২০. সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক

আনিস এসেছে একা একা!

তুষারপাত হচ্ছে। রাস্তা জনমানবশূন্য! থার্মোমিটারের পারদ নিচে নামতে শুরু করেছে। স্ট্রীট লাইটের আলো অস্পষ্ট হয়ে আসছে। কে জানে তুষারঝড় হবে কিনা। উত্তর দিক থেকে বাতাস দিচ্ছে। লক্ষণ মোটেই ভালো নয়। আনিস এমিলি জোহানের ঘরের কড়া নাড়ল।

এমিলি জোহান, তুমি কি আমাকে চিনতে পারছ? মেমোরিয়াল ইউনিয়নে তোমার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল।

হ্যাঁ, চিনতে পারছি। খুব কম মানুষের সঙ্গে আজকাল আমার দেখা হয়। আমি সবাইকে মনে রাখি।

আমি একটা মেয়ের খোঁজ করছিলাম, মালিশা গিলবার্ট। ওকে আমার বিশেষ প্রয়োজন।

এমিলি জোহান শান্ত স্বরে বললেন, তুমি কি ওর জন্যে গোলাপ ফুল এনেছিলে? ল্যাণ্ডলেডি আমাকে বলেছিল।

আনিস জবাব দিল না। এমিলি জোহান থেমে থেমে বললেন, আমরা আমেরিকানরা খুব অদ্ভুত জাত। যখন কোনো কিছু চাই, মন প্ৰাণ দিয়ে চাই। যখন সেই জিনিসটি পাওয়া যায় তখন জীবন অর্থহীন হয়ে যায়।

আনিস কিছু বুঝতে পারল না। এমিলি জোহান থেমে থেমে বললেন, মালিশা গিলবার্ট ঘুমের অষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছে। দীর্ঘ বিরতিহীন ঘুম আনিস, তুমি কি আমার ঘরে এসে বসবে? নক্ষত্র নিয়ে আমি একটি চমৎকার কবিতা লিখেছি।

আনিস বেরিয়ে এল। বরফে-বরফে চারদিক ঢাকা পড়ে গেছে। একটি পরাজিত শহর।

তুষারঝড় হবে। নিশ্চয়ই তুষারঝড় হবে।

আনিস পায়ে হেঁটে বাড়ির পথ ধরল। ভূতে-পাওয়া শহরের জনশূন্য পথঘাট। কী অদ্ভুত লাগে হাঁটতে! ব্রডওয়ের কাছে ছাতা মাথায় একটি রোগা মেয়েকে দেখা গেল। সিগারেটের আলোয় তার ক্লান্ত মুখ চোখে ভাসল ক্ষণিকের জন্যে। মেয়েটি ক্ষীণ স্বরে বললে, হ্যালো মিস্টার, কী ন্যাস্টি ওয়েদার।

আনিস জবাব দিল না। মেয়েটি থেমে থেমে বলল, আজ রাতের জন্যে তোমার কোনো ডেটা লাগবে?

নাহ, ধন্যবাদ।

মেয়েটি এগিয়ে এল। তবু মুখের সিগারেট দূরে ছুঁড়ে ফেলে সরু গলায় বলল, তুমি কি আমার জন্যে এক মগ বিয়ার কিনবে? কী দুঃসহ শীত!

 

এক দিন এই দুঃসহ শীত শেষ হবে। আসবে রোদ-উজ্জ্বল সামার। ছুটি কাটানর জন্য আমেরিকানরা গাড়ি নিয়ে আসবে হাইওয়েতে। মন্টানা, সল্ট লেক, ইয়েলো স্টোন পার্ক। কত কিছু আছে দেখবার। সামারের রাতগুলি এরা বনের ধারে তাঁবু খাটিয়ে কাটাবে। প্রচণ্ড জ্যোৎস্না হবে রাতে। যুবকযুবতীদের বড্ড বনে যেতে ইচ্ছা করবে। *

 

————–

সবাই গেছে বনের সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক। পাত্র-পাত্রীদের কাউকেই আমি কোনো দিন দেখি নি।

2 Comments
Collapse Comments

খিব মন খারাপ হয়ে গেল

হামিদুল September 16, 2021 at 1:57 am

Onekbar porechi.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *