ষোড়শ পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ১৯শে অগস্ট
নরেন্দ্রসঙ্গে — জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগের সমন্বয়
এই বলিয়া ঠাকুর হঠাৎ ঘর হইতে উত্তর-পূর্বের বারান্দায় চলিয়া গেলেন। কাপ্তেন ও অন্যান্য ভক্তেরা ঘরেই বসিয়া তাঁর প্রত্যাগমন প্রতীক্ষা করিতেছেন। মাস্টার তাঁহার সঙ্গে ওই বারান্দায় আসিলেন। উত্তর-পূর্বের বারান্দায় নরেন্দ্র হাজরার সহিত কথোপকথন করিতেছিলেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ জানেন, হাজরা বড় শুষ্ক জ্ঞানবিচার করেন — বলেন, “জগৎ স্বপ্নবৎ — পূজা নৈবেদ্য এ-সব মনের ভুল — কেবল স্ব-স্বরূপকে চিন্তা করাই উদ্দেশ্য, আর ‘আমিই সেই’।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্য) — কি গো! তোমাদের কি সব কথা হচ্ছে?
নরেন্দ্র (সহাস্যে) — কত কি কথা হচ্ছে — ‘লম্বা’ ‘লম্বা’ কথা।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) — কিন্তু শুদ্ধাজ্ঞান আর শুদ্ধাভক্তি এক। শুদ্ধাজ্ঞান যেখানে শুদ্ধাভক্তিও সেইখানে নিয়ে যায়। ভক্তিপথ বেশ সহজ পথ।
নরেন্দ্র — “আর কাজ নাই জ্ঞানবিচারে, দে মা পাগল করে।” (মাস্টারের প্রতি) দেখুন, হ্যামিলটন্এ পড়লুম — লিখছেন, “A learned ignorance is the end of Philosophy and the beginning of Religion.”
শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি) — এর মানে কি গা?
নরেন্দ্র — ফিলসফি (দর্শনশাস্ত্র) পড়া শেষ হলে মানুষটা পণ্ডিতমূর্খ হয়ে দাঁড়ায়, তখন ধর্ম ধর্ম করে। তখন ধর্মের আরম্ভ হয়।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) — Thank you! Thank you! (হাস্য)