১৯. পরিশিষ্ট – মহাভারতে বহু উক্ত ব্যক্তি, স্থান ও অস্ত্রাদি

পরিশিষ্ট

মহাভারতে বহু উক্ত ব্যক্তি, স্থান ও অস্ত্রাদি

অক্রুর – কৃষ্ণের এক সখা, সম্পর্কে পিতৃব্য।

অঙ্গ দেশ – মুঙ্গের ও ভাগলপুর জেলায়।

অন্ধ দেশ – মাদ্রাজ প্রদেশের উত্তরাংশ এবং হায়দ্রাবাদের কিয়দংশ।

অবন্তী – মালব দেশ।

অম্বা – কাশীরাজের প্রথমা কন্যা, পরজন্মে শিখণ্ডী।

অম্বালিকা – কাশীরাজের তৃতীয়া কন্যা, বিচিত্রবীর্য-পত্নী, পাণ্ডু-জননী।

অম্বিকা – কাশীরাজের দ্বিতীয়া কন্যা, বিচিত্রবীর্য-পত্নী, ধৃতরাষ্ট্র-জননী।

অর্জুন – পাণ্ডুর তৃতীয় পুত্র, ইন্দ্রের ঔরসে কুন্তীর গর্ভে জাত।

অলম্বুষ – কুরুপক্ষীয় এক রাক্ষস যোদ্ধা, জটাসুরের পুত্র।

অশ্বত্থামা – দ্রোণ-কৃপীর পুত্র।

অহিচ্ছত্র দেশ – যুক্তপ্রদেশে বেরেলি জেলায়।

আস্তীক – জরৎকারু-পুত্র, বাসুকির ভাগিনেয়।

ইন্দ্রপ্রস্থ – দিল্লির নিকটবর্তী নগর।

ইন্দ্রসেন – যুধিষ্ঠিরের সারথি।

ইরাবান – অর্জুন-উলূপীর পুত্র।

উগ্রসেন – কংসের পিতা, যাদবগণের রাজা।

উত্তমৌজা – পাণ্ডবপক্ষীয় পাঞ্চাল বীর বিশেষ।

উত্তর – বিরাটের কনিষ্ঠ পুত্র।

উত্তরকুরু – তিম্বতের উত্তরপশ্চিমস্থ দেশ; মতান্তরে সাইবিরিয়া।

উত্তরা – বিরাট-কন্যা, অভিমন্যু-পত্নী, পরীক্ষিৎ-জননী।

উদ্ধব – কৃষ্ণের এক সখা, সম্পর্কে পিতৃব্য।

উপপ্লব্য – মৎস্যরাজ্যের অন্তর্গত নগর।

উলূক – শকুনি-পুত্র।

উলূপী – নাগরাজ কৌরব্যের কন্যা, অর্জুন-পত্নী।

একচক্রা নগরী – অনেকের মতে বিহার প্রদেশের আরা; কিন্তু এই অনুমান ভ্রান্ত বোধ হয়।

কংস – উগ্রসেন-পুত্র, দেবকীর ভ্রাতা, জরাসন্ধের জামাতা।

কবচ – বর্ম।

কম্বাোজ – কাশ্মীরের উত্তরস্থ দেশ।

কর্ণ – সূর্যের ঔরসে কুন্তীর গর্ভে জাত, সূতবংশীয় অধিরথ ও তাঁর পত্নী রাধা কর্তৃক পালিত।

কলিঙ্গ – মহানদী থেকে গোদাবরী পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের তীরস্থ প্রদেশ।

কাম্যক বন – কচ্ছ উপসাগরের নিকট সরস্বতী নদীর তীরে।

কীচক – বিরাট রাজার সেনাপতি ও শ্যালক।

কুন্তিভোজ – শূরের পিতৃম্বসার পুত্র, কুন্তীর পালক-পিতা।

কুন্তী – অন্য নাম পৃথা; শূরের দুহিতা, বসুদেবের ভগিনী, কুন্তিভোজের পালিতা কন্যা, পাণ্ডুর প্রথমা পত্নী, যুধিষ্ঠির-ভীম-অর্জুনের জননী :

