২৪. মতিয়ুর অবাক হয়ে ওসমানের দিকে তাকিয়ে রইল

মতিয়ুর অবাক হয়ে ওসমানের দিকে তাকিয়ে রইল। তার মুখ দেখে মনে হচ্ছে ওসমান সাহেবের কথার কোনো অর্থ সে বুঝতে পারছে না। সে রিস্মিত গলায় বলল, মিলিকে আপনি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে কিছু দিন রাখতে চান?

ওসমান সাহেব নিচু স্বরে বললেন, হ্যাঁ, যদি তোমার আপত্তি না থাকে। মতিয়ুর থমথমে গলায় বলল,

আপত্তি অবশ্যই আছে। সে দারুণ অসুস্থ মেয়ে। আপনি কাছাকাছি থাকলে সে কিছুটা সংযত আচরণ করে। এমনিতে তার আচারণ আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। তা ছাড়া…

তা ছাড়া কী?

বোনের বিয়ে দিয়েছেন, দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন পাগল পুষতে হবে না।

তুমি এভাবে আমার সঙ্গে কথা বলছি কেন?

মতিয়ুর চুপ করে গেল। ওসমান সাহেব বললেন,

তুমি ওকে আমার সঙ্গে দিতে রাজি না?

জি না। আমি ওকে ইন্ডিয়া পাঠাব। রাচি মেন্টাল হসপিটেলে আমার বন্ধুর একজন পরিচিত ডাক্তার আছেন। প্রফেসর দেবশৰ্মা। উনার সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

কবে নাগাদ পাঠাবে?

এখনও কিছু জানি না। পাসপোর্ট ভিসা এইসব হাঙ্গামা আছে। আপনি দেশে কবে যাবেন?

শিগগিরই যাব।

এমনি যাচ্ছেন, না কোনো কারণ আছে?

এমনি যাচ্ছি।

মিলি ঘুমুচ্ছিল। ওসমান সাহেব অপেক্ষা করলেন না। দেখা না করেই চলে এলেন। মাঝে মাঝে কারো জন্যেই অপেক্ষা করতে ইচ্ছা করে না।

কোথাও যাবার আগে তিনি এক ধরনের উত্তেজনা অনুভব করেন।

ঢাকা শহরে তার শিকড় গজিয়ে গেছে। কোথাও যাওয়া মানেই শিকড় ছিঁড়ে যাওয়া। মানুষ কী আসলে এক ধরনের বৃক্ষ? এই কথা ভাবতে ভাবতে তিনি বারান্দায় হাঁটতে লাগলেন। রাত প্রায় এগারোটা। আকবরের মা তার ছেলের সঙ্গে ফিসফিস করে কথা বলছে। ওসমান সাহেবের মনে হল তার মনের উত্তেজনা ওদের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছে। অন্য সময় এগারোটার অনেক আগেই রফিক ঘুমিয়ে পড়ত। আকবরের মা ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে থাকত টিভির দিকে। টিভির শেষ অনুষ্ঠানটি না হওয়া পর্যন্ত সে উঠত না। আজ টিভি চলছে না।

আকবরের মা বারান্দায় এসে বলল, চা দিমু?

না, চা লাগবে না।

গরম দুধ দিমু এক কাপ?

তিনি চমকালেন। দুধ দেবার কথা বলে সে কী একটু বাড়তি যত্নের চেষ্টা করছে? রানু এখানে থাকার সময় শোবার আগে তাকে এক কাপ বিস্বাদ গরম দুধ খেতে হত। আজ হঠাৎ আকবরের মারা হয়ত পুরানো কথা মনে পড়েছে। তিনি বললেন, দাও এক কাপ।

আকবরের মা আগুন-গরম দুধ নিয়ে এল। এতটা গরম তিনি আন্দাজ করেননি। মুখে নিতেই মুখ পুড়ে গেল।

চিনি দিমু?

চিনি লাগবে না। তুমি ঘুমোতে চাও।

আপনি কবে আইবেন?

