২২. শুধু ভালবাসব

ঘরে ঢুকেই জাহেদাকে কোলে তুলে নিল বাবর। তারপর সোজা বিছানায় নিয়ে ফেলে দিল তাকে। ধপ করে পড়ল সে গরমকালের পাকা ফলের মত। ব্যথা করে উঠল পিঠে। কিন্তু বাবরের চোখের দিকে তাকিয়ে কেমন শক্তিশূন্য মনে হলো তার নিজেকে। মনে হলো কোনোদিন এই লোকটাকে সে দেখেনি।

বাবর যেন রাসায়নিক একটা পরীক্ষা করতে চলেছে বকযন্ত্র নিয়ে; কিংবা ডাক্তার সে, এক্ষুণি করবে কারো দেহে অস্ত্রোপচার; অথবা ডাকাত, তোরঙ্গ খুলে লুণ্ঠিত সম্পদ দেখবে।

বাবর শার্টের হাত বোতাম খুলল। গোটাল যেমন খেলোয়াড় মাঠে নামবার আগে গোটায়। সামনের কয়েকটা বোতাম তারপর। পাশে বসল জাহেদার। বসে, জাহেদাকে ঘুরিয়ে উপুড় করে দিল সে।

তীব্র প্রতিবাদ ঠেলে বেরুতে চাইছে জাহেদার ভেতর থেকে। কিন্তু অবাক হয়ে গেল সি নিজেই, একটা কথা বেরুল না। বরং যেন, নিজেকে প্ৰস্তুত করছে সে ইচ্ছার বিরুদ্ধেই আপন মৃত্যুর জন্যে, ঠিক যেমন হরিণ শিশুর সম্মোহন হয়। অজগরের ধ্বক ধ্বক হাসিহাসি চোখের সামনে।

জাহেদাকে উপুড় করে তার পিঠের বোতামগুলো খুলে ফেলল বাবর। অবিকল সপ্তর্ষির মত কয়েকটা তিল তার পিঠে। বাবর সেই তিলগুলোয় হাত বুলিয়ে দিল একবার। তারপর কাঁধ ধরে তাকে তুলে বসিয়ে জামা খুলে জামাটা ফেলে দিল মেঝোয়। জাহেদা দুহাতে বুক ঢেকে মুখ নিচু করে বসে রইল। বাবর উঠে দাঁড়িয়ে নিজের জামা খুলে ছুঁড়ে মারাল মেঝের পরে। নিজের জামা ঢেকে দিল জাহেদার জামা। তারপর বাবর জাহেদার দুপা ধরে ওপরে তুলে ফেলল এক ঝটাকায়। আর তার টাল সামলাতে না পেরে জাহেদা চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ল। পড়েই সে উপুড় হয়ে গেল বুক ঢাকতে। লোকে যেমন করে মুরগির পা ঝুলিয়ে চামড়া খসিয়ে নেয়, তেমনি করে বাবর একটানে খুলে ফেলল তার পাজামা। পা ছেড়ে দিয়ে এবার পিঠে ছোট জামার হুকে হাত দিল বাবর। হুক খুলে আনবার সঙ্গে সঙ্গে আবার তাকে সোজা করে দুহাত একে একে ফিতে থেকে মুক্ত করে বাবর নিজের ট্রাউজার খুলল। বেরিয়ে পড়ল নীল অন্তর্বাস। এক বন্ধু বিলেত থেকে এনে দিয়েছিল। হঠাৎ তার কথা মনে পড়ল একবার। কিন্তু সে মুহূর্তের জন্যে। অন্তর্বাসটা ছুঁড়ে ফেলল সে নিজের বিছানায়।

জাহেদা।

উত্তর দিল না জাহেদা।

জাহেদা বালিশে মুখ ড়ুবিয়ে উপুড় হয়েই রইল।

জাহেদা।

এবার বাবর তাকে ঘুরিয়ে সোজা করে দিল। কাঁচির মত দুপা করে শুয়ে রইল জাহেদা। একটা হাত চোখের পরে রাখা–কনুয়ের ত্রিভুজ ঠিক ভুরুর মাঝখানে।

আমাকে দ্যাখ জাহেদা।

অপেক্ষা করল বাবর।

আমাকে দ্যাখ।

আরো অপেক্ষা করল সে।

দ্যাখ আমাকে।

বাবর আর অপেক্ষা করল না।

দুহাতে সরিয়ে দিল জাহেদার চোখ থেকে হাতের শাদা ত্রিভুজ।

জাহেদা চোখ বুজল।

তখন তার বুকে হাত রাখল বাবর।

তোমার শরীরে পদ্মকাঁটা দিয়েছে।

বাবর একবার বুক থেকে বাম ঊরু পর্যন্ত হাত বুলিয়ে আনল জাহেদার। আবছা লাল একটা দাগ পড়ে গেল। সেখানে। বাবর তাকিয়ে রইল, কখন মিলিয়ে যায় দাগটা।

মিলিয়ে গেল। তখন বাবর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ল নিচে জাহেদার শরীর নিয়ে।

বলল, পাথর হয়ে থেক না।

জাহেদার কানে শুধু বাথরুম থেকে অবিরাম ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়বার শব্দ। বাবরের কথা শুনতে পেল না সে, কিন্তু শরীর যেন শিথিল হয়ে এলো হঠাৎ। বাবর বলল, লক্ষ্মী মেয়ে।

তারপর ভেতরে যেতে যেতে সে আবার বলল, আজ সারা বিকেল সারা রাত আমরা কোথাও যাব না শুধু ভালবাসব।

এবার একেবারে ভেতরে গিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বাবর শুধু বলল, কাল ঢাকা যাব। কাল ভোরে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *