1 of 2

২৬. ওকালাত

অধ্যায় : ২৬ ওকালাত

ধারা—৬৬৩

সংজ্ঞা (ক) কোন ব্যক্তি কর্তৃক তাহার পক্ষে এক বা একাধিক দায়িত্ব পালনের জন্য অপর ব্যক্তিকে নিয়োগ করাকে “ওয়াকালা” (প্রতিনিৰি নিয়োগ) বলে;

(খ) যে ব্যক্তি নিয়োগ করে তাহাকে ‘মুওয়াককিল” (

মল) বলে; (গ) যাহাকে নিয়োগ করা হয় তাহাকে “ওয়াকীল” (উকীল) বলে।

বিশ্লেষণ

“ওয়াকালা” শব্দের আভিধানিক অর্থ নির্ভর করা, ভরসা করা। পারিভাষিক অর্থে-এক ব্যক্তির দায়িত্ব অপর ব্যক্তির উপর অর্পণ করা এবং ঐ দায়িত্ব পালনের জন্য তাহাকে নিয়োগকর্তার স্থলাভিষিক্ত করা।

ধারা—৬৬৪

ওয়াকীল নিয়োগ কোন ব্যক্তি কর্তৃক অপর ব্যক্তিকে তাহার ওয়াকীল নিমেশ বৈধ হইবে।

বিশ্লেষণ

কুরআন, হাদীস, ইজমা এবং বুদ্ধি ও যুক্তিবাদের আলোকে ওয়াকীল নিয়োগ বৈধ। করআন মজীদে আসহাবে কাহফ-এর ঘটনায় বলা হইয়াছেঃ

فابعثوا أحدكم بورقكم هذه الى المدينة فلينظر

৩৭৬

ابنها أزكى طعاما فليأتكم برزق منه.

“অতএব তোমাদের একজনকে তোমাদের এই মুদ্রাসহ নগরে প্রেরণ কর, সে যেন দেখে কোন্ খাদ্য উত্তম এবং তোমাদের জন্য তাহা হইতে কিছু খাদ্য লইয়া আসে” (সূরা কাহফঃ ১৯)।

عن حكيم بن حزام أن رسول الله صلى الله عليه وسلم بعث مممه بدينار يشتر له أضحية فاشتراها بدينار وباعها بدينارين فرجع واشترى أضحي بدينار وجاء بدينار الى الثبي صلى الله عليه و سلم و عاله أن يبارك له في تجارت –

“হাকীম ইন হিযাম (রা) হইতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) তাহাকে একটি দীনার প্রদান করিয়া তাহার জন্য একটি কোরবানীর পশু ক্রয় করিয়া আনিতে পাঠাইলেন। তিনি তাহা এক দীনারে ক্রয় করিয়া আবার দুই দীনারে বিক্রয় করিলেন, অতঃপর ফিরিয়া গিয়া পুনরায় এক দীনারে একটি বকরী ক্রয় করিয়া অতিরিক্ত একটি দীনারসহ মহানবী (স)-এর নিকট ফিরিয়া আসিলেন। তিনি তাহার ব্যবসায়ে বরকত হওয়ার জন্য দোয়া করিলেন। ২

উরওয়া ইককুল বারিকী (রা)-কে মহানবী (স) একটি দীনার প্রদান করিয়া কোরবানীর জন্য একটি বকরী ক্রয় করিয়া আনিতে বলিলেন। তিনি এক দীনারে দুইটি বকরী ক্রয় করিয়া উহাদের একটি এক দীনারে বিক্রয় করিয়া একটি বকরী ও একটি দীনারসহ মহানবী (স)-এর নিকট ফিরিয়া আসিলে তিনি তাহার জন্য বরকতের দোয়া করেন।

ধারা—৬৬৫

ওয়াকীল নিয়োগের পদ্ধতি (ক) এক পক্ষের প্রস্তাব এবং অপর পক্ষের সম্মতি প্রদানের দ্বারা ওয়াকীল নিয়োগ সম্পন্ন হয়।

1 {সবদ্ধ ইসলামী আইন

७११

(খ) সম্মতি কথায় বা আচরণেও প্রকাশ করা যায়।

(গ) উপস্থিত অনুমতি প্রদানও অতীতে প্রতিনিধি নিয়োগর সমতুল্য গণ্য হইতে পারে।

(ঘ) ওয়াকীল নিয়োগ শর্তযুক্ত হইতে পারে।

বিশ্লেষণ

প্রতিনিধি নিয়োগের মূল উপাদান হইল প্রস্তাব ও সম্মতি তথা ঈজাব ও ককূল। অতএব এক ব্যক্তি বলিল, “আমি তোমাকে অমুক বিষয়ে আমার ওয়াকীল নিয়োগ করিলাম”, তখন অপর ব্যক্তি বলিল, “আমি আপনার প্রস্তাবে সম্মত হইলাম”। এই অবস্থায় শেষোক্ত ব্যক্তি প্রথমোক্ত ব্যক্তির ওয়াকীল নিযুক্ত হইল। শেষোক্ত ব্যক্তি প্রথমোক্ত ব্যক্তির প্রস্তাবে বাচনিক কিছু না বলিয়া তৎক্ষণাৎ প্রস্তাবে উল্লেখিত কাজে নিয়োজিত হইলে তাহাও সম্মতি গণ্য হইবে।

কখনও কখনও অনুমতি প্রদান করিয়াও প্রতিনিধি নিয়োগ করা যাইতে পারে। যেমন এক ব্যক্তি বলিল, আমি আপনার গরুটি বিক্রয় করিয়া দিব? মালিক তাহাকে উহা বিক্রয় করিবার অনুমতি প্রদান করিলে সে তাহার ওয়াকীল গল্প হইবে। কোন ব্যক্তি আগে অনুমতি গ্রহণ না করিয়া অপর ব্যক্তির জন্য কোন কাজ করিলে তাহা শেষোক্ত ব্যক্তির সম্মতির উপর নির্ভরশীল হইবে। যেমন যায়েদ খালিদের গরুটি বিক্রয় করার পর তাহাকে উহা অবহিত করিল। খালিদ তাহাব এই বিক্রয় অনুমোদন করিলে উক্ত কার্যে যায়েদ তাহার প্রতিনিধি গণ্য হইবে।

কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে কোন কার্য সম্পাদনের আদেশ প্রদান করিলে এবং সেই ব্যক্তি উক্ত আদেশ মোতাবেক কার্য করিলে সে আদেশদাতার প্রতিনিধি গণ্য হইবে। যেমন চাকুরিতে নিয়োজিত ব্যক্তি নিয়োগকর্তার নির্দেশে তাহার জন্য কোন মাল ক্রয় বা বিক্রয় করিলে এই ক্ষেত্রে সে তাহার প্রতিনিধি গণ্য হইবে।

সময়সীমা বা কার্যের পরিধি নির্দিষ্ট করিয়া দিয়া বা কোনরূপ শর্ত আবােপ করিয়াও প্রতিনিধি নিয়োগ করা যাইতে পারে অথবা উক্তরূপ বন্ধন আরোপ না করিয়াও প্রতিনিধি নিয়োগ করা যাইতে পারে। যেমন এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে বলিল, “আমি আমার এই গরুটি বিক্রয়ের জন্য তোমাকে প্রতিনিধি নিয়োগ করিলাম, যদি অমুক ব্যবসায়ী এখানে আসিয়া পৌছায়”। অপর ব্যক্তি উক্ত প্রস্তাবে সম্মতি জ্ঞাপন করিলে নির্দিষ্ট ব্যবসায়ী আসার পর সে ঐ গরু বিক্রয় করিতে

৩৭৮

পারিবে, অন্যথায় নহে।

অথবা কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে বলিল, “বৈশাখ মাসের মধ্যে আমার গরুটি বিক্রয় করিয়া দেওয়ার জন্য আমি তোমাকে আমার প্রতিনিধি নিয়োগ করিলাম। দ্বিতীয় ব্যক্তি এই প্রস্তাবে সম্মত হইলে সে কেবল ঐ নির্দিষ্ট মাসেই তাহার নিয়োগকর্তার গরু বিক্রয় করিতে পারিবে, ঐ মাসের আগেও নহে, পরেও নহে।

অথবা কোন ব্যক্তি বলিল, “আমার গরুটি পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রয় করিয়া দেওয়ার জন্য আমি তোমাকে আমার প্রতিনিধি নিয়োগ করিলাম,” দ্বিতীয় ব্যক্তি উক্ত প্রস্তাবে সম্মত হইলে সে পাঁচ হাজার টাকার কম মূল্যে গরুটি বিক্রয় করিতে পারিবে না।

এক পক্ষ কর্তৃক প্রস্তাব প্রদান করা হইলে এবং অপর পক্ষ উহা প্রত্যাখ্যান করিলে উক্ত প্রস্তাবের বৈধতা থাকে না।

ধারা—৬৬৬

দূত (রাসূল) নিয়োগ “ (ক) কোন ব্যক্তি তাহার লিখিত বা বাচনিক বক্তব্য অপর ব্যক্তির নিকট পৌছাইয়া দেওয়ার জন্য কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করিলে সেই নিয়োগকার্যকে রিসালাত বা দৌত্যকর্ম বলে, যে ব্যক্তি নিয়োগ করে তাহাকে মুরসিল বা দূত নিয়োগকর্তা বলে, সে যাহাকে নিয়োগ করে তাহাকে রাসূল বা দূত বলে এবং যাহার নিকট বক্তব্য পৌছাইতে হইবে তাহাকে “মুরসাল ইলায়’ বলে।

(খ) দূতের কার্য সংবাদ আদান-প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

বিশ্লেষণ

দূত বা কাসিদ এবং ওয়াকীলের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পার্থক্য আছে। প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয় মাল সম্পর্কে কোন কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য এবং দূত নিয়োগ করা হয় সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য, মালের ক্ষেত্রে তাহার কোন ভূমিকা নাই। বর্তমান জগতের রাষ্ট্রদূত প্রথা আমাদের আলোচ্য বিষয় নহে। অবশ্য তাহারা একই সংগে প্রতিনিধি ও কাসিদ উভয় দায়িত্বই পালন করিয়া থাকেন।

•ধিবদ্ধ ইসলামী আইন

৩৭৯

যেমন ব্যাংকের সহিত কোন ব্যক্তির ঋণের আদান-প্রদানের চুক্তি হইল। লোকটি তাহার কর্মচারীকে ঋণের অর্থ আনিবার জন্য ব্যাংকে প্রেরণ করিলে সে তাহার দূত হিসাবে গণ্য হইবে, ঋণ গ্রহণের জন্য ওয়াকীল হিসাবে নহে। অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তি কোন কিছু ক্রয় করিবার পর তাহা আনয়নের জন্য অপর ব্যক্তিকে প্রেরণ করিলে সে তাহার ওয়াকীল গণ্য হইবে না।

ধারা—৬৬৭

ওয়াকীল নিয়োগের শর্তাবলী (ক) কোন ব্যক্তি স্বয়ং যে কাজ করিতে সক্ষম সে কেবলমাত্র সেই কাজের জন্য তাহার ওয়াকীল নিয়োগ করিতে পারিবে। অতএব পাগল ও সগীর গায়র মুমায়্যিয কর্তৃক ওয়াকীল নিয়োগ বৈধ নহে।

(খ) সগীর মুমায়্যিয (বুদ্ধিজ্ঞান সম্পন্ন নাবালেগ) কর্তৃক কেবল তাহার জন্য লাভজনক কার্যের প্রতিনিধি নিয়োগ বৈধ হইবে।

(গ) যাহার উপর হইতে প্রতিবন্ধকতা (হাজর) অপসারিত হইয়াছে সে ওয়াকীল নিয়োগ করিলে তাহা বৈধ হইবে এবং যাহার উপর হইতে প্রতিবন্ধকতা অপসারিত হয় নাই সে ওয়াকীল নিয়োগ করিলে তাহা তাহার অভিভাবকের সম্মতি সাপেক্ষে বৈধ হইবে।

(ঘ) ওয়াকীলকে বুদ্ধিমান হইতে হইবে; তাহার বালেগ হওয়া শর্ত নহে। অতএব যে সগীর মুমায়্যিযের উপর হইতে প্রতিবন্ধকতা অপসারিত হইয়াছে সে ওয়াকীল হইতে পারিবে কিন্তু চুক্তির দায় তাহার উপর বর্তাইবে না, বরং তাহার নিয়োগকর্তার উপর বর্তাইবে।

(ঙ) কোন ব্যক্তি সাধারণ লেনদেন (মুআমালাত) সম্পর্কিত দায়িত্ব পালনের জন্য এবং সে ব্যক্তিগতভাবে যেসব কাজ করিতে সক্ষম সেইসব কাজ করিবার জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করিতে পারে। অতএব কোন ব্যক্তি ক্রয়-বিক্রয়, ভাড়া প্রদান বা গ্রহণ, বন্ধক গ্রহণ ও প্রদান, আমানত গ্রহণ ও প্রদান, দান গ্রহণ ও প্রদান, কোন বিষয়ে সমঝোতা স্থাপন, ঋণ পরিশোধ, ঋণ প্রদান, ঋণের স্বীকারোক্তি, ঋণ গ্রহণ, ঋণের দাবি উত্থাপন, শুফআর দাবি, ভাগ-বাটোয়ারা, কোন জিনিস গ্রহণ বা প্রদান প্রভৃতি বিষয়ের জন্য এ্যাকীল নিয়োগ করিতে পারে।

৩৮০

ধারা—৬৬৮ ওয়াকালাত সম্পর্কিত সাধারণ নীতিমালা (ক) দান (হেবা), ঋণ (আরিয়া), বন্ধক (রাহন), ঋণ প্রদান, শিরকা (অংশীদারী কারবার), মুদারাবা, বিরোধপূর্ণ বিষয়ে সন্ধি স্থাপন ইত্যাদি ব্যাপারে ওয়াকীলের কৃত চুক্তি নিয়োগকর্তার জন্য বাধ্যকর হইবে।

(খ) ওয়াকীল নিয়োগকর্তা কর্তৃক নিযুক্ত হইবার পর যেসব বিষয় ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় শুধু সেইসব বিষয়ে তাহার কার্য দ্বারা নিয়োগকর্তাকে বাধ্য করিতে পারিবে। যেইসব ক্ষেত্রে ওয়াকীল ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় নাই সেইসব ক্ষেত্রে ওয়াকীলের কার্যের জন্য নিয়োগকর্তা দায়বদ্ধ নহে, তবে অধিকার বহির্ভূত ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তার অনুমতি লইয়া তাহার পক্ষে করা হইতেছে বলিয়া কিছু উল্লেক করিলে ঐ কার্য নিয়োগকর্তার জন্য বাধ্যকর হইবে। বিক্রয় প্রতিনিধি তাহার নিয়োগকর্তার মাল বিক্রয় করিলে এবং চুক্তি নিয়োগকর্তার জন্য বাধ্যতামূলক না করিয়া নিজের জন্য বাধ্যতামূলক করিলে সে বিক্রীত মাল ক্রেতার নিকট হস্তান্তর করিতে বাধ্য এবং ক্রেতার নিকট হইতে উহার মূল্য সে দাবি ও আদায় করিবে। পরে উক্ত মালের কোন বৈধ দাবিদার আমিয়া উপস্থিত হইলে এবং আদালত কর্তৃক তাহার স্বত্ব প্রতিষ্ঠিত হইলে ক্রেতা ওয়াকীলের নিকট হইতে তাহার প্রদত্ত মূল্য ফেরত লইবে। কয় প্রতিনিধি তাহার নিয়োগকর্তার জন্য মাল ক্রয় করিলে এবং চুক্তি নিয়োগকর্তার জন্য বাধ্যতামূলক না হইলে, উক্ত প্রতিনিধি তাহার মাল হইতে পরিশোধ করিতে বাধ্য, এমনকি সে নিয়োগকর্তার নিকট হইতে মূল্য গ্রহণ না করিয়া থাকিলেও। উক্ত মালে কোন পুরাতন ব্রুটি প্রকাশ পাইলে ওয়াকীল উহার প্রতিকার দাবি করিতে পারিবে। ওয়াকীল চুক্তিপালন নিয়োগকর্তার জন্য বাধ্যতামূলক করিলে অর্থাৎ সে যদি বলে, “আর্মি অমুকের প্রতিনিধি হিসাবে বিক্রয় করিলাম” অথবা “অমুকের প্রতিনিধি হিসাবে ক্রয় করিলাম, তবে চুক্তিপত্রে উল্লেখিত সমস্ত অধিকার নিয়োগকর্তা ভোগ করিবে এবং এই ক্ষেত্রে ওয়াকীল একজন দূত হিসাবে গণ্য হইবে।

(গ) ক্রীত মাল, বিক্রয়ের জন্য দেওয়া মাল, গৃহীত ঋণ প্রদান অথবা নিয়োগকর্তার মাল গ্রহণের জন্য নিয়োগকৃত ওয়াকীলের হাতে নিয়োগকর্তার উক্ত মাল ওয়াদিআ (নিরাপদ হেফাজত) হিসাবে গণ্য হইবে। তাহার কোন

৩৮১

এ বা অবহেলা ব্যতীত উক্ত মাল ধ্বংস বা নষ্ট হইলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে না।

(ঘ) একই কার্য সম্পাদনের জন্য একত্রে দুইজন উকীল নিয়োগ করা হইলে তাহাদের যে কোন একজন উক্ত কার্য এককভাবে সম্পাদন করিতে পারিবে

। তবে তাহারা ইজারা গ্রহণ বা প্রদান, ওয়াদিআ প্রত্যর্পণ ও ঋণ পরিশোধের জন্য ওয়াকীল নিয়োজিত হইয়া থাকিলে তাহাদের যে কোন একজন উক্ত কাজ সমাধা করিলে তাহা বৈধ হইবে।

(ঙ) কোন কার্য সম্পাদনের জন্য একজন ওয়াকীল নিয়োগ করার পর আরও একজন ওয়াকীল নিয়োগ করা হইলে তাহাদের যে কোন একজন উক্ত কার্য সমাধা করিলে তাহা বৈধ হইবে।

(চ) কোন কার্য সম্পাদনের জন্য কোন ব্যক্তি ওয়াকীল নিয়োজিত হইলে সে উক্ত কার্যের জন্য অপর ব্যক্তিকে ওয়াকীল নিয়োগ করিতে পারিবে না, তবে চুক্তিপত্রে উহার অনুমতি থাকিলে বা নিয়োগকর্তা তাহাকে স্বাধীনভাবে কাজ করিবার ক্ষমতা প্রদান করিলে তাহার ওয়াকীল নিয়োগ বৈধ হইবে এবং এই দ্বিতীয় ওয়াকীলও নিয়োগকর্তার ওয়াকীল গণ্য হইবে এবং প্রথমোক্ত ওয়াকীলের মৃত্যু অথবা বরখাস্তের কারণে সে বরখাস্ত হইবে না।

(ছ) ওয়াকীলের জন্য পারিশ্রমিক প্রদানের শর্ত থাকিলে এবং সে সংশ্লিষ্ট কার্য সমাধা করিলে উক্ত পারিশ্রমিকের অধিকারী হইবে।

ধারা—৬৬৯

ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ (ক) কোন মাল ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করা হইলে উক্ত মালের শ্ৰেণী, উপশ্রেণী, মূল্য ও পরিমাণ সুস্পষ্টভাবে চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকিতে হইবে।

উদাহরণ : কোন ব্যক্তি এই কথা বলিয়া ওয়াকীল নিয়োগ করিল, “আমার জন্য একটি গরু ক্রয় কর,” এই ক্ষেত্রে ওয়াকীল নিয়োগ সহীহ হইবে। কিন্তু কোন ব্যক্তি পোশাক তৈরীর জন্য কাপড় ক্রয়ের উদ্দেশ্যে ওয়াকীল নিয়োগ করিলে কাপড়ের রং, পরিমাণ, মূল্য, ধরন বা বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করিতে হইবে, অন্যথায় চুক্তি সহীহ হইবে না।

(খ) উপাদান, বস্তু, পদার্থ ও উৎপাদনের বিভিন্নতার কারণেও কোন

৩৮২

মালের প্রজাতির মধ্যে পার্থক্য হইতে পারে এবং এই ক্ষেত্রে উৎপাদকের নামসহ উপ-প্রজাতিও পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকিতে হইবে।

উদাহরণ : সূতার তৈরী কাপড় এবং শণের তৈরী কাপড়ের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। একটি পশুর লোম ও চামড়ার মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান, ফলে উহা দ্বারা তৈরী উপাদানের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান রহিয়াছে।

(গ) ওয়াকীল যদি নিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্দেশিত প্রজাতির মাল ক্রয় না করিয়া ভিন্নতর প্রজাতির মাল ক্রয় করে তবে তাহার এই ক্রয় নিয়োগকর্তার ক্ষেত্রে কার্যকর হইবে না, উক্ত মাল যত প্রয়োজনীয়ই হউক না কেন এবং উক্ত মাল ওয়াকীলের নিজের জন্য ক্রয়কৃত বলিয়া গণ্য হইবে।

উদাহরণ : নিয়োগকর্তা বলিল, “আমার জন্য একটি বলদ গরু ক্রয় কর”, কিন্তু ওয়াকীল একটি গাভী গরু ক্রয় করিল। এই ক্ষেত্রে ওয়াকীল গাভীটি তাহার নিজের জন্য ক্রয় করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(ঘ) নিয়োগকর্তা ওয়াকীলকে চাউল ক্রয় করিতে বলিলে এবং উহার প্রজাতি নির্দিষ্ট করিয়া না দিলে সে যে কোন প্রজাতির চাউল ক্রয় করিতে পারিবে।

(ঙ) নিয়োগকর্তা ওয়াকীলকে দুধ ক্রয় করিতে বলিলে এবং উহার বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করিয়া না দিলে সে যে কোন পশুর দুধ ক্রয় করিতে পারিবে।

(চ) কোন ব্যক্তি বসতবাড়ি ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করিলে বসতবাড়ির প্রকরণ, মান এবং সম্ভাব্য মূল্য ইত্যাদি প্রাসংঙ্গিক বিষয় পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করিতে হইবে। তবে মালিক ইচ্ছা করিলে ওয়াকীলকে এই বিষয়ে স্বাধীন নির্বাচনের ক্ষমতা প্রদান করিতে পারে।

(ছ) কোন ব্যক্তি মনিমুক্তা ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করিলে উহার সংখ্যা ও মূল্যেরও উল্লেখ থাকিতে হইবে, অন্যথায় ওয়াকীল নিয়োগ বৈধ হইবে না।

(জ) যে মালের পরিমাণ-ওজন, পরিমাপ, গণনা বা মাপিয়া নির্ধারণ করা হয় তাহা ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করা হইলে উহার পরিমাণ বা মূল্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে।

উদাহরণ : কোন ব্যক্তি ধান ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করিলে সে কত মন ধান অথবা কত টাকার ধান ক্রয় করিবে তাহা চুক্তিপত্রে

৩৮৩

পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকিতে হইবে। উহা সঠিকভাবে উল্লেখ না করিলে ওয়াকালতনামা সহীহ হইবে না।

(ঝ) কোন শর্ত দ্বারা ওয়াকীলের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ করা হইলে সে সেই শর্ত লংঘন করিতে পারিবে না, তবে যেই ক্ষেত্রে শর্ত লংঘন করিলে নিয়োগকর্তা লাভবান হয় সেই ক্ষেত্রে ওয়াকীল চুক্তিপত্রে উল্লেখিত পন্থার বিপরীত কিছু করিলে তাহা শর্তের খেলাফ গণ্য হইবে না।

উদাহরণ কোন ব্যক্তি দশ লক্ষ টাকায় একটি বাড়ি ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করিল। এই ক্ষেত্রে সে উক্ত পরিমাণ টাকার অধিক মূল্যে বাড়ি ক্রয় করিলে উক্ত ক্রয় নিয়োগকর্তার জন্য কার্যকর হইবে না, কিন্তু উক্ত মূল্যের কমে ক্রয় করিলে তাহা কার্যকর হইবে।

(ঞ) কোন মাল ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করা হইলে সে সংশ্লিষ্ট মালের অর্ধেক ক্রয় করিলে এবং উক্ত মাল বিভাজন করিলে নষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা থাকিলে উক্ত ক্রয় নিয়োগকর্তার জন্য কার্যকর হইবে, কিন্তু নষ্ট বা ক্ষগ্রিস্ত হওয়ার আশংকা থাকিলে কার্যকর হইবে না।

(ট) নিয়োগকর্তা কোন নির্দিষ্ট পোশাক তৈরীর জন্য ওয়াকীলকে কাপড় ক্রয় করিতে বলিলে এবং সে এমন কাপড় ক্রয় করিল, যাহা দ্বারা উক্ত পোশাক তৈরি করা সম্ভব হয় না, তাহা হইলে উক্ত ক্রয় নিয়োগকর্তার জন্য বাধ্যতামূলক হইবে না এবং উক্ত কাপড় ওয়াকীলের মাল হিসাবে গণ্য

হইবে।

(ঠ) মূল্য নির্ধারণ না করিয়া ওয়াকীলকে কোন মাল ক্রয় করিতে বলিলে এবং সে তাহা বাজারমূল্যে বা তাহার চাইতে সামান্য বেশী মূল্যে ক্রয় করিলে উক্ত ক্রয় নিয়োগকর্তার জন্য কার্যকর হইবে।

(ড) কোন নির্দিষ্ট মৌসুমে পাওয়া যায় এইরূপ মাল ক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করা হইলে সে উক্ত মৌসুম পর্যন্ত ওয়াকীল গণ্য হইবে।

(ঢ) নিয়োগকর্তার নিকট ক্রয়কৃত মাল অর্পণের পূর্বে ওয়াকীল উহার ত্রুটি সম্পর্কে অবগত হইয়া তাহা ফেরত প্রদান করিতে পারে, কিন্তু নিয়োগকর্তার নিকট অর্পণের পর তাহার নির্দেশ ব্যতীত উহা ফেরত প্রদান

করিতে পারিবে না।

(ন) ওয়াকীল মূল্য পরে পরিশোধ করার শর্তে মাল ক্রয় করিলে

৩৮৪

নিয়োগকর্তার নিকট তৎক্ষণাৎ নগদ মূলে দাবি করিতে পারিবে না। কিন্তু ওয়াকীল নগদ মূল্য প্রদানের শর্তে ক্রয় করিলে এবং বিক্রেতা তাহাকে বিলম্বে মূল্য পরিশোধের অবকাশ দিলে • নিয়োগকর্তার নিকট নগদ মূল্য দাবি করিতে পারিবে।

(ত) ওয়াকীল ক্রয়কৃত মালের মূল্য নিজের মাল দ্বারা পরিশোধ করিলে নিয়োগকর্তার নিকট তৎক্ষণাৎ উক্ত মূল্য পরিশোধের দাবি করিতে পারিবে। এমনকি বিক্রেতাকে মূল্য প্রদান না করিলেও সে ক্রীত মালের মূল্য নিয়োগকর্তার নিকট দাবি করিতে পারিবে এবং মূল্য প্রত্যর্পণ না করা পর্যন্ত

সে উহা নিজের দখলে রাখিতে পারিবে।

(খ) ক্রয়কৃত মাল ওয়াকীলের নিকট থাকা অবস্থায় দৈব দুর্ঘটনায় ধ্বংস বা নষ্ট হইলে তাহা নিয়োগকর্তার মাল ধ্বংস বা নষ্ট হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। কিন্তু নিয়োগকর্তার নিকট হইতে মূল্য আদায়ের জন্য মাল নিজ দখলে আটক রাখা অবস্থায় ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে ওয়াকীলকেই উহার ক্ষতিপূরণ বহন করিতে হইবে।

(দ) ওয়াকীল নিয়োগকর্তার পক্ষে কৃত ক্ৰয়চুক্তি তাহার অনুমতি ব্যতীত বাতিল করিতে পারিবে না।

ধারা-৬৭০

বিক্রয়ের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ (ক) মাল বিক্রয়ের জন্য শর্তহীনভাবে ওয়াকীল নিয়োগ করা হইলে সে যে মূল্য উপযুক্ত মনে করে সেই মূল্যে নিয়োগকর্তার মাল বিক্রয় করিতে পারিবে।

(খ) নিয়োগকর্তা কোন মাল বিক্রয়ের জন্য উহার মূল্য নির্ধারণ করিয়া দিলে ওয়াকীল উহার কম মূল্যে তাহা বিক্রয় করিতে পারিবে না। সে নির্ধারিত মূল্যের কমে বিক্রয় করিলে তাহা নিয়োগকর্তার অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যকর হইবে। নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই ওয়াকীল লোকসানে মাল বিক্রয় করিলে এবং তাহা ক্রেতার নিকট নিকট অৰ্পণ করিলে নিয়োগকর্তা

৩৮৫

ওয়াকীলের নিকট হইতে লোকসানের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ আদায় করিতে পারিবে।

(গ) বিক্রয়ের জন্য নিয়োগকৃত ওয়াকীল নিজের জন্য নিয়োগকর্তার মাল ক্রয় করিলে তাহা সহীহ হইবে না।

(ঘ) যে ব্যক্তি আইনত নিয়োগকর্তার অনুকূলে সাক্ষী হইতে পারিবে না, ওয়াকীল তাহার নিকট নিয়োগকর্তার মাল বিক্রয় করিতে পারিবে না, তবে অপেক্ষাকৃত অধিক মূল্যে বিক্রয় করিলে তাহা সহীহ হইবে। কিন্তু ওয়াকীল নিয়োগকালে নিয়োগকর্তা যদি বলে যে, সে তাহার পছন্দসই যে কোন ব্যক্তির নিকট মাল বিক্রয় করিতে পারিবে, তবে উক্ত ব্যক্তিদের নিকট যথার্থ মূল্যে নিয়োগকর্তার মাল বিক্রয় করিতে পারিবে।

(ঙ) শর্তহীনভাবে নিয়োগকৃত ওয়াকীল নিয়োগকর্তার মাল ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রচলিত যুক্তিসংগত সময়ের জন্য ধারে বিক্রয় করিতে পারিবে, কিন্তু প্রচলিত প্রথার বিপরীত সময়ের বিস্তর ব্যবধানে ধারে বিক্রয় করিতে পারিবে না এবং সে নগদ মূল্যে বিক্রয়ের জন্য ওয়াকীল হইয়া থাকিলে ধারে বিক্রয় করিতে পারিবে না।

(চ) কোন মাল বিভক্ত করিলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা থাকিলে ওয়াকীল উক্ত মালের আংশিক বিক্রয় করিতে পারিবে না, তবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা থাকিলে আংশিক বিক্রয় করিতে পারিবে।

(ছ) ধারে বিক্রীত মালের মূল্যের গ্যারান্টিস্বরূপ ওয়াকীল বন্ধক ও যামিন গ্রহণ করিতে পারিবে। কিন্তু বন্ধক ধ্বংস হইয়া গেলে অথবা যামিনদার দেউলিয়া হইয়া গেলে ওয়াকীল দায়ী হইবে না।

(জ) নিয়োগকর্তা বন্ধক অথবা যামিন গ্রহণপূর্বক ধারে মাল বিক্রয় করিতে বলিলে ওয়াকীল বন্ধক বা যামিন গ্রহণ ব্যতীত মাল বিক্রয় করিতে পারিবে না।

(ঝ) ওয়াকীল ক্রেতার নিকট হইতে বিক্রীত মালের মূল্য আদায় না করা পর্যন্ত নিজের মাল দ্বারা নিয়োগকর্তার প্রাপ্য মূল্য পরিশোধ করিতে বাধ্য নহে।

(ঞ) ক্রেতার নিকট হইতে মূল্য আদায় করা ওয়াকীলের দায়িত্ব হওয়া

৩৮৬

সত্ত্বেও নিয়োগকর্তা মূল্য আদায় করিলে তাহা সহীহ হইবে।

(ট) ওয়াকীল বেতনভুক হইলে বিক্রীত মালের মূল্য আদায় করা তাহার দায়িত্ব হিসাবে গণ্য হইবে এবং বেতনভুক না হইলে দায়িত্ব গণ্য হইবে না।

(ঠ) ওয়াকীল বিক্রয় চুক্তি রদ (ইকালা) করিতে পারিলেও তাহা নিয়োগকর্তার ক্ষেত্রে কার্যকর হইবে না এবং সে নিয়োগকর্তাকে মূল্য

পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবে।

ধারা-৬৭১

মোকদ্দমায় ওয়াকীল নিয়োগ (ক) বাদী বা ফরিয়াদী এবং বিবাদী বা আসামী নিজ নিজ পক্ষে ওয়াকীল নিয়োগ করিতে পারে।

(খ) ওয়াকীল আদালতের সামনে তাহার মক্কেলের বিষয়ে কোন কিছুর স্বীকারোক্তি করিলে তাহা গ্রহণযোগ্য হইবে, আদালতের সামনে না হইলে তাহা গ্রহণযোগ্য হইবে না।

(গ) মক্কেলের উপর দায়িত্ব বর্তাইবার মত কোন স্বীকারোক্তি ওয়াকীল করিতে পারিবে না বলিয়া কোন শর্ত আরোপ করা বৈধ। ঐরূপ অবস্থায় সে কোন স্বীকারোক্তি করিলে তাহা সহীহ হইবে না এবং সে তাহার পদ হইতে বরখাস্ত হইবে।

(ঘ) মোকদ্দমা পরিচালনার জন্য নিযুক্ত ওয়াকীল মক্কেলের মাল গ্রহণের জন্যও ওয়াকীল নিযুক্ত না হইলে সে আদালতের রায়ে প্রাপ্ত মক্কেলের মাল গ্রহণ করিতে পারিবে না।

(ঙ) মাল গ্রহণের জন্য নিযুক্ত ওয়াকীল মোকদ্দমা পরিচালনার জন্য ওয়াকীল গণ্য হইবে না।

ধারা-৭২

ওয়াকীলের অপসারণ

(ক) নিয়োগকর্তা তাহার ওয়াকীলকে বরখাস্ত করিতে পারে, কিন্তু অপর ব্যক্তির কোন অধিকার তাহার সহিত সংশ্লিষ্ট থাকিলে নিয়োগকর্তা তাহাকে বরখাস্ত করিতে পারে না।

৩৮৭

(খ) ওয়াকীল তাহার পদ হইতে ইস্তফা দিতে পারে, কিন্তু অপর ব্যক্তির কোন অধিকার তাহার সহিত সংশ্লিষ্ট থাকিলে ওয়াকালাতের দায়িত্ব পালন

করা পর্যন্ত ইস্তফা দিতে পারে না।

(গ) নিয়োগকর্তা ওয়াকীলকে বৈধভাবে বরখাস্ত করিলে উহার নোটিশ ওয়াকীলের নিকট না পৌঁছা পর্যন্ত তাহার ওয়াকালাত বৈধ গণ্য হইবে।

(ঘ) ওয়াকীল তাহার পদে ইস্তফা দিলে তাহা তাহার নিয়োগকর্তাকে অবহিত করিতে হইবে এবং নিয়োগকর্তা তাহার ইস্তফা সম্পর্কে অবহি না হওয়া পর্যন্ত ওয়াকালাতের জন্য সে দায়বদ্ধ থাকিবে।

(ঙ) ঋণগ্রহীতার অনুপস্থিতিতে ঋণ আদায়ের জন্য নিয়োগকৃত ওয়াকীলকে নিয়োগকর্তা বরখাস্ত করিতে পারিবে। কিন্তু ঋণ গ্রহীতার উপস্থিতিতে নিয়োগকৃত ওয়াকীলকে বরখাস্ত করিতে হইলে তাহা ঋণগ্রহীতাকে অবহিত করিতে হইবে, অন্যথায় তাহার অপসারণ সহীহ হইবে

। এই অবস্থায় ঋণগ্রহীতা উক্ত ওয়াকীলের নিকট ঋণ প্রদান করিলে সে দায়মুক্ত হইয়া যাইবে।

(চ) যে কার্য সম্পাদনের জন্য ওয়াকীল নিয়োগ করা হইয়াছে সেই কার্য সম্পন্ন হওয়ার সংগে সংগে ওয়াকীল স্বাভাবিকভাবেই দায়মুক্ত হইয়া যাইবে।

(ছ) নিয়োগকর্তার মৃত্যুর সংগে সংগে ওয়াকীল বরখাস্ত হইয়া যাইবে, কিন্তু অপরের অধিকার সংশ্লিষ্ট থাকিলে অভিষ্ট সাধনকাল পর্যন্ত বরখাস্ত

হইবে না।

(জ) নিয়োগকর্তার মৃত্যুর সংগে সংগে ওয়াকীলের নিয়োগকৃত ওয়াকীলও বরখাস্ত হইয়া যাইবে।

(ঝ) ওয়াকালাতে উত্তরাধিকার স্বত্ব বর্তায় না অর্থাৎ ওয়াকীলের মৃত্যুর পর তাহার কোন ওয়ারিস তাহার স্থলে ওয়াকীল হইবে না।

(ঞ) নিয়োগকর্তা অথবা ওয়াকীল যে কেহ উম্মাদ হইয়া গেলে ওয়াকালাত বাতিল হইয়া যাইবে।

৩৮৮

তথ্য নির্দেশিকা

১. তুর্কী মাজাল্লা, ধারা-১৪৪৯৪

الوكالة تفويض احد امره لاخر واقامته مقامه.

হিদায়া, কিতাবুল ওয়াকালা, ৩৩, পৃ. ১৬১, টীকা ১০ঃ

اقامة الانسان غيره مقام نفسه في تصرف معلوم .

২. আবু দাউদ, বুয়ু, বাব ফিল মুদারিব ইউখালিফু, নং ৩৩৮৬; তিরমিযী, ঐ, বাব ৩৪, নং ১২৫৭। ৩. বুখারী, মানাকিব, বাব ২৮; আবু দাউদ, বুয়ু, বাব ২৭, নং ৩৩৮৪; তিরমিযী, বুযু, বাব ৩৪, নং

১২৫৮; ইবন মাজা, সাদাকাত,বাবুল আমীন ইয়াওআজিরু, নং ২৪০২।

কাফালা

হাওয়ালা

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *