হযরত খাদীজা (রা)-এর মৃত্যু-উত্তর রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বিবাহ
বিশুদ্ধ অভিমত এই যে, হযরত খাদীজা (রা)-এর পর রাসূলুল্লাহ (সা) সর্বপ্রথম হযরত আইশা (রা)-কে বিবাহ করেন। এ বিষয়ক আলোচনা শীঘ্রই আসছে। ইমাম বুখারী (র) “হযরত আইশা (রা)-এর বিবাহ” অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন যে, মু’আল্লা……. আইশা (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁকে বলেছেন : “স্বপ্নে আমার নিকট তোমাকে দুইবার দেখানো হয়েছে। একবার আমাকে দেখানো হল যে, তুমি একটি রেশমী চাদরে জড়ানো। কে যেন আমাকে বলছেন, এই যে আপনার স্ত্রী, ঘোমটা তুলে তাকে দেখুন।” তখন আমি দেখলাম যে, তুমি। তখন আমি মনে মনে বললাম : “এটি যদি আল্লাহর ফায়সালা হয়ে থাকে, তবে তা আল্লাহ কার্যকরী করবেন।”
ইমাম বুখারী (র) “কুমারীর বিবাহ” অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন যে, ইবন আবু মুলায়কা বলেছেন, হযরত ইবন আব্বাস (রা) হযরত আইশা (রা)-কে বলেছিলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) তো আপনি ব্যতীত অন্য কোন কুমারী মেয়েকে বিবাহ করেননি। ইসমাঈল ইবন আবদুল্লাহ।. হযরত আইশা (রা) সূত্রে বলেছেন, তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি যদি এমন কোন প্রান্তরে যান, যেখানে কতক গাছপালা রয়েছে যেগুলো থেকে ইতোপূর্বে কিছু খাওয়া হয়েছে আর কতক আছে যেগুলো অক্ষত, যেগুলো থেকে ইতোপূর্বে খাওয়া হয়নি, তখন আপনি কোন ঘাস-বৃক্ষে আপনার উট চরাবেন? উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ (সা) বললেন, যে ঘাস-বৃক্ষ থেকে ইতোপূর্বে খাওয়া হয়নি সেটিতে চরাব। এ উক্তি দ্বারা হযরত আইশা (রা) বুঝাতে চেয়েছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাঁকে ছাড়া অন্য কোন কুমারী স্ত্রী গ্রহণ করেননি। ইমাম বুখারী একাই এই হাদীছ উদধূত করেছেন। তারপর ইমাম বুখারী (র) বলেছেন, উবায়দ ইবন
ইসমাঈল … হযরত আইশা (রা) সূত্রে বলেছেন, তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন, “স্বপ্নে আমার নিকট তোমাকে দেখানো হয়েছে। একজন ফেরেশতা একটি রেশমী চাদরে জড়িয়ে তোমাকে আমার নিকট এনে বলেছিলেন, এই যে আপনার স্ত্রী। আমি তখন তোমার মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে ফেলি এবং দেখতে পাই যে সে তুমি। আমি বললাম, এটি যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে ফায়সালা হয়ে থাকে, তবে তা আল্লাহ কার্যকর করবেনই। এক বর্ণনায় তিন রাতে তাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে বলে উল্লিখিত হয়েছে।
ইমাম তিরমিয়ী উদধূত করেছেন যে, জিবরাঈল (আঃ) হযরত আইশা (রা)-এর ছবি একটি সবুজ রেশমী কাপড়ে জড়িয়ে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট উপস্থিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে এই আপনার স্ত্রী দুনিয়াতেও আখিরাতেও।