ঠিক নেই। তুমি ঘুমোতে যাও, আকবরের মা!

সে গেল না। দরজা ধরে দাঁড়িয়ে রইল। রফিক এসে ভয়ে ভয়ে দাঁড়াল তার মার পাশে। তিনি বিস্মিত হয়ে বললেন, কিছু বলবে আমাকে?

জি না।

তোমাদের আমি রানুর বাসায় রেখে আসব। ও নতুন বাসা করেছে। বড় বাসা। অসুবিধা হবে না। এখানে যে বেতন পেতে ওখানেও তাই পাবে।

বলেই ওসমান সাহেবের মনে হল আকবরের মা কোনো বেতন নেয় না। তার বেতন সব জমা থাকে। একদিন সবটা একসঙ্গে নেবে। প্রায় আট বছর সে আছে খানে এই দীর্ঘ আট বছরে সে কোনো টাকা পয়সা নেয়নি। রানুকে বলেছে–নিলেই তো খরচ কইরা ফেলামু আফা। আফনের কাছে থাউক। বেতন কত কী তা নিয়েও তার কোনো মাথাব্যথা ছিল না। একশ টাকা করে হলেও প্রায় দশ হাজার টাকা। অনেকগুলি টাকা। এত টাকা নিয়ে সে কী করবে?

ওসমান সাহেব বললেন, আকবরের মা, তুমি কী বেতনের টাকাটা চাও? অনেক টাকা জমেছে তোমার।

টাকা নিয়ে আমি করমুটা কী? কারে দিমু?

নিজের টাকা অন্যকে দিবে, নাহয় নিজে খরচ করবে।

আকবরের মা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, আমরা আপনাদের সাথে যাইতে চাই ভাইজান।

আমার সাথে কোথায় যাবে?

দেশের বাড়িত। পাক-সাক কিরনের দরকার না? পাক-স্যাক কে করবে?

না, তার দরকার নেই।

আকবরের মা ক্ষীণ স্বরে বলল, আমরা কাপড়-চোপড় ঠিক কইরা রাখছি। তিনি ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললেন। মানুষ মায়াবদ্ধ জীব। তারা মায়ায় পড়ে গেছে। শুধু মানুষই মায়াবদ্ধ? সমস্ত জীব জগৎই কী মায়াবদ্ধ নয়? খুব ছোট বেলায় তিনি একটি কুকুর পুষেছিলেন। অত্যন্ত গোপনে বাড়ির গ্যারেজের পেছনে তার আহার এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল। কালে এটা কিং কংয়ের মত মহাবলশালী একটা কিছু হবে এই আশাতেই সম্ভবত তার নাম দেয়া হয়েছিল কিং কং। এক মাসের মাথায় কুকুর সংবাদ প্রকাশ হয়ে পড়ল। ফয়সল সাহেবের নির্দেশে একটা চটের বস্তায় তাকে মুড়ে পাঠিয়ে দেয়া হল সাত মাইল দূরে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে কিং কং তৃতীয় দিনের মাথায় বাড়ি এসে উপস্থিত। গেটের ভেতর ঢুকেই সে খুব হৈচৈ করে সে তার আনন্দ প্রকাশ করতে লাগল। তাকে আবার বস্তাবন্দি করে ফেলে দিয়ে আসা হল আরো দূরে। বস্তায় ভরে দেয়া হল কপুর! যাতে কপুরের গন্ধে অন্য সব গন্ধ এলোমেলো হয়ে যায়। ঘাণ নিয়ে নিয়ে সে আর ফিরে আসতে না পারে। কিন্তু সে ফিরে এল। দশ দিনের মাথায় কাহিল অবস্থায় সে উপস্থিত। এবার আর আগের মতো হৈচৈ নেই, আনন্দ উল্লাস নেই। তার চোখে ভয়।

ফয়সল সাহেব রেগে আগুন হয়ে গেলেন। বাগানের মালি কাশেম মিয়াকে বললেন, এবার এমন একটা কিছু কর যাতে সে ফিরে আসতে না পারে। যদি সে ফিরে আসে, তোমার চাকরি থাকবে না। কাশেম মিয়া ভয়ে ভয়ে বলল, বস্তাতে ভইরা পানিতে ডুবাইয়া দিমু?

