১৯১৬। বয়স ১৭ বছর
বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে আইএ-তে ভর্তি হন জীবনানন্দ। অমিতানন্দ দাশের সাক্ষ্য থেকে জানা যায়—১৯১৬ থেকে জীবনানন্দ ইংরেজিতে কবিতা লেখা শুরু করেন।
রবীন্দ্রনাথের বয়স ৫৫। উত্তরবঙ্গের জমিদারি অঞ্চলে কলেরার প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে কবিব স্বয়ং সেখানে উপস্থিত হন এবং প্রতিকারে নিমগ্ন হন।
প্রেসিডেন্সি কলেজে সুভাষ বসুর নেতৃত্বে ছাত্ররা অধ্যাপক ওটেনকে প্রহার করলেন। এতে শাসকগোষ্ঠী প্রকট নির্যাতন শুরু করলে রবীন্দ্রনাথ এর প্রতিবাদ করেন। রাসবিহারী বসু রবীন্দ্রনাথের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে কলকাতা থেকে জাপান পলায়ন করেন।
চতুর্থ বারের মতো রবীন্দ্রনাথ বিদেশ যাত্রা করেন, যান জাপান; সঙ্গে এন্ড্রুজ, পিয়ার্সন ও মুকুল দে। জাপানে চিত্রশিল্পী তাইক্কান-এর আতিথ্য গ্রহণ করেন কবি। তারপর জাপান থেকে আমেরিকা যান; আমেরিকার নানা স্থানে বক্তৃতা দেন।
লক্ষ্ণৌতে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের যৌথ অধিবেশন বসে। স্বাক্ষরিত হয় লক্ষ্ণৌ চুক্তি। কংগ্রেস মুসলমানদের স্বতন্ত্র নির্বাচন মেনে নেয়। তিলক ‘লোকমান্য’ উপাধি পেলেন; জগদীশচন্দ্র বসু পেলেন ‘স্যার’ উপাধি। মুম্বাই-এ প্রথম ভারতীয় নারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত। বেসরকারি প্রচেষ্টায় প্রথম মেডিকেল কলেজ স্থাপিত, নাম-’কারমাইকেল মেডিকেল কলেজ’।
হিস্টোরিক্যাল সোসাইটির সভায় অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় প্রমাণ করলেন—অন্ধকূপ হত্যার কাহিনি মিথ্যে।
জার্মান সৈন্যরা ফ্রান্সের ভার্দুন নগরের ওপর প্রবল গোলাবর্ষণ করে। উত্তরসাগরের জলযুদ্ধে বহু ইংরেজ-জার্মান রণতরী জলমগ্ন হয়। জার্মান সাবমেরিনের টর্পেডোর আঘাতে ইংল্যান্ডের সমরসচিব লর্ড কিনার সঙ্গীরাসহ নিহত হন। তুরস্ক রুমানিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ভারতের রাজ-প্রতিনিধি লর্ড হার্ডিঞ্জ পদত্যাগ করেন। ভাইসরয় হয়ে আসেন লর্ড চেমসফোর্ড।
এ বছর জন্মগ্রহণ করেন সমর সেন, কাননবালা দেবী, কথাশিল্পী নরেন্দ্রনাথ মিত্র। পরলোক গমন করেন হেনরি জেমস্, ১৯০৪ সালে সাহিত্যে নোবেল জয়ী যোশে এচেগারে, ১৯০৫ সালে নোবেল জয়ী এইচ. সিয়ন কিয়েউইৎস।
এ বছর সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পান ডি. হেইডেনস্ট্যাম (১৮৫৯–১৯৪০)। উপন্যাসকার। সুইডেনের নাগরিক।
তাঁর সম্পর্কে নোবেল কমিটির মন্তব্য এ রকম-
‘In recognition of his significance of the leading representative of a new era in Sweedish Literature.’
হেইডেনস্ট্যাম-এর বিখ্যাত গ্রন্থগুলো হল— ‘The Pilgrimage of St. Bridget’, ‘The Tree of the folkungs’, ‘New Poem’.
প্রকাশিত গ্রন্থ : রবীন্দ্রনাথের কাব্যগ্রন্থ (৮-১০), ‘শান্তিনিকেতন’ (১৫-১৭), ‘ফাল্গুনী’, ‘ঘরে বাইরে’, ‘সঞ্চয়’, ‘পরিচয়’, ‘চতুরঙ্গ’, ‘গল্পসপ্তক’, ‘বলাকা’ প্রকাশিত হয়। ইংরেজিতে প্রকাশ পেল ‘ফ্রুট গ্যাদারিং’, ‘হাংরি স্টোন অ্যান্ড আদার স্টোরিজ’, ‘অ্যাস্ট্রে বার্ডস’।
বের হল শরৎচন্দ্রের ‘পল্লীসমাজ’, সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘অভ্র আবীর’, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর কাঞ্চনমালা’। প্রকাশিত হল জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের ‘বাঙ্গালা ভাষার অভিধান’, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ‘হাজার বছরের পুরান বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’, প্রমথ চৌধুরীর ‘চার ইয়ারি কথা’। প্রকাশ পায় রমাপ্রসাদ চন্দের ‘ইন্ডো-এরিয়ান রেসেজ’, জেমস্ জয়েসের ‘পোর্ট্রেট অব দি আর্টিস্ট অ্যাজ এ ইয়ং ম্যান’ এবং রোমা রোলাঁর ‘অ্যাবাভ দি ব্যাটল ফিল্ড’।