কুরু – দুষ্মন্ত-শকুন্তলার পুত্র ভরতের বংশধর, সম্বরণ-তপতীর পুত্র।

কুরুক্ষেত্র – পঞ্জাবে অম্বালা ও কর্নাল জেলায়।

কুরুজাঙ্গাল – কুরুক্ষেত্র ও তার উত্তরস্থ স্থান।

কৃতবর্মা – ভোজবংশীয় যাদব প্রধান বিশেষ।

কৃপ – শরদ্বানের পুত্র, কুরুপাণ্ডবের অন্যতর অস্ত্রশিক্ষক কৃপাচার্য, দ্রোণের শ্যালক।

কৃষ্ণ – বসুদেব-দেবকীর পুত্র, বলরাম ও সুভদ্রার বৈমাত্র ভ্রাতা, যুধিষ্ঠিরাদির মামাতো ভাই।

কেকয় – শতদ্রু ও বিপাশা নদীর মধ্যবর্তী দেশ। মতান্তরে – সিন্ধু নদের উত্তরপশ্চিমে।। কেরল – দক্ষিণপশ্চিম ভারতে মালাবার ও কানাড়া প্রদেশ।

কোশল – যুক্তপ্রদেশে অযোধ্যার নিকটবর্তী ফয়জাবাদ গণ্ডা ও বরৈচ জেলায় অবস্থিত দেশ; উত্তর ও দক্ষিণ-কোশল এই দুই অংশে বিভক্ত। পরে দক্ষিণ বা মহা-কোশল মধ্যপ্রদেশে ছত্রিশগড় জেলায়।

কৌশিকী নদী – আধুনিক কুশী বা কোশী।

ক্ষুর – খুরপার ন্যায় ক্ষেপণাস্ত্র।

গদ – যাদব বীর বিশেষ।

গদা – মুদগরতুল্য যুদ্ধাস্ত্র।

গান্ধার – সিন্ধু ও কাবুল নদীর উভয়পার্শ্বস্থ দেশ! মতান্তরে আধুনিক উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ।

গান্ধারী – গান্ধাররাজ সুবলের কন্যা, ধৃতরাষ্ট্র-পত্নী, দুর্যোধনাদির জননী। গিরিব্রজ – জরাসন্ধের রাজধানী, রাজগৃহ, আধুনিক রাজগির।

ঘটোৎকচ – ভীম-হিড়িম্বার পুত্র।

চক্র – তীক্ষ্ণধার চক্রাকার ক্ষেপণীয় অস্ত্র।

চর্ম – ঢাল।

চর্মতী নদী – আধুনিক চম্বল, মধ্যভারতে।

চিত্রাঙ্গদা – মণিপুরপতি চিত্ৰবাহনের কন্যা, অর্জুন-পত্নী, বভ্রুবাহনের জননী।

চেকিতান – যাদব যোদ্ধা বিশেষ।

চেদি – নর্মদা-গোদাবরীর মধ্যস্থ জব্বলপুরের নিকটবর্তী দেশ।

চোল – কাবেরী নদীর উভয়তীরবর্তী দেশ।

জনমেজয় – পরীক্ষিতের পুত্র, অভিমন্যুর পৌত্র।

জয়দ্রথ – সৌবীররাজ, ধৃতরাষ্ট্র-কন্যা দুঃশলার পতি।

জরাসন্ধ – মগধের রাজা, বৃহদ্রথের পুত্র, কংসের শ্বশুর।

তক্ষক – নাগরাজ বিশেষ।

তক্ষশিলা নগরী – উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে রাওলপিন্ডি জেলায়।

তোমর – শাবলতুল্য অস্ত্র।

ত্রিগর্ত দেশ – পঞ্জাবে জালন্ধর জেলায় কাংড়া উপত্যকায়। মতান্তরে শতদ্রুর পূর্ববর্তী মরুপ্রদেশে।

দরদ – কাশ্মীরের নিকটস্থ দেশ, দর্দিস্তান।

দশার্ণ দেশ – মধ্যভারতে চম্বল ও বেতোআ নদীর মধ্যবর্তী।

দারুক – কৃষ্ণের সারথি।

দুঃশলা – ধৃতরাষ্ট্র-গান্ধারীর কন্যা, জয়দ্রথ-পত্নী।

দুঃশাসন – ধৃতরাষ্ট্র-গান্ধারীর দ্বিতীয় পুত্র।

দুর্যোধন – ধৃতরাষ্ট্র-গান্ধারীর জ্যেষ্ঠ পুত্র।

দ্রাবিড় — ভারতের দক্ষিণপূর্ববর্তী দেশ।

দ্রুপদ – পাঞ্চালরাজ, ধৃষ্টদ্যুম্ন শিখণ্ডী ও দ্রৌপদীর পিতা।

দ্রোণ – ভরদ্বাজ-পুত্র, কুরুপাণ্ডবের অস্ত্রগুরু, কৃপের ভগিনীপতি।

দ্রৌপদী – কৃষ্ণা, পাঞ্চালী; দ্রুপদ-কন্যা, পঞ্চপাণ্ডবের পত্নী।

দ্বৈতবন – পঞ্জাবে সরস্বতী নদীর তীরে।।

ধৃতরাষ্ট্র – বিচিত্রবীর্যের জ্যেষ্ঠ ক্ষেত্রজ পুত্র, ব্যাসের ঔরসে অম্বিকার গর্ভে জাত।

ধৃষ্টকেতু – শিশপাল-পুত্র, চেদি দেশের রাজা।

ধৃষ্টদ্যুম্ন – দ্রুপদ-পুত্র, দ্রৌপদীর ভ্রাতা।

ধৌম্য – যুধিষ্ঠিরাদির পুরোহিত।

নকুল-সহদেব – পাণ্ডুর চতুর্থ ও পঞ্চম যমজ পুত্র, অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের ঔরসে মাদ্রীর গর্ভের জাত।

নর – বিষ্ণুর অংশস্বরূপ দেবতা বা ঋষি বিশেষ।।

নারাচ – লৌহময় বাণ।

নালীক – বাণ বিশেষ।

নিষধ দেশ – মধ্যপ্রদেশে জব্বলপুরের পূর্বে। মতান্তরে যুক্তপ্রদেশে কুমায়ুন অঞ্চলে।

নৈমিষারণ্য – যুক্তপ্রদেশে সীতাপুর জেলায়, আধুনিক নিমসার।

পঞ্চাল – গঙ্গা-যমুনার মধ্যস্থ দেশ, গঙ্গাদ্বার থেকে চম্বল নদী পর্যন্ত।

পটিশ – দ্বিধার খড়্গ বিশেষ।

পরশু – কুঠার বা টাঙ্গি তুল্য যুদ্ধাস্ত্র। মতান্তরে খড়্গ বিশেষ।

পরিধ – লৌহমুখ বা লৌহ’কণ্টকযুক্ত মৃগর।

পরীক্ষিৎ – অভিমন্যু-উত্তরার পুত্র, অর্জুনের পৌত্র।

পাণ্ডু – বিচিত্রবীর্যের দ্বিতীয় ক্ষেত্রজ পুত্র, ব্যাসের ঔরসে অম্বালিকার গর্ভে জাত।

পাণ্ড্য দেশ – মাদ্রাজ প্রদেশে মাদুরা ও তিনেভেল্লি জেলায়।

পুণ্ড্র দেশ – উত্তরবঙ্গ।

প্রদ্যুম্ন – কৃষ্ণ-রুক্মিণীর পুত্র।

প্রভাস – কাথিয়াবাড়ে সমুদ্রতীরবর্তী তীর্থ।

প্ৰাগজ্যোতিষ দেশ — কামরূপ।

প্রাচ্য – সরস্বতী নদীর পূর্বস্থ দেশ। প্রাস – ছোট বর্শা।

বঙ্গ দেশ – পূর্ববঙ্গ।

বৎস দেশ – প্রয়াগের পশ্চিমে যমুনার উত্তরে।

ব – যাদব বীর বিশেষ।

ববাহন – অর্জুন-চিত্রাঙ্গদার পুত্র।

বলরাম – বলদেব, কৃষ্ণের অগ্রজ বৈমাত্র ভ্রাতা, বসুদেব-রোহিণীর পুত্র।

বসুদেব – কৃষ্ণ-বলরাম-সুভদ্রার পিতা, কুন্তীর ভ্রাতা, শূরের পুত্র।

বারণাবত – প্রয়াগের নিকটস্থ নগর।

বাসুকি – নাগরাজ, অনন্ত, কশ্যপ-কদ্রুর পুত্র।

বাহীক বা বাহ্রীক দেশ – বিন্ধু ও পঞ্চনদ প্রদেশ। মতান্তরে বাম্প।

বাহ্মীকরাজ – কুরুবংশীর, সোমদত্তের পিতা, ভূরিশ্রবার পিতামহ।

বিকর্ণ – দুর্যোধনের এক ভ্রাতা।

বিচিত্রবীর্য – শান্তনু-সত্যবতীয় পুত্র, ভীষ্মের বৈমাত্র ভ্রাতা।

বিদর্ভ দেশ – শান্তনু-সত্যবতীর পুত্র, ভীষ্মের বৈমাত্র ভ্রাতা।

বিদর্ভ দেশ – আধুনিক বেরায়।

বিদুর — ব্যাসের ঔরসে অম্বিকায় শূদ্রা দাসীর গর্ভজাত।

বিদেহ দেশ – উত্তর বিহার বা মিথিলা।

বিরাট – মৎস্য দেশের রাজা, উত্তরার পিতা।

বিশ্বামিত্র – কান্যকুজরাজ গাধির পুত্র, কুশিকের পৌত্র।

বৃহৎক্ষত্র – নিষধরাজ। জ্যেষ্ঠ কেকয়রাজ।

বৃহবল – কোশলরাজ।

বৈশম্পায়ন – ব্যাস-শিষ্য, জনমেজয়ের সর্পযজ্ঞে মহাভারত-বক্তা।

ব্যাস – কৃষ্ণদ্বৈপায়ন, পরাশর-সতাবতীর পুত্র, ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডু ও বিদুরের জন্মদাতা, মহাভারত-রচয়িতা।

ব্রহ্মর্ষি দেশ – কুরুক্ষেত্র মৎস্য পাঞ্চাল ও শূরসেন সংবলিত দেশ।

ব্রহ্মাবর্ত – সরস্বতী ও দৃষদৃবতী নদীর মধ্যস্থ দেশ।

ভগদত্ত – প্রাগজ্যোতিষপুরের রাজা, ম্লেচ্ছ ও অসুররূপে উক্ত।

ভরত – দুম্মন্ত-শকুন্তলার পুত্র, কুরুপাণ্ডবগণের পূর্বপুরুষ।

ভল্ল – বর্শা বিশেষ। ভীম – পাণ্ডুর দ্বিতীয় পুত্র, পবনশেষের ঔরসে কুন্তীর গর্ভে জাত।

ভীষ্ম – শান্তনু গঙ্গার পুত্র।

ভীষ্মক – রুক্সিণীর পিতা, কৃষ্ণের শ্বশুর, ভোজ দেশের রাজা।

ভূরিশ্ৰবা – সোমদত্তের পুত্র, কুরুবংশীয় যোদ্ধা বিশেষ।

ভোজ – যদুবংশ। মালব ও বিদর্ভের নিকটবর্তী দেশ।

মগধ দেশ – পাটনা-গয়ার নিকটে।

মণিপুর – আধুনিক মণিপুর নয়; মহাভারতের মণিপুর অনির্ণীত।

মৎস্য দেশ রাজপুতানায় ঢোলপুর রাজ্যের পশ্চিমে। মতান্তরে আধুনিক জয়পুর।

মদ্র দেশ – পঞ্জাবে চন্দ্রভাগা ও ইরাবতী নদীর মধ্যে।

মধ্য দেশ – হিমালয়-বিন্ধ্যের মধ্যে, প্রয়াগের পশ্চিমে এবং কুরুক্ষেত্রের পূর্বে অবস্থিত ভূভাগ।

ময় দানব – নমুচির ভ্রাতা, পাণ্ডবরাজসভা-নির্মাতা।

মহেন্দ্র পর্বত – পূর্বঘাট পর্বতমালা।

মাদ্রী – মদ্ররাজ শল্যের ভগিনী, পাণ্ডুর দ্বিতীয়া পত্নী, নকুল-সহদেবের জননী।

মালব দেশ – মধ্য ভারতে, আধুনিক মালোআ।

মাহিষ্মতী পুরী – মধ্যপ্রদেশে নিমার জেলায় নর্মদাতীরে।

মেকল দেশ – নর্মদার উৎপত্তি স্থান অমরকণ্টকের নিকটে।

মেরু, সুমেরু – চীন-তুর্কিস্থানে, সম্ভবত হিন্দুকুশ পর্বত।

যুধামন্যু – পাঞ্চাল বীর বিশেষ।

যুধিষ্ঠির – পাণ্ডুর জ্যেষ্ঠ পুত্র, ধর্মের ঔরসে কুন্তীর গর্ভে জাত।

যুযুৎসু – বৈশ্যার গর্ভজাত ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র।

রৈবতক পর্বত – কাথিয়াবাড়ে, আধুনিক গির্নার।

লক্ষ্মণ – দুর্যোধন-পুত্র। গত লৌহিত্য – ব্রহ্মপুত্র নদ।

শকুনি – দুর্যোধনের মাতুল, গান্ধাররাজ সুবলের পুত্র।

শঙ্খ – বিরাটের জ্যেষ্ঠপুত্র।

শক্তি – ক্ষেপণীস লৌহদণ্ড বা বর্শা বিশেষ।

শতঘ্নী – লৌহ’কণ্টকাচ্ছন্ন বৃহৎ ক্ষেপণীয় অস্ত্র বিশেষ।

শতানীক – বিরাটের ভ্রাতা।

শল্য – বাহ্নীক-বংশীয়, মদ্রদেশের রাজা, মাদ্রীর ভ্রাতা।

শান্তনু – প্রতীপের পুত্র, ভীষ্ম চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্যের পিতা।

শাম্ব – প্রতীপের পুত্র, ভীষ্ম চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্যের পিতা।

শাম্ব – কৃষ্ণ-জাম্ববতীর পুত্র।

শাল্ব দেশ – সম্ভবত রাজপুতানায়। সেখানকার কয়েকজন রাজার নামও শাল্ব।

শিখণ্ডী – দ্রুপদের পুত্র, পূর্বজন্মে কাশীরাজকন্যা অম্বা।

শিশুপাল – চেদি দেশের রাজা, দমঘোষ-ত্র, কৃষ্ণের পিসতুতো ভাই।

শুকদেব — ব্যাসের পুত্র।

শূর – বসূদেবের পিতা।

শূরসেন – মথুরায় নিকটবর্তী প্রদেশ।

তারু – কলিঙ্গরাজ।

শ্বেত – বিরাটের মধ্যম পুত্র।

সঞ্জয় – ধৃতরাষ্ট্রের সারথি, সূত-জাতীয়।

সয়খ – সূত-জাতিয়।

সত্যজিৎ – দ্রুপদের ভ্রাতা।

সত্যবতী – অন্য নাম মৎস্যগন্ধা, উপরিচর বসুর কন্যা, মৎসীগর্ভে জাতা, ব্যাসের জননী। পরে শান্তনুর পত্নী এবং চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্যের জননী।।

স্যমন্তপঞ্চক – কুরুক্ষেত্রের অন্তর্গত পঞ্চহ্রদযুক্ত স্থান।

সহদেব – নকুল দেখ।

জরাসন্ধ-পুত্র, মগধরাজ।

সাত্যকি – বৃষ্ণিবংশীয় যাদববীর, সত্যকের পুত্র, শিনির পৌত্র।

সারণ – কৃষ্ণের বৈমাত্র ভ্রাতা, সুভদ্রার সহোদর।

সুদেষ্ণা – বিরাটমহিষী, উত্তর-উত্তরার জননী, কেকয়রাজকন্যা।

সুবল – গান্ধাররাজ, গান্ধারী ও শকুনির পিতা।

সুভদ্রা – কৃষ্ণের বৈমাত্র ভগিনী, অর্জুন-পত্নী, অভিমন্যু-জননী।

সুমেরু – মেরু দেখ।

সুরাষ্ট্র, সৌরাষ্ট্র – আধুনিক কাথিয়াবাড় ও গুজরাট।

কার ও সুশর্মা – ত্রিগর্ত দেশের রাজা।

সুহ্ন দেশ – তমলুকের নিকট।

সোমদত্ত – কুরুবংশীয়, বাহ্নীকরাজপুত্র, ভূরিশ্রবার পিতা।

সৌতি – প্রকৃত নাম উগ্রশ্রবা, জাতিতে সূত; ইনি নৈমিষারণ্যের ঋষিদের মহাভারত শুনিয়েছিলেন।

সৌবীর দেশ – রাজপুতানার দক্ষিণ; মতান্তরে সিন্ধু প্রদেশে

হস্তিনাপুর – দিল্লির পূর্বে, মিরাটের নিকট, গঙ্গার দক্ষিণ তীরে।

হিড়িম্বা – ভীমের রাক্ষসী পত্নী, ঘটোৎকচ-জননী।

লেখক পরিচিতি

বিশিষ্ট বাঙালি সাহিত্যিক, অনুবাদক, রসায়নবিদ ও অভিধান প্রণেতা রাজশেখর বসু পরশুরাম ছদ্মনামে বাংলা ছোটগল্পে হাস্যরস পরিবেশনের জন্য স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।

১৮৮০সালে ১৬ই মার্চ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার বামুনপাড়া গ্রামে মাতুলালয়ে রাজশেখরের 
জন্ম হয়। পিতা চন্দ্রশেখর বসু দার্শনিক পন্ডিত ছিলেন। মায়ের নাম লক্ষ্মীমণি দেবী। তাঁর  
পৈতৃক নিবাস ছিল নদীয়া জেলার বীরনগর (উলা) গ্রামে। দ্বারভাঙ্গায় রাজশেখরের শৈশব জীবন কেটেছিল।

তিনি ১৮৯৫ সালে দ্বারভাঙ্গা রাজস্কুল থেকে এন্ট্রাস, ১৮৯৭ সালে পাটনা কলেজ থেকে এফ. এ পাশ করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৮৯৯ সালে রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বি.এ পাশ করেন। ১৯০০ সালে রসায়নে এম.এ পরীক্ষা দেন এবং প্রথম হন।

১৯০২ সালে কলকাতা রিপন কলেজ থেকে বি. এল পাশ করে মাত্র আইন  
ব্যবসা শুরু করেও, বিজ্ঞান চর্চায় অধিক আগ্রহ থাকায় তিনি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের সঙ্গে  
সাক্ষাৎ করেন। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠিত “বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস কোম্পানি’তে যোগদান করেন অল্পদিনের মধ্যেই দক্ষতা ও সৃজনশীলতার গুণে তিনি এই কোম্পানির পরিচালক পদে উন্নীত হন। কোম্পানিতে গবেষণার মাধ্যমে তিনি কেমিস্ট্রি ও ফিজিওলোজির মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে এক নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন। অবসর গ্রহণ করার পরেও জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি উপদেষ্টা এবং পরিচালক পদে বেঙ্গল কেমিক্যালের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯০৬ সালে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হলে তিন তাতে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন।

বাংলা সাহিত্যে ব্যঙ্গ কৌতুকে পরশুরাম উজ্জ্বল শিল্পী।পরশুরাম ছদ্মনামে ১৯২২ সালে একটি মাসিক পত্রিকায় “শ্রীশ্রীসিদ্ধেশ্বরী লিমিটেড’ নামে ব্যঙ্গ রচনাটি প্রকাশিত হয়। তিনি অনেকগুলো রসরচনামূলক গল্পগ্রন্থ রচনা প্রকাশ করেন। তাঁর প্রথম বই “গড্ডলিকা’। “শনিবারের চিঠি’ পত্রিকাতেও তিনি নিয়মিত লিখেছেন। গল্পরচনা ছাড়াও স্বনামে প্রকাশিত হয় কালিদাসের মেঘদূত, বাল্মিকী রামায়ণ (সারানুবাদ), কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসকৃত মহাভারত (সারানুবাদ), শ্রীমদভগবদগীতা ইত্যাদি ধ্রুপদী ভারতীয় সাহিত্যের অনুবাদগ্রন্থগুলিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জুন করেন। ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত হয় রাজশেখর বসুর বাংলা অভিধান গ্রন্থ “চলন্তিকা’। এগুলি ছাড়াও লঘুগুরু, বিচিন্তা,  
ভারতের খনিজ, কুটির শিল্প প্রভৃতি প্রবন্ধগ্রন্থগুলি রচনা করেছিলেন।

পরশুরামের গল্প গ্রন্থগুলি হল, গড্ডলিকা, কজ্জলী, হনুমানের স্বপ্ন, গল্পকল্প, ধুস্তরী মায়া, কৃষ্ণকলি, নীলতারা, আনন্দী বাঈ, এবং চমৎকুমারী।

সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৪০ সালে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক এবং ১৯৫৫ সালে কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্পগ্রন্থের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে রবীন্দ্র পুরস্কার ভূষিত করে। ১৯৫৮ সালে আনন্দীবাঈ গল্প বইটির জন্য ভারতের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৩৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত বানান- সংস্কার সমিতি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিভাষা সংসদের সভাপতিত্ব করেন রাজশেখর বসু ১৯৪৮ সালে। ১৯৫৭-৫৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপুর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত হন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে সম্মানসূচক  
ডক্টরেট উপাধি প্রদান করেন। ১৯৫৬ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণ উপাধি প্রদান করে। ১৯৫৫ সালে সরোজিনী পদে ভূষিত হন।

১৯৫৯ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে পড়লে ও তিনি লেখালেখি চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯৬০ সালে ২৭শে এপ্রিল দ্বিতীয় বার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *