সেইদিন হইতে এক মহাযুদ্ধের সূত্রপাত হইয়া রহিল। বাসুদেবপুরের ওরাও কম নয়। সংখ্যায় তারা বেশি, দাঙ্গাতেও খুব ওস্তাদ। শুকদেবপুরের মালোরাও বিপদ আসিলে পিছ-পা হয় না। বিশেষত,তাহাদের মোড়লকে ইহারা আটকাইয়া রাখিয়াছে। ঝগড়াটা ছিল অনেক দিন আগের। বিনা রক্তপাতে যাহাতে মীমাংসা হয় তারই চেষ্টা করিতে মোড়ল তাহাদের গ্রামে গিয়াছিল। আর ফিরিয়া আসে নাই। কাজেই শুকদেবপুরের মালোরা স্থির থাকিবে কি করিয়া? একটা মহাপ্রলয়ের আভাস লইয়া প্রহরগুলি অতিক্রান্ত হইতে থাকিল। পুরুষদের প্রস্তুতির আড়ম্বর আর নারীদের আতঙ্কের নিঃশ্বাসে শুকদেবপুরের বাতাস ভারী হইয়া উঠিল। প্রতি ঘর হইতে বাহির হইতে লাগিল লাঠির তাড়া, চোখাচোখা মুলিবাঁশের কাঁদি, এককেঠে, কোচ, চল্ প্রভৃতি নানাবিধ সরঞ্জাম। সবকিছু সাজাইয়া গোছাইয়া লইয়া মালোরা একটিমাত্র ইঙ্গিতের অপেক্ষায় প্রস্তুত হইয়া রহিল।