১৯১৭। বয়স ১৮ বছর
বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে আইএ পাস করেন জীবনানন্দ, প্রথম বিভাগে। ইন্টারমিডিয়েটে তাঁর বিষয় ছিল ইংরেজি, বাংলা, কেমিস্ট্রি।
রবীন্দ্রনাথের বয়স ৫৬। আমেরিকা থেকে জাপান প্রত্যাবর্তন করেন কবি। এর পর পিয়ার্সনকে জাপানে রেখে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন রবীন্দ্রনাথ।
‘সবুজ পত্রের জন্যে প্রথম চলতি ভাষায় গল্প লিখলেন—’পয়লা নম্বর’। গো-কোরবানীকে উপলক্ষ করে বিহারে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা বাধলে কবি ‘ছোটো ও বড়ো’ নামক প্রবন্ধটি লিখলেন। আমেরিকার লিন্কলন শহর থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া একটি ট্রেডল মেশিন দিয়ে শান্তিনিকেতনে প্রেস স্থাপন করলেন রবীন্দ্রনাথ।
শিয়ারসোল স্কুলে প্রি-টেস্ট দিয়ে নজরুল ৪৯ নম্বর বাঙালি পল্টনে যোগদান করেন। শৈলজানন্দও বাঙালি পল্টনে যোগ দিতে যান। কিন্তু প্রভাবশালী মাতামহের তদবিরে শেষ পর্যন্ত শৈলজানন্দকে ফিরতে হয়। নজরুল পল্টনে যোগ দিয়ে প্রথমে লাহোরে এবং পরে নৌশেরাতে যান। তিন মাস ট্রেনিং-এর পরে করাচি সেনানিবাসে গেলেন। কর্মদক্ষতার জন্যে ব্যাটালিয়ন কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার পদে দ্রুত উন্নীত হন নজরুল। করাচিতে থাকার সময়েই সাহিত্যচর্চায় গভীরভাবে আকৃষ্ট হন তিনি। সেনানিবাসে জনৈক পাঞ্জাবি মৌলভীর সহায়তায় ফার্সি কবিদের বিখ্যাত গ্রন্থগুলো পাঠ করেন নজরুল।
ভারত সচিব মি. মন্টেগু ভারত সফরে এলেন। বঙ্গদেশের গভর্নর লর্ড কারমাইকেল পদত্যাগ করলে উক্ত পদে লর্ড রোনাল্ডশে নিযুক্তি পান।
লেনিনের নেতৃত্বে রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লব সংঘটিত হয়। এই বিপ্লবে লেনিনের জয় হয়। বিপ্লবের ফলে সকল সম্পত্তি রাষ্ট্রের হল।
মহাসমরের তৃতীয় বছর চলছে। প্রায় আড়াই বছরের যুদ্ধে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার রুশ সৈন্য নিহত হল। রাশিয়া যুদ্ধ থেকে বিরত হল। আমেরিকা, জাপান, চীন বিশ্বযুদ্ধে যোগ দিল তুরস্কের সৈন্যদের হাতে ইংরেজ জেনারেলরা পর্যুদস্ত হতে লাগল নানা সমরক্ষেত্রে।
এ বছর জন্মেছেন কামাক্ষীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, কিরণশঙ্কর সেনগুপ্ত, হরপ্রসাদ মিত্র, আহসান হাবীব, শওকত ওসমান, বিনয় ঘোষ।
মারা গেলেনে অক্ষয়চন্দ্র সরকার।
এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান দুজন—কার্ল গিবল্লেরাগ (১৮৫৭–১৯১৯) এবং হেনরিক পন্টাপপিদান (১৮৫৭–১৯৪৩)। ডেনমার্কের অধিবাসী কার্ল মূলত কবি। হেনরিকের লেখালেখিও ডেনমার্ককে নিয়ে।
কার্ল সম্পর্কে নোবেল কমিটি লেখেন—
‘For his varied and rich poetry which is inspired by lofty ideas.’
আর হেনরিককে পুরস্কার দেওয়ার পক্ষে নোবেল কমিটির মন্তব্য ছিল এ রকম—
‘For his authentic description of present-day life in Denmark.’ কার্ল-এর বিখ্যাত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—’অ্যান আইডিয়ালিস্ট’, ‘এ ক্লাসিক্যাল মাউথ’, ‘ওয়ান্ডার ইয়ার’, ‘দ্য বুক অব মাই লাভ’।
হেনরিকের প্রখ্যাত বইগুলো হল—’দ্য প্রমিস্ড ল্যান্ড’, ‘চিলড্রেন অব দ্য সয়েল’, ‘লাকি পেটার’, ‘কিংডম অব দ্য ডেড’।
প্রকাশিত গ্রন্থ : রবীন্দ্রনাথের ‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম’ প্রকাশ পেল। ইংরেজিতে প্রকাশিত হল ‘সাইকল অব স্প্রিং’, ‘মাই রেমিনিসেন্সেস’, ‘স্যাক্রিফাইস অ্যান্ড আদার প্লেজ’, ‘পার্সন্যালিটি’, ‘ন্যাশনালিজম’। বের হল শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শ্রীকান্ত: ১ম পাঠ’, ‘দেবদাস’, ‘চরিত্রহীন’, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর ‘শব্দকথা’, দীনেন্দ্রকুমার রায়ের ‘পল্লীকথা’, চারু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পরগাছা’, বীরবলের ‘হালখাতা’, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ‘বেনের মেয়ে’। এলিয়টের ‘প্রুফ্রক’ এবং ভ্যালেরির ‘La Jeune Parque’ প্রকাশিত হল।