বটতলার যাত্রাগান
হাসি কাঁদি সাজিগুজি জাগি সারা রাত।
নেচে গেয়ে পুরুষ মেয়ে প্রাণটা করি পাত।।
আমোদ গড়াই, প্রমোদ ছড়াই, নিজের আমোদ নাই।
বারো মাসে একটি বার হাত পেতে দাঁড়াই।।
—মিনার্ভা থিয়েটারে বিজ্ঞাপন—পত্র (১৩২০ সাল)
.
মাত্র চল্লিশ বছর আগে কলকাতা শহরের অন্যতম রঙ্গালয় থেকে এই ধরনের বিজ্ঞাপনপত্র ছেপে দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হত। সাধারণ লোকের কাছ থেকে থিয়েটার তখনও তার যোগ্য মর্যাদা পায়নি। তার কারণ, যাত্রাগান থেকে থিয়েটার পর্যন্ত অগ্রগতির যে ইতিহাস, তার মধ্যে বিকৃতরুচি বিলাসিতা ও কৃত্রিমতার স্থূল পদচিহ্ন এত স্পষ্ট যে সাধারণ লোক থিয়েটারের নাম শুনলেই আঁতকে উঠতো ভয়ে। তারা ভাবত, থিয়েটার হল কোনো বড়লোকের বাগানবাড়ির বাইনাচের আসর, বরাখুরে বামণ্ডুলে ও বারাঙ্গনাদের একটা বারোয়ারি আড্ডাখানা। মাত্র পঁচিশ বছর আগেও এই ধারণা বদ্ধমূল ছিল লোকের মনে। ছেলেবেলায় আমরাও থিয়েটার দেখার অনুমতি পাইনি কোনোদিন। থিয়েটারকে এই একঘরে অস্পৃশ্য অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছেন প্রথম যুগের অভিনেতারা। প্রায়শ্চিত্ত তাঁদের যথেষ্ট করতে হয়েছে। সেই অতীতের কথাই বলছি—যাত্রাগানের অতীত, এবং যাত্রা থেকে থিয়েটারের পথে অগ্রগতির অতীত। কলকাতা শহরটাকে যখন রাজা—মহারাজা ও শৌখিন বাবুদের বাগানবাড়ি বা বৈঠকখানা বলে মনে হত। ‘কলকাতা কালচার’ বলতে যখন বাগানবাড়ির বৈঠকি কালচার ছাড়া আর বিশেষ কিছুই বোঝাত না, সেই অতীতের কথা।
তখনও যাত্রাগানের প্রাধান্যের যুগ অস্তমিত হয়নি। ঊনবিংশ শতাব্দীর কথা। এই দেশি যাত্রাগানের সঙ্গে বিলেতি নাচ ও থিয়েটার ‘পাঞ্চ’ করে, কলকাতার বাবুদের বৈঠকখানায় ও বাগানবাড়িতে ‘শখের থিয়েটার’ গজিয়ে উঠেছে এবং শখের থিয়েটার থেকে ক্রমে ‘সাধারণ থিয়েটার’—এর চেতনা জেগেছে। নতুন শখের থিয়েটারের উপর যেমন দেশি যাত্রার প্রভাব বেড়েছে, তেমনি আবার শখের থিয়েটার ও বিলেতি নৃত্যাভিনয়ের প্রভাবে দেশি যাত্রাগান ক্রমে ‘থিয়েট্রিক্যাল যাত্রা’ হয়ে উঠেছে। যাত্রা ও থিয়েটারের লেনদেনের দীর্ঘ সন্ধিক্ষণের ইতিহাস আজও লেখা হয়নি, লেখার চেষ্টাও করেননি কেউ। ব্রজেন্দ্রনাথ সাল—তারিখ ধরে শখের থিয়েটারের একটা ইতিবৃত্ত লিখেছেন। তাঁর আগে আরও কয়েকজন সেই ইতিহাস লেখার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের মধ্যে ব্যোমকেশ মুস্তাফী, গুহঠাকুরতা অমরেন্দ্রনাথ প্রভৃতির নাম উল্লেখযোগ্য। কিন্তু যাত্রাগানের সুদীর্ঘ ক্রমবিকাশের ধারাটাকে অনেকেই লক্ষ করেননি, অবহেলা করেছেন। থিয়েটারের ইতিহাস—প্রসঙ্গে ঠাকুর পরিবার, পাইকপাড়া ও শোভাবাজারের রাজবংশ এবং কলকাতার অন্যান্য বড়লোক বাবুদের কথা আমরা যতটা জানি, তার তুলনায় শিশুরাম অধিকারী, শ্রীদাম—সুবল, পরমানন্দ, প্রেমানন্দ, গোপাল উড়ে, কৃষ্ণকমল গোস্বামী, গোবিন্দ অধিকারী, বদন অধিকারী প্রভৃতির কথা কতটুকু জানি? অথচ রঙ্গালয় বা রঙ্গাভিনয়ের কোনো ইতিহাস যাত্রাগান বা তার অধিকারীদের বাদ দিয়ে লেখা সম্ভব নয়। এরকম একপেশে ইতিহাসের মধ্যে সমস্ত বিষয়টার একটা বিকলাঙ্গ ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে, সত্যিকারের ঐতিহাসিক ধারার কোনো পরিচয় পাওয়া যায় না। এখানে সেই ধারা প্রতি ইঙ্গিত করা ছাড়া তার বিস্তারিত পরিচয় দেওয়া সম্ভব নয়।
‘যাত্রা’ করার অর্থ ‘প্রসেশন’, যেমন শোভাযাত্রা, শবযাত্রা ইত্যাদি। উৎসব—পার্বণের সময় গ্রামের সমস্ত লোক, স্ত্রী—পুরুষ, ছেলেমেয়ে মিলে নৃত্যগীত, রঙ্গভঙ্গি করে গ্রামের মধ্যে এবং গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে যে প্রদক্ষিণ করত তার নাম ‘যাত্রা’। আজও সাঁওতাল, হো, মুন্ডাদের মধ্যে এই ধরনের উৎসব—যাত্রা হতে দেখা যায়। সুতরাং ‘যাত্রার’ ইতিহাস দু’এক শতাব্দীর ইতিহাস নয়, তার দিগন্তরেখা সুদূর প্রাগৈতিহাসিক যুগের আদিম লোকসংস্কৃতির ধারাকে পর্যন্ত স্পর্শ করেছে। তারপর এই যাত্রা থেকেই চণ্ডী—যাত্রা, ভাসন—যাত্রা, গম্ভীরা প্রভৃতির বিকাশ হয়েছে এবং ক্রমে রাম—যাত্রা, কৃষ্ণ—যাত্রা ইত্যাদির ভিতর দিয়ে বিদ্যাসুন্দর—যাত্রার যুগ অতিক্রম করে আমরা থিয়েটারের যুগে পদার্পণ করেছি। চণ্ডী—যাত্রা ও ভাসান—যাত্রাই সবচেয়ে প্রাচীন। তারপর বৈষ্ণবধর্মের আন্দোলনের যুগে বোধহয় কৃষ্ণ—যাত্রার চূড়ান্ত বিকাশ হয়। নগর—সংকীর্তন ও কৃষ্ণ—যাত্রার প্রচণ্ড শক্তিশালী মাধ্যমেই যে জনসাধারণের মধ্যে বৈষ্ণবধর্মের প্রচার সম্ভব হয়েছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই শক্তিশালী প্রচারমাধ্যমের আবিষ্কারই বোধহয় শ্রীচৈতন্য ও তাঁর শিষ্যদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত চণ্ডী—যাত্রা ও ভাসান—যাত্রার পাশে কৃষ্ণযাত্রার প্রবল প্রতিপত্তির যুগ গেছে। সেই সময়, রামপ্রসাদ ও ভারতচন্দ্রর যুগে শিশুরাম ছিলেন কৃষ্ণযাত্রার অন্যতম শ্রেষ্ঠ অধিকারী। যাত্রাগানের প্রযোজনায় তিনি যুগান্তর এনেছিলেন। শিশুরাম অধিকারীর সুযোগ্য শিষ্য শ্রীদাম সুবল সেই ধারাকেই বহন করে এগিয়ে যান। তারপর পরমানন্দ দাস কৃষ্ণ—যাত্রায় এক অভিনব ধারার প্রবর্তন করেন। তিনি নিজেই দূতী সেজে, রাধাকৃষ্ণ প্রভৃতিকে সামনে রেখে একাই যাত্রার আসর জমাতেন। তা ছাড়া তিনি এক নতুন টেকনিক আবিষ্কার করেন, তাকে ‘তুক্কো’ বলা হয়। পয়ার ছন্দের গান কতকটা পয়ারের সুরে গাইতে গাইতে তার শেষাংশ যদি কীর্তনের সুরে গাওয়া যায় তাহলে তাকে ‘তুক্কো’ বলে। এই ‘তুক্কো’ নাকি আগে ছিল না, এটা পরমানন্দরই অভিনব সৃষ্টি। এই তুক্কোর সাহায্যে পরমানন্দ কৃষ্ণ—যাত্রায় নতুন জীবন সঞ্চার করেছিলেন। পরমানন্দর সমসাময়িক প্রেমচাঁদও যাত্রায় নতুনত্ব আনেন। প্রেমচাঁদের তুক্কো ছিল না, তিনি মহাজনি—পদের প্রাচীন ভাষার সঙ্গে প্রচলিত ভাষা মিশিয়ে সবটাই কীর্তনের সুরে গাইতেন। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিক থেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়া পর্যন্ত ছিল এই পরমানন্দ ও প্রেমচাঁদ অধিকারীর যাত্রাগানের যুগ।
কিন্তু কৃষ্ণচন্দ্রর যুগে কবি, খেউড় ও আখড়াই গানের সঙ্গে বিদ্যাসুন্দর—যাত্রারও প্রবর্তন হয় নতুন ধারায়। পরমানন্দর সমসাময়িক প্রেমচাঁদ ছিলেন এই বিদ্যাসুন্দর—যাত্রার অন্যতম অধিকারী এবং তিনিই পরমানন্দের তুক্কোর সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্য মহাজনি—পদের ব্রজবুলির মধ্যে চলিত ভাষা মিশিয়ে কীর্তন গেয়ে আসর জমিয়েছিলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীতে কৃষ্ণ—যাত্রা ও বিদ্যাসুন্দর—যাত্রার দুটো ধারাই আখড়াই—কবি—পাঁচালির সঙ্গে নদিয়া থেকে এসে কলকাতার নতুন সংস্কৃতিগঙ্গায় মিলিত হল। কলকাতার সংস্কৃতি গঙ্গার ভগীরথ তখন ইংরেজরা এবং তাঁদেরই পার্শ্বচর ও অনুচর এ দেশি রাজারাজড়া ও শৌখিন বাবুরা। বিদেশি সাহেবরাই তখন পূর্ণোদ্যমে থিয়েটারে মনোযোগ দিয়েছেন—ক্যালকাটা থিয়েটার, চৌরঙ্গি থিয়েটার, সাঁ সোচি থিয়েটার ইত্যাদি তার প্রমাণ। মিঃ ক্লিঙ্গার, মিঃ রবার্টস, মিঃ পার্কার, মিঃ বার্নড মেসিঙ্ক, মিসেস বিস্টো, মিসেস লিচ প্রভৃতি বিদেশি প্রযোজক, অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা তখন কলকাতার আসর জমিয়েছেন। তা—ই দেখে বাবুদের বৈঠকখানায় ও বাগানবাড়িতে শখের থিয়েটারের ধুম পড়ে গেছে। তার সঙ্গে খেউড়, কবি, আখড়াই হাফ—আখড়াই ইত্যাদিও চলেছে। উৎসব—পার্বণে ও ভোজসভায় বাইনাচ ও ভাঁড়ের নাচ চলেছে। এমনকি নবাবি আমলের বাইজিরা তখনও পর্যন্ত দিব্যি আসর গরম করে রেখেছেন। রামমোহন রায়ের বাড়িতে নিকিবাইজির নাচ দেখে ফ্যানি পার্কস নিকিকে বলেছেন—‘the Catalani of the East’। নিকি ছাড়া বেগমজান, হিঙ্গল, নান্নিজান, সুপনজান, জিন্নাৎ, সৈয়দ বক্স প্রভৃতি বাইজিরা তখন শোভাবাজার, চোরবাগান, বটতলা থেকে শুঁড়ো, মানিকতলা পর্যন্ত সর্বত্র এ দেশি ধনীদের গৃহে নেচে বেড়াচ্ছেন। এই ইংরেজ নবাব ও দেশি হঠাৎ—নবাবদের যুগের বাইনাচ ও ভাঁড়ের নাচের মধ্যে পড়ে কবিগান তার কবিত্ব হারাল, পুরো আখড়াই গান হয়ে গেল হাফ—আখড়াই এবং যাত্রাগানও তার যাত্রাত্ব বিসর্জন দিল। কলকাতা কালচারের সংস্পর্শে বাংলার যাত্রাগান দ্রুত অবনতি ও বিলুপ্তির পথে নেমে গেল, এবং গ্রাম থেকে বটতলায় এসে ভিড় করল।
এই সময় পরমানন্দর শিষ্য গোবিন্দ অধিকারী (১৭৯৮—১৮৭০) এবং কৃষ্ণকমল গোস্বামী (১৮১০—৮৮) কৃষ্ণ—যাত্রাকে অনেক উপায়ে বাঁচাবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেন। গোবিন্দ অধিকারী তাঁর গুরুর তুক্কো ছেড়ে অনুপ্রাসের চটকদার পথ ধরলেন বটে, কিন্তু তাতেও কিছু হল না। কৃষ্ণকমল গোস্বামী অনেক সংস্কার করলেন কৃষ্ণ—যাত্রার এবং ১৮৩৫ সালে রচিত তাঁর ‘স্বপ্নবিলাস’ প্রায় বিশ হাজার কপি বিক্রিও হল। কৃষ্ণকমল বা গোবিন্দ অধিকারী, কারও চেষ্টায় কলকাতার নব্য—সংস্কৃতিগঙ্গার জোয়ার রোধ করা সম্ভব হল না। গোবিন্দ অধিকারী তুক্কো ছাড়লেন, কিন্তু প্রেমচাঁদের শিষ্য বদন অধিকারী তুক্কো ধরে বিদ্যাসুন্দর—যাত্রা মাত করে দিলেন। গোবিন্দর শিষ্য নীলকণ্ঠ গ্রামে গ্রামে কৃষ্ণ—যাত্রার পালা গেয়ে বেড়াতে লাগলেন। এর মধ্যে গোপাল উড়ে (১৮১৯—৫৯) এক অভিনব ধারায় বিদ্যাসুন্দর—যাত্রার প্রবর্তন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলেন। হীরার নাচ—গানে যাত্রার আসর সরগরম হয়ে উঠল। কেউ কেউ বলেন, পাথুরিয়াঘাটায় বীরেনসিংহ মল্লিক মহাশয় নাকি গোপাল উড়ের যাত্রার দলের প্রতিষ্ঠাতা। গোপাল উড়ের বিদ্যাসুন্দর—যাত্রা কলকাতা শহরের রঙ্গলোকে নতুন সাড়া জাগাল।
কলকাতার বাবুরা আগে থেকেই উৎসাহিত হয়ে শখের কবির দল, আখড়াই দল ইত্যাদি করেছিলেন। তা—ই দেখে জনৈক ভবঘুরে—মুচে—ডোম কবিওয়ালা তখন সংবাদপত্রে দুঃখ করে চিঠি লিখলেন এই মর্মে (১৮২৮ সালে) : বিলেতি সুতোয় বিধবা স্ত্রীলোকের অন্ন গেছে। বাষ্পের নৌকায় গেছে এ দেশের দাঁড়ি মাঝি। মাছ ধরার কারখানায় জেলেদের অন্ন গেছে। এখন দেশের কবিওয়ালাদের মারছেন বিশিষ্ট ভদ্রসন্তানেরা। শখের কবির দল করে, বিনামূল্যে অন্যের বাড়িতে নাচ—গান করে, বাবুরা আমাদের অন্ন ধ্বংস করছেন। এরকম দৌরাত্ম্য আর—একবার নেড়ি বৈষ্ণবীরা আমাদের উপর করেছিল, এখন শৌখিন নেড়ার দল করছেন। এই হল কবিয়াল মুচে—ডোমের অভিযোগ। বিশেষ প্রণিধানযোগ্য অভিযোগ। যাত্রার অধিকারীরাও এই অভিযোগ স্বচ্ছন্দে করতে পারেন। বটতলা থেকে কালীঘাট পর্যন্ত বাবুদের শখের যাত্রার দল গজিয়ে উঠল। পেশাদার অধিকারীদের যাত্রার দল লোপ পেয়ে গেল।
১৮২০—২২ সাল থেকে কলকাতার নতুন যাত্রার দলের খবর পাওয়া যায় বিদ্যাসুন্দর যাত্রা, কামরূপ—যাত্রা, কলিরাজার যাত্রা, নল—দময়ন্তীর যাত্রা ইত্যাদি। বাইরে থেকেও যাত্রার দল আসত কলকাতায়। ১৮২৬ সালে মণিপুর থেকে এক যাত্রার দল কলকাতায় মতিলাল শীলের বাড়িতে অভিনয় করতে এল। মণিপুরি যাত্রার বর্ণনা করা হল এইভাবে :
আশ্চর্য সম্প্রদায় এই স্ত্রীলোকের দল।
স্ত্রীলোকেতে কৃষ্ণ সাজি করয়ে কৌশল।
ললিতা বিসখা চিত্রা আর রঙ্গদেবী।
সুদেবী চম্পকলতা তং বিদ্যাদেবী।
ভবানীপুরের ভদ্রসন্তানেরা নল—দময়ন্তীর যাত্রার দল করলেন, রাম বসু তার গান ও ছড়া লিখতে লাগলেন। যেমন সুর, তেমনি গান—
যথা—
কেন গো, সজনী আমার উড়ু উড়ু
করে মন।
পিঞ্জরের পাখি যেমন, পলাবারি
আকিঞ্চন।
তথা—
নল নল নল, বলিস্ কি, তা বল।
দাবানল, মনানল, প্রেমানল, কি অনল;
কি সেই, কুল—মজানে কামানল।
—ইত্যাদি
শৌখিন বাবুদের শখের যাত্রার দলের এই উদ্যমানলের দৌরাত্ম্যে শেষ পর্যন্ত অধিকারীদের যাত্রার দল আর টিকতে পারল না। তারপর বটতলার যাত্রার সঙ্গে যখন শখের থিয়েটারও এল, তখন বোঝা গেল যাত্রাগানের যুগ শেষ হয়েছে। অবশ্য বটতলার যাত্রার অনুকরণেই থিয়েটারের সূচনা হল, কিন্তু সেটা অন্য কাহিনি।