৩১. যুল-কিফ্‌ল-এর ঘটনা

যুলকিফ্‌লএর ঘটনা

একদল মনে করেন, যুল-কিফল হযরত আইয়ুব (আ)-এর পুত্র। আল্লাহ তা’আলা সূরা আম্বিয়ায় আইয়ুব (আ)-এর ঘটনা বর্ণনাশেষে বলেন :

এবং ইসমাঈল, ইদরীস ও যুল-কিফলের কথা স্মরণ কর, তারা প্ৰত্যেকেই ছিল সবরকারী। আমি তাদেরকে আমার রহমতপ্রাপ্তদের অন্তৰ্ভুক্ত করেছিলাম। তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ।। (২১ : ৮৫-৮৬)

সূরা সাদেও আইয়ুব (আ)-এর ঘটনা বলার পরে আল্লাহ বলেন :

স্মরণ কর, আমার বান্দা ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের কথা, তারা ছিল শক্তিশালী ও সূক্ষ্মদশী। আমি তাদেরকে এক বিশেষ গুণের অধিকারী করেছিলাম অর্থাৎ পরকালের স্মরণ। অবশ্যই তারা ছিল আমার মনোনীত ও উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। স্মরণ কর, ইসমাঈল, আল-ইয়াসা’আ ও যুল-কিফলের কথা। এরা প্রত্যেকেই ছিল সজ্জন। (সূরা সাদ : ৪৫-৪৮)

কুরআনের এসব আয়াতে উল্লেখিত মহান নবীগণের সাথে যুল-কিফলের নামও প্রশংসা একত্রে উল্লেখ থাকায় স্পষ্টত বোঝা যায় যে, তিনিও নবী ছিলেন। তার সম্পর্কে এ মতই প্ৰসিদ্ধ। এটা অনেকেরই ধারণা, যুল-কিফল নবী ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন একজন পুণ্যবান ও ন্যায়পরায়ণ শাসক। ইব্‌ন জারীর (র) এ ব্যাপারে মতামত প্রকাশে বিরত রয়েছেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।

ইব্‌ন জারীর (র) ও ইব্‌ন আবু নাজীহ (র) মুজাহিদ (র) সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, যুল-কিফল নবী ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন একজন পুণ্যবান ব্যক্তি-তাঁর সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত নবীর পক্ষ থেকে তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন যে, তিনি সম্প্রদায়ের লোকজনের দেখাশোনা করবেন এবং ন্যায়-নীতির সাথে তাদের বিচার-মীমাংসা করবেন। এই কারণে তাকে যুল-কিফুল (জিম্মাদার) নামে অভিহিত করা হয়।

ইব্‌ন জারীর (র) ও ইব্‌ন আবী হাতিম (র) মুজাহিদ (র) সূত্রে বর্ণনা করেন : হযরত ইয়াসা’আ যখন বয়ােবৃদ্ধ হন তখন তিনি ভাবলেন, যদি আমার জীবদ্দশায় একজন লোককে

(?OS

সমাজের বুকে কাজ করার জন্যে দায়িত্ব দিতে পারতাম এবং কিভাবে সে দায়িত্ব পালন করে তা স্বচক্ষে দেখতে পারতাম, তাহলে মনে শান্তি পেতাম। এরপর তিনি লোকজনকে জড়ো করে বললেন, তোমাদের মধ্যে কে আছ, যে তিনটি কাজ করার অঙ্গীকার করলে তাকে আমি আমার স্থলাভিষিক্ত করব। কাজ তিনটি এই : দিনে সওম পালন করবে, রাতে জেগে ইবাদত করবে এবং কখনও রাগান্বিত হতে পারবে না। এ কথার পর বাহ্যদৃষ্টিতে সাধারণ বলে গণ্য এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল-আমি পারব। তখন তিনি বললেন, তুমি কি দিনে সওম করতে, রাত্রে জেগে ইবাদত করতে ও রাগান্বিত না হয়ে থাকতে পারবে? সে বলল, হ্যা, পারব। এরপর সেদিনের

রাখেন। সবাই নিরব থাকল, কিন্তু ঐ লোকটি দাঁড়িয়ে বলল, আমি পারব। অতঃপর নবী আল-ইয়াসা’আ ঐ ব্যক্তিকে তার স্থলাভিষিক্ত করেন।

ইবলীস তখন শয়তানদেরকে ডেকে বলল, ঐ ব্যক্তিকে পথভ্ৰষ্ট করার দায়িত্ব তোমাদের নিতে হবে। কিন্তু তারা সকলে তাতে ব্যর্থ হলো। তখন ইবলীস বলল : আচ্ছা আমিই তার দায়িত্ব নিলাম। পরে ইবলীস এক বৃদ্ধ দরিদ্রের বেশে লোকটির কাছে আসে। সে এমন সময়ই আসল, যখন তিনি দুপুরের বিশ্রামের জন্যে শয্যা গ্ৰহণ করেছিলেন। আর তিনি ঐ বিশেষ সময় ছাড়া দিনে বা রাতের অন্য কোন সময়ই নিদ্রা যেতেন না। তিনি ঘুমাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় ইবলীস এসে দরজা ধাক্কা দেয়। ভিতর থেকে তিনি বললেন, দরজায় কে? ইবলীস বলল, আমি একজন অসহায় মজলুম বৃদ্ধ লোক। তিনি দরজা খুলে দিলেন। বৃদ্ধ তার ঘটনা বলতে লাগল। সে জানাল, আমার সাথে আমার গোত্রের লোকের বিবাদ আছে। তারা আমার উপর এই এই জুলুম করেছে। বৃদ্ধ তার ঘটনার বিবরণ দিতে দিতে বিকাল হয়ে গেল। দুপুরের নিদ্রার সময় অতিবাহিত হয়ে গেল। তিনি বলে দিলেন, সন্ধ্যার পরে আমি যখন দরবারে বসব তখন তুমি এসো। তোমার হক আমি আদায় করে দেব। বৃদ্ধ চলে গেল, সন্ধ্যার পরে দরবারে বসে বৃদ্ধ আসছে কিনা তাকিয়ে দেখলেন। কিন্তু তাকে উপস্থিত পেলেন না। তালাশ করেও তার কোন সন্ধান পাওয়া গেল না।

পরের দিন সকালে বিচার আসনে বসে বৃদ্ধের জন্যে অপেক্ষা করেও তাকে দেখলেন না। মজলিস শেষে তিনি যখন দুপুরের শয্যা গ্রহণে গেলেন তখন বৃদ্ধ এসে দরজায় ধাক্কা দিল। ভেতর থেকে জিজ্ঞেস করলেন, দরজায় কে? বলা হল, অসহায় এক মজলুম বৃদ্ধ। দরজা খুলে দেয়া হল। বললেন, আমি কি তোমাকে বলিনি যে, যখন আমি দরবারে বসব তখন তুমি আসবে? সে বলল, আমার গোত্রের লোকেরা অত্যন্ত জঘন্য প্রকৃতির। যখন তারা জানল যে, আপনি দরবারে বসা। তখন তারা আমাকে আমার হক প্ৰদান করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু যখন আপনি দরবার ছেড়ে উঠে যান। তখন তারা সে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে। তিনি বললেন, এখন চলে যাও। সন্ধ্যার পরে যখন দরবারে বসব তখন এসো। কিন্তু বৃদ্ধের সাথে কথা বলতে বলতে তার আজকের দুপুরের নিদ্ৰাও আর হল না। রাত্রে দরবারে বসে বৃদ্ধের অপেক্ষা করলেন। কিন্তু তাকে দেখা গেল না। অধিক রাত্রি হওয়ায় তন্দ্ৰা তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল। তিনি বাড়ির একজনকে বললেন, আমার দারুণ নিদ্ৰা পাচ্ছে। এখন আমি ঘুমাবো। সুতরাং কেউ যদি দরজার কাছে আসতে চায় তাকে আসতে দিও না। একথা বলে যাওয়ার পর মুহুর্তেই বৃদ্ধ সেখানে উপস্থিত

( ՕՀ

হল। পাহারাদার লোকটি বলল, পিছু হটো, পিছু হটো। বৃদ্ধ বলল, আমি হুজুরের কাছে গতকাল এসেছিলাম এবং আমার সমস্যার কথা বলেছিলাম। কিন্তু পাহারাদার বলল, কিছুতেই দেখা করা যাবে না। আল্লাহর কসম!! আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন কোন লোককে তার কাছে যেতে না দিই। এভাবে পাহারাদার তাকে নিবৃত্ত করলো।

বৃদ্ধ তখন ঘরের পানে তাকিয়ে দেওয়ালের এক স্থানে একটি ছিদ্রপথ লক্ষ্য করল। ইবলীসররূপী ঐ বৃদ্ধ উক্ত ছিদ্রপথ দিয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করল এবং ভিতরের দিক থেকে দরজা ধাক্কা দিল। শব্দ শুনে যুল-কিফল-এর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি বললেন, ওহে, আমি কি তোমাকে এ সময় আসতে বারণ করিনি? সে বলল, আমি আমার নিজ প্রচেষ্টায় এসেছি। আপনি তো আমাকে আসতে দেননি। লক্ষ্য করে দেখুন, কিভাবে আমি এসেছি। তিনি দরজার কাছে এসে দেখলেন, তা সেভাবেই বন্ধ রয়েছে যেভাবে তিনি বন্ধ করেছিলেন। অথচ সে ঘরের ভিতরে তার কাছেই রয়েছে। তিনি এতক্ষণে তাকে চিনতে পারলেন এবং বললেন, তুমি তো আল্লাহর দুশমন। সে বলল, হ্যা, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আপনি আমাকে পরাজিত ও নিরাশ করে দিয়েছেন। আপনাকে রাগাষিত করার জন্যে আমি এসব কাজ করেছি- যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। অতঃপর আল্লাহ এই ব্যক্তির নাম রাখেন যুল-কিফল। কারণ তিনি যে কাজ করার জিম্মাদারী গ্রহণ করেছিলেন তা পূরণ করেছেন।

ইব্‌ন আবী হাতিম (র) ও ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে প্রায় অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ ইব্‌ন হারিছ, মুহাম্মদ ইব্‌ন কায়স, ইব্‌ন হুজায়রা আল-আকবর ও অন্যান্য আরও ঐতিহাসিক থেকেও এরূপ বর্ণনা পাওয়া যায়। ইব্‌ন আবী হাতিম (র) কাতাদা (র) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবু মূসা আশ’আরী (রা)-কে এই মিম্বরের উপর থেকে বলতে শুনেছি যে, যুল-কিফল নবী ছিলেন না। বরং তিনি একজন নেককার লোক ছিলেন। প্রত্যহ একশ’ রাকাত সালাত আদায় করতেন। তাঁর সম্প্রদায়ের নবীর কাছ থেকে তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হন এবং নবীর পরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন এবং প্রত্যহ একশ’ রাকাত করে সালাত আদায় করেন এজন্যে তাঁর নাম রাখা হয় যুল-কিফল। ইব্‌ন জারীরও কাতাদা (র) সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেন। আবু মূসা আশ’আরী (রা) সূত্রে এ বর্ণনা মুনকাতি পর্যায়ের।

ইমাম আহমদ (র) ইব্‌ন উমর (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে একবার নয় দুইবার নয়, সাতবার নয় বরং তার চেয়ে বেশিবার শুনেছি : কিফল বনী ইসরাঈলের এক ব্যক্তির নাম। এমন কোন গুনাহের কােজ নেই। যা সে করেনি। একদা তার কাছে এক মহিলা আসে, সে তাকে উপভোগ করার উদ্দেশ্যে ষাটটি দীনার দেয়। যখন সে স্বামী-স্ত্রীর মতো তাকে উপভোগে উদ্যত হলো তখন মহিলাটি কম্পিত বদনে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগল। কিফল তাকে জিজ্ঞেস করল, কাদছ কেন? আমি কি তোমার প্রতি বলপ্রয়োগ করছি? মহিলাটি বলল, না। বরং কাদার কারণ এই যে, আমি কখনও এ কাজ করিনি। অভাব-অনটনই আমাকে এ কাজে বাধ্য করেছে। কিফল বলল, এ কাজ কখনও করনি, এই প্রথমবার? অতঃপর তিনি নেমে গেলেন এবং বললেন, যাও, দীনারগুলো তোমারই। এরপর বললেন, আল্লাহর কসম! কি ফল আর কখনও আল্লাহর নাফরমানী করবে না। ঐ রাত্রেই কিফল মারা যান। সকাল বেলা তার দরজায় লিখিত দেখা যায়, আল্লাহ কি ফলকে ক্ষমা করে

দিয়েছেন। তিরমিয়ী (র) ও আমাশ সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং একে ‘হাসান’ বলে অভিহিত করেছেন। কেউ কেউ একে ইব্‌ন উমরের মওকুফ’ বৰ্ণনা বলে অভিহিত করেছেন। হাদীসটি অত্যন্ত গরীব’ পর্যায়ের। তাছাড়া এর সনদে আপত্তি আছে। কেননা এর একজন বর্ণনাকারী সা’আদ সম্পর্কে আবু হাতিম বলেছেন। ৭ + ১ – ১। আমি তাকে চিনি না, এই একটা মাত্ৰ হাদীসেই তার উল্লেখ পাওয়া যায়। অবশ্য ইব্‌ন হিব্বান তাকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন। এই সা’আদ থেকে কেবল আবদুল্লাহ ইব্‌ন আবদুল্লাহ আর-রায়ী ব্যতীত অন্য কেউ হাদীস বর্ণনা করেননি। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

গযবে ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিসমূহের কথা তাওরাত কিতাব নাযিল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিভিন্ন জাতিকে ব্যাপক আযাবে সম্পূর্ণরূপে ংস করা হয়েছে। কুরআনে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। আল্লাহ বলেন, :

و لقد اتینا موسی الكتب من بغر ما أهلككا القرون الأولى. (আমি পূর্ববতী বহু মানব গোষ্ঠীকে বিনাশ করার পর মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম। (সূরা কাসাস : ৪৩)। যেমন ইব্‌ন জারীর, ইব্‌ন আবী হাতিম ও বাযযার (র) আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণনা করেন : তাওরাত নাযিল হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীতে কোন আসমানী কিংবা যমীনী আযাব দ্বারা কোন জাতিকে সম্পূর্ণ নির্মূল করেননি। কেবল সেই একটি মাত্র জনপদের লোককেই করেছেন যাদেরকে তিনি বানরে পরিণত করেন। আল্লাহ বলেন, :

  1. A 4 : A ( /

و لقد اتينا مُؤسسى الكتاب من بشر ما أهلَكُنَا القرؤنَّ الأولى. বাযযার এ হাদীসকে মারফু বলে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু সঠিক এই যে, এটা মওকুফ’ পর্যায়ের হাদীস। সুতরাং এর দ্বারা বোঝা যায় যে, সমস্ত মানব গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। তারা সকলেই মূসা (আ)-এর যুগের পূর্বেকার লোক। সেই সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আসহাবুর রসস। সূরা ফুরকানে আল্লাহ বলেন : وعادًا أو ئمودا وأشكاب الزمن وقروناً بين ذالك كثير). وكلاً ضربنّا

w // л A Z 4 ኦ6ረ «እሯ / 4, 4 ጎረፉ, ‘ ፉ له الامثالی وکلا تیڑنا تتپنی را. আমি আব্দ, ছামুদ, রাসসবাসী এবং তাদের অন্তর্বতীকালের বহু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি। এদের প্রত্যেকের জন্যেই আমি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছি এবং প্রত্যেককেই সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছি। (সূরা ফুরকান : ৩৮-৩৯)

و کل کذب الز شل فخق و چید. তাদের পূর্বেও সত্য প্রত্যাখ্যান করেছে নূহের সম্প্রদায়, রসস ও ছামূদ সম্প্রদায়, আদ, ফিরআউন ও লুত সম্প্রদায় এবং আয়কার অধিবাসী ও তুব্বা সম্প্রদায়। ওরা সকলেই

( Օ8

রসূলগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে। ফলে তাদের উপর আমার শাস্তি আপতিত হয়েছে। (সূরা কাফ : ১২-১৪)

এ আয়াত ও এর পূর্বের আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, তারা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস ও নিৰ্ম্মল হয়েছে। এ বক্তব্য দ্বারা ইব্‌ন জারীর (র)-এর মতামত প্রত্যাখ্যাত হয়ে যায়। কেননা, তার মতে, উক্ত সম্প্রদায় হচ্ছে আসহাবুল উখদৃদ বা অগ্নিকুণ্ডের অধিপতিরা— যাদের কথা সূরা বুরুজে বর্ণিত হয়েছে। ইব্‌ন জারীর (র)-এর মতামত প্ৰত্যাখ্যাত হওয়ার কারণ এই যে, ইব্‌ন ইসহাক (র)সহ এক দলের মতে, অগ্নিকুণ্ডের অধিপতিদের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। হযরত ঈসা। মাসীহ (আ.)-এর পরে। কিন্তু ইব্‌ন ইসহাকের এ মতও বিতর্কের উর্ধে নয়। ইব্‌ন জারীর (রা) বর্ণনা করেন, ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, আসহাবুর রসস হল ছামূদ জাতির জনপদসমূহের মধ্য। হতে একটি জনপদের অধিবাসী।

হাফিজ ইব্‌ন আসাকির (র) তার ইতিহাস গ্রন্থের শুরুতেই দামেশকের প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে আবুল কাসিম আবদুল্লাহ ইব্‌ন আবদুল্লাহ ইব্‌ন জারদাদ প্রমুখের ইতিহাসের বরাত দিয়ে লিখেছেন যে, আসহাবুর রসস হায়ূর নামক স্থানে বসবাস করত। আল্লাহ তাদের মাঝে হানুযাল ইব্‌ন সাফওয়ান (আ)-কে নবীরূপে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা নবীকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করে হত্যা করে ফেলে। অতঃপর আব্দ ইব্‌ন আওস ইব্‌ন ইরাম ইব্‌ন সাম ইব্‌ন নূহ আপন পুত্রকে নিয়ে রসস ছেড়ে চলে যান এবং ‘আহকাফে’ গিয়ে অবস্থান করেন। আল্লাহ রসস-এর অধিবাসীদের ধ্বংস করেন। তারা সমগ্ৰ ইয়ামানে এবং অন্যান্য স্থানে বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। তাদেরই একজন জায়ারূন ইব্‌ন সা’দ ইব্‌ন আদ ইব্‌ন আওস ইব্‌ন ইরাম ইব্‌ন সাম ইব্‌ন নূহ দামিশকে চলে যান এবং দামেশক নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর নাম রাখেন জায়ারূন। এটাই সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মিত ইরাম নগরী। গোটা দামেশকে এই স্থানের চেয়ে অধিক পাথর নির্মিত প্রাসাদ আর কোথাও ছিল না। আল্লাহ হ্রদ ইব্‌ন আবদুল্লাহ ইব্‌ন রাবাহ ইব্‌ন খালিদ ইব্‌ন হালুদ ইব্‌ন আদকে আদি জাতির কাছে অর্থাৎ আহকাফে বসবাসকারী আন্দের বংশধরদের কাছে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা নবীকে মিথ্যাবাদী ঠাওরায়। ফলে আল্লাহ তাদেরকে বিনাশ করে দেন। এ বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, আসহাবুর রসস সম্প্রদায়ের আগমন হয়েছিল আদ জাতির বহুযুগ পূর্বে। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

ইব্‌ন আবী হাতিম (র) ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রসস আযার বাইজানের একটি কূপের নাম। ছাওরী ইকরিম সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রসস একটি কৃপ— যার মধ্যে তারা তাদের নবীকে দাফন করেছিল। ইব্‌ন জুরায়জ ইকরিমার উক্তি বর্ণনা করেছেন যে, আসহাবুর রসস ফালজি নামক স্থানে বসবাস করত। তাদেরকে আসহাবে ইয়াসীনও বলা হয। কাতাদা (র) বলেন, ফালজি ইয়ামামার একটি জনপদের নাম। আমি বলতে চাই যে, ইকরিমার মত অনুযায়ী আসহাবুর রসস যদি আসহাবু ইয়াসীন হয়, তবে তারা ব্যাপক আযাবে ধ্বংস হয়েছে।

আল্লাহ তাদের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, :

এটা ছিল কেবলমাত্র একটি মহা নাদ, ফলে ওরা নিথর নিস্তব্ধ হয়ে গেল। (ইয়াসীন : ২৯)

( O(:

এদের ঘটনা রসস-এর ঘটনার পরে আলোচনা করা হবে। পক্ষান্তরে এরা যদি আসহাবে ইয়াসীন না হয়ে অন্য কোন সম্প্রদায় হয়ে থাকে, যা স্পষ্টতই বোঝা যায়, তবে তারাও সমূলে ংস হয়েছে। সে যাই হোক না কেন, তা ইব্‌ন জারীরের মতের বিরোধী। আবু বকর মুহাম্মদ ইব্‌ন হাসান আন নরকাশ উল্লেখ করেছেন যে, আসহাবুর রসসদের একটি কূপ ছিল। তারা সে কুয়ায় পানি পান করত ও যমীনে সিঞ্চন করত। তাদের একজন ন্যায়পরায়ণ উত্তম চরিত্রের অধিকারী বাদশাহ ছিলেন। বাদশাহ মারা গেলে তারা দারুণ মর্মাহত হয়। কিছুদিন যাওয়ার পর শয়তান ঐ বাদশাহর রূপ ধারণ করে তাদের কাছে আসে এবং বলে আমি মরিনি, বরং কিছুদিনের জন্যে গায়েব হয়ে ছিলাম তোমরা কি কর তা দেখার জন্যে। এতে তারা অত্যধিক খুশী হল। সে বলল, তোমরা তোমাদের ও আমার মাঝে একটি পর্দা টাঙ্গিয়ে দাও। সেই সাথে এ সংবাদও দিল যে, সে কখনো মরবে না। অনেকেই তার এ কথা মনেপ্ৰাণে বিশ্বাস করল। এভাবে তারা ফিৎনায় পতিত হয়। তারা তার ইবাদত-উপাসনা করতে শুরু করে। আল্লাহ এদের মধ্যে এক নবী প্রেরণ করেন। নবী তাদেরকে জানান যে, এ হল শয়তান- পর্দার আড়ালে থেকে সে মানুষের সাথে কথা বলে। তিনি সবাইকে তার ইবাদত করতে নিষেধ করেন এবং এক ও লা-শারীক। আল্লাহর ইবাদত করার আদেশ দেন।

সুহায়লী (র) বলেন, ঐ নবীর কাছে ঘুমের মধ্যে আল্লাহ ওহী প্রেরণ করতেন। তার নাম ছিল হানজালা ইব্‌ন সাফওয়ান (আ)। সম্প্রদায়ের লোকজন তার উপর আক্রমণ করে হত্যা করে এবং তার লাশ কূপের মধ্যে ফেলে দেয়। ফলে কুয়ার পানি শুকিয়ে যায়। এলাকাবাসী সুখে-স্বাচ্ছন্দে থাকা সত্ত্বেও এ ঘটনার পর তারা পানির অভাবে পিপাসায় কাতর হয়। তাদের গাছপালা শুকিয়ে যায়, ফল-ফলাদি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বাড়িঘর বিনষ্ট হয়। এভাবে তারা ‘সুখের পরে দুরবস্থায় পতিত হয, সামাজিক ঐক্য ও সংহতি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং অবশেষে তারা পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এখন তাদের বাড়িঘরে জিন-ভূত ও বন্য পশু বসবাস করে। সেখান থেকে এখন ধ্বনিত হয় জিনের শো শো শব্দ, বাঘের গর্জন ও হায়েনার

WT385

ইব্‌ন জারীর (র) মুহাম্মদ ইব্‌ন কা’ব আল কুরাজী (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, কিয়ামতে প্রথম যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। সে হবে একজন কৃষ্ণকায় লোক। এই কৃষ্ণকায় লোকটি সংশ্লিষ্ট ঘটনা নিম্নরূপ : আল্লাহ তা’আলা কোন এক জনপদে একজন নবী প্রেরণ করেন। জনপদের কোন লোকই নবীর উপর ঈমান আনল না। কেবল ঐ কৃষ্ণকায় লোকটি একাই ঈমান আনল। এলাকাবাসী নবীর উপর অত্যাচার চালায়। তারা একটি কুয়া খনন করে নবীকে তার মধ্যে ফেলে দেয় এবং বিরাট এক পাথর দ্বারা কুয়াটির মুখ বন্ধ করে দেয় এবং এ অবস্থায় কৃষ্ণকায় লোকটি জঙ্গল থেকে কাঠ এনে বিক্রি করত। বিক্রিলব্ধ টাকা দ্বারা খাদ্য ও পানীয় ক্ৰয় করে ঐ কুয়ায় গিয়ে পাথর সরিয়ে নিয়ে নবীর কাছে খাদ্য পানীয় নামিয়ে দিতেন এবং তারপরে পাথর দ্বারা মুখ বন্ধ করে রাখতেন। পাথরটি উঠাতে ও নামাতে আল্লাহ তাকে সাহায্য করতেন। আল্লাহর যতদিন মঞ্জর ছিল ততদিন এ অবস্থা অব্যাহত থাকে। অতঃপর একদিন সে নিয়মানুযায়ী কাষ্ঠ সংগ্ৰহ করল এবং একত্র করে রশি দ্বারা বাধল। যখন তা উঠিয়ে আনার সংকল্প করল হঠাৎ সে তন্দ্ৰায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। সুতরাং অবসাদগ্ৰস্ত দেহে

সে ঘুমিয়ে গেল। এদিকে আল্লাহ সাত বছর যাবত তার শ্রবণ শক্তি বন্ধ করে দেন। ফলে সে এক ঘুমে সাত বছর কাটিয়ে দেয়। সাত বছর পর ঘুম ভাঙলে আড়মোড়া দিয়ে পাশ ফিরে শোয়। আল্লাহ আবারও সাত বছরের জন্যে তার শ্রবণ শক্তি বন্ধ রাখেন।

সাত বছর পর আবার তার ঘুম ভাঙে। এবার সে কাষ্ঠের বোঝা বহন করে নিয়ে আসে। সে মনে মনে ভাবল, আমি হয়ত দিনের কিছু সময় ঘুমিয়েছি। বস্তিতে এসে সে পূর্বের ন্যায় কাষ্ঠ বিক্রি করে খাদ্য পানীয় ক্রয় করে। সে উক্ত খাদ্য-পানীয় নিয়ে সেই কুয়ার কাছে গেল। কিন্তু তথায় সে কোন কুয়া দেখতে পেল না। ঘটনা ছিল এই যে, নবীকে কুয়ায় নিক্ষেপ করার কিছুকাল পর এলাকাবাসী তাদের এ কর্মের পরিণতি চিন্তা করে এবং তার কিছু আভাস-ইঙ্গিত পেয়ে নবীকে তারা কুয়া থেকে বের করে আনে। তাঁর প্রতি ঈমান আনে ও তাকে সত্যবাদীরূপে গ্ৰহণ করে। নবী তাদের কাছে ঐ কৃষ্ণকায় লোকটির খবর জিজ্ঞেস করেন। তারা কৃষ্ণকায় লোকটির কোন সংবাদ জানে না বলে জানায়। আল্লাহর ঐ নবী এরপর ইন্তিকাল করেন। নবীর ইন্তিকালের পর আল্লাহ উক্ত কৃষ্ণকায় লোকটিকে ঘুম থেকে জাগ্রত করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ঐ কৃষ্ণকায় লোকটিই সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ হাদীস মুরসাল পর্যায়ের। এতে কিছু সন্দেহের অবকাশ আছে। ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা সম্ভবত মুহাম্মদ ইব্‌ন কা’ব আল কুরাজি (র)-এর উক্তি।

ইব্‌ন জারীর (র) এ ঘটনা উল্লেখ করার পর নিজেই এর প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীকে কুরআনে বর্ণিত আসহাবুর রসস বলা ঠিক নয়। কেননা কুরআনে বলা হয়েছে- আসহাবুর রসসকে আল্লাহ ধ্বংস করেছেন। পক্ষান্তরে এই জনগোষ্ঠী। পরবর্তীতে নবীর উপর ঈমান আনে। কিন্তু ইব্‌ন জরীরের উক্ত দলীলের এই উত্তর দেয়া যায় যে, হয়ত তাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করেছিলেন। পরে তাদের সন্তানরা কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নবীর প্রতি ঈমান আনয়ন করে। ইব্‌ন জারীর (র) অতঃপর এই মত পোষণ করেন যে, আসহাবুল উখদৃদ (অগ্নিকুণ্ডের অধিপতিরা)-ই আসহাবুর রসস। কিন্তু তার এ মত অত্যন্ত দুর্বল। দুর্বল হওয়ার কারণ আসহাবুল উখদূদের আলোচনায় উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ আসহাবুল উখদৃদ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা তওবা না করলে আখিরাতে ‘, কঠোর শাস্তি ভোগ করবে, তাদের ধ্বংস হওয়ার কথা বলা হয়নি। পক্ষান্তরে, আসহাবুর রসস-এর ধ্বংস হওয়ার কথা কুরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইয়াসীন সূরায় বর্ণিত জনপদবাসীর কাহিনী

তাদের কাছে উপস্থিত কর এক জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত; তাদের কাছে তো এসেছিল রসূলগণ। যখন তাদের নিকট পাঠালাম দু’জন রসূল, কিন্তু তারা ওদেরকে মিথ্যাবাদী বলল; তখন আমি ওদেরকে শক্তিশালী করেছিলাম তৃতীয় একজন দ্বারা এবং ওরা বলেছিল, ‘আমরা

দয়াময় আল্লাহ তো কিছুই অবতীর্ণ করেননি। তোমরা কেবল মিথ্যাই বলছি।’

ওরা বলল, ‘আমাদের প্রতিপালক জানেন— আমরা অবশ্যই তোমাদের কাছে প্রেরিত

কারণ মনে করি, যদি তোমরা বিরত না হও তোমাদেরকে অবশ্যই পাথরের আঘাতে হত্যা করব এবং আমাদের পক্ষ হতে তোমাদের উপর মর্মসুদ শান্তি অবশ্যই আপতিত হবে।’ ওরা’, বলল, তোমাদের অমঙ্গল তোমাদেরই সাথে; এটা কি এ জন্যে যে, আমরা তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি? বস্তৃত তোমরা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।’ নগরীর প্রান্ত হতে এক ব্যক্তি ছুটে আসল, সে বলল, ‘হে আমার সম্পদায়! রসূলগণের অনুসরণ করা। অনুসরণ কর তাদের যারা তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চায় না এবং যারা সৎপথ প্রাপ্ত।

আমার কি যুক্তি আছে যে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং যার কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে আমি তার ইবাদত করব না? আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্য ইলাহ গ্ৰহণ করব? দয়াময় আল্লাহ আমাকে ক্ষতিগ্ৰস্ত করতে চাইলে ওদের সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবে না এবং ওরা আমাকে উদ্ধার করতেও পারবে না। এরূপ করলে আমি অবশ্যই-স্পষ্ট বিভ্ৰান্তিতে পড়বা।’ ‘আমি তো তোমাদের প্রতিপালকের উপর ঈমান এনেছি, অতএব তোমরা আমার কথা শোন।’ তাকে বলা হল, ‘জান্নাতে প্রবেশ কর।’ সে বলে উঠল, ‘হায়! আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত- ‘কি কারণে আমার প্রতিপালক আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিত

( ՕԵ

করেছেন।’ আমি তার মৃত্যুর পর তার সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আকাশ হতে কোন বাহিনী প্রেরণ করি নাই এবং প্রেরণের প্রয়োজনও ছিল না। এটা ছিল কেবলমাত্র মহানাদ। ফলে ওরা নিথর নিস্তব্ধ হয়ে গেল। (সূরা ইয়াসীন : ১৩-২৯)

পূর্বকালের ও পরবর্তীকালের বহুসংখ্যক আলিমের মতে, উক্ত জনপদটি ছিল এন্টিয়ক। ইব্‌ন ইসহাক (র) একথা ইব্‌ন আব্বাস (রা) কাব আল আহবার এবং ওহাব ইব্‌ন মুনাব্বিহ। (র) থেকে বর্ণনা করেছেন। অনুরূপভাবে বুরায়দা ইব্‌ন হাসীব, ইকরিম, কাতাদা, যুহরী (র) প্রমুখ থেকেও এই মতটি বর্ণিত হয়েছে। ইব্‌ন ইসহাক হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা), কা’ব ও ওহাব থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ঐ জনপদের এক বাদশাহ ছিল, নাম ইনতীখাস ইব্‌ন ইনতীহাস। সে ছিল মূর্তিপূজারী। আল্লাহ তার প্রতি সাদিক, সাদৃক ও শালুম নামক তিনজন রাসূল প্রেরণ করেন। কিন্তু বাদশাহ তাদেরকে মিথ্যা প্ৰতিপন্ন করে। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, উল্লেখিত তিনজনই আল্লাহর প্রেরিত রাসূল ছিলেন। কিন্তু কাতাদা (র)-এর মতে, তারা তিনজন ছিলেন ঈসা মােসীহ (আ)-এর প্রেরিত দূত। ইব্‌ন জারীর (র)ও একথা শুআয়ব আল জুব্বায়ী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উক্ত প্রেরিত তিনজনের প্রথম দু’জনের নাম শামউন ও ইউহান্না এবং তৃতীয়জনের নাম বুলাস, আর উক্ত জনপদটি ছিল ইনতাকিয়া বা এন্টিয়ক।

এ মতটি অত্যধিক দুর্বল। কেননা ঈসা মাসীহ যখন ইনতাকিয়ার অধিবাসীদের কাছে তিনজন হাওয়ারী প্রেরণ করেন, তখন ঐ শহরের বাসিন্দারাই সে সময় সর্বপ্রথম মাসীহর প্রতি ঈমান আনে। এ কারণে ইনতাকিয়া শহরটি সেই চারটি শহরের অন্যতম, যে চারটি শহরে নাসারাদের গীর্জা প্রতিষ্ঠিত ছিল। শহরগুলো এই ইনতাকিয়া, কুদৃস, আলেকজান্দ্ৰিয়া ও রূমিয়া বা পরবর্তীকালের কনস্টান্টিনিপল। এ চার শহরের কোনটিই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়নি। কিন্তু কুরআনে বর্ণিত উক্ত জনপদের অধিবাসীরা ধ্বংসপ্ৰাপ্ত হয়েছিল। যেমন তাদের কাহিনীর শেষভাগে আছে, জনপদবাসী যখন রাসূলগণের সমর্থনকারী লোকটিকে হত্যা করল, তখন আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দিলেন : 535 •L* الأصليكة وجدة قازالهم এ%u< 3) (সে ছিল একটি মহানাদ যার আঘাতে তারা নিথর নিন্তব্ধ হয়ে যায়।)। কিন্তু যদি এরূপ ধারণা করা হয় যে, কুরআনে বর্ণিত রাসূলকে প্রাচীন কালের কোন এক সময়ে ইনতাকিয়ায় পাঠানো হয়েছিল, অধিবাসীরা তাদেরকে অস্বীকার করলে আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়। পরবর্তীকালে জনপদটি পুনরায় আবাদ হয় এবং মাসীহর আমলে প্রেরিত দূতগণের প্রতি তারা ঈমান আনে।

তবে এ ব্যাখ্যা অনুযায়ী উপরোক্ত জটিলতা থাকে না। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

কুরআনে বর্ণিত উক্ত ঘটনাকে মাসীহর প্রেরিত হাওয়ারীদের ঘটনা বলে অভিহিত করার মতটি একান্তই দুর্বল— এর কারণ উপরে বলা হয়েছে। তা ছাড়া এ ঘটনা সম্পর্কে কুরআনের বক্তব্যের দিকে লক্ষ্য করলে স্পষ্টত বোঝা যায় যে, তারা ছিলেন আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।

আল্লাহ বলেন, : %1* »! এ, 21, (তুমি তাদের কাছে দৃষ্টান্ত বর্ণনা কর) অর্থাৎ হে

– / মুহাম্মদ! তােমার সম্প্রদায়ের কাছে বল, হে মুহাম্মদ 24%j। এL// …। (সেই জনপদের

অধিবাসীদের কথা) অর্থাৎ নগরবাসীদের কথা।

Ju৭ (যখন সেখানে রাসূলগণ আগমন করেছিল। আমি তাদের কাছে দু’জন রাসূল প্রেরণ

( ՕՀ)

করেছিলাম। কিন্তু ওরা তাদেরকে মিথ্যা প্ৰতিপন্ন করল, তখন আমি তাদেরকে শক্তিশালী করলাম। তৃতীয় একজনের দ্বারা।)

অর্থাৎ তৃতীয় একজনের দ্বারা পূর্বের দু’জনকে রিসালাতের ব্যাপারে সাহায্য করেছিলাম 651.432 KAJ J 1314… (তারা সবাই বলল, আমরা তােমাদের কাছে প্রেরিত হয়েছি।) জনগণ রাসূলদের প্রত্যাখ্যান করল এই বলে যে, তোমরাও তো আমাদেরই মত সাধারণ মানুষ। পূর্ববতী কাফির জাতিসমূহও তাদের কাছে প্রেরিত নবীদেরকে এই একইভাবে উত্তর দিত। মানুষ আবার নবী হতে পারে, এটা ছিল তাদের কাছে এক অসম্ভব ব্যাপার। রাসূলগণ তাদেরকে বলেন, : আল্লাহ্ জানেন যে, আমরা তোমাদের কাছে প্রেরিত রাসূল। যদি আমরা মিথ্যা দাবি করে থাকি, তবে তিনি আমাদেরকে কঠিন শাস্তি দেবেন। Jy 1, 14 এ.5 ১৫%2.jrt %1*(স্পষ্টভাবে আল্লাহর কথা তােমাদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়াই আমাদের प्रलाशिङ्।)

অর্থাৎ যে বাণী নিয়ে আমরা প্রেরিত হয়েছি তা তোমাদের জানিয়ে দেয়াই আমাদের দায়িত্ব। তারপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সুপথ দেখাবেন, যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করবেন। (…). 1514 তারা বলল, আমরা তােমাদের অশুভ মনে করি)। অর্থাৎ তােমরা যে পয়গাম( …( پگم নিয়ে এসেছ তা আমরা অকল্যাণকর মনে করি। & ليث تم تنتهوا لَتُرْجَملاً (যদি তোমরা বিরত না হও তবে অবশ্যই আমরা তোমাদের উপর পাথর বর্ষণ করব।) w

অর্থাৎ কথার দ্বারা আঘাত করবো, কিংবা কাৰ্যত হত্যাই করবো। তবে পরের আয়াতটি প্রথম অর্থেরই সমর্থন করে।’: // %1» % » &k% »1% (এবং আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি স্পর্শ করবে।) একথা দ্বারা তারা রাসূলগণকে হত্যার ও লাঞ্ছিত করার হুমকি দেয়। <A & x < %1, 1,’lt … (রাসূলগণ বলল, তোমাদের অকল্যাণ তােমাদেরই সাথে) অর্থাৎ তােমাদের উপরই তা প্রত্যাবর্তিত হবে। :4:45%- (এটা কি এই কারণে যে, তোমাদেরকে সৎ উপদেশ দেওয়া হচ্ছে?) অর্থাৎ তোমাদেরকে আমরা সত্য পথের উপদেশ ও সে দিকে আহবান জানাবার কারণেই কি তােমরা আমাদেরকে হত্যার ও লাঞ্ছিত করার ভয় দেখােচ্ছ? لى 6512818 458) بن اثثم قوم مشرفونR সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়) ফলে নৃ তােমরা সূর্ত্যকে গ্রহণ করছ আর না গ্রহণ করার ইচ্ছা! করছে। এ, 24 555 444.081 1241 3_° £L» % (অতঃপর নগরীর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি ছুটে আসলে ) { / */

অর্থাৎ রাসূলগুণুকে সাহায্য করার ও তুদের প্রতি নিজের ঈমান প্রকাশ করার জন্যে। قال يا قوم اتبعوا المثرشلثئ -رتبئوا من لا يُشكلكم أجرًا وهم

مهتدّؤن . سمي (সে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা রাসূলগণের অনুকরণ কর! অনুসরণ কর তাদের যারা তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চায় না এবং যারা সৎপথ প্রাপ্ত’ ) অর্থাৎ তারা তো তোমাদেরকে কেবল প্রকৃত সত্য গ্রহণের আহবান করেন। এর কোন বিনিময় ও পারিশ্রমিক

কামনা করেন না। অতঃপর তিনি তাদেরকে এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহকে মেনে নেয়ার জন্যে

(፩ SO

আহবান করেন এবং এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য সকলের ইবাদত উপাসনা ত্যাগ করার আবেদন জানান। যারা দুনিয়ায় বা আখিরাতে কোন উপকার করতে অক্ষম।

এরূপ করলে আমি অবশ্যই স্পষ্ট ভ্রান্তিতে পড়বো। )4 ^ 14 لفي ضلال مپین .

— `ሥ w

অর্থাৎ যদি আমি এক আল্লাহর ইবাদত পরিত্যাগ করি এবং তাঁর সাথে অন্যের ইবাদতও করি। অতঃপর ঐ ব্যক্তি রাসূলগণকে সম্বোধন করে বললেন : اتنیٰ امنگ پرنکُمْ

৩%2_X.Lর্ম (আমি তোমাদের রবের উপর ঈমান আনলাম, অতএব তোমরা আমার কথা শোের্ন!!) কেউ এর অর্থ করেছেন এভাবে যে, আমার কথা মনোযোগ সহকারে শোন এবং আমার ঈমান আনার ব্যাপারে তোমরা তোমাদের রবের নিকট সাক্ষী দিও। কিন্তু অন্যরা এর অর্থ করেছেন এভাবে যে, হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! তোমরা শুনে রাখি, আমি আল্লাহর রাসূলগণের প্রতি প্রকাশ্য ঈমান ঘোষণা করছি। এ কথা বলার পরে সম্প্রদায়ের লোকেরা তাকে হত্যা করে। কারও কারও মতে, পাথর নিক্ষেপে; কারও কারও মতে, টুকরো-টুকরো করে আবার কারও কারও মতে, একযোগে সকলে তার উপর হামলা করে হত্যা করে। ইব্‌ন ইসহাক (র) ইব্‌ন মাসউদ-এর বরাতে লিখেছেন যে, তারা তাকে পায়ে পিষে তার নাড়িতুড়ি বের করে ফেলে। ছাওরী (র) আবু মিজলাম (র) সূত্রে বর্ণনা করেন, ঐ ব্যক্তির নাম হাবীব। ইব্‌ন মুরী। তারপর কেউ বলেছেন, তিনি ছিলেন ছুতার। কেউ বলেছেন, রশি প্রস্তুতকারী; কারও কারও মতে, তিনি ছিলেন জুতা প্ৰস্তুতকারী; কারও কারও মতে তিনি ছিলেন ধোপা। কথিত আছে যে, তিনি তথাকার একটি গুহায় ইবাদতে রত থাকতেন। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেন, হাবীবুন নাজ্জার কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হন। তিনি অত্যন্ত দানশীল ছিলেন। তার সম্প্রদায়ের লোকেরা তাকে হত্যা করে। এই জন্যে আল্লাহ বলেছেন : * »1! J£ %f (তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর।) অর্থাৎ সম্প্রদায়ের লােকেরা যখন তাঁকে হত্যা করল, তখন আল্লাহ তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করান। জান্নাতের শ্যামলিমা ও আনন্দ সম্ভার দেখে তিনি

বলে ಕ್ಲಿಕ್ಜು 3 نرپكا غفزلپٹی کو لبنیٰ و جغلزی من f بابلیت قووی

.6% _k&। (হায়, আমার সম্প্রদায় যদি জানত যে, আমার রব আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন

‘ .

এবং সম্মানিতাদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।) অর্থাৎ আমি যার প্রতি ঈমান এনেছিলাম, তারা যদি

তাঁর প্রতি ঈমান আনত! ফলে তারা সে পুরস্কার লাভ করত, যে পুরস্কার আমি লাভ করেছি।

ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, ঐ ব্যক্তি তাঁর জীবিতকালে তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদেরকে এই

বলে নসীহত করেন যে, 52, Lt. Aj یا قومی ان پائوا (হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা

রাসূলগণের অনুসরণ কর।) এবং মৃত্যুর পর এই বলে নসীহত করেন :

w м / w یلتیک قومی یغلمُؤن پما غفر لی در پی و جغلزی بین المگر مثن. ‘হায়, আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত যে, কী কারণে আমার প্রতিপালক আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিত করেছেন।’ ইব্‌ন আবী হাতিম (র) এটা বৰ্ণনা করেছেন। অনুরূপভাবে কাতাদা (র) বলেছেন, মুমিন যদি কারও সাথে সাক্ষাৎ করে, তবে অবশ্যই যেন তাকে নসীহত করে। আর আল্লাহর কোন অনুগ্রহ যদি সে দেখতে পায়। তবে যেন সে তা ८°न् न २।।

‘হায়, আমার সম্প্রদায় যদি জানত যে, আল্লাহ আমাকে কী কারণে ক্ষমা করে দিয়েছেন ও সম্মানিত করেছেন।’ আল্লাহর যে অনুগ্রহ ও করুণা সে প্রত্যক্ষ করেছে ও যে নিয়ামত সে ভোগ করছে তার উপর সে আক্ষেপ করে বলছে যে, আল্লাহ। যদি আমার সম্প্রদায়কে এ অবস্থাটা জানিয়ে দিতেন তাহলে কতই না উত্তম হত! কাতাদা (র) বলেছেন, আল্লাহ তাঁর এ আক্ষেপ পূরণ করেননি। তাঁকে হত্যা করার পর আল্লাহ তাঁর সম্প্রদায়কে যে শান্তি দেন তা হল এই : 323 ق ه 1 RFM}ة 13fbى Fجf 67) ان كاناث الأصليخة واحدة فإذا هم خامؤن . তারা নিথর নিস্তব্ধ হয়ে যায়।)

وما أنزلنا على قومه من بغربه مُنْ جَثر من السَّمَاء وَمَا كنّا مُنزلين.

‘আমি তার মৃত্যুর পর তার সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আকাশ থেকে কোন বাহিনী প্রেরণ করিনি এবং প্রেরণের প্রয়োজনও ছিল না।’ অর্থাৎ তাদেরকে শান্তি দানের জন্যে আকাশ থেকে কোন বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে পাঠাবার প্রয়োজন আমার নেই। ইব্‌ন ইসহাক (র) এরূপ অর্থ ইব্‌ন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন। মুজাহিদ ও কাতাদা (র) বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোন সৈন্য পাঠান নাই, এর অর্থ অন্য কোন রাসূল পাঠান নাই। ইব্‌ন জারির (র) বলেন, প্রথম অর্থই উত্তম ও অধিক শক্তিশালী। এ কারণেই বলা হয়েছে 8ه وما كتاً منزلينfis 914 83F আমার রাসূলগণকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে এবং আমার ওলী ও বন্ধুকে (অর্থাৎ তৃতীয় ব্যক্তিকে) হত্যা করেছে, তখন তাদের শাস্তি দানের জন্যে কোন বাহিনী পাঠাবার কোন প্রয়োজন আমার छिल्ल न्ा। الاً ضيحَةً وَالحَدَةً فَاذا فم خاوكونَ এ.64 3) (তা ছিল শুধু একটি মহানাদ যার ফলে তারা ধ্বংস হয়ে নিথর নিস্তব্ধ হয়ে গেল।)

মুফাসসিরগণ বলেছেন, আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে জিবরাঈল (আঃ)-কে পাঠান। জিবরাঈল (আ) তাদের নগর তোরণের চৌকাঠ দুটি ধরে একটি মাত্র চিৎকার ধ্বনি দেন। ফলে নগরবাসী স্তব্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ তাদের কথাবার্তার আওয়াজ ও চলাফেরার গতি বন্ধ হয়ে নীরব নিস্তব্ধ হয়ে যায়, পলক মারার মত একটি চক্ষুও অবশিষ্ট ছিল না।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আলোচ্য জনপদ ইনতাকিয়া নয়। কেননা এরা আল্লাহর রাসূলগণকে অস্বীকার করার ফলে ধ্বংস হয়ে যায়। আর ইনতাকিয়ার অধিবাসীরা মাসীহর প্রেরিত হাওয়ারী দূতদের প্রতি ঈমান ও আনুগত্য প্রদর্শন করে। এ কারণেই বলা হয়েছে যে, ইনতাকিয়া-ই প্রথম নগরী যেখানকার অধিবাসীরা ঈসা মাসীহ (আ)-এর উপর ঈমান এনেছিল। তবে এ ক্ষেত্রে তাব্বারানী (র) ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : তিন লোক অগ্রগামী অর্থাৎ সকলের আগে ঈমান এনেছে। তন্মধ্যে মূসা (আঃ)-এর প্রতি সর্বাগ্রে ঈমান আনেন ইউশী ইব্‌ন নূন; ঈসা। (আ)-এর উপর সর্বপ্রথম ঈমান আনেন সাহিবে ইয়াসীন অর্থাৎ সূরা ইয়াসীনে বর্ণিত লোকটি এবং মুহাম্মদ (সা)-এর প্রতি সর্বাগ্রে ঈমান আনেন আলী ইব্‌ন আবী তালিব। এ হাদীস দু’টি প্রামাণ্য নয়। কারণ এ হাদীসের অন্যতম বর্ণনাকারী হুসায়ন মুহাদিসদের নিকট পরিত্যক্ত। তাছাড়া সে একজন চরমপন্থী শী’আ। সে একাই এ হাদীস বর্ণনা করেছে, অন্য কেউ বর্ণনা করেননি। এটা তার একান্তই দুর্বল হওয়ার প্রমাণ। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *