ভাত বেড়ে দিচ্ছি অনুফা। অঞ্জু স্কুলে গিয়েছে। টুনীর শরীর খারাপ, শুয়ে আছে। জহুর অস্বস্তি বোধ করছিল। অনুফা মৃদু স্বরে বলল, পেট ভরে খান ভাইসাব।
জহুরের মাথা আরো খানিকটা নিচু হয়ে গেল। অনুফার সঙ্গে দেখা হলেই সে কোনো-একটা বিচিত্র কারণে লজ্জা বোধ করে। অনুফা ডালের বাটি এগিয়ে দিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বলল, টুনীর গান-বাজনার শখ। সৈয়দ বাড়িতে বিয়া হইলে কিছুই হইত না। আপনে আপনার ভাইরে কম।
জহুর বলল, জ্বি, বলব।
আমার কথা শুনে না। আমি মূর্খ মেয়েমানুষ।
জ্বি, বলব আমি।
জহুর লক্ষ করল অনুফা দারুণ অসুস্থ। গালটাল ফুলে আছে। চোখ রক্তাভ। দুলাভাই বোধহয় চিকিৎসা করাচ্ছে না ঠিকমত। পানি পড়াট খাওয়াচ্ছে কিংবা হোমওপ্যাথি করছে। অনুফা ইতস্তত করে বলল, আর একটা কথা ভাইসাব। হনলাম আপনে মিনুর কাছে মাঝেমধ্যে যান। আর যাইয়েন না।
জহুর ভাত মাখা বন্ধ করে অনুফার দিকে তাকাল। অনুফা বলল, আপনে রাগ। কইরেন না ভাইসাব।
না, রাগ করি নি। দুলাভাই কি আপনাকে বলেছেন আমাকে এই সব বলার জন্যে?
জ্বি-না, আপনের দুলাভাই আমারে কিছু কইতে কয় নাই। নিজের থাইক্যা কইলাম।
আচ্ছা ঠিক আছে, আর যাব না।
মাইয়াটার খুব বদনাম। বিধবা মাইনষের খুব অল্প বদনাম হয়। আর চাইরা ভাত নেন।