১৭. মদিনা নীতুদের নতুন কাজের মেয়ে

মদিনা বলল, আফা, উনি আইছে।

মদিনা নীতুদের নতুন কাজের মেয়ে। আঠারো-উনিশ বছর বয়স। বিয়ে হয়েছিল, স্বামী তাড়িয়ে দিয়েছে। এত সুন্দর একটা মেয়েকে স্বামী তাড়িয়ে দিল কেন নীতু বুঝতে পারে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে সুন্দর একটা মুখ দেখলেই তো মনটা ভাল হয়ে যাবার কথা। মদিনা দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। শাড়ির আঁচল এমনভাবে মুখের উপর টেনে ধরে আছে যে মুখ ভাল দেখা যাচ্ছে না। টান টানা সুন্দর চোখ শুধু দেখা যায়।

নীতু বলল, উনিটা কে?

কামাল ভাইজান।

ও আচ্ছা–বসতে বল, আমি আসছি।

মদিনার মুখ থেকে শাড়ির আঁচল সরে গেছে। এবার তার মুখ পুরোটা দেখা যাচ্ছে। শাড়ির আঁচলে সে এতক্ষণ মুখ ঢেকে রেখেছিল কেন তাও বোঝা যাচ্ছে। ঠোটে লিপস্টিক দিয়েছে। মেরুন রঙের লিপস্টিকটা পাওয়া যাচ্ছিল না। এখন বোঝা যাচ্ছে লিপস্টিকটা কোথায়।

আফা, উনারে চা দিমু?

দাও।

মদিনা চলে যাচ্ছে। তাকে কঠিন কঠিন কিছু কথা শোনানো দরকার। কাজের মেয়ে ঠোঁট গাঢ় করে লিপস্টিক দিয়ে ঘুরবে কেন? চুরির ব্যাপারটা তো আছেই। সুন্দর একটা মেয়ে যদি আরো সুন্দর হতে চায় তাতে রাগ করা যায় না। কাজের মেয়ে সুন্দর হতে পারবে না, সাজতে পারবে না। এমন তো কোন কথা নেই।

নীতু ভুরু কুঁচকে বসে রইল। তার খুব মেজাজ খারাপ লাগছে। কামাল এসেছে বলে কি মেজাজ খারাপ? হতে পারে। এই মানুষটাকে দেখলেই তার মেজাজ খারাপ হয়। আশ্চর্য, এমন একটা মানুষকে সে বিয়ে করতে যাচ্ছে যার নাম শুনলেই তার বিরক্তি লাগে। নীত্যু ঘড়ি দেখল, সাতটা বাজে, সন্ধ্যা এখনো হয়নি। তার আসার কথা সন্ধ্যার পর। তারা দুজনে একটা রেস্টুরেন্টে খেতে যাবে। বিয়ে করতে এসেছ বিয়ে করা। দুদিন পরে পরে রেস্টুরেন্টে খাওয়া-খাওয়ি কি? লোকটা সুন্দর করে কথা পর্যন্ত বলতে পারে না। ঐদিন রেস্টুরেন্টে গিয়ে বেয়ারাকে আঙুলের তুড়ি বাজিয়ে ডাকছিল। বেয়ারা শুনেও না শোনার ভান করল। তখন সে হ্যালো হ্যালো করে ডাকতে লাগল। হ্যালো হ্যালো করছিস কেন? এটা কি টেলিফোন?

লোকটির সব কথাবার্তা নীতুদের বিষয়সম্পত্তি এবং টাকাপয়সা নিয়ে। আশ্চৰ্য্য, এটা কথা বলার কোন বিষয়? জগতে কথা বলার কত প্রসঙ্গ আছে। চুপচাপ বসে থেকেও তো রাজ্যের কথা বলা যায়। সেদিন রেস্টুরেন্টে খেতে বসে নীতুর লজ্জার সীমা রইল না। কামাল বলল, তুমি দেখি কিছুই খাচ্ছ না।

নীতু বলল, আমার খিদে নেই। আপনি খান।

আমি তো খাচ্ছিই। পয়সা দিয়ে কিনেছি, খাব না। মানে? চিকেনটা তো ভাল হয়েছে। বেশ ভাল।

নীতু আতংকিত চোখে দেখল, লোকটা কড়মড় শব্দে মুরগির রান চিবাচ্ছে। তারচেয়েও ভয়াবহ ব্যাপার ঘটল। যখন সে নীতুর থালা থেকে মুরগীর মাংস তুলে নিতে নিতে বলল, নষ্ট করে লাভ নেই। কি বল?

নীতু কিছু বলল না। মাথা নিচু করে রইল। সে মুখভর্তি মাংস নিয়ে বলল, গুলশানে তোমাদের একটা বাড়ি আছে না?

নীতু বলল, জ্বি।

কয় কাঠার জমি বল তো?

আমি ঠিক জানি না।

সে কি! নিজের বিষয়সম্পত্তির হিসাব জান না?

এইসব বাবা দেখেন।

উনি তো দেখবেনই। তবে উনি তো আর সারাজীবন বেঁচে থাকবেন না। তখন তোমাদেরই দেখতে হবে। গুলশানে তোমাদের ঐ বাড়ি কি ভাড়া দেয়া?

জ্বি।

ভাড়া কত আসে জান?

জ্বি না।

অনেক টাকা ভাড়া আসার কথা। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর একটা সুবিধা হয়েছে। গুলশান এলাকা জাতে উঠে গেছে। ডিপ্লোমেটিক জোন। বড় বাড়িগুলি এক লাখ দেড় লাখ টাকায় ভাড়া হচ্ছে।

ও।

গ্রামে তোমাদের প্রপাটি কেমন আছে?

প্ৰপাটির কথা জানি না। তবে গ্রামে আমাদের খুব সুন্দর একটা দোতলা বাড়ি আছে। সামনে পুকুর।

কে থাকে সেখানে?

কেউ থাকে না। শীতের সময় মাঝে মাঝে আমরা বেড়াতে যাই।

এটা তো ঠিক না। লোকজন না থাকলে বারভূতে লুটপুটে খাবে।

কেন? নিজেদের একটা বাড়ি–মাঝে-মধ্যে ছুটি কাটাতে যাবে, এর আলাদা একটা চার্ম আছে না? বসতবাড়ি স্বকুলে দেবার পেছনে তো কোন যুক্তি নেই। এই বাড়ি নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে স্কুল হবে সে হিসেবে বানানো হয়নি। তাছাড়া স্কুল-কলেজ এইসব সরকারি সেক্টরে হওয়া উচিত। প্রাইভেট সেক্টরে না। সবই যদি প্রাইভেট সেক্টারে হয় তাহলে সরকার করবে কি? সরকারেরও তো কিছু করতে হবে। তাই না?

জ্বি।

চুপচাপ বসে থাকলে তো হবে না। এইসব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। তোমার বাবা তো এইসব নিয়ে ভাবেন না–তোমার বড় ভাইও না। একজন কাউকে তো ভাবতে হবে।

আপনি ভাবুন।

নীতুর হাসি পাচ্ছিল। কি আশ্চর্য মানুষ! বিয়ের আগেই শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তির চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে। বিয়ের পর কি হবে কে জানে? বাবা ভাল স্বামীই তার জন্যে জোগাড় করেছেন। নীতুর ধারণা, বিয়ের এক বছরের মাথায় লোকটা উঠে-পড়ে লাগবে বিষয়সম্পত্তি নিজের নামে লেখাপড়া করিয়ে নিতে।

নীতু নিচে নেমে এল। সে সুন্দর একটা শাড়ি পরেছে। চুল বেঁধেছে। ঠোটে লিপস্টিক দিয়েছে। আয়নায় নিজেকে দেখে চমকে উঠেছে–মনে হচ্ছিল ড্রাকুলার দূর সম্পর্কের কোন বোন বসে আছে। যে কিছুক্ষণ আগেই রক্ত খেয়ে এসেছে। সেই রক্তের খানিকটা ঠোঁটে লেগে আছে। নীতু রুমাল দিয়ে ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে ফেলল। এখন নিজেকে লাগছে। মরা মানুষের মত। মনে হচ্ছে সে তিনদিন আগে মারা গেছে, তাকে বারডেমের মরচুয়ারিতে রাখা হয়েছিল, আজ বের করে আনা হয়েছে। রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়ার পর আবার তাকে বারডেমে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

কামাল হাত-পা ছড়িয়ে ঘরোয়া ভঙ্গিতে বসে আছে। তাকে দেখতে সুন্দরই লাগছে। খুব হালকা হকয়েরি শার্টে তাকে ভাল মানিয়েছে। আজেবাজে পুরুষদের চেহারা সবসময় সুন্দর হয়। কামাল বলল, তোমার বাবা কোথায়?

উনি ছোট চাচার বাসায় গেছেন।

উনি থাকলে গুলশানের বাড়ির ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করতাম। তোমাকে জেনে রাখতে বলেছিলাম–জাননি মনে হয়।

জেনেছি। তের কাঠা জমির উপর বাড়ি।

বল কি! ১৩ কঠা–এ তো অনেক জমি, গোল্ড মাইন। ভাড়া কত পাচ্ছ?

পঁচিশ হাজার।

কি পাগলের মত কথা বল? তের কাঠা জমির উপর যে বাড়ি তার ভাড়া মাত্র ২৫ হাজার?

বাড়িটা ছোট, বেশির ভাগই ফাঁকা জায়গা।

তোমরা যা করছি তা রীতিমত ক্রাইম।

চলুন যাই।

কামাল বিরক্ত মুখে উঠে দাঁড়াল। আর তখনি দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকল আতাহার। সে বিস্মিত মুখে বলল, পেত্নী সেজে কোথায় যাচ্ছিস?

নীতুর চোখে পানি এসে যাবার মত হল। সে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, রেস্টুরেন্টে খেতে যাচ্ছি আতাহার ভাই।

রেস্টরেন্টে খেতে যাচ্ছিস। একটু সুন্দর-টুন্দর হয়ে যা। তোকে দেখে মনে হচ্ছে ডেডবডি। তুই খেতে বসবি আর দেখবি রাজ্যের মাছি তোর মাথার উপর ভিনভন করছে। তোকে ডেডবাড়ি ভাবছে।

নীতু বলল, আতাহার ভাই, আমি পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি—উনি কামাল আহমেদ।

আতাহার লজ্জিত গলায় বলল, ও, আচ্ছা আচ্ছা। ভাই, আপনার ভবিষ্যৎ স্ত্রীকে নিয়ে কিছু রঙ্গ—রসিকতা করলাম। দয়া করে কিছু মনে করবেন না। আপনার চেহারা সুন্দর, সেটা চাচাজানের কাছে শুনেছি–কিন্তু আপনি যে ছদ্মবেশী রাজপুত্র তা কেউ বলেনি।

কামাল সরু চোখে তাকিয়ে রইল, কিছু বলল না। নীতু বলল, আতাহার ভাই, বাসায় তো কেউ নেই।

কোন অসুবিধা নেই। আমি বারান্দায় বসে এক কাপ চা খেয়ে যাব।

বারান্দায় বসে চা খেতে হবে না। ঘরে বসেই খান। আমি বলে দিয়ে যাচ্ছি।

শুধু চা যেন না দেয়–খিদেয় মারা যেতে বসেছি।

 

গাড়িতে উঠতে উঠতে কামাল বলল, ভদ্রলোক কে?

নীতু বলল, ভাইয়ার বন্ধু।

খুব আসা-যাওয়া নাকি?

হুঁ।

করেন কি?

কিছু করেন না–বাউন্ডেলে।

এইসব বাউন্ডেলে ছেলে।পুলেদের বেশি প্রশয় দেয়া ঠিক না। তোমার সঙ্গে যেসব কথা বলল, খুবই অবজেকশন্যাবল।

নীতু হাসল। কামাল বলল, হেসো না–এই টাইপটা হল সুযোগ-সন্ধানী টাইপ। সুযোগের জন্য বড়লোক বন্ধুদের পেছনে পেছনে ঘুরবে। চামচগিরি করবে।

আপনি ঠিকই বলেছেন। উনি বিরাট চামচা।

একেবারেই প্রশ্ৰয় দেবে না। প্রশ্ৰয় দিলেই এরা মাথায় উঠে পড়ে। পেত্নীর মত দেখাচ্ছে, ডেডবাডি, মাছি ভিন ভন করবে–এইসব কি ধরনের কথা? রসিকতার ও তো সীমা থাকবে?

রেস্টুরেন্টে খেতে বসেও কামাল আবার আতাহারের প্রসঙ্গ তুলল। গম্ভীর মুখে বলল, আতাহার সাহেবের পারিবারিক অবস্থা কি?

পারিবারিক অবস্থা খুব খারাপ।

খুব খারাপ মানে কি?

উনার বাবা মারা গেছেন। মা হাসপাতালে। উনি তাঁর ভাইবোনদের নিয়ে তার এক মামার বাসায় থাকেন।

এই অবস্থা?

হ্যাঁ, এই অবস্থা।

এরা ধান্ধবাজ হবেই। এরা বড়লোক বন্ধুদের পেছনে নানান ধান্ধা নিয়ে ঘুরবে। খুব সাবধান। খুব সাবধান।

আমি সাবধানই আছি।

আসলে এদের বাড়িতে ঢুকতে দেয়াই উচিত না। তুমি যে একে বাড়িতে রেখে চলে এলে, কাজটা ঠিক করনি।

বাবা উনাকে খুব পছন্দ করেন।

তা তো করবেনই। মানুষকে খুশি করার যাবতীয় কায়দা-কানুন। এরা জানে। ওরা এটা করে নিজেদের সারভাইবেলের জন্যে। পরগাছা মনোবৃত্তি।

নীতু হাসল। কামাল নীতুর হাসি পছন্দ করল না। বিরক্ত মুখে বলল, হাসবে না। নীতু। হেসে হেসে আমরা বিপদে পড়ি। যখন ঘাড়ের উপর এসে পড়ে, আমাদের হাসি শুধু তখনি বন্ধ হয়।

এইসব মানুষের সাইকোলজ্বি আপনি এত ভাল করে জানেন কি ভাবে?

মুখ দেখলেই বোঝা যায়।

আপনি কি মুখ দেখে অনেক কিছু বুঝে ফেলেন?

কিছুটা তো বুঝতেই পারি।

আমার মুখ দেখে আমাকে আপনার কেমন মনে হয়।

তোমার মুখ দেখে তোমাকে খুব অসাবধানী মেয়ে বলে মনে হয়।

আপনি ঠিক বলেছেন। আমি আসলে খুব অসাবধানী। এর জন্যে মাঝে মাঝে কি সব ভয়ংকর বিপদে যে পড়ি! একবার…

একবার কি?

না থাক। আতাহার ভাই একবার আমাকে ভয়ংকর বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন। সেই গল্পটা আমি বলতে চাচ্ছি না।

না বল, আমার শোনার দরকার।

আপনার শোনার দরকার নেই।

বলতে আমার লজ্জা লাগছে।

আমার কাছে তোমার লজ্জা পাবার কিছু নেই–তুমি বল। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে লজ্জা লাগলে অন্যদিকে তাকিয়ে বল।

নীতু খুব সহজ ও স্বাভাবিক ভঙ্গিতে একটা বানানো গল্প শুরু করল। কেন হঠাৎ সে এই কাজটা করল সে নিজেও জানে না। তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি করা গল্পে অনেক ফাঁকফোকর থাকে, তার গল্পে তা ছিল না। গল্পটা সে খুব আগ্রহ নিয়ে বলছে—

গত বৎসরের কথা। সন্ধ্যাবেলা ছাদের চিলেকোঠায় আমি ভাইয়ার জন্যে চা নিয়ে গিয়েছি। আপনি বোধহয় দেখেননি ছাদে ভাইয়ার একটা ঘর আছে। যাই হোক, আমি চা নিয়ে গেলাম। ঘরটা অন্ধকার। ভাইয়া চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। আমি ডাকলাম। এই ভাইয়া, উঠ, চা নে। ভাইয়া চাদর সরাল–আমি দেখি আতাহার ভাই।

সে কি! সে এখানে কি করছে?

আতাহার ভাই প্রায়ই আমাদের বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকে। সে যে দুপুরে এসে ছাদের চিলেকোঠায় শুয়েছিল, আমি জানি না। যাই হোক, আমি বললাম–ভাইয়া কোথায়? আতাহার ভাই বললেন–জানি না কোথায়। চায়ের কাপটা রেখে কাছে এসে বস তো। আমি বসলাম।

তুমি বসলে কেন?

বসব না কেন? উনাকে তো আমি সব সময় নিজের ভাইয়ের মত দেখেছি। যাই হোক, উনি তখন আমার গালে হাত দিয়ে বললেন–তোর গাল ফোলা ফোলা লাগছে কেন? মামস হয়েছে?

মামস হয়েছে মানে?

কয়েকদিন আগে সাজ্জাদ ভাইয়ের মামস হয়েছিল। বড়দের মামস হলে খুব কষ্ট হয়। আমি ভাবলাম, আতাহার ভাই সত্যি সত্যি আমার মামস হয়েছে কিনা দেখছেন।

তুমি তো দেখি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বোকাদের একজন।

হতে পারে। যাই হোক, আমি বললাম, আতাহার ভাই, আপনি চা খান। আমি চললাম। উনি বললেন, না, তুই বসে থাক আমার পাশে–বলেই এক হাতে আমার কোমর জড়িয়ে ধরলেন।

তারপর?

তারপর আর কিছু না।

কামাল হতভম্ব গলায় বলল, ঘটনাটা তো এখানেই শেষ হবার কথা না। তারপর কি?

নীতু খাবার খেতে শুরু করল। ছুরি দিয়ে কেটে কেটে মাছের টুকরা মুখে দিতে দিতে বলল–মাছটা দেখতে খারাপ হলেও খেতে ভাল হয়েছে।

কামাল বলল, তুমি তো কিছুই বললে না।

বললাম মতো।

আসল ঘটনা তো কিছু বলছি না। তুমি চিৎকার করে উঠলে?

শুধু শুধু চিৎকার করব কেন?

একটা লোক তোমার কোমর জড়িয়ে ধরে বসে আছে, তুমি চিৎকার করবে না?

চিৎকার করাটা লজ্জার ব্যাপার হত না? লোক জানাজানি হত।

লোকটা আর কি করল?

নীতু চুপ করে রইল। কামাল হতভম্ গলায় বলল, তোমাকে চুমু খেয়েছে?

উঁ।

উঁ-টা কি? হ্যাঁ না না?

বাদ দিন না।

বাদ দেব মানে?

যা হবার হয়ে গেছে। এখন এইসব নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ আছে? ছোটখাট দুৰ্ঘটনা ঘটেই থাকে।

এটাকে তুমি ছোট দূর্ঘটনা বলছ?

আচ্ছা, বেশ বড় দুর্ঘটনাই–বড় দুর্ঘটনাও কারো কারো জীবনে ঘটে। কি আর করা! আচ্ছা শুনুন–ম্যান্ডারিন ফিস। আমি আর খেতে পারছি না। আপনি আমার প্লেট থেকে নিয়ে নিন। খাবার নষ্ট করে লাভ কি?

কামাল চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। বেচারার জন্যে নীতুর এখন একটু মায়া লাগছে। আহা বেচারা–গল্পটা পুরো বিশ্বাস করে বসে আছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *