১৮. আসহাবে কাহাফ-এর ঘটনা

আসহাবে কাহাফ-এর ঘটনা

আল্লাহ তাআলা বলেন :

তুমি কি মনে করা যে, গুহা ও রাকীম (পর্বত বা ফলক)-এর অধিবাসীরা আমার নির্দশনাদির মধ্যে বিস্ময়কর? যখন যুবকরা গুহায় আশ্রয় নিল তখন তারা বলেছিল, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি নিজ থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান করুন এবং আমাদের জন্যে আমাদের কাজকর্ম সঠিক ভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন। অতঃপর আমি ওদেরকে গুহায় কয়েক বছর ঘুমন্ত অবস্থায় রাখলাম। পরে আমি ওদেরকে জাগরিত করলাম জানার জন্যে যে, দুদলের মধ্যে কোনটি ওদের অবস্থিতি কাল সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে। আমি তোমার নিকট ওদের বৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করছি। ওরা ছিল কয়েকজন যুবক। ওরা ওদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনেছিল এবং আমি ওদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেছিলাম।

এবং আমি ওদের চিত্ত দৃঢ় করে দিলাম। ওরা যখন উঠে দাঁড়াল তখন বলল, আমাদের প্রতিপালক আকাশরাজি ও পৃথিবীর প্রতিপালক। আমরা কখনই তাঁর পরিবর্তে অন্য কোন ইলাহকে আহবান করব না। যদি করে বসি, তবে তা অত্যন্ত গৰ্হিত হবে। আমাদেরই এই স্বজাতিরা তার পরিবর্তে অনেক ইলাহ গ্ৰহণ করেছে। তারা এ সকল ইলাহ সম্বন্ধে স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করে না কেন? যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তার চাইতে অধিক জালিম আর কে?

তোমরা যখন বিচ্ছিন্ন হলে ওদের থেকে এবং ওরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের উপাসনা করে তাদের থেকে তখন তোমরা গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করা। তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য তাঁর দয়া বিস্তার করবেন এবং তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের কাজকর্মকে ফলপ্রসূ করার ব্যবস্থা করবেন।

তুমি দেখতে পেতে-ওরা গুহার প্রশস্ত চত্বরে অবস্থিত, সূর্য উদয়কালে ওদের গুহার দক্ষিণ পার্শ্বে হেলে যায় এবং অস্তকালে ওদেরকে অতিক্রম করে বামপার্শ্ব দিয়ে। এ সমস্ত আল্লাহর নিদর্শন আল্লাহ যাকে সৎপথে পরিচালিত করেন, সে সৎপথ প্রাপ্ত এবং তিনি যাকে পথভ্ৰষ্ট করেন, তুমি কখনই তার কোন পথ প্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবে না। তুমি মনে করতে ওরা জাগ্ৰত, কিন্তু ওরা ছিল নিদ্রিত। আমি তাদেরকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাতাম ডান দিকে ও বামে এবং ওদের কুকুর ছিল সম্মুখের পা দুটো গুহাদ্বারে প্রসারিত করে। তাকিয়ে ওদেরকে দেখলে তুমি পেছনে ফিরে পলায়ন করতে ও ওদের ভয়ে আতংকগ্ৰস্ত হয়ে পড়তে। এবং এভাবেই আমি ওদেরকে জাগরিত করলাম যাতে ওরা পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ওদের একজন বলল, তোমরা কতকাল অবস্থান করেছ? কেউ কেউ বলল, একদিন অথবা একদিনের কিছু অংশ। কেউ কেউ বলল, তোমরা কতদিন অবস্থান করেছ তা তোমাদের প্রতিপালকই ভাল জানেন।

এখন তোমাদের একজনকে তোমাদের এই মুদ্রাসহ নগরে প্রেরণ করা সে যেন দেখে কোন খাদ্য উত্তম এবং তা হতে যেন কিছু তোমাদের জন্যে নিয়ে আসে। সে যেন বিচক্ষণতার সাথে কাজ করে ও কিছুতেই যেন তোমাদের সম্বন্ধে কাউকেও কিছু জানতে না দেয়। ওরা যদি তোমাদের বিষয় জানতে পারে তবে তোমাদেরকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করবে অথবা তোমাদেরকে ওদের ধর্মে ফিরিয়ে নিবে এবং সে ক্ষেত্রে তোমরা কখনই সাফল্য লাভ করবে না। এবং এভাবে আমি মানুষকে তাদের বিষয় জানিয়ে দিলাম, যাতে তারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতে কোন সন্দেহ নেই।

যখন তারা তাদের কর্তব্য বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করছিল তখন অনেকে বলল, ওদের ওপর সৌধ নির্মাণ কর। ওদের প্রতিপালক ওদের বিষয়ে ভাল জানেন। তাদের কর্তব্য বিষয়ে যাদের মত প্রবল হল তারা বলল, আমরা তো নিশ্চয়ই ওদের পার্শ্বে মসজিদ নির্মাণ করব। কেউ কেউ বলবে, ওরা ছিল তিনজন, ওদের চতুর্থটি ছিল ওদের কুকুর এবং কেউ কেউ বলবে ওরা ছিল পাঁচজন, ওদের ষষ্ঠটি ছিল ওদের কুকুর। অজানা বিষয়ে অনুমানের ওপর নির্ভর করে। আবার কেউ কেউ বলবে, ওরা ছিল সাত জন, ওদের অষ্টমটি ছিল ওদের কুকুর। বল, আমার প্রতিপালকই ওদের সংখ্যা ভাল জানেন, ওদের সংখ্যা অল্প কয়েকজনই জানে। সাধারণ আলোচনা ব্যতীত আপনি ওদের বিষয়ে বিতর্ক করবেন না এবং ওদের কাউকে ওদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন না। কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না। আমি এটি আগামীকাল করব। আল্লাহ ইচ্ছা করলে। এ কথা না বলে। যদি ভুলে যাও তবে তোমার প্রতিপালককে স্মরণ করবে এবং বলবে, সম্ভবত আমার প্রতিপালক আমাকে ওটি অপেক্ষা সত্যের নিকটতর পথনির্দেশ করবেন। ওরা ওদের গুহায় ছিল তিনশ বছর আরও নয় বছর। তুমি বল, তারা কতকাল ছিল তা আল্লাহই ভাল জানেন, আকাশরাজি ও পৃথিবীর অজ্ঞাত বিষয়ের জ্ঞান তারই। তিনি কত সুন্দর দ্রষ্টা ও শ্রোতা! তিনি ব্যতীত ওদের অন্য কোন অভিভাবক নেই। তিনি কাউকে তার কর্তৃত্বে শরীক করেন না। (১৭, কাহাফ : ৯-২৬)

আসহাবে কাহাফ ও যুল-কারনাইন সম্পর্কে আয়াত নাযিল হওয়ার পটভূমি সম্বন্ধে মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক ও অন্যরা সীরাত গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, কুরায়শগণ মদীনার ইয়াহুদীদের নিকট একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণ করেছিল। উদ্দেশ্য এই যে, ইয়াহুদীগণ তাদেরকে কতক প্রশ্ন শিখিয়ে দিবে। কুরায়শগণ সেগুলো রাসূলুল্লাহ (সা)-কে জিজ্ঞেস করবে এবং এর দ্বারা তারা তাকে পরীক্ষা করবে। ইয়াহুদীগণ বলেছিল যে, তোমরা তাকে এমন এক সম্প্রদায় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে, যারা অতীতেই বিলীন হয়ে গিয়েছে। যার ফলে ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে জানা যায় না। আর প্রশ্ন করবে। পৃথিবী প্ৰদক্ষিণকারী একজন লোক সম্পর্কে। এবং জিজ্ঞেস করবে: রূহ সম্পর্কে।

এই প্রেক্ষাপটে আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেন : তারা BB BB BBB BBDB BB S AAAAA AAASAAA AAAA AAAT TLSkASB BBB যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। আর এখানে বললেন :

তুমি কি মনে করা যে, গুহা ও রাকীমের অধিবাসীরা আমার নিদর্শনাদির মধ্যে বিস্ময়কর?

অর্থাৎ আমি আপনাকে যেসব অভূতপূর্ব আশ্চর্যজনক বিষয়াদি, উজ্জ্বল নির্দশনাদি ও বিস্ময়কর ঘটনাবলী সম্পর্কে অবহিত করেছি, সে সবের তুলনায় গুহা ও রাকীমের অধিবাসীদের

ংবাদ ও ঘটনা মোটেই আশ্চর্যজনক নয়।

এখানে কাহফ অর্থ পর্বত গুহা। শুআয়ব আল জুবাঈ বলেন, গুহাটির নাম হায়যুমা। রাকীম শব্দ সম্পর্কে হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, রাকীম দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে, তা আমার জানা নেই। :

কেউ কেউ বলেন, রাকীম অর্থ লিখিত ফলক-যাতে সেখানে আশ্রয় গ্রহণকারীদের নাম এবং তাদের ঘটনাবলী লিখিত রয়েছে। পরবর্তী যুগের লোকজন। এটি লিখে রেখেছিল। ইব্‌ন জারীর ও অন্যান্যগণ এ অভিমত সমর্থন করেন। কেউ কেউ বলেন, রাকীম হল সেই পর্বতের নাম, যে পর্বতের গুহায় তারা আশ্রয় নিয়েছিলেন।।

ইব্‌ন আব্বাস (রা) ও শুআয়ব আল জুবাই বলেন, ঐ পর্বতের নাম বিনাজলুস। কারো কারো মতে, রাকীম হচ্ছে ঐ গুহার পাশে অবস্থিত একটি উপত্যকার নাম। অন্য কারো কারো মতে, এটি ঐ এলাকার একটি জনপদের নাম।

শুআয়ব আল জুবাঈ বলেন, তাদের কুকুরের নাম ছিল হামরান। কতক তাফসীরকার বলেছেন যে, তারা ছিলেন। হযরত ঈসা (আ)-এর পরবর্তী যুগের লোক এবং তারা খৃষ্টান ছিলেন। কিন্তু তাদের সম্পর্কে ইয়াহুদীদের গুরুত্ব আরোপ এবং তাদের সম্পর্কে সংবাদ সংগ্রহের আগ্রহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তারা হযরত ঈসা (আ)-এর পূর্ববতী যুগের লোক। আয়াতের বাচনভঙ্গি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, তাদের সম্প্রদায়ের লোকজন ছিল মুশরিক। তা বা মূর্তিপূজা করত। বহু তাফসীরকার ও ইতিহাসবিদ অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, তারা বাদশাহ দাকরানূমের সময়ের অভিজাত বংশীয় লোক ছিলেন। কারো কারো অভিমত যে, তারা রাজপুত্র ছিলেন।

ঘটনাচক্ৰে তারা সম্প্রদায়ের উৎসবের দিনে একত্রিত হয়। তাদের সম্প্রদায়ের লোকেরা সেখানে যে মূর্তিদেরকে সিজদা করছে এবং প্রতিমাগুলোকে সম্মান প্রদর্শন করছে, তা তারা প্রত্যক্ষ করে। তখন তারা গভীর মনোযোগের সাথে তা পর্যালোচনা করেন। আল্লাহ তাআলা। তাদের অন্তরের উদাসীনতার পর্দা ছিন্ন করে দেন এবং তাদের মনে সত্য ও হিদায়াতের উন্মেষ ঘটান। ফলে তারা উপলব্ধি করেন যে, তাদের সম্প্রদায়ের এসব কাজকর্ম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যুবকগণ তাদের ওই ধর্ম পরিত্যাগ করেন এবং এক আল্লাহর ইবাদতে আত্মনিয়োগ করেন।

