০৩.
কে বলবে যে মাহফুজ নামের মানুষটা কিছুক্ষণ আগেও জ্বরে অচেতনের মত হয়েছিল। তার মাথায় খুব কম করে হলেও দশ কলসি পানি চিত্রা নিজে ঢেলেছে। জ্বরের ঘোরে মানুষটা উল্টাপাল্টা কথা বলা শুরু করেছিল। চোখ হয়েছিল পাকা টমেটোর মত লাল।
এখন কি সুন্দর স্বাভাবিক। মাঝির কাছ থেকে নিয়ে পান চিবাচ্ছে। তার পান চাবানো দেখে মনে হচ্ছে খুব মজার পান। মানুষটার চোখের রঙও এখন প্রায় স্বাভাবিক। একটু লালচে আভা আছে। সে থাকাও না থাকার মত। চিত্রা বলল, আপনার শরীর এখন ভাল?
মাহফুজ পানের পিক ফেলতে ফেলতে বলল, ভাল। মাঝে-মধ্যে আমার ভালুক-জ্বর হয়। এই দুই ঘণ্টার জন্যে সব আউলা হয়ে যায়। তারপর সব ঠিকঠাক। সব ফিটফাট।
বলতে বলতে মাহফুজ হাসল। চিত্রা মানুষটার হাসি দেখে মুগ্ধ। এই প্রথম সে হাসল। তার সঙ্গে দেখা হবার পর থেকে চিত্রা তার মুখে হাসি দেখে নি। চিত্রা বলল, আমি আপনার অবস্থা দেখে ভয় পেয়েছিলাম।
তুমি প্রথম দেখছ এই জন্যে ভয় পেয়েছ। কয়েকবার দেখলে ভয় পেতে না।
ডাক্তার দেখিয়েছেন?
আরে দূর, কিসের ডাক্তার। সামান্য জ্বর-জ্বারিতে ডাক্তারের কাছে গেলে রোগ লাই পেয়ে যায়। আরো শক্ত করে চেপে ধরে। অসুখ-বিসুখকে কখনো লাই দিতে নাই। অসুখ-বিসুখ পায়ের নিচে চেপে রাখতে হয়। চল রওয়ানা দেই।
চলুন।
মাহফুজ ব্যাগ হাতে নিল। বাচ্চা একটা ছেলে জোগাড় হয়েছে। তার মাথায় স্যুটকেস। চিত্রা বলল, অনেক দূর হাঁটতে হবে?
আধঘন্টার পথ। আমি অবশ্যি দ্রুত হাঁটি। আমার হিসাবে দুমাইল। দুমাইল হাঁটতে পারবে না?
পারব। এদিকেও মনে হয় ঝড় হয়েছে।
হুঁ হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে রাস্তা কাদা তুমি এক কাজ কর স্যান্ডেল খুলে খালি পায়ে হাঁট। পারবে না?
চিত্রা অবাক হয়ে বলল, পারব না কেন?
গ্রাম কেমন লাগছে?
ভাল।
অল্প ভাল না বেশি ভাল?
মিডিয়াম ভাল।
অনেকগুলো কারণে চিত্রার খুব ভাল লাগছে। যে প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে পড়েছিল, চিত্রা প্রায় নিশ্চিত ছিল নৌকা ডুবিয়ে সে মারা যাবে। সে রকম কিছু হয় নি। ঝড়ে শুধু মাঝির ছাতাটা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। মাহফুজ নামের অসুস্থ মানুষটার অসুখ সেরে গেছে। সে শুধু যে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছে তা না, চিত্রার সঙ্গে সহজভাবে কথা বলছে। এই সহজ-ভাবটা তার মধ্যে আগে ছিল না। আগে ছিল কেজো ভাব। কাজের জন্যে একজনকে নিয়ে আসা হয়েছে। কাজ শেষ তার প্রয়োজনও শেষ। তার সঙ্গে দ্রভাবে কথা বলার দরকার নেই। গল্প-গুজব করারও দরকার নেই। ভাড়া করা একটা মেয়ের সঙ্গে কিসের গল্প? কিন্তু এখন মনে হয় মানুষটা গল্প করতে চাচ্ছে। তারচেয়ে বড় কথা মানুষটার মুখে হাসি। সে মনে হয় হাসি জমা করে রেখেছিল, বাড়ির কাছাকাছি এসে জমানো হাসি খরচ করছে।
মাহফুজ বলল, রাত অনেক হয়ে গেছে। দশটার উপর বাজে।
চিত্রা বলল, দশটা এমন কোন রাত না।
তোমাদের শহরে না, কিন্তু গ্রামে নিশুতি রাত। রাত আটটার আগেই গ্রামের মানুষরা কুপি নিভিয়ে শুয়ে পড়ে। কেন বলতো?
ঘুম পায় বলে।
তা-না। বেশি রাত পর্যন্ত কুপি জ্বালালে বাড়তি কেরোসিন খরচ। তাছাড়া রাত জেগে করবে কী? করারো কিছু নাই। ইলেকট্রিসিটি চলে এলে দেখবে গ্রামের মানুষও রাত এগারটার আগে ঘুমুতে যাবে না।
গ্রামের মানুষ রাত এগারোটা পর্যন্ত জেগে থাকলে আপনি মনে হয় খুশি হন।
মাহফুজ জবাব না দিয়ে হাঁটতে শুরু করল। তার হাতে টর্চ লাইট। বাচ্চা ছেলেটা স্যুটকেস মাথায় নিয়ে অনেক আগেই চলে গেছে। আলো ফেলে সে এগুচ্ছে। তার পেছনে পেছনে আসছে চিত্রা। চিত্রা মাথায় ঘোমটা দিয়েছে। তার এক হাতে স্যান্ডেল। অন্য হাতে ঘোমটার আঁচল ধরা। মাহফুজ বলল, হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে?
জ্বি-না।
গল্প করতে করতে হাঁটলে পথ টের পাওয়া যায় না।
আপনি গল্প করুন আমি শুনছি।
কাদা দেখে দেখে পা ফেল। টর্চটা কি রাখবে তোমার হাতে?
আপনার হাতেই থাকুক।
বছর দুই পরে এলে দেখবে রাস্তা পাকা। সাইকেল রিক্সায় উঠে বসবে সাঁ করে তোমাকে নিয়ে যাবে।
দুই বছর পরে এলে ইলেকট্রিসিটি পাব। পাকা রাস্তা পাব?
ইলেকট্রিসিটি সামনের বছরই পাবে। কথাবার্তা হয়ে স্যাংসান পর্যন্ত হয়ে গেছে। এখন দরকার সামান্য ধাক্কা।
আপনার কথা বুঝতে পারলাম না। কিসের ধাক্কা?
আমাদের দেশের নিয়ম হল স্যাংসান হবার পরও কিছু হয় না। তখন গুরুত্বপূর্ণ কাউকে ধাক্কা দিতে হয়।
ইলেকট্রিসিটির জন্যে কে ধাক্কা দিবে?
সুলতান সাহেব দিবেন। অ্যাম্বেসেডর মানুষ। ইনার সামান্য একটা কথা দশটা ধাক্কার সমান। মানুষ হিসেবেও অত্যন্ত ভাল। নাক-উচা কোন ব্যাপার উনার মধ্যে নাই।
চিত্রা বলল, যাদের খুবই নাক উচা তারা তাদের নাক-উচা ব্যাপারটা খুব সাবধানে আড়াল করে রাখে। কাউকে বুঝতে দেয় না। যাদের নাক সামান্য উচা তাদেরটাই শুধু বোঝা যায়।
মাহফুজ আশ্চর্য হয়ে বলল, তুমি তো খুব সুন্দর করে কথা বল। তবে সুলতান সাহেব সম্পর্কে তোমার কথা ঠিক না। উনি খুবই সিম্পল মানুষ। খুবই অন্যরকম। লুঙ্গি পরে গ্রামের ভেতর দিয়ে হাঁটেন। একবার কি হয়েছে। শোন, বিষ্ণুর ছোট মেয়েটা কলতলা থেকে বালতি ভর্তি পানি নিয়ে ফিরছে। বাচ্চা মেয়ে কষ্ট হচ্ছে। সুলতান সাহেব দেখতে পেয়ে নিজের হাতে বালতি এগিয়ে দিলেন। একজন অ্যাম্বেসেডর পানির বালতি নিয়ে যাচ্ছেন– ভাবা যায়?
চিত্রা নিঃশব্দে হাসল। কিছু বলল না।
মাহফুজ বলল, তুমি তো তাদের বাড়িতেই থাকবে। তখন নিজেই কাছ থেকে দেখবে।
আমি তাদের বাড়িতে থাকব কেন?
তা ছাড়া থাকবে কোথায়? আমি একা থাকি। আমার বাড়িতে থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না। সুলতান সাহেবের বাড়িটা পাকা দালান। পিছনে পুকুর আছে। সামনে সুন্দর বাগান। বাইরের কোন বিশিষ্ট মেহমান এলে আমরা ঐ বাড়িতে রাখি। বাড়ি তো খালিই পড়ে থাকে। সুলতান সাহেব দুই বছরে তিন বছরে একবার কয়েকদিনের জন্যে আসেন।
চিত্রা বলল, আমাকে ঐ বাড়িতে রাখবেন কেন? আমি তো বিশিষ্ট কেউ না।
বিশিষ্ট না হলেও গ্রামের মেহমান। তবে বছর দুই পরে এলে তোমাকে আর অন্যের বাড়িতে থাকতে হবে না। আমাদের নিজস্ব ক্যুনিটি সেন্টার তৈরি হয়ে যাবে। সেখানে দুটা রুম থাকবে। গেস্ট রুম। গেস্ট এলে থাকবেন। অ্যাটাচড বাথরুম। ফ্যান থাকবে। টিভি থাকবে।
দুবছরের মধ্যে এত কিছু হয়ে যাবে?
অবশ্যই হবে। তুমি দেখ না আমি কী করি।
এত টাকা পাবেন কোথায়?
আমাদের দেশে প্রচুর টাকাওয়ালা মানুষ আছে যারা মানুষের কল্যাণে টাকা খরচ করতে চায়। কিন্তু টাকা বের করে না কারণ তাদের মনে ভয় শেষ পর্যন্ত টাকা কাজে লাগবে না। অন্য কেউ মেরে দেবে। আমার কাজ হচ্ছে ভয় ভাঙিয়ে টাকা বের করা।
চিত্রা খিলখিল করে হাসল। মাহফুজ বিরক্ত গলায় বলর, হাস কেন?
আপনার অদ্ভুত অদ্ভুত কথা শুনে হাসি লাগছে।
কোনটা অদ্ভুত কথা? দুই বছর পরে আমি গ্রামের চেহারা বদলে ফেলব, এটা?
হ্যাঁ এটা। আপনি কিছুই করতে পারবেন না।
মাহফুজ হতভম্ব হয়ে বলল, আমি কিছুই করতে পারব না?
চিত্রা বলল, না। দুই বছর পর আমি যদি আসি তাহলেও দেখব রাস্তায় এমনই কাদা আছে, ইলেকট্রিসিটি আসে নি। কিছুই বদলায় নি। আপনিও বদলান নি। তখনো আপনি আমাকে বলবেন দুবছর পর এলে আমি কী কী দেখব। এই সব হাবিজাবি। আপনিও বদলাবেন না। আপনিও হাবিজাবি কথা বলতে থাকবেন।
তোমার ধারণা আমি এতক্ষণ হাবিজাবি কথা বলেছি?
হ্যাঁ।
মাহফুজ চুপ করে গেল। সে এখন আগের চেয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলছে। তার ভাব দেখে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে সে পেছনের ঘোমটা দেয়া মানুষটাকে অন্ধকারে ফেলে রেখে চলে যেতে চাইছে। চিত্রা বলল, আপনি কি আমার কথায় রাগ করেছেন?
মাহফুজ গম্ভীর গলায় বলল, না। যার মনে যা আসে সে বলবে। রাগ করা-করির কী আছে?
রাগ করবেন না। এরকম কথা আমি বলব না। তবে দুবছর পরে আমি সত্যি সত্যি আসব।
মাহফুজ কিছু বলল না। চিত্রা বলল, আপনি কি আমার সঙ্গে আর কথাই বলবেন না। কথা না বললে এতো লম্বা পথ পার হব কি করে? আমি এখনই টায়ার্ড হয়ে পড়েছি। আপনি সুন্দর একটা গল্প বলুন শুনতে শুনতে যাই।
আমি গল্প জানি না।
নাটকটা সম্পর্কে বলুন।
নাটক সম্পর্কে কি বলব, তুমি তো জানই– টিপু সুলতান।
অভিনয় কারা করবেন? মেইন রোল কে করবে?
ভুজঙ্গ বাবু।
চিত্রা বিস্মিত হয়ে বলল, কোন ভুজঙ্গ বাবু? গৌরীপুরের?
মাহফুজ তৃপ্তির নিশ্বাস ফেলে বলল, হ্যাঁ। তাঁকে চেন?
তাকে কেন চিনব না। আমি উনার সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলা করেছি। উনি এখানে এসে নাটক করতে রাজি হয়েছেন?
মাহফুজ পথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে গেল। সিগারেট ধরাতে ধরাতে গম্ভীর গলায় বলল, রাজি হবে না মানে, তুমি ভাব কি আমাকে?
চিত্রা বলল, আপনি সিগারেট শেষ করুন। আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বিশ্রাম করব।
বেশি টায়ার্ড?
হু।
আমরা কিন্তু এসে পড়েছি। অল্প একটু আলো দেখতে পাচ্ছ না? ঐ আলো পার হলে আর মাত্র দশ গজ।
আপনি কি গজফিতা দিয়ে মেপেছেন?
অনুমানে বলছি।
গ্রামের অনুমান খুব উল্টাপাল্টা হয়। যেটাকে আপনি দশ গজ বলছেন দেখা যাবে সেটা আসলে একশ গজ।
কি বলছ তুমি, একশ গজ হবে কেন?
অবশ্যই একশ গজ। আপনার সঙ্গে এক শ টাকা বাজি।
এটা নিয়ে বাজি ধরতে হবে কেন?
বাজি আপনাকে ধরতেই হবে।
মাহফুজ ধাঁধায় পড়ে গেল। মেয়েটা কি ঝগড়া বাধাবার চেষ্টা করছে? নাকি বাচ্চা মেয়েদের মত ফাজলামি করছে?
মাহফুজ সিগারেট শেষ করে বলল, চল আস্তে আস্তে যাওয়া যাক।
চিত্রা বলল, আমার ডান পায়ের গোড়ালিতে কাঁটা ফুটেছে। কাঁটা বের না করে আমি যেতে পারব না।
এখন কাঁটা বের করবে কিভাবে?
আপনি টর্চ লাইট ধরুন। আমার সঙ্গে সেফটিপিন আছে।
সেফটিপিন দিয়ে এখন খুঁচাখুঁচি করবে?
এত দেখি ভাল যন্ত্রণা হল।
আপনি আমার উপর রাগ করছেন কেন? কাটাতো আমি ইচ্ছা করে ফুটাই নি।
না, রাগ করি নি। আসলে তোমাকে খালি পায়ে হাঁটতে বলা ঠিক হয়নি। ভুলটা আমার।
আপনার তো বটেই, আপনি নিজে জুতা মচমচ করে যাচ্ছেন আর আমাকে বলছেন খালি পায়ে যেতে।
চিত্রা কাটা ওঠানোর নানান চেষ্টা করল। কাঁটা বের করা গেল না। মাহফুজ বলল, বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে কষ্ট করে যেতে পারবে না?
পারব।
মাহফুজ ইতঃস্তত করে বলল, একটা কাজ কর। আমার হাত ধরে হাঁট।
চিত্রা বিরক্ত মুখে বলল আপনার হাত ধরে হাঁটব কেন? এটা কেমন কথা?
বিপদের সময় এত কিছু দেখলে চলে না।
এটা এমন কোন বিপদ না। চলুন হাঁটি।
হাঁটি বললেও চিত্রা ঠিকমত পা ফেলতে পারছে না। সেফটিপিন দিয়ে খোঁচাখুঁচিতে পায়ের অবস্থা কাহিল।
মাহফুজ কড়া গলায় বলল, তুমি আমার হাত ধরে হাঁট। কোন সমস্যা নাই। চিত্রা আপত্তি করল না।
তারা গ্রামে পৌঁছল রাত এগারটার পর। মাহফুজ চিত্রাকে সরাসরি সুলতান সাহেবের বাড়িতে নিয়ে গেল। সুলতান সাহেব এবং তাঁর মেয়ে দুজন ঘুমিয়ে পড়েছে। তাতে সমস্যা কিছু নেই। বাড়ির কেয়ারটেকার রমিজ একতলার ঘর খুলে দিল। ঘরে বিছানা পাতা আছে। ঘরের সঙ্গের বাথরুমে বালতি ভর্তি পানি। মাহফুজ বলল, যা লাগে রমিজকে বলবে সে এনে দিবে। রমিজ আমার নিজের লোক। টিপু সুলতান নাটকে তার পাট আছে।
চিত্রা বলল, কিছুই লাগবে না। আমি এক্ষুণি ঝাঁপ দিয়ে বিছানায় পড়ব।
মাহফুজ বলল, আরাম করে ঘুমাও। আমি সকালে এসে খোঁজ নিব। আমি রমিজকে বলে যাচ্ছি সে সকালে তোমাকে চা দিয়ে যাবে।
চিত্রা ঘাড় কাত করে বলল, আচ্ছা।
মাহফুজ বলল, এখন পায়ের কাঁটা তোলার দরকার নাই। আলো কম। এই আলোতে কাটা দেখা যাবে না। সকালে আমি এসে কাটা তুলে দিয়ে যাব।
আপনি কাঁটা তুলবেন?
হ্যাঁ। কোন অসুবিধা আছে?
না, কোন অসুবিধা নেই।
আমি তাহলেই যাই?
আচ্ছা।
হাত মুখ ধুয়ে তারপর ঘুমুতেও যেও। সারা পা ভর্তি কাদা।
চিত্রা হাসতে হাসতে বলল, আপনার কি ধারণা আমি কাদা পা নিয়ে বিছানায় উঠে পড়ব? যে যা বলে আপনি তাই বিশ্বাস করেন? আর আপনি যে আমার বাজির টাকা না দিয়ে চলে যাচ্ছেন এটা কেমন কথা?
কিসের বাজির টাকা?
আপনি বলেছেন বাতি থেকে দশ গজ। আমি মেপেছি। তিন কদমে হয় এক গজ। আলো থেকে এই বাড়ি দুইশ দশ কদম। দুইশ দশ ভাগ তিন কত হল? সত্তুর না? অর্থাৎ সত্ত্বর গজ। কাজেই আপনি বাজিতে হেরেছেন।
মাহফুজ পকেট থেকে একশ টাকার একটা নোট বের করল। চিত্রা খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই সেই নোটটা হতে নিল।