ভালোবাসিলে ভালো যারে বাসিতে হয়, সে যেন পারে ভালোবাসিতে… নিজমনেই গুনগুন করছিলাম।
বৃন্দাবনে কুরুক্ষেত্র কিম্বা কুরুক্ষেত্রে বৃন্দাবন, চুলচেরা বিচারে বলা কঠিন, কিন্তু তাহলেও অঘটনটার ল্যাজামুড়ো মিলিয়ে সম্রাট শালীবাহনের তেমন ভালো লাগবার কথা নয়। এবং লাগছিলও না। সে যুগের সম্রাট এ-অবস্থায় পড়লে কী করতেন কে জানে, কিন্তু একালে তার দরাজ সংস্করণ হয়েও এই লঘুভার বহনে যেন আমার ঘাড় ভাঙছিল। সত্যি, ব্যাপারটা যেন সহনশক্তির এলাকা ছাড়িয়ে যায়…
শাখা-প্রশাখা পত্র-পল্লব সব নিয়ে নিজগুণেই মর্মরিত হচ্ছি…..
এমন সময়ে সেই গুঞ্জরণের মাঝখানে কল্পনা হাওয়ার মতই বয়ে এলো।
দ্যাখো, এই ব্যাপারটায় আমিও ভারী অবাক হয়েছি। ব্যাজ-আঁটা সেই গোঁফালো অফিসারটির মোটর সাতদিনের মধ্যে চারবার আমাদেরই দোরগোড়ায় এসে বেগডালে, এটা যেন একটু কেমন-কেমন না? তুমি কী বলে? কল্পনার কপালে একাধিক রেখা পড়তে দেখা যায়।
আমি আবার কী বলব। তিক্তকণ্ঠে আমি বলি, কালকে লেকের ধারে বেড়াবার সময় দেখলে না? মাটি খুঁড়ে কোথাথেকে রেগুলার একদল কুচকাওয়াজ বেরিয়ে পড়লোদ্যাখোনি?
দেখেছি। কল্পনা একটু মুচকি হাসে: তা—শোনা আমাদেব তো দেখতে মন্দ নয়।
বা রে! দেখতে কেউ অমন্দ হলেই বুঝি আপামব সবাই বিশ্বগ্রাসী দৃষ্টি মেলে তাকে গিলতে থাকবে? বেশ কথা আর কি! লক্ষ্য কবে দেখলে এর চেয়ে অশোভন দৃশ্য আর কিছুই হতে পারে না। বিশেষ কবে শোভনা আমার শালী বলে তার বেলায় একথা তো আমি ভাবতেই পারি না। কেমন যেন শালীনতায় বাধে! ওকে দেখবার ভাব—যদি দেখতেই হয়—আপাততঃ তা কেবল আমার একলারই থাকা উচিত। স্পষ্টবাক্যে এই কথা ওঁর কাছে ব্যক্ত করব কি না ভাবছি, উনি আমার চিন্তাধারায় বাধা দিলেন—আমি মেসোমশায়ের কথাই ভাবছি।
হ্যাঁ, সে-ই আরেক ভাবনা! সে দিকটাও ভাবতে হয় বইকি। শশাভনার বাবা, জনৈক বাঙালী মেজর, যুদ্ধের উদ্দেশ্যে নিরুদ্দেশে যাবার আগে শোভনাকে আমাদের হাতে সঁপে দিয়ে গেছেন। ভেবে দেখলে কতো বড়ো দায় আমার ঘাড়ে। আমার—আমার না হোক, কল্পনারই হলো—আমার সেই কাল্পনিক মেসোমশাই আঁর পরম স্নেহের একমাত্র কন্যারত্নকে—মাতৃহীনা (এবং কে জানে, এতদিনে পিতৃহারাও কি না!) মেয়েটিকে আমাদের কাছে গচ্ছিত রেখে গেছেন—আর এদিকে তাঁর আদরের দুলালী তাঁর মেজর-শিকেও টেক্কা মেরে সারা সৈন্যবাহিনীর মেয়ে-কম্যাণ্ডার হতে চলেছে। রীতিমতো কুইকমার্চ করেই চলেছে বলা চলে।
এখন আমার মুনে পড়ে। শোভনাকে রেখে যাবার সময় কী যেন তিনি বিশেষ কবে বলতে চেয়েছিলেন। কী যেন একটা কখা বলি-বলি করেও বলতে পারছিলেন না।
আত্মজার জন্যে পিতৃসুলভ উৎকণ্ঠা অনুমান করে আমি তাকে অভয়-দানের চেষ্টা করেছি।
বলতে গেছি আমাদের দিক দিয়ে এবং আমোদের দিক দিয়ে কোনো কিছুর অভাব ঘটতে দেব না।
না, না, ভয়ের কিছু নেই, তেমন ভয়ের কিছু না–বলে উঠেছেন তিনি—তবে মেজরের মেয়ে কি না, এই যা।
এই কথা বলে একটা কথা যেন তিনি চেপে গেলেন বলেই আমার মনে হয়েছিল তখন। এখন দেখছি সেই এক কথার মধ্যেই সমস্ত কথা তিনি খোলসা করে বলে গেছেন। মেজরের মেয়ে—এই একটি কথাই খুব লাখ কথার এক কথা। মেজরের মেয়েকে আপাতদর্শনে মেজার করা যায় না।
এবং মেজরের মেয়ের কাছে থাকা যে যুদ্ধের কাছাকাছি থাকা, একথাই বা কে তখন ভাবতে পেরেছিলো? কিন্তু ভ্রমেও না ভাবলেও ক্রমেই তা অভাবিতভাবে প্রত্যক্ষ হতে লাগলো।
এই শহরেই কোথাও একটা ট্রেনিং ক্যাম্প খোলা হয়েছে শুনেছিলাম। ঐ ক্যাপের হবু (এবং গবু) সৈন্যবাহিনীর তিনশো পঁয়তাল্লিশ জনের ভেতরে তিনশো তেতাল্লিশ জনাই তামাদের শোনাকে জানে একথা জানা ছিল না। ক্রমশঃ জানা গেল।
তোমার মেসোমশাই কেন যে এই জাঁদরেল মেয়েটিকে এখানে ছেড়ে গেলেন এখন টেব পাচ্ছি। কল্পনাকে আমি জানাই আমাদের হোম্ ফ্রন্টু সামলানোর জন্যেই, বোঝা যাচ্ছে এখন।
খুক করে একটু কেশে ড্রইংরুমের দ্বার ভেদ করতেই খসখসে আওয়াজ কানে এল। সামান্য তাড়াহুড়ার শব্দ! ঘরের ভেতর অকস্মাৎ কী যেন একটা ঘটে গেল। কিছু একটা ইতববিশেষ। একটু ইতস্ততি। সড়াৎ করে জানালা-পথে তীরবেগে কে যেন তরোহিত হয়ে গেল বলে মনে হয়।
চক্ষুকর্ণের ভ্রম হওয়াই সম্ভব। কেননা, দ্বারপথে যা ধারণা হয়েছিল আরেকটু ভ্রমণ করে ঘরের ভেতর এসে তার সমর্থনে কিছুই পেলাম না। সব দুই যথাযথ। অ্যাজ ইট ইজ। যেখানকার যা সেখানেই আছে। ওলোট-পালটের চিহ্নমাত্র নেই। শোভনা পিয়োনোর টুলে বসে একখানা গৎ বাজাচ্ছে—ঠিক বাজাচ্ছে না বাড়াতে যাচ্ছে। রবিবাবুর গান কিন্তু স্বরলিপির খাতাটা উলটো করে ধরা, এইটুকুই যা ব্যতিক্রম দেখা গেল। তার বাহাদুরি।
জানালা দিয়ে গেল—ওটা কে? আমি জিগেস করলাম।
বেড়াল। অম্লানমুখে ও জানায়।
তুমি আসবার পর থেকে এ বাড়িতে বেড়ালের উপদ্রবটা যেন বড্ড বেড়েছে মনে হয়।
আমাকে কি আপনি মৎস্যকন্যা বলে সন্দেহ করেন নাকি? শাণিত চাহনির সঙ্গে শোভনার শানানো জবাব।
না না, তা বলছিনে। তবে কি না— বলতে বলতে আমি স্পষ্টবক্তা হই: শোনা, তুমি এখনো মাইনর তা জানো? এখন আর ছোট্ট মেয়েটি নও।
কথাটা পরস্পর বিরোধী হোল বুঝতে পারি। কিন্তু রাগের ভাষা অনুরাগের ভাষণের মতই মুখর হয়ে উঠলে নিজের তালজ্ঞান হারায়। কী বলতে কী বলা হয়ে যায়। কিন্তু তাহলেও সতের বছরের মেয়েকে বালিকা বলতে পারি না, নাবালিকাই বলতে হয়।
আপনিই বা কী এমন মেজর যে গায়ে পড়ে উপদেশ দিতে এসেছেন? শোভনাও একদম অস্পষ্ট না।
আর যাই হই আমি তোমার মতো নাবালক নই এটা তো মানো? আর সাবালক মানেই তো মেজর।
মোট্টেই না। শোভনা এক ফুৎকারে আমার সমস্ত ওজোর উড়িয়ে দেয় : মোটেই আপনি মেজর নন্।
যুদ্ধে না গিয়েও, স্রেফ আঠারো বছরে পা দিয়ে–ঘরে বসে-শুয়ে ঘুমিয়ে শুদ্ধমাত্র এই পদার্পণের কৌশলেই যে বেমালুম মেজর হওয়া যায়, মেজরিটির এই ধারণা ও টলিয়ে দিতে চায়। ওর মতে, সামান্য পদাতিক হয়ে সৈন্যদলে ঢুকে, যুদ্ধে এবং বিনাযুদ্ধে, হাত-পা অটুট রেখে এবং নিজে বজায় থেকে, ক্রমাগত পদোন্নতির ফলে কদাচ যা লভ্য হয়—একটু আগে পদচারণার সাহায্যে গবাক্ষপথে সদ্যপলাতক তজ্জাতীয় তথাকথিত বেড়ালদের ভাগ্যেও যে সুদুর্লভ গৌরব দৈবাৎ কখনো শিকে ছিড়ে থাকে সেই মহামহিমাই, এক কথায়, মেজর। এবং তা কেবল তার বাবাই হতে পেরেছেন। এবং আমি কোনোদিন পারব না, একথাও মুক্তকণ্ঠে জানাতে সে কুণ্ঠিত নয়।
বেশ, মেজর আমি না-হয় নাই হলুম, তুমি যে মাইনর তার তো আর ভুল নেই। তোমার ভালমন্দের দায়িত্ব এখন আমাদের তো।
কক্ষনো না। মেজরের মেয়ে কক্ষনো মাইনর হতে পারে না।
ক্ষুধারকণ্ঠে ও বলে। সেই ধারালো ক্ষুরের সামনে গলা বাড়াবো—এমন সাহস আমার হয় না। দরজা দিয়ে গলে আসি ফের।
সেদিন বিকেলে ড্রইংরুমে বসে স্বরলিপির বইটার পা ওল্টাচ্ছি, এমন সময় শোভনা থাকি পরিচ্ছদের অন্তর্গত একটি ভাবী মেজরের সাথে ঘরের মধ্যে সঞ্চারিত হলো।
নমস্কার। আমাকে সম্মুখে দেখে সেই খাকি পরিচ্ছদ সশব্দে অ্যাটেন্ হয়ে দাঁড়ালেন।
ডিট্টো। শুকষ্ঠে প্রতিনমস্কার জানালাম।
এই, আজ্ঞে—আমার বিজাতীয় সম্ভাষণে যুবকটি যেন একটু দমেই গেল।—এধার দিয়ে যাচ্ছিলাম, শোভনা দেবী দয়া করে আমাকে চা-পানের জন্য ডাকলেন।
ইনি—ইনি হাবিলদার পট্টনায়ক। শোভনা দেবী দয়া করে সামরিক শোভাটির পরিচয় প্রদান করেন।
ও তাই নাকি? আমি ভয়ানক খুশি হয়ে উঠি: তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ হলে এত আনন্দ হয় আমার কী বলবো? আপনিই শ্রীমান পট্টনায়ক? আপনাদের অনেকগুলি নায়কের সঙ্গেই ইতিমধ্যে আমার জানালোনা হয়েছে—অবশ্যি, আপনাদের শ্ৰীমতী শোভনা দেবীর সৌজন্যেই-বলাই বাহুল্য। এই যেমন, মিঃ চট্টরাজ, ক্যাপটেন চাই, কর্ণেল খোন্দকার, শ্ৰীযুত বাজপেয়ী কিম্বা বাজপাই যাই বলুন-লেফটেনেন্ট লাট্ট নারায়ণ—সিপাহি বিল সিং তেওয়ারি—ইত্যাদি ইত্যাদি। সত্যি, এমন প্লিজিং কোম্পানি কী বলবযারপরনাই।
আঁ—আজ্ঞে—? বেচারী থতমত খায়। আহত নেত্রে শোনার দিকে চেয়ে থাকে। আর শোভনা? শোভনার দিকে আমি চাইতেই পারি না। মেজর শোভার দুচোখে দুই বেয়নেট।
আমি—আমি তাহলে এখন আসি। ঢোক গিলে যুবকটি বলে।
না না, এখনই যাবেন কী? আমি আরো উৎসাহিত হই : এখনো তো চারটে বাজেনি। চারটের মধ্যেই আপনার সহযোগীদের সবার দেখা পাবেন—এখানেই পাবেন। মিষ্টার বেঙ্কটরম, মিষ্টার ভেঙ্কটল্লা এবং মিঃ বালাজী বাজীরাও—ঐতিহাসিক ক্রমানুগতিতে নম্বর তিন কি চার কী হবেন তা বলতে পারব না—একে একে সবাই আসবেন। তৃতীয় বালাজী বাজীরাও তো চারটে বাজলেই চায়ের ঝোঁকে এসে পড়েন।
পট্টনায়ক কী যেন বলবার চেষ্টা করেন, তাঁর গলার ভেতর ঘড়ঘড় করে ওঠে-ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চারটে বাজতে দেড় মিনিট দেরি আছে টের পান-তখন, সেই ঘর্ঘর-ধ্বনির সাথেই দ্রুত বিদায়বাণী উচ্চারণ করে—শুভসন্ধ্যা জানিয়ে—-তিনটে সোফা টপকে—পরপর পার হয়ে——টিপয় টেবিল দেরাজ পরম্পরা জানালার ধারে গিয়ে পৌঁছন। তারপরে আর একটুও ইতস্ততঃ না করে বেড়ালদের যাতায়াতের সেই রাজপথকেই সোজাপথ ভেবে তার ফাঁক দিয়ে এক লাফে নেপথ্যে অন্তর্হিত হন। এক মুহূর্ত আর দাঁড়ান না।…
আজকের গাড়িতেই আমরা কলকাতা ছাড়চি। কল্পনাকে গিয়ে বললাম।
আঁ? সে চমকে ওঠে।
হ্যাঁ। না গেলে কী সর্বনাশ হবে তার কিছু তুমি বুঝতে পারছো? এহেন সামরিক আবহাওয়ায়–এই যুদ্ধকালীন কলকাতায় শোতনাকে রাখার মত বিপজ্জনক আর কিছু হতে পারে না। এই ছোঁয়াচে আওতা থেকে দূরে নিয়ে ওকে বাঁচাতে হবে। ভেবে দ্যাখো—পরের কন্যাদায় আমরা নিজের ঘাড়ে নিয়েছি।
কিন্তু যাবো কোথায়? কল্পনা জিজ্ঞেস করে।
সুদূর কোনো গণ্ডগ্রামে। কেন, মাটিয়ারিতে গেলে কেমন হয়?
মাটিয়ারি?
মাটিয়ারির নামে কল্পনা কেঁপে ওঠে—তার কল্পনাও বুঝি ছাড়িয়ে যায়। এক বন্ধুর আমন্ত্রণে একবার সেখানে আমরা গেলাম। গণ্ডগ্রামের মধ্যে অপোগণ্ড যদি কিছু থাকে তো সে মাটিয়ারি। গণ্ডগোলের গ-পযও নাস্তি! মানুষ এবং অমানুষ-মোট জড়িয়ে সেখানে মাটি ছাড়া আর কিছুই নেই। জনপ্রাণী কাউকে প্রাণীজন বলে বোধ হয় না। জীবনের লক্ষণ কেবল দুটি দেখেছিলাম সেখানে—মহাস্থবির হাড়পাঁজরা-সার ঝরঝরে গাঁয়ের গা ঘেঁসে ঝিরঝিরে এক নদী—আর–আরেকজন—লঝঝড় এক ডাকহরকরা। এই দুইজনাই প্রাণের চাঞ্চল্য পরিস্ফুট করতে যা একটু ছুটোছুটি করত—এছাড়া আর কোথাও একটুখানি বাড়াবাড়ি ছিল না।
মাটিয়ারিতে এসে দিন সাতেক শোভনা মনমরা হয়ে থাকলো। অতগুলো ভাব মাটি করে—অমন মহা মহা প্রাদুর্ভাবের মহামারি থেকে এখানকার একঘেয়ে আড়ির মধ্যে এসে—মন ভারী হওয়া বিচিত্র নয়। কিন্তু ক্রমেই ওর আগ্রহ দেখা দিলো—ফেরারী উৎসাহ যেন ফিরে এলো আবার। মাটিয়ারি গ্রামের তৃতীয় জীবনের লক্ষণ আমরা প্রত্যক্ষ করলাম।
এমনকি, একদিন সে মুখ ফুটে বলেই ফেলল? নাঃ, জায়গাটা তত খারাপ না। যতটা মনে হয়েছিলো তা নয়। এমন স্থানেরও সম্ভাবনা আছে। বেশ সম্ভবনা আছে।
পার্বত্য ত্রিপুরার কুক্ষিগত এই দ্বিতীয় এবং অদ্বিতীয়) শান্তিনিকেতনের আবার কী সম্ভাবনা সে দেখেছে সেই জানে! নৈঋত কোণ অবধি চারধার বেশ করে খুঁটিয়ে দেখেও অশান্তির কোনো খুঁটিনাটি আমার নজরে পড়লো না।
যাক তবু যে এখানকার মাটিতে ওর মন বসেছে সেই ঢের। বনহরিণীসুলভ ওর মনোহারিণী লীলা আবার আমাদের চোখে পড়ছে, এই আমাদের সৌভাগ্য।
বিধি ডাগর আঁখি
যদি দিয়েছিলো
সে কি আমার পানে
ভুলে পড়িবে না?…
সেদিনকার স্বরলিপির পাতায় দেখা গানের এই কলিটা নিজের মনে গুন গুনিয়ে গাঁয়ের পথে বেরিয়ে পড়লাম…।
পোষ্টাফিসের অভিসারেই বেরিয়েছিলাম…
পোষ্টাফিসের নামান্তর-স্থানীয় মুদি ওরফে পোষ্টমাষ্টারের ভাঙা কেরোসিন কাঠের বাক্স থেকে হাতড়ে মাতড়ে যদি পাওয়া যায়—তেলচটা একখানা পোষ্টকার্ড বাগিয়ে আনার চেষ্টা করব।
পোক্টমাষ্টারের দাঁড়িপাল্লায় শোভমান খর্বাকার একটা খবরের কাগজ দেখা গেল—ত্রিপুরা-বার্তাবহ না কি! এই আকারের একখানা শোভনার হাতেও কালকে না কবে যেন দেখেছিলাম মনে হচ্ছে। আরো দেখলাম—কৌতূহল চরিতার্থ করতে গিয়ে আরো দ্রষ্টব্য দেখা দিলো—উক্ত সাপ্তাহিকের এক কোণে-বড় বড় না হলেও মেজ মেজ হরফে ছাপা রয়েছে—একটি ইস্তাহার!…
বিশেষ সংবাদ। ভারতবর্ষের সবকয়টি ট্রেনিং ক্যাপের সামরিক রিকুটেরা আগামী সপ্তাহে আমাদের পার্বত্য ত্রিপুরায় সম্মিলিত হইতেছেন। শান্তিপূর্ণ মাটিয়ারি অঞ্চলেই তাঁহাদের ছাউনি পড়িবে…