কেউ কেউ বলেন যে, যুবকদের প্রত্যেকের মনে আল্লাহ তাআলা তাওহীদ ও হিদায়াতের অনুভূতি সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। তারপর তারা সকলেই লোকজনের সংসর্গ ত্যাগ করে এক নির্জন এলাকায় এসে উপস্থিত হন। সহীহ বুখারীতে এ বিষযে একটি বিশুদ্ধ হাদীছ উদ্ধৃত হয়েছে। সেটি এই :

রূহগুলো সুবিন্যস্ত বাহিনী স্বরূপ। তাদের মধ্যে যেগুলো পূর্ব-পরিচিত, সেগুলো বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আর যারা পরস্পর অপরিচিত তাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। তখন তারা একে অপরের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান বর্ণনা করে। তখন জানা যায় যে, তারা সবাই নিজ নিজ গোত্র ছেড়ে এসেছে এবং ওদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে আপনি দীন রক্ষার্থে পালিয়ে এসেছে। ফিতনা, বিশৃংখলা ও পাপাচারের বিস্তুতিকালে এভাবে সমাজ ত্যাগ করা শরীয়ত সম্মত।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

আমি তোমার নিকট ওদের বৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করছি। ওরা ছিল কয়েকজন যুবক। ওরা ওদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনেছিল এবং আমি ওদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেছিলাম। এবং আমি ওদের চিত্ত দৃঢ় করে দিলাম, ওরা যখন ওঠে দাঁড়াল তখন বলল, আমাদের প্রতিপালক আকাশরাজি ও পৃথিবীর প্রতিপালক! আমরা কখনই তাঁর পরিবর্তে অন্য কোন ইলাহকে আহবান করব না, যদি করে বসি তবে তা অত্যন্ত গৰ্হিত হবে। আমাদের এই স্বজাতিগণ, তার পরিবর্তে অনেক ইলাহ গ্ৰহণ করেছে। এরা এ সকল ইলাহ সম্বন্ধে স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করে না কেন? অর্থাৎ তারা যে পথ অবলম্বন করেছে এবং যে অভিমত অনুসরণ করেছে তার যথার্থতা সম্পর্কে প্রকাশ্য দলীল উপস্থাপন করে না কেন?

যে ব্যক্তি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তার চাইতে অধিক জালিম আর কে? তোমরা যখন তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হলে এবং ওরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদত করে তাদের থেকে অর্থাৎ দীনের প্রশ্নে তোমরা যখন তাদের থেকে পৃথক হয়ে গেলে এবং তারা আল্লাহ ব্যতীত যেগুলোর উপাসনা করে সেগুলোকে ত্যাগ করলে। কারণ তারা আল্লাহর সাথে শরীক সাব্যস্ত করত। যেমন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ বলেছিলেন?

তোমরা যেগুলোর পূজা কর তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক আছে শুধু তাঁরই সাথে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই আমাকে সৎপথ দেখাবেন। এ যুবকরাও অনুরূপ বলেছিলেন। (৪৩ যুখরুফ ২৬-২৭) আয়াতের ব্যাখ্যায় কেউ কেউ বলেন যে, দীনের প্রশ্নে তোমরা যেমন তোমাদের সম্প্রদায় থেকে পৃথক হয়ে গিয়েছ, দৈহিকভাবেও তোমরা তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাও, যাতে ওদের অনিষ্ট থেকে তোমরা নিরাপদ থাকতে পার।

তখন তোমরা গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করা। তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে তাঁর দয়া বিস্তার করবেন এবং তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের কাজ কর্মকে ফলপ্ৰসূ করার ব্যবস্থা

করবেন। অর্থাৎ তার রহমতের পর্দা দ্বারা তোমাদেরকে ঢেকে দিবেন। তোমরা তার নিরাপত্তা ও আশ্রয়ে থাকবে। এবং তিনি তোমাদের পরিণাম কল্যাণময় করে দিবেন। যেমন হাদীছ শরীফে এসেছে :

হে আল্লাহ! সকল কর্মে আমাদেরকে কল্যাণময় পরিণতি দান করুন এবং দুনিয়ার লাঞ্ছনা। ও আখিরাতের আযাব থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন।

এরপর তারা যে গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন সে সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন যে, গুহাটি উত্তরমুখী ছিল। তার পশ্চিম দিকে ঢালু ছিল। কিবলার দিকে ঢালু উত্তরমুখী স্থান অধিক কল্যাণকর স্থান রূপে বিবেচিত হয়ে থাকে।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

তুমি দেখতে পেতে, ওরা গুহার চত্বরে অবস্থিত। সূর্য উদয়কালে ওদের গুহার ডান দিকে হেলে যায় এবং অস্তকালে ওদেরকে অতিক্রম করে বাম পার্শ্ব দিয়ে। অর্থাৎ গ্ৰীষ্মকালে সূর্য উদিত হওয়ার সময় তাদের গুহার পশ্চিম দিকে আলো ছড়ায়, তারপর সূর্য যতই উপরে উঠতে থাকে, ক্ৰমান্বয়ে ততই ঐ আলো গুহা থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। এটি হল সূর্যের ডান দিক দিয়ে অতিক্রম করা। অতঃপর সূর্য মধ্য আকাশে উত্থিত হয় এবং গুহ থেকে ঐ আলো বেরিয়ে যায়। তারপর যখন অস্ত যেতে শুরু করে তখন পূর্ব পাশ দিয়ে অল্প অল্প করে আলো প্রবেশ করতে থাকে। অবশেষে সূর্য অস্ত যায়। এ ধরনের স্থানে এরূপই দেখা যায়। তাদের গুহায় মাঝে মধ্যে সূর্যের আলো প্রবেশের এই ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ছিল যাতে ঐ গুহার আবহাওয়া দূষিত না হয়।

ওরা গুহার প্রশস্ত চত্বরে অবস্থিত। এ সব আল্লাহর নিদর্শন। অর্থাৎ তাদের পানাহার না করে, খাদ্য দ্রব্য গ্ৰহণ না করে শতশত বৎসর এ অবস্থায় বিদ্যমান থাকাটা আল্লাহ তাআলার নিদর্শনাদির অন্যতম এবং তার মহা শক্তির প্রমাণ স্বরূপ।

আল্লাহ যাকে সৎপথে পরিচালিত করেন সে সৎপথ প্রাপ্ত এবং তিনি যাকে পথভ্ৰষ্ট করেন। তুমি কখনই তার কোন পথ প্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবে না। তুমি মনে করতে তারা ঘুমন্ত অথচ তারা জাগ্রত। এর ব্যাখ্যায় কেউ কেউ বলেন, তা এ জন্যে যে, তাদের চোখ খোলা ছিল, যাতে সুদীর্ঘকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকার ফলে চক্ষু নষ্ট হয়ে না যায়।

আমি ওদেরকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাতাম ডানে, বামে-এর ব্যাখ্যায় কেউ কেউ বলেন, বৎসরে একবার করে তাদের পার্শ্ব পরিবর্তন করানো হত। এ পাশ থেকে ও পাশে ফেরানো

হত। হতে পারে বৎসরে একাধিকবারও তা ঘটতো। আল্লাহই সম্যক অবগত।

তাদের কুকুর ছিল সম্মুখের পা দুটো গুহার মুখের দিকে প্রসারিত করে। শুআয়ব আল জুবাই বলেন, তাদের কুকুরের নাম ছিল হামরান। অন্য এক তাফসীরকার বলেন, …– অর্থ দরজার চৌকাঠ। অর্থাৎ যুবকগণ যখন নিজ নিজ গোত্র থেকে একাকী বেরিয়ে এসেছিলেন, তখন যে কুকুরটি তাদের সাথে এসেছিল সেটি শেষ পর্যন্ত তাদের সাথে থেকে যায়। এটি গুহার মধ্যে প্রবেশ করেনি। বরং দুহাত গুহামুখে রেখে গুহার প্রবেশ পথে বসেছিল। এটি ঐ কুকুরের অনুপম শিষ্টাচার এবং যুবকদের প্রতি সন্ত্ৰমবোধের নিদর্শন। কারণ সাধারণত যে ঘরে কুকুর থাকে। সে ঘরে রহমতের ফিরিশতা প্রবেশ করেন না। সাহচর্য ও আনুগত্যের স্বভাবতই একটা প্রভাব থাকে। তাই যুবকদের অনুসরণ করতে গিয়ে কুকুরটিও তাদের সাথে অমর হয়ে থাকে। কারণ যে যাকে ভালবাসে সে তার সৌভাগ্যের অংশীদার হয়। একটি কুকুরের ব্যাপারে যখন এমন হল তখন সম্মানের পাত্র কোন পূণ্যবানের অনুসরণকারীর ক্ষেত্রে কী হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

বহু ধমীয় বক্তা ও তাফসীরকার উক্ত কুকুর সম্পর্কে অনেক লম্বা চওড়া কাহিনীর উল্লেখ করেছেন। এগুলোর অধিকাংশই ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে নেয়া এবং এর অধিকাংশ নির্জলা মিথ্যা। এতে কোন ফায়দাও নেই। যেমন কুকুরটির নাম ও রঙ বিষয়ে তাদের ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা।

এ গুহাটি কোথায় অবস্থিত, এ নিয়ে উলামায়ে কিরামের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তাদের অনেকে বলেন, এটি আয়লা অঞ্চলে অবস্থিত। কেউ বলেন, এটির অবস্থান নিনোভা এলাকায়। কারো মতে, কলকা অঞ্চলে এবং কারো মতে রোমকদের এলাকায়। শেষ অভিমতটিই অধিক যুক্তিসংগত।

আল্লাহ তাআলা তাদের কাহিনীর অধিক কল্যাণকর অংশটি এমন প্ৰাঞ্জলভাষায় বর্ণনা করলেন এবং যেন শ্রবণকারী তা প্রত্যক্ষ করছে এবং নিজের চোখে তাদের গুহার অবস্থা, গুহার মধ্যে তাদের অবস্থান, ওদের পার্শ্ব পরিবর্তন এবং তাদের গুহা মুখে হাত প্রসারিত করে উপবিষ্ট কুকুর স্বচক্ষে দেখছে। এরপর আল্লাহ তাআলা বলেন :

তুমি যদি ওদেরকে তাকিয়ে দেখতে তবে পিছনে ফিরে পালাতে এবং ওদের ভয়ে আতংকগ্ৰস্ত হয়ে পড়তে অর্থাৎ তারা যে পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে এবং যে গুরুগম্ভীর ও ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তার জন্য। সম্ভবত এ সম্বোধনটি সকল মানুষের জন্যে, শুধুমাত্র প্রিয় নবী (সা)-এর জন্যে নয়। যেমন আল্লাহ তাআলার বাণী ৩। … It_1 , এ1<, L_n : সুতরাং এর পরে কিসে তোমাকে কৰ্মফল সম্বন্ধে অবিশ্বাসী করে? এ আয়াতে তোমাকে বলতে সাধারণভাবে অবিশ্বাসী মানবদেরকে বুঝানো হয়েছে। নবী করীম (সা)-কে নয়। কারণ, মানুষ সাধারণত ভীতিকর দৃশ্য দেখলে পালিয়ে যায়। এ জন্যেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন :

এতে বুঝা যায় যে, শোনা আর দেখা এক কথা নয়। যেমন হাদীসেও এ বিষয়ে সমর্থন রয়েছে। কারণ, আলোচ্য ঘটনায় গুহাবাসীর ভীতিকর সংবাদ শুনে কেউ পালায়নি বা ভীতিও হয়নি।

তারপর আল্লাহ তাআলা বলেন যে, তিনি তাদেরকে জাগ্রত করলেন তাদের ৩০৯ বছর নিদ্রামগ্ন থাকার পর। জাগ্রত হওয়ার পর তাদের একে অন্যকে বলল :

তোমরা কতকাল অবস্থান করেছ? কেউ কেউ বলল, একদিন অথবা এক দিনের কিছু অংশ। অপর কেউ বলল, তোমরা কতকাল অবস্থান করেছ তা তোমাদের প্রতিপালকই ভাল

জানেন। তখন তোমাদের একজনকে তোমাদের এই মুদ্রাসহ নগরে প্রেরণ করা। অর্থাৎ তাদের সাথে থাকা রৌপ্য মুদ্রার দিকে ইঙ্গিত করে তা নিয়ে নগরে যেতে বলেছিল।

কথিত আছে যে, ওই নগরীর নাম ছিল দাফমূম।। Laux_1, <! L41 11, 18 সে গিয়ে দেখুক কোন খাদ্য উত্তম। অর্থাৎ কোনটি উৎকৃষ্টমানের।,,, x_i+1; 4, -অতঃপর তা থেকে যেন কিছু খাদ্য নিয়ে আসে তোমাদের জন্যে; অর্থাৎ যা তোমরা খেতে পারবে। এটি ছিল তাদের সংযম ও নির্লেভ মনোভাবের পরিচায়ক। —{1,1,-1, সে যেন বিচক্ষণতার সাথে কাজ করে। নগরে প্রবেশ করার সময়

এবং কিছুতেই যেন তোমাদের সম্বন্ধে কাউকে কিছু টের পেতে না দেয়। ওরা যদি তোমাদেরর বিষয় জানতে পারে। তবে তোমাদেরকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করবে অথবা তোমাদেরকে ওদের ধর্মে ফিরিয়ে নিবে এবং সেক্ষেত্রে তোমরা কখনই সাফল্য লাভ করবে না।

অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদেরকে ওদের বাতিল ধর্ম থেকে উদ্ধার করার পর তোমরা যদি পুনরায় ওদের মধ্যে ফিরে যাও তবে আর তোমাদের সাফল্য নেই। তারা এ জাতীয় কথাবার্তা এ জন্য বলেছিল যে, তারা মনে করেছিল তারা একদিন, একদিনের কতকাংশ কিংবা তার চাইতে কিঞ্চিতাধিক সময় নিদ্রামগ্ন ছিল। তারা যে ৩০০ বছরের অধিককাল ধরে নিদ্রামগ্ন ছিল এবং ইতিমধ্যে যে রাষ্ট্রক্ষমতার বহুবার হাত বদল হয়েছে, নগর ও নগরবাসীর পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, তাদের প্রজন্মের লোকদের যে মৃত্যু হয়েছে, অন্য প্রজন্ম এসেছে এবং তারাও চলে গিয়েছে, অতঃপর অন্য আরেক প্রজন্মের আবির্ভাব হয়েছে; তার কিছুই তারা তখনও আঁচ করে উঠতে পারেনি। এজন্যে তাদের একজন অর্থাৎ তীযুসীস যখন নিজের পরিচয় গোপন রাখার উদ্দেশ্যে ছদ্মবেশে গুহা থেকে বের হন এবং নগরে প্রবেশ করেন তখন তা তার নিকট অপরিচিত ঠেকে। নগরবাসীরা যেই তাকে দেখে অপরিচিত বোধ করে। তার আকার-আকৃতি কথাবার্তা এবং তার মুদ্রা সবই নগরবাসীর নিকট অপরিচিত ও আশ্চর্যজনক ঠেকে।

কথিত আছে যে, তারা তাকে তাদের রাজার নিকট নিয়ে যায় এবং তারা তাকে গুপ্তচর বলে সন্দেহ করে। কেউ কেউ তাকে শক্তিশালী শক্ৰ মনে করে তাব ক্ষতিকর আক্রমণেরও আশংকা করেছে। কতক ঐতিহাসিকের মতে, তিনি তখন তাদের নিকট থেকে পালিয়ে যান। আর কতক ঐতিহাসিকের মতে, তিনি নগরবাসীকে তার নিজের ও সাথীদের অবস্থার বিবরণ দেন। অতঃপর তারা তার সাথে তাদের অবস্থান ক্ষেত্রের দিকে রওযানা হয়, যাতে তিনি তাদেরকে নিজেদের অবস্থানস্থল দেখিয়ে দেন। নগরবাসী গুহার নিকট এসে পৌছার পর তীয়ুসীস সর্বাগ্রে তার সাথীদের নিকট প্রবেশ করেন। তিনি নিজেদের প্রকৃত অবস্থা এবং নিদ্রার মেয়াদ সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করেন। তখন তারা উপলব্ধি করে নেয় যে, মূলত এটি মহান আল্লাহর নির্ধারিত একটি বিষয়। কথিত আছে যে, এরপর তারা আবার নিদ্ৰামগ্ন হয়ে পড়েন। মতান্তরে এরপর তাদের ইন্তিকাল হয়ে যায়।

ঐ নগরবাসীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা ঐ গুহাটি খুজে পায়নি। গুহাবাসীদের অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে অনবহিত রেখে দেন। কেউ কেউ বলেন যে, গুহাবাসীদের ব্যাপারে তাদের মনে ভীতির সৃষ্টি হওয়ার দরুণ গুহায় প্রবেশ করতে পারেনি। গুহাবাসীদের ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয়া যায়, সে বিষয়ে নগরবাসীদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। তাদের একদল বলল (ALA, 14 1. I,। তাদের উপর সৌধ নির্মাণ করে দাও। অর্থাৎ গুহামুখ বন্ধ করে দাও, যাতে তারা সেখান থেকে বের হতে না পারে। বা কেউ তাদেরকে কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদের নিকট যেতে না পারে।

অবশ্যই ওদের উপর মসজিদ নির্মাণ করব। অর্থাৎ ইবাদতখানা তৈরি করব। এ সকল পূণ্যবান লোকদের পাশাপাশি থাকার কারণে তা বরকতময় হয়ে থাকবে। পূর্ববতী উম্মতদের মধ্যে এরূপ মসজিদ নির্মাণের রেওয়াজ প্রচলিত ছিল। আমাদের শরীয়তে এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা হল, ঐ হাদীস যা সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন :

আল্লাহ তাআলার লানত ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের ওপর, তারা তাদের নবীদের কবর সমূহকে মসজিদে পরিণত করেছে। ওরা যা করেছে রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর উম্মতদেরকে তা না করার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

এবং আমি মানুষকে এভাবে তাদের বিষয় জানিয়ে দিলাম-যাতে তারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতে কোন সন্দেহ নেই। ১৫:২১

বহু তাফসীরকার বলেছেন যে, এর অর্থ হল যাতে লোকজন জানতে পারে যে, পুনরুত্থান সত্য এবং কিয়ামত অনুষ্ঠানে কোন সন্দেহ নেই। মানুষ যখন অবগত হবে যে, গুহাবাসিগণ তিনশ বছরেরও অধিককাল ধরে নিদ্রামগ্ন ছিল তারপর কোন প্রকারের বিকৃতি ছাড়া যে অবস্থায় ছিলেন ঠিক সে অবস্থায়ই জাগ্রত হয়ে উঠেন। তখন তারা উপলব্ধি করতে পারবে যে, মহান সত্তা তাদেরকে কোন পরিবর্তন ছাড়া অক্ষুন্ন রাখার ক্ষমতা রাখেন, তিনি নিশ্চয়ই কীটদষ্ট ও বিচূর্ণ অস্থি বিশিষ্ট মানবদেহকে মৃত্যুর পর পুনরুখিত করার ক্ষমতা রাখেন। এটি এমন একটি বিষয় যাতে ঈমানদারগণ কোনই সন্দেহ পোষণ করে না।

তাঁর ব্যাপার শুধু এই, তিনি যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করেন। তিনি সেটিকে বলেন হও, ফলে তা হয়ে যায়। (৩৬ : ইয়াসীন : ৮২)

অবশ্য আয়াতের ব্যাখ্যা এমনও হতে পারে যে, যাতে তারা জানতে পারে বলতে গুহা বাসীগণকে বুঝানো হয়েছে। কারণ তাদের নিজেদের সম্পর্কে তাদের অবগত হওয়াটা তাদের সম্পর্কে অন্যের অবগত হওয়া অপেক্ষা অধিকতর প্রভাব বিস্তারকারী। আবার এমনও হতে পারে যে, আয়াতে তারা জানতে পারে বলতে সকলকেই বুঝানো হয়েছে। এরপর আল্লাহ তাআলা বলেন :

কেউ বলবে ওরা ছিল তিনজন, ওদের চতুর্থটি ছিল ওদের কুকুর এবং কেউ বলে ওরা ছিল পাঁচজন, ওদের ষষ্ঠটি ছিল ওদের কুকুর। অজানা বিষয়ে অনুমানের উপর নির্ভর করে। আবার কেউ কেউ বলবে, ওরা ছিল সাতজন, ওদের অষ্টমটি ছিল ওদের কুকুর। (সুরা কাহফ : ২২) তাদের সংখ্যা সম্পর্কে মানুষের তিনটি অভিমতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম দুটো অভিমত দুর্বল সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং তৃতীয়টিকে সত্য বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এতে বুঝা যায় তৃতীয় অভিমতটিই যথার্থ। এছাড়া অন্য কোন মত থাকলে তাও উল্লেখিত হতো। এ তৃতীয় মতটি যথার্থ না হলে তাও দুর্বল বলে চিহ্নিত করা হতো। তাই তৃতীয় মতটিই সঠিক। এ জাতীয় বিষয়ে বিতর্কে যেহেতু কোন উপকারিতা নেই সেহেতু আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসূল (স)-কে এই আদব শিক্ষা দিয়েছেন যে, মানুষ যখন এ জাতীয় বিষয়ে মতভেদ করবে। তখন তিনি যেন বলেন, আল্লাহই ভাল জানেন। এ জন্যেই আল্লাহ তাআলা বলেন, LA, JA J»J• $1 412.14L. A raw – 1.1 বল আমার প্রতিপালকই ওদের সংখ্যা ভাল জানেন। ওদের সংখ্যা অল্প কয়েকজনই জানে।।… …। … … = ১ + সাধারণ

আলোচনা ব্যতীত তুমি ওদের বিষয়ে বিতর্ক করবে না। অর্থাৎ সহজ ও স্বাভাবিক আলোচনা করুন। এ জাতীয় বিষয়বস্তু নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হবেন না। আর তাদের সম্বন্ধে কোন মানুষকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। এ কারণে শুরুতে আল্লাহ তাআলা তাদের সংখ্যা অস্পষ্ট রেখেছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন فنية أمئوا بر بهم …। ওরা ছিল কয়েকজন যুবক, ওরা ওদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনেছিল। তাদের সংখ্যা বর্ণনা যদি সমধিক গুরুত্বপূর্ণ হত তবে দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সকল বিষয়ে অবগত মহান আল্লাহ তাআলা সূরার প্রারম্ভেই ওদের সংখ্যার বিবরণ দিতেন। ولأتفولن لشى ابى فاعليا لك غدا إلأ أن يشاء,46915 itكالة HR et اثة د. 41।।। কখনও তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, আমি এটি আগামীকাল করব আল্লাহ ইচ্ছা করলে কথাটি না বলে। এটি একটি উচ্চস্তরের শিষ্টাচার যা আল্লাহ এ আয়াতে শিক্ষা দিয়েছেন এবং আপন সৃষ্টিকুলকেও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। অর্থাৎ কেউ যদি বলতে চায় যে, অবিলম্বে আমি এ কাজটি করব। তবে তার জন্যে শরীয়তের বিধান এই যে, সে ইনশাআল্লাহ বলবে। যাতে এতে তার সুদৃঢ় সংকল্প প্রকাশ পায়। কারণ আগামীকাল কি হবে তা তো বান্দা জানে না। সে এটাও জানে না যে, সৈ যে কাজটি করার সংকল্প করেছে তা তার তাকদীরে আছে কিনা ৷ এই ইনশাআল্লাহ শব্দটি শর্ত বলে গণ্য হবে না, বরং এটি তার দৃঢ় সংকল্প বলেই গণ্য হবে। এ জন্যে হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, বাক্যে ইনশাআল্লাহ শব্দটি এক বছর মেয়াদের মধ্যে যুক্ত করা চলে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এটি শীঘ্ৰতা জ্ঞাপক অর্থেও ব্যবহৃত হয়। যেমন ইতিপূর্বে হযরত সুলায়মান (আ)-এর ঘটনায় আলোচিত হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, আজ রাতে আমি ৭০ জন স্ত্রীর সাথে মিলিত হবো। তারা প্রত্যেকে একটি করে ছেলে সন্তান প্রসব করবে, যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। তখন নেপথ্যে তাকে বলা হয়েছিল, ইনশাআল্লাহ বলুন! তিনি তা বলেননি। অতঃপর তিনি সহবাস করলেন। তাতে মাত্র একজন স্ত্রী একটি অসম্পূর্ণদেহী ছেলে প্রসব করেন।

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

সে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ, হযরত সুলায়মান (আ) যদি ইনশাআল্লাহ বলতেন, তবে তাঁর শপথ ভঙ্গ হত না এবং তার মনোবাঞ্ছাও পূর্ণ হত।

আল্লাহ তাআলার বাণী এ.-.3 131 Jr., 1 & $1, যদি ভুলে যাও তবে তোমার প্রতিপালককে স্মরণ কর! কারণ ভুলে যাওয়াটা কোন কোন সময় শয়তানের প্রভাবে হয়ে থাকে। তখন আল্লাহর স্মরণ অন্তর থেকে প্রভাব বিদূরিত করে দেয়। ফলে যা ভুলে গিয়েছিল তা স্মরণে আসে।।, বল সম্ভবত আমার প্রতিপালক আমাকে এটি অপেক্ষা সত্যের নিকটতর পথ নির্দেশ করবেন।

অর্থাৎ যখন কোন বিষয়ে অস্পষ্টতা এসে যায় এবং লোকজনের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। তবে আপনি আল্লাহ অভিমুখী হোন, তিনি বিষয়টিকে আপনার জন্যে সহজ ও স্বাভাবিক করে و لبنوا فی که فهم ثلاثماة سینان, ۶۱, ۹।।।।۶।।।।।STS جای SI ۹۶۹لک آ۹۹)f ……..%%1, তারা তাদের গুহায় ছিল তিনশ বছর, আরও নয় বছর। তাদের সুদীর্ঘ কাল গুহায় অবস্থানের কথা উল্লেখ তাৎপর্যবহ। তাই আল্লাহ তাআলা এর উল্লেখ করেছেন। এখানে অতিরিক্ত নয় বছর হল চান্দ্র মাসের হিসাবে। সৌর বছরের ৩০০ বছর পূর্ণ করতে চান্দ্র মাসের হিসেবে অতিরিক্ত নয় বছরের প্রয়োজন হয়। কারণ প্ৰতি ১০০ সৌর বছর থেকে ১০০ ۔ চান্দ্র বছরের সময়কাল তিন বছর কম হয়ে থাকে। 1, & 1 ۹।। 5।। ۹۹ قل الله اعلم بیما।।।।। কতকাল ছিল তা আল্লাহই ভাল জানেন। অর্থাৎ এ জাতীয় কোন বিষয়ে যদি আপনাকে কেউ জিজ্ঞেস করে আর আপনার নিকট সে বিষয়ে কোন লিখিত প্ৰমাণ না থাকে। তবে বিষয়টি মহান আল্লাহর প্রতি সোপর্দ করে দিন।

তাঁরই। অৰ্থাৎ অদৃশ্য বিষয়ে অবগত তিনিই, তাঁর সৃষ্টির মধ্যে যাকে ইচ্ছা তাকে তা অবগত করুন, অন্য কাউকে নয়। -…, { –>, তিনি কত সুন্দর দ্রষ্টা ও শ্রোতা  অর্থাৎ তিনি সবকিছুকে যথাস্থানে স্থাপন করেন। কারণ তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে এবং সেগুলোর চাহিদা ও প্রয়োজন সম্পর্কে তিনি সম্যক অবগত।

তিনি ব্যতীত ওদের অন্য কোন অভিভাবক নেই। তিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরীক করেন না। অর্থাৎ রাজত্বে, ক্ষমতায় ও কর্তৃত্বে আপনার প্রতিপালক একক, অনন্য। তাঁর কোন শরীক ও অংশীদার নেই।

একজন ঈমানদার একজন কফিরের বিবরণ সূরা কাহফ-এ গুহাবাসীদের ঘটনা বর্ণনার পর আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

তুমি ওদের নিকট পেশ কর দুই ব্যক্তির উপমা। তাদের একজনকে আমি দিয়েছিলাম দুটি আঙ্গুরের বাগান এবং এ দুটোকে আমি খেজুর গাছ দ্বারা পরিবেষ্টিত করেছিলাম এবং এ দুয়ের মধ্যবর্তী স্থানকে করেছিলাম শস্যক্ষেত্র। উভয় উদ্যানই ফল দান করত এবং তাতে কোন ক্ৰটি করত না। এবং উভয়ের ফাঁকে ফাঁকে প্রবাহিত করেছিলাম নহর এবং তার প্রচুর ধন সম্পদ ছিল।

তারপর কথা প্রসঙ্গে সে তার বন্ধুকে বলল, ধন সম্পদে আমি তোমা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এবং জনবলে তোমা অপেক্ষা শক্তিশালী। এভাবে নিজের প্রতি জুলুম করে সে তার উদ্যানে প্রবেশ করল। সে বলল, আমি মনে করি না যে, এটি কখনো ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি মনে করি না যে, কিয়ামত হবে, আর আমি যদি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবৃত্ত হইই, তবে আমি তো নিশ্চয়ই এটি অপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থান পাব। উত্তরে তার বন্ধু তাকে বলল, তুমি কি তাঁকে অস্বীকার করছ যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি ও পরে শুক্র থেকে এবং তারপর পূর্ণাঙ্গ করেছেন মানব আকৃতিতে? কিন্তু আল্লাহই আমার প্রতিপালক এবং আমি কাউকে আমার প্রতিপালকের শরীক করি না। তুমি যখন তোমার উদ্যানে প্ৰবেশ করলে তখন কেন বললে না, আল্লাহ যা চান তা-ই হয়, আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি নেই?

তুমি যদি ধনে ও সন্তানে আমাকে তোমা অপেক্ষা নিকৃষ্টতর মনে কর, তবে হয়তো আমার প্রতিপালক আমাকে তোমার উদ্যান অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর কিছু দেবেন। এবং তোমার উদ্যানে আকাশ থেকে নির্ধারিত বিপর্যয় প্রেরণ করবেন, যার ফলে সেটি উদ্ভিদশূন্য ময়দানে পরিণত হবে। অথবা সেটির পানি ভূগর্ভে অন্তৰ্হিত হবে এবং তুমি কখনও সেটির সন্ধান লাভে সক্ষম হবে না। তার ফল সম্পদ বিপর্যয়ের বেষ্টিত হয়ে গেল এবং সে তাতে যা ব্যয় করেছিল তার জন্যে আক্ষেপ করতে লাগল, যখন সেটি মাচানসহ ভূমিসাৎ হয়ে গেল। সে বলতে লাগল, হায়, আমি যদি কাউকে আমার প্রতিপালকের শরীক না করতাম!! আর আল্লাহ ব্যতীত তাকে সাহায্য করার কোন লোকজন ছিলনা এবং সে নিজেও প্রতিকারে সমর্থ হল না। এ ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব আল্লাহরই, যিনি সত্য। পুরস্কার দানে ও পরিণাম নির্ধারণে তিনিই শ্ৰেষ্ঠ। ১৮ কাহফ : ৩২-৪৪

কতক তাফসীরকার বলেন, এটি একটি উদাহরণ মাত্র। বাস্তবে এমনটা ঘটেই ছিল তা নাও হতে পারে। তবে জমহুর তাফসীরকারের অভিমত এই যে, এটি একটি বাস্তব ঘটনা। আল্লাহ তাআলার বাণী (১৭, 4 –>/, তাদের নিকট পেশ কর একটি উপমা। অর্থাৎ কুরায়শ ংশীয় কাফিরগণ যে দুর্বল ও দরিদ্র মুসলমানদের সাথে মিলিত হয় না। বরং তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এবং ঈমানদারদের ওপর অহংকার করে তার প্রেক্ষিতে ঐ কাফিরদের নিকট এই উদাহরণ বর্ণনা করুন। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত তাদের নিকট তো এসেছিল রাসূলগণ।১ মূসা (আ)-এর ঘটনা বর্ণনার পূর্বে আমরা জনপদ বাসীদের ঘটনা উল্লেখ করেছি।

প্রসিদ্ধ অভিমত এই যে, আলোচ্য ব্যক্তিদ্বয় পরস্পর বন্ধু ছিল, একজন ঈমানদার, অপরজন কাফির। কথিত আছে যে, তাদের উভয়ের ধনসম্পদ ছিল। ঈমানদার ব্যক্তি আল্লাহর

দেয়। পক্ষান্তরে কাফির ব্যক্তি তার সম্পদ ব্যয় করে দুটো বাগান তৈরী করে। আলোচ্য আয়াতে বর্ণিত বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত বাগান দ্বারা তার বাগানদ্বয়কে বুঝানো হয়েছে। সেই দুটোতে ছিল আঙ্গুর, খেজুর এবং শস্য ক্ষেত্র। পানি সিঞ্চনের জন্য ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যে তার স্থানে স্থানে নহর প্রবাহিত ছিল। বাগানে ফল এসেছিল প্রচুর, নদীগুলোতে নয়নাভিরাম ঢেউ খেলত এবং ফল-ফসল ছিল মনোমুগ্ধকর। এগুলো নিয়ে বাগানের মালিক তার ঈমানদার দরিদ্র বন্ধুর মুকাবিলায় গর্ব প্রকাশ করে বলে . [] … … …, ১L J,-  + kJ (61 ধন সম্পদে আমি তোমার চাইতে শ্রেষ্ঠ এবং জনবলে তোমার চাইতে শক্তিশালী।২ অর্থাৎ বিশাল বাগানের মালিক। এ কথা দ্বারা সে বুঝিয়েছে যে, সে ঈমানদার অপেক্ষা উত্তম। তার উদ্দেশ্য হল, বন্ধু! তোমার যে ধন সম্পদ ছিল তা তুমি যে পথে ব্যয় করেছ তাতে তোমার কী লাভ হল? তোমার বরং উচিত ছিল তা-ই করা যা আমি করেছি। তাহলে তুমি আমার সমান হয়ে যেতে পারতে। এসব বলে সে ঈমানদার বন্ধুটির মুকাবিলায় অহংকার করতে থাকে।

এভাবে নিজের প্রতি জুলুম করে সে তার বাগানে প্ৰবেশ করল। অর্থাৎ অশোভন পন্থায়

সে বাগানে প্ৰবেশ করে এবং বলে?

১. ৩৬ ইয়াসীন ১৩। ২, ১৯ মারইয়াম আয়াত ৭৮ ৩. ৪১. হা-মীম সাজদা ৫০

আমি মনে করি না যে, এটি কখনও ধ্বংস হবে।১ প্রশস্ত বাগান, পর্যাপ্ত পানি এবং সুদৃশ্য লতাপাতা ও বৃক্ষরাজি দেখে তার এ ধারনা জন্মে। সে ভেবেছিল যে, এই বৃক্ষরাজির কোনটি নষ্ট হলে তার স্থলে তার চাইতে সুন্দর নতুন বৃক্ষ জন্ম নিবে এবং পর্যাপ্ত পানি বিদ্যমান থাকায় শস্য ও ফসলাদি সর্বদা উৎপাদিত হতে থাকবে।

এরপর সে বলল, 4, 6L-3 ধ – L.।। 678.1 Lও এবং আমি এও মনে করি না যে, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।২ পার্থিব জীবনের ধ্বংসশীল বিলাস বৈভরের প্রতি সে আস্থাশীল হয়ে পড়ে। এবং চিরস্থায়ী আখিরাতকে সে অস্বীকার করে। তারপর সে বলল,।। ৩.৩৩, ৬, …, 8-ة 8 كلم ع فأمم ك ك)861تifع كStift (f Still  ريمي لأجدان خيرا مثها متقلبا তবে আমি তো নিশ্চয়ই এটি অপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থান পাব। অর্থাৎ আখিরাত ও পুনরুত্থান যদি একান্তই ঘটে তাহলে সেখানে আমি এখানকার চাইতে উৎকৃষ্ট স্থান পাব। এটি সে এ কারণে বলেছে যে দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে সে ধোকায় পড়েছে এবং সে বিশ্বাস করেছে যে, তার প্রতি আল্লাহর ভালবাসা ও আল্লাহর নিকট তার প্রাপ্য অংশ হিসেবে আল্লাহ তাআলা তাকে এসব

লক্ষ্য করেছ তাকে যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে আমাকে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দেয়া হবেই। সে কি অদৃশ্য সম্বন্ধে অবহিত হয়েছে অথবা দয়াময়ের নিকট থেকে

প্রতিশ্রুতি লাভ করে।৩ এ আয়াতসমূহে আল্লাহ তাআলা আশ ইব্‌ন ওয়াইল ও খাকবাব ইব্‌ন আয়িত (রা)-এর ঘটনা বর্ণনা করেছেন।

আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নিয়ামত প্ৰাপ্তির পর কতক মানুষের পরিণাম কি হয় তার বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন :

সে অবশ্যই বলে যে, এটি আমার প্রাপ্য এবং আমি মনে করি না যে, কিয়ামত সংঘটিত

হবে। আর যদি আমার প্রতিপালকের নিকট একান্তই প্ৰত্যাবর্তিত হই তার নিকট তা আমার জন্যে কল্যাণই থাকবে।8 এ জাতীয় লোকদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন :

কাফিরদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবশ্যই অবগত করব এবং ওদেরকে আস্বাদন করাব কঠোর শাস্তি।৫

১, ২৮ কাসাস ৭৮ S. Sbr Kois aby ७. ७8 न्दांश ७१

  1. ২৩ মুমিনুন। ৫৫ ৫. ৪১ হামীম সাজদা-৫০

SIf SITNI۹ sar۹۹۶ آ۶۲۶ ی انگما او تیشه علی علم عندی چf}۹۶।।۹।।۹ প্রাপ্ত হয়েছি। ১ অর্থাৎ আল্লাহ জানেন যে, আমি ঐ ধন সম্পদ পাওয়ার হকদার। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন :

সে কি জানত না আল্লাহ তার পূর্বে বহু মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছেন যারা তার অপেক্ষা শক্তিতে ছিল প্রবল, সংখ্যায় ছিল অধিক? অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না?২ ইতিপূর্বে হযরত মূসা (আ)-এর ঘটনা বর্ণনাকালে আমরা কারূনের ঘটনা আলোচনা করেছি।

তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন কিছু নয় যা তোমাদেরকে আমার

নিকটবতী করে দিবে। তবে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তারাই তাদের কর্মের জন্যে পাবে বহুগুণ পুরস্কার। আর তারা প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে।

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন :

তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে সাহায্য স্বরূপ যে ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি দান করেছি। তার দ্বারা তাদের জন্য সকল প্রকার মঙ্গল তত্ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝে না।8

আয়াতে উক্ত মূখ ব্যক্তিটি পার্থিব ধনৈশ্বর্য পেয়ে ধোকায় পতিত হয়। তাই সে অস্বীকার করে আখিরাতকে এবং সে যখন দাবি করে যে, আখিরাত যদি সংঘটিত হয়ই, তবে সেখানে প্রভুর নিকট সে এখানকার তুলনায় উৎকৃষ্ট স্থান পাবে আর তার সাথী ঈমানদার ব্যক্তি যখন এসব কথা শুনল তখন ঈমানদার ব্যক্তিটি তাকে বলল, ১2, L, ৯, অর্থাৎ যুক্তি পেশ অস্বীকার করছ, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে ও পরে শুক্র থেকে এবং তারপর পুৰ্ণাংগ করেছেন মানুষের আকৃতিতে? অর্থাৎ তুমি কি পুনরুত্থান অস্বীকার করছ অথচ তুমি জান যে, আল্লাহ তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, অতঃপর শুক্র থেকে। তারপর পর্যায়ক্রমে তোমাকে আকৃতি দিয়েছেন। অবশেষে তুমি পরিণত হয়েছ। শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন

১. ২৮ কাসাস ৭৮ ২, ২৮ কাসাস ৭৮

७. ७8 अंदाश्र् ७१ ৪. ২৩ মুমিনুন। ৫৫

পরিপূর্ণ পুরুষে। ফলে তুমি জ্ঞান লাভ করতে পারছি, হাতে ধারণ করতে পারছি এবং হৃদয়ে উপলব্ধি করতে পারছি। তাহলে কি করে তুমি পুনরুত্থান অস্বীকার করছ? অথচ নতুন করে সৃষ্টি করতেও আল্লাহ তাআলা ক্ষমতাবান।

কিন্তু আল্লাহই আমার প্রতিপালক অৰ্থাৎ আমি কিন্তু বুলি। لكن هو الله راپی তোমার বলার বিপরীতু এবং বিশ্বাস করি তোমার বিশ্বাসের বিপরীত যে, ১, -২, 11।। ১৯ 14-1 – J….. আল্লাহই আমার প্রতিপালক এবং আমি কাউকে আমার প্রতিপালকের শরীক করিনা।* অর্থাৎ তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করি না। আমি বিশ্বাস করি যে, দেশগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর তিনি সেগুলোকে পুনরুত্থান করবেন এবং মৃতদেরকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। চুৰ্ণ বিচুর্ণ হাতগুলোকে একত্রিত করবেন। আমি এও জানি যে, আল্লাহর সৃষ্টি জগতে এবং তাঁর রাজত্বে তাঁর কোন শরীক নেই এবং তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।

এরপর ঈমানদার ব্যক্তিটি তার সাথীকে সে আচরণ শিখিয়ে দিচ্ছে বাগানে প্রবেশের সময় و لولا ان دخالت جندل، قابت ماشیاء الله, آ۹ آی گاه ای با آجf 55آنها آ۹ مه ۹۹ع 411L, S। AS তুমি যখন তোমার উদ্যানে প্রবেশ করলে তখন কেন বললেনা, আল্লাহ যা চান তাই হয় আল্লাহর সাহায্য-ব্যতীত কোন শক্তি নেই? এ জন্যে কারো নিকট তার ধন-সম্পদ

ংবা পূরিবার-পরিজন কিংবা ব্যক্তিগত কোন অবস্থা পছন্দসই ও আনন্দদায়ক মনে হলে তার জন্যে 41।L ১ / ১, ১ 41।। z U.S. L. বলা মুস্তাহাব। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর একটি মরফু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। অবশ্য হাদীসটির বিশুদ্ধতা প্রশ্নাতীত নয়।

আবু ইয়ালা মুসিলী বৰ্ণনা করেন যে, হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন :

আল্লাহ কোন বান্দাকে পরিবারে, ধন-সম্পদে কিংবা সন্তান-সন্তনিতে কোন নিয়ামত দান করলে সে যদি 41_us $ { ১, ১ 4.111 . 16, 11. বলে, তবে সে মৃত্যু ব্যতীত নিয়ামতের ধ্বংস প্রত্যক্ষ করবে না। তিনি ঐ; আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তিনি এ কথাটি বলেন। হাফিজ আবুল ফাতাহ আবদী এই সনদ বিশুদ্ধ নয় বলে মন্তব্য করেছেন। এরপর ঈমানদার লোকটি آب آ* T*T।ت s f۹ فعسلی رپی آن بیوتین من جنگاتلی : آ۹۹۶۶ م)TRi آSI۹۹۴ifF আমার প্রতিপালক আমাকে তোমার উদ্যান অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর কিছু দিবেন। অর্থাৎ 868، 51618 61116 651318 STR ويرسل عليها حسنباتا من السماء 1 stRRICSة নির্ধারিত বিপর্যয় প্রেরণ করবেন। হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) যাহহাক ও কাতাদা (র) বলেন, অর্থাৎ আকাশ থেকে আযাব প্রেরণ করবেন। এখানে বুঝান হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা প্রচণ্ড বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যা সকল ক্ষেত ও বৃক্ষকে উৎপাটিত করে দিবে। [1,

ফলে সেটি উদ্ভিদ শূন্য ময়দানে পরিণত হবে। 16, 4, LA, L. -…,, অথবা উহার পানি ভূগর্ভে অন্তৰ্হিত হবে। এটি প্রবহমান প্রবনের বিপরীত [11, 4, 2, … ……..। অতঃপর তুমি কখনও সেটির সন্ধান লাভে সক্ষম হবে না। অর্থাৎ ঐ পানি পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে না।

আল্লাহ তাআলা বলেন … …, 1=, -1, তার সকল সম্পদ বিপর্যয়ে বেষ্টিত হয়ে গেল। অর্থাৎ এমন এক বিপর্যয় নেমে এর্ল যে, যা তার সকল ফল ফসল পরিবেষ্টন করে ফেলল এবং তার উদ্যান ধ্বংস ও বিনষ্ট করে দিল।

এবং সে তাতে যা ব্যয় করেছিল তার জন্য আক্ষেপ করতে লাগল, যখন সেটি মাচানসহ ভূমিস্যাৎ হয়ে গেল। অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেল, যার পুনঃ আবাদের কোন অবকাশই থাকল না। এটি হল তার প্রত্যাশার সম্পূর্ণ বিপরীত।

f6ى,t(2 *fa II CRة stifs وما أظن أن تبيد هذم أبدا),464f884 61 885 কখনও ধ্বংস হয়ে যাবে। অবশেষে সে মহান আল্লাহর সম্পর্কে তার ইতিপূর্বেকার কুফৱী মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত হল এবং বলতে লাগল, \ 1 – J:1, 1,,,,, হায়! আমি যদি কাউকেও আমার প্রতিপালকের শরীক না করতাম। –

