২৫. রবিনসন এগিয়ে গেল ফকনারের দিকে

ঘড়িতে বাজছে এগারটা একুশ। রবিনসন এগিয়ে গেল ফকনারের দিকে। নরম গলায় বলল, ফকনার, আমি কি তোমার সঙ্গে কিছু কথা বলতে পারি?

নিশ্চয়ই পার।

তোমার পরিকল্পনা আমার পছন্দ হয় নি।

জানি। এবং পছন্দ না-হবার কারণও জানি। আমার পরিকল্পনা বেশি সহজ। সহজ বলেই পছন্দ হয় নি। জটিল কিছু হলে তোমার পছন্দ হত।

আমাদের সঙ্গেই আছে।

আমরা তাকে ফেরত চাই।

ভালো কথা, ফেরত দেওয়া হবে। তার পরিবর্তে আমরা কি পাব?

কি চাও?

একটা বিমান, যা আমাদের নিয়ে যাবে। আমরা কোনো রকম ঝামেলা চাই না।

কেন চাও না তা বোঝার মতো বুদ্ধি আমাদের আছে।

তোমরা বিমান পাঠাবে এখানকার এয়ারপোর্টে। আমরা প্রথমে পরীক্ষা করে দেখব সব ঠিক আছে কি না। তোমাদের দিক থেকে দুজনকে আমরা হোস্টেজ হিসেবে সঙ্গে নিয়ে যাব। দুজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যেমন ধর মিনিস্টার অব ডিফেন্স।

হোস্টেজ নিয়ে যাবার ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম না।

হোষ্টেজ এই জন্যেই নিতে চাই, যাতে বিমান আকাশে ওঠার পর তোমরা কোনো ঝামেলা না-কর। এয়ার টু এয়ার-মিসাইল তোমাদের আছে বলে শুনেছি।

ঠিকই শুনেছ। তবে কথা কী জান, আমাদের সঙ্গে দরদান করার মতো অবস্থায় তোমরা নেই বলেই মনে হয়।

মিনিস্টার অব ডিফেন্সকে হোস্টেজ হিসেবে দিতে না-চাও, তোমাকে পেলেও চলবে। ব্রিগেডিয়ার মন্দ কি? নিশোকে তোমাদের প্রয়োজন, এইটুকু বুঝতে পারি।

আমাদের যতটা প্রয়োজন বলে তুমি ভাবছ, তত প্ৰয়োজন কিন্তু না। যাই হোক, এই ফ্রিকোয়েন্সিতেই পরে তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করব।

কত পরে?

মনে হচ্ছে খুব ব্যস্ত?

হ্যাঁ, কিছুটা।

নিশো কেমন আছে?

এখনো টিকে আছে, বেশিক্ষণ থাকবে বলে মনে হচ্ছে না। তবে এই মুহূর্তে তাকে দেখে মোটামুটি সুখী বলেই মনে হচ্ছে কবিতা লিখছে সম্ভবত।

ওপাশের কথা বন্ধ হয়ে গেল। ফকনার বেঁটে এলের দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে বলল, আমি আরেক মগ কফি খাব, ব্যবস্থা কর। জনাথনকে আসতে বল।

জনাথন সঙ্গে-সঙ্গে উঠে এল। ফকনার জনাথনকে আড়ালে নিয়ে গেল। আড়ালের প্রয়োজনীয়তাটা জনাথন ঠিক বুঝতে পারছে না। ফকনার ফিসফাস করবার মতো লোক নয়।

ব্যাপার কি ফকনার?

ব্যাপার খুবই খারাপ। ওদের ভাবভঙ্গি অন্য রকম।

তোমার ধারণা, আমাদের আটকে ফেলতে চাইছে?

তাই।

কি করতে বল?

ফোর্টনকে অফিসারশ্রেণীর কেউ-কেউ নিশ্চয়ই জীবিত আছে?

থাকার তো কথা। কারাপ্রধান মাওয়া জীবিত আছে বলে আমার ধারণা।

জীবিত থাকলে অবশ্যি তাকে আনতে হবে। কত জন তোমার লাগবে? দশ জন।

পনের জন নিয়ে যাওয়া পছন্দমতো পনের জন। এবারকার অপারেশন আগের বারের মতো হবে না। যত দূর সম্ভব ক্ষতি করবার চেষ্টা করবে। ওদের যোগাযোগের কেন্দ্র পুরোপুরি নষ্ট করে দিতে হবে।

তোমার পরিকল্পনাটা কি?

মজার পরিকল্পনা। জেনারেল ডোফাকে বড় ধরনের ধোঁকা দিতে চাই।

আমরা কি এখনি রওনা হয়ে পড়ব?

হ্যাঁ, রওনা হয়ে যাও। কতক্ষণ লাগবে বলে তোমার ধারণা?

ঘন্টা দুই।

তোমাকে এক ঘন্টা সময় দেওয়া হল। এক ঘন্টার ভেতর মাওয়াসহ কমপক্ষে তিন জনকে এখানে চাই। দরকার হলে আরো পাঁচ জন নিয়ে যাও।

তোমার পরিকল্পনাটা কী বল তো শুনি।

এতটা সময় নষ্ট করা কি উচিত হবে? মাত্র এক ঘন্টা সময় তোমাকে দেওয়া হয়েছে। এর দুমিনিট তুমি নষ্ট করে ফেলে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *