১৮. শুক্লযজুর্বেদ – অষ্টাদশ অধ্যায়

অষ্টাদশ অধ্যায়

মন্ত্রঃ– বাজশ্চ মে প্রসবশ্চ মে প্রতিশ্চ মে প্রসিতিশ্চ মে ধীতশ্চ মে ক্রতুশ্চ মে স্বরশ্চ মে, শ্লোক মে শ্ৰবশ্চ মে শ্রুতিশ্চ মে জ্যোতিশ্চ মে স্বশ্চ মে যজ্ঞেন কল্পস্তা৷৷৷৷ প্রাণশ্চ মেহপানশ্চ মে ব্যান মেহসুশ্চ মে চিত্তং চ ম আধীতং চ মে বা চ মে মনশ্চমে চক্ষুশ্চ মে শ্রোত্রং চ মে দক্ষশ্চ মে বলং চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্।।২। ওজশ্চ মে সহ ম আত্মা চ মে তনুশ্চ মে শৰ্ম চ মে বর্ম চ মেহজানি চ মেহস্থীনি চ মে পুরূংষি চ মে শরীরাণি চ মে আয়শ্চ মে জরা চ মে যজ্ঞেন কল্পতাম।৷৩৷ জ্যৈষ্ঠাং চ মে আধিপত্যং চ মে মশ্চ ভামশ্চ মেহমশ্চ মেহত্তশ্চ মে জেমা চ মে মহিমা চ মে বরিমা চ মে প্রথিমা চ মে বর্ষিমা চ মে দ্রাঘিমা চ মে বৃদ্ধং চ মে বৃদ্ধিশ্চ মে যজ্ঞেন ক্লস্তাম্ ৷৪৷ সত্যং চ মে শ্রদ্ধা চ মে জগচ্চ মে ধনং চ মে বিশ্বং চ মে মশ্চ মে ক্রীড়া চ মে মোশ্চ মে জাতং চ মে জানিষ্যমাণং চ মে সুক্তং চ মে সুকৃতং চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্৷৷৷৷ ঋতং চ মেহনমিত্রং চ মে হযক্ষ্মং চ মে ইনাময়চ্চ মে জীবতুশ্চ মে দীর্ঘায়ুত্বং চ মেহনমিত্রংহভয়ং চ মে সুখং চ মে শয়নং চ মে সূষাশ্চ মে সুদিনং চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তা৷৷৬৷৷ যন্তা চ মে ধর্তা চ মে ক্ষেমশ্চ মে ধৃতিশ্চ মে বিশ্বং চ মে মহ মে সংবিচ্চ মে জ্ঞাত্রং চ মে সূশ্চ মে প্রসূশ্চ মে সীরং চ মে লয়শ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্।।৭৷ শং চ মে ময়শ্চ মে প্রিয়ং চ মেইনুকামশ্চ মে কামশ্চ মে সৌমনস, মে ভগশ্চ মে দ্রবিণং চ মে ভদ্রং চ মে শ্রেয়শ্চ মে বসীয়শ্চ মে যশশ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্।।৮। উক্‌ চ মে সূতা চ মে পয়শ্চ মে রসশ্চ মে ঘৃতং চ মে মধু চ মে সন্ধিশ্চ মে সপীতিশ্চ মে কৃষিশ্চ মে বৃষ্টিশ্চ মে জৈত্রং চ ম ঔদ্ভিদ্যং চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্৷৷৷৷ রয়িশ্চ মে রায়শ্চ মে পুষ্টং চ মে পুষ্টিশ্চ মে বিভু চ মে প্রভু চ মে পূর্ণং চ মে পূর্ণতরং চ মে কুবং চ মেহক্ষিতং চ মেহন্নং চ মেইক্ষুচ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তা৷১০। বিত্তং চ মে বৈদ্যং চ মে ভৃতং চ মে ভবিষ্যচ্চ মে সুগং চ মে সুপথ্যং চ মে ঋদ্ধং চ ম ঋদ্ধশ্চ মে ক্লপ্তং চ মে ক্লপ্তিশ্চ মে মতিশ্চ মে সুমতিশ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্ ৷৷১১৷ ব্রীহয়শ্চমে যবাশ্চ মে মাষাশ্চ মে তিলাশ্চ মে মুদগাশ্চ মে খাশ্চ মে প্রিয়ঙ্গবশ্চ মেহপবশ্চ মে শ্যামাকাশ্চ মে নীবারাশ্চ মে গোধূমাশ্চ মে মসূরাশ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্।১২৷৷ অশ্মা চ মে মৃত্তিকা চ মে গিরয়শ্চ মে পর্বতাশ্চ মে সিকতাশ্চ মে বনস্পতয়শ্চ মে হিরণ্যং চ মেহযশ্চ মে শ্যামং চ মে লোহং চ মে সীসং চ মে অপু চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্৷১৩। অগ্নিশ্চ ম আপশ্চ মে বীরুধশ্চ ম ওষধয়শ্চ মে কৃষ্টপচ্যাশ্চ মেকৃষ্টপচ্যাশ্চ মে গ্রাম্যাশ্চ মে পশব আরণ্যাশ্চ মে বিত্তং চ মে বিত্তিশ্চ মে ভূতং চ মে ভূতিশ্চ মে যজ্ঞেন কল্প৷৷১৪৷ বসু চ মে বসতিশ্চ মে। কর্ম চ মেশক্তিশ্চ মেহর্থশ্চম এমশ্চ মইত্যা চ মে গতিশ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম৷১৫৷৷ অগ্নিশ্চম ইন্দ্ৰশ্চ মে সোমশ্চম ইন্দ্ৰশ্চ মে সবিতা চম ইন্দ্ৰশ্চ মে সরস্বতী চমইন্দ্ৰশ্চ, মে পূষা চ ম ইন্দ্ৰশ্চ বৃহস্পতিশ্চ ম ইন্দ্ৰশ্চমে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্৷৷১৬৷ মিত্রশ্চ ম। ইন্দ্ৰশ্চ মে বরুণশ্চ মইন্দ্ৰশ্চ মে ধাতা চ মইন্দ্ৰশ্চ মে ত্বষ্টা চম ইন্দ্ৰশ্চ মে মরুতশ্চম ইন্দ্ৰশ্চ মে বিশ্বে চ মে দেবা ইন্দ্ৰশ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্৷৷১৭৷৷ পৃথিবী চ ম ইন্দ্ৰশ্চ মেহন্তরিক্ষং চ ম ইন্দ্ৰশ্চ মে দ্যৌশ্চম ইন্দ্ৰশ্চমে সমাশ্চম ইন্দ্ৰশ্চ মে নক্ষত্রাণি চম ইন্দ্ৰশ্চ মে দিশশ্চম ইন্দ্ৰশ্চমে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্৷৷১৮ অংশুশ্চ মে রশ্মিশ্চ মে হদাভ্যশ্চ মে হধিপতিশ্চম উপাংশুশ্চ মেহন্তর্যামশ্চম ঐন্দ্ৰবায়বশ্চ মে মৈত্রাবরুণ ম আশ্বিনশ্চ মে প্রতিপ্রস্থানশ্চ মে শুক্রশ্চ মে মন্থী চ মে যজ্ঞেন কল্পস্তাম্।১৯ আগ্রয়ণশ্চ মে বৈশ্বদেবশ্চ মে ধ্রুবশ্চ মে বৈশ্বানরশ্চম ঐন্দ্রাগ্নশ্চ মে মহাবৈশ্বদেবশ্চ মে মরুত্বতীয়াশ্চ মে নিক্কেবল্যশ্চ মে সাবিত্রশ্চ মে সারস্বতশ্চ মে পাত্নীবতশ্চ মে হারিযোজনশ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্ ৷৷২০৷ সুচশ্চ মে চমসাশ্চ মে বায়ব্যানি চ মে। দ্রোণকলশশ্চ মে গ্রাবাণশ্চ মেহধিবণে চ মে পূতভৃচ্চ ম আধবনীয়শ্চ মে বেদিশ্য মে বহিস্ট মেহবyথশ্চ স্বগাকার মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্ ৷৷২১৷৷ অগ্নিশ্চ মে ঘশ্চ মেহর্কশ্চ মে সূর্যশ্চ মে প্রাণশ্চ মেহশ্চমেধশ্চ মে পৃথিবী চ মেহদিতিশ্চ মে দিতিশ্চ মে দৌশ্চ মেহজুলয়ঃশবয়ো দিশশ্চমে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্।২২। ব্রতং চম ঋতবশ্য মে তপশ্চ মে সংবৎসরশ্চ মেহহোরাত্রে ঊষ্ঠীবে বৃহদ্রথন্তরে চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্।।২৩৷ একা চ মে তিশ্চ মে তিশ্চ মে পঞ্চ চ মে পঞ্চ চ সপ্ত চ মে সপ্ত চ মে নব চ মে নব চ ম এদাদশ চ মে ত্রয়োদশ চ মে ত্রয়োদশ চ মে পঞ্চদশ চ মে পঞ্চদশ চ মে সপ্তদশ চ মে সপ্তদশ চ মে নবদশ চ মে নবদশ চ ম একবিংশতিশ্চম একবিংশতিশ্চ মে এয়োবিংশতিশ্চ মে ত্রয়োবিংশতিশ্চ মে পঞ্চবিংশতিশ্চ মে পঞ্চবিংশতিশ্চ মে সপ্তবিংশতিশ্চ মে সপ্তবিংশতিশ্চ মে নববিংশতিশ্চ মে নববিংশতিশ্চ ম একত্রিংশচ্চ ম একত্রিংশচ্চ মে ত্রয়স্ত্রিংশচ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্।।২৪৷৷ চতশ্চ মেইষ্টেী চ মে দ্বাদশ চ মে দ্বাদশ চ মে মোড়শ চ মে মোড়শ চ মে বিংশতিশ্চ মে বিংশতিশ্চ মে চতুর্বিংশতিশ্চ মে চতুর্বিংশতিশ্চ মেহষ্টাবিংশতিশ্চ মেহষ্টাবিংশতিশ্চ মে দ্বাত্রিশংশচ্চ মে দ্বাত্রিংশ মে ষট্‌ত্রিংশচ্চ মে ষট্‌ত্রিংশচ্চ মে চত্বারিংশচ্চ মে চত্বারিংশ মে চতুশ্চত্বারিংশচ্চ মে চতুশ্চত্বারিংশষ্ট মেহষ্টাচত্বাবিংশচ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্৷৷২৫। বিশ্চ চ মে এবী চ মে দিত্যবাট্‌ চ মে দিতৌহী চ মে পঞ্চাবিশ্চ মে পঞ্চাবী চ মে ত্রিবৎসশ্চ মে ত্রিবৎসা চ মে তুর্যবান্ চ মে তুযৌহী চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তা৷২৬ পষ্ঠবাট্‌ চ মে পষ্ঠৌহী চম উক্ষা চ মে বশা চ ম ঋষভশ্চ মে বেহচ্চ মেইনাশ্চ মে ধেনুশ্চ মে যজ্ঞেন কল্পন্তাম্।।২৭ বজায় স্বাহা প্রসবায় স্বাহাহপিজায় স্বাহা ক্ৰতবে স্বাহা বসবে স্বাবাহহর্পতয়ে স্বাহাহহ্নে মুগ্ধায় স্বাহা মুগ্ধায় নৈবংশিনায় স্বাহা বিনশিন আন্ত্যায়নায় স্বাহাহস্ত্যায় ভৌবনায় স্বাহা ভুবনস্য পতয়ে স্বাহাহধিপতয়ে স্বাহা প্রজাপতয়ে স্বাহা। ইয়ং তে রার্ণমিত্রায় যন্তাসি যমন উর্জে ত্বা বৃষ্ট্যৈ ত্বা প্রজানং ত্বাধিপত্যায়ে।২৮৷৷ আয়ুৰ্যজ্ঞেন কল্পতাং প্রাণো যজ্ঞেনকল্পতাং চক্ষুর্যজ্ঞেন কল্পতাং শ্রোত্রং যজ্ঞেন কল্পং বাগযজ্ঞেন কল্পতাং মনো যজ্ঞেন কল্পতামাত্মা যজ্ঞেন কল্পতাং ব্রহ্মা যজ্ঞেন কল্পং জ্যোতির্যজ্ঞেন কল্পতাং স্বর্যজ্ঞেন কল্পতাং পৃষ্ঠং যজ্ঞেন কল্পতাং যজ্ঞো যজ্ঞেন কল্পতা। স্তোমশ্চ যজুশ্চ ঋক্ চ সাম বৃহচ্চ রথন্তরংচ। স্বর্দো অগন্মা মূতা অভূম প্রজাপতেঃ প্রজা অভূম বেটু স্বাহা৷৷২৯৷ বাজস্য নু প্রসবে মাতরং মহীমদিতিং নাম বচসা করামহে। যস্যামিদং বিশ্বং ভুবনমাবিবেশ তস্যাং নো দেবঃ সবিতা ধর্ম বিষৎ।।৩০। বিশ্বে অদ্য মরুতে বিশ্ব উতী বিশ্বে ভবগ্নয়ঃ সমিষ্কাঃ। বিশ্বে নো দেবা অবসাগমন্তু বিশ্বমস্তু দ্রবিণং বাজো অম্মে৷৷৩১। বাজো নঃ সপ্ত প্রদিশশ্চতম্রো বা পরাবতঃ। বাজো নো বিশ্বৈ দেবৈ ধনতাবিহাবতু৷৷৩২৷ বাজো নো অদ্য প্ৰ সুবাতি দানং বাজো দেবাঁ ঋতুভিঃ কল্পয়াতি। বাজো হি মা সর্ববীরং জজান বিশ্বা আশা বাজপতিৰ্জয়েয়৷৷৩৩৷৷ বাজঃ পুরস্তাদুত মধ্যতো নো বাজো দেবাহরিষা বয়াতি। বাজো হি মা সর্ববীরং চকার সর্বা আশা বাজপতিৰ্ভবেয়ম্।।৩৪। সং মা সৃজামি পয়সা পৃথিব্যাঃ সং মা সৃজাম্যদ্ভিবোষধীভিঃ। সোহহং বাজং সনেয়মগ্নে৷৩৫৷৷ পয়ঃ পৃথিব্যাং পয় ওষধীষু পয়ো দিব্যন্তরিক্ষে পয়ো ধাঃ। পয়স্বতীঃ প্রদিশঃ সন্তু মহ্যম্ ॥৩৬৷৷ দেবস্য ত্বা সবিতুঃ প্রসবেংশ্বিনোর্বাহুভ্যাং পুষ্ণো হস্তাভ্যা। সরস্বত্যৈ বাচো যন্ত্রেণাগ্নেঃ সাম্রাজ্যেনাভিষিঞ্চামি৷৩৭। ঋতায়াড়তধামাইগ্নিৰ্গন্ধর্ব স্তস্যৌষধয়োহরসো মুদো নাম। স ন ইদং ব্ৰহ্ম ক্ষত্রং পাতু তস্মৈ স্বাহা বা ভ্য স্বাহা।।৩৮। সংহিতো বিশ্বসামা সূর্যো গন্ধর্বস্তস্য মরীচয়োহল্পরস আয়ুবো নাম। সন ইদং ব্রহ্ম ক্ষত্রং পাতু তস্মৈ স্বাহা বাটু ভ্যঃ স্বাহা।৩৯। সুষুম্মঃ সূর্যরশ্মিশ্চন্দ্রমা গন্ধর্বস্তস্য নক্ষত্রাণরসো ভেকুরয়ো নাম। সন ইদংব্ৰহ্ম ক্ষত্রং পাতু তস্মৈ স্বাহা বাট তাভ্যঃ।।৪০।ইষিররা বিশ্বব্যচা বাতো গন্ধর্বস্তস্যাপো অঙ্গরস ঊর্জো নাম। সন ইদং ব্ৰহ্ম ক্ষত্রং পাতু তস্মৈ স্বাহা বা ভ্যঃ স্বাহা।৪১। ভুজুঃ সুপর্ণো যজ্ঞো গন্ধর্ব স্তস্য দক্ষিণা অপ্সরস স্তাবা নাম। স ন ইদং ব্রহ্ম ক্ষত্রং পাতু তস্মৈ স্বাহা বাট তাভ্যঃ স্বাহা৷৪২ প্রজাপতিবিশ্বকর্মা মনো গন্ধর্ব স্তস্য ঋকসামান্যরস এষ্টয়ো নাম। সন ইদং ব্ৰহ্ম ক্ষত্ৰং পাতু তৃস্মৈ স্বাহা বা ভ্যঃ স্বাহা।।৪৩৷ স নো ভুবনস্য পতে প্রজাপতে যস্য ত উপরি গৃহা যস্য বেহ। অস্মৈ ব্ৰহ্মণেইস্মৈ ক্ষত্রায় মহি শৰ্ম যচ্ছ স্বাহা ॥৪৪৷ সমুদ্ৰোহসি নভস্বানাদানুঃ শর্ময়োভূরভি মা বাহি স্বাহা মারুতোহসি মরুতাং গণঃ শর্ময়োভূরভি মা বাহি স্বাহা। অবস্যুরসি দুবস্বাঞ্জভূময়োভূরভি মা বাহি স্বাহা।৪৫৷৷ যাস্তে অগ্নে সূর্যে রুচো দিবমাতন্বন্তি রশ্মিভিঃ। তাভি নো অদ্য সর্বাভী রুচে জনায় নস্কৃধি।৪৬। যা বো দেবাঃ সূর্যে রুচো গোম্বশ্বেযু যা রুচঃ। ইন্দ্রাগ্নী তাভিঃ সর্বাভী রুচং নো ধত্ত বৃহস্পতে।৪৭৷ রুচং নো ধেহি ব্রাহ্মণেষু রুচং রাজসু নস্কৃধি। রুচং বিশেষু শূদ্রেষু ময়ি ধেহি রুচা রুচ৷৷৪৮। তত্ত্বা যামি ব্ৰহ্মণা বন্দমানস্তদা শাস্তে যজমানো হবির্ভিঃ। অহেডমনো বরুণেহ বোধরুশংস মা ন আয়ুঃ প্র মোৰীঃ ॥৪৯৷৷স্বর্ণ ঘর্ম স্বাহা স্বর্ণাৰ্কঃ স্বাহা স্বর্ণ শুক্রঃস্বাহা স্বর্ণ জ্যোতিঃস্বাহা স্বর্ণ সূর্যঃ স্বাহা।৫০৷ অগ্নিং ধুনজিম শবসা ঘৃতেন দিব্যং সুপর্ণং বয়সা বৃহন্ত। তেন বয়ং গমেম ব্ৰধস্য বিষ্টপং স্নো রুহাণা অধিনাকমুত্তাম৷৫১৷ ইমৌ তে পক্ষাবরে পতত্রৈণেী যাভ্যাং রক্ষাংস্যপহংস্যগ্নে। তাভ্যাং পতেম সুকৃতামু লোকং যত্র ঋষয়য়া জগুঃ প্রথমজাঃ পুরাণাঃ ॥৫২৷৷ ইন্দুদক্ষঃ শ্যেন ঋতাবা হিরণ্যপক্ষঃ শকুনো ভরণুঃ। মহানধন্থে ধ্রুব আ নিষত্তো নমস্তে অস্তু মা মা হিংসীঃ৫৩৷ দিবো মূর্ধাহসি পৃথিব্যা নাভিরূৰ্গপামোষধীনা। বিশ্বায়ুঃ শৰ্ম সপ্রথা নমম্পথে।৫৪৷৷ বিশ্বস্য মূর্ধন্নধি তিষ্ঠসি শ্রিতঃ সমুদ্রে ত হৃদয়মম্বায়ুরপো দত্তোদধিং ভিন্ত। দিবম্পর্জন্যদন্তরিক্ষাৎ পৃথিব্যাস্ততো নো বৃষ্ট্যাব।৫৫। ইষ্টো যজ্ঞো ভৃগুভিরাশীদা বসুভিঃ। তস্য ন ইষ্টস্য প্রীতস্য দ্রবিণে গমেঃ ॥৫৬। ইষ্টো অগ্নিরাহুতঃ পিপন্টু ন ইষ্টং হবিঃ। স্বগেদং দেবেভ্যো নমঃ ॥৫৭ যাকূতাসমসূম্রোজ্জ্বদো বা মনমো বা সতং চক্ষুযোবা। তদনু প্রেত সুকৃতামু লোকং যত্র ঋষয়ো জম্মুঃ প্রথমজাঃ পুরাণঃ ॥৫৮। এতং সধস্তু পরি তে দদামি যমাবহাচ্ছেবধিং জাতবেদাঃ। অন্বাগস্তা যজ্ঞপতিৰ্বো অত্র তং স্ব জানীত রমে ব্যোম৷৫৯। এতং জানাথ পরমে ব্যোমন দেবাঃ সধস্থা বিদ রূপমস্য। যদাগচ্ছাৎপথিভি দেবযানৈরিষ্টাপূর্তে কৃণবাথাবিরস্মৈ৷৷৬০৷ উদ্বুধ্যস্বাগ্নে প্রতি জাগৃহি ত্বামিষ্টাপূর্তে সং সৃজেথাময়ং চ। অস্মিন্তু সধস্থে অধত্তরশ্মিন্বিশ্বে দেবা। যজমানশ্চ সীদত।।৬১। যেন বহসি সহস্রং যেনাগ্নে সর্ববেদসম্। তেনেমং যজ্ঞং নয় স্বর্দেবেষু গবে।৬২। প্রস্তরেণ পরিধিনা সুচা বেদ্যা চ বহিষা। ঋচমং যজ্ঞং নো নয় স্বর্দেবেষু গন্তুবে৷৷৬৩৷৷ যদ্দত্তং যৎপরাদানং যৎপূর্তং যাস্ট দক্ষিণাঃ। তদাগ্নির্বৈশ্বকর্মণঃ স্বর্দেবেষু নো দধৎ৬৪৷৷ যত্র ধারা অনপেতা মধ্যে ঘৃতস্য যাঃ। তদাগ্নির্বৈশ্বকর্মণঃ স্বর্দেবেষু নো দধৎ৬৫৷৷ অগ্নিরশ্মি জন্মনা জাবেদা ঘৃতং মে চক্ষুরমৃতং ম আস। অর্কস্ত্রিধাতু রজসো বিমানোহজম্রো ঘৰ্মো হবিরস্মি নাম।৬৬৷৷ ঋচো নামাস্মি যজুংষি নামাস্মি সানামি নামাস্মি। যে অগ্নয়ঃ পাঞ্চজন্যা অস্যাং পৃথিব্যামধি। তেষামসি ত্বমুত্তমঃ প্র জীবাতবে সুব৷৬৭৷৷ বার্তহত্যায় শবসে পৃতনাহ্যায় চ। ইন্দ্র ত্বাই বর্তয়ামসি৷৷৬৮৷৷ সহদানুং পরুহুত ক্ষিয়ন্তমহস্তমিন্দ্র সং পিণক কুণারু। অভি বৃত্ৰং বর্ধমানং পিয়ারুমপাদমিন্দ্র বসা জঘন্থ৷৬৯৷ হি ইন্দ্র মৃধো জহি নীচা যচ্ছ পৃতন্যতঃ। যো অশ্ম অভিদাসত্যধরং গময়া তমঃ ॥৭০৷৷ মৃগোন ভীমঃ কুচররা গিরিষ্ঠাঃ পরাবত আ জগস্থা পরস্যাঃ। স্কং সংশয়া পৰিমিন্দ্র তিস্মং বি শত্রু তাঢ়ি বি মধ্যে নুদ৷৷৭১ বৈশ্বানরো ন উতয় আ প্র যাতু পরাবতঃ। অগ্নিঃ সুতীরূপ৷৭২৷৷ পৃষ্টো দিবি পৃষ্টো অগ্নিঃ পৃথিব্যাং পৃষ্টো বিশ্বা ঔষধীরা বিবেশ। বৈশ্বানরঃ সহসা পৃষ্টো অগ্নিঃ স নো দিবা স রিষষ্পতু নক্ত৷৷৭৩৷৷ অশ্যাম তং কামমগ্নে তববতী অশ্যাম রয়িং রয়িবঃ সুবীরম্। অশ্যাম বাজমভি বাজয়ন্তোহশ্যাম দৃম্নমজরাজরং তো৭৪। বয়ং তে অদ্য ররিমা হি কামমুত্তানহস্তা নমসোপসদ্য। যজিষ্ঠেন মনসা যক্ষি দেনম্ৰেধতা মন্মনা বিপ্রো অগ্নে।৭৫৷ ধামচ্ছদগ্নিরিন্দ্রো ব্ৰহ্মা দেবো বৃহস্পতিঃ। সচেতসো বিশ্বে দেবা যজ্ঞং প্রাবন্তু নঃ শুভে৷৷৭৬৷৷ ত্বং যবিষ্ঠ দাশুযো নৃঃ পাহি শৃণুধী গিরঃ। রক্ষা তোকমুত ত্মনা৷৭৭৷৷

 [কাণ্ড-৭৭, মন্ত্র-৮৯]

.

মন্ত্রার্থঃ– (এই অধ্যায়ে বসোর্ধারা ইত্যাদি মন্ত্ৰসমূহ উক্ত হয়েছে)

১। –অন্ন, অন্নদানের অনুজ্ঞা, শুদ্ধি, অন্নবিষয়ক মন্ত্র ঔৎসুক্য, ধ্যান, সঙ্কল্প, সাধুশব্দ, শ্লোক, যজ্ঞ, শ্রুতি, জ্যোতি এবং স্বর্গ–এইগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার সপ্রাপ্ত হোক; (অর্থাৎ আমি যজ্ঞ সম্পাদনের দ্বারা এইগুলি লাভ করব) ৷

২। প্রাণ, অপান, ব্যান, প্রবৃত্তিমান্ বায়ু, চিত্ত, বাহ্যবিষয়ক জ্ঞান, বাক্, মন, চক্ষু, শ্রোত্র, জ্ঞানেন্দ্রিয়-কৌশল এবং কর্মেন্দ্রিয় কৌশল–যজ্ঞের দ্বারা এগুলি আমার সিদ্ধ হোক ৷৷

৩৷ ওজ, বল, আত্মশক্তি, পুষ্ট শরীর, সুখ, করচ, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, অস্থিসমূহ, পূর্ব (অঙ্গুলির গ্রন্থি), বিবিধ শরীর, আয়ু এবং বৃদ্ধাবস্থা–এইগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক ৷

৪। জ্যেষ্ঠত্ব, আধিপত্য, ক্রোধ, তেজ, বল, জল, জয়সামর্থ্য, মহিমা, প্রজা ইত্যাদির বিশালতা, গৃহ-ক্ষেত্র ইত্যাদির বিস্তার, দীর্ঘজীবন, অবিচ্ছিন্ন বংশত্ব (অর্থাৎ ছোঁহীন বংশধারা), প্রভূত অন্নধন ইত্যাদি এবং বিদ্যা ইত্যাদি গুণকর্মযজ্ঞের দ্বারা এইগুলি আমার সম্প্রপ্ত হোক; (অর্থাৎ আমি যজ্ঞ গঠন করব)

৫। সত্য, শ্রদ্ধা, জগৎ, ধন, বিশ্ব, তেজঃ, ক্রীড়া (অক্ষত ইত্যাদি), মোদ (আনন্দ), সন্তান, বংশপরম্পরা, সূক্ত (ঋক্‌মন্ত্ৰসমূহ), এবং পুণ্য (ঋক্ পাঠের নিমিত্ত সুকৃতি বা শুভদৃষ্ট)–আমার যজ্ঞের দ্বারা এইগুলি সিদ্ধ হোক৷৷

৬। ঋত (যজ্ঞ ইত্যাদি ক্রিয়া), অমৃত (যজ্ঞকর্মের ফলস্বরূপ স্বর্গ ইত্যাদি), অপরাগত্ব (ধাতুক্ষয় ইত্যাদি জনিত রোগের অভাব), অনাময়ত্ব (সামান্যমাত্র ব্যাধিরও রহিত্য), জীবন (ব্যাধিনাশক ঔষধ সেবন), দীর্ঘায়ুত্ব, অশত্ৰুত্ব, অভয় (ভীতিহীনতা), সুখ (সুখমানন্দ), শয়ন (সুখকর শয্যা), শুভ উপায়সমূহ (স্নান, সন্ধ্যাহ্নিক ইত্যাদি যুক্ত প্রাতঃকাল) এবং সুদিন (যজ্ঞসাধন, দান, অধ্যয়ন ইত্যাদি) এইগুলি আমার যজ্ঞের দ্বারা সিদ্ধ হোক ৷

৭। অশ্ব ইত্যাদির নিয়ন্ত্রণকর্তা, পোষক পিতা প্রভৃতি, ক্ষেম (বিদ্যমান ধনের রক্ষণশক্তি), ধৃতি (ধৈর্য), বিশ্ব (সকলের আনুকূল্য), তেজঃ, মহ (পূজা), সম্বিৎ (বেদশাস্ত্র ইত্যাদিতে জ্ঞান), বিজ্ঞানসামর্থ্য, প্রেরণাসামর্থ্য, জননশক্তি, ধান্য ইত্যাদি ও কৃষির প্রতিবন্ধকসমূহের নিবৃত্তি–এইগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক।

৮৷ ঐহিক সুখ, পারলৌকিক সুখ, প্রিয়, প্রিয় পদার্থ, বিষয়সুখ, প্রেমভাব (মনঃস্বাস্থ্যকর বন্ধুবৰ্গ), সৌভাগ্য, ধন, ঐহিক কল্যাণ, পারলৌকিক কল্যাণ, নিবাসযোগ্য গৃহ ইত্যাদি এবং যশ–যজ্ঞসাধনের দ্বারা এইগুলি আমাকে প্রাপ্ত হোক।

৯৷ অন্ন, সত্যবাণী, দুগ্ধ, দধি, ঘৃত, মধু, সহজে (বন্ধুবর্গের সাথে একত্রে ভোজন), সহপান (একত্রে পান), কৃষি, বৃষ্টি, জয়সামর্থ্য এবং শত্রুগণের মধ্যে ভেদনীতির প্রয়োগ এইগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক৷

১০। গো-অশ্বন (বা স্বর্ণ), মুক্তামণি, ধনের পোষণ (বা সমৃদ্ধি), শরীরের পুষ্টি, বিভুত্ব (ব্যাপ্তিসামর্থ), প্রভুত্ব (ঐশ্বর্যশালীত্ব), পূর্ণতা (ধন পুত্র ইত্যাদির বাহুল্য), পরিপূর্ণতা (গজ অশ্ব ইত্যাদির বাহুল্য), ক্ষুদ্রধান্যের সম্পন্নতা, অক্ষয়তা, অন্ন এবং ক্ষুধার্তের অভাব–আমার যজ্ঞের দ্বারা এইগুলি সিদ্ধ হোক।

১১। প্রাপ্ত ধন, প্রাপ্তব্য ধন, পূর্বসিদ্ধ ক্ষেত্র ইত্যাদি, প্রাপ্তব্য ক্ষেত্র ইত্যাদি, সুখগম্য প্রদেশ, সুপথ্য, সমৃদ্ধ যজ্ঞফল, যজ্ঞ ইত্যাদির সমৃদ্ধি, দুগ্ধ ইত্যাদি, স্বকার্যসাধনে সামর্থ্য, মতি (পদার্থমাত্র-নিশ্চয়) এবং সুমতি (দুর্ঘটনাকার্যসমূহকে নিশ্চয়করণের বুদ্ধি)–এগুলি আমার যজ্ঞে সিদ্ধ হোক৷

১২৷ ধান্য, যব, কলাই, তিল, মুগ, ছোলা, প্রিয়ঙ্গব, চীনক, শ্যামক, নীবার, গোধূম এবং মসুর–এগুলি আমার যজ্ঞের দ্বারা সম্প্রপ্ত হোক।

১৩। প্রস্তর, মৃত্তিকা, পর্বত, মহাপর্বত বালু, বনস্পতিসকল, সুবর্ণ, রৌপ্য, তা লৌহ, সীসা ও ত্রপু (রঙ্গ বা রাং)–এগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার প্রাপ্ত হোক৷

১৪। অগ্নি, জল, লতাসমূহ, ওষধিসকল, কৃষি হতে উৎপন্ন শস্য ইত্যাদি, বিনা কৃষিকর্মে জাত শস্য ইত্যাদি, গ্রামীণ পশু, আরণ্য পশু, বিত্ত, ভাবি লাভ (ভবিষ্যতে লব্ধব্য সামগ্রী), পূর্বলাভ তথা স্ব-অর্জিত ঐশ্বর্য–এগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার প্রাপ্ত হোক৷

১৫৷ গো-ইত্যাদি ধন, সুন্দর বসতি (বাসস্থান), অগ্নিহোত্র ইত্যাদি কর্মের শক্তি, অর্থ (কাম্য অর্থ), প্রাপ্তব্য অর্থ, ইষ্ট প্রাপ্তির উপায়, এবং ইষ্টপ্রাপ্তি–এসকলই আমার যজ্ঞের দ্বারা সিদ্ধ হোক৷

১৬। অগ্নি, ইন্দ্র, সোম, সবিতা, সরস্বতী, পূষা, বৃহস্পতি ও বৃহস্পতির সাথে যুগ্ম দেবগণ আমার যজ্ঞের দ্বারা সিদ্ধ হোক।

১৭। মিত্র, বরুণ, ধাতা, ত্বষ্টা, মরুৎ, বিশ্বদেবগণ এবং তাদের যুগ্ম ইন্দ্রদেব–এরা সকলেই যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ (প্রাপ্তি) হোক৷

১৮৷ পৃথিবী, অন্তরিক্ষ, দ্যৌ (লেক), বর্ষ, নক্ষত্রগণ এবং দিকসমূহের (অর্থাৎ এগুলির অধিষ্ঠাতৃ দেবগণের সাথে) যুগ্মরূপে ইন্দ্রদেব–এরা সকলেই যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ (সম্পন্ন) হোক৷৷

১৯। অংশগ্রহ, রশ্মি, অদাভ্য, অধিপতি, উপাংশু, অন্তর্যাম, ঐন্দ্র বায়ু, মৈত্রা-বরুণ, আশ্বিন, প্রতিপ্রস্থান শুক্র এবং মন্থীগ্রহ–এসকলই যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক।

২০। আগ্রায়ন, বৈশ্বদেব, ধ্রুব, বৈশ্বানর, ইন্দ্র ও অগ্নি, মহাবৈশৃদেব, মরুতৃতীয় (মহামরুৎবর্গ), নিবৈল্য, সাবিত্র, সারস্বত্য, পাত্নীবত ও হারিযোজনগ্রহ–এগুলির সবই যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধি হোক।

২১। সুবা, চমসা, বায়ব্য, দ্রোণকলস, গ্রাবাণ (সোম হেঁচার প্রস্তর), কাষ্ঠের দুটি পাতলা তক্তা (কাষ্টফলক), পূতভৃৎ, আহবনীয় সোমকলস, বেদি, কূশ, অবভৃথ ও শ্যুবাক (বা স্বগাকার)–এই যজ্ঞীয় পাত্র ইত্যাদি যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক৷৷

২২। অগ্নি, প্রবর্গ, যজ্ঞবিশেষ, সূর্য, প্রাণ, অশ্বমেধ, পৃথ্বী, অদিতি, দিতি, দ্যুলোক, অঙ্গুলিসকল, শক্তিসমূহ এবং দিসমূহ–এইগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক৷৷

২৩। ব্রত, ঋতুবৃন্দ, তপ, সম্বৎসর, অহোরাত্র, জঙ্দ্ব য়, জানুদ্বয় ও বৃহত্ৰথন্তর নামক সামদ্বয়–এই সমস্তই যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক।

২৪। এক, ত্রি, পঞ্চ, সপ্ত, নব, একাদশ, এয়োদশ, পঞ্চদশ, সপ্তদশ, ঊনবিংশ, একবিংশ ত্রয়োবিংশ, পঞ্চবিংশ, সপ্তবিংশ, ঊনত্রিংশ, একত্রিংশ এবং এয়োবিংশ এভৃতি অযুগ্ম স্তোমগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক৷

২৫৷ চতুঃ (চারি), অষ্ট, দ্বাদশ, যোড়শ, বিংশ, চতুর্বিংশ, অষ্টবিংশ, দ্বাত্রিংশ, ষট্‌ত্রিংশ চত্বারিংশ, চতুশ্চত্বারিংশ, অষ্টচত্বারিংশ প্রভৃতি স্বর্গপ্রাপক যুগ্ম স্তোমগুলি যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক৷৷

২৬। এ্যবি অর্থাৎ দেড় বৎসরের এঁড়ে বাছুর, দেড় বৎসরের বনা বাছুর, দুই বৎসরের এঁড়ে বাছুর, দুই বৎসরের বা বাছুর, আড়াই বৎসরের এঁড়ে ও বনা, তিন বৎসরের গাভী ও বলদ, এবং সাড়ে তিন বৎসরের গাভী ও বলদ হোমার্থে যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক।

২৭। চারি বৎসরের গাভী ও বলদ, পূর্ণ বলদ অর্থাৎ সেচনসমর্থ ষাঁড়, বন্ধ্যা গাভী, যুবা বলদ, গর্ভপাতিনী গাভী, শকট বহনে সমর্থ বলদ এবং নবপ্রসূতা গাভী যজ্ঞের দ্বারা আমার সিদ্ধ হোক।

২৮। অন্নপ্রধান চৈত্র মাসের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। প্রেরক বৈশাখ মাসের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। যাগপ্রধান আষাঢ় মাসের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। সূর্যের তাপশীল ভাদ্রপদ মাসের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। মূঢ়দিবস আশ্বিনের উদ্দেশ্যে স্বাহা আহুতি প্রদান করছি। স্বল্পকাল দিনশালী কার্তিক মাসের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। বিনাশহীন বিষ্ণুর স্বরূপ-সম্পন্ন মার্গশীর্ষ (অগ্রহায়ণ) মাসের নিমিত্ত এই হবিঃ প্রদান করছি। অন্নে পুষ্টিকারী পৌষমাসের নিমিত্ত এই হবিঃ প্রদত্ত হচ্ছে। মাসান্ত ফাল্গুনের নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। ভুবনপতি উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। অধিপতির নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। প্রজাপতির উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। হে অগ্নি! এই তোমার রাজ্য। নিয়ন্তা তুমি যজমানের নিয়ামক। বিশিষ্ট অন্নরসের নিমিত্ত আমি তোমাকে অভিসিঞ্চিত করছি। বর্ষা এবং প্রজাগণের আধিপত্যের নিমিত্ত আমি তোমাকে ঘৃতধারায় সিঞ্চিত করছি৷৷

২৯। যজ্ঞের দ্বারা আয়ুষ্য (আয়ু) সিদ্ধ হোক। প্রাণ, চক্ষু, শ্রোত্র, বাক্, মন, আত্মা, ব্রহ্মা, জ্যোতি, স্বর্গ, স্তোত্র, যজ্ঞ, স্তোম, যজু-ঋক-সাম এবং বৃহৎরথর সাম যজ্ঞের দ্বারা সিদ্ধ হোক। হে দেবগণ! যজ্ঞের দ্বারা স্বর্গকে প্রাপ্ত হয়ে আমরা অমর হয়ে গেলাম। আমরা প্রজাপতির সন্তান হয়ে গেলাম। এই পরোক্ষ আহুতি প্রদত্ত হচ্ছে। এই প্রত্যক্ষ আহুতি প্রদত্ত হচ্ছে৷৷

৩০৷ অন্নের অনুস্তায় বর্তমান আমি জগতের নির্মাণকারিণী, মহনীয়া, অখণ্ডিকা, যাতে এই প্রাণীমাত্রই প্রতিষ্ঠত আছে–সেই মাতা ভূমিকে আমার বেদবচনের দ্বারা আপন অনুকূল করছি। সবিতাদেব আমাদের সেই ভূমিতে অবস্থানের নিমিত্ত প্রেরিত করাক৷

৩১। আজ সকল মরুৎ আমাদের যজ্ঞে আগত হোক; হরিরান্নে আকর্ষিত হয়ে বিশ্বদেবগণ আগমন করুক; তারা নিজেদের সকল রক্ষাশক্তি আমাদের প্রদান করুক। সেই দেবগণের কৃপায় সকল অগ্নি প্রজ্বলিত হোক। যজ্ঞের সুফলস্বরূপ আমরা সকল প্রকার ধনধান্য প্রাপ্ত হই৷

৩২৷ আমাদের অন্নে সপ্তলোক, চারি প্রকৃষ্ট প্রকৃষ্ট দিক্ এবং দূরে বর্তমান স্বর্গ ও সিদ্ধ (তৃপ্ত) হোক। এই যজ্ঞে ধন প্রাপ্ত করার জন্য বিশ্বদেবগণের সাথে অন্ন আমাদের পালন করুক।

৩৩। আজ অন্ন স্বদানের নিমিত্ত আমাদের অনুজ্ঞাত করুক। অন্ন কালের সাথে যথাস্থানে দেবগণের কল্পনা করে থাকে; (অর্থাৎ যে কালে যে স্থানে যে দেবতাকে হবিরান্ন সমর্পণ করণীয়, তা অন্ন স্বয়ংই নির্ধারিত করে থাকে)। অন্ন আমাকে পুত্র-পৌত্রের দ্বারা সম্ভাবিত করে। এক্ষণে অন্নে সমৃদ্ধ হয়ে আমি অন্নদানের দ্বারা সর্ব দিককে জয় করব।

৩৪। অন্নই আমাদের অগ্রে থাকুক এবং অন্নই আমাদের পশ্চাতে থাকুক। সেই অনুই আমাদের মধ্যেও থাকুক। অন্নই দেবগণকে হবির দ্বারা বর্ধিত (বা পুষ্ট) করে। অন্নই আমাকে বীর পুত্র-পৌত্রশালী করে দেয়। আমি অন্নপতি হয়ে সকল দিকে ব্যাপক (নাম সম্পন্ন হয়ে যাবে।

৩৫। হে অগ্নি! যে আমি নিজেকে পার্থিবরসে সংযোজিত করছি; যে আমি নিজেকে ওষধি ও জলসমূহের সাথে সংযোজিত করছি–সেই আমি এক্ষণে তোমার কৃপায় অন্নকে প্রাপ্ত হবো ৷

৩৬। হে অগ্নি! তুমি যেরূপ পৃথিবীতে রস স্থাপিত করো; সেইরূপে ওষধি সমূহে, অন্তরিক্ষে ও দ্যুলোকে জল স্থাপিত করো। হে অগ্নি! তোমার কৃপায় এই সকল প্রকৃষ্ট দিসমূহ আমার নিমিত্ত রসপূর্ণা হোক৷

৩৭। সবিতাদেবের অনুজ্ঞায় বর্তমান আমি (অধ্বর্যু) অশ্বিযুগলের বাহুদ্ধয় ও পূদেবতার দুই হস্তের দ্বারা; সরস্বতী দেবতার বাণী, প্রজাপতি দেবতার নিয়ম ও অগ্নি দেবতার সাম্রাজ্যের সাথে তোমাকে (অর্থাৎ যজমানকে) সিঞ্চিত (বা অভিষিক্ত) করছি।

৩৮। সত্যকে সহনশীল, (অর্থাৎ অসত্যে কোপনশীল), সত্যের স্থান সম্পন্ন অগ্নিই গন্ধর্ব। ওষধিসমূহই তার অপ্সরাবৃন্দ। সেই অপ্সরাবৃন্দের নামই মুদ(হর্ষ)। সেই গন্ধর্ব আমাদের এই ব্রাহ্মণ জাতিকে এবং ক্ষত্রিয় জাতিকে পালন করুক। সেই নিমিত্ত স্বাহা ও বষট্‌ মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। সেই ওষুধসমূহের নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি।

৩৯৷ দিবা ও রাত্রির সন্ধিকরণশীল এই সূর্যই সংহতি (অর্থাৎ একত্রীভূত করণশীল) এবং সেই-ই সর্বসাম। এই সূর্যই গন্ধর্ব। মরীচি বা কিরণ সমূহই তার অঙ্গরা; তাদের নাম আয়ুব। সেই সূর্যরূপ গন্ধর্ব আমাদের এই ব্রাহ্মণ জাতি ও ক্ষত্রিয় জাতিকে পালন করুক। সেই গন্ধর্ব সূর্যের নিমিত্ত (স্বাহা ও বষঢ় মন্ত্রে) এই আহুতি প্রদান করছি। তার কিরণসমূহের নিমিত্ত (স্বাহা মন্ত্রে) এই আহুতি প্রদান করছি।

৪০।পরম আহ্বানকারী এবং সূর্যের রশ্মিতে দীপ্তিশালী চন্দ্ৰমাই গন্ধর্ব।নক্ষত্রই তার অপ্সরাবৃন্দ; তাদের নাম ভেকুরী (অর্থাৎ ভা বা প্রভা করণশালিনী)। সেই চন্দ্রগন্ধর্ব আমাদের এই ব্রাহ্মণ জ্ঞাতি ও ক্ষত্রিয় জাতিকে পালন করুক। তার উদ্দেশ্যে (স্বাহা ও বষ মন্ত্রে) এই আহুতি প্রদান করছি। সেই নক্ষত্রসমূহকে উদ্দেশ্য করে (স্বাহা মন্ত্রে) এই আহুতি প্রদান করছি৷

৪১। ক্ষিপ্রগতি ও সর্বত্ৰগতি বায়ুই গন্ধর্ব। আপঃ অর্থাৎ জল তার অপ্সরাবৃন্দ; তাদের নাম ঊর্জ। সেই বায়ুরূপ গন্ধর্ব আমাদের এই ব্রাহ্মণ জাতিকে এবং ক্ষত্রিয় জাতিকে পালন করুক। তার উদ্দেশ্যে (স্বাহা ও বষট্‌কারের দ্বারা) এই আহুতি প্রদান করছি। সেই আপঃ অর্থাৎ জলের নিমিত্ত (স্বাহা মন্ত্রে) এই আহুতি প্রদান করছি৷৷

৪২। সকল দেবতা ও মানবগণকে ভোজন-দানশীল এবং সর্বত্র পতন (বা গমন) শীল যজ্ঞই গন্ধর্ব। দক্ষিণাই তার অপ্সরাবৃন্দ; তাদের নাম স্তাবা। সেই যজ্ঞরূপ গন্ধর্ব আমাদের ব্রাহ্মণ জাতি ও ক্ষত্রিয় জাতিকে পালন করুক। তার উদ্দেশ্যে (স্বাহা ও বষটু মন্ত্রে) এই আহুতি প্রদান করছি। সেই স্তুতিকরণশালিনী দক্ষিণাসমূহের নিমিত্ত (স্বাহা মন্ত্রে) এই আহুতি প্রদান করছি।

৪৩। ইন্দ্রিয় প্রজাগণের পালক এবং সব কিছুর নির্মাণকারী এই মনই গন্ধর্ব। ঋক্‌মন্ত্ৰসমূহ ও সমাগানসকল তার অপ্সরাবৃন্দ। তারা এষ্টয়ঃ (ইচ্ছাকারিণী) নামশালিনী। সেই মনরূপ গন্ধর্ব আমাদের এই ব্রাহ্মণ জাতি ও ক্ষত্রিয় জাতিকে পালন করুক। তার নিমিত্ত স্বাহা ও বষ মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। সেই এষ্টিয়গণের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি।

৪৪। হে ভুবনের স্বামি (অর্থাৎ পালক)! হে প্রজাপালক! উপরের স্বর্গলোকে, যে তোমার ঘর আছে, এবং এই পৃথিবীর উপরেও যে তোমার ঘর আছে, সেই হেন তুমি এই ব্রাহ্মণ জাতি, এই ক্ষত্রিয় জাতি এবং আমাকে অত্যন্ত মহৎ সুখ প্রদান করো। তোমার উদ্দেশ্যে স্বাহা ও বষট্ মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি৷

৪৫। হে বায়ু! তুমি আ-করণশীল সমুদ্র; নক্ষত্রসমূহে সঙ্গত হয়ে থাকা। নভস্বান্। বর্ষা, নীহার ইত্যাদির দ্বারা সব কিছুকে আর্দ্রকরণশীল তুমি আদ্রদানু। তুমি ঐহিক সুখ দানশীল শম্ভু এবং পারলৌকিক সুখ প্রাপ্তি-কারক ময়োভূসেই তুমি আমাকে অভিবহন করো। তুমি মরুৎ-সমূহ। তুমি মরুবর্গের শুক্ৰজ্যোতি প্রভৃতিগণ, অন্তরিক্ষবাসী তুমি ঐহিক সুখদাতা এবং পারলৌকিক সুখ দানশীল। তুমি আমাকে অভীষ্টের নিমিত্ত বহন করা। পরিচর‍্যা প্রাপ্তবান্ তুমিই আমাদের রক্ষক। তুমি লৌকিক-পারলৌকিক সুখ প্রদানকর্তা। তুমি আমাকে বহন করো। তোমার নিমিত্ত স্বাহা ও বষট্‌ মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি৷৷

৪৬। হে অগ্নি! সূর্যে প্রবিষ্ট হয়ে (পৌঁছিয়ে) তোমার যে কান্তিসমূহ দুলোককে স্বরশ্মিসমূহে বিস্তারিত করে, থাকে, হে অগ্নি! আজ তুমি সেই সকল রশ্মির দ্বারা আমাদের প্রতিটি ব্যক্তিকে কান্তির পাত্র করে দাও

৪৭। হে দেবগণ! তোমাদের যে প্রকাশ (বা দীপ্তি) সূর্যে স্থিত আছে এবং গো-অশ্বসমূহে যে শোভা আছে–হে ইন্দ্র ও অগ্নি! হে বৃহস্পতি! সেই সকল শোভাসমূহের দ্বারা তোমরা সকলে আমাদের শোভা ধারিত (বা বর্ধন) করো।

৪৮। হে অগ্নি! আমাদের ব্রাহ্মণগণের মধ্যে দীপ্তি ধারিত (বা স্থাপিত) করো, আমাদের রাজগণের মধ্যে তেজ ধারিত করো। বৈশ্যগণ ও শূদ্রগণে শক্তি ধারিত করো। আমাতেও কান্তি ধারিত করো।

৪৯। হে বরুণ! যজমান হবিঃ প্রদানের দ্বারা যে যে পদার্থ তোমার নিকট প্রার্থনা করেন–আমি মন্ত্রের দ্বারা স্তুতি করে সেই সেই পদার্থের যাচনা করছি। হে প্রভূতযশ বরুণ! সেই সেই পদার্থ, তুমি ক্রোধ না করে, যজমানের নিমিত্ত স্বীকৃত করে। তুমি আমাদের আয়ু সমাপ্ত করো না।

৫০। দিনের সমান আদিত্য। তার নিমিত্ত এই আহুতি প্রদান করছি। দিনের সমান যে সূর্য, তাকে আমি অগ্নিতে হোম করছি। সূর্যের সমান যে অগ্নি, তাকে আমি আদিত্য স্থাপন করছি। দেবতার সমান যে আদিত্য, তাকে আমি আদিত্যেই স্থাপিত করছি। স্বর্গের সমান যে অগ্নি, তাকে আমি অগ্নিতেই স্থাপিত করছি। এই প্রকারে আমি অগ্নিকে সূর্যে এবং সূর্যকে অগ্নিতে স্থাপিত করে ক্রমশঃ সূর্য ও অগ্নিকে সর্বোত্তম করছি।

৫১। দিব্য, সুগমন এবং স্বধূমের দ্বারা মহান্ অগ্নিকে আমি বল ও ঘৃতে সংযোজিত করছি। সেই অগ্নির দ্বারা আমার আদিত্যের উত্তম লোককে প্রাপ্ত হচ্ছি (বা হবো)। তারপর স্বর্গে আরোহণ করে আমরা তারও ঊর্ধ্বে উত্তম বৈকুণ্ঠে গমন করছি (বা করব)।

৫২। হে অগ্নি। তোমার যে এই উত্তর ও দক্ষিণ দুই জরাহীন পক্ষ (পানা বা ডানা) আছে, যাদের দ্বারা তুমি রাক্ষসগণকে হনন করে থাক, তোমার সেই পক্ষদ্বয়ের দ্বারা আমরা পুণ্যবাগণের লোকে গমন করব, যেখানে পূর্বে উৎপন্ন ও চিরন্তন ঋষিগণ গমন করেছেন।

৫৩। তুমি আহ্লাদক, উৎসাহবান, শ্যেন পক্ষীর ন্যায় প্রশংসনীয় গতি, ঋতবান্ (সত্যের দ্বারা সর্বব্যাপক বা যজ্ঞবা), স্বর্ণবৎ দুই পক্ষীশালী শকুনি (অর্থাৎ পক্ষী), সকলকে ভোজন দানশীল, মহান। স্থির এবং যজ্ঞশালায় স্থিত অগ্নি। সেই হেন তোমাকে নমস্কার। হে অগ্নি! আমাদের আঘাত (বা হিংসা) করো না।

৫৪। হে অগ্নি! তুমি দ্যুলোকের শিরঃস্থানীয়; পৃথিবীর তুমি নাভিস্বরূপ, এবং জল ও ঔষধিসমূহের তুমি ওজবল। সকল প্রাণীর জীবনস্বরূপ, সকলের একমাত্র শরণ্য (রক্ষাকর্তা) এবং সর্বত্র অনবচ্ছিন্ন প্রভাবশালী অগ্নিকে নমস্কার।

৫৫৷ হে অগ্নি! তুমি সকলের মস্তকের উপর স্থিত সকলের অপেক্ষা উন্নত; অন্তরিক্ষে তোমার হৃদয় এবং জলে তোমার জীবন। তোমার নিকট আমি যাচনা করছি তুমি জল প্রদান করো; তুমি মেঘরূপ সাগরকে ভঙ্গ করো এবং দ্যুলোক-অন্তরিক্ষ-পৃথিবীতে বৃষ্টিকে আনয়ন পূর্বক আমাদের পালন করো।

৫৬৷ হে দ্রব্য (দ্রবিণ)। তুমি আমাদের প্রিয় যজমানের গৃহে আগত হও–যে যজমানের যজ্ঞ ভৃগুবংশীয় গণের দ্বারা ও বসু দেবতাগণের দ্বারা সম্পাদিত করা হয়, সেই যজ্ঞ অভীষ্ট স্বর্গ ইত্যাদি। দানকারী (অর্থাৎ ব্রাহ্মণ ও দেবতাগণ যার যজ্ঞ সম্পাদন করে থাকে, তুমি তার গৃহে গমন করে সর্বদা অবস্থান করো)।

৫৭। কৃতযাগ এবং সর্বথা তর্পিত অগ্নি আমাদের অভীষ্ট স্বর্গ ইত্যাদি প্রদান করুক। এই স্বয়ং গমনশীল হবিঃ দেবগণের প্রাপ্ত হোক।

৫৮। হে ঋত্বিকগণ! যে যজ্ঞকর্ম প্রজাপতির সঙ্কল্প হতে, হৃদয় হতে, মন হতে অথবা চক্ষু প্রভৃতি জ্ঞানেন্দ্রিয় হতে পূর্ণ সমারম্ভের সাথে প্রকট হয়েছিল–সেই বৈদিক কর্মকাণ্ডের সাধন করে পুণ্যবানগণের লোককে প্রাপ্ত হও; যে তোক পূর্বে উৎপন্ন এবং চিরন্তন ঋষিও প্রাপ্ত হয়ে গিয়েছেন৷

৫৯। হে সহস্থান (দেবগণের সহাবস্থানের স্থানরূপ) স্বর্গ! আমি এই যজমানকে তোমায় সমর্পণ করছি। সেই সঙ্গেই যে সুখনিধিকে অগ্নি পূর্ণ করেছেন–সেই যজ্ঞকেও তোমায় প্রদান করছি। এই যজ্ঞপতি (যজমান) এক্ষণে স্বর্গে তোমার নিকট গমনের জন্য প্রস্তুত, তার আগমনের পর সেই পরম আকাশে তোমরা সকল দেবতা তাকে সম্মানিত কোরো।

৬০। হে স্বর্গস্থ দেবগণ! পরম আকাশস্থ স্বর্গে আগত সেই যজমানকে পরিজ্ঞাত হও। এই যে যজমান দেব্যান পথে স্বর্গে সমুপস্থিত হন, তখন তাকে জান। তাঁর নিমিত্ত শ্রৌত ও স্মার্ত কর্মসমূহের শুভ ফলকে প্রকট করো, যাতে তিনি সুখী হতে পারেন।

৬১। হে অগ্নি! তুমি প্রজ্বলিত (অর্থাৎ উদ্বুদ্ধ) হও; তুমি জাগ্রত হও। হে অগ্নি! তুমি শ্রৌত ও স্মার্ত কর্মগুলিকে উৎপন্ন করেছ এবং তুমিই এই যজ্ঞকেও উৎপন্ন করেছ। এই উত্তম যজ্ঞরূপ সহস্থানে বিশ্বদেব ও যজমান উপবেশন করুন।

৬২। হে অগ্নি! তুমি নিজের যে সামর্থ্যের দ্বারা সহস্রদক্ষিণাশালী যজ্ঞকে বহন করে থাক এবং যে সামর্থ্যে সর্বস্ব দক্ষিণাসম্পন্ন যজ্ঞকেও বহন করে থাক, হে অগ্নি! আপন সেই সামর্থ্যে আমাদের এই যজ্ঞকেও বহন করো, যাতে আমরা দেবগণের  স্বর্গে গমন করতে সক্ষম হই।

৬৩। প্রস্তর, পরিধি সুবা, বেদি, কুশ এবং মন্ত্রের দ্বারা সাধিত আমাদের এই যজ্ঞকে, হে অগ্নি! উত্তীর্ণ করো যাতে আমরা দেবগণের অধ্যুষিত স্বর্গে গমন করতে পারি ॥

৬৪ ভার্যা, পুত্র ইত্যাদিকে যে ধন দেওয়া হয়েছে, দয়া পূর্বক পরোপকার-স্বরূপ অন্ধ ইত্যাদি জনকে যা দেওয়া হয়েছে, স্মৃতিশাস্ত্র বিহিত ব্রাহ্মণ-ভোজন ইত্যাদি যা করা হয়েছে এবং যজ্ঞ ইত্যাদিতে যে দক্ষিণা দেওয়া হয়েছে; হে বিশ্বকর্মা অগ্নি! আমাদের সেই সকল দান স্বর্গলোকে দেবগণের মধ্যে উপস্থাপিত করো, যাতে আমরা সেই স্বর্গলোক গমন করতে পারি ৷

৬৫৷ যেস্থানে ঘৃত, মধু, দধি, দুগ্ধ ইত্যাদির অনুপক্ষীণ ধারা (কখনও কমে না, এমন ধারা) বাহিত হয়, বিশ্বকর্মা অগ্নি আমাদের যজ্ঞ ইত্যাদি সাধনের পুণ্যে সেই স্বর্গে আমাদের স্থাপিত করুক৷৷

৬৬৷ আমি (যজমান) জন্ম হতেই জাতবেদা অগ্নিরূপ। ঘৃত আমার চক্ষু। আমার মুখে অমৃত থাকে। ঋক্‌-যজু-সাম লক্ষণযুক্ত ত্রিধাতু যজ্ঞও আমি। জলের নির্মাতা, অনুপক্ষীণ (চিরভাস্বর) আদিত্য মেঘরূপ প্রবর্গও আমিই। হবিঃ বা পুরোডাশও আমিই। (যজমান কর্তৃক নিজেকে অগ্নিভাবে বিভাবিত হয়ে এই মন্ত্রোচ্চারণীয়)৷

৬৭। আমি ঋগ্বেদ, আমি যজুর্বেদ এবং সামবেদও আমি। এই পৃথিবীর উপরেও ব্রাহ্মণ ইত্যাদির উপকারিণী যে অন্য অগ্নিগুলি আছে, হে অগ্নি! তুমি সেগুলির মধ্যে উত্তম। তুমি আমাদের জীবনের নিমিত্ত প্রেরণা প্রদান করো।

৬৮৷ বৃত্রাকে হত্যার সামর্থ্যের (বলের) নিমিত্ত, এবং শত্রুসেনাকে অভিভবের নিমিত্ত, হে ইন্দ্র! আমরা তোমাকে আকৃষ্ট করছি (অথবা আমরা তোমার সঙ্গী হবো)।

৬৯। হে বহুজনের দ্বারা আহূত ইন্দ্র! দানবের সাথে শয়নশীল (অর্থাৎ দানবদের নিকটবর্তী হয়ে) এবং বিনা হস্তে সেই কু-শব্দকারী (দুর্বাক্যবা) দৈত্যকে তুমি চূর্ণ করে দিয়েছিলে। বৃদ্ধিশীল সেই দেবঘাতক ও বিনা পদশালী (অর্থাৎ পাদহীন) বৃত্র দৈত্যকে, হে ইন্দ্র! তুমি স্ববলে হত্যা করো।

৭০। হে ইন্দ্র! তুমি আমাদের শত্রুগণকে বিনাশ করো এবং সেনার দ্বারা আমাদের আক্রমণের কামনাকারীদের তুমি উৎপীড়িত করো। যে আমাদের আপনদাস করতে ইচ্ছা করে। তুমি তাদের নীচে অন্ধকারে (অর্থাৎ নিকৃষ্ট নরকে) নিক্ষেপ করো ৷৷

৭১। মৃগরাজের (অর্থাৎ সিংহের) সমান ভয়ঙ্কর, পৃথিবী সঞ্চারী, পর্বতে স্থানশালী ও যে অত্যন্ত সুদূর দ্যুলোক হতে আগত; হে ইন্দ্র! তুমি আপন সৃককে (অর্থাৎ বাণকে) তীক্ষ্ণ করো এবং বজ্রকেও তীক্ষ্ণ করে শত্রুদের তাড়না করো এবং সেই হিংসককে পশ্চাতে বিতাড়িত করে দাও।

৭২। সুদূর অন্তরিক্ষ হতে আমাদের রক্ষার নিমিত্ত বৈশ্বাজর অগ্নি এই স্থানে আগত হোন। আমাদের শোভন স্তুতি লক্ষ্য করে (বা শ্রবণ করতে) অগ্নি এই যজ্ঞে আগমন করুক।

৭৩। দুলোকে আদিত্যভাবে কে আছে? প্রশ্ন করলে উত্তর–অগ্নি; কে এই সকল ওষধিতে রসভাবে প্রবিষ্ট হয়েছে? প্রশ্ন করলে উত্তর-অগ্নি; এবং বলের দ্বারা মর্থন করে কাকে প্রকট করা হয়ে থাকে? প্রশ্ন করলে, উত্তর–সেই বৈশ্বানর অগ্নি, যিনি দিবা ও রাত্রিতে আমাদের হিংসা হতে রক্ষা করেন।

৭৪। হে অগ্নি! তোমার রক্ষণের সাথে আমরা সেই আপন অভীষ্টকে ভোগ করি; ধনবান আমরা পুত্রের সাথে ধন ভোগ করি; দেবগণকে পরিচর‍্যা করে আমরা অন্নকে ভোগ-করি, এবং হে জরাহীন অগ্নি! আমরা তোমার জরারহিত তেজকেও যথেচ্ছ ভোগ করি৷

৭৫। হস্ত উন্মুক্ত করে (অর্থাৎ অকৃপণ ভাবে) এবং নমস্কারের সাথে তোমার নিকট গমন করে, হে অগ্নি! যথেষ্ট হবিঃ প্রদান করছি। হে বিদ্বান্ অগ্নি! আপন যজনীয়তম মহনীয় তথা অহিংসক মনের দ্বারা তুমি দেবতাগণকে যজন করো।

৭৬। ন্যূনাতিরিক্ত স্থানকে পূর্ণকারী অগ্নি, ইন্দ্র, ব্রহ্মা, বৃহস্পতি এই শুভ যজ্ঞকে রক্ষা করুক৷

৭৭। হে যুবতম অগ্নি! হবিদাতা যজমানকে, মনুষ্যগণকে তুমি রক্ষা করো। আমাদের স্তুতিবাণীসমূহকে শ্রবণ করো। তুমি আমাদের পুত্র ও আত্মাকে (আমাদের আত্মীয়গণকেও) রক্ষা করো।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *