ট্রাভেল এজেন্টের কাছ থেকে বিকেলে সেইন্ট লুইস যাবার টিকেট কেটে আকাশ ওর এ্যাপার্টমেন্টে এসে দেখলো বাইরের বারান্দায় বসে আছে সামান্থা। আকাশের এই এ্যাপার্টমেন্টের, দুটো অতিরিক্ত চাবি আছে। একটা থাকে ওর মায়ের কাছে, আরেকটা ওর সবচেয়ে কাছের বন্ধু সামান্থার কাছে।
সামান্থাকে দেখে অবাক হলো আকাশ। গত সপ্তায় ও কানাডা গিয়েছে এক মাসের জন্য। কাল দুপুরে মন্ট্রিয়ল থেকে অফিসে ফোন করেছিলো। আজ যে আসবে ফোনে কাল কিছু বলেও নি। আকাশ বললো, অবাক করলে সামান্থা! কখন এসেছে?
আকাশকে দেখে হাসিমুখে উঠে দাঁড়ালো সামান্থা আজ না তোমার ছুটির দিন! একঘন্টা ধরে বসে আছি। ভর দুপুর নিশ্চয় ডেট করতে বেরোও নি?
আমার বস জাদরেল বুড়ো হেনরী পেপার্সকে যদি মনে করো ডেট করার উপযুক্ত পাত্র তাহলে বলতে পারি তোমার অনুমান সঠিক।
কথা বলতে বলতে আকাশ রিফ্রিজারেটর খুলে দুগ্লাস অরেঞ্জ জুস ঢাললো। এক গ্লাস সামান্থাকে দিয়ে নিজে আরেকটা নিয়ে হাসি মুখে বারান্দায় এসে বসলো।
আকাশের কথা শুনে গলা খুলে হাসলো সামান্থা। ববছাটা একগোছা সোনালী চুল ওর মুখে এসে পড়লো। আকাশ আগেও ওকে বলেছে, আবার বললো, তোমার হাসি পরিদের মতো নিষ্পাপ।
পরিরা কি হাসে? কই দেখি নি তো কোনো দিন! হাসতে হাসতে বললো সামান্থা।
পরি যেন তোমার সামনের বাড়িতে থাকে, জানালা খুললেই রোজ দেখা পাবে।
তাহলে কোথায় থাকে পরি?
পরি থাকে স্বপ্নের ভেতর। আমার চোখে তাকিয়ে দেখো। পরি দেখতে পাবে।
তোমার চোখে পরি দেখা গেলে আমার চোখে নিশ্চয় তুমি দেবদূত দেখতে পাবে!
কি জানি! ভালো করে দেখলে হয়তো শিং খুর আর লেজওয়ালা শয়তানটার দেখাও পেয়ে যেতে পারি!
কি নোংরা কথা বলছো আকাশ! তুমি শয়তান হতে যাবে কেন?
তুমি শয়তান বিশ্বাস করো?
বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনোটাই করি না। শয়তানের ধারণাটা নিশ্চয় ভালো কিছু নয়।
এই মুহূর্তে তোমাকে একটা অবাক করা খবর দিতে পারি। পরশু আমি শয়তানের দেশে যাচ্ছি।
চোখ গোল করে সামান্থা বললো, শয়তানের দেশ মানে? রুমানিয়াকে কেউ কেউ শয়তানের দেশ বলে।
সামান্থা একটু গম্ভীর হয়ে বললো, অনেক অশিক্ষিত আমেরিকান কমিউনিস্ট দেশগুলোকে শয়তানের দেশ বলে থাকে। তুমিও ওদের মতো ভাবো নাকি?
আরে না! তুমি এতো সিরিয়াস হচ্ছো কেন? ড্রাকুলার নাম শুনেছো?
সামান্থা অবাক হয়ে বললো, ওটা তো হরর মুভি।
হ্যাঁ, ব্রাম স্টোকারের উপন্যাস থেকে ছবি হয়েছে। কাউন্ট ড্রাকুলার বাড়ি হচ্ছে রুমানিয়ার ট্রানসিলভানিয়ায়। ওরই জন্যে রুমানিয়াকে শয়তান ড্রাকুলার দেশ বলে।
ভুতুড়ে উপন্যাস সত্যি হতে যাবে কেন?
কাউন্ট ড্রাকুলা নামটি মিথ্যে নয়। রুমানিয়ায় তার দুর্গ এখনো আছে। গতবার সময় পাই নি। এবার দেখতে যাবো।
ড্রাকুলা তো রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার ছিলো। তুমি কি ভ্যাম্পায়ারদের নিয়ে কিছু লিখছো? জানতে চাইলে সামন্থা।
ক্ষেপেছো তুমি। ভ্যাম্পায়ার নিয়ে লিখতে যাবো কোন আহ্লাদে! আমাকে রিপোর্ট করতে হবে রুমানিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।
আরে! আসল কথাই ভুলিয়ে দিয়েছো! আমি হঠাৎ কেন এসেছি জিজ্ঞেস করলে না?
এসেছো নিশ্চয় দেখা করতে। রুমানিয়া যাচ্ছি অনেক দিনের জন্য। কবে ফিরবো ঠিক নেই, আদৌ ফিরি কিনা তারও কোনে নিশ্চয়তা নেই।
জানি রুমানিয়ার মেয়েরা খুব সুন্দরী হয়। তবে ফিরে তোমাকে আসতেই হবে যদি চসেস্কুর জেলে বসে পচতে না চাও। আমি কেন এসেছি বলতে পারলে না তো? এক মিনিট। এই বলে সামান্থা উঠে ভেতরের ঘরে গেলো। নানা রঙের এক গোছা গোলাপ হাতে বেরিয়ে এলো। মৃদু হেসে বললো, মেনি হ্যাপি রিটার্ন অব দ্য ডে!
মুগ্ধ চোখে আকাশ তাকিয়ে রইলো সামান্থার দিকে। আধফোঁটা গোলাপের মতো মিষ্টি মনে হচ্ছিলো ওকে। মুখে মৃদু হাসি। নীল চোখ দুটো যেন ভালবাসার অপার সমুদ্র। ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে সামান্থার কপালে চুমু খেয়ে আকাশ নরম গলায় বললো, অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।
তুমি রুমানিয়া যাচ্ছো–কালও তো আমাকে বললে না! সামান্থার গলায় অভিমানের ছোঁয়া
কি করে বলবো! জানলাম তো মাত্র কিছুক্ষণ আগে!
আজ সন্ধ্যায় কি করছো?
সেইন্ট লুইস যাচ্ছি। বোনের বাচ্চাটাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে।
তুমি খুব বাচ্চা ভালবাসো, তাই না!
খুব! আমার অন্তত এক ডজন বাচ্চা থাকবে!
কী সর্বনাশ! আঁতকে উঠলো সামান্থা–কোনো আমেরিকান মেয়ে তোমাকে বিয়ে করতে চইবে না।
আমেরিকান মেয়ে আমারও পছন্দ নয়। তবে শুনেছি গ্রীকরা নাকি স্বভাবে বাঙালিদের মতো।
সামান্থার জন্য আমেরিকায় হলেও আকাশের বাবা মার মতো ওর বাবা মা এসেছেন গ্রীস থেকে। সামান্থারা আগে ছিলো নিউইয়র্কে, এখন ওয়াশিংটনের স্থায়ী বাসিন্দা। ওর বাবা স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন কর্মকর্তা। আকাশের কথা শুনে সামান্থা রেগে যাওয়ার ভান করলো–তুমি কি ভেবেছো নিজেকে–আমার কি মাথা খারাপ হয়েছে? বারটা ছেলে-মেয়ে! ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করুন!
আকাশ নিরীহ গলায় বললো, তোমাকে আমি কিছুই বলি নি সামান্থা, তুমি। রাগছো কেন। তোমার কি ধারণা অন্য কোনো গ্রীক মেয়ে আমাকে পছন্দ করে না?
গ্রীক মেয়ে অত সস্তা নয়–তোমাকে পছন্দ করার জন্য যেন সব বসে আছে। অভিমানভরা গলায় বললো সামান্থা।
তুমি কি আমার সঙ্গে বাজি ধরতে চাও! গম্ভীর হওয়ার ভান করলো আকাশ।
রেগে গিয়ে কি যেন বলতে গিয়ে হঠাৎ হেসে ফেললো সামান্থা–বুঝেছি, তুমি মেলিনার কথা বলবে তো? ওই মুটকিটা! কী দারুণ পছন্দ তোমার! ঠিকই বলেছো আকাশ, তোমার বারোটা বাচ্চার মা হতে পারলে ও খুশিই হবে।
মা বাবা তো অন্যভাবেও হওয়া যায়। বাচ্চা তো এ্যাডপ্টও করতে পারি।
সামান্থা ছুটে এসে আকাশের বুকে মুখ লুকিয়ে বললো, তুমি কী পাজী ছেলে! মিছেমিছি ভয় পাইয়ে দাও।
ঠিক সেই মুহূর্তে আকাশের মনে হলো সামান্থা ছাড়া আর কাউকে ও বিয়ে করবে না। মৃদু হেসে বললো, বারটা বাচ্ছা পুষতে হলে তোমার ওয়াশিংটন পোস্টের চাকরিটা হারাতে হবে।
আমি চাকরির পরোয়া করি না। চেয়ারে বসে সামান্থা বললো, আমি ভেবেছিলাম আজ সন্ধ্যায় আমরা রিভার ইন-এ ডিনার করে রাতটা ঘুরে বেড়াবো।
বিব্রত হেসে আকাশ বললো, আমি যে সেইন্ট লুইসের টিকেট কেটে ফেলেছি।
সামান্থা ম্লান হাসলো–তাহলে ঘুরে এসো। ফিরছে কবে?
কাল সকালেই। তুমি কানাডা যাচ্ছো কখন?
কাল বিকেলে।
উৎসাহভরা গলায় আকাশ বললো, তুমিও আমার সঙ্গে সেইন্ট লুইস চলো না?
না, না! ওরা কি ভাববে? তুমি যাচ্ছো যাও। বিব্রত গলায় বললো সামান্থা।
তোমাকে দেখলে ওরা সত্যি খুশি হবে। মাকে তো জানোই ভালো করে।
তোমার মা খুব চমৎকার মানুষ।
তাহলে আমার সঙ্গে যাচ্ছো তুমি?
তুমি যদি চাও……।
নিশ্চয় চাই। উঠে দাঁড়লো আকাশ–চলো, তোমার টিকেটটা এক্ষুণি গিয়ে কেটে ফেলি। তিন ঘন্টা পরেই ফ্লাইট।
রাত আটটার সময় মস্ত এক ফুলের ঝুড়ি হাতে আকাশকে দেখে সেইন্ট লুইসের সবাই যত না অবাক হল, খুশি হলো তার চেয়ে অনেক বেশি। স্বাতী আর স্যাম এসে জড়িয়ে ধরলো ওকে। স্যাম বললো, অনেক দিন এমন চমৎকার সারপ্রাইজ পাই নি।
মা সামান্থাকে বুকে জড়িয়ে কপালে চুমু খেয়ে বললেন, তুমি এসেছো খুব খুশি হয়েছি। আমাদের এভাবে অবাক করে দেয়ার বুদ্ধি পাজিটাকে কে দিয়েছে, তুমি?
আকাশ হেসে বললো, কাকে তুমি কী বলছো মাম! ও তো আসতেই চাইছিলো না–তোমরা কে কী ভাববে। আমাকে দেখে যদি খুশি হয়ে থাকো তাহলে তার জন্য আমার বস হেনরী পেপার্সকে ধন্যবাদ দিতে পারো। আজ দুপুরে হঠাৎ করে আটচল্লিশ ঘন্টার নোটিসে রুমানিয়া যেতে না বললে এভাবে আসা হতো না।
স্বাতী হেসে বললো, ইচ্ছে করছে বদমেজাজী বুড়োটাকে চুমু খাই।
আকাশ কি যেন বলতে যাচ্ছিলোতক্ষুণি নতুন বাচ্চার ওঁয়াও ওঁয়াও শুনে ছুটে গেলো ভেতরে। মা সামান্থাকে বললেন, রাত নটায় ওর ঘুম ভাঙে।
স্যাম গর্বিত বাবার মতো বললো, ওদের কাছে রাত আর দিন সব সমান মাম।
ঘরের ভেতর থেকে আকাশ চেঁচিয়ে বললো, পিচ্চিটা তাকিয়ে দেখছে মাম। মনে হয় আমাকে চিনতে পেরেছে। আপু ওকে একটু কোলে তুলে দে না।
সবাই শোয়ার ঘরে এলো। জুনিয়ার স্যাম তখন মিট মিট করে তাকাচ্ছে, ক্ষুদে ক্ষুদে দুটো মুঠো করা হাত ছুঁড়ছে। অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়েছিলো আকাশ।
মাকে বললো, এত ছোট একটা জলজ্যান্ত মানুষ বিশ্বাস হতে চায় না।
মা বললেন, তুই ওর চেয়েও ছোট ছিলি বাছা। একুশ দিন তোকে ইনকুবেটরে রাখতে হয়েছিলো।
আকাশ অধৈর্য গলায় স্বাতাঁকে বললো, একটু কোলে দেনা আপু। দেখছিস না কেমন কোলে উঠতে চাইছে।
আকাশের ছেলেমানুষি দেখে সামান্থা আর স্যাম মৃদু হাসছিলো। স্বাতী খুব সাবধানে র্যাপার জড়িয়ে বাচ্চাকে আকাশের কোলে দিলো। আকাশ ওকে এমনভাবে বুকে জড়িয়ে ধরলো যেন পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আর ভঙ্গুর বস্তু ও।
মা বললেন, ওকে এখন স্বাতীর কাছে দে। ওর খাওয়ার সময় হয়েছে। তারাও খেয়ে নে। আমরা একটু আগে খেয়ে উঠেছি।
আকাশ বললো, কি রকম তুলতুলে একটা ময়দার গোল্লা হয়েছে দেখেছো মাম, ইচ্ছে করছে এটাকেই খেয়ে ফেলি!
আঁতকে ওঠার ভান করে স্যাম বললো, হায় ঈশ্বর, এ কোন নরখাদকের পাল্লায় পড়লাম।
সামান্থা শব্দ করে হেসে উঠলো। আকাশ রহস্য গলায় বললো, আমার পছন্দ খাঁটি সাদা। দোআঁশলা মানুষের চেয়ে সাদারা বেশি উপাদেয়।
স্যাম মুখ টিপে হাসলো–ওটা সামান্থাকে দেখেই বুঝেছি। তারপর কৃত্রিম দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামান্থাকে বললো, লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম ঠিক মতো দিচ্ছো
তো? দেখতেই পাচ্ছো, আয়ুর ফিতে বেশি লম্বা নয় তোমার।
সামান্থা হেসে বললো, তোমাকে যখন এতদিন খায় নি, আশা করি আমার আয়ুর ফিতে যতটা ছোট তুমি ভাবছো ততটা ছোট নয়।
স্যাম গম্ভীর হওয়ার ভান করে বললো, কার আয়ুর ফিতে কতটা লম্বা ঈশ্বর ছাড়া কেউ কি বলতে পারে!
মা হেসে বললেন, আয়ুর ফিতে মাপা বন্ধ রেখে তোমরা কি খেতে আসবে?
খেতে বসে টেবিলে ভাত দেখে আকাশ মাকে বললো, স্যামকে তুমি একেবারে বাঙালি বানিয়ে ছাড়বে দেখছি।
মা লাজুক হেসে বললেন, ও যে আমার হাতের ডাল, ভাত আর বেগুন ভর্তা খেতে পছন্দ করে।
পছন্দ আমিও করি মাম। নইলে কি আর রুমানিয়া যাওয়ার আগে তোমার হাতের রান্না খেতে আসি। কে জানে বুখারেস্টেই যদি পটল তুলি এ জন্মে আর তোমার রান্না কপালে জুটবে না।
আকাশের পাতে স্যামন মাছের দোপেয়াজি তুলে দিতে দিতে মা গম্ভীর হয়ে বললেন, এ আবার কি অলক্ষুণে কথা।
মার সঙ্গে আকাশ বাংলায় কথা বলে। স্যাম বাংলা ভালো বলতে পারে না, বোঝে সবই। আকাশের কথা শুনে হেসে বললো, আসলে ও জানতে চায় ওকে নিয়ে আমরা কতটা ভাবি।
দীর্ঘশ্বাস ফেলার ভান করে আকাশ বললো, আমাকে নিয়ে কে ভাবতে যাবে বলো? তোমরাও না, মামও না। সবাই তো স্যাম জুনিয়রকে নিয়েই মেতে আছে।
হাসি চেপে স্যাম বললো, যথেষ্ট ধাড়ি হয়েছে। তোমাকে নিয়ে ভাববার জন্য এখন অন্য কেউ আছে।
স্যামকে ওর দিকে তাকিয়ে চোখ টিপতে দেখে সামান্থা লজ্জা পেলো। আকাশদের বাড়ির আন্তরিক ঘরোয়া পরিবেশ ওর খুব ভালো লাগলো। গভীর মমতাভরা চোখে ও আকাশকে দেখলো। আকাশ মৃদু হাসলো।
একদিন পর আকাশের প্লেন যখন ওয়াশিংটনের মাটি ছাড়লো তখন ও অনুভব করলো ওর জন্য সবার ভালবাসা বুকের ভেতরটা ভরিয়ে রেখেছে। কোথাও এতটুকু শূন্যতা নেই। সামান্থা কাল মন্ট্রিয়ল চলে গেছে। যাবার আগে বার বার বলে গেছে বুখারেষ্টে গিয়েই যেন ও ফোন করে।
প্লেন ছাড়ার একটু আগে এয়ারপোর্টে ওকে অবাক করে দিয়ে হেনরী পেপার্স এসে হাজির। আশে পাশের লোকজনদের চমকে দিয়ে বাজখাই গলায় আকাশকে বললেন, কিছুক্ষণ আগে ডিক লম্বা এক টেলেক্স পাঠিয়েছে। ভাবলাম তোমার কাজে লাগতে পারে। এই নাও।
আকাশের হাতে একতাড়া কাগজ গুঁজে দিয়ে হেনরী পেপার্স বললেন, তোমার প্লেন ছাড়ার সময় হয়ে গেছে। বিদায় নেয়ার মুহূর্তে তার কি হল কে জানে। আকাশের সঙ্গে হাত মেলাতে গিয়ে তিনি ওকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। ভেজা গলায় বললেন, সাবধানে থেকো বাছা। ববের মতো তোমাকে আমি হারাতে চাই না।
আকাশের চমক ভাঙার আগেই তিনি এয়ারপোর্ট থেকে চলে গেলেন। প্লেনে উঠে আকাশ ডিক পেনের টেলেক্স দেখেছে। এমন কোনো নতুন খবর ওতে ছিলো না, যার জন্য হেনরী পেপার্সকে এয়ারপোর্ট আসতে হবে।