ষট্ত্রিংশ পরিচ্ছেদ
মেয়েরা যা ভালোবাসে
স্মরণাতীত কাল থেকেই ফুলকে প্রেমের ভাষা বলে ভাবা হয়ে আসছে। এতে খরচ বেশি হয় না, বিশেষ করে যে ঋতুতে যে ফুল মেলে। অর্থাৎ মরসুমী ফুল। কজন মানুষই বা বাড়িতে ফুল কিনে নিয়ে যান। এতে ভাবা যেতে পারে ফুলের বুঝি ঢের দাম।
তাহলে আজই আপনার স্ত্রীর জন্য এক গুচ্ছ গোলাপ কিনে নিয়ে যান না। পরীক্ষাটা একবার করেই দেখুন না কি হয়।
ব্রডওয়েতে ব্যস্ত থাকার সময় জর্জ এম. কোবান সারাদিনে তাঁর মা’কে দুবার ফোন করতে ভুলতেন না। এটা তিনি মা’র মৃত্যু পর্যন্ত করে যান। আপনারা কি ভাবেন প্রতিবারেই আশ্চর্য সব খবর দিতেন তিনি? মোটেই না। এ রকম করা একটাই মাত্র উদ্দেশ্য–যাকে ফোন করা হয় তাকে জানানো তিনি কতটা ভালবাসেন। তাকে কত খুশী করায় আপনি আগ্রহী। তার সুখ বা আনন্দে আপনার ব্যস্ততা কতখানিই।
মেয়েরা তাদের জন্মদিন বা অন্য সব উৎসবের ব্যাপারে দারুণ গুরুত্ব দেয়, কেন যে তারা তা করে সেটা একটা রমণীসুলভ রহস্যই। গড়পড়তা পুরুষরা কিন্তু কোন তারিখ মনে রাখার ব্যাপারে উদাসীন হয়। এটা কিন্তু মনে রাখা নেহাতই জরুরি কাজ, মনে রাখা উচিত।
শিকাগোর একজন জজ, যোশেফ মাবাথ যিনি ৪০,০০০ বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার নিষ্পত্তি করে ২,০০০ স্বামী স্ত্রীকে আবার মিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন : ‘বিবাহিত জীবন মূল গণ্ডগোল অনেক ক্ষেত্রেই সামান্য ব্যাপার থেকে উৎপত্তি হয়। স্বামী যখন অফিসে কাজে রওয়ানা হন তখন তাকে বিদায় জানানোর মত কাজ স্ত্রীরা করলে অনেক বিবাহ বিচ্ছেদই আর হয় না।’
এলিজাবেথ ব্যারেট ব্রাউনিংয়ের সঙ্গে রাবর্ট ব্রাউনিংয়ের বিবাহিত জীবন বোধ হয় সবচেয়ে স্বর্গীয় মহিমায় ভাস্বর ছিল। রবার্ট ব্রাউনিং প্রায় সব সময়েই স্ত্রীর প্রতি সামান্য ব্যাপারেই মনোযোগী হতে কখনও ভুল করতেন না। তিনি তাঁর পঙ্গু স্ত্রীকে এমনই সহৃদয়ভাবে যত্ন করতেন যে, এলিজাবেথ তাঁর বোনকে লেখেন : আমার মনে হচ্ছে আমি কেন সত্যিকার পরী হতে পারবো না।’
জীবনের ক্ষেত্রে বহু পুরুষই এই সব ছোটখাটো প্রাত্যহিক ব্যাপারে খেয়াল রাখেন না। বিবাহিত জীবনের শেষে এই রকমই ঘটে-ছোটখাটো সব ব্যাপার। যে সব দম্পতি এটা খেয়াল রাখেন না তাদের ধিক্কার দেয়া দরকার।
অতএব পারিবারিক জীবনে সুখী হতে গেলে ৫নং নিয়ম হল :
‘ছোটখাটো ব্যাপারেও নজর দিন।’