হিজরী সনের শাওয়াল মাসে আবদুল্লাহ ইবন যুবায়র (রা)-এর জন্ম প্রসঙ্গে
হিজরতের পর মুহাজিরদের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী প্রথম সন্তান ছিলেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবন যুবায়র, যেমন আনসারদের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী প্ৰথম সন্তান ছিলেন নুমান ইবন বাশীর। কেউ কেউ ধারণা করেন যে, আবদুল্লাহ ইবন যুবােয়র হিজরতের ২০ মাস পরে জন্মগ্রহণ করেন। এটা আবুল আসওয়াদের উক্তি। ঐতিহাসিক ওয়াকিদী মুহাম্মদ ইবন ইয়াহইয়া সূত্রে তাঁর পিতা এবং পিতামহের উদধূতি দিয়ে এটি বর্ণনা করেন। একদল ঐতিহাসিক ধারণা করেন যে, নুমান ইবন বাশীর আবদুল্লাহ ইবন যুবায়র-এর ৬ মাস পূর্বে হিজরতের ১৪ মাসের মাথায় জন্মগ্রহণ করেছেন। বিশুদ্ধ মত তা-ই, যা আমরা ইতোপূর্বে উল্লেখ করেছি।
বলেন, আবদুল্লাহ ইবন যুবায়রকে গর্ভে নিয়ে আমি হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হই এবং মদীনায় এসে কুবায় অবস্থান করি এবং এখানেই সন্তানের জন্ম হলে তাকে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট নিয়ে এলে তিনি নবজাত শিশুকে কোলে তুলে নেন এবং খেজুর নিয়ে আসতে বলেন। খেজুর নিয়ে এলে তিনি তা চিবিয়ে সন্তানের মুখে তুলে দেন। তাই সর্বপ্রথম যে বস্তুটি শিশুর পেটে যায় তা ছিল রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর পবিত্র মুখের লালা। এরপর খেজুর চিবিয়ে শিশুর মুখে দেন। এবং এ সময় তিনি শিশুর জন্য বরকতের দুআ করেন। তিনি ছিলেন হিজরতের পর প্রথম মুসলিম সন্তান।
খালিদ ইবন মাখলাদা আসমা থেকে বর্ণনা করেন যে, আসমা (রা) হিজরতকালে অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। কুতীয়বা সূত্রে আইশা (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, মদীনার মুসলিম সমাজে যে শিশু সন্তানটি সর্বপ্রথম জন্মগ্রহণ করে, সে ছিল আবদুল্লাহ ইবন যুবায়র। শিশুটিকে নবী (সা)-এর নিকট আনা হলে নবী (সা) খেজুর নিয়ে তা চিবিয়ে শিশুর মুখে তুলে দেন। তাই প্রথম যে বস্তুটি শিশুর পেটে যায়, তা ছিল নবী (সা)-এর পবিত্র মুখের লালা। এটা ওয়াকিদীর মতকে খণ্ডন করে। কারণ, তিনি উল্লেখ করেন যে, নবী (সা) আবদুল্লাহ ইবন আরীকত-এর সঙ্গে যায়দ ইবন হারিছ এবং আবু রাফি’কে মক্কা প্রেরণ করেন, যাতে তারা রাসূলুল্লাহ্ (সা) এবং আবু বকর (রা)-এর পরিবার-পরিজনকে নিয়ে আসেন। রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর হিজরতের পর তারা তাদেরকে নিয়ে আসেন এবং আসমা তখন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আসমার সন্তান প্রসব তখন আসন্ন ছিল। তিনি সন্তান প্রসব করলে নবজাতকের জন্মে উৎফুল্ল হয়ে মুসলমানগণ এক বিরাট তাকবীর ধ্বনি তোলেন। কারণ, ইয়াহুদীদের পক্ষ হতে মুসলমানদের নিকট এ খবর পৌছেছিল যে, তারা মুসলমানদেরকে জাদু করেছে, যার ফলে হিজরতের পর তাদের কোন সন্তান জন্ম নেবে না। ইয়াহুদীদের কল্পিত ধারণাকে আল্লাহ মিথ্যা প্ৰতিপন্ন করলেন।