বিংশ পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ৯ই সেপ্টম্বর
দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে রতন প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে
[শ্রীরামকৃষ্ণের একচিন্তা ও এককথা, ঈশ্বর — “সা চাতুরী চাতুরী” ]
শ্রীরামকৃষ্ণ ৺কালীবাড়ির সেই পূর্বপরিচিত ঘরে ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন, সহাস্যবদন। ভক্তদের সহিত কথা কহিতেছেন। তাঁহার আহার হইয়া গিয়াছে। বেলা ১টা-২টা হইবে।
আজ রবিবার। ৯ই সেপ্টেম্বর, ১৮৮২ খ্রীষ্টাব্দ। ভাদ্র শুক্লা সপ্তমী। ঘরের মেঝেতে রাখাল, মাস্টার, রতন বসিয়া আছেন। শ্রীযুক্ত রামলাল, শ্রীযুক্ত রাম চাটুজ্যে, শ্রীযুক্ত হাজরা মাঝে মাঝে আসিতেছেন ও বসিতেছেন। রতন শ্রীযুক্ত যদু মল্লিকের বাগানের তত্ত্বাবধান করেন। ঠাকুরকে ভক্তি করেন ও মাঝে মাঝে আসিয়া দর্শন করেন। ঠাকুর তাঁহার সহিত কথা কহিতেছেন। রতন বলিতেছেন, যদু মল্লিকের কলিকাতার বাড়িতে নীলকণ্ঠের যাত্রা হবে।
রতন — আপনার যেতে হবে। তাঁরা বলে পাঠিয়েছেন, অমুক দিনে যাত্রা হবে।
শ্রীরামকৃষ্ণ — তা বেশ, আমার যাবার ইচ্ছা আছে। আহা! নীলকণ্ঠের কি ভক্তির সহিত গান!
একজন ভক্ত — আজ্ঞা হাঁ।
শ্রীরামকৃষ্ণ — গান গাইতে গাইতে সে চক্ষের জলে ভেসে যায়। (রতনের প্রতি) — মনে কচ্ছি রাত্রে রয়ে যাব।
রতন — তা বেশ তো।
রাম চাটুজ্যে প্রভৃতি অনেকে খড়ম চুরির কথা জিজ্ঞাসা করিলেন।
রতন — যদুবাবুর বাড়ির ঠাকুরের সোনার খড়ম চুরি হয়েছে। তার জন্য বাড়িতে হুলস্থূল পড়ে গেছে। থালা চালা হবে, সব্বাই বসে থাকবে, যে নিয়েছে তারদিকে থালা চলে যাবে।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) — কিরকম থালা চলে? আপনি চলে?
রতন — না, হাত চাপা থাকে।
ভক্ত — কি একটা হাতের কৌশল আছে — হাতের চাতুরী আছে।
শ্রীরামকৃষ্ণ — যে চাতুরীতে ভগবানকে পাওয়া যায়, সেই চাতুরীই চাতুরী। “সা চাতুরী চাতুরী!”