এL][৭৯ – A, এবং আল্লাহ ব্যতীত তাকে সাহায্য করার কেউ ছিল না। এবং সে নিজেও প্রতিকারে সমর্থ হল না। সেখানে। অর্থাৎ যে দোষ সে করেছে তার ক্ষতিপূরণ করে দেয়ার মত কেউ ছিল না। আর তার নিজেরও তা করার ক্ষমতা ছিল না। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, ১-১৯৬৭ ه ۴۱۹)  فمالهٔ من قوة والاًfee নেই, সাহায্যকারীও নেই।

আল্লাহরই। কতক তাফসীরকার -1 411 4, ১১]] এLLA থেকে নতুন বাক্য শুরু

করেন। এরূপ পাঠ করাও উত্তম বার্ট যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন,

এবং কাফিরদের জন্য সেদিন হবে কঠিন। তখন কোন অবস্থাতেই তার নির্দেশ রদ করা যাবে না, বাধা দেয়া যাবে না। এবং কেউ তা লংঘন করতে পারবে না। আর সর্বাবস্থায়ই যথার্থ কর্তৃত্ব আল্লাহরই। অবশ্য কতক তাফসীরকার কের। শব্দকে ১১। শব্দের বিশেষণরূপে পেশ

যুক্তভাবে পাঠ করেছেন। এ দুটো পরস্পর ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

নির্ধারণে তিনিই শ্রেষ্ঠ।১ অর্থাৎ ছওয়াব তথা প্রতিদানের দিক থেকে এবং পরিণাম তথা দুনিয়া ও আখিরাতে শেষ ফল রূপে তার আচরণ উদ্যান মালিকের জন্যে উত্তম ও কল্যাণকর।

এ ঘটনার অন্তর্নিহিত শিক্ষা এই যে, দুনিয়ার জীবনের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া এবং এর ধােকায় পড়া এবং এর প্রতি ভরসা করা কারো জন্যে উচিত নয়। বরং সর্বাবস্থায় আল্লাহর আনুগত্য এবং তাঁর ওপর তাওয়াকুল ও ভরসা রাখাকে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য রূপে নির্ধারণ করবে। নিজের হাতে যা আছে তার প্রতি নয়। বরং আল্লাহর নিকট যা আছে তার প্রতিই অধিকতর আস্থাশীল থাকা উচিত। উক্ত ঘটনায় এ শিক্ষাও রয়েছে যে, কোন ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর পথে ব্যয় করার বিপরীতে অন্য কিছুকে অগ্ৰাধিকার দিলে তার জন্যে তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। কখনো কখনো তার আশা আকাঙ্খার বিপরীতে তার ওই ধন-সম্পদ উঠিয়ে নেয়া হবে।

আলোচ্য ঘটনায় এ শিক্ষাও রয়েছে যে, সহানুভূতিশীল ও কল্যাণকামী ভাইয়ের উপদেশ মেনে চলা কর্তব্য। তার বিরোধিতা ঐ নসীহত প্রত্যাখ্যানকারীর জন্যে দুঃখ ও ধ্বংস ডেকে আনে। এতে এ ইঙ্গিতও রয়েছে যে, নির্ধারিত শেষ সময় যখন এসে যাবে এবং নির্দেশ যখন কার্যকর হয়ে যাবে তখন অনুতপ্ত হলেও কোন লাভ হবে না। আল্লাহই সাহায্যকারী তার উপরই

ভরসা।

উদ্যান মালিকদের ঘটনা

আল্লাহ তাআলা বলেন :

আমি ওদেরকে পরীক্ষা করেছি। যেভাবে পরীক্ষা করেছিলাম উদ্যান মালিকদেরকে। যখন তারা শপথ করেছিল যে, ওরা প্ৰত্যুষে আহরণ করবে। বাগানের ফল, এবং তারা ইনশাআল্লাহ বলেনি। অতঃপর আপনার প্রতিপালকের নিকট থেকে এক বিপর্যয় হানা দিল সেই উদ্যানে, যখন তারা ছিল নিদ্রিত। ফলে সেটি দগ্ধ হয়ে কাল বর্ণ ধারণ করল। প্ৰত্যুষে ওরা একে অপরকে ডেকে বলল, তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও তবে সকাল সকাল বাগানে চল। অতঃপর ওরা চলল। নিম্নস্বরে কথা বলতে বলতে। অদ্য যেন তোমাদের নিকট কোন অভাবগ্ৰস্ত এতে প্রবেশ করতে না পারে। তারপর ওরা নিবৃত্ত করতে সক্ষম এ বিশ্বাস নিয়ে প্রভাতকালে বাগানে যাত্রা করল। ওরা যখন বাগানের অবস্থা প্ৰত্যক্ষ করল। তখন বলল, আমরা তো দিশা হারিয়ে ফেলেছি। বরং আমরা তো বঞ্চিত। ওদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলল, আমি কি তোমাদের বলিনি, এখনও তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি না কেন? তখন ওরা বলল, আমরা আমাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি, আমরা তো সীমালংঘনকারী ছিলাম। তারপর ওরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করতে লাগল। ওরা বলল, হায়! দুর্ভোগ আমাদের। আমরা তো ছিলাম সীমালংঘনকারী। সম্ভবত আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে দিবেন। উৎকৃষ্টতর বিনিময়। আমরা আমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হলাম। শাস্তি এরূপই হয়ে থাকে এবং আখিরাতের শাস্তি কঠিনতর। যদি তারা জানত।১ এটি একটি উপমা। কুরায়শ বংশীয় কাফিরদের জন্যে আল্লাহ তাআলা এ উপমাটি বর্ণনা করেছেন। কারণ আল্লাহ তাআলা সম্মানিত রাসূল প্রেরণ করে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। কিন্তু এর বিপরীতে তারা রাসূলকে প্ৰত্যাখ্যান ও তার বিরোধিতা করেছে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন :

তুমি কি ওদের লক্ষ্য করো না যারা আল্লাহর অনুগ্রহের বদলে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং ওরা ওদের সম্প্রদায়কে নামিয়ে আনে ধ্বংসের ক্ষেত্রে। জাহান্নামে যার মধ্যে ওরা প্রবেশ করবে, কত নিকৃষ্ট এই আবাসস্থল!২

হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, এখানে কুরায়শ বংশীয় কাফিরদেরকে বুঝানো হয়েছে।

তাদেরকে আল্লাহ তাআলা একটি উদ্যানের মালিকের সাথে তুলনা করেছেন। এমন একটি উদ্যান যার মধ্যে রয়েছে নানা জাত ও নানা রঙের ফলমূল ও শস্য। সেগুলো পরিপক্ক ও কর্তন

যোগ্য হয়ে উঠেছিল।

এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলার বর্ণনা 7.91 51 যখন তারা শপথ করেছিল। নিজেদের মধ্যে এ**, …, তারা আহরন করবে। বাগানের ফল অর্থাৎ ফল কেটে ঘরে তুলবে তথা শস্য সংগ্রহ করবে ……. …., অর্থাৎ ভাের বেলায় যাতে কোন ফকীর কিংবা অভাবী লোক তাদেরকে দেখতে না পায়, এবং ওদেরকে কিছু দিতে না হয়। তারা এ বিষয়ে শপথ করেছে বটে। কিন্তু তাতে ইনশাআল্লাহ বলেনি। ফলে আল্লাহ তাদেরকে লক্ষ্য অর্জনে ব্যৰ্থ করে দিলেন। তাদের বাগানে প্রেরণ করলেন আপদ ও দুৰ্যোগ। ঐ দুর্যোগে উদ্যানটি বিরান হয়ে যায়। ঐ আপদটি ছিল জ্বলন্ত আগুন। এটি বাগানকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়। ফলে কাজে আসার মত কিছুই অবশিষ্ট থাকল না।

ফলে সেটি পুড়ে গিয়ে কালো বর্ণ ধারণ করল অর্থাৎ অন্ধকার রাত্ৰিয় মত কাল হয়ে গেল। এটি হল তাদের আশা আকাঙ্খার বিপরীত। ৫-২-২, g4t. : প্ৰত্যুষে তারা একে অপরকে ডেকে বলল অর্থাৎ তারা খুব ভোরে ঘুম থের্কে উঠল এবং একে অপরকে ডেকে বলল

তবে সকাল সকাল বাগানে চল এবং বেলা বাড়ার এবং ফকীরের সংখ্যা বৃদ্ধির পূর্বেই ফল সংগ্রহের কাজ শেষ কর। ৬.১% (২৭, ৯, 1,411. La তারপর অর্থাৎ তারা চুপি চুপি এ কথা বলতে বলতে যাত্রা করল ([^<.., x1, …, 1 4713, ১১) অর্থাৎ তারা সবাই এ বিষয়ে পরামর্শ করে যে ফকীররা যেন কোনমতেই ঢুকতে না পারে। একমত হল ১৪, ৬,৩৬৭ এস এ. অতঃপর তারা নিবৃত্ত করতে সক্ষম এ বিশ্বাস নিয়ে প্রভাতকালে বাগানে যাত্রা করল অর্থাৎ তারা এই অসৎ মতলব মনে মনে এটে তা বাস্তবায়নে সক্ষম মনে করে যাত্রা করল। তাফসীরকার ইকরামা ও শাবী (র) বলেন, আয়াতের অর্থ হল, ফকীর-মিসকীনদের প্রতি ক্রুদ্ধ মনোভাব নিয়ে তারা রওয়ানা করল। তাফসীরকার সুদী (র) বলেছেন যে, ওদের বাগানের নাম ছিল হারদ (১৮-২)। তবে তার এ বক্তব্য কষ্টকল্পিত ও বাস্তবতা বর্জিত।

(a,1,0.1% অর্থাৎ বাগানে গিয়ে পীেছল, বাগানের অবস্থা প্রত্যক্ষ করল এবং নিজেদের মন্দ নিয়াতের প্রেক্ষিতে সুদৃশ্য, সবুজ শ্যামল ও মনোরম বাগান যে দুঃখজনক পরিণতি লাভ করেছে তা দেখল তখন ৬, . ১ (,,, তারা বলল, আমরা তো দিশা হারিয়ে ফেলেছি আমরা আমাদের বাগানে পৌছতে ব্যর্থ হয়েছি এবং অন্য পথে চলে এসেছি।

তারপর তারা বলল ৩, …, x_n ,, J, বরং আমরা তো বঞ্চিত অর্থাৎ আমাদের অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য আমরা শাস্তি প্ৰাপ্ত হয়েছি। এবং ফসলের বরকত থেকে বঞ্চিত হয়েছি।

41,…, UL ওদের মধ্যম ব্যক্তি বলল হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) মুজাহিদ ও অন্যান্য তাফসীরকারের মতে এর অর্থ তাদের সর্বাধিক ন্যায়পরায়ণ ও শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তি, বলল, 11:11

৬১. ১, 21 আমি কি তোমাদেরকে বলিনি? এখনও তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি না কেন? কতক তাফসীরকার বলেন, এর অর্থ তোমরা ইনশাআল্লাহ বলছি না কেন? মুজাহিদ (র) সুদী (র) ও ইব্‌ন জারীর (র)-এর মতে। অন্য কতক তাফসীরকার বলেন, তোমরা ইতিপূর্বে যে মন্দ কথা বলেছি তার পরিবর্তে এখন ভাল কথা বলছি না কেন?

তখন ওরা বলল, আমরা আমাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি।

আমরা তো সীমালংঘনকারী ছিলাম। তারপর ওরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করতে লাগল। ওরা বলল, হায়! দুর্ভোেগ আমাদের, আমরা তো ছিলাম সীমালংঘনকারী। তারা তাদের কৃতকর্মের জন্যে এমন সময় লজ্জিত হল ও অনুতপ্ত হল যখন অনুতপ্ত হওয়ায় তাদের কোন লাভ হলো না। শাস্তি ভোগের পর তারা দোষ স্বীকার করল। তখন দোষ স্বীকারে কোন কাজ

হয় না।

কথিত আছে যে, ওরা পরস্পরে ভাই ছিল। পিতার মৃত্যুর পর তারা এ বাগানের মালিকানা লাভ করে। তাদের পিতা এ বাগান থেকে প্রচুর ফলমূল সাদকা করতেন। তারা এটির মালিক হওয়ার পর পিতার কাজকে তারা বোকামী মনে করল এবং দরিদ্রদেরকে না দিয়ে সম্পূর্ণ ফল নিজেরাই ঘরে তোলার ইচ্ছা করেছিল। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ঐ কঠিন শাস্তি প্ৰদান করলেন। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা ফলের সাদকা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ফল। কাটার দিবসে সাদকা প্ৰদানে উৎসাহিত করেছেন।

যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ৯১.০২২ گنوا من ثمرم اذا أثمر وأثي حقه یوم যখন সেটি ফলবান হয় তখন সেটির ফল আহরণ করবে এবং ফসল তোলার দিনে সেটির হক আদায় করবে।* কতক তাফসীরকার বলেন, এই উদ্যানের মালিকগণ ইয়ামানের যারওয়ান নামক জনপদের অধিবাসী ছিল। অন্য কতক তাফসীরকারের মতে, তারা ছিল আবিসিনিয়ার অধিবাসী। আল্লাহই সর্বজ্ঞ। আল্লাহ তাআলা বলেন -1,1। এ1 ] < শান্তি এরূপই হয়ে থাকে অৰ্থাৎ যে আমার নির্দেশের বিরুদ্ধাচারণ করে এবং সৃষ্টি জগতের অভাবীদের প্রতি দয়া প্রদর্শন না করে তাকে আমি এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি। এই ১০-১১ 2013,1, এবং আখিরাতের শাস্তি কঠিনতর অর্থাৎ দুনিয়ার আযাব অপেক্ষা অধিক ভয়াবহ ও স্থায়ী, (<!

আলোচ্য উদ্যান মালিকদের ঘটনা আল্লাহ তাআলার বাণী আয়াতদ্বয়ে বর্ণিত ঘটনার অনুরূপ। আল্লাহ তাআলা উক্ত আয়াতদ্বয়ে বলেছেন :

আল্লাহ দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন এক জনপদের যা ছিল নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত, যেখানে আসত সব দিক থেকে প্রচুর জীবনোপকরণ : তারপর তারা আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করল। ফলে তারা যা করত তার জন্যে আল্লাহ তাদেরকে আস্বাদ গ্রহণ করালেন ক্ষুধা ও ভীতির আচ্ছাদনের। তাদের নিকট তো এসেছিল এক রাসূল, তাদেরই মধ্য হতে, কিন্তু তারা তাকে অস্বীকার করেছিল, ফলে সীমা লংঘন করা অবস্থায় শাস্তি তাদেরকে গ্ৰাস করল।২ কোন কোন তাফসীরকার বলেছেন, এটি একটি উপমা। মক্কাবাসীদের নিকট এই উপমাটি পেশ করা হয়েছে। অপর

১, ৬ অনআম ১8১

এবং তাদের কাজ কর্মকেই তাদের নিকট দৃষ্টান্ত রূপে পেশ করা হয়েছে। এ উভয় মতের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। আল্লাহই সঠিক জানেন।

সাবতী বিষয়ক সীমা লংঘনকারী আয়লা অধিবাসীদের ঘটনা সূরা আরাফে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,

তাদেরকে সমুদ্র তীরবতী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস কর, তারা শনিবারে সীমালংঘন করত। শনিবার উদযাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত। কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদযাপন করত না। সেদিন মাছগুলো তাদের নিকট আসত না। এভাবে তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যেহেতু তারা সত্য ত্যাগ করত।

স্মরণ কর, তাদের একদল বলেছিল, আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন: কিংবা কঠোর শাস্তি দিবেন, তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এ জন্যে। যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন সেটি বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎ কার্য থেকে নিবৃত্ত করত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি এবং যারা জুলুম করে তারা কুফরী করত বলে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেই। তারা যখন নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্য সহকারে করতে লাগল। তখন তাদেরকে বললাম, ঘৃণিত বানর হও।

১. সাবত শব্দের অর্থ শনিবার। ঐটি ইয়াহুদীদের সাপ্তাহিক ইবাদাতের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। اما – (مواد ماگاتا ۹ مج ৩. ২ বাকার ৬৫

……..11 11, …, তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সম্পর্কে সীমালংঘন করেছিল তাদেরকে তোমরা নিশ্চিতভাবে জন। আমি তাদেরকে বলেছিলাম, তোমরা ঘৃণিত বানর হও। আমি এটি তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীগণের শিক্ষা গ্রহণের জন্য দৃষ্টান্ত ও মুত্তাকীদের জন্যে উপদেশ স্বরূপ করেছি।৩

অথবা সাবৃতওয়ালাদেরকে সেরূপ লানত করেছিলাম যেরূপ তাদেরকে লানত করার পূর্বে। আল্লাহর আদেশ কার্যকরী হয়েই থাকে।

ইব্‌ন আব্বাস, মুজাহিদ, ইকরামা, কাতাদা, সুদী (র) ও অন্যান্য মুফাসসিরগণ বলেছেন, এরা ছিল আয়লা বা ঈলা (Elath) অধিবাসী। ইব্‌ন আব্বাস (রা) এও বলেছেন যে, স্থানটি মাদয়ান ও তুর এর মধ্যস্থলে অবস্থিত। তাফসীরকারগণ বলেন, সে যুগে তাওরাতের শিক্ষা অনুযায়ী তারা শনিবারে পার্থিব কাজকর্ম হারাম জ্ঞান করত। ফলে মাছ। এ দিবসে তাদের পক্ষ থেকে নিরাপদ ও স্বস্তিতে থাকত। কারণ ঐ দিন মাছ শিকার করা তাদের জন্যে হারাম ছিল। সকল প্রকারের কাজ-কর্ম ব্যবসা-বাণিজ্য ও আয়-উপার্জন সেদিনের জন্যে হারাম ছিল। শনিবারে প্রচুর মাছ তাদের সমুদ্র তীরবতী আবাসিক এলাকার কাছাকাছি চলে আসত এবং নিৰ্ভয়ে-নিরাপদে এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করত। তারা ওগুলো ধরিতও না ওগুলোকে ভীতি প্রদর্শনও করতো না।

4, 13 ১ ৬, . …, ১ – ১৭, যেদিন তারা শনিবার উদযাপন করত না সেদিন

তাদের নিকট মাছও আসত না এ জুন্যে যে, শনিবার ব্যতীত অন্যান্য দিনে তারা মাছ শিকার করত। আল্লাহ তাআলা বলেন ৩৯,1, 4 এLj < এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম। অর্থাৎ শনিবারে প্রচুর মাছের আনাগোনার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে তাদেরকে যাচাই করেছিলাম ৩, a. A 1,… [< U। যেহেতু তারা সত্য ত্যাগ করত। অর্থাৎ তাদের ইতিপূর্বেকার সত্যত্যাগের কারণে।

তারা শনিবারে প্রচুর মাছের সমাহার দেখে শনিবারেই তারা মাছ শিকারের ফন্দি খোজে। তারা রশি, জাল ও বড়শী তৈরি করে এবং খােলও খনন করে রাখে। ঐ খাল হয়ে পানি যেন তাদের তৈরি শিকার ক্ষেত্রে পৌছে। পানির সাথে মাছ তাদের প্রস্তুতকৃত শিকার ক্ষেত্রে গিয়ে পৌছলে যেন বের হতে না পারে।

পরিকল্পনা মুতাবিক তারা সব কিছু তৈরি করে নেয়। শুক্রবারে তারা যন্ত্রপাতি ও সকল কৌশল কার্যকর করত। শনিবারে নির্ভয়ে মাছগুলো যখন উপস্থিত হত তখন শিকার ক্ষেত্রের মুখ বন্ধ করে দেয়া হত। শনিবার চলে গেলে তারা মাছগুলো ধরে আনত।

আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাদেরকে ল্যানত দিলেন। কারণ তারা আল্লাহর নির্দেশের বিরুদ্ধে এমন কৌশল অবলম্বন করেছিল বাহ্যিকভাবে তা কৌশলই মনে হবে। কিন্তু মূলত সেটি ছিল আল্লাহর নির্দেশের স্পষ্ট বিরুদ্ধাচরণ।

S8 o

তাদের একদল এ সকল কাজ করার পর যারা তা করেনি তারা দুদলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল ওদের এ অপকর্ম এবং আল্লাহর নির্দেশের ও তার শরীয়তের বিরোধিতা করাকে প্রত্যাখ্যান করে। অপর দল নিজেরা ঐ অপকর্মে লিপ্ত হয়নি, আবার অপকর্মে লিপ্তদেরকে বাধাও দেয়নি। বরং যারা বাধা দিয়েছিল তারা তাদেরকে তিরস্কার করেছিল। এবং বলেছিল :

আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দিবেন তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন? অর্থাৎ তাদেরকে বাধা দানে লাভ কি? তারা নিশ্চিতভাবে শাস্তি ভোগের উপযুক্ত হয়েছে। বাধাদানকারী দল উত্তর দিল যে, ২,। $6° _, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব মুক্তির জন্যে। অর্থাৎ আমাদেরকে সৎকাজের আঁদেশ ও অসৎকাজের বাধাদানের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আল্লাহর শাস্তির ভয়ে আমরা সে দায়িত্বই পালন করছি। :21,1, 6,44, এবং যাতে তারা সাবধান হয় অর্থাৎ এমনও হতে পারে যে, তারা তাদের অপকর্ম থেকে বিরত হবে। তারা যদি আমাদের উপদেশ গ্ৰহণ করে এবং অপকর্ম থেকে ফিরে আসে তবে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন এবং তাঁর আযাব থেকে তাদেরকে রক্ষা করবেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন – 1,5:40, 1,…,, 1: যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন তা বিস্মৃত হয়। অর্থাৎ যারা এ গৰ্হিত অপকর্ম থেকে বারণ করেছিল তাদের প্রতি 35 مf 866ي ك7,66 ك 5RR RIST أنجين ألذين ينهون عن السوء ( F(ARة 5sh 86ة করত। আমি তাদেরকে উদ্ধার করি। এরা হল সৎ কাজে আদেশ দানকারী ও অসৎকাজে Si۲۹ گاه q।।۹।।۹۹۹ و آخذ نا الذین ظلم و ابعذاب بیس با آ۱۹ ۹۹S۹۴۹اً দুষ্কর্ম করেছে। আমি তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিই। অর্থাৎ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। L< L_2, ৩.4, তারা সীমালজম্বন করত বলে তারপর আল্লাহ তাআলা তাদের উপর আপতিত فلما عتا عمان هوا عنه قلنا له گونوا قردهٔ آ۶)» می با جif&۹ f۹۹۹۹ f(P* ৩……[2, যখন তারা নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্য সহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ঘূর্ণিত বানর হয়ে যাও এ সম্পর্কে আরও যে সকল আয়াত এসেছে একটু পরেই আমরা সেগুলো উল্লেখ করব।

মোদ্দাকথা, আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিলেন যে, যারা জালিম ছিল তিনি তাদেরকে ধ্বংস করেছেন আর তাদের অপকর্ম প্রত্যাখ্যানকারী ঈমানদারদেরকে তিনি রক্ষা করেছেন। কিন্তু নিরবতা অবলম্বনকারী ঈমানদারগণের ব্যাপারে কিছু বলেননি। ফলে নীরবতা অবলম্বনকারী ঈমানদারগণের পরিণতি সম্পর্কে আলিমগণের দুটি মত রয়েছে, একদল বলেন, এরা উদ্ধার প্রাপ্তদের সাথে উদ্ধার লাভ করেছেন, আর অপর দল বলেন, তারা ধ্বংস প্রাপ্তদের সাথে ধ্বংস হয়েছে। মুহাব্ধিক আলিমগণের মতে প্ৰথম অভিমতটিই সঠিক। শ্ৰেষ্ঠ তাফসীরকার হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) শেষ পর্যন্ত এ অভিমতটিই গ্ৰহণ করেছেন। তাঁর আযাদকৃত দাস ইকরামার সাথে যুক্তি তর্কের প্রেক্ষিতে তিনি এ সিদ্ধান্তে পৌছেন। এজন্যে ইকরামা (রা)-কে তিনি এক জোড়া উচ্চ মূল্যের পোশাক দানে সম্মানিত করেন।

আমার মতে, নীরবতা অবলম্বনকারী দলকে নাজাত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত উল্লেখ করা হয়নি এ জন্যে যে, তারা অন্তরে ওদের অশ্লীলতাকে অপছন্দ করেছিল বটে, কিন্তু তাদের উচিত ছিল বাহ্যিক দিকটাকেও অন্তরের দিকের ন্যায় মৌখিকভাবে প্রত্যাখ্যানের স্তরে উন্নীত করা। এটি অবশ্য মধ্যম স্তরের অবস্থান। সর্বোচ্চ স্তর হল অন্যায় কাজকে সরাসরি শক্তি প্রয়োগে বাধা দান, এর পরের স্তর হল মুখে প্রতিবাদ করা এবং তৃতীয় স্তর হল অন্তরে ঘৃণা করা।

আলোচ্য নীরবতা অবলম্বনকারী লোকদের কথা যখন স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি তখন নিশ্চয়ই তারা নাজাতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত। কারণ তারা অশ্লীল কাজে অংশ গ্ৰহণ করেনি। বরং অশ্লীলতাকে ঘৃণা করেছিল।

আবদুর রাজ্জাক আতা খুরাসানী (র) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, যারা উল্লেখিত অপকর্ম ও পাপাচারে লিপ্ত হয়েছিল শহরের অন্য অধিবাসীরা তাদেরকে সমাজচ্যুত করেছিল এবং কেউ কেউ তাদেরকে ঐ অপকর্মে বাধাও দিয়েছিল। কিন্তু তারা ঐ উপদেশ গ্রহণ করেনি।

বাধা দানকারীরা একটি পৃথক স্থানে রাত্রি যাপন করত এবং অপরাধী ও নির্দেষদের মাঝে অন্তরায় স্বরূপ স্থাপিত দরজাগুলো রাতে বন্ধ করে রাখত। কারণ, তারা অপকর্মকারীদের। ধ্বংসের অপেক্ষায় ছিলেন। একদিন ভোর বেলা দেখা গেল ওদের দিককার দরজা বন্ধ। ওরা দরজা খোলেনি। অনেক বেলা হয়ে গেল। শহরের অধিবাসিগণ একজন লোককে ওদের সিঁড়িতে ওঠে ওপর থেকে তাদের অবস্থা জেনে নিতে নির্দেশ দিল। উপরে উঠে সে দেখতে পেল যে, ওরা সবাই লেজ বিশিষ্ট বানরে পরিণত হয়ে রয়েছে। তারা লাফালাফি ও দৌড়াদৌড়ি করছিল। শেষে ওদের দরজা খোলা হল। বানরেরা তাদের আত্মীয় স্বজন ও ঘনিষ্ঠ লোকদেরকে চিনতে পেরেছিল। কিন্তু আত্মীয় স্বজনেরা ওদেরকে চিনতে পারেনি। ওরা অসহায়ভাবে আত্মীয় স্বজনের নিকট আশ্রয় চাচ্ছিল ও কাকুতি-মিনতি করছিল। অপকর্মে বাধা দানকারী লোকেরা ভৎসনার স্বরে বলছিল, আমরা কি তোমাদেরকে অপকর্মে নিষেধ করিনি? মাথা নেড়ে বানরেরা সায় দিচ্ছিল যে, হ্যাঁ, নিষেধ করেছিলে।

এতটুকু বলে হযরত আবদুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাস (রা) কেঁদে ফেললেন। তিনি বললেন, আমরা তো এখন বহু অন্যায় ও গৰ্হিত কাজ দেখছি কিন্তু তা প্রতিরোধও করছি না এবং ঐ বিষয়ে কোন কথাও বলছি না। আওফী (র) হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ঐ জনপদের যুবকরা বানরে পরিণত হয়েছিল, আর বৃদ্ধরা পরিণত হয়েছিল শূকরে।

ইব্‌ন আবী হাতিম …ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, তারা অল্প সময় জীবিত থেকেই মরে গিয়েছিল। ওদের আর কোন বংশধর হয়নি।

যাহাহাক (র) হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, বানরে রূপান্তরিত মানুষগুলো তিনদিনের বেশি জীবিত থাকেনি। এদের খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের কোন সুযোগ হয়নি। ওদের কোন বংশধরও হয়নি। সূরা বাকারা ও সূরা আরাফের তাফসীরে আমরা এ সম্পর্কিত বর্ণনাগুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

ইব্‌ন আবি হাতিম ও ইব্‌ন জারীর… মুজাহিদ (র) সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন মূলত ঐ লোকগুলোর অন্তঃকরণ সমূহ বিকৃত করে দেয়া হয়েছিল। দৈহিকভাবে বানর ও শূকরে তারা পরিণত হয়নি। বরং এটি একটি রূপক উদাহরণ রূপে আল্লাহ তাআলা এটা বৰ্ণনা করেছেন। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেছেন : 1514.1 UL =, U.–21।। U* °A< তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে পুস্তক বহনকারী গর্দভের মত। তার এ বর্ণনার সনদ বিশুদ্ধ হলেও বর্ণনাটি অত্যন্ত গরীব পর্যায়ের। এটি কুরআন মজীদের প্রকাশ্য বর্ণনার বিপরীত এবং এ বিষয়ে বহু প্রাচীন ও আধুনিক উলামা-ই-কিরামের স্পষ্ট বক্তব্যের বিরোধী। আল্লাহই ভাল জানেন।

জনপদ অধিবাসীদের ঘটনা ও1.1.1 LazL $1 যখন তাদের নিকট এসেছিল রাসূলগণ হযরত মূসা (আ)-এর ঘটনা বর্ণনার পূর্বে ঐ জনপদ অধিবাসীদের ঘটনা আলোচিত হয়েছে। সাবা অঞ্চলের অধিবাসীদের ঘটনা। আরবদের ইতিহাস অধ্যায়ে সাবার অধিবাসীদের কথা আলোচিত হবে, ইনশাআল্লাহ।

কারণ ও বালআমের ঘটনা মূসা (আ)-এর বর্ণনা প্রসঙ্গে পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে। তদ্রুপ খিযির (আ) ফিরআওন ও যাদুকরগণ সম্পর্কে মূসা (আ)-এর বর্ণনা প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। গাভীর ঘটনাটিও মূসা (আ)-এর বর্ণনায় আলোচিত হয়েছে। মৃত্যু ভয়ে যে কয়েক হাজার লোক নিজেদের বাসস্থান ত্যাগ করে চলে গিয়েছিল। তাদের কথা হিযকীল এর বর্ণনায় আলোচিত হয়েছে। মূসা (আঃ)-এর পর আগত বনী ইসরাইলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের কথা শামুয়েল (আঃ)-এর বর্ণনায় আলোচিত হয়েছে। আর জনপদ অতিক্রমকারী ব্যক্তির কথা আলোচিত হয়েছে। হযরত উযায়র (আ)-এর বর্ণনায়।

1 Comment
Collapse Comments

CORRECTION IS REQUIRED HERE ON THESE LINES: PLEASE UPDATE

জন্যে, শুধুমাত্র প্রিয় নবী (সা)-এর জন্যে নয়। যেমন আল্লাহ তাআলার বাণী ৩। … It_1 , এ1<, L_n : সুতরাং এর পরে কিসে

কথিত আছে যে, ওই নগরীর নাম ছিল দাফমূম।। Laux_1, <! L41 11, 18 সে গিয়ে দেখুক কোন খাদ্য উত্তম। অর্থাৎ কোনটি উৎকৃষ্টমানের।,,, x_i+1; 4, -অতঃপর তা থেকে যেন কিছু খাদ্য নিয়ে আসে তোমাদের জন্যে; অর্থাৎ যা তোমরা খেতে পারবে। এটি ছিল তাদের সংযম ও নির্লেভ মনোভাবের পরিচায়ক। —{1,1,-1, সে যেন বিচক্ষণতার সাথে কাজ করে। নগরে প্রবেশ করার সময়

আল্লাহ তাআলা বলেন, LA, JA J»J• $1 412.14L. A raw – 1.1 বল আমার প্রতিপালকই ওদের সংখ্যা ভাল জানেন। ওদের সংখ্যা অল্প কয়েকজনই জানে।।… …। … … = ১ + সাধারণ

প্রারম্ভেই ওদের সংখ্যার বিবরণ দিতেন। ولأتفولن لشى ابى فاعليا لك غدا إلأ أن يشاء,46915 itكالة HR et اثة د. 41।।। কখনও

আল্লাহ তাআলার বাণী এ.-.3 131 Jr., 1 & $1, যদি ভুলে যাও তবে তোমার প্রতিপালককে স্মরণ কর! কারণ ভুলে যাওয়াটা কোন

ফল-ফসল ছিল মনোমুগ্ধকর। এগুলো নিয়ে বাগানের মালিক তার ঈমানদার দরিদ্র বন্ধুর মুকাবিলায় গর্ব প্রকাশ করে বলে . [] … … …, ১L J,- + kJ (61 ধন সম্পদে আমি তোমার চাইতে শ্রেষ্ঠ এবং জনবলে তোমার চাইতে শক্তিশালী।২ অর্থাৎ বিশাল

4, 13 ১ ৬, . …, ১ – ১৭, যেদিন তারা শনিবার উদযাপন করত না সেদিন

আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাদেরকে ল্যানত দিলেন। কারণ তারা আল্লাহর নির্দেশের বিরুদ্ধে এমন কৌশল অবলম্বন করেছিল বাহ্যিকভাবে তা কৌশলই মনে হবে। কিন্তু মূলত সেটি ছিল আল্লাহর নির্দেশের স্পষ্ট বিরুদ্ধাচরণ।

S8 o

তাদের একদল এ সকল কাজ করার পর যারা তা করেনি তারা দুদলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল ওদের এ অপকর্ম এবং আল্লাহর নির্দেশের ও তার শরীয়তের বিরোধিতা করাকে প্রত্যাখ্যান করে। অপর দল নিজেরা ঐ অপকর্মে লিপ্ত হয়নি, আবার অপকর্মে লিপ্তদেরকে বাধাও দেয়নি। বরং যারা বাধা দিয়েছিল তারা তাদেরকে তিরস্কার করেছিল। এবং বলেছিল :

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *