1 of 2

২৪. সূর্য প্রকাশ্যে জানিয়ে দিল

সূর্য প্রকাশ্যে জানিয়ে দিল যে সে শ্রীলেখাকে বিয়ে করবে। একথা প্রথম বলল সে। শ্রীলেখার মাকে। বলার সময় সে একটুও লজ্জা পেল না, চোখ নিচু করল না, গলা কাঁপাল না। যেন তার মতামতের ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে।

এবং পাত্র হিসেবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য সে সেদিন থেকেই আবার কলেজে যাওয়া শুরু করলে। এর মধ্যে তাকে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভরতি করে দেওয়া হয়েছিল প্রথম দিকে প্রায়ই সে ক্লাস করেনি। বিবাহের ঘোষণাটি জানিয়ে দিয়ে সে গম্ভীর ভাবে বইখাতা নিয়ে বেরিয়ে গেল কলেজে।

সুপ্রভা প্রথমে কথাটায় গুরুত্ব দেননি, কিন্তু ক্রমশ এই নিয়ে একটা হুলুস্থুলু পড়ে গেল। বাড়িতে। এ রকম অদ্ভুত কথা কেউ কখনও শোনেনি। ষোলো বছরের ছেলে আর। পনেরো বছরের মেয়ে এবং একই পরিবারভুক্ত, তারা বিয়ে করতে চায়। কী মনে করে এরা? বিয়ে মানে কি বৃষ্টির জলে কাগজের নৌকো ভাসানো?

শ্রীলেখাকে হাজার কথা জিজ্ঞেস করেও একটাও ঠিক মতন উত্তর পাওয়া যায় না। সে শুধু বার বার বলে, আমি কিছু জানি না, আমি কিছু জানি না! ভয়ে তার মুখ নীলচে বর্ণ ধরেছে, চোখ বসে গেছে কোটরে কান্নার ক্ষমতাও তার নেই। তার মা ও কাকিমা তাকে বার বার জেরা করতে লাগলেন, তুই কিছু বলেছিস? সূর্যর মাথায় এ কথা এল কী করে? কী করে সে এত সাহস পায়?

শ্রীলেখার সেই একই উত্তর–আমি কিছু জানি না। আমি কিছু জানি না।

সন্ধ্যাবেলা সূর্য বাড়ি ফিরে এসেই শ্রীলেখাকে ডাকল। চেঁচিয়ে গলা ফাটাল-তবু শ্রীলেখাকে পাওয়া গেল না। তাকে তার মা কোথাও পাঠিয়ে দিয়েছেন।

প্রিয়রঞ্জনের কাছে ব্যাপারটা দু’-এক দিন গোপন করে রাখার চেষ্টা হল। শেষ পর্যন্ত তার কানে গেলই। শুনেই প্রিয়রঞ্জন ক্রোধে জ্বলে উঠলেন। তার চরিত্রে বিস্ময়বোধ নেই, তিনি কোনও কথা শুনে হতবাক হয়ে যান না–অপছন্দের কিছু হলেই তিনি রাগারাগি শুরু করেন। প্রথমেই তিনি বকতে লাগলেন সুপ্রভাকে। মা এত লাই দিয়েছে বলেই তো মেয়ে উচ্ছন্নে যাচ্ছে। মা যদি মেয়েকে সামলাতে না পারে তা হলে কে পারবে? অতবড় ধিঙ্গি মেয়েকে কেউ চোখের আড়াল করে? আর ওই সূর্যটিকে তো গোড়া থেকেই জানেন, ওটা একটা নচ্ছার, হারামজাদা। অজাত, কুজাত!

শ্রীলেখাকে হাতের কাছে পেলে তিনি নিশ্চিত, সে-দিন মারধর করতেন। প্রধানত বাবার রাগ থেকে বাঁচাবার জন্যই সুপ্রভা শ্রীলেখাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন তাঁর দূর সম্পর্কের বোনের কাছে।

বাইরের পোশাক-পরিচ্ছদ পরিবর্তন না করেই প্রিয়রঞ্জন চটি ফটফটিয়ে অমর, অমর বলে ডাকতে ডাকতে উঠে এলেন তিনতলায়। অমরনাথ তখন ইজিচেয়ারে শুয়ে এমান্ডসেনের ভ্রমণ-বিবরণী পড়ছিলেন। রাত্রে তিনি চোখে কম দেখেন বলে বইখানা একেবারে চোখের সামনে ধরা।

কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার এই যে, বড়বাবু একথা শুনে স্তম্ভিত বা ক্রুদ্ধ হলেন না। হেসে উঠলেন হো হো করে। হাসতে হাসতেই বললেন, তাই নাকি? ব্যাটা এরই মধ্যে বিয়ে করতে চায়? তা মন্দ কী?

প্রিয়রঞ্জন হাসিঠাট্টার ধার ধারেন না। তিনি কঠোর ভাবে বললেন, তুমি বলছ কী অমর? তোমারও কি মাথা খারাপ হয়ে গেল!

বড়বাবু উত্তর দিলেন, কেন, তোমার এত অমত কীসে? আমার বিষয়-সম্পত্তি সব তো সূয্যিই পাবে।

বিষয়-সম্পত্তির জন্য আমি মেয়েটাকে হাত-পা বেঁধে জলে ফেলে দেব?

আহা, ওরা নিজে থেকেই যদি চায়–

আমার মেয়ে কক্ষনও এ রকম চাইতে পারে না। এ রকম কথা সে উচ্চারণ করলে তার দাঁত ক’খানা খুলে ফেলে দেব না।

ও রকম ভয় দেখালে আর সে বলবে কী করে? বরং সহজ ভাবে তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেই হয়।

সে এখন এ বাড়িতে নেই।

আসবে তো! তখন জিজ্ঞেস করলেই হবে। এত ব্যস্ত হবার তো কিছু নেই।

তুমি বুঝতে পারছ না অমর। তুমি মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছ না–কিন্তু মেয়ে আমার। মেয়েসন্তানের গায়ে যদি একটু কলঙ্ক লাগে, তা হলে সারা জীবন সে সুখ পাবে না। বাপ হয়ে মেয়েকে আমি সেই জায়গায় ঠেলে দেব?

আমি হয়তো সত্যিই তোমার মতন বুঝতে পারছি না। তোমার আপত্তিগুলো কী বলো তো! আমি নিজে অবশ্য বাল্যবিবাহে মন্দের কিছু দেখি না। প্রকৃতির যা বিধান, তাকে অমান্য করলে ফল ভালো হয় না। যৌবন আর কদিনের!

তা বলে যোলো বছরের ছেলের বিয়ে?

তোমার পিতাঠাকুর বোধহয় তার চেয়েও কম বয়সে প্রথম বিবাহ করেছিলেন। অন্তত আমার বাবা তো করেছিলেন। যাকগে সে কথা না তোলাই ভালো কিন্তু বিয়েটা আজই হচ্ছে না। তিন-চার বছর যাক না–সূর্যিটা অন্তত গ্রাজুয়েট হয়ে নিক। এর মধ্যে যদি কথাবার্তা ঠিকঠাক হয়ে থাকে।

এ বিয়ে হওয়া অসম্ভব!

ধরে নিলাম অসম্ভব। কিন্তু তোমার এত আপত্তির কারণটাই বা কী?

আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিয়ে হয়? লোকে তো জানে, ওরা আত্মীয়। আমাদের বংশে এ রকম বেলেল্লাপানা কেউ কখনও করেনি।

তোমার বংশাভিমান আছে, আমার অবশ্য তা নেই। আমার ছেলে মুচি-মেথরের মেয়েকে বিয়ে করলেও আমার আপত্তি থাকবে না।

তোমার পক্ষে সেটা বলা সহজ। ও-ছেলের কোনও জাতের ঠিক আছে! ও যে তোমার ছেলে তার কোনও ঠিক আছে?

বড়বাবুর মুখ থেকে হাসি মুছে গেল। স্থির চোখে প্রিররঞ্জনের দিকে চেয়ে রইলেন দু’-এক পল। তারপর গম্ভীর ভাবে বললেন, পি. আর, ছেলের দোষে তার মায়ের নামে কলঙ্ক দেওয়া সুরুচির পরিচয় নয়। তোমাদের চোখে ওর মা ছিলেন একজন নাচনেওয়ালি। আমার চোখে তিনি ছিলেন একজন উঁচু জাতের শিল্পী। সেই রক্ত আছে আমার ছেলের শরীরে। ও সাধারণ মানুষের মতন হবে না।

ছেলেমেয়ে নিয়ে ঘরসংসার করতে গেলে ওসব শিল্পটিল্প চলে না।

আমি আর সে রকম ভাবে সংসার করলাম কবে?

ওই ছেলেকে নিয়ে তোমাকে অনেক দুঃখ পেতে হবে।

তুমি আমাকে অভিশাপ দিচ্ছ?

অভিশাপ না, আমার কর্তব্য তোমাকে সাবধান করে দেওয়া। ও-ছেলেকে বিদায় করে। দাও! কলা দিয়ে ওই কালসাপ পুষো না।

নিজের ছেলেকে তাড়িয়ে দিতে বলছ!

তা ছাড়া আর কী করবে! ও-ছেলেকে শাসন করার ক্ষমতাও তোমার নেই। এত তো মারধর করলে–পারলে ওকে আটকাতে? যখন তখন বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, কুসঙ্গে মিশছে। এখন নিজের বোনের দিকেও কুদৃষ্টি দেয়।

ওকে আমি আবার হোস্টেলে পাঠিয়ে দিতে পারি।

হোস্টেলে থেকেও এখন আর ও-ছেলে বাগ মানবে না!

সূর্য তোমার বোনের ছেলে নয়! তোমাদের সঙ্গে ওর সম্পর্কটা খুব ক্ষীণ। এত ক্ষীণ সম্পর্কে বিবাহ আটকায় না।

ও কথাটা তুমি দ্বিতীয় বার আর আমার সামনে উচ্চারণ কোরো না। ওর সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেয়ে তাকে বিষ খাইয়ে মারব।

আহা, এত বিচলিত হচ্ছ কেন? বেশ তো বিয়ে হবে না। ওদের ও-সব ছেলেমানুষি কথা– নিষেধ করে দিলেই হবে। অল্প বয়সে ও রকম কত কী ইচ্ছে হয়!

শুধু নিষেধ করলে তোমার ছেলে শুনবে? ওই গোঁয়ারগোবিন্দ ছেলে, কারওর কথা শোনে না। এইসব কথা যদি পাঁচকান হয়–আমার মেয়ে খুঁতো হয়ে যাবে না? তার আর বিয়ে হবে?

বড়বাবু হঠাৎ সূর্য সম্পর্কে খুব মায়া অনুভব করলেন। কী-ই বা বয়স, বুদ্ধিসুদ্ধি কিছু হয়নি এখনওনা হলে মুখফুটে কেউ নিজের বিয়ের কথা বলে? কিশোর বয়সে কত রকম সুখস্বপ্ন থাকে!

বড়বাবুর ইচ্ছে হল একটু চিররঞ্জনের সঙ্গে পরামর্শ করার। কিন্তু কাল থেকে চিররঞ্জনের খুব জ্বর–তাকে এখন ডাকা যাবে না। উঠে গিয়ে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে তিনি সূর্যের নাম ধরে ডাকলেন।

সুপ্রভা ও হিমানী একঘর উৎকণ্ঠিত হয়ে বসে আছেন। মহিলাদের স্বয়ম্প্রবৃত্ত হয়ে পুরুষদের আলোচনায় যোগ দেবার প্রথা নেই–কিন্তু ওঁদের মন পড়ে আছে তিনতলায় ওই ঘরটিতে। ওঁরা দেখলেন, সূর্য ঘর থেকে বেরিয়ে সশব্দে দরজা বন্ধ করে ওপরে উঠে গেল।

বড়বাবু বিছানার দিকে ইঙ্গিত করে সূর্যকে বললেন, বোস ওখানে।

সূর্য বসল না, দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে–কেউ কিছু জিজ্ঞেস করবার আগেই তেরিয়া ভাবে বলল, আমি শ্রীলেখাকে বিয়ে করব।

প্রিয়রঞ্জন গনগনে মুখে তাকালেন। বড়বাবুর মুখে হাসি ফিরে এল। জিজ্ঞেস করলেন, হঠাৎ বিয়েপাগলা হয়ে গেলি কেন?

সূর্য তার সরল জেদিমুখে বলল, অন্য কারওর সঙ্গে শ্রীলেখার বিয়ে হবে না। ও-এ বাড়িতেই থাকবে।

শ্রীলেখা তোর বোন হয়–বোনের সঙ্গে কি বিয়ে হয়?

আপন বোন তো নয়।

হিন্দু সমাজে মামাতো বোনের সঙ্গে বিয়ে হয় না।

আমি কি হিন্দু?

তুমি কী তা হলে?

আমি মানুষ।

মানুষ তো সবাই।

আমি শ্রীলেখাকে বিয়ে করব।

বিয়ে করলে অনেক দায়িত্ব নিতে হয়। পারবি? বউকে খাওয়াবি কী?

আপনার কাছে আমার অনেক মোহর আছে। আপনি বললেন—

হুঁ! মোহর বিক্রি করে সংসার চালাবি? কত দিন চলবে? রোজগার করতে হবে না?

আমি পড়াশুনো করছি।

ঠিক আছে, যদি এতই বিয়ের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠিস–আমি তা হলে মেয়ে দেখছি। এ-দেশে পাত্রীর অভাব নেই।

আমি শ্রীলেখাকে বিয়ে করব।

প্রিয়রঞ্জন আর ধৈর্য রাখতে পারলেন না। এক ধমক দিয়ে বললেন, বাঁদর ছেলে, ওকথা খবরদার আমার সামনে উচ্চারণ করবি না। নির্লজ্জ কোথাকার!

সূর্য কিছু বলার আগেই বড়বাবু বললেন, বিয়ে করতে হলে, পাত্রীর মা বাবার মত লাগে। ওঁরা এ-বিয়েতে রাজি নয়।

তা হলে শ্রীলেখার অন্য কারওর সঙ্গেও বিয়ে হবে না।

প্রিয়রঞ্জন আর একটাও কথা বললেন না। ঘৃণায় মুখভঙ্গি করে বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে। বড়বাবু তাকে আটকাবার চেষ্টা করেও পারলেন না।

দশ দিনের মধ্যে প্রিয়রঞ্জন তালতলায় একটা বাড়ি কিনে উঠে গেলেন। বস্তুত, বাড়ি কেনার ব্যবস্থা গোপনে গোপনে আগেই চলছিল–ইদানীং তার কাগজের ব্যবসা বেশ ফেঁপে উঠেছে। এ-বাড়ি ছেড়ে যাবার ঘটনাও খুব নিঝঞ্ঝাটে ঘটল নাযাবার আগে প্রিয়রঞ্জন বড়বাবুর সঙ্গে একটা ঝগড়া বাধিয়ে তুললেন–অনর্থক বহু কটুকাটব্য করতে ছাড়লেন না। বড়বাবু প্রাণপণে তাকে বাধা দেবার চেষ্টা করেছিলেন–চাচামেচি করার বদলে প্রায় ধরা গলায় বলেছিলেন, তোমরা আমাকে ছেড়ে যেয়ো না। আমার আর কেউ নেই। ত্রিসংসারে আমার আর কেউ নেই! প্রিয়রঞ্জন উষ্ণ মস্তিষ্কে এই অনুভূতিটা ঠিক ধরতে পারলেন না কণ্ঠস্বর উচ্চগ্রামে তুলে বললেন, তুমি কি আমাদের অন্ন দিয়ে কিনে রেখেছ? ভগবান আমায় সুদিন দিয়েছেন–আমার কারবারে তোমার যা টাকাপয়সা আছে সব তুমি ফেরত পাবে। তোমার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখতে চাই না।

সমস্যা হল চিররঞ্জনকে নিয়ে। চিররঞ্জন এবং তার পরিবার কোথায় থাকবেন? প্রিয়রঞ্জন চাইলেন ওঁদের সঙ্গে নিয়ে যেতে। তাঁর সহোদর ভাই তার সঙ্গে থাকবেন না তো কোথায় থাকবেন! কিন্তু বড়বাবুদের সঙ্গে চিররঞ্জনের অন্য রকম সম্পর্ক। তিনি চিররঞ্জনকে কিছুতেই ছাড়বেন না। এই দোটানার মধ্যে চিররঞ্জন মহা ফঁপরে পড়ে গেলেন। তিনি আলগোছে জীবন কাটাতে চান–এসব গণ্ডগোল তার সহ্য হয় না। সমস্যার সমাধান তার মাথায় আসে না। বড়বাবুর সঙ্গে তার কোনও অসদ্ভাবের কারণ। ঘটেনি–কিন্তু প্রিয়রঞ্জন বড়বাবুর সঙ্গে ঝগড়া করে ফেলায়–চিররঞ্জনের পক্ষে আরও কঠিন সমস্যা হয়ে দাঁড়াল। এখন বড়বাবুর সঙ্গে থাকা মানে তার দাদার বিরোধিতা করা–এবং তার দাদা এতে অপমানিত বোধ করবেন।

চিররঞ্জন তখন অসুস্থ। জ্বর এখন নিউমোনিয়ার দিকে গেছে। এই সময় বাড়ি বদলাবার হাঙ্গামার প্রশ্নই ওঠে না–তাই তিনি আপাতত এ বাড়িতেই থেকে গেলেন।

প্রিয়রঞ্জন তালতলায় বেশ বড় বাড়ি কিনেছেন। বাড়ির সামনে খানিকটা জমি আগাছায় পূর্ণ–এবং লোহার গেট। গেটে উর্দি-পরা দারোয়ান।

সূর্যর দুর্দমনীয় তেজি ভাবটা আর নেই। হঠাৎ সে খুব বিষণ্ণ হয়ে গেছে। শ্রীলেখাকে হারিয়ে সে যেন অনেকখানি মহিমাচ্যুত–তার চোখের মধ্যেও একটা দিশেহারা ভাব ফুটে ওঠে। একটা তীব্র অভিমান তার বুকের মধ্যে বাষ্প হয়ে জমে। সারা পৃথিবীর ওপর অভিমান।

গোঁয়ারের মতন সে তালতলার বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেনি। তার কিশোর হৃদয় বুঝেছে–ও বাড়িতে ঢুকলে অপমানিত হতে হবে। এতদিন ছিল না, এখন তার মান-অপমান বোধ জেগেছে–প্রণয়লিপ্সা তার মধ্যে অনেক সূক্ষ্ম অনুভূতিরও জন্ম। দিয়েছে।

কলেজ পালিয়ে দুপুরবেলা এসে সূর্য তালতলার রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। একদিনও, একবার এক পলকের জন্যও শ্রীলেখার সঙ্গে দেখা হয় না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *