৩৩. শুক্লযজুর্বেদ – ত্রয়স্ত্রিংশ অধ্যায়

ত্রয়স্ত্রিংশ অধ্যায়

মন্ত্রঃ– অস্যাজরাসোদমামরিত্রা অর্চদ্মাসো অগ্নয়ঃ পাবাঃ। শ্চিতীচয়ঃ শ্বাত্ৰাসো ভুরণ্যবো বনর্যদো বায়বো ন সোমাঃ৷১৷৷ হরয়ো ধূমকেতবো বাতজুতা উপ দ্যবি। যতন্তে বৃথগগ্নয়ঃ২৷৷ যজা নো মিত্রাবরুণা যজা দেবা ঋতং বৃহৎ। অগ্নি যক্ষি স্বং দম৷৩৷৷ যুক্ষবা হি দেবহুতম অশ্ব অপ্নে রথীরিব। নি হোতা পূর্বাঃ সদঃ ৪৷৷ দ্বে বিরূপে চরতঃ স্বার্থে অন্যান্যা বৎসমুপ ধাপয়েতে। হরিপন্যস্যাং ভবতি স্বধাবাছুক্রো অন্যস্যাং, দদৃশে সুবর্চা৷৷৫৷৷ অয়মিহ প্রথমো ধায়ি ধাতৃভিহোতা যজিষ্ঠো অধরেম্বীড্যঃ। যমপ্নবানো ভৃগবো বিরুরুচুৰ্বনেষু চিত্রং বিভূং বিশে-বিশে৷৬৷৷ ত্রীণি শতা ত্রী সহস্রাণ্যগ্নিং ত্রিংশচ্চ দেবা ন চাসপর্যন্য। ঔক্ষ ঘৃতৈরণ বহিরম্মা আদিদ্ধোতারং ন্যসাদয়ন্ত৷৭৷৷ মূর্ধানং দিবো অরতিং পৃথিব্যা বৈশ্বানরমৃত আ জাতমগ্নিম।কবিং সম্রাজমতিথিং জনানামাসন্না পাত্ৰং জনয়ন্ত দেবাঃ।।৮৷ অগ্নিবৃত্রাণি জঞ্জনাবিণবিপন্যয়া। সমিদ্ধঃ শুক আহুতঃ।৯৷৷ বিশ্বেভিঃ সোম্যং মধ্বগ্ন ইন্দ্রেণ বায়ুনা। পিবা মিত্রস্য ধামভিঃ৷১০৷৷ আ যদিষে নৃপতিং তেজ আন শুচি রেতো নিষিক্তং দৌরভীকে। অগ্নিঃ শর্ধমনবদ্যং যুবানং স্বাধ্যং জনয়ৎ সুদয়স্ট।১১। অগ্নে শর্ধ মহতে সৌভগায় তব দ্যুম্নত্তমানি সন্তু। সং জাম্পত্যং সুষমমা কৃণুষ শক্রযতামভ তিষ্ঠা মহাংসি৷৷১২। ত্বং হি মন্দ্রতমমর্কশোকৈর্ববৃমহে মহি নঃ শ্রোষ্যগ্নে। ইন্দ্ৰং ন ত্বা শবসা দেবতা বায়ুং পৃন্তি রাধসা নৃতমাঃ১৩। ত্বে অগ্নে স্বাহুত প্রিয়াসঃ সন্তু সূরয়ঃ। যন্তারো যে মঘবানো জনানামূর্বান্ দয়ন্ত গোনা৷৷১৪। শ্রুধি কর্ণ বহ্নিভির্দেবৈরগ্নে সয়াবভিঃ। আ সীদন্তু বহির্ষি মিত্রো অর্যমা প্রাত্যাবাগো অধ্বর৷৷১৫৷৷ বিশ্বেষামদিতির্যজ্ঞিয়ানাং বিশ্বেষামতিথির্মানুষাণা। অগ্নিৰ্দেবানামব আবৃণানঃ সুমৃডীকো ভবতু জাতবেদাঃ১৬৷ মহো অগ্নেঃ সমিধানস্য শর্মণ্যনাগা মিত্রে বরুণে স্বস্তয়ৌ। শ্রেষ্ঠে স্যাম সবিতুঃ সীমনি তদ্দেবানামবো অদ্যা বৃণীমহে৷৷১৭৷৷ আপশ্চিৎপি স্তর্যো না গাবো নক্ষন্বতং জরিতারস্ত ইন্দ্র। যাহি বায়ুর্ন নিযুতে নো অচ্ছা ত্বং হি ধীভির্দয়সে বি বাজা৷১৮। গাব উপবতাবতং মহী যজ্ঞস্য রঞ্জুদা। উভা কর্ণা হিরণ্যয়া৷৷১৯। যদদ্য সুর উদিতেইনাগা মিত্রো অর্যমা। সুবাতি সবিতা ভগঃ ॥২০ আ সূতে সিঞ্চত শ্রিয়ং রোদস্যোরভিশ্রিয় রসা দধীত বৃষভম্। তং প্রত্নথাহয়ং বেনঃ৷৷২১৷ আতিষ্ঠং পরি বিশ্বে অভূষঞ্জিয়ো বসানশ্চরতি স্বরচিঃ।। মহত্তদ্বষ্ণো অসুরস্য নামা বিশ্বরূপো অমৃতানি হস্থেী।২২৷৷ প্ৰ বো মহে মন্দ মানায়ান্ধসোহচা বিশ্বানরায় বিশ্বাভুবে। ইন্দ্রস্য যস্য সুমখং সহো মহি শ্ৰবো নৃশ্নং চ রোদিসী সপৰ্যতঃ।।২৩৷৷ বৃহন্নিদিধ্ব এষাং ভূরি শস্তং পৃথুঃ স্বরুঃ। যেষামিন্দ্রো যুবা সখা৷২৪৷ ইন্দ্রেহি মৎস্যন্ধসো বিশ্বেভিঃ সোমপর্বভিঃ মহা অভিষ্টিরোজ৷৷২৫৷৷ ইন্দ্রো বৃত্রমবৃণোচ্ছনীতিঃ প্রমায়িনামমিনাদ্বর্পণীতিঃ। অহ ব্যংসমুশধনেম্বাবিৰ্ধেনা অকৃণোদ্রামাণা৷৷২৬৷৷ কুতমিন্দ্র মাহিনঃ সন্নেকো যাসি সৎপতে কিং ত ইত্থা। সংগৃচ্ছসে সমরাণঃ শুভানৈর্বোচেত্বস্তন্নো হরিবো যত্তে অম্মে। মহা ইন্দ্রো য ওজসা কদা চন স্তরীরসিকদা চন প্রযুচ্ছসি৷৷২৭৷ আ তত্ত ইন্দ্রয়বঃ পনস্তাভি য উর্বং গোমন্তং তিতৃৎসা। সকৃৎস্বং যে পুরুপুত্ৰাং মহীং সহস্রাধারাংবৃহতীং দুদুক্ষন্৷৷২৮৷৷ইমাং তে ধিয়ং প্র ভরে মহো মহীমস্য স্তোত্রে ধিষণণা যত্ত আনজে। তমুৎসবে চ প্রসবে চ সাস হিমিং দেবাসঃ শবসামদন্ননু৷৷২৯৷৷ বিভ্রা বৃহৎপিবতু সোম্যং ময়ুর্দধদ্যজ্ঞ পতাববি হ্রত। বাতজুতো যো অভিরক্ষতি অনা প্রজাঃ পূপোষ পুরুধা বি রাজতি।।৩০৷ উদু ত্যং জাতবেদসং দেবং বহন্তি কেতবঃ দৃশে বিশ্বায় সূর্য৷৷৩১৷৷ যেনা পাবক চক্ষসা ভুরণ্যন্তং জনা অনু। ত্বংবরুণ পশ্যসি৷৷৩২৷৷ দৈব্যাবধ্বর্য আ গতং রথেন সূর্যত্বচা। মধ্বা যজ্ঞং সমঞ্জাথে। তং প্রথাহয়ং বেন-শ্চিত্ৰং দেবানা৷৷৩৩৷৷ আ ন ইডাভির্বিদথে সুশস্তি বিশ্বানরঃ সবিতা দেব এতু। অপি যথা যুবানো মৎসথা নো বিশ্বং জগদভিপিত্বে মনীষা।।৩৪। যদদ্য কচ্ছ বৃত্রম্নদগা অভি সূর্য। সর্বং তদিন্দ্র তে বশে।৩৫৷৷ তরণিবিশ্বদর্শতো জ্যোতিষ্কৃদসি সূর্য। বিশ্বমা ভাসি নোচন৷৩৬৷৷ তৎসূর্যস্য দেবত্বং তন্মহিত্বং কর্তো বিতং সং জভার। যদেদযুক্ত হরিতঃ সধস্থাদা দ্রাত্রী বাসস্ততে সিমস্মৈ৷৩৭৷৷ তন্মিত্রস্য বরুণস্যাভিচক্ষে সূর্যো রূপং কৃণুতে দ্যোরুপস্থে। অনন্তমন্যদ্রশদস্য। পাজঃ কৃষ্ণমন্যদ্ধরিতঃ সং ভরন্তি৷৷৩৮৷ ব মহা অসি সূর্য বডাদিত্য মহা অসি। মহস্তে সততা মহিমা পনস্যতেইদ্ধা দেব মহাঅসি৷৷৩৯৷৷ বট্‌ সূর্য শবসা মহা অসি সত্রা দেব মহা অসি। মা দেবানামসূর্যঃ পুরোহিতো বিভু জোতিরদাভ্য৷৷৪০৷৷ শ্রায়ন্ত ইব সূর্যং বিশ্বেদিন্দ্রস্য ভক্ষত। বসূনি জাতে জনমান ওজসা প্রতি ভাগং ন দীধিম।।৪১৷ অদ্যা দেবা উদিতা সূর্যস্য নিরংহসঃ পিতৃতা নিরবদ্যাৎ। তন্নো মিত্রো বরুণো মামহন্তামদিতিঃ সিন্ধুঃ পৃথিবী উত দ্যৌঃ।৪২৷৷ আ কৃষ্ণেন রজসা বর্তমাননা নিবেশয়ন্নমৃতং মতং চ। হিরণ্যয়েন সবিতা রথেনা দেবো যাতি ভুবনানি পশ্য৷৷৪৩৷৷ প্র বাবৃজে সূপ্রয়া বৰ্হিরেষামা বিম্পতীব ৰীরিট ইয়াতে। বিশামক্তোরুসঃ পূর্বহূতৌ বায়ুঃ পূষা স্বস্তয়ে নিযুত্বা৷৪৪। ইন্দ্ৰবায়ু বৃহস্পতিং মিত্রাগ্নিং পূষণং ভগ। আদিত্যান্ মারুতং গণম৷৪৫৷৷ বরুণঃ প্রাবিতা ভুবন্মিত্রো বিশ্বাভিরূতিভিঃ। করতাং নঃ সুরাধসঃ।।৪৬ অধি ন ইন্দ্ৰেষাং বিষ্ণো সজাত্যামাম্। ইতা মরুততা অশ্বিনা তং প্রত্নথাহয়ং বেনো যে দেবাস আ ন ইডাভি বিশ্বেভিঃ সোম্যং মধ্বেমাসশ্চর্যণীধৃতঃ।।৪৭৷৷ অগ্ন ইন্দ্র বরুণ মিত্র দেবাঃ শৰ্ধঃ প্র যত্ন মারুতোত বিষ্ণো। উভা নাসত্যা রুদ্ৰো অধ গ্লাঃ পূষা ভগঃ সরস্বতী জুষন্ত৷৪৮৷৷ ইন্দ্রাগ্নী মিত্রা বরুণাদিতিং স্বঃ পৃথিবীং দ্যাং মরুতঃ পর্বর্তা অপঃ। হুবে বিষ্ণুং পুষণং ব্ৰহ্মণস্পতিং ভগংনুশংসং সবিতারমূতয়ে।৪৯৷ অস্মে রুদ্রা মেহনা পর্বতাসো বৃত্ৰহত্যে ভরহুতৌ সজোষাঃ। যঃ শংসতে স্তুবতে ধায়ি পত্র ইন্দ্ৰজ্যেষ্ঠা অস্ম অবন্তু দেবাঃ।৫০। অবাঞ্চো অদ্যা ভবতা যজত্রা আ বো হার্দি ভয়মাননা ব্যয়েয়ম্। ব্রাধ্বং নো দেবা নিজুররা বৃকস্য ত্রাধ্বং কর্তাদবপদো যজত্রাঃ।।৫১৷ বিশ্বে অদ্য মরুতে বিশ্ব উতী বিদ্বে ভবগ্নয়ঃ সমিদ্ধ। বিশ্বে নো দেবা অবসা গমন্তু বিশ্বমস্তু দ্রবিণং বাজো অস্মে৷৷৫২৷ বিশ্বে দেবাঃ শৃণুতেমং হবং মে যে অন্তরিক্ষে য উপ দ্যবি ষ্ঠ। যে অগ্নিজিহ্বা উত বা যজত্রা আসন্যাস্মিন্বৰ্হিষি মাদয়ধ্বম্।।৫৩৷৷ দেবেভ্যো হি প্রথমং যজ্ঞিয়েভ্যোহমৃতত্বং সুবসি ভাবমুত্তমম্। আদিদ্দামানং সবিতর্ব্যর্ণষেহনূচীনা জীবিতা মানুষেভ্যঃ৷৫৪৷ প্র বায়ুমচ্ছা বৃহতী মনীষা বৃহদ্রয়িং বিশ্ববারং রথ। দ্যুতদ্যামা নিযুতঃ পত্যমানঃ কবিঃ কৰিমিযক্ষসি প্রযজ্যো।৫৫৷ ইন্দ্ৰবায়ু ইমে সুতা উপ প্রয়োভিরা গত৷ ইন্দ্রবো বামুশন্তি হি। উপষ্যমগৃহীতোহসি বায়ব ইন্দ্ৰবায়ুভ্যাং ত্বা। এষ তে যোনিঃ সজোযোভ্যাং ত্বা।৫৬৷৷ মিত্রং হুবে পূতদক্ষং বরুণং চ রিশাদস। ধিয়ং ঘৃতাচীং সাধন্তা৷৫৭৷ দম্রা যুবাকবঃ সুতা নাসত্যা বৃক্তবহিষঃ। আ যাতং রুদ্ৰবৰ্ত্তনী তং প্রত্নথা হয়ং বেনঃ ৫৮৷ বিদদ্যদী সরমা রুগ্নমদ্রেমহি পাথঃ পূর্বং সয়ঃ । অগ্রং নয়ৎসুপদ্যক্ষরাণামচ্ছা এবং প্রথমা জানতী গাৎ৫৯। নহি স্পশম বিন্নন্যমম্মাদ্বৈশ্বানরাপুর এতারমগ্নেঃ। এমেমবৃধমৃতা অমর্ত্যং বৈশ্বানরং ক্ষৈত্র জিত্যায় দেবাঃ।।৬০৷ উগ্রা বিঘনিনা মৃধ ইন্দ্রাগ্নী হবামহে। তা নো মৃজাত ঈদৃশে।।৬১৷৷ উপাস্মৈ গায়তা নরঃ পবমানায়েন্দবে। অভি দেবাঁ ইয়ক্ষতে৷৷৬২৷৷ যে ত্বাহহিতত্যে মঘবন্নবর্ধন্যে শাম্বরে হরিবো যে গবিষ্টে। যে ত্বা নূনমনুমদন্তি বিপ্রাঃ পিব্রেন্দ্রঃ সোমং সগণণা মরুদ্ভিঃ।।৬৩৷৷ জনিষ্ঠা উগ্রঃ সহসে তুরায় মন্দ্র ওজিষ্ঠো বহুলাভিমানঃ। অবন্নিন্দ্রং মরুতশ্চিদ মাতা যদ্বীরং দধনদ্ধনিষ্ঠা৷৬৪। আ তু ন ইন্দ্র বৃহন্নস্মাকমর্ধমা গহি। মহান্মহীভিরূতিভিঃ।।৬৫৷৷ বৃমিন্দ্র প্রতৃর্তিভি বিশ্ব অধি স্মৃধঃ। অশস্তিহা জনিতা বিশ্বপ্রসি ত্বং তরুষ্যতঃ ।৬৬৷৷ অনু তে শুষ্মং তুরয়ন্তময়ীতুঃ ক্ষোণী শিশুং ন মাতরা। বিশ্বাস্তে স্মৃধঃ শ্লথয়ন্ত মন্যবে বৃত্রং যদি সি৷৷৬৭৷৷ যজ্ঞো দেবানাং প্রত্যেতি সুম্নমাদিত্যাসো ভবতা মৃডয়ন্তঃ। আ বোহবাচী সুমতি বৰ্বত্যাদংহোশ্চিদ্যা বরিবোবিত্তরাসৎ৷৷৬৮৷ অদন্ধেভিঃ সবিতঃ পায়ুভিং শিবে ভিরদ্য পরি পাহি নো গয়৷ হিরণ্যজিহ্বঃ সুবিতায় নব্যসে রক্ষা মার্কিননা অঘশংস ঈশত।।৬৯। প্র বীরয়া শুচয়ো দদিরে বামধ্বভিমধূমন্তঃ সুতাসঃ বহ বায়ো নিযুততা যাহ্যচ্ছা পিবা সুতস্যাদ্ধসসা মদায়।৭০। গাব উপবতাবতং মহী যজ্ঞস্য রসূদা। উভা কর্ণা হিরণ্যয়া৷৷৭১৷ কাব্যয়োরাজনেষু ক্ৰত্বা দক্ষস্য দূরোণে। রিশাদসা সধস্থ। আ৷৷৭২৷৷ দৈব্যাবধ্বর্য আ গতং রথেন সূর্যচা। মধ্বা যজ্ঞং সমঞ্জাথে। তঃ প্রত্নথাহয়ং বেনঃ৭৩৷৷ তিরক্ষীননা বিততে রশ্মিরেষামধঃ স্বিদাসীদুপরি স্বিদাসীৎ। রেতোধা আসন্মহিমান আসন্ত্রস্বধা অবস্তাপ্রতিঃ পরস্তাৎ৭৪৷৷ আ রোদসী অপৃণদা স্বৰ্মহজ্জাতং যদেনমপসো অধারয়। সো অধ্বরায় পরিণীয়তে কবিরত্যো নঃ বাজসাতয়ে চনোহিতঃ৷৭৫৷৷ উথেভিবৃহন্তমা যা মন্দানা চিদা গিরা। আঙ্গুষৈরাবিবাসতঃ।।৭৬৷ উপ নঃ সূনবো গিরঃ শৃথমৃতস্য যে। সুম্‌ডিকা ভভন্তু নঃ ৭৭৷ ব্ৰহ্মাণি মে মতয়ঃ শং সুতাসঃ শুষ্ম ইয়র্তি প্রভৃতে মে অদ্ভিঃ। আ শাসতে প্রতি হর্যন্ত্যকৃথেমা হরী বহতস্তা নো অচ্ছ৷৭৮৷ অনুত্তমা তে মঘবন্নকির্ন ন ত্বাবা অস্তি দেবতা বিদানঃন জায়মানোনসতেন জাতো যানি করিষ্যা কৃণুহি প্রবৃদ্ধ।৭৯৷৷ তদিদাস ভুবনেষু জ্যেষ্ঠং যতো জজ্ঞ উগ্রস্তৃষ নৃশ্যঃ। সদো জজ্ঞানো নি রিণতি শুননু যৎ বিশ্বে মদন্তমাঃ ।।৮০। ইমা উ ত্বা পুরূবশো গিরো বর্ধন্তু যা মম। পাবকবর্ণাঃ শুয়ো বিপশ্চিতোহভি স্তোমৈরনুষত।৮১৷ যস্যায়ং বিশ্ব আৰ্যো দাসঃ শেবধিপা অরিঃ। তিরশ্চিদর্যে রুশমে পবীরবি তুভ্যেৎসো অজ্যতে রয়িঃ।।৮২৷ অয়ং সহস্ৰমৃষিভিঃ সহস্কৃতঃ সমুদ্র ইব পথে। সত্যং সো অস্য মহিমা গৃণে শবো যজ্ঞেসু বিরাজ্যে।৮৩৷৷ অদন্ধেভিঃ সবিতঃ পায়ুভিং সিবেভিরদ্য পরিপাহি নো গয়ম্। হিরণ্যজিহবঃ সুবিতায় নবাসে রক্ষা মার্কিননা অঘশংস ঈশত৷৮৪৷৷ আ নো যজ্ঞং দিবিশৃশং বায়ো যাহি সুমন্মভিঃ। অন্তঃ দশপবিত্র উপরি শ্ৰীণাননাহয়ং শুক্রো অযামি তে৷৮৫। ইন্দ্ৰবায়ু সুসদৃশা সুহবেহ হবামহে। যথা নঃ সর্ব ইজ্জনোহনমীবঃ সঙ্গমে সুমনা অসৎ৮৬৷ ঋধগিখা স যৰ্তঃ শশমে দেবতাতয়ে। যো নূনং মিত্রাবরুণাব ভিষ্টয় আচক্রে হব্যদাতয়ে৷৮৭৷৷ আ যাতমুপ ভুষতংমধ্বঃ পিবতমখিনা। দুগ্ধং পয়োন বৃষণা জ্যোবসু মা নো মর্ধিষ্টমা গত৷৮৮৷ প্রৈতু ব্ৰহ্মণস্পতিঃ প্র দেব্যেতু সূনৃতা। অচ্ছা বীরংনর্যং পঙক্তিরাধসং দেবা যজ্ঞং নয়ন্তু নঃ।।৮৯৷৷ চন্দ্রমা অস্বদূতরা সুপর্ণো ধাবিতে দিবি। রয়িং পিশঙ্গং বহুলং পুরুস্পৃহং হরিরেতি কনিক্ৰদৎ৯০৷ দেবাং। দেবং বোহবসে দেবং দেবামভিষ্টয়ে। দেবং দেবং হুবেম বাজসাতয়ে গৃণন্তো দেব্যা ধিয়া।৯১৷ দিবি পৃষ্টো অবোচতাগ্নিবৈশ্বানররা বৃহন্। ক্ষুয়া বৃধান ওজসা চনোহিতো জ্যোতিষা বাধতে তমঃ৷৯২৷৷ ইন্দ্রাগ্নী অপাদিয়ং পূর্বাগাৎ পদ্বতীভ্যঃ। হিত্নী শিরো জিয়া বাবদচরব্রিংশৎপদা ন্যক্রমীৎ৷৷৯৩৷৷ দেবাশো হি মা মনবে সমন্যবো বিশ্বে সাকং সরাতয়ঃ। তে নো অদ্য তে অপরং তুচে তু নো ভবন্তু বরিবোবিদঃ ৯৪। অপাধমদভিশস্তীরশস্তিহাথেন্দ্রো দ্যুম্ন্যাভবৎ। দেবাস্ত ইন্দ্র সখ্যায় যেমিরে বৃহস্তানো । মরুদগণ ॥৯৫৷৷ প্র ব ইন্দ্রায় বৃহতে মরুততা ব্রহ্মার্চ ত। বৃত্রং হনতি বৃত্ৰহা শতকুতুবজ্রেণ শতপর্বণা।৯৬। অস্যেদিা বাবৃধে বৃষ্যংশবো মদে সুতস্য বিষ্ণবি। অদ্যা তমস্য মহিমানমায়বোহনু পূর্বথা। ইমা উ বা যস্যায়-ময়ং সরস্রমূর্ধ্ব উ যু ণঃ ৯৭।

 [কণ্ডিকা–৯৭, মন্ত্র সংখ্যা–৯৭]

.

মন্ত্ৰার্থঃ– ১।ক্ষীণতারহিত, যজ্ঞগৃহের রক্ষক, উথিত ধূমের দ্বারা পরিলক্ষিত, শোধক, শ্বেতভস্মের স্কুপ নির্মাণকারী, ভক্ষক রাক্ষস ইত্যাদি হতে রক্ষা করণশালী, ভরণকারিণী ইন্ধনে স্থিতি করণশালী, বায়ুর সমান দীপনকরী এবং সোমরসের ন্যায় এই যজমানের অগ্নিসমূহ যজমানের ইষ্টপ্ৰদা হোক।

২। রসহরণশীলা, ধূমের দ্বারা পরিলক্ষিত হওনশালিনী অগ্নিসমূহের রশ্মিগুলি বায়ুর দ্বারা প্রেরিত হয়ে পৃথক পৃথক প্রকারে স্বর্গে গমনের প্রযত্ন করছে।

৩। হে অগ্নি! আমাদের নিমিত্ত তুমি মিত্র ও বরুণের যজন করো; দেবতাগণের। যজন করো; মহান্ যজ্ঞের যজন করো। তুমি আপন যজগৃহেরও যজন করো ৷

৪। হে অগ্নি! দেবগণকে আহ্বান করণে অত্যন্ত কুশল আপন অশ্বগুলিকে এক কুশল রথবানের ন্যায় সংযোজিত করো। হোতারূপে তুমি পূর্ব দিকে উপবেশন করো।

৫। দুই বিপরীত রূপ এবং শুভ মনোরথশালিনী উষা (অর্থাৎ দিবা) ও রাত্রি সঞ্চরণ করছে। ক্রমশঃ তারা পৃথক পৃথক্ পুত্রকে দুগ্ধ পান করাচ্ছে। রসহারী শুক্লবর্ণশালী সূর্য অপরা উষাতে (দিবায়) অন্নবান্ হচ্ছে (অর্থাৎ হবিঃ প্রাপ্ত হচ্ছে)। এবং অপরা রাত্রিতে হরিৎবর্ণশালী শুভ অগ্নি দীপ্তিশীল দেখা যাচ্ছে। (অর্থাৎ রাত্রির বৎস যেন অগ্নি, রাত্রিতে হবিঃপ্রাপ্তিরূপ দুগ্ধ পান করছে; এবং দিবার বৎস যেন সূর্য, দিবাভাগে হবিঃপ্রাপ্তিরূপ দুগ্ধ পান করছে)।

৬। বিধাতা ঋত্বিকগণের দ্বারা হোতা, অত্যন্ত যাজক এবং যজ্ঞে স্তুতিযোগ্য সেই অগ্নিকেই সর্বপ্রথম যজ্ঞগৃহে স্থাপিত করেছিলেন; ভৃগু ও শিষ্যগণ কাষ্ঠসমূহে এবং প্রজা-প্রজাতে ব্যাপ্ত যে বিচিত্র অগ্নিকে প্রাপ্ত হয়ে প্রজ্বলিত করেছিল৷

৭। তেত্রিশ ক্রোড়, তেত্রিশ লক্ষ, তেত্রিশ সহস্র এবং তিনশত তেত্রিশ বসু প্রভৃতি দেবতা এই অগ্নির পূজন করছে। ধৃতের আহুতিতে একে সিঞ্চিত করছে; এর নিমিত্ত দর্ভাসন বিস্তারিত হয়েছে এবং তৎকালেই এই দেবগণের আকর্তাকে বেদিতে অধিষ্ঠিত করানো হচ্ছে।

৮। দ্যুলোকের মূর্ধাভূত (অর্থাৎ মস্তকসদৃশ), পৃথিবীকে ব্যাপ্ত করণশালী এবং যজ্ঞে উৎপন্ন বৈশ্বানর অগ্নিকে; কবি, সম্রাট, যজমানের অতিথি এবং জ্বালারূপ মুখে সুবাপাত্রকে ধারণকারী এই অগ্নিকে ঋত্বিকগণ উৎপন্ন করে থাকেন।

৯। ধনদাতা অগ্নি স্তুতির দ্বারা প্রসন্ন হয়ে বৃত্রকে (বা পাপকে) হনন করে।–যে সমিদ্ধ (অর্থাৎ দীপ্ত), শুক্র (অর্থাৎ শুভ্র) এবং আহুত (অর্থাৎ অভিহুত বা প্রদত্তাহুতি)।

১০। হে অগ্নি! বিশ্বদেবগণ, ইন্দ্র, বায়ু এবং মিত্রের তেজের সাথে এই সোমময় মধুকে পান করো।

১১। বৃষ্টির নিমিত্ত মনুষ্যগণের পালক অগ্নি যখন তেজঃ অভিবর্ধক হবিঃ প্রাপ্ত হয়ে থাকে, তখন সেই অগ্নির দ্বারা দ্যুলোকের নিকট পবিত্র জল আসিঞ্চিত করা হয়ে যায় (অর্থাৎ মেঘ উৎপন্ন হয়ে যায়)। অগ্নি অনিন্দনীয় (বা অনবদ্য), মিশ্রণকারী এবং ধ্যাতব্য বলে (বীর্য বা তেজঃ রূপ) মেঘজলকে উৎপন্ন করে এবং বর্ষণ করে থাকে।

১২। হে অগ্নি! তুমি মহৎসৌভাগ্যের (অর্থাৎ জলের) বিক্রম প্রদর্শিত করো। তোমার উত্তম ধন (বা যশ) হোক। এই পত্নী সহ এই যজমানকে সুনিয়ন্ত্রণশালী করো। শত্ৰুত্ব আচরণশালী তেজস্বীগণকেও অভিভূত করো।

১৩। হে অগ্নি! অর্চনীয় স্তোত্রের দ্বারা আমরা অত্যন্ত গম্ভীর তোমাকেই বরণ করছি। হে মহান্ অগ্নি! তুমি আমাদের আহ্বান শ্রবণ করে থাকো। বলে ইন্দ্র এবং বায়ুর সমতুল্য তুমি হেন মনুষ্যগণের পালকতম দেবতা অগ্নিকে ঋত্বিকগণ হবিরান্ন সমর্পণ পূর্বক প্রীণিত করছে বা পূর্ণ করছে৷৷

১৪। হে সম্যক্ আহুত অগ্নি! বুদ্ধিমান সেই যজমান তোমার প্রিয় হোক; যে ধনশালী এবং লোকগণের মধ্যে গাভীর দলকে রক্ষণ করে থাকে; (অর্থাৎ যার নিকট যজ্ঞসাধন বহু গাভী আছে)।

১৫৷ হে যাচকগণের যাচনা শ্রবণশালী কর্ণের দ্বারা যুক্ত অগ্নি! হবিবাহক এবং এক সঙ্গে আগমনকারী দেবগণের সাথে আমাদের প্রার্থনা শ্রবণ করো। মিত্র অর্যমা এবং অন্য প্রাতঃসবনে হবির্ভাব প্রাপক দেবতাগণ যজ্ঞে দর্ভাসনের উপরে উপবেশন করুক।

১৬। সকল যজনীয় দেবগণের মধ্যে অকৃপণ (অখণ্ড), সকল, মনুষ্যের পূজনীয়, এবং হবিঃ স্বীকারকারী জাতবেদা অগ্নি দেবগণের সুখয়িতা হোক৷

১৭। সবিতাদেবের প্রেরণায় চলনশীলা হয়ে এবং মিত্র ও বরুণের প্রতি নিরপরাধ হয়ে আমরা মহান্ এবং সমিধ্যমান অগ্নির অবিনাশিনী শরণে অবস্থান করি। আমরা আজ দেবগণের সেই রক্ষণের যাচনা করছি৷

১৮। সুখী গাভীর ন্যায় সোম অভিবৃদ্ধ হচ্ছে এবং হে ইন্দ্র! তোমার স্তোতা (বা ঋত্বিকগণ) যজ্ঞ নিষ্পন্ন করেছে। নিযুত অশ্বকে যুক্তকারী বায়ুর ন্যায়, হে ইন্দ্র! আমাদের যজ্ঞের দিকে আগত হও। তুমিই স্তুতিসমূহে সংস্তুত হয়ে বিবিধ অন্ন-ধন ইত্যাদি দিয়ে থাকো ৷

১৯। হে গাভীগণ (বা স্তুতিসমূহ)। তোমরা আমাদের রক্ষা করো। মহতী এবং যজ্ঞের রূপ-দানশালিনী হে দ্যাবাপৃথিবী! তোমাদের দুই দুই কর্ণ স্বর্ণমণ্ডিত, (যারা স্বর্ণদাত্রী, তোমরা আমাদের রক্ষা করো।

২০। অদ্য সূর্যোদয় হওয়ার পর পবিত্র মিত্র, অর্যমা, সবিতা এবং ভগদেবতা যে প্রেরণা দেবেন, তা-ই করণীয় হোক৷

২১। হে ঋত্বিগণ শ্রী, দ্যাবাপৃথিবীর অভিশ্রী (অর্থাৎ শোভা) এবং অভীষ্ট সোমরসের অভিযুত হওয়ার পর চামসে পূর্ণ করো। সেই সোমরসই নদীগুলিকে ধারণ করে। পূর্বকালের রীতি (৭–১২) এই করণীয় (৭–১২) মন্ত্র বলা হয়েছে৷

২২৷ দৰ্ভাসনের উপর প্রতিষ্ঠিত ইন্দ্র আপন শোভায় সকল দেবতার কান্তি আচ্ছন্ন করে অবস্থিত; সকল স্তোতা সেই ইন্দ্রকে আভূষিত করেছে। সর্বরূপ সেই ইন্দ্র অমৃতস্বরূপ বর্ষাজলকে অধ্যাসিত করছে৷৷

২৩। হে ঋত্বিকগণ! মহান, সোমান্নে মদমত্ত, সকলের অগ্রণী এবং সমস্ত কিছু দানশীল সেই ইন্দ্রের পূজা করো, যে ইন্দ্রের সুযশ, সুবল, মহত্যশ, এবং ধনকে এই দ্যাবাপৃথিবীও (অর্থাৎ দেবতা ও মনুষ্যগণও) পূজা করে থাকে।

২৪। যুবা ইন্দ্র যে যজমানগণের মিত্র (বা সহায়), তাদের শাস্ত্রসম্মত যজ্ঞসাধনের ইন্ধন ইত্যাদি মহৎ হয়; তাদের স্তুতিসমূহ অনেক হয়ে যায় এবং তাদের যুপ (বা খড়ঙ্গ বিস্তীর্ণ বা বৃহৎ হয়ে থাকে।

২৫। হে ইন্দ্র! আগত হও।তুমি সকল যাগের যোগ্য। আগত হয়ে আপন যজ্ঞভাগের সাথে সোমান্ন ভক্ষণ করো। সেই ইন্দ্র মহান্ এবং আপন বলবীর্যে অভিপূজ্য হয়ে থাকেন।

২৬। বলনীতিশীল (অর্থাৎ চতুরঙ্গ বলে নীতিজ্ঞ) ইন্দ্র বৃত্রকে বেষ্টন (বা আচ্ছন্ন করেছে। বিবিধ রূপ ধারণ করে যুদ্ধনীতিশালী সেই মায়াবী বৃত্তকে ইন্দ্র হত্যা করেছে। তাকে স্কন্ধহীন করে ইন্দ্র হত্যা করেছে এবং জলে নিক্ষিপ্ত করেছে। তাতে যজমানগণের স্তুতিসমূহ প্রকট হয়েছে।

২৭। হে শ্রেষ্ঠ পালক ইন্দ্র! তুমি মহান্ হয়েও একাকী কোথায় গমন করছ? এই রকমে একাকী গমনের হেতু কী? একাকী সঞ্চারণ করে শুভ বচনে জিজ্ঞাসা করো–কোন্ পথ? হে হরী নামক অশ্বসমূহশালী ইন্দ্র! তোমার যা অভিপ্রায়, তা আমাদের বলো। মহান ইন্দ্রো য ওজসা (৭৪০); (অর্থাৎ ইন্দ্র তেজে মহা); কদাচন স্তরীরসি (৮২); (অর্থাৎ কখনও হিংসক নয়); এবং কদাচন প্রযুচ্ছসি(৮৩); (অর্থাৎ কখনও আপন কর্মে আলস্য নেই); –ঋক্‌সমূহে বলা হয়ে গিয়েছে৷

২৮। হে ইন্দ্র! মনুষ্য তোমার সেই কর্মের প্রশংসা করে থাকে, যে কর্মের দ্বারা তুমি গাভীর পিপাসা রক্ষা করো–যে কর্ম একবারই সর্বস্ব দানশালিনী, অনেকপুত্রা, সহস্রধারা এবং মহতী পৃথিবীকে দোহন করতে চায় (অর্থাৎ পৃথিবীর আধিপত্য চায়)। হে ইন্দ্র! সোমাভিষবকারী ব্রাহ্মণগণ এবং পৃথিবী পালনকারী ক্ষত্রিয়বর্গ তোমার স্তুতি করছে।

২৯। মহান্ তোমার নিমিত্ত এই মহতী স্তুতির গান করছি, কেননা এই যজমানের বুদ্ধি তোমার স্তোত্রে আসঞ্চিত হয়ে গিয়েছে; (অর্থাৎ আমার এই যজমান আকাঙ্ক্ষা করছে যে, ইন্দ্রের স্তুতি করা হোক, এই নিমিত্ত, হে ইন্দ্র। আমি মহান্ তোমাকে মহতী স্তুতি করছি)। শত্রুকে অভিভূত করণশালী সেই ইন্দ্রকে দেবগণ পানগোষ্ঠী এবং প্রেরণে আপন বলের দ্বারা প্রসন্ন করে।

৩০। বিশেষরূপে শোভমান এবং মহান সূর্য যজ্ঞপতি যজমানে অচঞ্চল বায়ুকে ধারিত (স্থাপিত) করে সোমময় মধুকে পান করে। বায়ুর দ্বারা প্রেরিত যে সূর্য স্বয়ংই প্রজাগণকে রক্ষা করে থাকে এবং সে-ই অনেকরকমে পোষণ করে থাকে। সেই বিশেষ রূপের দ্বারা (সূর্য) দ্যুলোকে শোভিত হচ্ছে।

৩১। সেই জাতপ্রজ্ঞান সূর্যদেবের বিশ্বকে দর্শনের নিমিত্ত রশ্মিসমূহের উপর দ্যুলোককে আনীত করা হয়।

৩২। হে পবিত্রকারী বরুণ (বা সূর্য)! আপন যে প্রকাশের মাধ্যমে তুমি হবিঃ ইত্যাদির দ্বারা দেবতাগণকে পূর্ণকারী যজমানকে দর্শন করে থাক (সেই প্রকাশের দ্বারা আমাদের অর্থাৎ স্তোতাগণকে দর্শন করো)।

৩৩। হে দৈবী অধ্বর্যু অশ্বিনদ্বয়! আপন সূর্যপ্রভা-সম্পন্ন রথে যজ্ঞে আগত হও। মধুর হবিঃ দ্বারা যজ্ঞকে সঙ্গত বা কৃতার্থ করো। দেবগণের মধ্যে তোমাদের বিচিত্র পুরাতন এই মেধাবীজন লাভ করুক। তং প্রত্নথা (৭।১২); অয়ং বেন (৭১৬) এবং চিত্রংদেবানমু (৭৪২) মন্ত্রে কথিত হয়ে গিয়েছে।

৩৪। সুশংসনীয় এবং সকলের নেতা সূর্যদেব আমাদের স্তুতিসমূহে সংস্তুত হয়ে যজ্ঞে আগমন করুক। হে অমর দেবগণ! যজ্ঞের অভ্যন্তরে গোষ্ঠীপানে তোমরা যে রকম মত্ত হয়ে থাক, সেই রকমে আপন কৃপায় আমাদের সব গতিশীল পুত্র, পশু ইত্যাদিকেও তর্পিত (তৃপ্ত) করো।

৩৫। হে ধ্বান্তনাশন (অন্ধকাররূপী বৃত্ৰবিনাশক) সূর্য! আজ যখন তুমি উদয় প্রাপ্ত হচ্ছে, তখন, হে ঐশ্বর্যবন্! আমাদের এই হবিঃ ইত্যাদি সবই তোমার বশীভূত হোক।

৩৬। তারক এবং সকলের নিমিত্ত দর্শনযোগ্য হে সূর্য! তুমিই তেজঃ বা জ্যোতির কর্তা। তুমি এই প্রকাশমান বিশ্বকে আভাসিত করছ।

৩৭। এই-ই সূর্যের দেবত্ব এবং এই-ই তার মহিমা যে, সে কোনও কার্য করণশালীকে কার্য-সমাপ্তির মধ্যেই স্তব্ধ করে দেয়। যখন এই সূর্য আপন রসহারিণী রশ্মিসমূহকে সহবাসের স্থান পৃথিবী হতে আপন মণ্ডলে আহূত করে নেয়, তখন রাত্রি সকলের নিমিত্ত কৃষ্ণবস্তু স্বরূপ অন্ধকারকে বিস্তারিত করে।

৩৮। মিত্র (পূজ্যবাগণের দ্রষ্টা) এবং বরুণ (দুষ্কর্মাগণের দ্রষ্টা); এদের দর্শনের নিমিত্ত সূর্য দ্যুলোকে আপন স্বরূপকে প্রকট করে থাকে। এই সূর্যের উজ্জ্বল তেজের স্বরূপ ভিন্ন এবং অনন্ত (অন্তহীন)। এর দ্বিতীয় কৃষ্ণ-স্বরূপকে রসবাহিণী রশ্মিসমূহই বহন করে। (সূর্যের কিছু রশ্মিকে বেদ কৃষ্ণ বা কালো বলে থাকে–এইটি একটি রহস্য)।

৩৯। হে সূর্য! সত্যই তুমি মহান্। হে আদিত্য! তুমি নিশ্চয়ই মহান্। সত্য তুমি সূর্যের লোকেরা নিত্যই সত্যরূপী তোমার তেজোমহিমাকে সংস্তুতি করে। হে দেব! সত্যই তুমি মহান।

৪০। হে সূর্যদেব! তুমি ধনে ও যশে মহান্ সত্যই, হে দেব! তুমি. দেবগণের মধ্যে মহা। প্রাণবান্ এই সূর্য স্বমহিমায় দেবগণের পুরোহিত হয়েছে। সে (অর্থাৎ সূর্য) ব্যাপক এবং অদমনীয় জ্যোতিঃস্বরূপ।

৪১। সূর্যকে আশ্রয়ণ করেই রশ্মিসমূহ ইন্দ্রের ধনবর্ষাকে সকলের মধ্যে ভাগ করে দেয়। সেই রকমে আমরাও ওজের (তেজের), সাথে উৎপাদিত ধনকে উৎপন্ন এবং উৎপাদিতব্য বা উৎপৎস্যমান (জাত এবং জাতব্য) পুত্র ইত্যাদিতে দায়ভাগের ন্যায় ধারিত (স্থাপিত) করছি।

৪২। আজ সূর্যের উদয়ের পর, হে দেবগণ! আমাদের পাপ ও অযশ হতে মুক্ত করো। মিত্র, বরুণ, অদিতি, সিন্ধু, পৃথিবী এবং দ্যুলোকও আমাকে সেই নিষ্পপতা ও অনিন্দিতত্ব স্বীকার করুক।

৪৩। কৃষ্ণ প্রকাশের সাথে বর্তমান মনুষ্য ও দেবগণকে আপন আপন স্থানে প্রতিষ্ঠিত করে এবং লোক-লোকান্তরসমূহকে দর্শন করতে করতে আপন সুবর্ণময় রথে সাবিতাদেব সঞ্চরণ করে।

৪৪। এই যজমানের শুভ হবিরান্নের সাথে যুক্ত দৰ্ভাসন বেদির উপর বিস্তারিত করা হয়ে গিয়েছে। রাত্রি ও উষার পূর্ব আহ্বানে নিযুত অশ্বশালী বায়ু এবং পূষা (বা সূর্য) প্রজাবর্গের কল্যাণের নিমিত্ত আগমন করছে; যেমন দুজন রাজা আপন গণের (অর্থাৎ দলের) কল্যাণের উদ্দেশ্যে আগমন করে।

৪৫। ইন্দ্র, বায়ু, বৃহস্পতি, মিত্র, অগ্নি, পূষা, ভগ, আদিত্য এবং মরুত্বর্গের গণকে আমরা যজ্ঞে আহ্বান করছি।

৪৬। আপন সমস্ত রক্ষাসমূহের দ্বারা বরুণদেব আমাদের রক্ষক হোক। মিত্রদেবতাও রক্ষক হোক। সেই দুই দেবতা আমাদের অন্নসম্পন্ন করুক।

৪৭। হে ইন্দ্র, বিষ্ণু, মরুৎ ও অশ্বিদ্বয়! আমাদের এই সজাতীয়গণের মধ্যে তোমরা আগত হও। এই পুরাতন চন্দ্র ও ইড়ার সাথে তোমরা সকল দেবতা মনুষ্যগণ কর্তৃক ধৃত সৌম্য মধু গ্রহণ করো। তং প্রত্নথা (৭।১২), অয়ং বেনঃ (৭১৬), যে দেবসঃ (৭১৯), আ ন ইডাভি (৩৩৩৪), বিশ্বেভিঃ সোমং মধু (৩৩১০), ঔমাসশ্চর্ষনীপ্তঃ (৭৩৩) মন্ত্রে কথিত হয়ে গিয়েছে।

৪৮। হে অগ্নি, ইন্দ্র, বরুণ, মিত্র, মরুৎ ও বিষ্ণু! তোমরা সকলে আমাদের বল প্রদান করো। দুই নাসত্য (অশ্বিনদ্বয়), রুদ্রগণ, দেবপত্নীসমূহ, পূষা, ভগ এবং সরস্বতী হবিঃসমূহ সেবন করুক।

৪৯। ইন্দ্র, অগ্নি, মিত্র, বরুণ, অদিতি, আদিত্যগণ, পৃথিবী, দ্যুলোক, মরুৎবর্গ, পর্বত সমুদায়, আপঃ (জল), বিষ্ণু পূষা, মন্ত্রপতি (অর্থাৎ ব্ৰহ্মণস্পতি), ভগ এবং শংসনীয় সবিতাদেবকে। আমি রক্ষার নিমিত্ত আহ্বান করছি৷

৫০। যারা শস্ত্রের শংসন (কথন) করে, যারা স্তুতি করে, এবং যারা উপার্জিত ধুনের দ্বারা হবিঃসমূহ প্রস্তুত করে; তাদের এবং যজমান, আমাদের ধন ইত্যাদি ব্যর্ণকারী রুদ্রদেব, পর্বত, বৃত্রহত্যার নিমিত্ত যুদ্ধে আহ্বানকারী, পরস্পর প্রীতিযুক্ত এবং ইন্দ্রের নেতৃত্ব সম্পন্ন সকল দেবতা রক্ষার করুক৷

৫১। হে যবনীয় দেবগণ! আজ তোমরা সকলে আমাদের অভিমুখ বা অনুকূল হও। আমি ভয়ভীত হয়ে হৃদয়ে অবস্থানকারী মনকে তোমাদের দিকে প্রেরিত করছি। হে দেবগণ! আমাদের হিংসক বৃক (লোভী) হতে রক্ষা করো এবং যজনীয়গণ! আমাদের নিম্নগামী করণশীল হতে রক্ষা করো।

৫২। আজ সকল মরুৎ এবং সকল সুমিদ্ধ অগ্নি আমাদের প্রতি রক্ষাস্বরূপ হোক। আপন রক্ষা বা আপন অন্নের সাথে আমরা যেন বিশ্বদেবগণকে প্রাপ্ত হই। সকল ওজঃ এবং ধন আমাদের প্রাপ্ত হোক।

৫৩। হে বিশ্বদেবগণ! তোমাদের মধ্যে যারা অন্তরিক্ষে অবস্থিত আছ, যারা দুলোকে স্থিত আছ, যারা অগ্নির জিহ্বাশীল হয়ে আছ; আরও যারা অন্য যজনীয় দেবতা হয়ে আছ, তারা সকলে আমার এই আহ্বানকে শ্রবণ করো। হে যজনীয়গণ! তোমরা এই দুর্ভাসনে উপবিষ্ট হয়ে সোমরস পানে মদমত্ত হও।

৫৪। যজনীয় দেবগণের নিমিত্ত, হে সবিতাদেব! তুমি সর্বপ্রথম অমৃতময় উত্তম ভাগ অগ্নিহোত্রকে প্রেরিত করে থাক (অর্থাৎ অগ্নিহোত্রকে প্রেরণা দিয়ে থাকে)। তারপর হে অগ্নিদেব। অনুকূলগমনকারিণী এবং জীবনদাত্রী আপন আপন রশ্মিসমূহকে প্রকট করে থাক।

৫৫। (সর্বমেধ সমাপ্ত)। হে প্রকর্ষের সাথে যজনশীল অধ্বর্যু! জ্ঞানী তুমি। তুমি সেই মহাধনশালী, সকলের বরণীয়, রথকে ধন ইত্যাদিতে পূর্ণকারী, দ্যোতমান মার্গে গমনশীল, নিযুত অশ্বের দ্বারা ভ্রমণকারী এবং কবি (অর্থাৎ ক্রান্তদ্রষ্টা) বায়ুকে আপন বুদ্ধির দ্বারা সম্মুখবর্তী হয়ে সংস্তুত করো।

৫৬। হে ইন্দ্র ও বায়ু! যে সোমরস তোমাদের দুজনার নিমিত্ত অভিযুত করা হয়েছে, সেই সোমান্নের নিমিত্তে তোমরা দুজন এই যজ্ঞে আগমন করো। এই সোম তোমাদের দুজনকে কামনা করছে। হে সোমরস! তুমি উপযাম পাত্রের দ্বারা গৃহীত হয়েছ; বায়ু তথা ইন্দ্র ও বায়ুর উদ্দেশ্যে আমি তোমাকে গ্রহণ করছি। হে গ্রহ (পাত্র)! এই তোমার স্থান। সমান প্রীতিযুক্ত ইন্দ্র ও বায়ুর উদ্দেশ্যে আমি তোমাকে এই স্থানে স্থাপন করছি।

৫৭। পবিত্ৰবল, মিত্র, এবং পাপীগণগণের বিনষ্টকরী বরুণদেবকে আমি আহ্বান করছি। সেই মিত্র ও বরুণদেবতা ঘৃতাঞ্জনা বুদ্ধিকে সাধিত করে (অর্থাৎ আমাদের বুদ্ধিতে যজ্ঞের প্রেরণা প্রদান করে থাকে)।

৫৮। হে দর্শনীয়! হে নাসত্য (অশ্বিদ্বয়)! তোমাদের দুজনকে যুবজন কামনা করে এবং কর্তিত দর্ভ সমুদায়ে এই সোমরস অভিযুত হয়ে গিয়েছে। রুদ্রের মার্গের উপর চলনশালী হে অশ্বিদ্বয়! যজ্ঞে আগত হও। এই কামনীয় চন্দ্র পুরাতন তোমাকে প্রাপ্ত হোক। তং প্রত্নথা(৭।১২) ও অয়ং বেনঃ (৭।১৬) মন্ত্রে কথিত।

৫৯। যে, সরমা (অর্থাৎ সারমেয়গণের জন্মদাত্রী স্বর্গীয়া দেবী কশ্যপের অন্যতমা পত্নী পণি নামক দস্যগণ কর্তৃক গোধন চুরি হয়ে যাওয়ার পর ইন্দ্র সেই কুকুররূপিনী সরমাকে প্রেরণ করলে যে তা উদ্ধার করে আনে) পর্বতের ছিদ্রকে প্রাপ্ত হয়ে এবং তাতে আপন সন্তানদের নিমিত্ত সেই অপূর্ব পথ্য দুগ্ধ সোজাসুজি প্রার্থনা করেছিল। সুন্দর পদশালিনী সেই সরমা অমর দেবগণকে অগ্রে নিয়ে গিয়েছে। গাভীগণের হরবকে জ্ঞাত হয়ে সে অগ্রে অগ্রে চলছে।

৬০। অথবা সরমা (বেদরূপ শোভনা বা সুরম্যা বাক্য এবং দেবগণকে যে শোভনা বাক্যে তুষ্ট করে) শোভন পদশালিনী এবং অকার ইত্যাদি শব্দের জ্ঞাপিকা; সে অমর দেবগণের অগ্রে যজ্ঞের অভিমুখে আগতা হচ্ছে। অধ্বর্যু তা জ্ঞাত হয়ে সোমের অভিষব করছে। সেই সোম পূর্বেই গৃহীত হয়েছে এবং প্রস্তুরের দ্বারা অভিযুত হয়ে হবনের নিমিত্ত মুখ্য যজমানের অভিমুখে গমন করছে।

৬১। দেবগণ বৈশ্বানর অগ্নি ভিন্ন কোন অগ্রগন্তা দূতকে প্রাপ্ত হয়নি। এই অমর্ত্য বৈশ্বানর অগ্নিকে অমর দেবগণ ভূমিজয়ের নিমিত্ত বর্ধিত করেছে৷৷৬১। উগ্রস্বভাবী এবং হিংসকগণের হন্তা ইন্দ্র ও অগ্নিকে আমরা আহ্বান করছি। তারাই আমাদের এইরকম অবসরের পর সুখী করুক।

৬৩। হে ঋত্বিকগণ! এই পাবক এবং অভিমুখ্য হতে দেবগণকে যজনের কামনা করণশালী সোমরসের নিমিত্ত স্তুতি গান করো।

৬৪। হে মঘব! যে মরুৎবর্গ তোমাকে বৃত্রের হত্যায় সহায়তা করেছিল, হে হরী নামক অশ্বশালী! যারা শম্বর নামক অসুরের সাথে সংগ্রামে তোমাকে বর্ধন করেছিল এবং যারা গাভীর অনুসন্ধানে তোমাকে উৎসাহিত করেছিল; যে বুদ্ধিমান মরুৎবর্গ তোমাকে অবশ্যই বর্ধিত করে থাকে, সেই মরুত্বর্গের সাথে গণবান হয়ে তুমি সোম পান করো।

৬৫। উগ্রস্বভাব, স্তুতিযোগ্য, অত্যন্ত ওজস্বী এবং নিজেকে সর্বমূর্তিরূপে মান্যশালী ইন্দ্র শত্রুর শীঘ্র অভিভবের নিমিত্তই উৎপন্ন হয়েছে। এই বিষয়ে মরুৎবর্গও ইন্দ্রকে অভিবৃদ্ধ করেছিল। অত্যন্ত ধন্য মাতা অদিতিই এই বীর ইন্দ্রকে গর্ভে ধারণ করেছিল।

৬৬। হে ইন্দ্র! তুমি যজ্ঞে আগত হও এবং আমাদের অর্ঘ্যকে স্বীকার করো। তুমি আপন রক্ষাসমূহের দ্বারা মহান।

৬৭। হে ইন্দ্র! যুদ্ধে তুমি সকল শত্রুসেনাকে অভিভূত করণশালী। হে ইন্দ্র তুমি দুষ্টঘাতী, সর্ব-উৎপাদক এবং সর্ব-শত্রুনাশক। তুমি হিংসেচ্ছুদের হত্যা করো।

৬৮। শত্রুগণকে আপন বল প্রদর্শনকারী তোমার (ইন্দ্রের) বলকে দ্যাবাপৃথিবীর অধিবাসীগণ অনুগমন করে, যেমন মাতৃগণ আপন শিশুর পশ্চাতে ধাবিত হয়। হে ইন্দ্র! এর কারণ এই যে, তুমি বৃত্রকে হত্যা করেছ। অতএব সমস্ত স্পর্ধাকারী শত্রু তোমার ক্রোধের সম্মুখে শিথিল হয়ে পড়ে।

৬৯৷ যজ্ঞ দেবগণকে ধন প্রাপ্ত করায়। হে আদিত্যগণ! তোমরা আমাদের সুখদাতা হও। তোমাদের সকলের কল্যাণী সুমতি আমাদেরও অভিমুখী হোক। তারা, পাপীদেরও ধনকে আমাদের অভিমুখে আনয়নে সুপুষ্টা হয়ে থাকে। হে সোমরস! আদিত্যগণের নিমিত্ত আমি তোমাকে দধির সাথে মিশ্রিত করছি।

৭০। হে সবিতাদেব! অহিংসিত এবং কল্যাণী রক্ষাসমূহের দ্বারা তুমি আজ আমাদের গৃহকে রক্ষা করো। হে হিরন্ময় অগ্নির জিহ্বশালী আদিত্য! তুমি আমাদের নবীন সুখ-শান্তির নিমিত্ত পালন করো। কোন পাপী বা নিন্দক যেন আমাদের ক্ষতিসাধনে সামর্থ্যবান্ না হতে পারে।

৭১। হে যজমান ও যজমান-পত্নী! অধ্বর্যুগণের দ্বারা তোমাদের দুজনের নিমিত্ত চূর্নীকৃত নির্মল মধুযুক্ত সোম নিগ্রাম জলের সাথে অভিযুত হয়েছে। হে বায়ু! তুমি আপন নিখুঁত অশ্বগণকে আপন রথে নিয়োজিত করো এবং যজ্ঞগৃহের অভিমুখে আগমন করো। আনন্দ প্রাপ্তির নিমিত্ত অভিযুত সোমরসের আপন অংশ পান করো।

৭২৷ হে গাভীগণ! তোমরা আমাদের রক্ষা করো। মহতী এবং যজ্ঞের স্বরূপ প্রদানশালিনী হে দ্যাবাপৃথিবী! তোমরা দুজনা আমাদের রক্ষা করো। তোমাদের দুজনের দুই দুই কর্ণ সুবর্ণের দানে পূর্ণ হয়ে আৰ্ছে (অর্থাৎ তোমরা স্বর্ণমণ্ডিত কর্ণশালিনী)

৭৩। কবি অর্থাৎ ক্রান্তদর্শীগণের হিতকরী, যজমানকে যজ্ঞকর্মে উৎসাহদাতা, উৎসাহবা যজমানের সহস্থান যজ্ঞগৃহে এবং সোমপান প্রভৃতি স্থানে, হে দুষ্টঘাতক মিত্র ও বরুণ! তোমরা দুজনে শীঘ্র আগমন করো।

৭৪। হে দৈবী অধ্বর্যু অশ্বিনদ্বয়! তোমরা দুজন, সূর্যের ন্যায় প্রভাসম্পন্ন রথে শীঘ্র যজ্ঞে আগত হও। তোমরা মধুর দ্বারা যজ্ঞকে আসিঞ্চিত কুরে থাক। এই মেধাবী জন পুরাতন তোমাদের দুজনকে প্রাপ্ত হোক। তং প্রত্নথা (৭১২) এবং অয়ং বেনঃ(৭১৬) মন্ত্র কথিত হয়ে গিয়েছে৷

৭৫। প্রসিদ্ধ সূর্যরশ্মিগুলির মধ্যে সুষুম্না নামক এক রশ্মি নীচেও ছিল এবং দুলোকের উপরেও ছিল। সেই রশ্মি বীর্যধায়ক এবং মহিমাবা স্রষ্টা ছিল। স্বধা (অর্থাৎ অন্ন) নিষ্পদক অন্য রশ্মিগুলি নীচে ছিল এবং পুরুষের প্রযত্নরূপ রশ্মিগুলি উপরে ছিল। (অন্ন ভোক্তার অধীন ছিল)।

৭৬৷ পরমাত্মজ্যোতি দ্যাবাপৃথিবীকে পূর্ণ করে দিয়েছে। স্বর্গকেও পূর্ণ করে দিয়েছে। উৎপন্ন এই বৈশ্বানরকে কর্মবান দেবগণ বা যজমাগণ স্থাপন করেন। ক্রান্তদর্শী ও অন্নের নিমিত্ত স্থাপিত সেই বৈশ্বানরকে অগ্নিভাবে অন্নপ্রাপ্তি ও যাগের নিমিত্ত সর্বত্র আনীত করা হয়।

৭৭। বৃত্রকে হত্যার ক্ষেত্রে যে অত্যন্ত কুশল এবং যে সোমরসে মদমত্ত হয়ে থাকে, সেই ইন্দ্র ও অগ্নিকে উথ মন্ত্র সমূহে, স্তুতির মাধ্যমে এবং লোকিক সাধুবাদের দ্বারা পরিচরিত করা হচ্ছে।

৭৮। যারা অমৃতের পুত্র দেবতা, তারা আমাদের স্তুতি সমূহ শ্রবণ করুক। তারা আমাদের সুখ দানশালী হোক৷

৭৯। (ইন্দ্রের উক্তি)-হে মরুৎবর্গ! শস্ত্র এবং স্তুতিসমূহ আমাকে (অর্থাৎ ইন্দ্রকে) সুখ প্রদান করে। অভিযুত সোম বল প্রদান করতে থাকে। আমার বজ্র আমার সাথে আহৃত হয়ে আছে। যজমান আমার আগমনের নিমিত্ত প্রার্থণা করছে। উথও আমাকে কামনা করছে। এই আমার হরী নামক অশ্ব আমাকে যজ্ঞের অভিমুখে বহন করছে। (অতএব আমার যজ্ঞে গমন করাই উচিত)।