যা ইচ্ছা কর, শুধু মনে রাখবে সে এলে তোমার চাকরি নট।

কিং কং আর ফিরে আসেনি। তিনি দিনের পর দিন প্রতীক্ষা করছেন কিং কং আবার আসবে। কত বার কাশেম মিয়াকে গোপনে জিজ্ঞেস করেছেন, সত্যি সত্যি পানিতে ফেলে দিয়েছেন কাশেম ভাই? কাশেম মিয়া চোখ কপালে তুলে বলেছে, তা কেমনে করি ছোড় মিয়া? আমি মানুষ না? আমার নিজের পুলাপান আছে না?

তা হলে আসে না কেন?

আইব আইব। একটু দেরি হইতেছে আর কি?

বার বছর বয়সে তার প্রথম রচনাটি কিং কং-কে নিয়ে লেখা। আমার পোষা প্ৰাণী এই পর্যায়ে ক্লাস সেভেনে তিনি রচনা লিখলেন, বাংলা স্যার মনমোহন বাবু সেই লেখাটি স্কুলের প্রায় সব কটি ক্লাসে পড়ে শোনালেন। তিনিই ওসমান সাহেবের লেখার প্রথম মুগ্ধ পাঠক। মনমোহন বাবু তার বরিশালের উচ্চারণে লেখাটা পড়তে পড়তে হঠাৎ থেমে গিয়ে চোখ মুছতেন এবং ধরা গলায় বলতেন, পশু হয়ে জন্মানো বড় কষ্ট। অবলা প্ৰাণী, মুখে ভাষা নাই। মনের কথা কাউকে বলতে পারে না।

ওসমান সাহেব বারান্দায় হাঁটতে লাগলেন। আকবরের মা তার ছেলেকে নিয়ে এখনো ফিসফিস করছে। ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে বোধ হয়। আকাশে বিশাল একটা চাঁদ উঠেছে। শহরে জ্যোৎস্না হয় না কথাটা ঠিক নয়। শহরের জ্যোৎস্নায় অন্য এক ধরনের বিষন্নতা আছে। শহরের জ্যোৎস্না পুরনো দুঃখের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।

তিনি হাঁটতে হাঁটতে কিংকংয়ের কথা ভাবতে লাগলেন। সমগ্র সৃষ্টির মূল কথা কী? বিষাদ? হয়তবা। কিন্তু গাঢ় বিষাদ! তীব্র বেদনা তিনি কী কখনো বোধ করছেন? মোটা দাগের দুঃখ তাকে কখনো স্পর্শ করেনি। মার মৃত্যু, বাবার মৃত্যু। অথচ কিং কংয়ের কথা মনে হলে এখনো তীব্র বেদনা বোধ হয়। কেন হয়?

ভাইজান আপনেরে ডাকে?

কে ডাকে?

তিনি বিস্মিত হয়ে তাকালেন। এই দুপুর রাতে তাকে কে ডাকবে?

টেলিফোন।

তিনি বিরক্ত মুখে বসার ঘরের দিকে এগিয় গেলেন। বারান্দায় হাঁটতে তাঁর ভালই লাগছিল।

সুর কেটে গেছে। আবার ফিরে আসা যাবে না।

টেলিফোন করেছে নবী। দুপুর রাতে অকারণে মানুষকে বিরক্ত করা একমাত্র তার পক্ষেই।

হ্যাঁলো ওসমান সাহেব, কেমন আছেন?

ভাল।

গৰ্জিয়াস একটা চাঁদ উঠেছে বাইরে। আপনার লক্ষ্য করার কথা নয়। আপনার কাজ হচ্ছে মানুষ নিয়ে। প্রকৃতি নিয়ে নয়। হ্যাঁলো, শুনতে পারছেন। আমার কথা?

পারছি।

কিছুক্ষণ আগে একটা প্ল্যান করা হল, আমরা কয়েকজন মিলে লঞ্চে করে বুড়িগঙ্গায় ঘুরব। সঙ্গে থাকবে হাজির মোরগ পোলাও এবং বুঝতেই পারছেন কী? জলযাত্রার ব্যবস্থা। ওসমান সাহেব।

বলুন।

আপনি তৈরি হয়ে থাকুন। আমি আপনাকে নিতে আসছি। আমাদের সঙ্গে যাচ্ছেন নিতীশ বাবু। চিনতে পারছেন তো?

না।

আপনি তো ভাই অবাক করলেন। নিতীশ শৰ্মা, কবি ও নাট্যকার। কলকাতা থেকে এসেছেন। নিতীশ বাবু আমার পাশেই আছেন। কথা বলবেন তার সাথে?

জি না। অপরিচিত কারোর সঙ্গে আমি কথা বলতে পারি না।

অপরিচিত হবে কেন। নিতীশ বাবুর লেখা তো পড়েছেন? স্বরবৃত্তে আসিনি কখনো, পড়েননি?

কবিতা পড়ি না। নবী সাহেব শুনুন, আমি যাচ্ছি না। আপনাদের সঙ্গে।

কেন?

আমি এ জাতীয় ব্যাপারগুলি ঠিক এনজয় করি না।

মনিকাও যাচ্ছে আমাদের সঙ্গে। ওর ইচ্ছা আপনাকে সঙ্গে নেবার। আমি নিজে আপনার কোম্পানির জন্যে তেমন উতলা নাই। কী যাবেন?

আমার শরীরটা ভাল নেই।

আপনি তো এখানে ব্যায়াম করবার জন্যে আসছেন না। লঞ্চের রেলিং ধরে জ্যোৎস্না দেখবেন। আমরা চাঁদপুর যাব। তারপর ফিরে আসব। নদী বক্ষে রাত কাটাব। নিতীশ বাবুর স্ত্রীও যাচ্ছেন। কীর্তনের একজন নামী শিল্পী। তিনি সারা রাতই গানটান গাইবেন।

কিছু মনে করবেন না। নবী সাহেব, আমি যাব না।

নবী সাহেব খানিকক্ষণ কোনো কথা বললেন না। ওসমান সাহেব ভেবে পেলেন না, হঠাৎ তাকে নেবার জন্যে নবী এত ব্যস্ত কেন? তারা তাঁর স্বভাব জানে। দল বেঁধে প্রকৃতি দেখা, সাহিত্য সভা করা, গানের আসর করা এসবে তাঁর কোনোকালেই কোন আগ্রহ ছিল না। তিনি মৃদুস্বরে বললেন, নবী সাহেব, রেখে দেই।

এখনি রাখবেন না–মনিকার সঙ্গে কথা বলুন।

ওসমান সাহেবের বিস্ময়ের সীমা রইল না। মনিকা কী তাকে সঙ্গে যাবার জন্যে বলবে? সেই অনুরোধ না রাখার মত মনের জোর কী তাঁর আছে। বহুদিন পর মনিকার সঙ্গে তাঁর কথা হচ্ছে। তাঁর ধারণা ছিল মনিকার প্রতি তিনি এখন আর তেমন কোনো আকর্ষণ অনুভব করছেন না। কিন্তু ধারণা ঠিক নয়। ওসমান সাহেব টেলিফোন হাতে নিয়ে এক ধরনের উত্তেজনা অনুভব করলেন। তাঁর নিঃশ্বাস ভারী হয়ে এল। কেউ কখনো হারায় না। মানুষের মনের মত বিচিত্র আর কী আছে। কাউকে সে হারাতে দেয় না। বিশাল এক অন্ধকার ঘরে সমস্তই সাজানো। যে কোন মুহূর্তে আলো ফেলে সে তুচ্ছতম বস্তুকেও আলোকিত করে।

মনিকা শান্ত স্বরে বলল, শরীর কী বেশি খারাপ?

না খুব বেশি না।

অনেক দিন দেখা হয় না তোমার সাথে। লেখাটেখাও কিছু চোখে পড়ে না।

লিখতে পারছি না।

কেন?

জানি না। ক্ষমতা শেষ হয়ে গেছে বোধ হয়। কিংবা ক্ষমতা হয়ত কোনকালে ছিলইনা।

দুঃখবাদী কথাবার্তা বলছি কেন?

ওসমান সাহেব হাসলেন। নিঃশব্দ হাসি। মনিকা টের পেল না।

এই গভীর রাতে তোমাকে টেলিফোন করার কারণটি জান?

জানি। জ্যোৎস্না দেখা।

না সেটা তেমন কোনো কারণ নয়। জ্যোৎস্না দেখার জন্যে লঞ্চ ভাড়া করার দরকার নেই। ব্যবস্থা করা হল নবীর জন্যে। নবীর খবর জান নিশ্চয়ই।

কী খবর?

আজ রাত আটটায় খবরে তো বলেছে।

খবর আমি শুনিনি।

নবী স্বাধীনতা পদক পেয়েছে। সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্যে।

খুব ভাল খবর। নবী নিশ্চয়ই উল্লসিত।

না। সে গম্ভীর। বলছে, পদক-ফদকের জন্যে আমি লিখি না। কিন্তু কথাটা ঠিক নয়। খবর শুনেই সে ছুটে এসেছে আমার কাছে। সেলিব্রেট করার জন্যে কী করা যায়। সেই নিয়ে চিন্তাভাবনা। শেষে নদী বক্ষে ভ্রমণ ঠিক করা হয়।

মনিকা হাসল। কী সুন্দর হাসি।

তুমি আসতে পারছি না?

শরীরটা ভাল নেই। তাছাড়া–

তাছাড়া কী?

কাল ভোরে আমি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি, কিছু দিন থাকব। সেখানে।

হঠাৎ গ্রামের বাড়িতে কেন?

কোনো কারণ নেই। এমনি।

আচ্ছা ঠিক আছে। পরে তোমার সঙ্গে দেখা হবে।

মনিকা ফোন রেখে দিল। ওসমান সাহেব ঘুমুতে গেলেন। ঘুম আসবে না। শুয়ে শুয়ে বইটই পড়লে কেমন হয়। কিন্ত বাতি জ্বালাতেও ইচ্ছা করছে না। তিনি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলেন নবীর প্রতি তিনি কোনো ঈর্ষাবোধ করছেন না। কেন করছেন না? সাহিত্যের আসর থেকে তিনি কী নিজেকে নির্বাসিত করেছেন? এ রকম হল কেন?

তার পুরনো বইগুলির এডিসন হচ্ছে না। প্রকাশকরা উৎসাহিত বোধ করছে না। কেউ বোধ হয়। এসব বই আর চায় না। তারা এখন চাইবে নবীর মত লেখকদের লেখা। যেখানে ঝলমল করবে। প্ৰাণ। নবীর শেষ বইটি প্রকাশিত হবার সঙ্গে সঙ্গে একটা আলোড়ন হয়েছে। একজন লেখকের জন্যে এরচে বড় পুরস্কার আর কী?

আচ্ছা তিনি কী আবার কোনো দিন লিখতে পারবেন? পাঠককে আলোড়িত করবার মত না হোক সাধারণ একটি লেখা? মনে হয় না। লেখা হবে না। আর কোনো দিন। এখন তার নির্বাসনের কাল। তিনি ছটফট করতে লাগলেন। শেষ রাতে তন্দ্রার মত হল। সেই তন্দ্রার মধ্যেই স্বপ্নে দেখলেন, কিং কং ফিরে এসেছে। কিন্তু তার চোখ দু’টি নষ্ট। সে গন্ধ ওঁকেণ্ডকে পুরানো বন্ধুকে খুঁজে বের করতে চাচ্ছে কিন্তু পারছে না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *