একচত্বারিংশ অধ্যায় – পাৰ্বতীর জন্ম
ঋষিগণ বলিলেন, কিরূপে জগৎপ্রসবিনী কালী দাঙ্গায়ণী গিরিসুতা হইলেন? কিরূপে তিনি হরকে পতিত্বে বরণ করিয়াছিলেন? ১
কিজন্যই বা তিনি পিনাকীর অর্ধ শরীর গ্রহণ করিয়াছিলেন? হে মহামতে! এই জিজ্ঞাসিত বিষয় সকল–সম্পূর্ণরূপে আমাদিগকে বলুন। ২
মার্কণ্ডেয় বলিলেন,–হে ঋষিশ্রেষ্ঠগণ! যেরূপে দাক্ষায়ণী সতী গিরিসুতা হইয়াছেন এবং যেরূপে শিবের অর্ধশরীর গ্রহণ করিয়াছেন, তাহা শ্রবণ করুন। ৩
দাক্ষায়ণী সতী প্রাণত্যাগ করিয়া মানসিক গতিতে হিমালয় পর্বতে মেনকাসমীপে গমন করিলেন। ৪
হে দ্বিজগণ। যে সময়ে দক্ষকন্যা সতী শিবসহ হিমাচলে ক্রীড়া করিতেন, সেই সময়ে মেনকা তাহার হিতৈষিণী ছিলেন। ৫
অতএব তাহাতেই আমি জন্মগ্রহণ করিব, সতী এই মনে করিয়া প্রাণত্যাগ করত হিমালয়সুতা হইলেন। ৬
পূৰ্বে যে সময়ে দাক্ষায়ণী দক্ষের প্রতি কোপ করিয়া প্রাণত্যাগ করেন, সেই সময়ে মেনকা শিবাকে আরাধনা করিতেন। ৭
মহামায়া জগদ্ধাত্রী সনাতনী যোগনিদ্ৰাস্বরূপা সৰ্ব্বভূতমোহিনী সৰ্ব্বলোকের শরণ সেই জগদম্বাকে চৈত্রমাসের অষ্টমীতে উপবাস করিয়া নবমীতে মোদক, পিষ্টক, পায়স ও গন্ধ পুষ্পাদিদ্বারা সপ্তবিংশতি বত্সর পর্যন্ত পুত্রকামনা করত প্রত্যহ পূজা করিতেন। ৮-১০
ওষধিপ্রস্থে গঙ্গাতে মৃন্ময়ী মূর্তি করিয়া কোন সময়ে নিরাহারে, কোন সময়ে সংযতাহারে, মহামায়াতে মন অর্পণ করত সপ্তবিংশতি বৎসর পর্যন্ত মেনকা দেবী মহাঐশ্বৰ্য্য লালসাতে পূজা করত কাল যাপন করিলেন। ১১-১২
সপ্তবিংশতি বৎসরের পর জগন্মাতা; জগন্ময়ী অত্যন্ত প্রীতিলাভ করত প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত হইয়া বলিলেন। ১৩
দেবি! আপনি যাহা প্রার্থনা করিয়াছেন; তাহা এইক্ষণ প্রার্থনা করুন; আপনার মনের বাঞ্ছিত বিষয় সমস্ত প্রদান করিব। ১৪
তাহার পর মেনকা দেবী প্রত্যক্ষভাবে কালীকে দেখিয়া প্রণাম করিলেন এবং এই কথা বলিলেন। ১৫
দেবি। আপনার মূর্তি আমি প্রত্যক্ষ দেখিলাম; কিন্তু শিবে। যদি আপনি প্রসন্ন হন, তাহা হইলে আপনাকে কিঞ্চিৎ স্তব করিতে ইচ্ছা করি। ১৬
সৰ্বমোহিনী কালিকা ‘মাতঃ’ এই বলিয়া মনোহর বাহু দ্বারা মেনকাকে আলিঙ্গন করিলেন। ১৭
তাহার পর মেনকাদেবী, প্রত্যক্ষভাবে অবস্থিত পরমেশ্বরী কালীকে অভিলষিত বাক্যের দ্বারা স্তব করিতে লাগিলেন। ১৮।
মেনকা বলিলেন, জগদ্ধাত্রী লোকধারিণী চণ্ডিকাকে আমি প্রণাম করিতেছি; সর্বকামার্থদায়িনী জগদ্ধাত্রীকেও প্রণাম করি। ১৯
নিত্যানন্দা জ্ঞানময়ী জগৎপ্রসবিনী মহামায়াকে আমি করজোড়ে প্রণাম করি। যিনি সর্বদা শুদ্ধা, যিনি হর-বিরিঞ্চিরূপিণী গৌরী মহামায়া, ভক্তের শোক-দুঃখনাশিনী, যিনি শিবজায়া, ভদ্রা, তাহাকে আমি প্রণিপাত করি। ২০-২১
যিনি চিৎস্বরূপা শিবা, যিনি সত্ত্বগুণসম্পন্না নিত্যস্বরূপা, যিনি অনিত্যা, প্রাণিগণের বুদ্ধিরূপা, তাহাকে প্রণাম করি। আপনি যতিদিগের সংসার বন্ধনচ্ছেদিনী, আমাদের সেই গতির অনুসরণ করিবার ক্ষমতা কোথায়। ২২
আপনি সামবেদের উক্তি সিদ্ধিরূপা এবং ঋগ্বেদ ও যজুৰ্ব্বেদের অনুষ্ঠেয় যাগাদিরূপ দীর্ঘকাৰ্যরূপা, আপনিই অথৰ্ব্ববেদোক্ত অভিচারাদি কাৰ্য্যস্বরূপা; অতএব আপনি আমার নিত্য অভিলাষ পূর্ণ করুন। ২৩
ভূতবর্গ, নিত্য, অনিত্য, ভাগহীন, পরস্থ ও তন্মাত্র ইহা দ্বারা আপনাকেই যোগ করে, আপনি তাহাদের নিত্যরূপা শক্তি। কোন স্ত্রী আপনার যোগ্য রূপ বলিবার নিমিত্ত সক্ষম হইবে। ২৪
আপনি ক্ষিতি এবং ধরিত্রী ও জগতের নিত্য প্রকৃতিস্বরূপা; যে শক্তি দ্বারা ব্ৰহ্মরূপ বশ হয়, আপনি সেই নিত্যরূপ শক্তি; অতএব মাতঃ আমার প্রতি প্রসন্না হউন। ২৫
আপনিই অগ্নিগত উগ্ৰাশক্তিস্বরূপা এবং সূর্যকরের দাহিকাশক্তিরূপা; চন্দ্রিকার আহ্লাদিকা শক্তিরূপা; অতএব আপনাকে স্তব করত প্রণিপাত করিতেছি। ২৬
আপনি যোষিৎপ্রিয়দিগের যোষিৎস্বরূপা, উর্দ্ধরেতাদিগের বিদ্যারূপা; সৰ্বজগতের বাঞ্ছারূপা এবং হরির মায়াস্বরূপা। ২৭
আপনি বহুরূপ ধারণ করত নিরন্তর সৃষ্টি-স্থিতি-সংহার করিতেছেন, এবং ব্রহ্মা বিষ্ণু শিবাদির শরীরের কারণ; অতএব দেবি! আপনাকে প্রণিপাত করি, প্রসন্ন হউন। ২৮
মার্কণ্ডেয় বলিলেন, তাহার পর জগন্মাতা দেবি মেনকাকে বলিলেন, দেবি! বাঞ্ছিত বর প্রার্থনা কর। ২৯
তৎপরে যশস্বিনী মেনকা প্রথমেই বীর্যবান্, আয়ুষ্মান্ এবং ধনসম্পন্ন শত পুত্র প্রার্থনা করিলেন। ৩০
তাহার পরে সুরূপ ও গুণশালিনী কুলদ্বয়ের আনন্দরূপা ও ত্রিভুবন-দুর্লভা একটী কন্যা প্রার্থনা করিলেন। ৩১
তাহার পর দেবী ঈষৎ হাস্যসহকারে মেনকার অভিলাষ পূর্ণ করত বলিলেন,–তোমার বীর্য্যবান্ একশত পুত্র হইবে। কিন্তু প্রথম পুত্র অত্যন্ত বলবান্ হইবে। ৩২-৩৩
দেবতা রাক্ষস ও মনুষ্যের–সকল জগতের হিতের জন্য আমিই তোমার কন্যা হইব। ৩৪
তুমি নিত্য সুখপ্রসবা, নিত্য পতিব্রতা এবং অম্লান-রূপ-সম্পন্না ও সুভগা হইবে। ৩৫
জগদ্ধাত্রী এই কথা বলিয়া অন্তর্ধান করিলেন। মেনকাও–প্রফুল্ল চিত্তে স্ব স্থানে গমন করিলেন। ৩৬
তাহার পর কালক্রমে মেনকা দেবী মৈনাককে প্রসব করিলেন, এই মৈনাক ইন্দ্রের সমস্পর্ধী হইয়া পক্ষের সহিত অদ্য পর্যন্তও সমুদ্রমধ্যে আছে। ৩৭
তাহার পর দেবী একন্যূন শত পুত্ৰ ক্ৰমে প্রসব করিলেন; তাহারা মহা বীর্যবান, মহাসত্বসম্পন্ন ও সকল-লক্ষণ-যুক্ত। ৩৮
তাহার পর-জগন্ময়া মোগনিদ্রা কালিকা পূর্বে সতীদেহ ত্যাগ করিয়া ছেন, পুনৰ্বার জন্মের নিমিত্ত মেনকাসমীপে গমন করিলেন এবং অনুরূপ সময়ে তাহার গর্ভে উৎপন্না হইয়া সাগর হইতে লক্ষ্মীর ন্যায় জন্ম গ্রহণ করিলেন। ৩৯-৪০
দেবী বসন্তকালে মৃগশিরা নক্ষত্রে নবমীতে অর্ধরাত্রি সময়ে চন্দ্রমণ্ডল হইতে গঙ্গার ন্যায় জন্মিলেন। ৪১
দেবীর জন্ম হইলে দিক সকল প্রসন্ন হইল, বায়ু অনুকূল হইয়া সুন্দর গন্ধে আমোদিত করিতে লাগিল। ৪২
তৎপরে ভিন্ন রূপ তোয়-বৃষ্টির ন্যায় পুষ্পবৃষ্টি হইতে লাগিল। মহা প্রজ্বলিত অগ্নি প্রশান্তভাব ধারণ করিল। মেঘকূল মৃদু গর্জন করিতে লাগিল। ৪৩
দেবীর জন্ম হইতেই সমস্ত জগৎ স্বাস্থ্যময় হইল। নীলোৎপলদল-সদৃশ নবপ্রসূতা শ্যামাকে দেখিয়া মেনকা হাস্যের সহিত আনন্দপ্রাপ্ত হইলেন; এবং দেবগণও অতুল হর্ষ প্রাপ্ত হইলেন। ৪৪-৪৫
অন্তরীক্ষ গন্ধৰ্ব্ব ও অপ্সরাগণ নীলোৎপলদলের ন্যায় শ্যাম সেই হিমালয় সুতাকে স্তব করিতে লাগিল। ৪৬
হিমালয় তাহাকে ‘কালী’ এই নামে আহ্বান করিলেন; বান্ধবগণ দেবীর ‘পাৰ্বতী’ এই নাম রাখিলেন, আর তাঁহারা কালী ও গিরিনন্দিনী ইহাও বলিলেন। ৪৭-৪৮
তাহার পর দেবী, গিরিরাজ-গৃহে বর্ষাকালীন গঙ্গার ন্যায় ও শারদীয় চন্দ্রিকার ন্যায় দিন দিন বাড়িতে লাগিলেন। ৪৯
অনুদিন বৃদ্ধি প্রাপ্তা চাৰ্ব্বঙ্গী কালীর চন্দ্র-বিম্বের কলার ন্যায় মনোহর কান্তি প্রকাশ পাইতে লাগিল। ৫০
কালী বাল্যভাব প্রাপ্ত হইয়া ক্রীড়া করিতে লাগিলেন। নদীসমূহ যেরূপ কালিন্দীতে মিলিতা হয়, সেইরূপ সখীগণও কালীর সহিত ক্রীড়াচ্ছলে মিলিতা হইল। ৫১
হে দ্বিজশ্রেষ্ঠগণ! দেবী পূর্ব-জন্ম-বশীকৃত বিষয়ের ন্যায় স্বয়ং সমস্ত গুণ রাশি প্রাপ্ত হইলেন। ৫২
গিরিকন্যা নিজগুণে দেবকন্যা ও অপ্সরাগণকে অতিক্রম করিলেন এবং গানে গন্ধৰ্ব্ব-কন্যাদিগকে অতিক্রম করিলেন। ৫৩
তাহার লাবণ্য সৰ্ব্বদা বন্ধুবর্গের প্রীতিকর হইল। গুণের দ্বারা পিতা, মাতা ও বন্ধুগণকে সর্বদা সন্তুষ্ট করিতে লাগিলেন। ৫৪
তাহার পর জগন্মাতা নিত্য, মাতার তৃপ্তিকারিণী হইয়া পিতার পূজাদি সৎকারে সর্বদা রত হইলেন এবং ভ্রাতাদিগের সহিত সৰ্ব্বদা রত থাকিলেন। ৫৫
কালিন্দী যেরূপ সূর্যসমীপে সর্বদা থাকেন সেইরূপ জগন্মাতা সৰ্ব্বদা কন্যারূপে পিতার সমীপে উপস্থিত থাকিতেন। ৫৬
অনন্তর একদা গিরি, তাহাকে নিকটে রাখিয়া তনয়গণের সহিত সঙ্গত হইয়া অতি গৌরবে অবস্থান করিতেছেন, এমন সময় নারদ স্বর্গ হইতে সেই স্থানে আগমন করিলেন এবং পুত্রগণের সহিত সুখাসীন হিমালয়কে দেখিতে পাইলেন। ৫৭-৫৮
নিকটস্থিতা কালীকে সূৰ্য্যসমীপে কালিন্দী সদৃশ দেখিলেন, এবং তাহাকে শরতের রাত্রিকালে সম্পূর্ণ বর্ধিত চন্দ্রকিরণের ন্যায় বিবেচনা করিলেন। ৫৯
গিরি তাহাকে পূজা করত উপবেশন করিবার নিমিত্ত আসন প্রদান করিলেন। নারদ প্রথমতঃ গিরিরাজকে বৃত্তান্ত জিজ্ঞাসা করিলেন। ৬০
তাহার পর বিদিত-বৃত্তান্ত বাগ্বিশারদ মুনি, হাস্যপূর্বক মেনকাকে বলিলেন, আপনার এই কন্যা অতি রমণীয়া, যেন শুভাংশুর কিরণ দ্বারাই বৃদ্ধি পাইতেছেন। শৈলরাজ! আপনার সৰ্ব্বসুলক্ষণশালিনী এই প্রথমপ্রসূতা কন্যা শম্ভুর দয়িতা হইয়া তাহার সর্বদা অনুকূল-বর্তিনী হইবেন। ৬১-৬৩
এই তপস্বিনী শম্ভুর চিত্তও সৰ্ব্বদা প্রসন্ন করিবেন; তিনিও ইহাকে ভিন্ন অন্য স্ত্রীকে পরিণয় করিবেন না। ইঁহাদের যেরূপ প্রণয় হইবে, সেরূপ প্রণয় এ জগতে কাহারও হয় নাই, হইবেন না এবং বর্তমান সময়েও হইতেছে না। ৬৪
হে গিরিশ্রেষ্ঠ! আপনার কন্যা দেবতাদিগের অনেক হিতকর কার্য করিবেন এবং ইহার দ্বারাই শিব অর্ধনারীর ঈশ্বর হইবেন। ৬৫
শিবের–দেবীর সহিত অত্যন্ত সৌহার্দ হইবে এবং দেবী ভগবানের শরীরার্ধ গ্রহণ করিবেন ও তাহার আস্পদ প্রাপ্ত হইবেন। ৬৬
আপনার তনয়া কালী, তপস্যাদ্বারা হরকে প্রসন্ন করিলে সুবর্ণাভা ও সুবর্ণের ন্যায় গৌরাঙ্গী বিদ্যুৎ-সদৃশী হইবেন; ইহার নাম পরে গৌরী বলিয়াই খ্যাত হইবে। ৬৭
এই কন্যা শিব ভিন্ন অন্য বরে প্রদান করিতে মনেও স্থান দিও না। এইটী অতি গোপনীয় বিষয়,-দেবতাদিগের নিকটও প্রকাশ করিবেন না। ৬৮
মার্কণ্ডেয় বলিলেন, হিমালয় নারদ ঋষির কথা শ্রবণ করিয়া তাহাকে বলিলেন;–আমি শুনিতেছি, মহাদেব মানুষসঙ্গ পরিত্যাগ করত সংযতাত্মা হইয়া নির্জনে দেবতাদিগের অগম্য স্থানে তপস্যা করিতেছেন। ৬৯-৭০
হে দেবর্ষে। ধ্যানমাৰ্গস্থিত মহাদেব, পরমব্রহ্মে অর্পিত মনকে, কিরূপে ভ্রষ্ট করিবেন, সেবিষয়ে আমার সংশয় বোধ হইতেছে। ৭১
অক্ষর মহাদেব, প্রদীপ-কলিকা-সদৃশ পরমব্রহ্মকে অন্তরে সর্বস্থানে নিরন্তর দেখিতেছেন; তিনি বাহ্যদৃষ্টিশূন্য হইয়াছেন। ৭২
হে দ্বিজ। আমি কিন্নরদিগের মুখে এই রূপ শ্রুত হইয়াছি; তাহা হইলে হর, কিরূপে তাদৃশ মনকে ভ্রষ্ট করিতে সক্ষম হইবে? ৭৩
বিশেষতঃ আমি এই শুনিয়াছি, হর দাক্ষায়ণীর সহিত পূৰ্বে শপথ করিয়া ছিলেন যে, “প্রিয়ে দাক্ষায়ণি সতি! তোমা ভিন্ন অন্য স্ত্রীকে পত্নীত্বে গ্রহণ করিব না”; মুনে! এ বিষয় আপনাকে সত্য বলিতেছি। ৭৪-৭৫
সতীর সহিত পূর্বে ইহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, তাহার মৃত্যু হইয়াছে, এখন অন্য স্ত্রীকে গ্রহণ করিবেন কিরূপে? ৭৬
নারদ বলিলেন, গিরিরাজ! আপনি চিন্তা করিবেন না–আপনার এই কন্যা সেই সতী; শিবের নিমিত্তই জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, তাহাতে সংশয় নাই। ৭৭
মার্কণ্ডেয় বলিলেন;–নারদ ঋষি, যেরূপে সতী মেনকাতে উৎপন্ন হইয়াছেন, তৎসমস্তই গিরিরাজকে বলিলেন। গিরিরাজ পুত্ৰদারের সহিত সমস্ত বৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া নিঃসংশয় হইলেন। ৭৮-৭৯
তাহার পর কালী নারদ-বাক্য শ্রবণ করিয়া হাস্যমুখে লজ্জাতে অধোমুখী হইলেন। ৮০
গিরি, হস্ত দ্বারা তাঁহার মুখ মার্জনা করত কিঞ্চিৎ উন্নমিত করিলেন এবং মস্তকে নিরন্তর চুম্বন করিয়া নিজের আসনে বসাইলেন। ৮১
তাহার পর নারদ পুনর্বার মেনকাতনয়গণের সহিত গিরিরাজকে আনন্দিত করত শৈলতনয়ার জন্য বলিলেন, শৈলরাজ! এই সামান্য সিংহাসনে দেবীর প্রয়োজন কি? শিবের ঊরুই ইহার সৰ্ব্বদা আসন হইবে। ৮২-৮৩
পর্বতরাজ! আপনার তনয়া হরের ঊরুরূপ আসন নিরন্তর প্রাপ্ত হইবেন,–অন্য কোন স্থানে এরূপ উৎকৃষ্ট আসন পাইবে না। ৮৪
নারদ, শৈলরাজকে এইরূপ উদার-বাক্য বলিয়া তৎক্ষণাৎ দেবযানে ত্রিদশ ভবনে গমন করিলেন। গিরিপতিও চিন্তা, হর্ষ ও আমোদযুক্ত হইয়া নিজ মন্দিরে গমন করিলেন। ৮৫
একচত্বারিংশ অধ্যায় সমাপ্ত। ৪১