৮০। (মরুত্বর্গের উক্তি)-হেমঘবন্! কেউই তোমা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নয় এবং তোমার সমানও কেউ নেই। তোমাকে জ্ঞাত হওয়ার যোগ্য দেবতা কে আছে? যে কর্মসমূহ তুমি সম্পাদন করেছ এবং যেগুলিকে এক্ষণে তুমি সাধন করবে, হে প্রবৃদ্ধ ইন্দ্র! সেগুলি কেউই উৎপন্ন (সাধন) করতে পারেনি এবং কেউই উৎপন্ন করণশালী হতে পারবে না।

৮১। সর্বলোকে তিনিই ব্রহ্মরূপে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন যা হতে এই উগ্রস্বভাব এবং তেজোধন ইন্দ্র উৎপন্ন। হয়েছিল। তৎক্ষণাৎ উৎপন্ন এই ইন্দ্ৰ শত্ৰুগণকে বিনাশ করে, যে ইন্দ্রের অনুযায়ী হয়েই এই সকল রক্ষা করণশালী দেবতা আনন্দ লাভ করে।

৮২। হে বহুধনশালী আদিত্য! আমার এই যে স্তুতিসূমহ আছে, সেগুলি তোমাকেই প্রবর্ধিত করছে। হে আদিত্য! অগ্নি হতে তেজস্বী, পবিত্র এবং বিদ্বান্ স্তোতা তোমাকে স্তোমের দ্বারা সংস্তুত করছে।

৮৩। যে আদিত্যের এই আর্য জগৎ দাস-সদৃশ হয় (পরিচর্যারত হয়) এবং ধন রক্ষণশালী শত্রু হয়, সেই আর্য জগৎবাসী জনগণ তোমার রক্ষণীয় এবং শত্রুগণ বধ্য হয়ে থাকে। হিংসক এবং বজ্ৰ হতে কঠোর ধনীগণ যে ধন গোপন করে রেখেছে, সেই ধনও, হে আদিত্য! তোমার নিমিত্তই সঞ্চিত হচ্ছে; (সেই কৃপণদের জন্য নয়); (অর্থাৎ তুমি ঐ সঞ্চিত ধন হরণ করে ধার্মিকদের দান করে থাক)।

৮৪। ঋষিবৃন্দের দ্বারা সহস্রশঃ বলবান-কৃত এই আদিত্য সমুদ্রের ন্যায় বিস্তার লাভ করেছে। এর সেই মহিমা সত্য। এর বল বিদ্বান্ ব্রাহ্মণগণের স্বরাজ্যস্বরূপ যজ্ঞে স্তন করা হয়ে থাকে৷

৮৫। হে-সবিতা! অহিংসিত এবং কল্যাণকর আপন রশ্মিগুলির দ্বারা তুমি আজ আমাদের যজ্ঞগৃহকে রক্ষা করো। হে সুবর্ণময় জ্বালাসম্পন্ন অগ্নির জিহ্বাযুক্ত আদিত্য!নবীন কল্যাণের নিমিত্ত তুমি আমাদের সুরক্ষিত করো। কোন নিন্দক যেন আমাদের উপর হিংসা প্রয়োগে সামর্থ্যবান্না হয়।

৮৬। হে বায়ু! সৎ-স্তোমের দ্বারা স্বর্গকে স্পর্শকারী আমাদের যজ্ঞকে তুমি প্রাপ্ত হও। পাত্রের আভ্যন্তরে বিদ্যমান, দশাপবিত্রের উপর অধঃক্ষিপ্ত হয়ে শুদ্ধীকৃত, দুগ্ধ ইত্যাদিতে বিমিশ্রিত, এবং বীর্যপ্রদ এই সোমরস তোমার নিমিত্ত উপস্থিত করতে নীত হচ্ছে।

৮৭। সুদর্শনীয়, আহ্বান করণে ঋজু ইন্দ্র ও অগ্নিকে আমরা আহ্বান করছি; যাতে আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি নিরোগ হয় এবং মিলিত হওয়ার পর পরস্পর প্রীতিযুক্ত হয়৷

৮৮। সত্যই সেই মনুষ্য যজ্ঞে শান্তি লাভ করে, যে আপন অভীষ্ট সিদ্ধির নিমিত্ত মিত্র ও বরুণকে হবিগ্রহণের অনুকূল করে নেয়।

৮৯। হে অশ্বিনদ্বয়। যজ্ঞে আগমন করো এবং দৰ্ভাসনকে (উপবেশনের দ্বারা) সুশোভিত করো। সোমরস পান করো। হে অভীষ্টবষকদ্বয়! হে ধন জয়কারীদ্বয়! তোমার বর্ষাজল দোহিত (অর্থাৎ বর্ষণ) করো। আমাদের হনন (হিংসা) করো না। হে অশ্বিদ্বয়! আগত হও।

৯০। মন্ত্রের অধিষ্ঠাতা ব্রাহ্মণস্পতিদেব যজ্ঞে আগত হোন। সুনৃতা (শোভনা সত্যবতী ত্রয়ী লক্ষণা) দেবীও আগত হোন। শত্রুকে বিক্ষুব্ধ করণশালী, হবিঃ নারাশংস-সবন-পঙক্তিকে সাধনশালী এবং মনুষ্যগণের নিমিত্ত হিতকরী যজ্ঞের দেবতা আমাদের উত্তীর্ণ করুক।

৯১। আহ্লাদক এবং জলমিশ্রিত সুবর্ণালী সোম দুলোকে ধাবিত হয়ে গমন করছে। পীতাভ, অত্যধিক এবং অনেকের দ্বারা স্পৃহনীয় ধনকে গ্রহণ করে ধ্বনি করতে করতে হরী (অর্থাৎ সোম) গমন করছে। (আহুত সোম: আকাশে গমন করে রসবাহী মেঘরূপে সঞ্চরণ করে থাকে অর্থাৎ বর্ষা করে থাকে)।

৯২। হে সপত্নীক যজমান! তোমাদের রক্ষার নিমিত্ত প্রত্যেক দেবতাকে, তোমাদের অভীষ্ট লাভের নিমিত্ত প্রত্যেক দেবতাকে, এবং তোমাদের অন্নলাভের নিমিত্ত প্রত্যেক দেবতাকে আমরা আপন দিব্য বুদ্ধি বা স্তুতির দ্বারা স্তন পূর্বক আহ্বান করছি।

৯৩। মহান্ এবং সকলের অগ্রণী অগ্নি দ্যুলোকে স্থিত হয়ে শোভিত হচ্ছে। পৃথিবীর দ্বারা বলে (শক্তিতে) অভিবর্ধিত এবং অন্নের প্রতি হিতকরী (অন্নদাতা) সেই অগ্নি আপন জ্যোতিতে তম (রাত্রির অন্ধকার) প্রবাধিত (প্রকৃষ্টরূপে ব্যাঘাতপ্রাপ্ত) করে।

৯৪। হে ইন্দ্র ও অগ্নি! পাদহীনা হয়েও এই উষা পদশালী প্রজাগণের পূর্বে পূর্বদিকে উদিত হয়। নিজে শিররহিতা হয়েও প্রাণীগণের চলন-বলনের দ্বারা বিচরণ করে থাকে। দিনে ও রাতে এইভাবে সে ত্রিশ পদ (মুহূর্ত) অতিক্রম করে।

৯৫। সকল সতেজ দেবগণ মনুষ্যগণের নিমিত্ত এক সাথে ধনযুক্ত (সধন) হোক। তারা আজ আমাদের ধন প্রদান করুক। তারা আমাদের পুত্র-পৌত্রকে ধন প্রদান করুক। তারা আমাদের নিমিত্ত ধন-প্রাপক হোক।

৯৬। পাপনাশক ইন্দ্ৰ নিৰ্ধনতা প্রভৃতি সকল নিন্দাকে (নিন্দারূপ শত্রুকে) দূর করে দিয়েছে। তারপর তারা নিন্দাহীন জন যশবান্ হয়েছে। হে বৃহত্তানু ও মরুত্বর্গের সাথে যুক্ত ইন্দ্র! দেবতাগণ তোমার মৈত্রীর (মিত্রতার) নিমিত্ত প্রযত্নবান হয়ে রয়েছেন৷

৯৭। হে মরুৎবর্গ! তোমরা সকলে মহান্ ইন্দ্রের উদ্দেশে সামরূপ স্তোত্র আচরিত (বা উচ্চারিত) করো। বৃত্রঘাতী এবং শতপ্রজ্ঞ ইন্দ্র আপন শতধার বজ্রের দ্বারা বৃত্রকে বধ করুক।

৯৮। অভিযুত সোমের ব্যাপক মাদকতায় ইন্দ্র এই যজমানের বীর্যবলকে বর্ধন করে। পূর্বকালের ঋষিগণের ন্যায় আজও তার সেই মহিমাকে স্তোতৃগণ সংস্তুত করে থাকে। ইমা উ ত্বা, প্রভৃতি (৩৩। ৮১-৮৩) তিন এবং ঊর্ধ্বো ঊ ষু ণঃ (১১।৪২) মন্ত্র কৃথিত হয়ে গিয়েছে!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *