৩৬. আজ শাহানা এসেছে

আজ শাহানা এসেছে। বিয়ের পর এটা তার তৃতীয় বার আসা। বাড়িটা তার এখন কিছুতেই আগের মতো লাগে না। এটা যেন অচেনা কোনো মানুষের বাড়ি, নিজের বাড়ি নয়। অথচ সব আগের মতোই আছে। শাহানার লাগানো টবের গাছগুলি আগের চেয়েরও সুন্দর হয়েছে। সে এ বাড়িতে নেই, তাতে এদের যেন কিছুই যায়-আসে না। সে যদি এসে দেখত, তার অনুপস্থিতিতে এ বাড়ির সবাই পানি দিতে ভুলে গেছে, গাছগুলি শুকিয়ে মর্যা-মরা হয়েছে, তাহলে তার ভালো লাগত।

সুন্দর সতেজ গোলাপ গাছগুলি দেখে তার রীতিমতো কান্না পাচ্ছে। কত ফুল ফুটেছে। বিরাট বিরাট ফুল। সে প্রতিটি গাছেই হাত দিয়ে স্পর্শ করতে লাগল। গোলাপের দুটি কচি পাতা নিয়ে দুআঙুলে পিষে নাকের সামনে ধরল। ঘাণের চেয়ে তার পাতার ঘ্রাণ ভালো লাগে। টুনি এবং বাবলু কৌতূহল হয়ে দেখছে।

টুনি বলল কী করছ ফুপু?

গাছগুলিকে আদর করছি।

আদর করছ, কেন?

অনেক দিন পরে এসছি তো, তাই। বাবলুসাহেবের কী খবর?

বাবলু জবাব দিল না। পর্দার আড়ালে সরে গেল। তার লজ্জা বড়ো বেশি। তা ছাড়া শাড়ি-গয়নায় এখন শাহানাকে অপরিচিত লাগছে।

টুনি বলল, ফুপু, বাবলুর বাবা এসেছিল।

তাই নাকি?

হুঁ। মা খুব বকা দিয়ে দিয়েছে।

বকা দিয়েছে?

হুঁ। মা এক দিন আবুকেও বকা দিল।

ভাবী মনে হচ্ছে বিকা দেওয়ায় ওস্তাদ হয়ে যাচ্ছে।

হ্যাঁ, হচ্ছে। দাদীকেও বকা দিল, এই জন্যে দাদীর অসুখ হয়ে গেল।

আমি থাকলে হয়তো আমাকেও বিকা দিত। কি, দিত না?

হ্যাঁ, দিত।

টুনি মুগ্ধ হয়ে শাহানাকে দেখছে। তার খুব ভালো লাগছে। এত সুন্দর হয়েছে ফুপুমণি। শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে।

এমন ড্যাবড্যাবি করে কী দেখছিস রে টুনি?

তোমাকে দেখছি। তুমি কত সুন্দর হয়েছ।

নতুন করে আবার হব কিরে বোকা? আমি তো আগে থেকেই সুন্দর। তাই না?

হুঁ।

আচ্ছা টুনি, আনিস ভাই আর ফুল নিতে আসে না? গোলাপের ম্যাজিক দেখাতে তার ফুল লাগে না?

ম্যাজিক দেখায় না তো।

সে কি! কী করে এখন?

মাস্টারি করে।

বলিস কি?

শাহানা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। যেন কথাটা সে বিশ্বাস করতে পারছে না। তার চেহারাটা কেমন দুঃখী-দুঃখী হয়ে গেল। সে মৃদু গলায় বলল, চট করে ছাদে গিয়ে দেখে আয় তো, আনিস ভাই আছে কি না। আমার কথা কিছু বলবি না, খবরদার। বললে চড় খাবি।

শাহানা মার ঘরে ঢুকল। মনোয়ারা গম্ভীর মুখে শুয়ে আছেন। গলা পর্যন্ত চাদর টানা। শাহানাকে ঢুকতে দেখেও কিছু বললেন না। শাহানা বলল, অসময়ে শুয়ে আছ যে মা? জ্বর নাকি?

মনোয়ার জবাব দিলেন না। মেয়ের মুখের উপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলেন।

আমার উপর রাগ করেছ নাকি মা?

না, রাগ করব কেন?

তাহলে এমন রাগী-রাগী মুখ করে রেখেছ কেন?

বিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়ের উপর রাগ করব কোন সাহসে?

তার মানে?

পরের বাড়ির মেয়ে রাতের পর রাত হাসপাতালে থেকে আমার সেবা করে। আর নিজের পেটের মেয়ে একবার খোঁজ নিতেও আসে না।

শাহানা লজ্জিত স্বরে বলল, আমরা চিটাগাং চলে গিয়েছিলাম মা। আমার একেবারেই যাবার ইচ্ছা ছিল না, কিন্তু ও এমন করে বলল!

গিয়েছ, ভালো করেছ। শুধু চিটাগাং কেন, হিল্লি যাও, দিল্লি যাও। কাশ্মীর যাও।

মনোয়ারা পাশ ফিরলেন। শাহানা কিছু সময় বসে রইল তাঁর বিছানায়। মাির রাগ মনে হচ্ছে চট করে ভাঙানো যাবে না। মাকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করতে হবে। কিন্তু কেন জানি তার কাঁদতে ইচ্ছা করছে না। সে যে মাকে দেখতেও যায় নি, তার জন্যে খুব অনুশোচনাও বোধ হচ্ছে না। সে এমন বদলে গেল কেন?

শাহানা মার ঘর থেকে বের হয়ে আবার বারান্দায় তার টবের গাছগুলির কাছে গেল। সেখান থেকে বসার ঘরে। তার কিছু করার নেই।

বসার ঘরে জহির চুপচাপ বসে আছে। হোসেন সাহেব অতি উৎসাহে হোমিওপ্যাথির গল্প করছেন।

বুঝলে জহির, যাকে বলে মিরাকল! কিডনিভর্তি গজগজ করছিল পাথর। সবচে বড়োটার সাইজ পায়রার ডিমের মতো। দাস বাবু রোগীকে দিলেন গ্ৰী হানড্রেড পাওয়ারের কেলিফস। মজার ব্যাপার কী, জান? কিডনির পাথরের জন্যে কিন্তু কেলিফস না।

কাজ হল কেলিফসে?

হবে না মানে! বললাম না মিরাকল। দুটা মাত্র ডোজ। প্রথম ডোজের আটচল্লিশ ঘণ্টা পর সেকেণ্ড ডোজ। অল ক্লিয়ার!

বাহ্ খুব আশ্চর্য!

আশ্চর্য তো বটেই। এক্সরে করে দেখা গেল পাথরের বংশটাও নেই। ভ্যানিশ। অল গান।

শাহানা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ বাবার বক্তৃতা শুনল। এমন মজা লাগছে শুনতে। কেমন শিশুর মতো ভঙ্গিতে বাবা কথা বলেন। বিস্মিত হবার কী অসাধারণ ক্ষমতা এই মানুষটির।

হোসেন সাহেব মেয়ের দিকে এক পলক তাকিয়েই ছোট একটা ধমক দিলেন, জহিরকে চা-টা কিছু দে। তোর কোণ্ডজ্ঞান নেই নাকি?

শাহানার কাছে এই ধমক বড়ো মধুর লাগল। ঠিক আগের মতো বাবা তাকে ধমক দিলেন। যেন এখনও তার বিয়ে হয় নি। সে এ বাড়িরই একটি আদুরে মেয়ে, যে কোনো কাজকর্ম শেখে নি। শুধু গল্প শোনে।

আবেগে শাহানার চোখ ভিজে উঠল। সে এগিয়ে গেল রানাঘরের দিকে।

রান্নাঘরে নীলু খুব ব্যস্ত। একটি চুলায় সে ফুলকপির বড়া ভাঁজছে। অন্যটিতে চায়ের পানি

বাবা চা চাচ্ছেন্ন ভাবী।

দিচ্ছি। বড়াগুলি হয়ে যাক।

চা-টা আমি বানাই?

তোমাকে কিছু করতে হবে না। মার সঙ্গে গিয়ে গল্প কর।

তুমি আজ অফিসে যাও নি?

না, আমি দশ দিনের ছুটি নিয়েছি।

কেন?

অনেক রকম ঝামেলার মধ্যে আছি। কবির মামার জন্যে হাসপাতালে খাবার পাঠাতে হয়। এদিকে মার অসুখ। তোমার কিন্তু এক বার কবির মামাকে দেখতে যাওয়া উচিত, শাহানা।

যাব। কাল–পরশুর মধ্যে যাব।

কবির মামা তোমার কথা আর জহিরের কথা জিজ্ঞেস করছিলেন। নাও, একটা বড়া খেয়ে দেখ তো কেমন হয়েছে। সস দিয়ে মাখিয়ে খাও। কী, लालों?

খুব ভালো হয় নি ভাবী। কেমন যেন ঘাসের মতো লাগছে।

নীলুর মুখ কালো হয়ে গেল। সে খুব যত্ন করে বানিয়েছে। শাহানা বলল, ঠাট্টা করছিলাম ভাবী। খুব চমৎকার হয়েছে।

সত্যি বলছ?

হ্যাঁ, সত্যি। এই যে তোমার গা ছুঁয়ে বলছি। ছোট ভাবী কোথায়?

নিউ মার্কেটে গিয়েছে, এসে পড়বে। যাও তো শাহানা, এগুলি দিয়ে আস। আমি চা নিয়ে আসছি।

শাহানা টেতে খাবার সাজাতে-সাজাতে বলল, এ বাড়ির কেউ আমাকে পছন্দ করে না, ভাবী।

নীলু চুপ করে রইল। লক্ষ বার শাহানার মুখে এই কথা তার শুনতে হয়েছে। জবাব দিতে হয়েছে। জবাব শাহানার পছন্দ হয় নি। যে কোনো কারণেই হোক, ব্যাপারটা শাহানার মনে গেঁথে গিয়েছে। এই কাঁটা সহজে তোলা যাবে না।

ভাবী।

শুনছি। বল কী বলবে।

মার অসুখ হয়েছে, তাঁকে হাসপাতালে নিয় গেছে–এই খবর কেউ আমাকে দেয় নি।

সঙ্গে সঙ্গে দেয় নি, কিন্তু দিয়েছে। তৎক্ষণাৎ দেওয়ার উপায় ছিল না। তোমার ভাই এবং রফিক, কেউ বাসায় ছিল না। ওরা ফিরেছে অনেক

ইচ্ছা করলে কিন্তু দেওয়া যেত ভাবী। হাসপাতাল থেকে সহজেই টেলিফোন করতে পারতে। আমার টেলিফোন নাম্বার তোমরা জানি।

ঝামেলার মধ্যে এটা মনে আসে নি।

আমাকে যদি তোমরা পছন্দ করতে, তাহলে ঠিকই মনে আসত।

নীলু হেসে ফলল। শাহানা শুকনো গলায় বলল, ভাইয়া এত বড়ো প্রমোশন পেয়েছে, এই খবরও কিন্তু দাও নি।

দিতে চেয়েছিলাম। তোমার ভাইয়া নিষেধ করল। তার স্বভাব তো তুমি জান। কাউকেই কিছু জানাতে চায় না।

নীলুর কথা শেষ হবার আগেই শাহানা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে গেল। তার রাষ্ট্রতিমতো কান্না পাচ্ছে। মনে হচ্ছে কেন সে এ বাড়িতে এসেছে। কোনো দরকার ছিল না। কেউ তাকে নিয়ে ভাবে না। সে কেন ভাববে? তার এমন কী গরজ? টুনিকে আনিস ভাইয়ের খবর আনতে পাঠিয়েছিল। সেও ফিরে আসে। নি। কেনইবা আসবে? সে তাদের কে? কেউ না।

শাহানা খাবার কিছুই মুখে দিল না। দু চুমুক চা খেয়ে ছাদে গেল। আনিসের ঘর খোলা। সে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হালকা স্বরে বলল, আসব আনিস ভাই?

আনিস নিজের বিস্ময় চাপা দিয়ে হাসিমুখে বলল, আরে কী মুশকিল, এস।

করছেন কী?

তেমন কিছু না। বসা শাহানা।

বসবার সময় নেই। দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে চলে যাব। ম্যাজিক নাকি ছেড়ে দিয়েছেন?

কে বলল?

টুনি। এখন নাকি মাস্টারি করেন?

পাগল হয়েছ। মাস্টারি করব কোথায়? দুটো প্রাইভেট টিউশ্যনি জোগাড় করেছি। সন্ধ্যাবেলা তাই করি। খাদ্য জোগাড় করতে হবে না? ম্যাজিক দিয়ে পেটে ভাত আসছে না। একটু বসনা শাহানা।

শাহানা বসল। আনিস বলল, চা খাবে? চা বানাব?

হুঁ, খেতে পারি। আচ্ছা আনিস ভাই, আপনাকে একটা কার্ড পাঠিয়েছিলাম, পেয়েছিলেন?

পেয়েছি।

এক বার তো জিজ্ঞেস করলেন না, আমার কী অসুখ হয়েছিল।

চোখের সামনে তোমাকে এত সুস্থ দেখছি যে অসুখের কথা আর মনে এল না।

এখন অন্তত জিজ্ঞেস করুন।

কী হয়েছিল?

ঝুধরনের ভ্রমুখ। আমি বোধহয় বেশিদিন বাঁচব না।

কী বলছ তুমি!

সত্যি বলছি। বিশ্বাস করুন। এই খবরটা আর কাউকে বলি নি। শুধু আপনাকে বললাম।

অসুখটা কী?

তা আমি জানি না।

শাহানা তার মুখ খুব করুণ করতে চেষ্টা করল। যেন তার সত্যি-সত্যি খুব খারাপ একটা অসুখ হয়েছে। মৃত্যু অবধারিত। আর মাত্র অল্প ক দিন সে বাঁচবে। পৃথিবীর চমৎকার সব দৃশ্য আগের মতোই থাকবে। বর্ষারাতে বৃষ্টি পড়বে ঝমোঝম করে। চৈত্র মাসে উথালিপাথাল জোছনা হবে। শুধু সে দেখতে পাবে না। ভাবতে-ভাবতে তার চোখে পানি এসে গেল। গাল বেয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে, কিন্তু আনিস সেটা দেখছে না। সে চা বানানোয় ব্যস্ত। অথচ শাহানার খুব ইচ্ছা, আনিস দৃশ্যটা দেখুক।

আনিস না দেখলেও জহির দৃশ্যটি দেখল। সে ছাদে এসেছিল সিগারেট খাবার জন্যে। আনিসের ঘর খোলা দেখে উঁকি দিয়েই চট করে সরে গেল। ছাদের এক কোণায় দাঁড়িয়ে পরপর দুটি সিগারেট শেষ করে নিঃশব্দে নেমে গেল। আনিসের খোলা দরজা দিয়ে তার আরেক বার তাকানোর ইচ্ছা ছিল, কিন্তু তাকাল না। সব ইচ্ছাকে প্রশ্রয় দিতে নেই। সে নিচে নেমে এল।

বসার ঘরে দ্বিতীয় বার ঢুকতে ইচ্ছা করছে না। হোসেন সাহেবের হোমিওপ্যাথির গল্প তাকে কখনো আকর্ষণ করে নি, আজ আরও করছে না। ঘরে ঢুকলেই তিনি আবার শুরু করবেন। হাসি—হাসি মুখে গল্প শুনতে হবে। মাঝে মাঝে প্রশ্ন করতে হবে, যাতে মনে হয় খুব আগ্রহ নিয়েই সে শুনছে।

এই যে জহির, তুমি এখানে?

জ্বি।

হোসেন সাহেবের হাতে মোটা একটা বই। তিনি দ্রুত বইয়ের পাতা ওন্টাতে লাগলেন, তোমাকে খুব ইন্টারেস্টিং একটা কেইস হিস্ট্রি পড়ে শোনাই।

জ্বি আচ্ছা।

বিরক্ত হচ্ছে না তো আবার?

জ্বি-না, বিরক্ত হব কেন?

আসি, ঘরে আস।

তারা ভেতরে গিয়ে বসল। জহির প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগল মুখ হাসি-হাসি রাখতে। হোসেন সাহেব কী বলছেন, তা শুনতে। কিন্তু মন বসছে না। হোসেন সাহেব চোখ বড়ো-বড়ো করে বলছেন, বিমলা নামের একট মেয়ের কেইস হিস্ট্রি। বয়স একুশ, বিবাহিতা, গাত্রবৰ্ণ গৌর, একহারা গড়ন, মৃদুভাষী, ভোগী স্বভাব, কিছুটা অলস। পয়েন্টগুলি মন দিয়ে শুনছ তো? প্রতিটি পয়েন্ট কিন্তু ইম্পটেন্ট। ডায়াগনেসিস এই পয়েন্টগুলির উপর হবে।

আমি মন দিয়েই শুনছি।

আরেক কাপ চা খেয়ে শুরু করা যাক। কী বল তুমি?

না, থাক।

থাকবে কেন? খাও আরেক কাপ। আমি বৌমাকে বলে আসছি। তোমাকে পেয়ে ভালোই হল। কারো সঙ্গে ডিসকাস করতে পারি না। কেউ উৎসাহ দেখায় না। তোমার ভালো লাগছে না। শুনতে?

জ্বি, লাগছে।

লাগতেই হবে। গল্প-উপন্যাসের চেয়ে এগুলি অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং।

হোসেন সাহেব চায়ের কথা বলতে গেলেন।

 

জহিরদের রাতে এ বাড়িতে খাওয়ার কথা ছিল না। নীলুর পীড়াপীড়িতে খেয়ে যেতে হল। অল্প সময়েই ভালো আয়োজন হয়েছে। রফিক নিউ মাকেট থেকে বিশাল সাইজের কৈ মাছ নিয়ে এসেছে। মটরপোলাও, কৈ মাছ ভাজা এবং ভূনা গোশত। খেতে বসে শাহানা বলল, আনিস ভাইকে ডেকে নিয়ে এলে কেমন হয়? বেচারা বোধহয় আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খাবে।

নীলু তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একবার তাকাল শাহানার দিকে। শাহানা সেই দৃষ্টি; অর্থ বুঝল না। সে হাসিমুখে বলল, ভাবী, আনিস ভাইকে আমি ডেকে নিয়ে আসি? তোমাদের খাবারে কম পড়বে না তো আবার?

নীলু কিছু বলার আগেই জহির বলল, কম পড়বে কেন? তোমরা খাওয়া শুরু কর, আমি ডেকে নিয়ে আসছি।

শাহানা বলল, তোমার যেতে হবে না, আমি যাচ্ছি। যাব আর আসব।

শাহানা বের হয়ে গেল। জহির তাকিয়ে আছে নীলুর দিকে। নীলু কি তা বুঝতে পারছে? সে এক বারও জহিরের দিকে তাকাচ্ছে না। হোসেন সাহেব বললেন, হাত গুটিয়ে বসে আছ কেন, খাওয়া শুরু কর।

জহির বলল, আনিস সাহেব এলেই শুরু করব।

আনিসকে পাওয়া গেল না। সে প্রাইভেট টুৰ্যশানিতে গিয়েছে। শাহানাকে দেখে মনে হল, সে খুব মন খারাপ করেছে। তার মুখ শুকনো। চোখ দুটি छ्ग्रंथ।

হোসেন সাহেব বললেন, অপূর্ব রান্না হয়েছে বৌমা, অপূর্ব! কৈ মাছ কি আরেকটা নেওয়া যাবে?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *