পঞ্চত্রিংশ অধ্যায়
মন্ত্রঃ– অপেতো যন্তু পণয়োহসুম্না দেবপীয়বঃ অস্য লোকঃ সুতাবতঃ। দ্যুভিরহোভিরজুভি বক্তং যমমা দদাত্বসানমস্মৈ৷১। সবিতা তে শরীরেভ্যঃ পৃথিব্যাং লোকমিচ্ছতু। তস্মৈ যুজ্যন্তামুষিয়াঃ৷৷২৷৷ বায়ুঃ পুনাতু সবিতা পুনাত্বগ্নেভ্রাজসা সূর্যস্য বচসা। বি মুচন্তামুষিয়াঃ।৩। অশ্বখে বো নিষদনং পর্ণে বো বসতিস্তৃতা। গোভাজ ইৎকিলাসথ যৎসনবথ পুরুষ৷৪৷ সবিতা তে শরীরাণি মাতুপুপস্থ আবপতু। তস্মৈ পৃথিবি শং ভব।৫৷৷ প্রজাপতৌ ত্বা দেবতায়ামুপোদকে লোকে নি দধাম্যসৌ। অপ নঃ শশাশু চদঘ৷৷৬৷ পরং মৃত্যো অনু পরেহি পন্থং যন্তে অন্য ইতরো দেবযানাৎ। চক্ষুষ্মতে শৃথতে তে ব্রবীমি মা নঃ প্রজাং রীরিষ মোত বীরা৷৷৭৷ শং বাতঃ শং হি তে ঘৃণিঃ শং তে ভবত্ত্বিষ্টকাঃ। শং তে ভবগ্নয়ঃ পার্থিবাসো মা ত্বাভি শূশুচন্৷৮। কল্পাং তে দিশভ্যমাপঃ শিবতমাস্তুভ্যং ভবন্তু সিন্ধবঃ। অন্তরিক্ষং শিবং তুভ্যং কল্পন্তাং তে। দিশঃ সর্বাঃ।৯৷৷ অশ্মতী রীয়তে সং রভমুত্তিষ্ঠত প্র তরতা সখায়ঃ। অত্রা জহীমোহশিবা যে অসঞ্ছিন্বয়মুত্তরেমাভি বাজা৷৷১০৷ অপাঘমপ কিষিমপ কৃত্যামপো রপঃ। অপামার্গ ত্বমম্মদপ দুঃখপ্ল্যং সুব৷১১৷ সুমিত্রিয়া ন আপ ওষধয়ঃ সন্তু দুর্মিত্রিয়াস্তস্মৈ সন্তু যোহপ্যান্বেষ্টি যং চ বয়ং দ্বিমঃ।।১২। অনাহমম্বারভামহে সৌরভেয়ং স্বস্তয়ে। স ন ইন্দ্র ইব দেবেভ্যো বহ্নিঃ সন্তারণো ভব৷১৩৷ উদ্বয়ং তমসম্পরি স্বঃ পশ্যন্ত উত্তর দেবং দেবত্রা সূর্যমগন্ম জ্যোতিরুত্তমম্।১৪৷ ইমং– জীবেভ্যঃ পরিধিং দধামি মৈষাং নু গাদপরো অর্থমেত। শতং জীবন্তু শরদঃ পুরূচীরন্তমৃত্যুং দধতাং পর্বতেন৷১৫৷ অগ্ন আয়ুংষি পবস আ সুবোর্জমিষং চ নঃ। আরে বাধস্ব দুঞ্ছনা৷৷১৬৷৷ আয়ুষ্মনগ্নে হবিষা বৃধানো ঘৃতপ্রতীকো মৃতযোনিরেধি। ঘৃতং পীত্বা মধু চারু গব্যং পিতেব পুত্রমভি রক্ষতাদিমান্ত স্বাহা।১৭৷৷ পরীমে .. গামনেষত পর্যগ্নিমহৃষত। দেবেক্ৰত শ্ৰবঃ ক ইর্ম আ দধর্ষতি৷৷১৮৷৷ ব্যামগ্নিং প্র হিপোমি দূরং যমরাজ্যং গচ্ছতু রিপ্রবাহঃ। ইহৈবায়মিতবো জাবেদা দেবেলভ্যা হব্যং বহতু প্রজান৷১৯৷৷ বহ বপাং জাত বেদঃ পিতৃভ্যো যত্রৈনান্বেখ নিহিতা পরাকে। মেদসঃ কুল্যা উপ তান্ স্রবন্তু সত্যা এষামাশিষঃ সং নমস্তাং স্বাহা।।২০৷ স্যোনা পৃথিবি নো ভবানৃক্ষরা নিবেশনী। যচ্ছা নঃ সপ্রথাঃ। অপ নঃ শশাশু চদঘ৷৷২১। অস্মাত্ত্বমধি জাহেসি হৃদয়ং জায়তাং পুনঃ। অসৌ স্বর্গায় লোকায় স্বাহা।।২২।।
[কাণ্ড-২২, মন্ত্র-২৮]
.
