৩০. নটে দত্তকে ভূতনাথের এই প্রথম দেখা

নটে দত্তকে ভূতনাথের এই প্রথম দেখা। বেশ লম্বা। চেহারা। ছোটবাবুর মতো অমন গায়ের রঙ নয়। কিন্তু স্বাস্থ্য ভালো। বেশ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে চাইলে একবার ভূতনাথের দিকে। তারপর যেন বৃন্দাবনের দিকে চেয়ে জিজ্ঞেস করলে—এ কে?

বৃন্দাবন কী বললে বোঝা গেল না।

চুনীদাসী যেন বিরক্ত হয়ে বললে—বিন্দাবন, একে সরিয়ে নিয়ে যা না তাড়াতাড়ি!

বৃন্দাবনকে আর সরাতে হলো না। ভূতনাথ নিজেই উঠলো। সমস্ত শরীর যেন টলছে। ওঠবার ক্ষমতাও যেন তখন আর নেই তার। তবু উঠতে হয়। মধুসূদন, লোচন ওরা সব কখন এক ফাঁকে সরে পড়েছে। ভূতনাথ দরজার কাছে এল। বৃন্দাবন ধরতে এসেছিল। বললে-একা বাড়ি যেতে পারবেন শালাবাবু?

–তোমার ভয় নেই বৃন্দাবন, আমি ঠিক যেতে পারবো। কথাটা বললে বটে কিন্তু যেন শক্তি নেই সত্যি-সত্যি তার শরীরে। আস্তে আস্তে সিঁড়িটা বেয়ে নিচে নেমে এসেও যেন ঠিক হদিস পাওয়া গেল না কোন্ দিকে রাস্তা। পেছনে যেন কারা হো হো করে হেসে উঠলো। বিজপের হাসি। ভূতনাথের সেদিন মনে হয়েছিল, তাকে লক্ষ্য করে তাদের হাসি যেন অকারণ। সে তো চুনীদাসীর কাছে নিজের ইচ্ছেয় আসেনি। তবে সে নেশা করেছে বলে কি হেসেছে। অথচ নেশা তো সে করতে চায়নি। কিন্তু তাকে নেশা করিয়েই বা তাদের লাভ কী! তাকে দিয়ে তাদের কী উপকার হবে। ছোটকর্তাকে এখানে পাঠাবার মালিক নাকি সে। সে বললেই বা ছোটকর্তা আসতে যাবে কেন! আর তা ছাড়া ছোটবৌঠানই বা এসব শুনলে কী বলবে।

রাস্তায় নেমে কোন্‌দিকে ভূতনাথ যাবে তা যেন হঠাৎ ঠিক করতে পারলে না। কলকাতার রাস্তায় তখন বেশ অন্ধকার। রাত হয়েছে বেশ। কয়েকটা দোকানে তখনও টিমটিম করে তেলের আলো জ্বলছে। বউবাজারের বড়বাড়ি লক্ষ্য করে চলতে চলতে ভূতনাথের একবার সন্দেহ হলো—ঠিক পথেই চলেছে তো সে! রাত্তির বেলা কলকাতার যেন অন্য এক রূপ। যেন আদিম কলকাতার এ এক অনাবৃত চেহারা। এই সূতানুটিতেই বুঝি ছিল পর্তুগীজদের লুকিয়ে থাকবার জায়গা। সপ্তগ্রামের বন্দরে জাহাজ লুঠ করে মেয়েদের এনে লুকিয়ে রাখতে এখানে। এই কলকাতার জঙ্গলে। ভূতনাথের মনে হলো এখন যেন আবার জঙ্গলের মতন বীভৎস মনে হচ্ছে এই কলকাতাকে। আর একটু এগোলেই যেন রতন সরকারের বাড়ি। ধোপ রতন সরকার। সাহেবদের সঙ্গে মেয়েমানুষের দালালি করে বড়লোক হয়ে গিয়েছিল।

