মুনা,
ভেবেছিলাম বাড়ি পৌঁছেই তোমাকে চিঠি দেব। তা সম্ভব হয়নি। কেন সম্ভব হয়নি। শুনে তুমি হাসবে। কলমের অভাব। ভুলে কলম ফেলে গেছি। বাড়ির কাছে যে কয়েকটি দোকান আছে তাদের কাছে বল পয়েন্ট ছাড়া কিছু নেই। কলমের জন্যে যেতে হবে সিদ্ধিরগঞ্জ বাজারে। সেটা এখান থেকে তিন মাইল। সমস্যার সমাধান হল আজ। দেখতেই পােচ্ছ চিঠি কালির কলমে লেখা। বাড়ি এসে অনেকগুলি সমস্যার মধ্যে পড়েছি। চারদিকে কোমর উঁচু ঘাস হয়েছে। সেই ঘাসের বনে অনায়াসে মাঝারি সাইজের একটা বাঘ লুকিয়ে থাকতে পারে। তালা দিয়ে গিয়েছিলাম। তালা ভেঙে জিনিসপত্র চুরি গেছে। শুধু যে ছোটখাটো জিনিস গেছে তাই না। আমাদের একটা বিশাল খাটিও উধাও। আর ময়লা যে কি পরিমাণ হয়েছে কী বলব। লোক লাগিয়ে সাতদিন ধরে পরিষ্কার করছি এখনো সিকিভাগ কাজও হয়নি। সারাদিন এইসব নিয়ে থাকি। সন্ধ্যাবেলা করার কিছু থাকে না। তুমি শুনলে হাসবে তখন কেন জানি একটু ভয় ভয়ও করে।
কাজের যে মেয়েটি আছে সে আরো বেশি ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। সে নাকি কবে দেখেছে রান্নাঘরে ঘোমটা মাথায় একটা বৌ মশলা পিষছে। সে কে কে বলে চিৎকার করতেই বৌ হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। দিনের বেলায় ঘটনাটা খুব হাস্যকর মনে হয়। কিন্তু সন্ধ্যা মিলাবার পর ভয় ভয় করে। সারারাত হারিকেন জ্বালিয়ে রাখি।
আসলে আমাদের এই বাড়ির এখন মৃত্যু হয়েছে। জড় পদার্থেরও প্রাণ আছে। এরাও মাঝে মাঝে মারা যায়। যেমন এই বাড়ি। যে বাড়িতে নিয়মিত জন্মমৃত্যু হয় সেই বাড়িটির প্রাণ আছে। আমাদের এই বাড়িটিতে শুধু মৃত্যুই হচ্ছে। দীর্ঘদিন কেউ জন্মায়নি। কাজেই বাড়িটির মৃত্যু হয়েছে। আমি ঠিক করেছি এটাকে বাঁচিয়ে তুলব। সব সময় লোকজনে বাড়ি গমগম করবে। নতুন শিশুরা জন্মাবে। আমার অনেক পরিকল্পনা আছে। সেই সব নিয়ে তোমার সঙ্গে কথা বলা হয়নি। কারণ বাড়ির ব্যাপারটা তোমার পছন্দ নয়। না দেখই তুমি অপছন্দ করে বসে আছ। আগে একবার এসে দেখ। দীঘির ঘাটে গিয়ে বস। কিংবা ছাদে পাটি পেতে দূরের বিলের দিকে তাকাও তাহলে দেখবে এটা চমৎকার জায়গা।
গ্রামে, শহরের সব রকম সুযোগ ব্যবস্থাও হচ্ছে। ইলেকট্রিসিটি চলে আসছে। গ্রামীণ ব্যাংক হয়েছে। কৃষি অফিসও হবে। মেয়েদের যে মাইনর স্কুল ছিল এ বছরই নাইন-টেন চালু হবে। ইচ্ছা! করলে এই স্কুলে তুমি মাস্টারিও করতে পার। স্কুলের জন্যে আমি ছবিঘা জমি দিয়েছি। আগ্রহ শুই দিয়েছি। আমি জায়গাটাকে বদলে ফেলতে চাই। শহর থেকে কেউ এসে যেন হাঁপিয়ে না ওঠে।
মুনা, তুমি বকুল এবং বাবুকে নিয়ে এখানে এসে কয়েক’দিন থেকে যাও। আমার ওপর রেগে আছ, ঠিক আছে থাক। রাগ কমাতে বলছি না। রাগ নিয়েই আস। তোমার ভাল লাগবে। তোমরা কবে আসতে পারবে জানালে লোক পাঠাব। আমি নিজে আসতে পারছি না। কারণ অনেক রকম ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছি। এলেই দেখবে। আজ এই পর্যন্ত থাকুক। দয়া করে চিঠির উত্তর দিও।
মামুন
নিতান্ত অপ্রিয় চিঠিও মানুষ দুবার পড়ে। কিন্তু এই চিঠিটি দ্বিতীয়বার পড়তে ইচ্ছা করছে না। আবার ফেলে দিতেও মন চাইছে না। মুনা ড্রয়ারে রেখে দিল। যদি কখনো ইচ্ছা হয় আবার পড়া যাবে। ইচ্ছা না করলে পড়ে থাকবে এবং এক সময় ড্রয়ার গুছাতে গিয়ে বকুল এসব জঞ্জাল ফেলে দেবে।
বাবু এসে বলল, আপা তোমাকে বাবা ডাকে।
যাচ্ছি। তুই আজ স্কুলে যাসনি?
তুই প্রায়ই স্কুল ফাঁকি দিস তাই না?
কে বলল তোমাকে?
আমার মনে হচ্ছে।
মুনা উঠে দাঁড়াল। বাবু দাড়িয় রইল শুকনো মুখে।
শওকত সাহেবের হঠাৎ করে জ্বর এসে গেছে। শেষ রাতের দিকে গা কেঁপে জ্বর এসেছে। এখনো থামেনি। আজ অফিস কামাই হয়ে গেল। বড় সাহেব রাগারগি করবে নিৰ্ঘাৎ। কাউকে দিয়ে একটা খবর পাঠানো দরকার। খবরটা দেবে কে?
মামা, ডেকেছি কেন?
শরীরটা খারাপ হয়ে গেছে। জ্বর।
সে তো সকালেই শুনলাম। জ্বর কি আরো বেড়েছে?
হুঁ। অফিসে যেতে পারব না।
যেতে বলেছে কে তোমাকে, শুয়ে থাক। আর যদি বেশি খারাপ লাগে তোমার ভাবী জামাই তো আছেই খবর দিয়ে দেই।
তুই রেগে আছিস কেন রে?
রোগে থাকব কেন? মেজাজ খারাপ হয়ে আছে।
একটু বোস। কথা আছে।
মুনা বসল। শওকত সাহেব বলার মতো কোনো কথা খুঁজে পেলেন না। বলার মতো কিছু তাঁর ছিল না।
বল মামা কি বলবে?
বকুলের বিয়ের কি হল তাই বল। নতুন করে কি আর হবে? তারিখ মত বিয়ে হবে। চিন্তার কিছু নেই। কেনাকাটা?
সামনের মাসে হবে। তুমি টাকা দিলে তারপর তো কেনাকাটা।
দাওয়াতের কার্ড-টার্ড তো ছাপানো দরকার।
হবে সবই হবে। যথাসময়ে হবে।
বিয়ে বাড়িটা ঠিক জমছে না। মানে ইয়ে…
মুনা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। শওকত সাহেব নিচু গলায় বললেন, হৈচৈ ছাড়া কি বিয়ে বাড়ি হয়? কোন হৈচৈ নেই। কিছু নেই।
ঐদিন তুমি বললে কোন হৈচৈ না, আর আজ উৎসব-উৎসব করছি আশ্চর্য। মামা উঠি।
যাবি নাকি কোথাও?
হুঁ। একটা শাড়ি কিনব!
আবার শাড়ি? ঐদিন না কিনলি?
আরো কিনিব। আমার জমানো সব টাকা খরচ করব। দুটো সোনার চুড়ি বানাব।
শওকত সাহেব চুপ করে গেলেন। মুনার কোন-একটা সমস্যা হয়েছে যা তিনি ধরতে পারছেন না। লতিফা থাকলে ঠিকই ধরত।
মুনা বকুলকে সঙ্গে নিল। বকুলকে সঙ্গে নিয়ে কোথাও যাওয়া একটা সমস্যা। ইদানীং বকুলের খুব বকবকানি স্বভাব হয়েছে। বকবক করে মাথা ধরিয়ে দেয। এখনো তাই করছে। রিকশায় উঠেই কথা বলা শুরু করেছে।
বাকের ভাইয়ের কাণ্ডকারখানা কিছু শুনেছ। আপা? মারামাবি করেছে। মাখন বলে একটা ছেলে আছে না, মুখটা চ্যাপ্টা, তাকে এমন চড় দিয়েছে যে চাপার একটা দান্ত নড়ে গেছে। তারপর সিদ্দিক সাহেব আছে না? ঐ যে কুজো হয়ে হাঁটেন তাকে গিয়ে বলেছে, আমি আপনাকে খুন করে ডেডবিডি নর্দমায় ফেলে দিব। সিদ্দিক সাহেব এখন ঘর থেকে বেরুচ্ছেন না। আপা, তুমি শুনিছ কী বলছি?
শুনছি।
সিদ্দিক সাহেবের একটা গাড়ি আছে না। ঐটার দুটো টায়ার কে যেন ফাসিযে দিয়ে গেছে। নিৰ্ঘাৎ বাকের ভাইয়ের কাণ্ড। আরো কি যে করবে। কে জানে।
মুনা বিরক্ত হয়ে ধমক দিল, চুপ করত।
বকুল কয়েক সেকেন্ডের জনো চুপ করে আবার কথা শুরু করল, মাঝখানে বাকের ভাই বেশ ভদ্র হয়ে গিয়েছিল তাই না। আপা? এখন আবার আগের মতো হয়ে গেছে। পা ফাক করে দাঁড়িয়ে থাকে। আর এমন ভাবে তাকায় যেন কাঁচা খেয়ে ফেলবে। অবশ্যি আমার সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করে। গতকাল স্কুলে যাবার সময় দেখা, বাকৃের ভাই গম্ভীর হয়ে বলল, কই যাচ্ছ? স্কুলে? আমি বললাম, হ্যাঁ। বাকের ভাই বলল, হেঁটে হেঁটে যাচ্ছ কেন? রিকশা নাও, দু’দিন পর বিয়ে এখন রোদে হাঁটাহাঁটি করা ঠিক না। ঘর থেকে ধের হওয়াই ঠিক না। ঘরে বসে থাকবে। আমি বললাম..
চুপ কর তো বকুল।
তোমার শরীর খারাপ নাকি আপা?
হুঁ। আর শোন, তুই কি গায়ে সেন্ট দিয়েছিস? বকুল মৃদু স্বরে বলল, হ্যাঁ।
একগাদা সেন্ট দেয়ার মানেটা কি? গন্ধে বমি আসছে। বিয়ে ঠিক হলেই গায়ে বালতি বালতি সেন্ট ঢালতে হবে?
বকুল লজ্জা পেয়ে গেল। মুনা শীতল গলায় বলল, বিয়েটা এমন কোন ব্যাপার না। বিয়ে হচ্ছে বলেই জীবন-যাপনের পদ্ধতি পাল্টাতে হবে না। আগে যেমন ছিলি পরে ও তেমনি থাকবি।
আচ্ছা থাকব। তুমি এমন কথায় কথায় ধমক দি ও না তো আপা।
কথায় কথায়, ধমক দেই?
হ্যাঁ দাও। আগে বাবা দিত এখন দাও তুমি। কি যে খারাপ লাগে তুমি সেটা কোনদিন বুঝবে না। যদি বুঝতে তাহলে এ রকম করতে না। তোমার সঙ্গে আসাই ভুল হয়েছে।
ভুল হলে চলে যা। রিকশা নিয়ে চলে যা। তোকে সাধাসাধি করে সাথে নিয়ে যেতে হবে? বকুল কাটা কাটা গলায় বলল, মামুন ভাইয়ের সঙ্গে তোমার একটা কিছু হয়েছে। সেই রাগটা তুমি ঢালছ আমাদের সবার ওপর। রিকশা থামাতে বল। আমি নেমে যাব।
মুনা রিকশা থামাতে বলল। বকুল সত্যি সত্যি নেমে গেল। বিয়ে কী বিশেষ একটা কিছু যা সত্যি মানুষকে বদলে দেয়? মুনা নিজেও তার কিছুক্ষণের ভেতরেই ঘরে ফিরে এল। বকুলকে কোথাও পাওয়া গেল না; সে ফেরেনি। তার সেই বিখ্যাত টিমা ভাবার কাছেও যায়নি। কোথায় যেতে পারে? জহিরের কাছে? বসে বসে পেপসি খাচ্ছে?
রাগ করতে গিয়েও মুনা রাগ করতে পারল না। তার কেন জানি হাসি পেতে লাগল। বাবু বলল, হাসছ কেন?
হাসি আসছে তাই হাসছি।
বকুল আপাকে না করে দিও। রোজ ওখানে যায় আমার ভাল লাগে না।
রোজ যায় নাকি?
হুঁ রোজই যায়।
করে কী? বসে বসে পেপসি খায়?
হুঁ। তুমি হাসছ কেন?
আমি হাসলে তোর অসুবিধা কী?
বাবু গম্ভীর মুখে বের হয়ে গেল। অল্প বয়সে কেমন একটা ভারিক্কি ভাব এসে গেছে বাবুর মধ্যে। দেখতে মজা লাগে। মাথা নিচু করে হাঁটার ভঙ্গিটিও কেমন বুড়োটে যেন সংসারের জটিলতায় ক্লান্ত একজন মানুষ।
শওকত সাহেবেবী জ্বর আরো বেড়েছে। বুড়ে বয়সে জুরািজুরি খুব কাবু করে মানুষকে, তাকে যেমন করেছে। তার মনে হচ্ছে। এ যাত্ৰা তিনি বাঁচবেন না। তিনি সারা দুপুর জ্বর গায়ে বারান্দায় বসে রইলেন। তার প্রাণ ই ই করতে লাগল। সংসার মোটামুটি গুছিয়ে এনেছেন এ সময় মরে যাওয়াটা অন্যায়। কিন্তু সংসারে অন্যায়গুলিই সব সময় হয়। যখন একজন সব গুছিয়ে-টুছিয়ে বসে তখনই দুম করে একটা হাট অ্যাটাক। চোখ উল্টে বিছানায় ভিডুমি খেয়ে পড়া। কোনো মানে হয় না।
রাতের বেলা জ্বর হাঁস করে নেমে গেল। ঘাম দিয়ে শরীর ঠাণ্ডা। শরীর বেশ ঝরঝরে লাগছে। ক্ষিধে হচ্ছে। শওকত সাহেবের মনে হল এসবও ভাল লক্ষণ নয়। এ রকম চট করে জ্বর নেমে যাবে কেন? তিনি ক্ষীণ স্বরে ডাকলেন, মুনা, মুনা।
মুনা রান্না চাপিয়েছে। সে বিরক্ত মুখ করে উঠে এল।
কি হয়েছে মামা? মিনিটে মিনিটে ডাকছ কেন?
শরীরটা ভাল লাগছে না।
জ্বরটর সেরে তুমি তো দিব্যি ভালমানুষ। এত ডাকাডাকি কেন?
বাঁচব না রে মুনা?
বুঝলে কি করে? স্বপ্লটিপ্ল দেখছ? মামি কি এসে বলেছে নিয়ে যেতে এলাম?
হাসছিস কেন? এটা কী হাসির কোনো কথা?
মুনা খানিকটা বিব্রত বোধ করল। হেসে ফেলা উচিত হয়নি। সে রান্নাঘরে ফিরে গেল! বারু উনোনের পাশে মুখ লম্বা করে বসে আছে। অন্যদিন এই সময়টার বকুল থাকে। নিজের মনে কথা বলে যায়। আজ রাগারগির কারণে সে নিশ্চয় মুখ অন্ধকার করে নিজের ঘরে বসে আছে। বারু মুন আপাকে দেখে একটু হাসল। মুনা ঝাঁঝাল গলায় বলল, তুই এখানে কেন? পড়াশোনা নেই?
মাথা ধরেছে।
মুনা তীক্ষ্ণ চোখে তাকাল। বাবু সত্যি কথা বলছে না। তার মুখ হাসি হাসি। মাথা ধরা মানুষের মুখ নয়।
কিছু বলবি নাকি?
হুঁ।
কি? বলে ফেল। কথা পেটে নিয়ে বসে আছিস কেন?
শোবার সময় বলব।
একবার যখন বলেছে শোবার সময় বলর তখন সে শোবার সময়ই বলবে। এর আগে মারে গেলেও সে মুখ খুলবে না।
বাবু।
কি?
একটা কাজ করত একজন ডাক্তার নিয়ে আয়। মামাকে দেখাই। মামার মনে হয় ধারণা হয়েছে তার অসুখ-বিসুখকে আমরা তেমন পাত্তা দিচ্ছি না।
এখন আনব?
হুঁ। এখনি নিয়ে আয়। জহিরকে আনবি।
বাবু মুখ কালো করে বলল, ওকে কেন?
ওকে আনানই তো ভাল। ভিজিট দেয়ার ঝামেলা থাকবে না। আর জামাই মানুষ শ্বশুরকে দেখবে দরদ দিয়ে।
মুনা মুখ নিচু করে হাসতে লাগল। তার কেন জানি খুব মজা লাগছে। সে ঠিক করে রাখল জহির এলে বকুলকে দিয়ে চা পাঠাবে। আগে থেকে এ রকম ছেলেমানুষি একটি চিন্তা তার মাথায় কেন ঢুকল এই নিয়েও মুনা খানিকক্ষণ ভাবল। তার মাথাটা কী খারাপ হয়ে যাচ্ছে নাকি?
মেয়েদের মাথা খারাপ হয়ে যাওয়া খুব বাজে ব্যাপার। সে যখন তার চাচাদের সঙ্গে থাকত তখন ময়নার মাকে দেখেছে। চব্বিশ-পঁচিশ বছরের সুন্দরী মেয়ে। মাথা খারাপ হবার পর এমন সব কুৎসিত কথা চেঁচিয়ে বলত যে শোনা মাত্র ইচ্ছা করত ছুটে পালিয়ে যেতে।
মুনা রান্না শেষ করে বারান্দায় এসে দেখল। ইজিচেয়ারে বকুল বসে আছে। তার চোখে-মুখে রাগের কোন চিহ্ন নেই। সে বোধ হয় শুনেছে বাবু গিয়েছে জহিরকে আনতে।
বকুল?
কি আপা?
তোকে আমি খুব একটা জরুরি কথা বলব, বকুল, মন দিয়ে শোন।
বকুল উঠে দাঁড়াল। মুনা চাপা স্বরে বলল, আমি যদি কোন কারণে পাগল-টাগল হয়ে যাই তাহলে তুই বিষ খাইয়ে আমাকে মেরে ফেলবি। চিকিৎসা করার দরকার নেই।
এসব কথা বলছ কেন তুমি?
মুনা তার জবাব না দিয়ে হাত-মুখ ধোবার জন্যে বাথরুমে ঢুকল। বকুল হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল। বুঝতে পারল না। আপার কি হয়েছে।