বকুলের বিয়ে হয়েছে এক সপ্তাহ হয়ে গেল। এক সপ্তাহ অনেক লম্বা সময় নয়। কিন্তু তার কাছে মনে হচ্ছে অনন্তকাল ধরে সে বৌ সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাতে ঘুমুতে যাচ্ছে একজন পুরুষ মানুষের সঙ্গে। মানুষটিও যেন তার সঙ্গে অনন্তকাল ধরেই ঘুমুচ্ছে! গায়ে ঘামের গন্ধ। সে বলে উঁচু গলায়। রেগে ওঠে। অল্পতে। বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই সে বলল, পিঠটা একটু চুলকে দাও তো বকুল। কী অদ্ভুত কথা! ঘর ভর্তি মানুষজন। সে বসে আছে টানা বারান্দায়। লোকজন আসা-যাওয়া করছে এর মধ্যে পিঠ চুলকে দেবে কী? কিন্তু জহির শার্ট তুলে খালি গায়ে বসে আছে। অসহিষ্ণু গলায় বলল, আহ দেই করছ কেন?
নতুন বৌকে কেউ এমন কড়া গলায় কিছু বলে। বকুলের চোখে পানি এসে যাচ্ছিল। সে বহু কষ্টে পানি সামলাল এবং হাত রাখল। জহিরের পিঠে। জহির বিরক্তমুখে বলল, এ রকম শান্তিনিকেতনি কায়দায় সুড়সুড়ি দিচ্ছি কেন? ভালমত চুলকাও।
কি বিশ্ৰী কথা বলার ভিঙ্গি। বিয়ের পর মানুষটিকে বকুলের মোটেও ভাল লাগছে না। দুপুরের পর থেকেই তার শুধু মনে হতে থাকে সন্ধ্যা এসে পড়ছে। এক সময় সন্ধ্যা মিলাবে এবং জহির সবার সামনেই দরজা বন্ধ করে ঝাপটা-ঝাপটি করতে করতে বলবে তুমি এমন মাছের মতো পড়ে থাক কেন? তোমার অসুবিধাটা কি? বকুল শুধু মনে মনে বলবে, আহ আজকের রাতটা পার হোক। এক সময় সেই রাত পার হয়। কিন্তু আবার নতুন একটি রাত আসতে শুরু করে। একটি বিবাহিত মেয়ের জীবন মানেই কী একের পর এক গ্লানিময় ক্লান্তির দীর্ঘ রজনী?
কাউকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করে। কিন্তু কাকে করবে? টিনা ভাবী নেই। তাকে চিঠি লেখা যায়। কিন্তু চিঠি লিখতে ইচ্ছা করে না। ইদানীং তার বারবার মনে হয় সবাই ইচ্ছা করে তাকে জলে ফেলে দিয়েছে। সবাই জানত তার এই অবস্থা হবে কিন্তু কেউ তাকে বলেনি।
বিশাল এই বাড়িতে তার শুধু হাঁফ ধরে। প্রায়ই মনে হয় নিঃশ্বাস নেবার মতো বাতাস নেই কোথাও। অথচ কি খোলামেলা বাড়ি। তাদের শোবার ঘরের দক্ষিণ দিকের জানালা খুলে দিলে বাতাসে বিছানার চাদর সব উড়িয়ে নিয়ে যায়। টানা বারান্দা এত প্রশস্ত যে নেট টানিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলা যায়।
একতলার বেশির ভাগ ঘরই তালাবদ্ধ। থাকার লোক নেই ব্যবহার হয় না। তার শাশুড়ি প্রথম দিনেই সব ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখালেন। সারাক্ষণই কথা বললেন–
এই যে দেখ মা। পাশাপাশি দুই ঘরা। তোমার শ্বশুর বলতেন অতিথি ঘর। অতিথি এলে থাকবে। কত বড় ঘর দেখলে? ইচ্ছা করলে বাইজী নাচানো যায়। তোমার শ্বশুর সাহেবের মাথাটা ছিল খারাপ। টাকা-পয়সা যা ছিল সব ঢেলেছ এই বাড়িতে। তা না করে যদি জমিজমা করত তাহলে আজ তোমরা পায়ের ওপর পা তুলে থাকতে পারত। বুঝলে মা এই বংশই হচ্ছে পাগলের। আমার ছেলেও পাগল। এখন বুঝতে পারছি না, কয়েক’দিন যাক বুঝবে। এই যে দেখ এটা দেখ। লাইব্রেরি ঘর। রাজ্যের বই আছে। এখানে। পোকায় কেটে সব শেষ করেছে। একটা বই আস্ত নেই। বই পড়ার অভ্যাস আছে? থাকলে আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে যেও। তবে মা রাতের বেলা একা একা। এ ঘরে আসবে না। সবাই বলে কী সব নাকি দেখে। আমি নিজে কোনোদিন দেখি নাই। তোমার শ্বশুর সাহেবকে নাকি দেখে ইজিচেয়ারে শুয়ে বই পড়ছে। যত বানানো কথা। শুনলে রাগে গা জ্বলে যায়।
জহির নিজেও বাড়ি প্রসঙ্গে অনেক কথাটথা বলল। বকুলকে খানিক ঘুরিয়ে দেখাল, ছাদে নিয়ে গেল। হৃষ্টচিত্তে বলল, বাড়ি কেমন দেখলে?
ভাল।
একুশটা ঘর আছে। অথচ দু’টা মাত্র বাথরুম, তাও একতলায়। বাবার একটা নেশাই ছিল ঘর বানানো। কি করে রুমের সংখ্যা বাড়ানো যায়। অথচ মানুষ মাত্র তিনজন।
এ রকম অদ্ভুত সখা হল কেন? কে জানে কেন। গৌরীপুরের মহারাজার বাড়ি দেখে বোধ হয় এই নেশা চেপেছিল। লোকজনের বাড়ির সামনে পেছনে খোলা জায়গা-টায়গা থাকে, বাগান-টাগান করে। এইসব কিছু নেই। সবটা জায়গা জুড়ে বাড়ি। কিছুদিন পর এটা হবে ভূতের বাড়ি। কেউ থাকবে না।
বকুল ক্ষীণ স্বরে বলল, মা আমাকে লাইব্রেরি ঘরে একা একা যেতে নিষেধ করেছেন। জহির বিরক্তমুখ বলল, যত ফালতু ব্যাপার। যেখানে যেতে ইচ্ছা হয় যাবে। ভূত-প্রেতি গল্পের বই ছাড়া অন্য কোথাও নেই। তুমি আবার ভূত বিশ্বাস কর না তো?
অল্প অল্প করি।
এখন থেকে আর করবে না। তবে শোন, রাতের বেলা বাথরুমে যেতে হলে আমাকে ডেকে তুলবে। একা একা যাবার দরকার নেই। আমি দোতলায় বাথরুমের ব্যবস্থা করছি। কালই রাজমিস্ত্রী লাগাব!
সত্যি সত্যি ভোর হতেই রাজমিস্ত্রী চলে এল। বকুলের শাশুড়ি মুখ কালো করে ফেললেন। এত টাকা খরচ করে বাথরুম বানানোর তার কোনো ইচ্ছা নেই। দিন তো চলে যাচ্ছে। ওদের দোতলায় অসুবিধা হলে একতলায় চলে এলেই পারে। ঘর তো সব খালিই পড়ে থাকে।
মা এবং পুত্রের মধ্যে একটা ঠাণ্ডা লড়াই হয়ে গেল। এ জাতীয় লড়াই বকুল আগে দেখেনি। সে কী করবে। বুঝতে পারল না। শাশুড়ি তার ঘরে শুয়ে কাঁদছেন। জহির চায়ের কাপ হাতে রাজমিস্ত্রীদের কাজের তদারক করছে হাসিমুখে। বকুল শুকনো মুখে একবার যাচ্ছে শাশুড়ির কাছে একবার আসছে জহিরের কাছে।
বাড়িতে আর লোকজন বলতে দু’টি কাজের মেয়ে এবং শমসের নামের একজন গোমস্তা ধরনের মানুষ। যার একমাত্র কাজ হচ্ছে বাজার করে এনে রোদে পিঠ মেলে বসে থাকা। বিয়ে উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজন যা এসেছিল তারা এক’দিন পরই বিদেয় হয়েছে। বকুলের শাশুড়ির তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই ঝগড়া হয়েছে। ঝগড়ার কারণ হচ্ছে বিয়েতে দেয়া উপহার।
তিনি বকুলের চাচি শাশুড়িকে সবার সামনেই বললেন, দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র ছেলে আমার। তার বৌয়ের জন্যে যে শাড়ি আনলেন সেই শাড়ি তো আমার কাজের মেয়েও পরে না। আমার একটা ইজ্জত নেই। ছেলের বৌয়ের কাছে আমার মুখ ছোট হল না? আপনি দুমেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। এদের প্রত্যেকের বিয়েতে আমি সোনা দিয়েছি। দেইনি? আমার ছেলে কী নদীর পানিতে ভেসে এসেছে?
কঠিন কঠিন কথা খুব সহজ মুখে বলে যাচ্ছেন। রোগা ফর্সা ও সুন্দর মহিলাটি কাঁদতে লাগলেন। কী অস্বস্তিকর অবস্থা।
পাঁচ দিনের মাথায় বাবু এসে উপস্থিত। একা একা চলে এসেছে। হাতে নতুন কেনা সুটকেস। বকুলের বিস্ময়ের সীমা রইল না। বিস্ময় এবং আনন্দ। তার ইচ্ছা করছিল ছুটে গিয়ে বাবুকে জড়িয়ে ধরে খানিকক্ষণ খুব কাঁদে। কিন্তু তা সম্ভব নয়। শাশুড়ি বাবুর সঙ্গে কথা বলছেন। জহির দোতলা থেকে নেমে এসেছে।
বাবুর শোবার জায়গা হল একতলায়। বকুল অবাক হয়ে লক্ষ্য করল বাবুর ঘর গোছগাছ করে দেবার জন্যে জহির নিজেই উদ্যোগী হয়েছে। বকুল এটা ঠিক আশা করেনি। তার কেন জানি মনে হচ্ছিল জহিরের এখন আর তার বা তার পরিবারের কারোর প্রতি কোন আগ্রহ নেই। রাতের বেলা বকুলকে খানিকক্ষণ কাছে পেলেই তার হবে। সমস্ত ভালবাসাবাসি রাতের খানিকক্ষণ সময়ের জন্যে। সে ভেবে পাচ্ছে না। এই ব্যাপারটি শুধু কী তার ক্ষেত্রেই সত্যি না পৃথিবীর সব মেয়েদের বেলাতেও সত্যি।
বকুলের আনন্দের সীমা রইল না। যখন জহির বলল, তুমি বরং আজ তোমার ভাইয়ের সঙ্গে ঘুমাও। বকুল তাকিয়ে রইল। জহির বলল, বেচারা একা একা ভয়টয় পেতে পারে। তাছাড়া তোমার নিজেরও ভাইয়ের সঙ্গে গল্প করতে ইচ্ছা করছে নিশ্চয়ই। রাত জেগে গল্প কর।
আনন্দে বকুলের চোখে পানি এসে গেল। সে কী বলবে বুঝতে পারছে না। তার ইচ্ছা করছে এমন কিছু বলতে যাতে জহির খুব খুশি হয়। কিন্তু তেমন কোনো কথা তার মনে আসছে না। সে শুধু বলল, তোমার অসুবিধা হবে না তো?
অসুবিধা? অসুবিধা হবে কেন?
ঠিকই তো তার অসুবিধা হবে কেন। বকুল কথাটা বলেছে খুব বোকার মতো। জহির বলল, এক কাজ করলে কেমন হয়? বাবুকে এখানে রেখে দেয়া যায় না?
এখানে রেখে দেব?
হ্যাঁ। তোমার সঙ্গে থাকবে। পড়াশোনা করবে। বিরাট বাড়ি খালি পড়ে আছে। তাছাড়া ও থাকলে তোমার একজন সঙ্গী হবে।
সত্যি বলছ?
সত্যি বলছ মানে?
না মানে তুমি চাও ও এখানে থাকুক?
না চাইলে শুধু শুধু বলব কেন? চাই বলেই তো বলছি। তাছাড়া আমি যখন এখানে থাকব না তুমি তখন খুবই লোনলি হয়ে পড়বে।
বকুল অবাক হয়ে বলল, তুমি এখানে থাকবে না। মানে? মা যে বলল, তুমি এখানেই থাকবে।
আমি কি এই মফস্বলে পড়ে থাকব নাকি? কি যে তুমি বল। ঢাকা ছাড়া আমি থাকতে পারি না।
তুমি ঢাকা থাকলে আমিও ঢাকা থাকব।
জহির নিস্পৃহ ভঙ্গিতে বলল, পাগল হয়েছ। মা যতদিন বেঁচে আছেন ততদিন তোমার এখানেই থাকতে হবে।
কেন?
এই শর্তেই মা তোমাকে বিয়ে করার ব্যাপারে মত দিয়েছেন।
বকুল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। জহির হৃসতে হাসতে বলল, মা বড় কঠিন জিনিস। যত দিন যাবে ততই বুঝবে। তুমি শোবার আগে এক জগ পানি এবং একটা গ্লাস দিয়ে যাবে। জহির ঘুমুবার আয়োজন করল।
রাতে বাবুর সঙ্গে তেমন কোন কথাবার্তা হল না। ঘুমে তার চোখ জড়িয়ে আসছে। তাছাড়া এমনিতেও তার বোধ হয় কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। সে ঘাড় বাকিয়ে বলল, এই ঘরে ঘুমাতে হবে না।
বকুল বলল, ঘুমালে কি অসুবিধা?
বাবু তার জবাবে মুখ অন্ধকার করে বসে রইল।
বাসার খবর কি?
একবার তো বললাম। বাসার খবর।
মুনা আপা কোন চিঠি দেয়নি?
না দেয়নি। দিলে তো তোমার কাছেই দিতাম। লুকিয়ে রাখতাম নাকি?
চিঠি দিল না কেন?
আমি কী জানি কেন দেয়নি।
বকুল ছোট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, আমার কথা বোধ হয় সবাই ভুলেটুলে গেছে। বাবু চুপ করে রইল। তার মুখ দেখে মনে হচ্ছে সে বকুলের এই কথা সমর্থন করছে। বকুল বলল, তোর মাথাব্যথা এখনো হয়?
হয়।
এখন হচ্ছে?
না।
হলে বলিস। তোর দুলাভাইয়ের কাছ থেকে ওষুধ এনে দেব।
আমার কোন অষুধ-টুষুদ লাগবে না।
বাবু চাদর দিয়ে মাথা ঢেকে ফেলল। বকুল নরম গলায় বলল, তুই আমার সঙ্গে কথা বল বাবু। এর রকম করছিস কেন? তুই এসেছিস আমার এত ভাল লাগছে।
বাবু মুখের ওপর থেকে চাদর সরিয়ে ফেলল। বকুল হঠাৎ বলে ফেলল, আমি এখানে খুব কষ্টে আছি রে বাবু। আমার কিছু ভাল লাগে না; মরে যেতে ইচ্ছা করে।
কেন?
তাও জানি না।
বিয়ে করার জন্যে তুমি তো পাগল হয়েছিলে।
বকুল চুপ করে রইল। অনেক রাত পর্যন্ত তার ঘুম এল না। একবার ইচ্ছে করল জহিরের কাছে ফিরে যেতে। এই ইচেছটা কেন হল তাও সে ঠিক ধরতে পারল না। সব কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। অর্থহীন সব চিন্তা-ভাবনা আসছে মাথায়। বাইরে কাক ডাকছে। কাকের ডাকের সঙ্গে নানান রকম পাখ-পাখালির ডাকও কানে আসছে। ভোর হয়ে যাচ্ছে বোধ হয়। ঘুমহীন রাত একটি কেটে গেল। তার কেন যেন মনে হল এ রকম নিদ্রাহীন রজনী আরো অনেক আসবে তার জীবনে। সে খানিকক্ষণ কাঁদল। এই কান্নাও কেমন অন্য রকম। আগে কাঁদলে মন হালকা হয়ে যেত। ভাল লাগত। এখন লাগছে না। মন ভারী হয়ে যাচ্ছে। বিয়ে কি মানুষকে এমন ভাবে বদলে দেয়?
টিনা ভাবী বিয়ে নিয়ে কত গল্প করেছে। এ রকমও যে হয় তা তো কখনো বলেনি। এটি সে লুকিয়ে রাখল কেন? নাকি সবার জীবনে এ রকম হয় না? বেছে বেছে বকুলদের মতো মেয়েদের বেলাতেই এ রকম হয়? বকুলের ধারণা হল সে নিশ্চয়ই খুব খারাপ মেয়ে। খারাপ মেয়েদের এ রকম শাস্তি হয়। হওয়াই উচিত।
ভোরবেলা এক কাণ্ড হল। জহির এসে বলল, এই বাবু ঘোড়ায় চড়বে?
বাবু অবাক হয়ে বলল, ঘোড়া পাবেন কোথায়?
কোথায় পাব সেটা আমি দেখব। তুমি চড়বে কি না বল?
না নড়ব না।
দারুণ ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। আমরা ছোটবেলায় চড়তাম। একটা বেতো ঘোড়া আছে। নড়েচড়ে না।
বাবু হাসিমুখে বলল, আপনার ছোটবেলার ঘোড়া সেটা কি আর এখনো আছে? মরে ভূত হয়ে গেছে।
তাও তো কথা। দাঁড়াও খোঁজ নিয়ে দেখি। এসব জায়গায় ঘোড়া পাওয়া যায়। শীতের সময় ঘোড়ার পিঠে করে ভাটী অঞ্চলে মাল যায়। আধমরা ঘোড়া। চড়তে খুব আরাম। লাফ-বাপ নেই।
বকুল অবাক হয়ে দেখল সত্যি সত্যি দুপুর নাগাদ এক ঘোড়া উপস্থিত। দাড়িওয়ালা এক বুড়ো ঘোড়ার দড়ি ধরে দাঁড়িয়ে আছে। বাবু ঘোড়ার পিঠে বসে আছে। মুখ ভর্তি হাসি। বাবুর মুখে এমন হাসি বকুল আগে দেখেনি। বকুলের মনে হল, জহির বাবুকে মুগ্ধ করতে চেষ্টা করছে। মাকড়সার সূক্ষ্ম জালের মতো জাল। চোখে দেখা যায় না। কিন্তু আটকা পড়ে যেতে হয়। একবার আটকা পড়ে গেলে বেরুবার পথ থাকে না।