পঞ্চাশের নতুন নক্ষত্রমণ্ডলী
তিরিশ ও চল্লিশের দশকের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পঞ্চাশের দশকের পূর্ব বাংলার আধুনিক বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি ও শিল্পকলার সৌধ। ওই দুই দশকে যারা শিল্প-সাহিত্যের জগতে নিযুক্ত ছিলেন, তাঁদের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়, মূলধারার বাংলার শিল্প-সাহিত্যের পাশে তাঁদের কাজ দুর্বল ও ম্লান মনে হতে পারে, কিন্তু যে মানেরই হোক, তাঁদের কাজের ঐতিহাসিক মূল্য অবহেলা করার নয়। তাঁদের কাজের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। কলকাতার লেখক-পাঠকের কাছে তাদের কদর ছিল না। পূর্ব বাংলার নতুন প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের নব্য আধুনিকদের কাছেও তারা গণ্য হয়েছেন প্রাচীনপন্থী হিসেবে। পঞ্চাশের আধুনিকেরা তিরিশ ও চল্লিশের লেখকদের চেয়ে খুব যে বেশি ভালো লিখেছেন, তা নয়। তবে পঞ্চাশে কয়েকজন শক্তিশালী আধুনিক লেখকের আবির্ভাব ঘটে। তাঁদের মধ্যে শামসুর রাহমান, আলাউদ্দিন আল আজাদ প্রমুখ।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর মূলধারার সঙ্গে সংযুক্ত থেকেই পূর্ব বাংলার শিল্প সাহিত্য নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে। নতুন রাষ্ট্রে শিল্পী-সাহিত্যিকেরা নতুনভাবে আত্মপ্রকাশে প্রয়াসী হন। তাতে দুটি ধারাই ছিল : একটি পাকিস্তানবাদী বা মুসলিম জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ধারা, অন্যটি অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধারা। প্রথম কয়েক বছর পাকিস্তানবাদীদের আধিপত্য ছিল খুব বেশি। তাঁদের চিন্তাধারা ছিল প্রাচীনপন্থী বা মধ্যপ্রাচ্যপন্থী। অধিকাংশ তরুণ লেখক তাঁদের নীতি আদর্শের কাছে বশ্যতা স্বীকার করেননি। তাঁদের আগ্রহ ছিল আধুনিকতার প্রতি। বিষয়বস্তুর জন্য তাঁরা মধ্যপ্রাচ্যের দিকে না তাকিয়ে নিজের দেশের মাটি ও মানুষের সুখ-দুঃখের কথাই বিবেচনায় আনেন। তবে তাঁদের রচনা দুর্বলতা মুক্ত নয়, বিশেষ করে ভাষা ও রচনাশৈলীর বিচারে।
চল্লিশের শেষ এবং পঞ্চাশের অনেকগুলো বছর পাকিস্তানবাদীরা পাকিস্তানের পাকভূমি এবং ইসলামের ইতিহাসের গৌরবগাথা রচনায় সমস্ত শক্তি ক্ষয় করেন। তাঁদের অনেকের রচনার বিষয়বস্তুর মধ্যে আজান, নামাজ, ঈদ, শবে বরাত, হজ, জাকাত প্রভৃতি এবং মুসলিম ইতিহাসের খ্যাতিমান পুরুষদের জীবনকাহিনি প্রাধান্য পায়। অবশ্য পাকিস্তানবাদীদের অনেকের বেশ কিছু মননশীল প্রাবন্ধিক রচনা রয়েছে, সেগুলো খুবই সাবলীল গদ্যে রচিত ও বস্তুনিষ্ঠ; কিন্তু পাকিস্তানবাদীদের মধ্যে সৃষ্টিশীলতার অভাব ছিল প্রকট। পাকিস্তানবাদী কবি ও কথাশিল্পীদের রচনায় কৃষক-শ্রমিক সাধারণ মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখের কথাও অনুপস্থিত। তা ছাড়া বিষয়বস্তু যা-ই হোক, তাদের ভাষা ও রচনাশৈল্পীও সেকেলে এবং শিল্পকর্ম হিসেবে তা মূল্যহীন। পঞ্চাশে অনেক ইসলামী পন্থী কবি ফররুখ আহমদের মতো জোর করে বা অকারণে আরবি-ফারসি শব্দ ব্যবহার করেছেন। তা করে তারা মুসলমান। পাঠকদের মন জয় করতে চেয়েছেন বটে, কিন্তু তার পরিবর্তে তাঁরা পাঠকের বিরক্তি সৃষ্টি করেছেন। পঞ্চাশের নতুন পাঠকশ্রেণিরও আগ্রহ ছিল আধুনিক রচনার প্রতি– প্রাচীনপন্থী আবর্জনা নয়।
উপযুক্ত আরবি-ফারসি শব্দে অমুসলমান পাঠকেরও আপত্তি ছিল না, কিন্তু অপ্রচলিত আরবি-ফারসি শব্দে রচিত সাহিত্যে মুসলমান পাঠকেরও অরুচি ছিল। বিষয় হিসেবেও নতুন পাঠকদের মধ্যপ্রাচ্য ও ইসলাম নিয়ে আগ্রহ ছিল না। তারা চেয়েছেন সাহিত্যে তাঁদের জীবনের প্রতিফলন ঘটুক, তাঁদের স্বপ্ন ও বাস্তব নিয়ে সাহিত্য রচিত হোক।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে পূর্ব বাংলার কবি-সাহিত্যিকেরা নতুন রাষ্ট্রে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করার প্রত্যয় নিয়ে লেখালেখি করতে থাকলেও তাঁরা কী রকম একটি ধারা। সৃষ্টি করবেন, সে সম্পর্কে তাদের সুস্পষ্ট ধারণা ছিল না। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ইসলাম ও মুসলমানত্ব প্রাধান্য পাবে– সে রকম একটি অঘোষিত বা ঘোষিত নীতি তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু অবিলম্বে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ওঠায় লেখকদের একটি বড় অংশ মুসলিম জাতীয়তার পরিবর্তে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হন। তারা উপলব্ধি করেন, বাংলা বিসর্জন দিয়ে উর্দুর আধিপত্য স্বীকার করার জন্য তারা পাকিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন দেননি। আধুনিক শিক্ষাপ্রাপ্ত নতুন প্রজন্মের লেখকেরা রক্ষণশীলতার পরিবর্তে আধুনিকতাবাদের দিকেই ঝুঁকে থাকেন। এসব আধুনিকতাবাদী লেখক-কবিদের কেউই মোটেও পাকিস্তানবিরোধী। ছিলেন না। তারা পাকিস্তানও চেয়েছেন, প্রগতিশীলতাও চেয়েছেন। তাঁরা অপছন্দ করেছেন পাকিস্তানের অবাঙালি শাসকচক্রের স্বৈরাচারী মনোবৃত্তিকে।
১৯৪৮-এর শেষ দিকে প্রকাশিত হয় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর লালসালু, শামসুদ্দীন আবুল কালামের গল্পের বই পথ জানা নাই ১৯৪৮-এ এবং অনেক দিনের আশা ১৯৪৯-এ। আলাউদ্দিন আল আজাদের গল্পগ্রন্থ জেগে আছি এবং ধানকন্যা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের বছরখানেক আগে প্রকাশিত হয়। এসব গল্প উপন্যাসে পাকিস্তানি ভাবধারার কোনো চিহ্ন ছিল না। যে কবির কথা এখন সবাই ভুলে গেছে, সেকালে যথেষ্ট নাম ছিল, আবদুর রশীদ খানের নক্ষত্র মানুষ মন কাব্যগ্রন্থ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অল্প আগে এবং তাঁর বন্দি মুহূর্ত বায়ান্নর শেষ দিকে প্রকাশিত হয়। এসব কবি-কথাশিল্পী পাকিস্তানের অনুগত নাগরিক ছিলেন, তারা মুসলমানিত্ব ও বাঙালিত্ব দুই পরিচয়ই ধারণ করতেন, কিন্তু আধুনিক হওয়ার চেষ্টাও করেছেন। তাঁরা ছিলেন তিরিশের আধুনিক কবিদের দ্বারা প্রভাবিত। তাঁদের উত্তরসূরি।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা পূর্ব বাংলার কবি-লেখকদের এক নবজীবন দান করে, কিন্তু বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন এই ভূখণ্ডের কবি-শিল্পী-সাহিত্যিকদের দান করে এক নবতর জীবনদর্শন। তাঁদের আর আত্মপরিচয়ে কোনো সংকট বা বিভ্রান্তি রইল না। তারা বাঙালি। ধর্মীয় পরিচয়ে কেউ মুসলমান, কেউ হিন্দু, কেউ বৌদ্ধ প্রভৃতি।
একুশের ভাষা আন্দোলনের অল্প পরে আমি আমার বাবার সঙ্গে ঢাকায় আসি। তিনি শহীদ রফিকের ওপর দীর্ঘ ১৪ পৃষ্ঠার মতো একটি শোকগাথা লেখেন, সেটা ছাপাতে এসেছিলেন আমাদের এক আত্মীয়ের প্রেসে। সম্ভবত কয়েক মাস ঢাকা শহরে একটি শোকের থমথম পরিবেশ ছিল। ১৯৫৩-র মার্চে আবার ঢাকায় আসি। সেই সময় জিন্দাবাহার লেনের কোনো এক বাঁধাইখানা থেকে আব্বা একটি বই সগ্রহ করেন। বইটি তিনি কাপড় দিয়ে জড়িয়ে আলমারিতে রেখে দিয়েছিলেন। কখনো পড়ার প্রয়োজন হলে তিনি পড়তেন, তারপর ওইভাবেই কাপড়ে মুড়ে কাপড়চোপড়ের নিচে আলমারিতে রেখে দিতেন। বইটি কোনো ধর্মগ্রন্থ নয়। তার নাম একুশে ফেব্রুয়ারি। বিভিন্ন কবি-লেখকের লেখার একটি সংকলন, সম্পাদনা করেছিলেন হাসান হাফিজুর রহমান। পুঁথিপত্র প্রকাশনীর পক্ষে প্রকাশক ছিলেন মোহাম্মদ সুলতান।
মোহাম্মদ সুলতান ও হাসান হাফিজুর রহমানের প্রকাশিত ও সম্পাদিত সেই একুশে ফেব্রুয়ারিকে একটি বই বললে সম্পূর্ণ বলা হয় না। ওই বই থেকে পূর্ব বাংলার আধুনিক সাহিত্যের নবযাত্রার শুরু। ওই সংকলনের যারা লেখক ছিলেন, পরবর্তী দশকে তারাই আমাদের আধুনিক লেখক এবং প্রধান লেখক। কারা ছিলেন তার লেখক? কবিদের মধ্যে ছিলেন শামসুর রাহমান, হাসান হাফিজুর রহমান, আলাউদ্দিন আল আজাদ, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, আবদুল গণি হাজারী, ফজলে লোহানী, আনিস চৌধুরী, সৈয়দ শামসুল হক, জামালুদ্দিন ও আতাউর রহমান। গল্প ছিল পাঁচটি। লেখক শওকত ওসমান (মৌন নয়), সাইয়িদ আতীকুল্লাহ (হাসি), আনিসুজ্জামান (দৃষ্টি), সিরাজুল ইসলাম (পলিমাটি) ও আতোয়ার রহমান (অগ্নিবাক)।
একুশের গান ছিল দুটি। আবদুল গাফফার চৌধুরীর ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ এবং তোফাজ্জল হোসেনের একটি গান। তাঁর গানের প্রথম কয়েকটি চরণ এ রকম :
রক্ত শপথে আমরা আজিকে তোমারে স্মরণ করি
একুশে ফেব্রুয়ারি,
দৃঢ় দুই হাতে রক্ত পতাকা উর্ধ্বে তুলিয়া ধরি
একুশে ফেব্রুয়ারি
তোমারে স্মরণ করি।
তুমি হয়ে আছ আমাদের মাঝে চিরজ্যোতি অম্লান
তোমার বক্ষে কত না শহীদ রক্তে করিল স্নান,
কত বীর ভাই সেদিন জীবন করে গেল বলিদান
সেদিন প্রথম ভীরু কুয়াশার জাল গেল দূরে সরি।
ওই বইয়ের গেটআপ বা অঙ্গসজ্জা, মেকআপ আমার কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল। ওই সময়ে তার চেয়ে ভালো করার উপায় ছিল না। ক্রাউন আকারের ১৮০ পৃষ্ঠার বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন আমিনুল ইসলাম এবং অঙ্গসজ্জার রেখাঙ্কন করেছিলেন মুর্তজা বশীর। সঙ্গে আরও কোনো কোনো নতুন শিল্পী ছিলেন। বইটি ছাপা হয়েছিল পাইওনিয়ার প্রেস থেকে, যার স্বত্বাধিকারী ছিলেন এম এ মকিত। ব্লক বানিয়ে দিয়েছিল বাদামতলীর নামকরা এইচম্যান কোম্পানি। এসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নাম উল্লেখ করার কারণ, তারা জাতির জীবনে একটি ঐতিহসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন।
একুশে ফেব্রুয়ারি সংকলনের একটি ২২ পৃষ্ঠার ভূমিকা লিখেছিলেন আলী আশরাফ : একুশে ফেব্রুয়ারিবিষয়ক প্রথম নির্মোহ ও নিরপেক্ষ দলিল। একুশের ইতিহাসের ঘটনাপঞ্জি লিখেছিলেন অর্থনীতির ছাত্র চট্টগ্রামের অধিবাসী কবির উদ্দিন আহমদ। পরবর্তীকালে একুশের ভাষা আন্দোলন নিয়ে লাখো পৃষ্ঠা লেখা হয়েছে, কিন্তু এই বইয়ের এই দুটি রচনার সঙ্গে ওই লাখো পৃষ্ঠার তুলনা চলে না। ওই সংকলনের লেখকদের অধিকাংশই আজ বেঁচে নেই। এখনো আমাদের মধ্যে আছেন আনিসুজ্জামান, সৈয়দ শামসুল হক, আবদুল গাফফার চৌধুরী ও চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর। মুর্তজা বশীর শুধু চিত্রাঙ্কন করেননি, একটি বেওয়ারিশ ডায়েরির কয়েকটি পাতা’ শীর্ষক তাঁর একটি রচনাও ছিল। আর একটি একুশের নকশা ছিল সালেহ আহমেদের, শিরোনাম ‘অমর একুশে ফেব্রুয়ারির রক্তাক্ত সাক্ষর। ওই সংকলনের সকল প্রয়াত ও জীবিত লেখককে জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
আলী আশরাফ ‘সকল ভাষার সমান মর্যাদা’ শীর্ষক তাঁর প্রবন্ধে লিখেছিলেন :
‘…লীগ নেতারা ঘোষণা করলেন “উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা”। স্বৈরাচারী লীগ শাসন পাকিস্তানের অন্যান্য ভাষাভাষী জনগণের ভাষাগুলোকে উপেক্ষা করে একমাত্র উর্দুকেই রাষ্ট্রে বিশেষ মর্যাদা দিতে চাইলেন।
‘এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধেই অতীতের সেই ভাষার লড়াই আবার জেগে উঠল নতুনভাবে নতুন শক্তিতে। সে লড়াই একটা বিশেষ গৌরবময় রূপ ধারণ করেছিল ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে। তাই ২১ ফেব্রুয়ারি শুধু বিভাগোত্তরকালের ইতিহাসই নয়, এ পবিত্র দিনটি আমাদের দেশের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের পুরো ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে।’
১৯৫৩-তে এই অমোঘ ভবিষ্যদ্বাণীটি প্রকাশ করা ছিল ঘোরতর রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। সেই ঝুঁকি নিয়েই তারা সেদিন তা করেছিলেন। বইটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং বাজেয়াপ্ত করে তার সমস্ত কপি। আমার আব্বা মোহাম্মদ সুলতানের সহায়তায় একটি কপি জোগাড় করেছিলেন।
একুশে ফেব্রুয়ারির মূল কপিটি আমার কাছে ছাড়া আজ আর কোথাও কারও কাছে নেই। গত ৬০ বছরে আমাদের হাজারখানেকের বেশি বই খোয়া গেছে। ওই বইটিকে আমি যক্ষের ধনের মতো আজও আগলে রেখেছি একটি পবিত্র স্মৃতি হিসেবে। আশির দশকে বাংলা একাডেমি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিল একুশে ফেব্রুয়ারি বইটির একটি কপি কারও কাছে আছে কি না তা জানতে। তারা একটি ফ্যাক্সিমিলি প্রকাশ করার পরিকল্পনা নেন। কোথাও পাওয়া যায়নি। আমার কপিটি থেকেই ফটোকপি করে নেওয়া হয়েছিল।