অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ
দেওয়ান-ই-খাস্
বাদশাহ্ যখন আগ্রায় থাকিতেন তখন প্রতিদিন আগ্রা দুর্গ ও প্রাসাদ সমূহ বহু বর্ণের আলোকমালায় সজ্জিত হইত, লক্ষ লক্ষ গন্ধ তৈলের দীপ ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের কাচের আবরণের মধ্যে রক্ষিত হইত, শ্বেত মর্ম্মরের জলাশয়ে শত শত ফোয়ারার মুখে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের সুগন্ধি বারিরাশি উত্থিত হইত, ফোয়ারার চারি পার্শ্বে ও মর্ম্মরনির্ম্মিত হ্রদের চারি দিকে বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দীপাধার সজ্জিত থাকিত, তাহাতে অসংখ্য প্রদীপ জ্বলিয়া উজ্জল আলোকে জলরাশি উদ্ভাসিত করিত। সন্ধ্যার অব্যবহিত পরে ময়ূখ যখন আগ্রা দুর্গে প্রবেশ করিলেন, তখন আগ্রার দুর্গ সহস্র সহস্র দীপমালায় উজ্জ্বল হইয়া উঠিয়াছে। দুর্গদ্বারে আসফ্ খাঁর একজন অনুচর তাহার জন্য অপেক্ষা করিতেছিল। তিনি আসিলে সে ব্যক্তি তাঁহাকে লইয়া দুর্গ মধ্যে প্রবেশ করিল। আসফ্ খাঁ মোহরাঙ্কিত পত্র দেখিয়া প্রহরিগণ পথ ছাড়িয়া দিল।
তখন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় চক জনশূন্য, মতি মসজিদ, টাঁকশাল, ও নাকারাখানা জনশূন্য, দেওয়ান-ই-আমের প্রকাণ্ড চত্তর জনশূন্য। চত্তরের চারিদিকে মন্সবদারদিগের কাছারিতে অনেকগুলি আলোক জ্বলিতেছে, দুই একজন মনসবদার বখ্শীর আদেশের অপেক্ষায় তখনও প্রতীক্ষা করিতেছে। ময়ূখ ও তাঁহার সঙ্গী নাকারাখানা হইতে পশ্চিম দিকে গমন করিয়া দেওয়ান-ই-আমের বামদিকে একটি ক্ষুদ্র দ্বারে প্রবেশ করিলেন। সেই দ্বারের পশ্চাতে উলঙ্গ কৃপাণ হস্তে একজন হাবসী খোজা পাহারা দিতেছিল, আসফ্ খাঁর অনুচর তাহাকে উজীরের মোহরাঙ্কিত পত্র দেখাইল, খোজা পথ ছাড়িয়া দিল। দ্বারের পশ্চাতে সোপানশ্রেণী ছিল, তাহা অবলম্বন করিয়া ময়ূখ উপরে উঠিলেন। সম্মুখে রক্তবর্ণপ্রস্তরনির্ম্মিত দ্বিতল গৃহ, তাহাতে অসংখ্য চোপদার, হরকরা, খোজা ও পরিচারক অপেক্ষা করিতেছিল। ময়ূখ ও তাঁহার সঙ্গী সে মহল পার হইয়া দেওয়ান-ই-খাসের চত্তরে প্রবেশ করিলেন। প্রবেশ দ্বারে খাস্ চৌকীর দারোগা সায়েস্তা খাঁ অপেক্ষা করিতেছিলেন, ময়ূখকে তাঁহার নিকট পৌঁছাইয়া দিয়া তাঁহার সঙ্গী চলিয়া গেল।
সায়েস্তা খাঁ ময়ূখের আপাদ মস্তক নিরীক্ষণ করিয়া একজন খোজাকে ইঙ্গিত করিলেন। খোজা ময়ূখকে লইয়া দেওয়ান-ই-খাসের চত্তরে প্রবেশ করিল। আগ্রাদুর্গের পাণি ফটকের পশ্চাতে শ্বেতমর্ম্মরনির্ম্মিত প্রশস্ত ছাদ, তাহার একদিকে একখানি কৃষ্ণমর্ম্মরনির্ম্মিত ও অপরদিকে শুভ্রমর্ম্মরনির্ম্মিত এক একখানি সুখাসন। ছাদের উত্তরদিকে দেওয়ান-ই-খাস, শ্বেতমর্ম্মরনির্ম্মিত ক্ষুদ্র গৃহ। এই ক্ষুদ্র গৃহের প্রাচীরে যত বহুমূল্য প্রস্তর ও মণিমুক্তা চিত্রাঙ্কনের জন্য সন্নিবিষ্ট হইয়াছিল, লোকে বলিত যে তাহা ব্যয় করিলে আর একটা আগ্রা সহর নির্ম্মিত হইতে পারে। বাদশাহ্ তখনও আসেন নাই, দেওয়ান-ই-খাসের সম্মুখে উজীর আসফ্ খাঁ মীরবখ্শী নূরউল্লাখাঁর সহিত পরামর্শ করিতেছিলেন। ময়ূখ আসফ্ খাঁকে অভিবাদন করিয়া প্রাচীরের চিত্র পরীক্ষা করিতে লাগিলেন।
পান্নার ময়ূর, চুনি ও পোখ্রাজ-খচিত বিচিত্র পুচ্ছ বিস্তার করিয়া মুক্তার আঙ্গুর গুচ্ছে চঞ্চু দিয়া আঘাত করিতেছে। সে চিত্র এখন আর নাই, বহুপূর্ব্বে জাঠ দস্যু সুরজমল তাহা লুণ্ঠন করিয়া লইয়া গিয়াছে। ময়ূখ চিত্র দেখিতেছেন, এমন সময়ে এক ব্যক্তি তাঁহার স্কন্ধে হস্তার্পণ করিল। ময়ূখ ফিরিয়া দেখিলেন যে তাঁহার পার্শ্বে আসদ্ খাঁ দাঁড়াইয়া আছেন। ময়ূখ ফিরিয়া দাঁড়াইয়া অভিবাদন করিলেন, আসদ্ খাঁ তাঁহাকে আলিঙ্গন করিয়া কহিলেন, “ময়ূখ, তুমি দেবেন্দ্রনারায়ণের পুত্র, আমার জীবনদাতা, বহুদিন পরে তোমার দর্শন পাইয়া আজ বড়ই আনন্দ লাভ করিয়াছি। তুমি কি করিবে?”
“বাদশাহের অধীনে চাকরী পাইলে গ্রহণ করিব।”
“এতদিন কোথায় ছিলে?”
ময়ূখ সপ্তগ্রামের যুদ্ধের পরে তাহার যে অবস্থা হইয়াছিল, তাহা যতদূর জানিতেন বলিলেন, তখন আসদ্ খাঁ পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “ময়ূখ, তুমি কত দিন আগ্রায় আসিয়াছ?”
“প্রায় তিন বৎসর হইল।”
“এতদিন কি করিতেছিলে?”
“জীবিক অর্জ্জনের উপায় অন্বেষণ করিতেছিলাম। বাদশাহ দরবারে কোনও পরিচিত ব্যক্তি ছিল না বলিয়া এতদিন কিছু সুবিধা করিতে পারি নাই।”
“আজি কি উপায়ে আসিলে?”
“সেই বৈষ্ণবী হজ্রৎ বাদশাহ বেগমকে সূঁচের কাজ শিখাইতে যায়, তিনি নবাব আসফ্ খাঁকে পত্র দিয়াছিলেন, সেই জন্য উজীর স্বয়ং আমাকে সঙ্গে করিয়া আনিয়াছেন।”
“অদ্য খোদা ফিরিঙ্গি হার্ম্মাদের বিনাশের উপায় জুটাইয়া দিয়াছেন, নূতন ফিরিঙ্গি দিয়া পুরাতন ফিরিঙ্গি বিনাশ করিব।”
ময়ূখ বিম্মিত হইয়া আসদ্ খাঁর মুখের দিকে চাহিলেন। সহসা নাকারাখানায় নাকারা বাজিয়া উঠিল, আসদ্ খাঁ ফিরিয়া দাঁড়াইলেন। ময়ূখ দেখিলেন যে, দেওয়ান-ই-খাসের পশ্চাতে একটি সুবর্ণনির্ম্মিত কবাট খুলিয়া গিয়াছে, বাদশাহ্ ক্ষুদ্র হস্তিদন্তনির্ম্মিত তঞ্জামে আরোহণ করিয়া প্রবেশ করিতেছেন। সমবেত সভাসদ্গণ তিন বার ভূমি স্পর্শ করিয়া অভিবাদন করিল, তাহা দেখিয়া ময়ূখও তদ্রূপ করিলেন। বাদশাহ্ উপবেশন করিলে উজীর আসফ্ খাঁ, বখ্শী নূরউল্লা খাঁ, আসদ্ খাঁ, শাহ্নওয়াজ খাঁ, প্রভৃতি সভাসদ্গণ সিংহাসন বেষ্টন করিয়া দাঁড়াইলেন। আসফ্ খাঁ সর্ব্ব প্রথমে ময়ূখকে বাদশাহের সম্মুখে উপস্থিত করিলেন। বাদশাহ শাহ্জহান প্রসন্নবদনে কহিলেন, “বাঙ্গালী বাহাদুর, তোমার কথা বিস্মৃত হই নাই, কিন্তু তোমার অগ্রে ফিরিঙ্গি।” আসফ্ খাঁ ষিবণ্ণ বদনে কহিলেন, “জনাব, এই যুবা আগ্রা সহরে তিন বৎসর বেকার বসিয়া আছে, ইহার পিতা জিন্নৎমকানী বাদশাহ্ জহাঙ্গীরের জমানায় সরকারের বহুৎ খিদ্মৎ করিয়াছে—”
“সাহেব, অদ্যই ইহার ব্যবস্থা করিব। ফিরিঙ্গি দূত কোথায়?”
“উপস্থিত আছে।”
অল্পক্ষণ পরে সায়েস্তা খাঁ জনৈক বয়স্ক ফিরিঙ্গিকে লইয়া দেওয়ান-ই-খাসে প্রবেশ করিলেন। ফিরিঙ্গি ভূমি চুম্বন করিয়া বাদশাহকে অভিবাদন করিল। উজীর আসফ্ খাঁ জিজ্ঞাসা করিলেন, “ফিরিঙ্গি, তোমার নাম কি?”
ফিরিঙ্গি পুনরায় অভিবাদন করিয়া কহিল,—“আমার নাম ওয়াইল্ড, আমি সুরট বন্দরে ইংরাজ কোম্পানীর প্রধান।”
“তোমরা কি পর্ত্তুগীজ ফিরিঙ্গির দুষমন্?”
“হাঁ”
“তোমরা ঈসাই?”
“হাঁ, তবে পর্ত্তুগীজদের ন্যায় নহে।”
“যদি শাহানশাহ্ বাদশাহের হুকুম তামিল করিতে পার, তাহা হইলে তোমাদের অভীষ্ট সিদ্ধ হইবে।”
বাদশাহ্ জিজ্ঞাসা করিলেন, “আসদ্ খাঁ, তোমার সহিত সপ্তগ্রামে ফিরিঙ্গির বিবাদ হইয়াছিল কেন?”
“জহাপনা, এক কাফের পাদ্রীর নিকট হইতে পলাইয়া বাদশাহী বন্দরে আশ্রয় লইয়াছিল, পাদ্রী ফিরিঙ্গি সিপাহী লইয়া তাহাকে ধরিয়া লইয়া যাইবার উদ্যোগ করিয়াছিল, আমি বাধা দিয়াছিলাম বলিয়া সে আমাকেও আক্রমণ করিয়াছিল। সেই দিন দেবেন্দ্রনারায়ণের পুত্র আমার জীবন রক্ষা করিয়াছিল। কাফেরকে ধরিয়া লইয়া যাইতে পারে নাই বলিয়া ফিরিঙ্গি ফৌজ রাত্রিকালে বন্দর আক্রমণ করিয়া লুট করিয়াছিল। তখনও এই যুবা সপ্তগ্রাম রক্ষা করিয়াছিল।”
“আপনি সেই রাত্রিতে ফিরিঙ্গির সহিত লড়াই করিয়াছিলেন?”
“হাঁ, নবাব শাহ্নওয়াজ খাঁও সেই রাত্রিতে উপস্থিত ছিলেন।”
শাহ্নওয়াজ খাঁ অগ্রসর হইয়া আসিলেন, আসফ্ খাঁ জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি ফিরিঙ্গিদের হাঙ্গামার দিনে সপ্তগ্রামে ছিলেন?”
“হাঁ, আমি ও আমার পুত্রবধূ সেই রাত্রিতে ফিরিঙ্গিদিগের হস্তে বন্দী হইয়াছিলাম। সপ্তগ্রামের শেঠ গোকুলবিহারীর আক্রমণে ফিরিঙ্গি হারিয়া পলাইয়া গিয়াছিল; পরদিন সপ্তগ্রামের নিম্নে ফিরিঙ্গিরা আমার বজরা মারিয়া অামাকে ও আমার পুত্রবধূকে ও আমার পালিতা কন্যাকে হুগ্লীতে ধরিয়া লইয়া গিয়াছিল। ফিরিঙ্গি আমীর-উল্-বহর ডিসুজা দয়া করিয়া আমাদিগকে ছাড়িয়া দিয়াছে।”
আসফ্ খাঁ ফিরিঙ্গি দূতকে কহিলেন,“আপনি শুনিলেন?”
“শুনিলাম।”
সহসা আসদ্ খাঁ বাদশাহের নিকটে আসিয়া অভিবাদন করিয়া কহিলেন, “শাহন্ শাহ্ বাদশাহের অনুমতি হইলে দাস কিঞ্চিৎ নিবেদন করিতে চাহে।”
বাদশাহ্ মস্তক সঞ্চালন করিয়া অনুমতি দিলেন, তখন আসদ্ খাঁ বৃদ্ধ উজীর আসফ্ খাঁকে কহিলেন, “জনাব, ইংরাজ বণিকের দূত সমস্ত কথা শুনেন নাই, নবাব শাহ্নওয়াজ খাঁ হিন্দুস্থানের একজন প্রসিদ্ধ ওমরাহ, আমি বাদশাহের অনুচর; সামান্য ফিরিঙ্গি বণিক্ যখন আমাদের উপর এমন অত্যাচার করিতে পারে, তখন সুবা বাঙ্গালার শত শত দরিদ্র প্রজা তাহাদিগের নিকট কি ব্যবহার পায় তাহা বিচারযোগ্য। আমার দুইজন সাক্ষী আছে।”
বাদশাহ্ এতক্ষণ নীরব ছিলেন, তিনি সহসা আসন ত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইলেন, তাঁহার মস্তক হইতে মণিমুক্তাখচিত বহুমূল্য উষ্ণীব খুলিয়া পড়িল, শাহ্জহান সক্রোধে বলিলেন, “আসদ্ খাঁ, সাক্ষী অনিবার আবশ্যক নাই। আমি যখন শাহ্জাদা ছিলাম, তখন আমাকে অসহায় দেখিয়া এই ফিরিঙ্গিগণ আমার সমস্ত দাসদাসী বন্দী করিয়া আমাকে ও আমার স্ত্রীকে অত্যন্ত অপমান করিয়াছিল। আমি বাদশাহ্ হইয়াও তাহাদিগের সকলকে উদ্ধার করিতে পারি নাই।”
বাদশাহের ক্রোধ দেখিয়া আসদ্ খাঁ ভয়ে পশ্চাৎপদ চইলেন। বাদশাহ্ বলিতে লাগিলেন, “ফিরিঙ্গি পর্ত্তুগীজেরা পিতাকে বলিয়াছিল যে শাহ্জাদা খুর্রম বাদশাহের বিরুদ্ধে আমাদিগের নিকটে সাহায্য প্রার্থনা করিয়াছিলেন। আমরা সাহায্য না করায় তিনি মিথ্যা দোষারোপ করিয়াছিলেন। আমার পত্নীর দুইটি দাসী এখনও সপ্তগ্রামে বন্দী আছে। শীঘ্রই পর্ত্তুগীজ বণিকের দর্পচূর্ণ করিব; ওয়াইল্ড, তুমি আমাকে সাহায্য করিতে পার?”
“জহাপনার হুকুম।”
“পর্ত্তুগীজের জাহাজ দেখিলেই মারিবে, পর্ত্তুগীজের পণ্য দেখিলেই লুটিবে, তাহা হইলে সুবা বাঙ্গালা ও উড়িষ্যায় কুঠী খুলিতে পারিবে।”
সুরট বন্দরের ইংরাজ কোম্পানীর প্রধান সসম্মান অভিবাদন করিয়া কহিল, “বাদশাহের ফর্ম্মাণ পাইলেই পারি।”
“কল্য প্রভাতে ফর্ম্মাণ পাইবে।”
তখন ইংরাজ কোম্পানি পর্ত্তুগীজ বণিকের প্রতিদ্বন্দ্বী; আরব সমুদ্রে, পারস্য উপসাগরে ও সুরটে ইংরাজ বণিকের সহিত পর্ত্তুগীজগণের বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যুদ্ধ হইয়া গিয়াছে। বাদশাহের মুখে এই অপ্রত্যাশিত সুখ সংবাদ শুনিয়া ওয়াইল্ড সানন্দে তিনবার ভূমি চুম্বন করিয়া অভিবাদন করিল। বাদশাহ্ উজীরকে কহিলেন, “সাহেব, ফিরিঙ্গি দমন ফিদাইখাঁর কার্য্য নহে, কল্য কাসেমখাঁকে তলব করিবেন, দেবেন্দ্রনারায়ণের পুত্র হাজারী মন্সবদার।”
সকলে অভিবাদন করিলেন; তঞ্জাম আসিল, বাদশাহ্ রঙ্গমহলে প্রবেশ করিলেন ৷
ময়ূখ যখন গৃহে ফিরিতেছিলেন তখন অন্ধকারে এক ব্যক্তি তাঁহার মস্তকে আঘাত করিল, তিনি চেতনা হারাইয়া পড়িয়া গেলেন। তখন একজন পুরুষ ও একটি রমণী তাঁহার দেহ একখানি ছোট নৌকায় তুলিল এবং যমুনা বাহিয়া দুর্গের পাণি ফটকে প্রবেশ করিল। অন্ধকারে লুকাইয়া আর এক ব্যক্তি ময়ূখের গতিবিধি লক্ষ্য করিতেছিল, নৌকা পাণি ফটকে প্রবেশ করিতে দেখিয়া সে সহরে উজীর আসফখাঁর গৃহে সংবাদ দিতে চলিল।