হঠাৎ যেন বড় ভয় করতে লাগলো ভূতনাথের। বইতে পড়া সেই কলকাতার সঙ্গে যেন হুবহু মিলে যাচ্ছে। সেই ডিহি কলকাতার পশ্চিমে ভাগীরথী। উত্তরে সূতানুটি, পূর্বে যতদূর যাও কেবল নোনা জমি। আর দক্ষিণ বরাবর গোবিন্দপুর। কলকাতার চারদিকে কাঠের বেড়া। ফ্যান্সি লেন-এর মোড় থেকে কাঠের বেড়া আরম্ভ। সেখান থেকে লারকিন্স লেন-এর ভেতর দিয়ে মিশেছে গিয়ে। একেবারে ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান স্ট্রীটে। তারপর বারোটা লেন, ম্যাঙ্গো লেন, মিশন রে। সেখান থেকে বরাবর লালবাজার, রাধাবাজার, এজরা স্ট্রীট, আমড়াতলা স্ট্রীট, আর্মানিয়ান স্ট্রীট, হামাম গলি, মুরগীহাটা, দর্মা হাটা, খেংরাপটি, বনফিল্ডস লেন, রাজা উডমণ্ড স্ট্রীট দিয়ে এসে একেবারে গঙ্গার ধারে মিশেছিল। এই কয়লাঘাটা স্ট্রীট আর ফেয়ার্লি প্লেস-এর মধ্যে ছিল পুরোনো কেল্লা। আর তার পেছনে ছিল মাল গুদাম ঘর আর ছোট ডক। চার্চ লেন আর হেস্টিংস স্ট্রীট-এর মোড়ে মাটির বুরুজের ওপর কামান সাজানো থাকতো।

চলতে চলতে ভূতনাথ যেন আর এক যুগে এসে পৌঁছে গিয়েছে। নেশার ঘোরে যেন মনে হচ্ছে যা কিছু দেখছে ভূতনাথ সবই অচেনা। এ-সব নতুন জায়গা। কোথায় জানবাজার, কোথায় কসাইটোলা, কোথায় নাপতেহাটা, কলুটোলা, কোথায় কঁকি পটি, হোগল কুড়িয়া, পার্শিবাগান, উল্টোডিঙি, নারকেলডাঙাভূতনাথ যেন সারা কলকাতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর্মানি পর্তুগীজ আর ওলন্দাজেরা যেন আবার এসে পড়েছে কলকাতা শহরে। মেটকাফ হল-এর কাছে যেন তাঁতিরা এসে আস্তানা করেছে আবার। ওলন্দাজেরা এসে উঠেছে ব্যাঙ্কশাল স্ট্রীট-এর কাছে। ক্যানিং স্ট্রীট-এর ধারে এসে উঠেছে পর্তুগীজ আর আর্মানিরা। আর ওলন্দাজরা খিদিরপুর থেকে শুরু করে সাঁকরেলের খাল পর্যন্ত বাণিজ্য জুড়ে দিয়েছে কাটিগঙ্গার ধারে ধারে। আলুগুদামের ওপরেই যেন পর্তুগীজদের তুলোর গুদাম উঠেছে আবার।

চুনীদাসীর জানবাজারের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পর্যন্ত ভূতনাথের যেন দিক ভুল হয়ে গিয়েছে। এ কোথায় সে এল! এ তো তার চেনা কলকাতা নয়! কোথায় সেই মাধববাবুর বাজার। সেই বনমালী সরকার লেন! ভূতনাথের মনে হলো—সারা রাত যেন সে এমনি করেই সমস্ত কলকাতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। জানবাজারের ফিরিঙ্গী পাড়ায় তখনও কিছু কিছু লোক জেগে আছে। কিন্তু ওদিকে চৌরঙ্গীর রাস্তায় সব যেন নিঃঝুম। রাস্তার ফুটপাথের ওপর সকালের কুলীকাবারিরা বেপরোয়া শুয়ে আছে। পথ বদলে আবার ভূতনাথ ফিরলে উত্তর দিকে। মোড়ের মসজিদটার সামনে তখন একটা ষাড় বসে বসে জাবর কাটছে। কয়েকজন কাফ্রি যেন জাহাজ থেকে নেমে তখনও কলকাতা দেখা শেষ করে উঠতে পারেনি। টলতে টলতে পাশাপাশি ছড়ি দোলাতে দোলাতে চলেছে। হল্লা করতে শুরু করে দিয়েছে। তারপর একেবারে সোজা রাস্তা ধরে বৌবাজার। কিন্তু মেছুয়াবাজারের কাছে এসে যেন খেয়াল হলো। বনমালী সরকার লেন তো সে ছেড়ে এসেছে অনেক দুরে। এধারে কর্নওয়ালিশ স্ত্রীট আর ওধারে বুঝি চিৎপুর রোড। মাঝখানের গলিতে কয়েকটা খোলার বাড়ি। এক একটা দলে দু’তিন জন কাফ্রি যেন বসে বসে গল্প করছে চায়ের দোকানের। সামনে। এ-পাড়ায় মদের দোকান যেন একটু বেশি। এখানে যেন এখনও বেশি রাত হয়নি। সন্ধ্যের মতো আবহাওয়া। ভূতনাথকে দেখেই যেন একদল কাফ্রি তার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইল। বড় ভয় হলো ভূতনাথের। এ-পাড়ায় এমন সময় তার আসা উচিত হয়নি। দিনের বেলা এদের এখানে দেখেছে ভূতনাথ। জাহাজ থেকে নেমে এরা দু’তিন জন মিলে এক-একটা খোলার বাড়ি ভাড়া করে থাকে। তারপর গুণ্ডামি করে। অনেকবার লোক খুন হয়েছে এ-পাড়াতে। আগে ‘সোমপ্রকাশে প্রায়ই খুনোখুনির খবর থাকতো এখানকার। গলি গুলো সপিল। এক একটা গলি কোথায় গিয়ে মিশবে কিছু বলা যায় না। এই রকম জায়গাতেই বুঝি ব্রজরাখাল একদিন গুণ্ডার হাতে পড়েছিল। ব্রজরাখালের ভয় ছিল না। গুণ্ডার দল সামনে আসতেই রুখে দাঁড়িয়েছিল ব্রজরাখাল। তারপর সে কী অলৌকিক সাহসের সঙ্গে সেদিন ব্ৰজরাখাল এখান থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসতে পেরেছিল—তা ভূতনাথ শুনেছে।

ব্ৰজরাখাল বলে—গুণ্ডারা হলো ভীরুর জাত—প্রথমটা রুখে দাঁড়ালে আর কিছু ভয় নেই।

কিন্তু ভূতনাথের তেমন সাহস নেই। এক জায়গায় জন পঞ্চাশ কাফ্রি ভিড় করে বেঞ্চিতে বসে চা খাচ্ছে। কালো কালো ভূতের মতন চেহারা সব। কোকড়ানো চুল। একজনের হাতে লাঠি। ভূতনাথ নিঃশব্দে সরে আসছিল। হঠাৎ মনে হলো যেন তার সামনে আগে-আগে একটা ঘোড়ার গাড়ি চলেছে। লাল বাতি দুটো চেনা যায় অস্পষ্ট। এত রাত্রে এ-পাড়া দিয়ে ঘোড়ার গাড়ি যায় কেন! ব্রজরাখাল এ-সব রাস্তা দিয়ে চলতেই বারণ করেছিল ভূতনাথকে। মিছিমিছি বিপদ ডেকে আনা। ঘোডার গাড়িটা দলের সামনে আসতেই কেমন যেন একটু মৃদু আলোড়ন শুরু হলো কাফ্রিদলের মধ্যে। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই একজন উঠে গিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ালো।

ভূতনাথও থেমে গিয়েছে। লুঠপাট করবে নাকি ওরা। চোখের সামনেই খুনখারাপি হবে নাকি! খানিকক্ষণ দাঁড়ালো ভূতনাথ চুপ করে। তাকে কি কেউ দেখতে পায়নি। সারা মেছোবাজারের সব জায়গায় যেন এখন ওরা ছাড়া আর কেউ নেই। ওদেরই আধিপত্য এখানে। এখানে এখন যদি তাকে কেউ খুন করেও ফেলে যায় তো কেউ ধরবার নেই! পুলিশের চিহ্নটুকু পর্যন্ত নেই কোথাও। শুধু নিবিড় অন্ধকার আর সেই পটভূমিকায় ওই ক’টা কাফ্রি গুলজার করছে সমস্ত পাড়াটা। সত্যি-সত্যি ভূতনাথের মনে হলো এ কলকাতা শহর নয়, এ যেন আদিম জঙ্গল। সুন্দরবনের শেষ প্রান্ত। সমুদ্র থেকে চর উঠেছে। হোগলা বন আর গরান কাঠের জঙ্গল চারিদিকে। পর্তুগীজরা বুঝি সাতগাঁ থেকে জাহাজ লুট করে একপাল মেয়েমানুষ ধরে এনেছে এই জঙ্গলে। চড়া দামে বেচবে ইংরেজদের কাছে। ইংরেজরা তো বউ আনে না এদেশে। মোগল নবাব বাদশারা ইংরেজ মেয়ে দেখলে বড় নজর দেয়। একটা সাদা চামড়ার মেয়ে দিলে সমস্ত হিন্দুস্থানটার পত্তনি লিখে দিতে পারে। এমনি দর ওদের তখন। কিন্তু তবু মেয়েমানুষের অভাব মিটিয়েছে ওলন্দাজরা। মেয়েরা ইংরেজী ভাষা জানে না। কথা বলতে, ভাব করতে অসুবিধে হয়। কিন্তু ধোপা রতন সরকার আছে। দোভাষী। এই দালালি করে করে ইংরেজীটা বলতে কইতে পারে। মেয়েমানুষ বেচে বেচে মোটা টাকা আয় তার।

রাত্রে যেন কলকাতার আদিম রূপ বেরিয়ে পড়ে শহরে। কত খুন হয় হ্যালিডে স্ট্রিট-এ, কত লুটপাট জখম হয় খিদিরপুরের পোলের ওপর আর খুনখারাপি হয় মেছোবাজারে, দিনের কলকাতা তা জানতে পারে না। ল্যাণ্ডো গাড়ি চলেছে হয় তো টগবগ করতে করতে, হঠাৎ গলির ভেতর কোথা থেকে দৌড়ে আসে গুণ্ডারা। গাড়িতে উঠে মলমলের পাঞ্জাবীর পকেট থেকে ঘড়ি, ঘড়ির চেন ছিনিয়ে নিয়ে চলে গেল। সাইবাবার সাঞ্চিতে কত বাবু নিঃসন্দেহে ঢুকেছে চা খেতে, তারপর জুয়া খেলার প্রলোভনে পড়ে ধন প্রাণ হারিয়ে চিরকালের মতো নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছে। পুলিশ টেরও পায়নি। বেচারাম চাটুজ্জে মশাই আদি ব্রাহ্ম সমাজের আচার্য ছিলেন। থাকতেন বেহালায়। সমাজের সভার শেষে ঘোড়ার গাড়িতে ফিরছিলেন। খিদিরপুরের পুলের ওপর বলা নেই কওয়া নেই তাড়া করলে কাফ্রিকা। কিন্তু বেচারাম চাটুজ্জে মশাই মোটা লাঠি নিয়ে যাওয়া আসা করতেন। সেদিন একাই আটকালেন কাফ্রি গুণ্ডাদের ওই এক লাঠির জোরে। তারপর ছুটুকবাবুর আসরে আর একদিন গান হচ্ছিলো। ভূতনাথ তবলা বাজাচ্ছিলো। হাঁফাতে হাঁফাতে বিশ্বম্ভর হাজির।

—এত দেরি কেন রে বিশে? প্রশ্ন করলে সবাই। বিশ্বম্ভরের গজল গানের জন্যে আসর জমছিল না এতক্ষণ!

বিশ্বম্ভর তখনও হাঁফাচ্ছে। বললে—কম্বুলিটোলায় এক কাণ্ড হয়ে গেল। গুণ্ডারা তলোয়ার ঘোরাতে ঘোরাতে লোহার সিন্ধুক নিয়ে উধাও।

ব্ৰজরাখাল যখন রাত্তির করে ফিরতে, কতদিন কত বিপদের কথা এসে বলেছে। দিনের বেলায় ততটা নয় কিন্তু রাত্রে একলকাতা নরক হয়ে ওঠে। যে রামবাগানে সাহেববীণার ঘরে বৈদূর্যমণি যেতেন তাকেই কতবার থানায় যেতে হয়েছে খুনের দায়ে। ওই পাড়াটাতেই খুন জখম হতে বেশি।

ভূতনাথ তখনও হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। নিঝুম রাস্তার ওপর একটা ঘোড়ার গাড়ি। আর কাফ্রিরা তাকেই ঘেরাও করেছে। গাড়ির ভেতরে যদি কেউ থাকে! তা হলে চোখের সামনে হয় তো খুন খারাপি হয়ে যাবে! হঠাৎ যেন একটা গোলমাল শুরু হলো। গাড়োয়ান গাড়ি ছেড়ে দৌড়ে বুঝি পালালো। তারপর শুরু হলো আক্রমণ! গাড়ির জানালা-দরজা বন্ধ ছিল। কিন্তু সামান্য আঘাতেই খুলে গেল সেটা। তারপর যে-কাণ্ড হলো…।

ভূতনাথের মাথায় যেন তখন নেশা বেশ তীব্র হয়ে উঠেছে। চোখে অন্ধকার লাগলো সব। হঠাৎ যেন সব ঝাপসা হয়ে এল। আবার সব পরিষ্কার। মনে হলো কোথাও যেন কেউ নেই। সে যেন স্বপ্ন দেখছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। এতক্ষণ যা দেখছিল সে, সব তার কল্পনা। আবার মনে হলো—না! জাহাজ এসেছে কলকাতায়। ঝড় জল বিদ্যুৎ। মুন্সী নবকৃষ্ণ ছোট ছেলেটি তখন। দাঁড়িয়ে আছে গঙ্গার ধারে চাকরির চেষ্টায়। কোম্পানীর সাহেবরা নামলে একটা চাকরির তদ্বির করতে হবে। কখনও মনে হলো-কলকাতায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছে সিরাজউদ্দৌলা। পুড়ে ছারখার হচ্ছে ইংরেজদের কেল্লা। চার্চ সেন-এর মোড়ের কামানটা থেমে গিয়েছে। শুধু ধোঁয়া উঠছে অল্প-অল্প সামনের নল দিয়ে। সিরাজউদ্দৌলা ভারী খুশি। শিবিরের সামনে দাঁড়িয়ে দেখছে আর হাসছে। আলীবর্দী খাঁ সত্যিই বলেছিল ইংরেজদের না তাড়ালে তোমার রাজ্যে শান্তি আসবে না। সেই কলকাতার নাম বদলে রাখা হলো আলীনগর। চোখের সামনে আকাশের কালো মেঘের মত সব দৃশ্য যেন ভেসে যায়। তারপর খানিকক্ষণের জন্য মনে হয় সব ঠিক আছে। বড়বাড়ির চোরকুঠুরিতে যেন সে শুয়ে আছে। দেয়ালের গায়ের উড়ন্ত পরীরা যেন সজীব হয়ে উঠেছে। আস্তে আস্তে মাঝ রাত্রে যেন কে দরজায় টোকা মারলো। প্রথমে ধীরে ধীরে তার পর জোরে, আরো জোরে, কিন্তু দরজা খুলতেই একটা দমকা বাতাস এসে সমস্ত ঘরের জিনিষপত্র লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *