এ তো তার প্রেমিকের মৃদু করাঘাত নয়। দরজা খুলতে দেখলো, বৃদ্ধ কাজী সাহেব এক খোঁজা নফরের কাধে ভর দিয়ে হাঁপাচ্ছে। তাড়াতাড়ি ধরাধরি করে ঘরে এনে বিছানায় শুইয়ে দেয় মেয়েটি।
–কি গো, শরীরটা খারাপ হয়েছে নাকি?
কাজী সাহেব হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, বেশ ভালোই ছিলাম। হঠাৎ কেমন মাথাটা ঝিম ঝিম করতে লাগলো। কোনও রকমে শাদীনামা লিখে দিয়েই আমি চলে এলাম।
-তা বেশ করেছ, মেয়েটি বলে, তুমি শোও, আমি তোমার সারা গাটা গোলাপ জল দিয়ে মুছিয়ে দিচ্ছি। দেখবে আরামে ঘুম এসে যাবে।
কাজী সাহেবকে পালঙ্কে শুইয়ে দিয়ে তার দেহ থেকে এক এক করে সব সাজ-পোশাক খুলে একেবারে বিবস্ত্র করে সে। তারপর গোলাপ জল ছিটিয়ে সারা শরীরটা ভালো করে মুছিয়ে, চাদর দিয়ে ঢেকে বলে, এবার দেখবে, এখুনি ঘুম আসবে। আর ঘুম ঠিকমতো হলে কাল সকালে শরীরও ঝরঝরে হয়ে যাবে।
এই প্রথম কাজী সাহেব তার বেগমের কাছ থেকে এমন দরদ ঢালা ব্যবহার পেলো। মনটা খুশিতে ভরে উঠলো। এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই নাক ডাকিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো সে।
বুড়ো কাজীর গায়ের দুর্গন্ধে বমি আসছিলো মেয়েটির। তোয়ালে আর সাবান নিয়ে সে হামামে গিয়ে ঢুকলো।
ইত্যবসরে পেশকার নাগরটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে জানলার দিকে লক্ষ্য করে বুঝলো, কাজী সাহেব ঘরে ফিরবেনা, আজকের রাত তাদের মধুযামিনী হবে। যথারীতি সে জলের পাইপ বেয়ে ওপরে উঠে সুন্দরীর জানলা টপকে ঘরের ভিতরে এসে নামে।
ঘরের এক কোণে একটা মৃদু আলোর চিরাগ টিমটিম করে জ্বলছিলো। প্রায়ান্ধকার। তবে এটুকু বেশ বোঝা যায়, পালঙ্কের চাদর মুড়ি দেয়ে সে ঘাপটি মেরে শুয়ে আছে। প্রথমে দু-একবার সোহাগ সম্বোধন করে ডাকলো সে। কিন্তু তাতেও পালঙ্ক থেকে কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে বেশ জোরেই শব্দ করে হেসে উঠলো।
—হুম, একেবারে ঘুমে গলে গিয়েছ দেখছি। তা দেখি, কেমন কতখানি ঘুমে কাতর করেছে, আমার নয়নতারাকে।
চাঁদরের নিচ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেয় ছেলেটি।
–ওরে, বাবা, একেবারে তৈরি হয়ে আছ যে দেখছি বিবি সাহেব? অন্য দিন সাজ-পোশাক টেনে টেনে আমাকে খুলতে হয়, তা আজ দেখছি নিজে হাতেই সে কাজটি সমাধা করে রেখেছ, তোফা!
দুষ্টুমি করে সে শায়িতের দু’পায়ের মাঝখানে হাত রাখে। উদ্দেশ্য রাগমোচনের আগে খানিকটা সোহাগ-শৃঙ্গারে কামোত্তেজিত করে তোলা। কিন্তু থলথলে কী একটা অদ্ভুত বস্তুর
স্পর্শে আঁৎকে উঠে সে তড়িতাহতের মতো হাতটা টেনে বের করে নেয়।
হাতটা গুটিয়ে নিতে পারলেও দেহটাকে সরিয়ে নিতে পারলো না ছেলেটি। ততক্ষণে কাজী সাহেবের দুই বাহু তাকে জাপটে ধরে ফেলেছে।
ছেলেটি শিউরে ওঠে। সর্বনাশ, কাজী সাহেব। নিমেষে তার দেহের বিপুল শক্তি যেন নিঃশেষ হয়ে যায়। কিন্তু বলহীন বৃদ্ধরা ক্রোধে উত্তেজিত হলে ক্ষণকালের জন্যও আসুরিক শক্তির আধার হয়ে ওঠে।
পেশকার ছেলেটি তখন ভয়ে থরথর করে কাঁপছিলো। বৃদ্ধ কাজী তাকে অতি সহজেই পাশের একটা খালি কাঠের বাক্সের মধ্যে পুরে দালা এবং তালা বন্ধ করে দেয়। এই বাক্সটায় দিনের বেলায় শয্যার কথা-তোষকগুলো ভরে রাখা হয়। আকারে বেশ বড়সড়। সুতরাং তার মধ্যে একটা জোয়ান মানুষ অক্লেশে শুয়ে থাকতে পারে।
কাজী সাহেব হুঙ্কার ছাড়লো। নফর চাকররা তটস্থ হয়ে ছুটে এলো।
-তোদের বেগম সাহেবা কোথায়?
-কি হুজুর, তিনি হামামে গেছেন।
কাজী সাহেব গজরাতে থাকে, ঠিক আছে, সে আসুক তার সামনে আমি ডালা খুলবো। যদি সে বলে, লোকটাকে সে চেনে না তা হলে, নিজে হাতে আমি তাকে এই তলোয়ার দিয়ে দু’খানা করে ফেলবো। আর যদি বলে সে তার নাগর, তাহলে, এই দু’হাতের থাবায় দু’জনের গলা টিপে এক সঙ্গে দু’জনকে শেষ করে ফেলবো। আমি স্বয়ং কাজী। এই আমার বিচার।
কাজীর বাড়ির এক বৃদ্ধা দাসী হামামে গিয়ে কাজী -বেগমকে খবরটা জানিয়ে দেয়। সর্বনাশ হয়েছে বেগম – সাহেবা, পেশকার সাহেব ঘরে ঢুকতেই কাজী সাহেব তাকে ধরে বিছানার বাক্সে বন্দী করে ফেলেছে, এখন কী হবে?
মেয়েটি ঠোঁটে দাঁত চেপে ধরে, ইস, একেবারেই মনে ছিলো না। জানলার সাদা রুমালখানা সরাতে ভুলে গেছি। একটা কাজ কর, বুড়িমা, যেভাবেই হোক কাজী সাহেবকে কিছুক্ষনের জন্য ও-ঘর থেকে সরাতে হবে।
বুড়ি বলে, আমার কাছে ঘুমের ওষুধ আছে। কিন্তু কী করে খাওয়াবেন তাকে?
ঠিক আছে একটা বড়ি আর এক গেলাস পানি নিয়ে গিয়ে রাখ আমার ঘরে আমি যাচ্ছি।
কিছুক্ষণ পরে কাজী-বেগম ঘরে ঢুকেই আঁৎকে ওঠে, হায় বাপ, তুমি বিছানা ছেড়ে উঠে পড়েছ? হেকিম সাহেব বলে গেলেন এক নড়া চড়া করা চলবে না। শোও, শোও বলছি আগে।
কাজী সাহেব একটু নরম হয়ে বলে, কিন্তু আমার কথাটা আগে শোনো। মানে—মানে–
—আর মানে মানে করতে হবে না। এই শরীরে বেশি কথাবার্তা বলাও বারণ। তোমার সব কথা কাল শুনবো আমি। এখন এই দাওয়াই-এর গোলিটা খেয়ে শুয়ে পড়।
কাজী সাহেব প্রসন্ন হয়। বলে, আহা আবার হেকিম সাহেবকে ডাকতে গেলে কেন? শরীরটা একটু খারাপ হয়েছিলো, তুমি যত্ন করে গোলাপ নির্যাস দিয়ে মুছিয়ে দিয়েছে, তাতেই আমি বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছি।
—তা হলেও সাবধানের মার নাই। হেকিম সাহেবও বললেন ভয়ের মতো তেমন কিছু নয়, তবে দু-একদিন বিছানাতেই পড়ে থাকতে হবে, কোনও কাজ কামে বেরুতে পারবে না। শুধু সুবোধ ছেলের মতো আমি যা যা বলবো তাই মেনে চলবে, কেমন?
তারপর জলের গেলাস আর ঐ ঘুমের বড়িটা হাতে তুলে নিয়ে কাজীর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, নাও, টুক করে গিলে ফেলো তোত
কাজী সাহেব বড়িটা খেয়ে বলে, শোনো, খুব গুরুতর ব্যাপার ঘটে গেছে একটু আগে।
মেয়েটি বলে, তোমার শরীর স্বাস্থ্যের চেয়ে গুরুতর ব্যাপার, এখন অন্ততঃ আমার কাছে আর কিছু থাকতে পারে না। তুমি যা খুশি বলতে চাও,কাল সকালে বলো শুনবো।
কাজী সাহেব বাধা দিয়ে বলে, কাল সকালে শুনলে চলবে না বিবিজান। এখনই শোনো, না হলে লোকটা মরে যাবে।
—যে মরে মরুক। তোমাকে আমি মরতে দিতে পারি না। চুপচাপ শুয়ে পড়, আর একটি কথা বলবে না।
কথা অবশ্য আর বলার কোনও ক্ষমতা হলো না কাজীর। ঘুমে ঢলে পড়লো সে তখুনি।
মেয়েটি খাট থেকে নেমে বাক্সটার দিকে ছুটে যায়। ডালাটা খুলে ধরে। ছেলেটি ঘেমে নেয়ে গেছে। হাত বাড়িয়ে ওকে বাইরে বেরুতে সাহায্য করে। কাজীকে দেখে সে ভয়ে সিটকে যায়।
মেয়েটি হাসতে হাসতে বলে, ভয় নাই, ও এখন কাটা সৈনিক। এসো আমরা আজ নিচে মেঝেয় মাদুর পেতেই মধুযামিনী যাপন করবো।
শেষ রাতে মেয়েটি ছেলেটিকে জাগিয়ে তোলে, এ্যাঁই— ওঠ ওঠ। তোমাকে যেতে হবে। সকাল হতে আর দেরি নাই। তার আগে চলো আস্তাবলে যাই। একটা কাজ করতে হবে।
ওরা দু’জনে আস্তাবলে এসে একটা গাধাকে টানতে টানতে নিয়ে আসে শোবার ঘরে। মেয়েটি বলে, এসো দু’জনে মিলে ধরাধরি করে গাধাটাকে বাক্সটার মধ্যে পুরে ফেলি।
গাধাটাকে বাক্সে ভরে ডালা বন্ধ করে দেয় মেয়েটি। ছেলেটিকে বলে, এবার তুমি কেটে পড়। আমি বুড়োর পাশে শুয়ে পড়ছি।
সকালে ঘুম থেকে জেগেই কাজী মেয়েটিকে ঠেলা দেয়, এই ওঠো, ওঠো তো।
মেয়েটি বিরক্ত হওয়ার ভান করে পাশ ফিরে শোয়, কেন, কী হলো, এতো ভোরে ডাকছে কেন?
—ডাকছি তোমার বিচার হবে,ওঠ। মেয়েটি এবার চোখ বড় বড় করে তাকায়, কিসের বিচার?
—এখনি বুঝতে পারবে। আমি পাড়ার পাঁচজন সাক্ষী ডাকতে পাঠিয়েছি। তারা এখনি এসে পড়বে। তখনই বুঝবে কিসের বিচার।
একটু পরে পাড়ার কয়েকজন বয়স্ক মানী ব্যক্তি এসে উপস্থিত হলো। কাজী-সাহেব তাদের উদ্দেশ্য করে বলে, আপনাদের ডেকে পাঠিয়েছি একটা গুরত্বপূর্ণ ব্যাপারে সাক্ষী হওয়ার জন্য।
এই বলে কাজী সাহেব উঠে গিয়ে বাক্সের ডালাটা তুলে ধরে। আর সঙ্গে সঙ্গে গাধাটা মাথা তুলে মুখ বাড়িয়ে দেয়। কাজী সাহেব রাগে চিৎকার করে ওঠে, এই মাগী, কোথায় সে বল, না হলে গলা টিপে হতাকে শেষ করে দেব আজ।
দু’হাতে থাবা মেলে সে মেয়েটির গলাটা টিপে ধরতে এগিয়ে আসতে থাকে।
মেয়েটি আর্তনাদ করে ঘর থেকে ছুটে পালায়, ওরে বাবারে, মেরে ফেললো আমাকে। বাঁচাও বাঁচাও।
সাক্ষীরা ব্যাপারটা কিছু আঁচ করতে পারে না। উন্মত্ত কাজী সাহেবকে জাপটে ধরে একজন।
মেয়েটি ঘরের বাইরে থেকে বলে, ওকে আপনারা দড়ি দিয়ে বাঁধুন। কাল রাত থেকেই মাথাটা বিগড়ে গেছে।
শাহরাজাদ বললো, এরপর আর একটা কিসসা শোনাচ্ছি—