মন্ত্ৰার্থঃ– ১। [এই স্থান হতে পিতৃবেধ = অন্ত্যেষ্টি সংস্কারের মন্ত্র প্রারম্ভ হচ্ছে] অসুখকরী এবং দেবহিংসক পণি (নামক অনুসরগণ) এই স্থান হতে অপসারিত হয়ে যাক। এইটি সোম অভিষবকারীর স্থান। ঋতুসমূহ, দিবস সমুদায় এবং রশ্মিগুলির দ্বারা প্রকট (বা ঋতুসমূহ ও দিনে-রাত্রে সুখকর) এই স্থান যম মৃতজনকে প্রদান করুক।
২। হে মৃত! তোমার অঙ্গের নিমিত্ত সবিতা এক্ষণে পৃথিবীর অভ্যন্তরে স্থান যাচ্ঞা করছে। তার নিমিত্ত বৃষগুলিকে সংযোজিত করো।
৩। হে পৃথিবী! বায়ু তোমার সেই স্থানকে পবিত্র করুক। সবিতা সে স্থানকে পবিত্র করুক। অগ্নির তেজ এবং সূর্যের দ্যুতিতে সেই স্থান পবিত্র হোক। (সেই ক্ষেত্রে চারিটি বলদকে যুক্ত করে চারিবার হাল চালনা করণীয়)। তারপর বলদগুলিকে হাল হতে মুক্ত করে দেওয়া হোক।
৪। (সেই স্থানে খনন করে মৃতের অস্থিসমূহকে স্থাপনীয়)-হে ওষধিসমূহ! পীপুলে তোমার উপবেশন এবং পলাশ পর্ণে তোমার বসতি। এক্ষণে তুমি পৃথিবীকে প্রাপ্ত হও, যে তুমি পুরুষকে (যজমানকে) সেবিত করে থাকো।
৫। হে মৃত! সবিতা তোমার শরীরকে মাতা পৃথিবীর ক্রোড়ে স্থাপন করুক। হে পৃথিবী! তুমি সেই মৃতের (যজমানের) নিমিত্ত শান্তিদায়িনী হও।
৬। হে অমুক মৃত! জলের নিকটবর্তী স্থানে আমি তোমাকে প্রজাপতি দেবতায় স্থাপন করছি। সেই প্রজাপতি আমাদের পাপকে অত্যন্ত দগ্ধ করুক।
৭। হে মৃত্যু! অন্য কোন দূর মার্গ হতেই তুমি চলে যাও; কারণ তোমার যে মার্গ, সেই দেবান হতে তা অন্য। চক্ষু কর্ণশালিনী তোমাকে আমি বলেছি যে, তুমি আমার সন্তানকে হনন করো না এবং আমাদের বীর পুত্রদের হিংসা করো না।
৮। হে মৃত! বায়ু তোমার নিমিত্ত সুখকর হোক। সূর্য সুখকর হোক এবং এই ইষ্টকা (এবং সকল দিক্) তোমার নিমিত্ত সুখকর হোক। (সমাধিক্ষেত্রে ইষ্টক স্থাপনীয়)। হে মৃত! এই পার্থিব অগ্নিসকল তোমার নিমিত্ত সুখকর হোক। তারা তোমাকে যেন প্রদগ্ধ না করে।
৯। হে মৃত! তোমার নিমিত্ত দিকসমূহ কল্পিতা (যোগ্যা) হোক। তোমার নিমিত্ত জল অত্যন্ত কল্যাণকারক হোক। নদীসমূহ তোমার নিমিত্ত সুখদা হোক। তোমার নিমিত্ত অন্তরিক্ষলোক শুভ হোক। সকল দিক তোমার নিমিত্ত কল্পিতা (উন্মুক্তা) হোক।
১০। হে বন্ধুগণ! এই প্রস্তরময়ী নদী প্রবাহিত হচ্ছে। এক্ষণে সামলাও। প্রস্তুত হয়ে দণ্ডায়মান হও এবং একে উত্তরণ করো (বা পার হও)। এই নদীতে আমরা তাদের ত্যাগ করছি, যারা অশুভ (দুষ্ট রাক্ষস ইত্যাদি) ছিল। তারপর আমরা শুভ ও পথ্যভূত অন্নসমূহ (পিণ্ড বা প্রারব্ধ সংস্কার)-কে পার করছি৷
১১। হে অপামার্গ! অঘ (পাপ), কীর্তিভেদক চিন্তা, অভিচার ক্রিয়া এবং দুষ্ট স্বপ্নত্বকে তুমি আমাদের হতে দূর করো।
১২। জল এবং ওষধিসমূহ আমাদের নিমিত্ত সত্যনিষ্ঠ মিত্রবৎ স্বভাবশালিনী হোক। যারা আমাদের দ্বেষ করে এবং যাদের আমরা দ্বেষ করি, তাদের নিমিত্ত জল ও ওষধিসমূহ শক্তস্বরূপ হোক।
১৩। আমরা বৃষের লাঙ্গলকে ধরে তাকে আলম্ভন করছি। এই বৃষ সুরভীর পুত্র। এ আমাদের কল্যাণ করুক। দেবতাগণের নিমিত্ত ইন্দ্রের ন্যায়, এ আমাদের রক্ষক হোক। হে অগ্নিকের! তুমি হবিঃকে দেবতাগণের নিকট উপস্থাপিত করো (অর্থাৎ পৌঁছিয়ে দাও)।
১৪। অন্ধকারের পারে বিদ্যমান স্বর্গীয় জ্যোতিকে দর্শন করে, দেবগণের মধ্যে একমাত্র দেবতা সূর্য এবং তার উত্তম জ্যোতিকে (ব্রহ্মস্বরূপকে) প্রাপ্ত হয়েছি৷
১৫। (সমাধিক্ষেত্রে ও শ্মশানের মধ্যে একটি প্রস্তর ধারণীয়)–এতে আমি জীবিত মনুষ্যের নিমিত্ত সীমা বা পরিধি স্থাপন করছি। অন্য কোন জীবিত মনুষ্য যেন মৃত্যুভাবকে না প্রাপ্ত হয় (অর্থাৎ মৃত্যুগ্রস্ত না হয়)। তারা সকলে বহুকর্মে ব্যাপৃত শত বর্ষের জীবন লাভ করুক। এই জীবিত জনেরা মৃত্যুকে পর্বতে গোপন করে রাখুক। (অথবা, লোষ্ট্রের দ্বারা আঘাত পূর্বক মৃত্যুকে বিতাড়িত করে, দিক)।
১৬। হে অগ্নি! তুমি আয়ুকে পবিত্র করছ। তুমি আমাদের নিমিত্ত অন্ন ও বর্ষাকে প্রেরিত করো। দুষ্ট কক্করসদৃশ তুচ্ছ দুর্জনগণকে দূরে বাধাপ্রাপ্ত করাও বা দূর করে দাও।
১৭। হবিঃর দ্বারা বৃদ্ধিশীল, ঘৃতে পূর্ণ মুখ-সম্পন্ন এবং ঘৃতে উৎপন্ন, হে অগ্নি! তুমি চিরজীবী হও। পিতা যেমন আপন পুত্রকে রক্ষা করে, সেইভাবে মধুর ও স্বাদিষ্ট গো-ঘৃত পান করে তুমি আমাদের এই পুত্র ইত্যাদিকে রক্ষা করো। এই তোমার নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি৷
১৮। এরা (অর্থাৎ এই জনেরা) গাভীকে আনীত করেছে (অর্থাৎ গোদন করেছে); এরা অগ্নিকে আহুত করেছে (অর্থাৎ হোম করেছে) এবং এরা দেবগণকে হবিঃ সমর্পণ করেছে। এতসব কর্মকারী এই সব (মৃত) জনেরা, যারা শ্মশানে শায়িত হয়ে আছে, কে তাদের চেপে রাখতে বা পরাভব করতে পারে?
১৯। কাঁচা (অপৰ্ক) ভক্ষণশালী (পিতৃমেধী) অগ্নিকে আমি দূর করে দিচ্ছি। পাপবাহী সে শ্মশানভূমিকে প্রাপ্ত হোক। এই যজ্ঞগৃহে এই.তভিন্ন (অর্থাৎ সে ছারা অপর) উৎপন্নলব্ধ অগ্নিদেব আপন অদিকার জ্ঞাত হয়ে দেবগণের নিমিত্ত হবিঃ বহন করুক৷
২০। হে জাতবেদা অগ্নি! পিতৃগণের নিমিত্ত তুমি বপা (মেদ) বহন করো–দূরে যেখানে তুমি এঁদের নিহিত হওয়া জ্ঞাত আছ। সেই পিতৃগণের নিমিত্ত মেদের লঘু নদীসমূহ বাহিত হোক এবং আমরা তাঁদের আশীর্বাদ লাভ করি। হে অগ্নি! এই তোমার উদ্দেশ্যে আহুতি প্রদত্ত হচ্ছে।
২১। হে পৃথিবী (সমাধিক্ষেত্র)! তুমি আমাদের নিমিত্ত সুখদা (সুখস্বরূপা) এবং কণ্টকরাহিতা (দুঃখরহিতা) হও। তুমি প্রভূত সুখ প্রদান করো। এই জল আমার পাপকে ধৌত করে ক্ষার করে দিক।
২২। হে অগ্নি! তুমি এই যজমানের নিমিত্তে (বা যজমানের দ্বারা) উৎপন্ন হয়েছ। এক্ষণে পুনরায় এই যজমান তোমা হতে উৎপন্ন হোন। এই অমুক (যজমান) স্বর্গলোক-প্রাপ্তির যোগ্য হোন। এই তোমার উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্র সহকারে আহুতি প্রদত্ত হচ্ছে।