২৪. শুক্লযজুর্বেদ – চতুর্বিংশ অধ্যায়

চতুর্বিংশ অধ্যায়

মন্ত্রঃ– অশ্বপরো গোমৃগন্তে প্রাজাপত্যাঃ কৃষ্ণগ্রীব আগ্নেয়ো ররাটে পুরস্তাৎসারস্বতী মেষ্যধস্তাদ্ধঘোরাখিনাবধোরামৌ বাহ্বা সৌমাপৌষ্ণঃ শ্যামো নাভ্যাং সৌৰ্য্যামৌ শ্বেতশ্চ কৃষ্ণশ্চ পার্শ্বয়োস্তান্ত্রেী লোমশসথেী সথ্যোবায়ব্যঃ শ্বেতঃ পুচ্ছ ইন্দ্রায়। স্বপস্যায় বেহদ্বৈষ্ণববা বামনঃ৷১। রোহিতো ধূম্ররোহিতঃ কর্কন্ধুরোহিতন্তে সৌম্য বররূণবঃ শুকবস্তে বারুণাঃ শিতিরফ্ৰোহন্যতঃ শিতির সমস্তশিতিরষ্ক্রস্তে সাবিত্রাঃ শিতিবাহুরন্যতমঃ শিতিবাহুঃ সমস্তশিতিবাহুস্তে বাহস্পত্যাঃ পৃষতী ক্ষুদ্রপৃষতী স্কুলপৃষতী তা মৈত্রাবরুণ্যঃ ॥২॥ শুদ্ধবালঃ সবশুদ্ধবালো মণিবাল আশ্বিনাঃ শ্যেতঃ শ্যেক্ষোহরুণস্তে রুদ্রায় পশুপতয়ে কণা যামা অবলিপ্তা রৌদ্রা নভোরূপাঃ পাৰ্জনাঃ।।৩। পৃশ্নিস্তিরশ্চীন পৃশ্নিরু পৃশ্নিস্তে মারুতাঃ ফরুলোহিতোণী পলক্ষী তা সারস্বতঃ প্লীহাকর্ণঃ শুষ্ঠাকর্ণোহk্যালোহকৰ্ণস্তে ত্বাাঃ কৃষ্ণগ্রীবঃ শিতিকক্ষোহঞ্জিসকথস্থ ঐন্দ্রাগ্নাঃ কৃষ্ণাঞ্জিরল্পাঞ্জিৰ্মহাঞ্জিস্ত উষস্যাঃ।।৪৷৷ শিল্পা বৈশ্বদেবব্যা বোহিণ্যবয়ো বাঁচেহবিজ্ঞাতা অদিত্যৈ সরূপা ধাত্রে বৎসর্যো দেবানাং পত্নীভ্যঃ৷৷৷৷ কৃষ্ণগ্রীবা আগ্নেয়াঃ শিতিবো বসূনাং রোহিতা রুদ্রাণাং শ্বেতা অবরোকিণ আদিত্যানাং নভোরূপাঃ পাৰ্জনাঃ ৬৷ উন্নত ঋষভো বামনস্ত ঐন্দ্রাবৈষ্ণবা উন্নতঃ শিতিবাহুঃ শিতিপৃষ্ঠস্ত ঐন্দ্রাবাহাত্যাঃ শুকরূপা বাজিনাঃ কল্মষা আগ্নিমারুতাঃ শ্যামাঃ পৌষ্ণাঃ।।৭৷৷ এ ঐন্দ্রাগ্না দ্বিরূপা অগ্নীষোমীয়া বামনা অনাহ আগ্নাবৈষ্ণবা যশা মৈত্রাবরুণ্যোন্যত এন্যো মৈঃ।।৮। কৃষ্ণগ্রীবা আগ্নেয়া বভ্ৰবঃ সৌম্যাঃ শ্বেতা বায়ব্যা অবিজ্ঞতা অদিত্যৈ সরূপা ধাত্রে বৎসর্যো দেবানাং পত্নীভ্যঃ।৯।কৃষ্ণা ভৌমা ধূম্রা আন্তরিক্ষা বৃহন্তা দিব্যাঃ শবলা বৈদ্যুতাঃ সিস্তারকা।১০৷৷ ধূম্ৰাম্বসস্তায়ালভতে শ্বেতানগ্ৰীষ্ময় কৃষ্ণান্বষাভ্যোহরুণারদে পৃষতে হেমন্তায় পিশঙ্গাঞ্ছিশিরায়৷৷১১৷ বয়ো গায়ত্রৈ পঞ্চাবয়স্ত্রিভে দিত্যবাহহ জগত্যৈ ত্রিবৎসা অনুষ্ঠুভে তুষবাহ উষ্ণিহে৷৷১২৷৷ পষ্টবাহে বিরাজ উক্ষাণো বৃহত্যা ঋষভাঃ ককুভেইনবাহঃ পক্ত্যৈঃ ধেনবোহতিচ্ছন্দসে৷৷১৩৷ কৃষ্ণগ্রীবা আগ্নেয়া বভ্ৰবঃ সৌম্যা উপধ্বস্তাঃ সাবিত্রা বৎসতর্যঃ সারস্বত্যঃশ্যামাঃ পৌষ্ণাঃ পৃশ্লয়ো মারুতা বহুরূপা বৈশ্বদেবা শশা দ্যাবাপৃথিবীয়াঃ৷১৪৷৷ উত্তাঃ সঞ্চরা এতা ঐন্দ্রাগ্রাঃ কৃষ্ণা । বারুণাঃ পৃশ্লয়ো মারুতাঃ কায়াপরাঃ।।১৫অগ্নয়েহনীকবতে প্রথমজানালভতে মরুভঃ সান্তপনেভ্যঃ সত্যান্মরুদভ্যো গৃহমেধিভ্যো বষ্কিহান্মরুভ্যঃ ক্রীডিভ্যঃ সংসৃষ্টান্মরুপ্তঃ স্বতবত্তোহনুসৃষ্টান্৷৷১৬।উক্তাঃ সঞ্চরা এতা ঐন্দ্রাগ্নাঃ প্রাশৃঙ্গা মাহেন্দ্রা বহুরূপা বৈশ্বকর্মণঃ ॥১৭। ধূম্রা বনীকাশাঃ পিতৃণাং সোমবতাং বভ্রবো ধূনীকাশাঃ পিতৃণং বহিষদাং কৃষ্ণা বনীকাশাঃ পিতৃণামগ্নিদাত্তানাং কৃষ্ণাঃ পৃষন্তস্ত্রৈয়ম্বকাঃ ॥১৮৷ উক্তাঃ সঞ্চরা এতাঃ শুনাসীরীয়াঃ শ্বেতা বায়ব্যাঃ শ্বেতাঃ সৌর্যাঃ।১৯৷৷ বসন্তায় কপিঞ্জলানালভতে গ্রীষ্ময় কলঙ্কিান্বষাভ্য স্তিত্তিরীঞ্জুরদে বর্তিকা হেমন্তায় ককরাঞ্ছিশিরায় বিককরা৷৷২০৷ সমুদ্ৰায় শিশুমারানালভতে পর্জনায় মঙ্কানদ্ভো মৎস্যান্মিত্রায় কুলীপয়ারুণায় নাক্রান্৷২১৷ সোমায় হংসানালভতে বায়ুবে বলাকা ইন্দ্রাগ্নিভ্যাং কুঞ্চান্মিত্রায় মদগুম্বরুণায় চক্রবাকান্৷৷২২৷৷ অগ্নয়ে কুটরুনালভতে বনস্পতিভ্য উল্কানগ্নীষোমাভ্যাং চাষানখিভ্যাং ময়ূরান্মিত্রাবরুণাভ্যাং কপোতা৷৷২৩৷৷ সোমায় লবানালভতে ত্বষ্ট্রে কৌলীকান্ গোষাদীদেবানাং পত্নীভ্যঃ কুলীকা দেবজামিলভ্যাংগুয়ে গৃহপতয়ে পারুফান্৷৷২৪৷ অহ্নে পারাবতানালভতে রাত্র্যৈ সীচাপুরহোরাত্ৰায়োঃ সন্ধিভ্যো জতুর্মাসোভ্যো দাত্যৌহান্ সংবৎসরায় মহঃ সুপর্ণান্৷৷২৫। ভূম্যা আখুনালভতে হন্তরিক্ষায় পাঞ্জান্দিবে কশান্দিভ্যো নকুলাকানবান্তরদিশাভ্যঃ ॥২৬৷৷ বসুভ্য ঋণ্যানালভতে রুদ্রেভভ্যা রুরূনাদিত্যেভ্যো নাকুন্বিশেভ্যো দেবেভ্যঃ পৃষতাস্তু সাধ্যেভ্যঃ কুলুঙ্গা৷৷২৭৷৷ ঈশানায় পরস্বত আলভতে মিত্রায় গৌরান্বরুণায় মহিষাবৃহস্পতয়ে গবয়াঁ ষ্ট্র উষ্ট্রান্৷৷২৮। প্রজাপতয়ে পুরষা হস্তিন আলভতে বাঁচে প্লীশ্চক্ষুষে মশকাঞ্ছেত্রায় ভৃঙ্গাঃ২৯৷৷ প্রজাপতয়ে চ বায়বে চ গোমৃগো বরুণায়া রণ্যো মেমো যমায় কৃষ্ণো মনুষ্যরাজায় মর্কটঃ শার্দুলায় রোহিদৃষভায় গবয়ী ক্ষিপ্ৰশ্যেনায় বর্তিকা নীলঙ্গোঃ কৃমিঃ সমুদ্ৰায় শিশুমায়রা হিমবতে হস্তী।।৩০। ময়ুঃ প্রজাপত্য উলো হলিঙ্ক্ষো বৃষদংশস্তে ধাত্রে দিশাং কঙ্কো ধুঙ্ক্ষাগ্নেয়ী কলবিঙ্কো লোহিতাহিঃ পুষ্করসাদস্তে ত্বাথ্রা বাঁচে কুঞ্চঃ ৩১। সোমায় কুলুঙ্গ আরণ্যোংজো নকুলঃ শকা তে পৌষ্ণাঃ ক্রোষ্টা মায়োরিন্দ্রস্য গৌরমৃগঃ পিন্ধো ন্যক্কুঃ কটস্তেইনু মত্যৈ প্রতিশ্রুষ্কায়ৈ চক্রবাকঃ ॥৩২৷ সৌরী বলাকা শার্গঃ সৃজয়ঃশয়াণ্ডকস্তে মৈত্রাঃ সরস্বত্যৈ শারিঃ পুরুষবা শ্বাবিট্টেমী শার্দুলো বৃকঃ পৃদাকুস্তে মনবে সরস্বতে শুকঃ পুরুষবা৷৩৩৷৷ সুপর্ণঃ পাৰ্জন্য আতিহসো দর্বিদা তে বায়বে বৃহস্পতয়ে বাচস্পতয়ে পৈঙ্গরাজোহলজ আন্তরিক্ষঃ প্লব মদগুমৎস্যস্তে নদীপতয়ে দ্যাবা পৃথিবীয়ঃ কুর্মঃ।৩৪৷ পুরুষমৃগশ্চমসসা গোধ কালকা দার্বাঘাটন্তে বনস্পতীনাং কৃকবাকুঃ সাবিত্রো হংসসা বাতস্য নাক্রো মকরঃ কুলীপয়স্তেহপারস্য হ্রিয়ৈ শল্যকঃ ৩৫৷ এণ্যজা মণ্ডুকো মূষিকা তিত্তিরিস্তে সর্পাণাং লোপাশ আশ্বিনঃ কৃষ্ণো রাত্রা ঋক্ষো জতুঃ সুষিলীকা ত ইতরজনানাং জহকা বৈষ্ণবী৷৩৬ অন্যবাপোর্ধ মাসানামৃশ্যো ময়ুরঃ সুপর্ণস্তে গন্ধর্বাণামপামুদ্ৰো মাসাং কশ্যপো রোহিৎপুণাচী। গোলত্তিকা তেহরসাং মৃত্যবেহসিতঃ ৩৭৷৷ বর্ষাঋতৃনামাখুঃ কশো মান্থালস্তে পিতৃণাং বলয়াজগররা বসূনাং কপিঞ্জলঃ কপোত উল্কঃ শশস্তে নিঋত্যৈ বরুণায়ারণ্যো মেষঃ।।৩৮৷৷ খিত্র আদিত্যনামুট্টো ঘৃণীবান্ধাঞ্জনসন্তে মত্যা অরুণ্যায় সৃমাররা রুরূ রৌদ্রঃ কৃয়িঃ কুটরুদাতৌহস্তে বাজিনাং কামায় পিকঃ৩৯৷ খংগো– বৈশ্বদেরঃ শ্ব কৃষ্ণঃ কর্ণো গর্দভস্তরক্ষুস্তে রক্ষসামিন্দ্রায় সূরঃ সিংহহা মারুতঃ কৃকলাসঃ পিপ্পা শকুনিস্তে শরব্যায়ৈ বিশ্বেষাং দেবানাং পৃষতঃ ॥৪০৷

[কোণ্ডিকা–৪০, মন্ত্র–৪০]

.

 মন্ত্ৰার্থঃ— ১। (অশ্বমেধ যজ্ঞে একুশটি যুপ হয়। মধ্যম যুপকে অগ্নিষ্ট বলা হয়। এতে সতেরোটি পশু বন্ধন করা হয়। ক্রমশঃ এই সবগুলির বর্ণন ও নিয়োজন এই প্রকার) অশ্ব, শৃঙ্গহীন ছাগ, এবং গবয় (গলকম্বলশূন্য গোতুল্য পশু); এগুলি প্রজাপতির সাথে সম্বন্ধিত পশু। প্রজাপতির উদ্দেশ্যে প্রিয় এই পশুগুলিকে আমি মধ্যযূপে বন্ধন করছিবলে এগুলিকে মধ্যযুপে বন্ধন করণীয়। (এই প্রকারে অন্য পশুগুলিকেও গ্রহণ পূর্বক সেই সেই দেবগণের প্রিয় বলে উচ্চারণ করে তার তার যুপে বন্ধন করণীয়।) শ্যামবর্ণের গলদেশ সম্পন্ন অজ অগ্নির পশু; সেটিকে অশ্বের ললাটে বন্ধনীয়। সরস্বতীর নিমিত্ত মেষী সম্মুখে বন্ধনীয়। দুই হনুর নীচে কৃষ্ণ-শ্বেত দুই বর্ণশালী দুটি অজ; সোম ও পূষা দেবতার শ্বেতকৃষ্ণ রোমের ছাপ অশ্বের নাভিতে বন্ধনীয়। সূর্য ও যমের শ্বেত কৃষ্ণ পশু অশ্বের দক্ষিণ ও বাম পার্শ্বে ক্রমশঃ বন্ধনীয়। ত্বষ্টার দুটি পশু অশ্বের পশ্চাৎ পদদ্বয়ে একটি একটি করে বন্ধনীয়। বায়ুসম্বন্ধী শ্বেতবর্ণ পশু অশ্বের পুচ্ছে বন্ধনীয়। সুকর্মা ইন্দ্রের নিমিত্ত গর্ভঘাতিনী গাভী এবং বিষ্ণুর নিমিত্ত এক খর্বাকৃতি পশু অশ্বের পুচ্ছেই বন্ধনীয়৷

২। লোহিত, ধূম্রলোহিত এবং কুলের ন্যায় রক্তবর্ণ পশু সোমদেবতার; এগুলি মধ্যযূপে বন্ধনীয়; কপিলবর্ণ (বা ফ্যাকাসে) শুকপক্ষীর ন্যায় হলুদবর্ণ ও রক্তাভ কপিল (ফ্যাকাসে লাল) এগুলি বরুণ সম্বন্ধী পশু; এগুলিও মধ্যযুপে বন্ধনীয়। কৃষ্ণবর্ণীয় ছিদ্রযুক্ত পশুকে এক পার্শ্বে বন্ধনীয়; শিতির (এক দিকে কৃষ্ণছিদ্রযুক্ত) ও সর্বাঙ্গে কৃষ্ণছিদ্রযুক্ত পশু, এগুলি সবিতাদেবের পশু। কৃষ্ণবর্ণের পদযুক্ত পশুকে দ্বিতীয় পার্শ্বে বন্ধনীয়। শ্বেত বর্ণের বাহুবিশিষ্ট (অর্থাৎ সম্মুখস্থ পদদ্বয় শ্বেতবর্ণযুক্ত) এবং সর্বশিতিবাহু পশু; এগুলি বৃহস্পতি দেবতার পশু। বিচিত্র বর্ণবিন্দুযুক্তা, লঘু (অর্থাৎ সূক্ষ্ম বিচিত্ৰবিন্দুযুক্তা)–এই সকল স্ত্রীপশু মিত্র ও বরুণ দেবতার; এগুলি দ্বিতীয় যুপে বন্ধনীয়।

৩। শুদ্ধ অর্থাৎ শুভ্র কেশযুক্ত, সর্বশুভ্র কেশযুক্ত এবং মণিরত্নের ন্যায় শুভ্র কেশযুক্ত পশু; এগুলি অশ্বিন্দ্বয়ের পশু। শ্বেত, শ্বেতবর্ণের চক্ষু ও লোহিত পশু; এগুলি পশুপতি রুদ্রের পশু। চন্দ্রের ন্যায় শ্বেত কর্ণবিশিষ্ট পশু যমদেবতার। গর্বযুক্ত পশু রুদ্র সম্বন্ধী এবং তমোরূপ পশু পর্জন্য সম্বন্ধী হয়ে থাকে। এগুলি তৃতীয় যুপে নিযোজ্য৷

৪। চিবিত্র বর্ণ, বক্র বিচিত্র বিন্দু এবং উর্দ্ধে বিচিত্র বিন্দুধারী পশু; এগুলি মরুৎদেবগণের পশু। অপপুষ্ট শরীর, রক্তিম রোমযুক্ত ও শ্বেতবর্ণের স্ত্রী-পশু (মেষী); এগুলি সরস্বতী সম্বন্ধিনী পশু। প্লীহারোগযুক্ত কর্ণশালী, হ্রস্বকর্ণ এবং রক্তবর্ণের কর্ণশালী পশু; এগুলি ত্বষ্টার পশু। গ্রীবায় কৃষ্ণবর্ণের রোমযুক্ত, বগলে শ্বেতরোমশালী ও তিলকযুক্ত জঙ্শালী পশু; এগুলি ইন্দ্র ও অগ্নির পশু। কৃষ্ণপু, অল্প ও বহু রোমযুক্ত পশু; এগুলি উষা দেবতার সম্বন্ধী পশু। এইসব পশুগুলি ঐ সকল দেবতাগণের উদ্দেশ্যে নিয়োজিত করছি।

৫। বিচিত্র বর্ণালিনী তিনটি স্ত্রী-পশু বিশ্বদেবগণের। দেড় বৎসর বয়স্ক তিনটি রক্তবর্ণ ছাগ বা দেবতার বলে জানা যায়। বিশেষ চিহ্নহীন তিনটি পশু অদিতি দেবতার নিমিত্ত বন্ধনীয়। সমান বর্ণীয় তিনটি পশু ধাতার (ধাতৃদেবতার) নিমিত্ত উৎসর্গ করণীয়। পঞ্চমে তিনটি ছোট ছাগ (ছাগশিশু) দেবতাগণের পত্নীবৃন্দের নিমিত্ত বন্ধন করা উচিত।

৬। কৃষ্ণবর্ণের গ্রীবা ও কৃষ্ণকণ্ঠা তিনটি পশু অগ্নিদেবতা সম্বন্ধী হয়ে থাকে। শ্বভ্র (অর্থাৎ শ্বেত ভ্র সম্পন্ন) তিনটি পশু বসুদেবগণের; রক্ত বর্ণশালী তিনটি পশু রুদ্র দেবতার; শ্বেতবর্ণ ও অধোভাগে ছিদ্রশালী তিনটি পশু আদিত্যবর্গের; আকাশরূপ বর্ণবিশিষ্ট তিনটি পশু পর্জন্য দেবতার। এই পশুগুলি আমি ঐ ঐ দেবগণের উদ্দেশ্যে যুক্ত করছি৷৷

৭। পূর্ণ আয়ুঃশালী হয়েও বামনাকৃতিসম্পন্ন তিনটি পশু ইন্দ্র ও বিষ্ণু দেবতা সম্বন্ধী হয়ে থাকে। পূর্ণ শ্বেতবাহু ও শ্বেতপৃষ্ঠ পশু ইন্দ্র ও বিষ্ণু দেবতা সম্বন্ধী হয়ে থাকে। তোতাবর্ণের (টিয়াপাখীর ন্যায় বর্ণশালী) তিনটি পশু অশ্ব সম্বন্ধী হয়ে থাকে। ধূসর বর্ণের তিনটি পশু অগ্নি ও মরুবৃন্দের সম্বন্ধী হয়ে থাকে। শ্যামবর্ণের তিনটি পশু পূষাদেব সম্বন্ধী হয়ে থাকে। এই পশুসমূহ ঐ ঐ দেবতার উদ্দেশ্যে যুক্ত করছি৷৷

৮। ধূসর বর্ণের তিনটি পশু ইন্দ্র ও অগ্নি দেবতা সম্বন্ধী; দুই বর্ণবিশিষ্ট তিনটি পশু অগ্নি ও সোমদেবতা সম্বন্ধী; তিনটি বামনাকৃতি সম্পন্ন বলদ অগ্নি ও বিষ্ণু দেবতা সম্বন্ধী; তিনটি বন্ধ্যা ছাগী মিত্র ও বরুণ দেবতা সম্বন্ধী; ধূসর বর্ণের তিনটি ছাগী মিত্র দেবতা সম্বন্ধী। আমি এই পশুগুলি সেই সেই দেবতার উদ্দেশ্যে যূপে বন্ধন করছি।

৯। কৃষ্ণগ্রীবাশালী তিন পশু অগ্নিদেবতা সম্বন্ধী; পিঙ্গলবর্ণের তিন পশু সোম সম্বন্ধী; শ্বেত বর্ণের তিন পশু বায়ুদেবতাক হয়ে থাকে। চিহ্নহিত তিন পশু অদিতি দেবীর নিমিত্ত বন্ধনীয়। সমানবর্ণ তিন পশু ধাতৃদেবতার নিমিত্ত বন্ধনীয়। তিনটি ছোট ছাগ দেবপত্নীগণের নিমিত্ত বন্ধন করা উচিত। আমি ঐ সকল পশুগুলি ঐ ঐ দেবতার উদ্দেশ্যে যুপে যুক্ত করছি।

১০। কৃষ্ণবর্ণের তিনটি পশু ভূমিদেবতাকে, ধূম্র বর্ণের তিনটি পশু অন্তরিক্ষদেবতাক, বড় তিনটি পশু দ্যুদেবতাক, বিবিধবর্ণশালী তিনটি পশু বিদ্যুৎদেবতাক, সিল্মরোগী (অর্থাৎ কুষ্ঠ বা ছুলিরোগাক্রান্ত) তিনটি পশু নক্ষত্রদেবতাক হয়ে থাকে। আমি ঐ পশুগুলিকে ঐ ঐ দেবতার উদ্দেশ্যে যুপে যুক্ত করছে।

১১। ধূম্নবর্ণের তিনটি ছাগ বসন্ত দেবতার নিমিত্ত আলম্ভন (হনন) করছি। শ্বেতবর্ণের তিনটি ছাগ গ্রীষ্মের অভিমানী দেবতার নিমিত্ত, কৃষ্ণবর্ণের তিনটি ছাপ বর্ষার অভিমানী দেবতার নিমিত্ত, রক্তবর্ণের তিনটি ছাগ শরৎ ঋতুর অভিমানী দেবতার নিমিত্ত, বিন্দুযুক্ত তিনটি ছাগ হেমন্ত ঋতুর অভিমানী দেবতার নিমিত্ত এবং ফ্যাকাসে রক্তিম তিনটি ছাগ শিশির- ঋতুর অভিমানী দেবতার নিমিত্ত আলম্ভন করছি।

১২। দেড় বৎসর বয়স্ক তিনটি পশু গায়ত্রী ছন্দের নিমিত্ত, আড়াই বৎসর বয়স্ক তিনটি পশু ত্রিষ্টুপ ছন্দের নিমিত্ত, দুই বৎসর বয়স্ক তিনটি পশু ছন্দের নিমিত্ত, তিন বৎসর বয়স্ক তিনটি পশু অনুষ্টুপ ছন্দের নিমিত্ত এবং সাড়ে তিন বৎসর বয়স্ক তিনটি পশু উষ্ণিক ছন্দের নিমিত্ত আলম্ভন করা উচিত। আমি তা-ই করছি৷৷

১৩। চারি বৎসর বয়স্ক তিনটি পশু বিরাটু ছন্দের নিমিত্ত, তিনটি যুবা অজ বৃহতী ছন্দের নিমিত্ত, তিনটি উপযুক্ত বয়স্ক অজ ককুপ ছন্দের নিমিত্ত, তিনটি শকট-বহন-সমর্থ অজ পংক্তি ছন্দের নিমিত্ত এবং তিনটি নবপ্রসূতা অজ অতি ছন্দের নিমিত্ত আলম্ভন করণীয়। আমি তা-ই করছি৷৷

১৪। কৃষ্ণ গ্রীবাসম্পন্ন তিনটি পশু অগ্নিদেবতাক হয়ে থাকে। বজ্রবর্ণের তিনটি পশু সোমদেবতাক, ধ্বস্তবর্ণের (বিনষ্টবর্ণশালী) তিনটি পশু সবিতৃ দেবতাক, তিনটি বৎসতরী (ছাগশিশু) সরস্বতী দেবতাক, তিনটি কৃষ্ণবর্ণীয় পশু পূষাদেবতাক, শ্বেত ও কৃষ্ণ বর্ণমিশ্রিত তিনটি কৃশকায় পশু, মরুৎদেবতাক, বহু বিচিত্র বর্ণের তিনটি পশু বিশ্বদেবতাক এবং তিনটি বন্ধ্যা পশু দ্যাবাপৃথিবীতাক। এই পশুগণকে যথাযথ দেবতার উদ্দেশ্যে শূপে যুক্ত করছি৷

১৫। [বরুণপ্রধাস পর্বের (পূর্বকাণ্ডে কথিত) পনেরোটি পশু পূর্বে উক্ত হয়েছে।কবুর বর্ণের তিনটি পশু ইন্দ্র ও অগ্নিদেবতাক। কৃষ্ণবর্ণের তিনটি পশু বরুণদেবতাক। দাগযুক্ত কায়াধারী তিনটি পশু মরুৎদেবতাক এবং শৃঙ্গরহিত তিনটি পশু প্রজাপতিদেবতাক।

১৬। (শাকমেধ পশুসমূহ কথন)–প্রথম গর্ভেৎপন্ন তিনটি পশুকে সেনাবান্ অগ্নির নিমিত্ত আলম্ভন করছি। তিনটি বাত্যা পশুকে সান্তপণ মরুতের নিমিত্ত, গৃহমেধী মরুবৃন্দের নিমিত্ত তিনটি সদ্য-প্রসূত পশু, ক্রীড়ী মরুবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনটি সঙ্কল্পিত পশু তথা স্বতবান্ মরুবৃন্দের উদ্দেশে অনুক্রমে জাত তিনটি পশু আলম্ভন করছি৷৷

১৭। [অষ্টাদশ শূপের নিমিত্ত মহাহবিঃ সংজ্ঞক পঞ্চদশটি পশুর কথা প্রথমে বলা হয়েছে–ঊনবিংশটি যুপের নিমিত্ত তিনটি কবুরবর্ণ পশু ইন্দ্র ও অগ্নিদেবতাক তথা বৃহৎ বৃহৎ শৃঙ্গশালী তিনটি পশু মহেন্দ্রদেবতাক তথা অনেক বর্ণসম্পন্ন তিনটি পশু বিশ্বকর্মাদেবতা সম্বন্ধী হয়ে থাকে। এই পশুসমূহ যুপে বন্ধন করছি৷৷

১৮। (পিতৃ ইষ্টদেবতা পশুবর্গের কথন)–ধূম্রবর্ণ (অর্থাৎ কৃষ্ণলোহিত বর্ণ) মিশ্রিত কপিল বর্ণ সদৃশ তিনটি পশু সোমপায়ী পিতৃগণের উদ্দেশ্যে; কপিলবর্ণ মিশ্রিত ধূম্র বর্ণ সদৃশ তিনিটি পশু বহিষদ পিতৃগণের উদ্দেশ্যে; কৃষ্ণবর্ণ মিশ্রিত পিঙ্গল বর্ণের তিনটি পশু অগ্নিাত্ত পিতৃগণের উদ্দেশ্যে এবং কৃষ্ণবর্ণের দাগসমন্বিত তিনটি পশু এ্যম্বক দেবতার উদ্দেশ্যে বিংশতিতম যুপে বন্ধন করা উচিত৷৷

১৯। (শুনাসীরীয় পশুসমূহ কথন)–আগ্নেয় প্রভৃতি পঞ্চদশ পশুর কথা পূর্বে কথিত হয়েছে। এক্ষণে]–কবুরবর্ণের তিনটি পশু শুনাসীরীয় (শুনাসীর দেবতাক) হয়। শ্বেত বর্ণের তিনটি পশু বায়ুদেবতাক এবং শ্বেত তিনটি পশুও সূর্যদেবতাক হয়ে থাকে। এই পশুসমূহ যথাযথ: দেবতার উদ্দেশ্যে ঘূপযুক্ত করছি।

২০। (সকল ঘূপ মিলিয়ে এই তিনশত সাতাশটি গ্রাম্য পশু হয়ে থাকে) বসন্তের (অর্থাৎ বসন্ত ঋতুর অভিমানী দেবতার) উদ্দেশ্যে তিনটি কপিঞ্জল (বা চাতক) পক্ষী আলম্ভন করছি। তিনটি কলবিঙ্ক (বা চটক) পক্ষী গ্রীষ্মের (অর্থাৎ ঋতুর অভিমানী দেবতার) উদ্দেশ্যে আলম্ভন করছি। বর্ষা ঋতুর অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি তিত্তির পক্ষীকে, শরৎ ঋতুর অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি বর্তিক (বা ভারই) পক্ষীকে, হেমন্ত ঋতুর অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি ককর পক্ষীকে, হেমন্ত ঋতুর অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি ককর পক্ষীকে এবং শিশির ঋতুর অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি বিককর পক্ষীকে যুপে যুক্ত (বা হনন) করছি৷৷

২১। সমুদ্র দেবতার নিমিত্ত তিনটি শিশুমার (অর্থাৎ শুশুক নামক জলজন্তু), পর্জন্যদেবের নিমিত্ত তিনটি মণ্ডুক (ব্যাঙ) জলদেবতার নিমিত্ত তিনটি মৎস্য, মিত্রদেবের নিমিত্ত তিনটি কুলীপয় মৎস্য এবং বরুণের নিমিত্ত তিনটি জলচর কুম্ভীরকে আলম্ভন করছি৷৷

২২। সোমদেবর নিমিত্ত তিনটি হংস, বায়ুদেবের উদ্দেশ্যে তিনটি সারস (বা বক), মিত্রদেবের নিমিত্ত তিনটি মগু (অর্থাৎ পানকৌড়ি পক্ষী), এবং বরুণ দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি চক্রবাক (চকা পক্ষী) আলম্ভন করছি৷৷

২৩। তিনটি কুকুট (মোরগ) অগ্নিদেবতার উদ্দেশ্যে, তিনটি উল্ক (পেঁচা) বনস্পতি দেবতার নিমিত্ত, তিনটি চাষ পক্ষী অগ্নি ও সোম দেবতার উদ্দেশ্যে, তিনটি ময়ূর অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের নিমিত্ত এবং তিনটি কপোত মিত্র ও বরুণ দেবতার উদ্দেশ্যে আলম্ভন করছি৷৷

২৪। সোমদেবের উদ্দেশ্যে তিনটি লাব নামক পক্ষী, ত্বষ্টাদেবের নিমিত্ত তিনটি কৌলিক নামক পক্ষী, দেবপত্নীগণের উদ্দেশ্যে তিনটি গোপাদী নামক পক্ষিণী, তিনটি কুলীক পক্ষী দেবজাতির নিমিত্ত, এবং তিনটি পারুঞ্চ পৃক্ষী গৃহপতি অগ্নিদেবতার উদ্দেশ্যে আলম্ভন করছি।

২৫। দিনের অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি কপোতকে আলম্ভন করছি। রাত্রির অভিমানী দেবতার নিমিত্ত তিনটি সীচাপ পক্ষিণী, অহোরাত্রির সন্ধিক্ষণের অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি জতুপাত্রা পক্ষিণী, মাসসমূহের অভিমানী তা দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি দাতূহ পক্ষী, এবং সম্বৎসরের অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি মহান সুপর্ণশালী পক্ষীকে আলম্ভন করছি৷৷

২৬। ভূমি দেবতার নিমিত্ত তিনটি মূষিক আলম্ভন করছি। অন্তরিক্ষের অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি পাক্ত (বিশেষ মূষিক), দ্যুলোকের অভিমানী দেবতার উদ্দেশে তিনটি কাশা মূষিক, প্রধান দিসমূহের উদ্দেশ্যে তিনটি নকুল (নেউল), এবং অবান্তর দিসমূহের উদ্দেশ্যে তিনটি বক (নেউল) আলম্ভন করছি।

২৭। বসুগণের নিমিত্ত তিনটি ঋষ্য মৃগ, রুদ্রবর্গের উদ্দেশ্যে তিনটি রুরু মৃগ, আদিত্যগণের নিমিত্ত তিনটি ন্যক্কু মৃগ, বিশ্বদেবগণের উদ্দেশ্যে তিনটি পৃষত মৃগ তথা সাধ্যদেবগমের নিমিত্ত তিনটি কুলুঙ্গ মৃগকে আলম্ভন করছি৷৷

২৮। ঈশান দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি পরস্বত মৃগকে আলম্ভন করছি। মিত্র দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি গৌর মৃগকে, বরুণ দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি মহিষকে, বৃহস্পতি দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি গবয়কে (অর্থাৎ গো-সদৃশ আরণ্য পশুকে), এবং ত্বষ্টা দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি উষ্ট্র (উট)-কে আলম্ভন করছি।

২৯। প্রজাপতি দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি পুরুষ-হস্তী, বাক্-দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি প্লয়ি নামক বক্রতুণ্ড আরণ্য পশুকে, চক্ষুর অধিষ্ঠাত্ দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি মশককে এবং শ্রোত্রের অধিষ্ঠাতৃ দেবতার উদ্দেশ্যে তিনটি ভ্রমরকে আলম্ভন (হনন) করছি।

৩০। প্রজাপতি ও বায়ু দেবতার নিমিত্ত একটি গোমৃগ (বা গবয়), বরুণ দেবতার উদ্দেশ্যে একটি অরণ্য মেষ, যমের নিমিত্ত একটি কৃষ্ণ মেষ, মনুষ্য রাজার নিমিত্ত একটি মর্কট (বানর), সিংহের অধিপতি দেবতার উদ্দেশ্যে একটি ঋষ্যমৃগ, ঋষভের অধিপতি দেবতার উদ্দেশ্যে একটি গবয়ী, ক্ষিপ্রশ্যেণের অধিপতি দেবতার নিমিত্ত একটি তিতির পক্ষী (বা ভারই পক্ষী),নীলঙগু দেবতার উদ্দেশ্যে একটি কীট (বা কৃমি), সমুদ্রের অধিপতি দেবতার নিমিত্ত একটি জলচর শিশুমার (শুশুক), এবং হিমালয়ের অধিপতি, দেবতার উদ্দেশ্যে একটি হস্তীকে আলম্ভন করছি।

৩১। প্রজাপতি দেবতার উদ্দেশ্যে একটি ময়ু (অর্থাৎ তুরঙ্গবদন কিন্নর); ধাতৃদেবতার নিমিত্ত একটি উতলা মৃগ, একটি হলিক্ষ সিংহ এবং বৃষদংশ বিড়াল; দিসমূহের অধিপতি দেবতার উদ্দেশ্যে একটি বক; অগ্নিদেবতার নিমিত্ত একটি কাকিনী (ধুঙ্ক্ষা); ত্বষ্টদেবতার একটি নিমিত্ত কলবিঙ্ক (অর্থাৎ চটক পক্ষী, একটি রক্তবর্ণ সর্প ও একটি কমলপক্ষী অর্থাৎ কমলের উপর উপবেশনকারী পক্ষী) এবং বাক-দেবতার উদ্দেশ্যে একটি সারস আলম্ভন করছি।

৩২। সোমদেবের নিমিত্ত একটি কুলুঙ্গ (অর্থাৎ কুরঙ্গ হরিণ); পূষা দেবতার উদ্দেশ্যে একটি আরণ্য ছাগ, একটি নকুল ও একটি ময়ূরী; মায়ু নামক দেবতার নিমিত্ত একটি শৃগাল; ইন্দ্রদেবের উদ্দেশ্যে একটি গৌরমৃগ, অনুমতি দেবতার নিমিত্ত একটি পি (নামক বিশেষ) মৃগ, একটি ন্যকু (নামক বিশেষ) মৃগ ও একটি কক্কট (নামক বিশেষ) মৃগকে আলম্ভন করছি। প্রতিশ্রুক দেবতার উদ্দেশ্যে একটি চক্রাককে যুপের সাথে যুক্ত করছি।

৩৩। একটি বলাকা (বকস্ত্রী) সূর্যদেবতার নিমিত্ত একটি শার্গ পক্ষী, একটি সৃজয় পক্ষী ও একটি শয়াণ্ডক পক্ষী মিত্রদেবতার উদ্দেশ্যে; মনুষ্যবা (অর্থাৎ নারীর ন্যায় বাসম্পন্না) একটি ময়না (বা শারি) পক্ষিণী সরস্বতী দেবতার নিমিত্ত; একটি শ্বাবিৎ (বা সেধা) ভূমি দেবতার উদ্দেশ্যে আলম্ভন করছি। মোদেবতার নিমিত্ত একটি ব্যাঘ্র, একটি বৃক, একটি চিতা এবং একটি সর্প আলম্ভন করছি। সমুদ্রদেবতার উদ্দেশ্যে একটি পুরুষবা (অর্থাৎ পুরুষের ন্যায় বাকশালী) তোতা (বা শুক) পক্ষীকে আলম্ভন করছি।

৩৪। সুপর্ণ পক্ষী পর্জন্যদেবতাক; একটি আতি (বা আড়ি), একটি বাহস ও একটি কাঠঠোকরা পক্ষী বায়ুদেবতাক; পৈঙ্গরাজ পক্ষী বাকের পালক বৃহস্পতিদেবতাক; অলজ পক্ষী অন্তরিক্ষদেবতাক; একটি প্লব (নামক জলচর) পক্ষী, একটি মগু ও একটি কারণ্ডব মৎস্য নদীপতি সাগরদেবতাক; একটি কূর্ম (কচ্ছপ) দ্যাবাপৃথিবীর অধিপতি-দেবতাক। এইগুলিকে আমি  যথাযথ দেবতার উদ্দেশ্যে আলম্ভন করছি।

৩৫। একটি পুরুষ-মৃগ চন্দ্রমার ভক্ষ্য; একটি গোধা, কালকা নামক একটি পক্ষীবিশেজ্ঞ ও একটি সারস পক্ষী বনস্পতিদেবতার হবিষ্যান্ন; একটি তাম্রচূড় (কুকুট বা মোরগ) কবিতা দেবতাক; একটি হংস বায়ু দেবতাক; একটি না, একটি মকর ও একটি কুলীপয়–এই তিন জলচরাবিশেষ অকুপার সমুদ্র দেবতাক; একটি শল্যক (বা শ্বাবিৎ) পক্ষী হ্রী-দেবতাক। এই সবগুলিকে আমি যথাযথ দেবতার উদ্দেশ্যে আলম্ভন করছি।

৩৬। একটি মৃগী দিবসের অভিমানী দেবতার নিমিত্ত আলম্ভনীয় হয়ে থাকে। একটি মণ্ডুক, একটি মূষিক ও একটি তিতির পক্ষী সর্প দেবতার নিমিত্ত আলম্ভনীয়। লোপাশ নামক একটি প্রাণী (বনচর বিশেষ) অশ্বিন্ দেবতাদ্বয়ের নিমিত্ত আলম্ভনীয়। রাত্রির অভিমানী দেবতার নিমিত্ত একটি কৃষ্ণমৃগ; অন্য দেবজনের নিমিত্ত একটি ভল্লুক, এবং একটি জতু ও একটি সুষিলিকা নামক পক্ষী; এবং একটি জহক (জোক) বিষ্ণু দেবতার উদ্দেশ্যে আলম্ভনীয়।

৩৭। অর্ধমাসের অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে একটি কোকিল; গন্ধর্বগণের নিমিত্ত একটি ঋষ্যমৃগ, একটি ময়ূর ও একটি সুপর্ণ পক্ষী; জলদেবতার উদ্দেশ্যে একটি কর্কট; মাসের অভিমানী দেবতার নিমিত্ত একটি কচ্ছপ; অপ্সরাগণের উদ্দেশ্যে একটি রোহিত মৃগ, একটি কুড্রিনাচী ও একটি গোলত্তিকা নামে তিন বন্য পশু; এবং মৃত্যুদেবতার নিমিত্ত একটি কৃষ্ণ পশু আলম্ভন করছি।

৩৮৷ ঋতুসমূহের অধিষ্ঠাত্ দেবতার উদ্দেশ্যে একটি ভেকী (স্ত্রী ব্যাঙ); পিতৃদেবগণের নিমিত্ত একটি আখু (মূষিক), একটি কশ ও একটি মন্থন নামক জীব এবং বলদেবতার উদ্দেশ্যে একটি অজগর আলম্ভন করছি। বসুগণের উদ্দেশ্যে একটি কপিঞ্জল; নিঋতি দেবতার নিমিত্ত একটি কবুতর, একটি উলুক ও একটি শস (খরগোস); বরুণ দেবতার নিমিত্ত একটি আরণ্য মেষ আলম্ভন করছি৷৷

৩৯। আদিত্যদেবের ভক্ষ্য হলো শ্বেত পশু। দীর্ঘগ্রীবা উট, তেজস্বী পশুবিশেষ ঘৃণিবান্ এবং কণ্ঠে স্তনবানজ বার্ধনস–এই তিন পশু মতিদেবীর নিমিত্ত আলম্ভ্য। অরণ্যদেবতার উদ্দেশ্যে একটি সিমরী গবয় আলভ্য। রুদ্রদেবতাক পশু হলো রুরু মৃগ। কয়ি (পক্ষীবিশেষ), কুটরু (কুকুট) ও কালকণ্ঠ (দাত্যৌহ) পক্ষী বাজী নামক দেবগণের নিমিত্ত আলম্ভন করছি। কামদেবতার উদ্দেশ্যে কোকিল আলম্ভন করা উচিত।

৪০। একটি খঙ্গ নামক মৃগবিশেষ বিশ্বদেবতাক। একটি কৃষ্ণবর্ণশালী কুকুর, একটি লম্বকর্ণ গর্দভ এবং একটি মৃগভক্ষক তরঙ্কু (নেকড়ে ব্যাঘ্র) রাক্ষসগণের নিমিত্ত আলম্ভনীয়। ইন্দ্রের নিমিত্ত আলম্ভন করছি একটি শূকর। মরুৎদেবতাক আলম্ভনীয় পশু হলো একটি সিংহ। একটি কৃকলাস, একটি পিপকা পক্ষিণী ও একটি শকুনি শরব্যা দেবতার নিমিত্ত আলম্ভনীয়। সকল দেবতার উদ্দেশ্যে একটি পৃষত মৃগ আরম্ভন করছি।]

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *