১৯. কণা আজ অবেলায় গোসল করেছে

কণা আজ অবেলায় গোসল করেছে। দুপুরে খুব খিদে লেগেছিল। বাজার হয়নি বলে রান্না হয়নি। চা বানিয়ে চা খেল। খিদে নষ্ট করার জন্যে অতিরিক্ত চিনি দেয়া চা খুব ভাল। এক কাপ চা খেলেই খিদে নষ্ট হয়ে যায়। সে পুরো এক গ্লাস খেয়ে ফেলল। এতে তার খিদে নষ্ট হয়ে গেলো ঠিকই কিন্তু গা গুলাতে শুরু করল। গা গুলানোর এই রোগ তার নতুন হয়েছে। প্রায়ই গা কেমন কেমন করে। হঠাৎ হঠাৎ কোন কোন গন্ধ তীব্র হয়ে নাকে বাঁধে। সমস্ত শরীর ঝড়-ঝা করতে থাকে। এমনকি ঘরবাড়ি পর্যন্ত দুলতে শুরু করে। এইসব লক্ষণ ভাল লক্ষণ না। তাদের জন্যে তো নয়ই। মিজান নতুন কোন চাকরি জোগার করতে পারেনি। প্রাণপণে খুঁজছে। পাচ্ছে না। তবে পেয়ে যাবে। দুমাসের বেশি। চাকরি ছাড়া অবস্থায় সে কখনো ছিল না। দুমাস কোনমতে কাটানো নিয়ে কথা।

সময় খারাপ। খারাপ সময়েই পৃথিবীতে শিশুরা আসে। তাদের শিশুও খুব একটা খারাপ সময় বেছে নিয়েছে। তাদের এখন দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শিশুটার ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। মিজানের সঙ্গে খোলাখুলি কথা হওয়া প্রয়োজন। মিজানকে পাওয়াই যাচ্ছে না। অনেক রাত করে এত ক্লান্ত হয়ে ফিরে যে, কিছু বলতে ইচ্ছা করে না। বেশিরভাগ সময় না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তাকে ঝামেলায় ফেলতে মায়া লাগে।

এমিতেই ঝামেলার শেষ নেই–তিন মাসের বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে। এই সমস্যা কণা নিজেই সামাল দিয়েছে। কানের দুলজোড়া বিক্রি করেছে। আট আনা সোনার দুল। খাদের জন্যে তিন আনা কেটেছে। টাকা। যা এসেছে তাতে টারে টারে বাড়ি ভাড়া হয়ে অল্প কিছু বেঁচেছে। সেই টাকায় কণা তিন প্যাকেট ডানহিল সিগারেট কিনে এনে হরলিক্সের কৌটায় মুখ বন্ধ করে রেখেছে। সিগারেট ড্যাম্প হয়ে গেলে খেয়ে কোন মজা নেই। মিজান মাঝে-মধ্যে হঠাৎ জেগে উঠে বলে–ঘরে কোন সিগারেট আছে?

ঘরে সিগারেট থাকবে কোথায়? ঘরতো আর দোকান না।

তখন মিজান বলে–একটু খুঁজে-টুজে দেখ তো টুকরা-টাকরা কিছু পাওয়া কি-না।

টুকরা পাওয়া গেলেও তাতে লাভ হয় না। মিজান সিগারেট এমনভাবে খায় যে ফিল্টার পর্যন্ত পুড়ে যায়। এখন সিগারেট চাইলে সে হরলিক্সের কোটা খুলে দিতে পারবে। সিগারেট চাচ্ছে না। বাড়িতে ফিরে মিজান যা করে তা হচ্ছে–ভোস ভোস করে ঘুমায়। তাঁর শরীরও খারাপ করেছে। পায়ে পানি এসেছে। পা ফুলে থাকে। আঙ্গুল দিয়ে চাপলে ফোলা ডেবে যায়। গৰ্ভবতী মেয়েদের পায়ে পানি আসে। সেই হিসেবে তার পায়ে পানি আসার কথা। মিজানের পায়ে কেন আসবে? ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা করানো দরকার। তা সে করবে না। নিজের চিকিৎসা নিজেই করবে। অসুধের দোকানে যারা কাজ করে তারা কিছুদিনের মধ্যেই ডাক্তার বনে যায়। নিজেই নিজের এবং আত্মীয়স্বজনের চিকিৎসা করে। কিছু বললে চোখ সরু করে বলে, ডাক্তার কি আমার থেকে বেশি জানে?

কণা তার বর্তমান শারীরিক সমস্যার কথা বলার চেষ্টা করেছে। মিজান শুনেও শুনেনি। যেমন কণা বলল, প্রতিদিন সকালে আমার বমি বমি হয়–কি হয়েছে বল দেখি? আমার মনে হয় ভিটামিনের অভাব।

মিজান উত্তর দেয়নি। হাই তুলেছে।

আমাকে একটা ভিটামিন এনে দাও না।

আচ্ছা দিব।

অন্য কিছু না তো?

মিজান আবারো হাই তুলে বিছানায় শুতে চলে গেছে। এমনও হতে পারে যে, ব্যাপার কি তা সে ভালই জানে। জেনেও চোখ বন্ধ করে আছে। নিজের সমস্যা নিয়ে কণা নিজেই ভাবে। এই সময়ে বাচ্চ-কাচ্চা সংসারে আনাটা কি ঠিক হবে? একবার মনে হয়–মোটেই ঠিক হবে না। খুব বড় ভূল হবে। বাচ্চার খাবার জুটানো যাবে না। অসুখবিসুখ হলে চিকিৎসা করতে পারবে না। এরচে এই ভাল। ঝাড়া হাত-পা। এই যেমন–আজ দুপুরে খাওয়া নেই, সে বড় গ্লাসে করে এক কাপ চা খেয়ে দিন পার করে দিল। ছোঢ় বাচ্চা তো তা করবে না।

কাজেই সবচে ভাল বুদ্ধি হচ্ছে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলা। বাচ্চা নষ্ট করা আজকাল কোন ব্যাপারই না। সরকারি ফ্যামিলি, প্ল্যানিং হাসপাতালে গিয়ে বললেই হয়। টাকপিয়সা কিছু লাগে না। ডাক্তাররা হাসিমুখে এমআর করেন। যে হাসপাতালে যত বেশি বাচ্চা নষ্ট করা হয়। সেই হাসপাতালের তত নাম। দেশে ফ্যামিলি প্ল্যানিং হচ্ছে। জনসংখ্যা কমছে।

আগেও একটি বাচ্চা কণা নষ্ট করেছে। নষ্ট না করে তার উপায় ছিল না। সেবার ছিল ভয়াবহ অবস্থা। চুরির দায়ে পুলিশ মিজানকে ধরে নিয়ে গেছে। মেরে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের করে দিয়েছে। মামলা কোটে ওঠেনি। গ্ৰীন ফার্মেসির মালিক পুলিশকে শুধু বলে দিয়েছিলেন–শক্ত মারধোর যেন করে, যাতে জন্মের শিক্ষা হয়ে যায়। যেখানে না বলতেই পুলিশ মারে সেখানে বলে দিলে কি অবস্থা তা তো বোঝাই যায়। মার খেয়ে মিজানের এমন অবস্থা হল, লোকজন চিনতে পারে না। কণাকে পর্যন্ত চিনতে পারে না। কণা তাকে হাজত থেকে আনতে গিয়েছে–সে বলল, কেমন আছেন, ভাল? বাসার সবাই ভাল?

কথা শুনে কণার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাবার জোগাড় হল। লোকটা তাকে আপনে আজ্ঞে করছে কেন? বাসার সবাই ভাল?–এই প্রশ্ন করছে কেন? বাসার সবাই মানে কি? বাসার সবাই বলতে তো তারা দুটিমাত্র প্রাণী। মিজান সেবার খুব ভূগেছে। দীর্ঘদিন কেটেছে বিছানায়। নিজে নিজে হেঁটে বাথরুমে যেতে পারে না। ধরে ধরে নিয়ে যেতে হয়। এই অবস্থায় বাচ্চ-কাচ্চার কথা চিন্তাই করা যায় না। কাজেই এক সকালবেলা কণা ফ্যামিলি প্ল্যানিং ক্লিনিকে উপস্থিত হল। ডাক্তার খুব সন্দেহজনক ভঙ্গিতে বলল, বাচ্চা নষ্ট করে ফেলতে চান?

হুঁ।

কেন?

বাচ্চা পালতে পারব না, এই জন্যে।

আপনি একা বললে তো হবে না। আপনার স্বামীকেও বলতে হবে। দুজনে মিলে ফরম ফিল-আপ করতে হবে। বিয়ের কাবিননামা আনতে হবে। আপনার স্বামী কোথায়?

সে বিছানায়। তার শরীর খারাপ।

আসতে পারবে না?

এখন পারবে না। কিছুদিন পরে পারবে।

তাহলে আপনি বরং কিছুদিন পরে আপনার স্বামীকে নিয়ে আসুন।

জ্বি আচ্ছা।

কণা চলেই আসছিল, কি মনে করে ডাক্তার তাকে বসতে বললেন। তার এক ঘণ্টার মধ্যে এমআর করে দিলেন।

অপারেশন টেবিলে কণা হাউমাউ করে কিছুক্ষণ কেঁদে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে বাসায় ফিরল। যে বাচ্চাটি পৃথিবীতে আসতে গিয়েও আসতে পারেনি, তার কথা ভেবে এখনো সে মাঝে মাঝে কাব্দে। বিশেষ করে গভীর রাতে ঘুম ভেঙে গেলে মনে হয়–বাচ্চাটা বেঁচে থাকলে তার এখন তিন বছর বয়স হত। দুজনের মাঝখানে হাত-পা ছড়িয়ে আরাম করে ঘুমাতো। ঘুমের মধ্যে ফিরিশতারা এসে বলতো–এই, তোর মাকে রাক্ষস নিয়ে গেছে। সে তখন হাসত। কারণ সে এক হাতে তার মায়ের চুল ধরে আছে। সে জানে, ফিরিশতারা মিথ্যা কথা বলছে। ঘুমের মধ্যে বাচ্চারা যখন হাসে তখন তাদের কি সুন্দর যে লাগে! আর যখন ঘুমের মধ্যে কাঁদে তখন কি কষ্ট লাগে! তবে সেই কষ্টেরও আনন্দ আছে। কণার ভাগ্যে সেই আনন্দ এবং আনন্দমাখা কষ্ট লেখা নেই।

এবারের বাচ্চাটাকেও কি নষ্ট করে ফেলতে হবে? মিজান বললে তো করতেই হবে। অবশ্যি বাচ্চা বাঁচিয়ে রাখার পক্ষে অনেক যুক্তি আছে—রিজিকের মালিক আল্লাহ। তিনি এই বাচ্চার উছিলায় তাদের সংসারে আয়-উন্নতি দেবেন। আল্লাহ পারেন না এমন জিনিস তো নেই। মুসকিল একটাই—অভাবী মানুষ খুব আল্লাহভক্ত হয় ঠিকই, কিন্তু আল্লাহ তাদের সমস্যা সমাধান করে দেবেন এটা কেন জানি বিশ্বাস করে না।

অবেলায় গোসল করে কণার কেমন জানি লাগছে। বার বার শরীর কেঁপে উঠছে। জ্বর আসছে কি-না কে জানে। সে ভেজা শাড়ি বারান্দায় শুকুতে দেবার জন্যে এসেছে। বারনিদায় এসেই তার রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। তার সবচে ভাল লাগে গাড়ি দেখতে। গাড়ির ভেতর বসে সুখী মানুষরা কি সুন্দর হুসাহাস করে চলে যায়। এরা নিশ্চয়ই কোনদিন বাড়ি ভাড়া নিয়ে চিন্তা করে না। বাজার হবে কি হবে না। এইসব নিয়ে চিন্তা করে না। অভাবে পড়ে এরা পেটের শিশু নষ্ট করে দেয় না।

কণা হঠাৎ লক্ষ্য করল, আতাহার যাচ্ছে। কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে হন হন করে এগুচ্ছে। তার বাসার দিকে সে আসছে, হ্যাঁ, সেই সম্ভাবনা একেবারে যে নেই তা না। রাস্তা পার হবার জন্যে এদিক-ওদিক দেখছে। সোজাসুজ্বি হাঁটতে থাকলে বোঝা যেত কণার কাছে আসবে না। রাস্তা পার হবার চেষ্টা করছে বলেই মনে হয় এদিকে আসবে। কণা আগ্রহ ও আনন্দ নিয়ে অপেক্ষা করছে। এই মানুষটাকে তার ভাল লেগেছে। এর মনে কোন ঝামেলা নেই। বেশিরভাগ পুরুষ মানুষের মনেই নানান ঝামেলা থাকে। তাদের বাড়িওয়ালার বয়স ষাটের মত। চুল-দাড়ি সব পেকে সাদা ধবধব করছে। এই লোকের মনেও কত ঝামেলা। বাড়িভাড়া নিয়ে দরবার করতে এসেছে, এমন সময় এসেছে। যখন মিজান নেই। চোখের দৃষ্টি কি? যেন চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। এতক্ষণ থাকল, এত কথা বলল–একবারের জন্যেও বুড়ো তার চোখ কণার বুকের উপর থেকে সরালো না। কণার একবার মনে হয়েছিল–আহা বেচারা! যা দেখতে চাচ্ছে–দেখিয়ে দি। শখ মিটে যাক। দুদিন পর তো মরেই যাবে।

আতাহার বারান্দায় আসতেই কণা বলল, আতাহার ভাই, আপনার জন্যে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি।

বুঝলে কি করে আমি আসছি?

বারান্দায় শাড়ি শুকানোর জন্যে আসছি, তারপর দেখি আপনি। রাস্ত পার হতে এত সময় নিলেন। আমি দেখি, দাঁড়িয়ে আছেন তো দাঁড়িয়েই আছেন।

রাস্ত পার হতে আমার খুব ভয় লাগে। রাস্তাগুলিকে আমার নদীর মত মনে হয়। আমার নদী বরাবর যেতে ভাল লাগে। কিন্তু নদী পার হতে ইচ্ছা করে না।

আপনি অদ্ভুত অদ্ভূত কথা বলেন।

সবার সঙ্গে বলি না।

কাদের সঙ্গে বলেন?

যারা অদ্ভুত কথাগুলির অর্থ বুঝতে পারে না তাদের সঙ্গে বলি। যারা বুঝতে পারে কখনো তাদের সঙ্গে বলি না।

কথাগুলির অর্থ কি?

আতাহার হাসল। কণা বলল, অর্থ আমাকে বলবেন না?

না।

আসেন, ঘরে আসেন।

তোমার স্বামী কোথায়?

চাকরি খুঁজছে।

ফিরবে কখন?

অনেক রাতে ফিরে।

তোমার শরীর খারাপ নাকি কণা? চোখ-মুখ শুকনা লাগছে।

কণা হাসল। কেন হাসল সে নিজেও জানে না। আতাহার ঘরে ঢুকে পরিচিত ভঙ্গিতে চেয়ারে বসেছে। কণা বলল, চা খাকেন?

আতাহার বলল, খুব দ্রুত বানালে খাব। আমি এখানে পাঁচ মিনিটের বেশি বসব না। একটা কাজে এসেছি, কাজটা সেরে চলে যাব।

কণা বিস্মিত হয়ে বলল, আমার সঙ্গে আবার কি কাজ?

সাজ্জাদ কোথায় আছে তুমি কি জান?

কণা আরো অবাক হয়ে বলল, উনি কোথায় আছেন। আমি কি করে জানব?

ও তো তোমার কাছে প্রায়ই আসে।

দুইবার আসছেন।

শেষবার করে এসেছে বলে তো?

দিন-তারিখ তো মনে নাই, ধরেন। দশ দিন।

তারপর আর আসেনি?

জ্বি না।

তোমাকে কিছু বলেছে?

না, কি বলব?

এসে কি করল?

চা খেয়েছেন, তারপর চলে গেছেন। বেশিক্ষণ বসেন নাই।

ও আচ্ছা।

উনার কি হয়েছে?

আতাহার সিগারেট ধরাতে ধরাতে বলল, মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে আমার ধারণা। ও তোমাকে বিয়ে করতে চায়।

কণা তাকিয়ে আছে। তার চোখ-মুখ দেখে মনে হচ্ছে না। সে খুব বিস্মিত হয়েছে। দুঃখ-কষ্টে বড় হওয়া মেয়েরা জীবনে অনেক বিচিত্র এবং ভয়ংকর ঘটনার মুখোমুখি হয় এত অল্পতে তারা বিস্মিত হয় না।

এই জাতীয় কথা সে তোমাকে বলেনি?

জ্বি না।

যাই হোক, আমাকে বলেছে। আমি তোমাকে আগেভাগে জানিয়ে রাখলাম।

উনি আপনার সঙ্গে মজাক করেছে।

ও মজা করার ছেলে না। সে যা করে খুব ভেবে-চিন্তে করে।

কণা চা বানাতে বসেছে। মাঝে মাঝে কৌতূহলী চোখে আতাহারকে দেখছে। হঠাৎ সে মাথা নিচু করে হাসল। আতাহারের চোখে এই দৃশ্য র্গাথা হয়ে গেল। তার কাছে মনে হল–মানুষের সৌন্দর্য আশেপাশের সবকিছু নিয়ে। মানুষ কখনো একা একা সুন্দর হয় না।

কণা!

জ্বি।

আমার ধারণা তুমি খুব বুদ্ধিমতী মেয়ে। এই সমস্যা তুমি নিজেই সামাল দিতে পারবে। তোমার স্বামীকে কিছু বলার দরকার নেই।

জ্বি আচ্ছা। ভাইজান আপনারে এমুন পেরেশান লাগতেছে কেন?

সারাদিন হাঁটাহাঁটি করি এই জন্যে পেরেশান লাগে।

আতাহার উঠে দাঁড়াল। সে কোথায় যাবে বুঝতে পারছে না। সাজ্জাদের বাসায় যাওয়া দরকার। হোসেন সাহেব বার বার খবর পাঠাচ্ছেন। যেতে ইচ্ছা করছে না। সেখানে যাওয়া মানেই এক গাদা উপদেশ শোনা। সান্ত্ৰনার বাণী শোনা। অন্যকে সান্তনা দিতে মানুষ এত ভালবাসে কেন কে জানে?

কণা উঠি?

ভাইজান আরেকটু বসেন। এই এক মিনিট।

কেন?

আপনার সাথে কথা বলতে বড় ভাল লাগে ভাইজান।

আতাহার বসল। রূপবতী নারীদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে নেই। প্রত্যাখান করলে অভিশাপ লাগে। রূপের অভিশাপ। রূপ তখন ধরা দেয় না। একজন কবির উপর রূপের অভিশাপ পড়া ভয়াবহ ব্যাপার।

আরেক কাপ চা দেই ভাইজান?

আতাহার অন্যমনস্পক গলায় বলল, দাও। সে মনে মনে ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, কণা তুমি এত সুন্দর কেন?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *