২৪. জেনারেল ডোফা বিস্মিত

জেনারেল ডোফা বিস্মিত গলায় বললেন, মাওয়া, তুমি যা বলছ তা কি সত্যি?

হ্যাঁ, সত্যি।

ফকনার মারা পড়েছে?

হ্যাঁ, পড়েছে।

আর নিশো? নিশোর কী অবস্থা?

মারা গেছে স্যার।

তোমার গলা এমন শুকনো শোনাচ্ছে কেন?

আমি আহত। হাঁটুতে গুলি লেগেছে। হাতের আঙুল উড়ে গেছে।

শুনে অত্যন্ত দুঃখিত হলাম। তবে দেশের জন্যে সবাইকে কিছু-না-কিছু ত্যাগ করতে হয়। তুমি কয়েকটা আঙুল ত্যাগ করলে।

জ্বি স্যার।

আমাদের দিকের হতাহতের সংখ্যা কেমন?

অনেক।

তাতে কোন অসুবিধা নেই। নিহতদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হবে। বিরাট ক্ষতিপূরণ। তাদের সবাইকে জাতীয় বীর ঘোষণা করা হবে।

ইনফ্যানট্রি লেফটেন্যান্ট নুখতা আপনার সঙ্গে কথা বলতে চায়। সে বীরের মতো যুদ্ধ করেছে।

শুনে সুখী হলাম। শোন, নিশোর মৃতদেহ কি লুকানো হয়েছে?

হ্যাঁ।

ভালো, খুব ভালো। অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ। দেশের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব তোমার জন্যে ব্যবস্থা হবে।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ স্যার। আপনার পক্ষে কি এখানে আসা সম্ভব হবে? সৈন্যরা আপনাকে দেখতে পেলে অত্যন্ত আনন্দিত হবে। তারা বীরের মতো যুদ্ধ করেছে।

আমি আসব। সৈন্যরা আমার সন্তানের মতো। আমি অবশ্যই আসব। সামরিক হেলিকপ্টারে করে আসব।

কখন রওনা হবেন স্যার?

ধর দশ মিনিট। দশ মিনিটের মাথায় রওনা হচ্ছি।

জেনারেল ডোফা রিসিভার নামিয়ে পাশে দাঁড়ানো মিলিটারি এ্যাটাচির চোখে চোখ রেখে হাসলেন। মুহূর্তের মধ্যেই হাসি সামলে নিয়ে মৃদু গলায় বললেন, মাওয়া মিথ্যা কথা বলছে। সাজানো কথা বলছে।

মিলিটারি এ্যাটাচি অবাক হয়ে বলল, আমার কাছে কিন্তু স্যার সাজানো কথা বলে মনে হয় নি।

তোমার বুদ্ধি একটি গরিলার বুদ্ধির চেয়ে খুব বেশি নয় বলেই কিছু বুঝতে পারছ না। ও ধরা পড়েছে ফকনারের হাতে। ব্যাটা যা বলতে বলছে, তাই সে বলছে। বানরের মতো ভীরু একদল মানুষ নিয়ে আমার সৈন্যবাহিনী।

মিলিটারি এ্যাটাচি এক বার ভাবল জিজ্ঞেস করে—স্যার, কি করে বুঝলেন মাওয়া মিথ্যা কথা বলছেন? কিন্তু জিজ্ঞেস করার মতো সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারল না। সে আসলেই ভীরু।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *