ওসমান সাহেব অপলাকে রানুর বাসায় দেখে অবাক হলেন। তাঁর ধারণা ছিল সে হোস্টেলে। শেষ পর্যন্ত বোধ হয় হোস্টেলে যায়নি। তিনি ঐ প্রসঙ্গ তুললেন না। গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন, এই খবরটি দিলেন। অপলা বলল সত্যি যাচ্ছেন?
হ্যাঁ, কেন?
এমনি। কিছুদিন থাকব। শরীর ভাল লাগছে না
কতদিন থাকবেন?
সেটা ঠিক করিনি।
যাচ্ছেন কখন?
এইত ঘণ্টাখানেকের মধ্যে।
রানু এই খবরে বিশেষ বিচলিত হল না। তার অফিসে যাবার তাড়া। বেশি সময় দিতে পারছে না। সে বলল, টগর বড় খালার বাসায় আছে। তুমি কী তার সঙ্গে দেখা করতে চাও?
না। ওখানে গিয়েছে কেন?
ওর সমবয়সী কিছু বন্ধু-বান্ধব আছে। কাল নিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর আর আসতে চায় না।
রানু মৃদু স্বরে বলল, আমাকে মনে হয় সে পছন্দ করে না। ওসমান সাহেব কিছু বললেন না। রানু বলল, তুমি যদি চাও তোমার সঙ্গে ওকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবে, তাহলে নিতে পাের। টগর খুশিই হবে।
রানু বেশখানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, নির্বাসনে যাচ্ছ?
নির্বাসনে যাব কেন?
লেখক সুলভ একটা চাল দেবার জন্যে যাওয়া আর কী?
উঠি রানু।
রানু বলল, আকবরের মা আর তার ছেলে, ওরা কোথায় থাকবে?
ওদের বীথির সমিতিতে রেখে এসেছি।
অপলা তাকে এগিয়ে দিতে নেমে এল নীচ পর্যন্ত। মৃদু স্বরে প্রায় ফিসফিস করে সে বলল, দুলাভাই আপনি কী আমাকে চিঠি লিখবেন?
হ্যাঁ লিখব। অপলা বলল, চোখ মুছতে মুছতে, লিখব আমিও।
অবাক হয়ে দৃশ্যটি ওসমান সাহেব দেখলেন।