ইমাম বুখারী (র) “বয়স্কদের নিকট ছোটদেরকে বিয়ে দেয়া” অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন, আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ. উরওয়া থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা) হযরত আইশা (রা)-কে বিয়ে করার জন্যে হযরত আবু বকর (রা)-এর নিকট প্রস্তাব পাঠান। আবু বকর (রা) বললেন, “আমি তো আপনার ভাই।” রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, আপনি তো আল্লাহ্র দীন ও তাঁর কিতাবের সূত্রে আমার ভাই, আপনার কন্যা বিয়ে করা আমার জন্যে হালাল। এই হাদীছটি সাধারণত মুরসাল বলে মনে হয়। কিন্তু ইমাম বুখারী ও অন্যান্য বিশ্লেষকদের নিকট এটি অবিচ্ছিন্ন সনদে বর্ণিত। কারণ, উরওয়া এটি বর্ণনা করেছেন আইশা (রা) থেকে। এ হাদীছটিও ইমাম বুখারী (র) একক ভাবে উদধূত করেছেন।
ইউনুস ইবন বুকােয়র. হিশাম ইবন উরওয়া তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন। হযরত খাদীজা (রা)-এর ইনতিকালের তিন বছর পর রাসূলুল্লাহ্ (সা) হযরত আইশা (রা)-কে বিবাহ করেন। তখন হযরত আইশা (রা)-এর বয়স ছিল ছয় বছর। তার নয় বছর বয়সে তাদের বাসর হয়। হযরত আইশা (রা)-এর বয়স যখন ১৮ বছর, তখন রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ইনতিকাল হয়। এটি একটি বিরল বর্ণনা।
ইমাম বুখারী (র) উবায়দ ইবন ইসমাঈল … হিশাম ইবন উরওয়া সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁর পিতা বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর হিজরতের তিন বছর পূর্বে হযরত খাদীজা ইনতিকাল করেন। এরপর তিনি দুই বছর বা তার কাছাকাছি সময় অপেক্ষা করেন। তারপর আইশা (রা)-কে বিবাহ করেন। তখন হযরত আইশা (রা)-এর বয়স ছয় বছর। তাঁর নয় বছর বয়সে তাদের বাসর হয়। বর্ণনাকারী উরওয়া (র) যা বললেন বাহ্যত তা মুরসাল হাদীছ বলে মনে হলেও প্রকৃত পক্ষে এটি অবিচ্ছিন্ন সনদে বর্ণিত হাদীছ। তিনি যে বলেছেন, “ছয় বছর বয়সে হযরত আইশা (রা)-এর বিবাহ হয় এবং নয় বছর বয়সে বাসর হয়।” এতে কারো কোন দ্বিমত নেই। সিহাহা ও অন্যান্য গ্রন্থসমূহে এ তথ্য বর্ণিত হয়েছে। হযরত আইশা (রা)-এর সাথে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বাসর হয়েছিল মদীনায় হিজরতের দ্বিতীয় বছরে। কিন্তু হযরত খাদীজা (রা)-এর ইনতিকালের প্রায় তিন বছর পর আইশা (রা)-কে বিবাহ করেছেন বলে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা পর্যালোচনা সাপেক্ষ। কারণ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান আলহাফিযম… হযরত আইশা (রা) থেকে বৰ্ণিত। তিনি বলেছেন, খাদীজা (রা)-এর মৃত্যুর পরে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর
হিজরতের পূর্বে তিনি আমাকে বিবাহ করেন, তখন আমার বয়স ছয় কিংবা সাত বছর। আমরা মদীনায় আসার পর একদিন কতক মহিলা আমার নিকট উপস্থিত হয়। আমি তখন একটি বাগানের মধ্যে খেলা করছিলাম। আমার চুলগুলো খোপা বঁধার উপযুক্ত ছিল। তারা আমাকে সাজিয়ে-গুছিয়ে পরিপাটি করে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট নিয়ে আসলেন। তখন আমার বয়স নয় বছর। এই হাদীছে আইশা (রা) বলেছেন, “খাদীজা (রা)-এর মৃত্যুর সাথে সাথে।” তাতে ধারণা করা যায় যে, খাদীজা (রা)-এর মৃত্যুর অল্প কিছুকালের মধ্যেই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল।
হ্যা, তবে যদি এটা বলা যায় যে, বর্ণনায় “খাদীজার মৃত্যুর সাথে সাথে” শব্দের পূর্বে একটি “পরে” শব্দ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তখন অর্থ হবে। হযরত খাদীজার ইনতিকালের পরবতীতে, তবে ইউনুস ইবন বুকােয়র ও আবু উসামা সূত্রে বর্ণিত হিশাম ইবন উরওয়ার বর্ণনার সাথে কোন সংঘর্ষ হয় না। আল্লাহই ভাল জানেন।
ইমাম বুখারী (র) বলেন, ফারাওয়া ইবন আবুল মাগরা … হফরত আইশা (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন রাসূলুল্লাহ (সা) আমাকে বিবাহ করেন যখন আমার বয়স ছয় বছর। পরবতীতে আমরা মদীনায় আসি এবং বনু হারিছ ইবন খাযরাজ গোত্রের মধ্যে অবস্থান করতে লাগলাম। একদিন আমি জুরে আক্রান্ত হলাম। আমার চুল এলোমেলো হয়ে গেল। তখন আমার খোপা বঁধার মত চুল ছিল। আমার মা উন্মু রূমান আমার নিকট আসলেন। আমি তখন আমার কতক বান্ধবীর সাথে একটি দোলনায় বসা ছিলাম। মা আমাকে চীৎকার করে ডাকলেন। তার নিকট তিনি আমাকে নিয়ে কী করতে চাচ্ছিলেন তা আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তিনি আমার হাত চেপে ধরে ঘরের দরজায় এসে থামলেন। আমি ভড়কে গিয়েছিলাম। এক সময় আমার শ্বাস-প্ৰশ্বাস স্বাভাবিক হয়ে এলো। তিনি একটু পানি নিয়ে আমার মুখমণ্ডলে ও মাথা মুছে দিলেন। তারপর আমাকে ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে দিলেন। ঘরের মধ্যে কয়েকজন আনসারী মহিলা ছিলেন। তারা বললেন, কল্যাণ হোক বরকত হোক এবং শুভ হোক। মা আমাকে ওদের হাতে তুলে দিলেন। তারা আমাকে সাজিয়ে-গুছিয়ে পরিপটি করে দিলেন। দুপুরের পূর্বক্ষণে রাসূলুল্লাহ (সা) ঘরে ঢুকলেন। তার উপস্থিতিতে আমি ভড়কে গেলাম। ওরা আমাকে তাঁর হাতে তুলে দিলেন। তখন আমার বয়স নয় বছর।
ইমাম আহমদ (র) উন্মুল মু’মিনীন আইশা-এর মসনদে উল্লেখ করেছেন যে, মুহাম্মদ ইবন বিশর বর্ণনা করেছেন, মুহাম্মদ ইবন আমরা আবু সালামা এবং ইয়াহইয়া থেকে। তাঁরা দু’জনেই বলেছেন যে, হযরত খাদীজা (রা)-এর ইনতিকালের পর উছমান ইবন মাযউনের স্ত্রী খাওলা বিনত হাকীম রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট উপস্থিত হন। তিনি বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সা)! আপনি কি বিবাহ করবেন না? রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, কাকে বিবাহ করব? খাওলা বললেন, আপনি কুমারী চাইলে কুমারী পাত্রী পাবেন আর পূর্ব-বিবাহিত্য চাইলে তা-ই পাবেন। রাসূলুল্লাহ (সা) জিজ্ঞেস করলেন, কুমারী পাত্রীটি কে? খাওলা বললেন, জগতে আপনার সবচেয়ে প্রিয় আবু বকর (রা)-এর কন্যা আইশা। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, পূর্ব-বিবাহিতা মহিলাটি কে? খাওলা বললেন, তিনি হলেন যামআর কন্যা সাওদা। তিনি আপনার প্রতি ঈমান আনয়ন করেছেন এবং আপনার অনুগতা। রাসূলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তবে তুমি ওদের নিকট যাও এবং
আমার কথা তাদের নিকট আলোচনা কর! খাওলা গেলেন আবু বকর (রা)-এর গৃহে। তার স্ত্রীকে বললেন, উন্মু রূমান! কী কল্যাণ ও বরকতই না। আল্লাহ। আপনাদের জন্যে মন যুর করেছেন। উম্মু রূমান বললেন, কেন কী হয়েছে? খাওলা বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) আইশাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে আমাকে আপনাদের নিকট পাঠিয়েছেন। তিনি বললেন, আবু বকর (রা) আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন!
আবু বকর (রা) ঘরে এলেন। আমি বললাম, আবু বকর! কী কল্যাণ ও বরকতই না। আল্লাহ আপনার জন্য মনযুর করেছেন! আবু বকর (রা) বললেন, কেন কী হয়েছে? খাওলা বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আইশাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে আমাকে আপনাদের নিকট পাঠিয়েছেন। আবু বকর (রা) বললেন, সে কি তাঁর জন্যে বৈধ হবে? সে তো তাঁর ভাতিজী। আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট ফিরে গিয়ে আবু বকর (রা)-এর মন্তব্য তাঁকে জানালাম। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, তুমি আবার তার নিকট যাও এবং আমার এ বক্তব্য তাঁর কাছে পৌছে দাও। “আমি আপনার ভাই এবং আপনি আমার ভাই ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে আপনার মেয়ে বিয়ে করা আমার জন্যে বৈধ।” খাওলা বলেন, আমি আবু বকর (রা)-এর নিকট ফিরে গেলাম এবং রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বক্তব্য তাকে জানালাম। তিনি বললেন, তুমি অপেক্ষা কর! তিনি ঘর থেকে বের হলেন। উম্মু রূমান বললেন, মুতঙ্গম ইবন আব্দী তো আইশার সাথে তার পুত্রের বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম, আবু বকর (রা) তো একবার ওয়াদা করলে তা কখনো ভঙ্গ করেন না। আবু বকর (রা) গেলেন মুতসীম ইবন আব্দীর নিকট। সেখানে মুতঙ্গম-এর স্ত্রী উন্মুস সাবী উপস্থিত ছিলেন। উন্মুস সাবী বললেন, হে আবু কুহাফার পুত্র! আমার ছেলে যদি আপনার মেয়েকে বিয়ে করে তাহলে তো আপনি তাকে আমাদের ধর্ম থেকে ফিরিয়ে আপনার ধর্মে নিয়ে যাবেন তাই না? মুতসীম ইবন আব্দীকে আবু বকর (রা) বললেন, তোমার বক্তব্য আর তোমার স্ত্রীর বক্তব্য কি এক? মুতঙ্গম বলল, সে তো তাই বলছে।
আবু বকর (রা) সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন। মুতঙ্গমকে ওয়াদা প্ৰদান বিষয়ে তাঁর মনে যে অস্বস্তি ছিল তা বিদূরিত হল। ঘরে এসে তিনি খাওলাকে বললেন, তুমি রাসূলুল্লাহ্ (সা)-কে নিয়ে এস। তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সা)-কে নিয়ে এলেন। আবু বকর (রা) আইশা (রা)-কে তাঁর নিকট বিবাহ দিয়ে দিলেন। তখন হযরত আইশা (রা)-এর বয়স ছিল ছয় বছর। এরপর খাওলা গেলেন সাওদা বিনত যামআ-এর নিকট। তাকে বললেন, কী কল্যাণ ও মঙ্গলই না। আল্লাহ আপনার জন্যে মন যুর করেছেন। সাওদা বললেন, কেন কী হয়েছে? খাওলা বললেন, আপনাকে বিবাহ করার, প্রস্তাব দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা) আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। সাওদা বললেন, আপনি আমার পিতার নিকট গিয়ে প্রস্তাবটি পেশ করুন। আমার কাছে তো প্রস্তাবটি ভালই মনে হয়। তিনি খুব বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। তাই হজ্জে যেতে পারেননি। আমি তার নিকট গিয়ে জাহিলী নিয়মে অভিবাদন জানালাম। তিনি বললেন কে? আমি খাওলা বিনত হাকীম— খাওলা বললেন। বকর বললেন, কী সংবাদ? মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ। আপনার কন্যা সাওদাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দিয়ে আমাকে পাঠিয়েছেন, খাওলা উত্তর দিলেন। বকর বললেন, এ তো খুব ভাল ও মানানসই সম্বন্ধ। তোমার বান্ধবী কী বলে? খাওলা বললেন, সে এটি ভাল
2) S–ང་།–
মনে করে। বকর বললেন, ওকে আমার নিকট নিয়ে এসো! সাওদা এলেন। বকর বললেন, প্রিয় কন্যা! এই যে খাওলা, সে বলছে যে, মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ তোমাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দিয়ে তাকে পাঠিয়েছেন। এটি তো খুব ভাল ও মানানসই সম্বন্ধ, তুমি কি চাও যে, আমি তোমাকে তার নিকট বিয়ে দিয়ে দিই। সাওদা বললেন, হ্যা। বকর বললেন, খাওলা, তুমি গিয়ে মুহাম্মদকে নিয়ে এসো! রাসূলুল্লাহ্ (সা) এলেন। বকর তাঁর কন্যা সাওদাকে রাসূলুল্লাহ-এর নিকট বিয়ে দিলেন। সাওদার ভাই আবদ ইবন যামআ হজ্জ থেকে ফিরে এসে এ সংবাদ শুনল এবং ক্ষোভে-দুঃখে মাথায় ধূলি ছিটাতে লাগল। পরবতীতে আবদ ইবন যামআ যখন ইসলাম গ্রহণ করলেন, তখন বললেন, আমার জীবনের কসম, রাসূলুল্লাহ্ (সা) সাওদাকে বিয়ে করেছেন এ সংবাদ শুনে যেদিন আমি আমার মাথায় ধুলো ছিটিয়ে ছিলাম সেদিন আমি নিশ্চয়ই মুখ ছিলাম।
হযরত আইশা (রা) বলেন, পরে আমরা মদীনায় এসে সুনহ নামক স্থানে বনু হারিছ ইবন খাযরাজ গোত্রে অবস্থান করতে থাকি। এক সময় রাসূলুল্লাহ্ (সা) সেখানে হাযির হন। আনসারী পুরুষ ও মহিলাগণ তাঁর নিকট সমবেত হন। আমার মা এলেন আমার নিকট। আমি তখন খেজুর বাগানে দু’ডালের মাঝে অবস্থান করছিলাম। তিনি আমাকে ওখান থেকে নিয়ে এলেন। আমার চুল খোপা বাধা ছিল। তিনি খোপা খুলে আঁচড়িয়ে দিলেন। পানি দিয়ে আমার মুখ মুছে দিলেন। এরপর আমাকে টেনে এনে ঘরের দরজায় দাড় করালেন। আমি ভয় পাচ্ছিলাম। এক সময় আমি কিছুটা শান্ত হলাম। তারপর তিনি আমাকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলেন। আমাদের ঘরের মধ্যে দেখতে পেলাম রাসূলুল্লাহ (সা)-কে। তিনি একটি চৌকিতে বসে আছেন। তাঁর নিকট আনসারী পুরুষ ও মহিলাগণ উপস্থিত। আমার মা আমাকে একটি কক্ষে বসালেন এবং বললেন ওরা তোমার পরিবার। আল্লাহ তাদের মধ্যে তোমাকে এবং তোমার মধ্যে তাদেরকে শান্তি ও কল্যাণ দান করুন। এরপর নারী-পুরুষ সবাই দ্রুত বেরিয়ে গেলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সা) আমাদের ঘরে আমাকে নিয়ে বাসর করলেন। তখন উট-ব্যকরী কিছুই যবাহ করা হয়নি। অবশেষে সাআদ ইবন উবাদাহ (রা) এক গামলা খাবার পাঠালেন। রাসূলুল্লাহ্ (সা) যখন তার স্ত্রীগণের নিকট যেতেন, তখন সাআদ (রা) ওরকম খাবার পাঠাতেন। তখন আমার বয়স ছিল নয় বছর। বাহ্যত মনে হবে যে, এই বর্ণনাটি মুরসাল। কিন্তু মূলত এটি অবিচ্ছিন্ন সনদের হাদীছ। কারণ, বায়হাকী আহমদ ইবন আবদুল জব্বার……. হযরত আইশা (রা) সূত্রে হযরত খাদীজা (রা)-এর ইনতিকালের পর খাওলা বিনত হাকীমের আগমন ও হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর বিবাহের প্রস্তাব সংক্রান্ত হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (সা) সাওদা বিনত যাম৷আকে বিবাহ করার পূর্বে আইশা (রা)-কে বিবাহ করেন। তবে হযরত সাওদা (রা)-এর সাথে বাসর করেন মক্কায় আর আইশা (রা)-এর বাসর হয়। পরে মদীনা শরীফে দ্বিতীয় হিজরীতে।
ইমাম আহমদ (র) বলেন আসওয়াদ. হযরত আইশা (রা) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাওদা (রা) যখন বৃদ্ধ হয়ে পড়লেন, তখন তিনি তাঁর পালার রাতটি আমাকে দান করে দেন। ফলে রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাঁর স্ত্রীদেরকে রাত বণ্টনের ক্ষেত্রে আমাকে আমার রাত এবং সাওদার
১. মূল গ্রন্থে আবু বকর শব্দ থাকলেও সম্ভবত বকর শব্দটি মুদ্রণ প্রমাদ। সম্পাদক পরিষদ
(রা) রাত সঙ্গ দিতেন। আইশা (রা) বলেন, আমাকে বিবাহ করার পর রাসূলুল্লাহ (সা) সর্বপ্রথম সাওদাকে (রা) বিবাহ করেন।
ইমাম আহমদ (র) বলেন, আবু নযার……. আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বৰ্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর সম্প্রদায়ের এক মহিলাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন। তার নাম ছিল সাওদা। তিনি ছিলেন বহু সন্তানের জননী। তার মৃত স্বামীর তরফে তার পাঁচ কিংবা ছয়টি সন্তান ছিল। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, আমাকে বিবাহ করতে তোমার বাধা কোথায়? তিনি বললেন, হে আল্লাহর নবী! আপনি আমার প্রিয়তম মানুষ না হওয়া বিষয়ক কোন বাধা নেই, বরং আমি আপনাকে শ্রদ্ধাভরে দূরে রাখছি। এজন্য যে, আমার ছেলেমেয়েরা সকাল-সন্ধ্যা আপনাকে জ্বালাতন করবে। রাসূলুল্লাহ্ (সা) বললেন, এছাড়া অন্য কোন বাধা নেই তো? সাওদা বললেন, না, আল্লাহর কসম, অন্য কোন বাধা নেই। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, আল্লাহ তোমাকে দয়া করুন! সবেত্তম মহিলা হচ্ছে ওরা যারা উটের পিঠে চড়ে। কুরায়শের সতী নারীগণ যারা শিশু সন্তানের প্রতি অধিক যত্নশীল, স্বামীর ধন-সম্পদের হিফাযতকারী!
আমি বলি, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর পূর্বে সাওদার স্বামী ছিলেন সুহায়ল ইবন আমরের ভাই সাকরান ইবন আমরা। তিনি ইসলাম গ্রহণকারী এবং আবিসিনিয়ায় হিজরতকারী ছিলেন। যেমন পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে। তারপর তিনি মক্কায় ফিরে আসেন এবং মদীনায় হিজরতের পূর্বে তাঁর মৃত্যু হয়। আল্লাহ তাঁর প্রতি প্ৰসন্ন হোন।
এ সকল বর্ণনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, হযরত সাওদার পূর্বে হযরত আইশা (রা)-এর বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ ইবন আকীল। এমত পোষণ করেন। যুহরী এ মত পোষণ করেন বলে ইউনুস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইবন আবদুল বােরর এ অভিমত গ্ৰহণ করেছেন যে, সাওদার (রা) বিবাহ হযরত আইশা (রা)-এর বিবাহের পূর্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি কাতাদা ও আবু উবায়দ থেকে এ তথ্য উদধূত করেছেন। যুহরীও এ মত গ্রহণ করেছেন বলে আকীল বর্ণনা করেছেন।
আবু তালিবের মৃত্যুর পর নিযাতনের মাত্রা বৃদ্ধি
রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর কথা ইতোপূর্বে আলোচিত হয়েছে। তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সাহায্যকারী ও রক্ষাকারী ছিলেন। জান-মাল দিয়ে এবং কথা ও কাজের মাধ্যমে তিনি যথাসাধ্য রাসূলুল্লাহ্ (সা)-কে অনিষ্ট থেকে রক্ষা করতেন। তিনি যখন মারা গেলেন, তখন কুরায়শী গোয়াররা রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর উপর জুলুম-নির্যাতনের দুঃসাহস দেখাল এবং আবু তালিবের জীবদ্দশায় যা করার সাহস পেতো না এখন তারা তা শুরু করল। এ প্রসংগে বায়হাকী.. আবদুল্লাহ ইবন জাফর থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আবু তালিবের ইনতিকালের পর কুরায়শের এক মূখ ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর সামনে এসে তার প্রতি ধূলি নিক্ষেপ করে। ধূলি-ধূসরিত দেহে তিনি ঘরে ফিরে আসেন। তাঁর এক কন্যা তা দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং কেঁদে কেঁদে ওই মাটি পরিষ্কার করেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) তাকে সান্তুনা দিয়ে বলছিলেন, স্নেহের কন্যা, কেঁদো না, আল্লাহই তোমার পিতাকে রক্ষা করবেন। তিনি এও বলছিলেন, আবু তালিবের মৃত্যুর পূর্বে আমি কষ্ট পাই এমন কোন কাজ কুরায়শ
করতে সাহস পেতো না। এখন তারা তা শুরু করেছে। যিয়াদ বুকাঈ মুহাম্মদ ইবন ইসহাক থেকে উরওয়া সূত্রে মুরসাল রূপে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। আল্লাহই ভাল জানেন।
বায়হাকী.. উরওয়া সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, আবু তালিবের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাঁর ভয়ে কুরায়শরা ভীত ছিল। হাকিম…… আইশা (রা) সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হাফিযী আবুল ফারাজ ইবনুল জাওয়ী আপনি সনদে ছা’লাবাহ ইবন সাঈর ও হাকীম ইবন হিযাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তারা বলেছেন আবু তালিব ও খাদীজা (রা) যখন ইনতিকাল করেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ (সা) একই সাথে এই দুইটি বিপদের সম্মুখীন হন। তাদের উভয়ের মৃত্যুর মধ্যে মাত্ৰ পাচ দিনের ব্যবধান ছিল। তখন তিনি অধিকাংশ সময় ঘরেই থাকতেন। বের হতেন কম। ইতোপূর্বে কুরায়শরা তাঁর সাথে যে আচরণ করতে সাহস পেতো না এখন তারা সে আচরণ করতে লাগল। এ সংবাদ আবু লাহাবের নিকট পৌছে। সে রসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট এসে বলে, হে মুহাম্মদ! তুমি তোমার লক্ষে এগিয়ে যাও এবং আবু তালিবের জীবদ্দশায় তুমি যা যা করতে এখনও তুমি তা করে যাও। লাত দেবীর কসম, আমার মৃত্যু পর্যন্ত ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে কেউ তোমার নিকট পৌঁছতে পারবে না। ইবন গায়তালাহ নামে এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে গালি দিয়েছিল। আবু লাহাব এগিয়ে গিয়ে তাকে শাস্তি দেয়। ইবন গায়তালাহ তখন চীৎকার করে কুরায়শদেরকে ডেকে বলে, হে কুরায়শ সম্প্রদায়! আবু উতবা অর্থাৎ আবু লাহাব পিতৃধৰ্ম ত্যাগ করেছে, সে ধর্মান্তরিত হয়েছে। কুরায়শরা তুরিতগতিতে আবু লাহাবের বাড়িতে উপস্থিত হয়। সে বলে, আমি আমার পিতা আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করিনি। তবে আমি আমার ভাতিজাকে সকল অত্যাচার থেকে রক্ষা করব যাতে করে সে তার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারে। তারা বলল, তাহলে তো আপনি ভাল ও মহৎ কাজ করেছেন এবং আত্মীয়তার মর্যাদা রক্ষা করেছেন। ফলে রাসূলুল্লাহ (সা) কিছুদিন নিরাপদ রইলেন। নিজের মত করে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে লাগলেন। আবু লাহাবের ভয়ে কেউ তাঁকে কিছু বলতো না। এভাবে চলছিল। একদিন উকবা ইবন আবু মুআইত এবং আবু জাহল আবু লাহাবের নিকট এসে উপস্থিত হল। তারা বলল, আপনি আপনার ভাতিজাকে জিজ্ঞেস করুন, সে বলুক। আপনার পিতার শেষ ঠিকানা কোথায়? আবু লাহাব বলল, হে মুহাম্মদ! আবদুল মুত্তালিবের শেষ ঠিকানা কোথায়? রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, তার ঠিকানা তার সম্প্রদায়ের সাথে। আবু লাহাব ওদেরকে গিয়ে বলল, আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি। সে বলেছে যে, আমার পিতার শেষ ঠিকানা তার সম্প্রদায়ের সাথে। তারা দু’জনে বলল, সে তো বলে যে, আবদুল মুত্তালিবের শেষ ঠিকানা জাহান্নামে। এবার আবু লাহাব বলল, হে মুহাম্মদ! আবদুল মুত্তালিব কি জাহান্নামে যাবেন? রাসূলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আবদুল মুত্তালিব যে ধর্মবিশ্বাস নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ওই ধর্মবিশ্বাস নিয়ে কারো মৃত্যু হলে সে তো জাহান্নামেই যাবে। তখন অভিশপ্ত আবু লাহাব বলল, আল্লাহর কসম, আমি চিরদিনের জন্যে তোমার শত্রু হয়ে থাকব। কারণ, তুমি বিশ্বাস কর যে, আবদুল মুত্তালিব জাহান্নামে যাবেন। তখন থেকে আবু লাহাব ও সমগ্র কুরায়শ সম্প্রদায় বহুগুণ কঠোর হয়ে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর প্রতি শক্রতায় লিপ্ত হয়।
ইবন ইসহাক বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বাড়ীতে অবস্থানকালে যারা তার প্রতি জুলুম করত তারা হল আবূ লাহাব, হাকাম ইবন আবুল আস ইবন উমাইয়া, উকবা উবন আবূ মুআয়ত আদী ইবন হামরা, ইবনুল আসাদা হুযালী, এরা তার প্রতিবেশী ছিল। হাকাম ইবন আবুল আসি ব্যতীত তাদের কেউই শেষ পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করেনি। আমার নিকট বর্ণনা পৌছেছে যে, তাদের কেউ কেউ রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নামােযরত অবস্থায় বকরীর নাড়িতুড়ি তার প্রতি নিক্ষেপ করত। (সা) একটি পাথর সংগ্ৰহ করলেন । সেটির আড়ালে থেকে তিনি নামায আদায় করতেন। তারা তাঁর প্রতি কিছু নিক্ষেপ করলে সেটিকে লাঠির মাথায় বুলিয়ে তাঁর দরজায় এসে দাঁড়াতেন এবং বলতেন, হে বনু আবদ মানাফা! প্রতিবেশীর প্রতি এ তোমাদের কেমন আচরণ ? তারপর তা রাস্তায় ফেলে দিতেন ।
আমি বলি, ইতোপূর্বে যা আলোচিত হয়েছে বেশীর ভাগ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, তার নামােযরত অবস্থায় তারা তার ঘাড়ের উপর উটের নাড়িভূড়ি রেখে দিত। যেমন ইবন মাসউদ (রা) বর্ণনা করেছেন। তাতে আছে যে, ফাতিমা (রা) এগিয়ে এসে ওই নাড়িভুড়ি ফেলে দিয়েছিলেন এবং ফাতিমা (রা) ওদেরকে গালমন্দ করেছিলেন । রাসূলুল্লাহ্ (সা) ফিরে এসে ওদের সাতজনের জন্যে বাদ দু’আ করেছিলেন। ইতোপূর্বে তা আলোচিত হয়েছে। অনুরূপ আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস বর্ণনা করেছেন সেই ঘটনা যে, তারা রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর গলায় ফাস লাগিয়ে দিয়েছিল এবং তার গলা শক্তভাবে চেপে ধরেছিল। তখন হযরত আবু বকর (রা) তাদেরকে বাধা দিয়ে বলেছিলেন। তোমরা কি এমন একজন লোককে খুন করবে, যে বলে আমার প্রতিপালক আল্লাহ একদিন রাসূলুল্লাহ (সা) নামায আদায় করছিলেন। এ সময়ে অভিশপ্ত আবু জাহল তার ঘাড়ে পা চাপা দেয়ার ইচ্ছা করেছিল। কিন্তু তার আর রাসূলুল্লাহ (সা)-এর মাঝখানে তখন বাধা সৃষ্টি হয়েছিল। এ জাতীয় দুঃখজনক ঘটনাগুলো ঘটেছিল চাচা আবু তালিবের ইনতিকালের পর। তাই এগুলো এখানে উল্লেখ করা সমীচীন বটে।