৪১
পরদিন সন্ধ্যাবেলা কাজী আর বদি জুয়েলকে নিয়ে আসে ডা. রশিদ উদ্দিনের চেম্বারে ৷ কাজীর বন্ধু কুটু, ভালো নাম সাজ্জাদুল আলম, সে মেডিক্যাল কলেজে পড়ে, তার বাবা ডাক্তার, তিনি আবার ডা. রশিদের বন্ধু ৷ সেই সূত্রে তাদের আগমন রশিদ উদ্দিনের চেম্বারে ৷
কুটু বলে, ‘আংকেল ৷ ওর হাতটা একটু দেখতেন যদি…’
‘কী হয়েছে ?’
ডাক্তারকে কি মিথ্যা বলা যায় ? কাজী বলে, ‘গুলি লাগছে ৷’
রশিদ উদ্দিন বলেন, ‘এহ্ ৷ একেবারে থেঁতলে গেছে ৷ হাড় ভেঙেছে কি না কে জানে! গুলি লাগল কী করে!’
‘এই কেমন কইরা জানি লাগল আর-কি!’ জুয়েল বলে ৷
ডা. রশিদ বলেন, ‘আমার এখানে তো ও.টি. নাই ৷ তোমরা এক কাজ করো ৷ রাজারবাগে ডা. মতিনের ক্লিনিকে নিয়ে যাও ৷ আমি আসছি ৷’
‘রাজারবাগ!’ কাজী কামাল ঢোক গেলে ৷ ‘ও তো বিপজ্জনক জায়গা!’
ডা. রশিদ উদ্দিন বুঝে ফেলেন ৷ বলেন, ‘ঠিক আছে ৷ আমি আমার গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছি ৷’
ডা. রশিদ তাঁর রেডক্রস চিহ্ন আঁকা গাড়িতে করে জুয়েলকে নিয়ে যান রাজারবাগে ডা. মতিনের ক্লিনিকে ৷ ওখানে অপারেশন থিয়েটারে জুয়েলের হাতে তিনি ব্যান্ডেজ করে দেন ৷ সেখান থেকে জুয়েলকে নিয়ে যাওয়া হয় দিলু রোডে হাবিবুল আলমের বাসায় ৷ হাবিবুল আলমের তিন বোন জুয়েলের যত্নের ভার নেয় ৷ বড় বোন আসমা তাকে ড্রেসিং করে দেয় নিয়মিত ৷
তবে ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসক ছিলেন ডা. আজিজুর রহমান ৷ জুয়েলের হাতে আঙুলের অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ডা. আজিজের এলিফ্যান্ট রোডের পলি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয় ৷
ডা. আজিজ আর তাঁর স্ত্রী ডা. সুলতানা জুয়েলের হাতের ব্যান্ডেজ খোলেন ৷ আঙুলের অবস্থা দেখে আঁতকে ওঠেন ৷ আজিজ বলেন, ‘তিনটা আঙুল একসাথে ব্যান্ডেজ করেছে কেন! আর ব্যান্ডেজ এত বড়ই বা কেন ৷’ তিনি তিনটা আঙুল আলাদা আলাদা করে ব্যান্ডেজ করে দেন ৷’
জুয়েল বলে, ‘স্যার, দেশ স্বাধীন হলে আমি হব ন্যাশনাল ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন ৷ আঙুল তিনটা রাইখেন ৷’
মিটিং বসেছে ২৮ নম্বরের হাইড আউটে ৷ শাচৌ, বদি, আলম, কাজী উপস্থিত সেখানে ৷ সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কি ওড়ানো যাবে না ? মেজর খালেদ মোশাররফ, ক্যাপ্টেন হায়দার-এরা খুবই চান যে ওটা উড়ে যাক ৷ কিন্তু কীভাবে!
আলম বলে, ‘ওখানে আর্মিরা যেভাবে বাঙ্কার করে পজিশন নিয়ে সব সময় অ্যালার্ট থাকে, অ্যাটাক করে ওদেরকে সরানো যাবে না ৷ তার চেয়ে গেরিলা ওয়ারফেয়ার করব গেরিলা কায়দায় ৷ আমরা ওখানকার স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগ করি ৷ দুইজন কর্মচারীর সঙ্গে তো আমাদের যোগাযোগ আছেই ৷ ওদেরকে ট্রেনিং দিয়ে ওদের হাতে এক্সপ্লোসিভ পাঠিয়ে দিয়ে ওদের দ্বারাই ওগুলো ব্লাস্ট করানো হবে ৷’
আলম এক্সপ্লোসিভের ব্যাপারটা খুব ভালো বোঝে ৷ সে বলে যায়, ‘এখন ৮০/৯০ পাউন্ড পি.কে. (প্লাস্টিক এঙ্প্লোসিভ) লাগবে ৷ এতটা পি.কে. ভেতরে নিয়ে যাওয়া যাবে কী করে ?’
অনেক আলোচনার পর ঠিক হয়, পাওয়ার স্টেশনের ইঞ্জিনিয়ারের জিপের দরজার ভেতরের দিকের হার্ডবোর্ড কভার খুলে পি.কে. নিয়ে যাওয়া হবে ৷ একবারে ৮/১০ পাউন্ড পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যাবে ৷
যাক, সিদ্ধিরগঞ্জ বিষয়ে তবু একটা ফয়সালা হলো ৷ কিন্তু বিশেষ ট্রেনিং নিয়ে এসে গেরিলারা কি শুধু বসে থাকবে ? ‘তা হবে না ৷ চলো, একটা কিছু করি’-বদির উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি ৷
কাজী কামাল বলে, ‘খালি প্যাচাল না পাইড়া কিছু একটা অ্যাকশন করি ৷ হাতে-পায়ে জং ধইরা যাইতেছে তো ৷’
ঠিক হয়, তারা আবার বেরিয়ে পড়বে ৷ একসঙ্গে একই সময় দুটো গ্রুপে ৷ একটা আলমের নেতৃত্বে ৷ আরেকটা জিয়ার নেতৃত্বে ৷ আলমের গ্রুপে থাকবে আলম, বদি, কাজী কামাল, রুমী আর স্বপন ৷ দ্বিতীয় গ্রুপে হ্যারিস, মুখতার, জিয়া, আনু, চুল্লু ভাই আর আজাদ ৷
বদি আর আলম মিলে ধানমন্ডি থেকে হাইজ্যাক করে একটা মাজদা গাড়ি ৷ গাড়িটার কাগজপত্রে দেখা যায় গাড়ির মালিক মাহবুব আনাম ৷ অন্যদিকে হ্যারিস আর মুখতার হাইজ্যাক করে ফিয়াট ৬০০ গাড়ি ৷
আজাদরা অপেক্ষা করছে ধানমন্ডির হাইড আউটে ৷ বদি আর আলম গেছে এক গ্রুপের জন্যে গাড়ি হাইজ্যাক করতে ৷ হ্যারিস আর মুখতার গেছে তাদের গ্রুপের জন্যে গাড়ি হাইজ্যাক করতে ৷ বদি আর আলম চলে আসে আগে ৷ তারা হাইজ্যাক করেছে একটা শাদা মাজদা ৷ তাতে উঠে কাজী কামাল, রুমী, স্বপন বিদায় নেয় ৷ আজাদ, আনু, চুল্লু ভাই অপেক্ষা করছে হ্যারিস আর মুখতারের জন্যে ৷ হ্যারিস আর মুখতার আসে ফিয়াট ৬০০ গাড়ি নিয়ে ৷ তাতে উঠে পড়ে আজাদরা ৷ সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে ৷ রাস্তার লাইটগুলো জ্বলছে ৷ হ্যারিসদের কাজ হলো রাজারবাগ পুলিশ লাইনের কাছে থাকা ৷ আর আলমরা ধানমন্ডি এলাকায় চীনা কূটনীতিকের বাসার সামনে প্রহরারত সৈন্যদের ওপর হামলা করে ওদিকেই ১৮ নম্বর রোডে আরেকটা বাসায় শেখ মুজিব পরিবারকে নজরবন্দি রাখা প্রহরারত পুলিশ আর সৈন্যদের ওপর চড়াও হবে ৷ তারপর এসে জিয়াদের সঙ্গে যোগ দেবে ৷ তখন দুটো গ্রুপ একসঙ্গে আরো কিছু অভিযান পরিচালনা করবে ৷ বেরুনোর আগে শাচৌ যখন জানতে চেয়েছেন এই অপারেশনের নাম কী, তখন আলম বলেছে, এর নাম অপারেশন আননোন ডেসটিনেশন ৷
আজাদদের গাড়ি চালাচ্ছে হ্যারিস ৷ সে গাড়ি নিয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনে একটা চক্কর দেয় ৷
হ্যারিস বলে, ‘কী করব ৷ ইঞ্জিন গরম হয়ে যাচ্ছে ৷ রেডিয়েটরে মনে হয় পানি নাই ৷ মিটারে হট দেখাচ্ছে ৷’
জিয়া বলে, ‘কোথাও থেকে পানি নিলে হবে ?’
হ্যারিস বলে, ‘হবে ৷’
মুখতার বলে, ‘শাহজাহানপুরে চলেন ৷ আমার চেনা পানের দোকান আছে ৷ ওখান থাইকা পানি নেওন যাইব ৷’
হ্যারিস গাড়ি থামায় শাহজাহানপুরে, মুখতারের দেখিয়ে দেওয়া পানের দোকানের সামনে ৷ স্টেন হাতে সবাই নামে ৷ এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা যায় ৷
আজাদ একটা পান কেনে ৷ দোকানদার কিছুতেই দাম নেবে না ৷ বলে, ‘স্যার মুক্তি গো কাছ থাইকা দাম লই না ৷’ ইঞ্জিনে পানি ভরে নিয়ে ওরা আবার আসে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের গেটে ৷ দুটো চক্কর দেয় ৷ ‘আরে, আলমদের কী হলো! ওরা আসে না কেন!’
জিয়া বলে, ‘চল, আমরা নিজেরাই একটা অ্যাকশন করি ৷ দারুল কাবাবের দিকে যাই ৷’
কাকরাইলের মোড়ে আসতেই কয়েকজন বাঙালি পুলিশ বলে ওঠে, ‘হল্ট ৷’ ওরা গাড়ি থামায় ৷ জিয়া ঘাড় বাড়িয়ে বলে, ‘সরেন তো ৷ আমরা বাঙালি পুলিশ মারি না ৷’
পুলিশও উঁকি দিয়ে দেখে, এদের হাতে যে অস্ত্র, তাতে বাড়াবাড়ি করা মানেই মৃত্যু ৷ বলে, ‘ওরে বাবা, মুক্তিবাহিনী ৷’ তারা সরে এসে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে ৷ যেন তারা কিছুই দেখেনি ৷
আজাদরা ময়মনসিংহ রোডে এসে পড়ে ৷ চলে যায় দারুল কাবাবের দিকে ৷ দারুল কাবাবের সামনে একটা আর্মির জিপ দাঁড় করানো ৷ এটাকে আক্রমণ করা যায় ৷ আজাদের হাত স্টেনগানে চলে যায় ৷ জিয়া বলে, ‘গাড়িটা ইউ টার্ন করে ঘুরিয়ে আন ৷ তাহলে মগবাজার দিয়ে পালিয়ে যেতে সুবিধা হবে ৷’ হ্যারিস গাড়িটাকে ইউ টার্ন করে ঘুরিয়ে আনে খানিকটা দূরে গিয়ে ৷ ফিরে এসে দেখা যায়, আর্মির জিপটা চলে গেছে ৷
তারা সোজা চলে আসে পিজি হাসপাতালের মোড়ে ৷ সেখান থেকে এলিফ্যান্ট রোড হয়ে মিরপুর রোডে পড়তে যাবে ৷ সামনে দেখা যায়, একটা আর্মির জিপ ৷ হ্যারিস বলে, ‘লেট্স অ্যাটাক দি জিপ ৷’ জিয়া বলে, ‘দাঁড়াও ৷ পেছনে আলো নেভানো কতগুলো আর্মির ট্রাক আছে ৷ মিরপুর রোডেও গাড়ি দাঁড় করিয়ে চেক হচ্ছে ৷ হ্যারিস, গাড়ি ২ নন্বর দিয়ে সাতমসজিদ রোডে নাও ৷’
আজকের অপারেশনেও কোনো গুলি করতে না পেরে আজাদ হতাশ ৷ ২৮ নম্বরে তারা তাদের হাইড আউটে যায় ৷
২৮ নম্বরে পরে যখন সবাই মিলিত হয়, তখন জিয়ারা আলমদেরকে বকাবকি করে তাদের সঙ্গে তারা কেন রাজারবাগে যোগ দেয়নি!
আলমরা তাদের অপারেশনের যে গল্প করে, তা শুনে আজাদের রোম খাড়া হয়ে যায় ৷ এ যে সিনেমাকেও হার মানায়!
আলম বলে, “আমি মাজদার ড্রাইভিং সিটে বসলাম ৷ আমার এসএমজিটা দিলাম বদিকে ৷ বদি আমার বাঁ পাশে ফ্রন্ট সিটে বসল ৷ পেছনে বাঁয়ে কাজী, মধ্যখানে রুমী আর ডান দিকে স্বপন ৷ ২৮ নম্বর থেকে বেরিয়ে মাঠের কাছে চায়নিজ ডিপ্লোম্যাটের বাসার সামনে গেলাম ৷ গিয়ে দেখি কোনো সেন্ট্রি নাই ৷ ধানমণ্ডি ১৮ নম্বর রোডে পাকিস্তানি আর্মির হোমরা-চোমরার বাড়ির সামনে গিয়ে দেখি সাত-আট জন সেন্ট্রি রাইফেল কাঁধে, তাদের জনা-দুয়েক দাঁড়িয়ে, বাকিরা বসে, সবাই গল্পগুজব হাসিঠাট্টায় মশগুল ৷ আমি বললাম, ‘ওকে ফ্রেন্ডস, জন্তুরা আমাদের হাতের নাগালে, আর ঠিক তিন মিনিট সময় আমাদের হাতে ৷’
সাতমসজিদ রোডে গিয়ে আমি গাড়ি ঘুরিয়ে নিলাম ৷ এতে সুবিধাও হলো ৷ আমাদের শত্রুরা আমাদের বাঁয়ে পড়ল ৷ বদি আর কাজী তাদের বাঁয়ের জানালা ব্যবহার করতে পারবে ৷ আমি স্বপন আর রুমীকে বললাম, ‘তোমরা রাস্তা দ্যাখো ৷ রুমী পেছনটা ৷ স্বপন সামনেরটা ৷’
সেন্ট্রিদের খুব কাছে চলে আসলাম ৷ মাজদার সুবিধা হলো শব্দ করে না ৷ গাড়ি স্লো করে বললাম, ফায়ার ৷ বদি পেট বরাবর, কাজী বুক বরাবর গুলির মালা রচনা করল তাদের স্টেনগান আর মেশিনগান দিয়ে ৷ সৈন্যরা মুহূর্তে লুটিয়ে পড়ল মাটিতে ৷ কোনো প্রতিরোধ করার ফুরসত পেল না ৷ রুমী বলল, ‘লেট্স কালেক্ট দ্য উইপন ৷’ আমি বললাম, ‘মাথা খারাপ নাকি ৷ প্রতিটা সেকেন্ড মূল্যবান ৷’ সেখান থেকে গাড়ি টান দিয়ে চীনা ডিপ্লোম্যাটের বাসভবনে আবার গিয়ে দাঁড়ালাম কিন্তু কোনো শিকার পেলাম না ৷ স্বপন আর রুমী বলল, ‘এটা কি, আমাদের তো শুটিং প্রাকটিসই হলো না ৷’ আমি আবার মিরপুর রোডে উঠলাম ৷ যাচ্ছি নিউমার্কেটের দিকে ৷ ৫ নম্বরের কাছে এসে দেখি, আর্মি চেকপোস্ট বসিয়েছে ৷ দুটো ট্রাক আর একটা জিপ আমাদের দিকেই মুখ করে দাঁড়ানো ৷ রাস্তায় দুজন সৈন্য শুয়ে পড়ে লাইট মেশিনগান নিয়ে পজিশন নিয়েছে ৷ চার-পাঁচটা গাড়ি দাঁড় করিয়ে আর্মি চেক করছে ৷ ভয়ে আমার কলজে শুকিয়ে এল ৷ এখন আর থামিয়ে গাড়ি ঘোরানোরও সময় নাই ৷ একমাত্র উপায় ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়া ৷ আমি বললাম, ‘বাঁচার একমাত্র উপায় হলো আমরা গাড়ি না থামিয়ে বাঁয়ে চলে যাব ৷ স্বপন, এলএমজিম্যানকে সাবাড় করবা ৷ বদি, কাজী, রাস্তার বায়ে দাঁড়ানো সৈন্যদের টার্গেট করবা ৷ আমি গাড়ি বাঁয়ে ঘোরানোর সাথে সাথে ফায়ার করবা ৷ আমি শুধু একবারই বলব, ফায়ার ৷’
আমি গাড়ি স্লো করে দাঁড়ানো গাড়িগুলো কাটিয়ে সামনে চলে গেলাম ৷ তিনজন সেন্ট্রি হাত উঁচিয়ে বলল, ‘হল্ট ৷’ আমি হেডলাইট বন্ধ করে ডান দিকে যাওয়ার ইনডিকেটর জ্বালালাম ৷ ডানে ঘোরানোর একটু ভানও করলাম ৷ সেন্ট্রি চিৎকার করে বলল, ‘হারামজাদা, কিধার যাতা হ্যায়, রোকো,’ আমি এক্সসেলেটরে চাপ দিয়ে গাড়ি বাঁয়ে ৫ নম্বরের দিকে নিতে নিতে বললাম, ‘ফায়ার, ফায়ার ৷’
স্বপনের গুলি এলএমজিম্যানকে শেষ করে দিল নিশ্চয় ৷ নইলে কোনো পাল্টা গুলি তো হলো না ৷ একই সাথে বদি আর কাজীর গুলি শেষ করে দিল বাঁয়ের সৈন্যদের ৷ আমার ঘাড়ের মধ্যে স্বপনের ছোড়া গুলির খালি কাতর্ুজ এসে পড়ল ৷ গরমে ঘাড়ে ফোস্কা পড়ে গেল ৷ আমি গাড়ি নিয়ে গ্রীন রোডে পড়লাম ৷ ইনডিকেটরে বাঁ দিক দেখিয়ে গাড়ি ঘোরালাম ডান দিকে ৷ মিরপুর রোডের দিকেই ৷ হেডলাইট নেভানো ৷ হঠাৎই রুমী বলল, ‘লুক লুক, দেয়ার ইজ আ জিপ, দি বাস্টার্ডস আর ট্রায়িং টু ফলোয়িং আস ৷’
রুমীকে কোনো নির্দেশ দিতে হলো না ৷ সে নিজেই স্টেনের বাঁট দিয়ে গাড়ির পেছনের কাচ ভেঙে ফেলল ৷ তারপর স্টেন বাড়িয়ে টার্গেট করল জিপের ড্রাইভারকে ৷ তার টার্গেট, উরেব্বাস ৷ জিপটা গিয়ে একটা ল্যাম্পপোস্টের গায়ে ধাক্কা খেল ৷ পেছনে তাকিয়ে রুমীরা দেখল আরো একটা জিপ আর দুটো ট্রাক গ্রীন রোড ধরে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছে ৷ আমরা মিরপুর রোড ধরে এলিফ্যান্ট রোডের দিকে চলে এলাম ৷”
আলমের বর্ণনা শেষ হলো ৷
আজাদ আলমের মুখে সব শুনে তার বন্ধুদের সাফল্যে আর সাহসিকতায় মুগ্ধ ৷ বলে, ‘ইস্, আমি যে কবে নিজ হাতে পাক আর্মি মারতে পারব ৷ তোরা ভাই হেভি দেখাচ্ছিস ৷’