পঞ্চদশ অধ্যায়
মন্ত্রঃ– অগ্নে জাতান্ প্র ণুদা নঃ সপত্না প্রত্যজাতামুদ জাতবেদঃ। অধি নো ব্রুহি সুমনা অহেস্তব স্যাম শর্মস্ত্রিরূথ উদ্ভেী৷১। সহসা জাতান্ প্র ণুদা নঃ সপত্নান্ প্রত্যজাতাঞ্জাতবেদো নুদ। অধি নো ব্রহি সুমনস্যমাননা বয়ং স্যাম প্র ণুদা নঃ সপত্নান্৷৷২। ষোড়শী স্তোম ওজো দ্রবিণং চতুশ্চত্বারিংশ স্তোমো বর্চো দ্রবিণ। অগ্নেঃ পুরীষমস্যঙ্গে নাম তাং ত্বা বিশ্বে অভি ঘৃণন্তু দেবাঃ. স্তোমপৃষ্ঠা ঘৃতবতীহ সীদ প্রজাবদস্মে দ্রবিণা যজস্ব৷৷৩৷ এবচ্ছন্দো বরিবচ্ছন্দঃ শম্ভুচ্ছদঃ পরিচ্ছদ আচ্ছচ্ছন্দো মনচ্ছন্দো ব্যচচ্ছন্দঃ সিন্ধুচ্ছঃ সমুদ্রচ্ছদঃ সরিরং ছন্দ ককুন্দ খ্রিককুচ্ছদঃ কাব্যং ছন্দো অঙ্কুপং ছন্দো অক্ষরপঙিক্তচ্ছদঃ পদঙিক্তচ্ছলো বিষ্টারপঙিক্তচ্ছন্দঃ ক্ষুরচ্ছন্দো ভ্রচ্ছন্দঃ ॥৪॥৷ আচ্ছচ্ছন্দঃ প্রচ্ছচ্ছদ সংযচ্ছন্দো বিয়চ্ছন্দো রথন্তরচ্ছন্দো নিকায়চ্ছন্দো বিবধচ্ছন্দো গিরচ্ছন্দো ভজচ্ছন্দঃ সংস্তূপছন্দোনুষ্টুপ ছন্দ এবচ্ছন্দো বরিবচ্ছন্দো বয়চ্ছন্দো বয়স্কৃচ্ছন্দো বিপর্ধাচ্ছন্দো বিশালং ছদচ্ছদিচ্ছন্দো দূরোহণং ছদস্তন্দ্র ছন্দো অঙ্কাঙ্কং ছন্দঃ ॥৫। রশ্মিনা সত্যায় সত্যং জিম্বা। প্রেতিনা ধৰ্ম্মণা ধর্মং জিম্বান্বিত্যা দিবা দিবং জিম্ব। সন্ধিনান্তরিক্ষেণান্তরিক্ষং জিম্ব। প্রতিধিনা পৃথিব্যা পৃথিবীং জি বিষ্টম্ভেন বৃষ্টা বৃষ্টিং জিম্ব। প্রবয়া অহহহর্জিা নুয়া রাত্রা রাত্রীং জিম্বোশিজা বসুভ্যো বসুঞ্জি। প্রকেতেনাদিত্যেভ্য আদিত্যাঞ্জিষ৷৷৬৷৷ তন্তুনা রায়পোষেণ রায়ম্পোষং জিম্ব। সংসর্পেণ ঞতায় তং জিম্বৈডেনৌষধিভিরোষধর্জিদ্বোত্তমেন তনুভিস্তর্জি বয়োধসাধীতেনাধীতং জিম্বাভিজিতা তেজসা তেজো জিম্ব৷৷৷৷ প্রতিপদসি প্রতিপদে ত্বাহনুপদস্যনুপদে ত্ব সম্পদসি সম্পদে ত্বা তেজেইসি তেজসে জ্বা৮৷৷ ত্রিবৃদসি ত্রিবৃতে ত্বা। প্রবৃদসি প্রবৃতে ত্ব। বিবৃদসি বিবৃতে ত্ব। সবৃদসি সবৃতে ত্ব হংক্রমমাৎস্যাক্রমায় ত্বা। সংক্রমমাংসি সংক্রমায় ত্বোৎক্রমোহস্যুক্রমায় তোক্রান্তিরক্রাস্ত্যৈ ত্বোহধিপতিনোর্জোর্জং জিম্ব৷৷৷৷ রাজ্ঞসি প্রাচী দিবস্তে সেবা অধিপতয়োহগ্নিহেঁতীনাং প্রতিধর্তা ত্রিবৃৎ জ্বা স্তোমঃ পৃথিব্যাং শ্ৰয়ত্বজ্যমুক্ৰথমব্যথায়ৈ স্তুঙ্খতু রথন্তরং সাম প্রতিষ্ঠিত্যা অন্তরিক্ষ ঋষয়া। প্রথমজা দেবেযু দিবো মাত্রয়া বরিণা প্রথন্তু বিধৰ্ত্তা চায়মধি পতিশ্চ তে ত্বা সর্বে সংবিধানা নাকস্য পৃষ্ঠে স্বর্গে লোকে যজমানং চ সাদয়৷১০৷ বিরাডসি দক্ষিণা দিদাস্তে দেবাধিপতয় ইন্দ্রো হেতীনাং প্রতিধৰ্ত্তা পঞ্চদশস্তা স্তোমঃ পৃথিব্যাং শয়তু প্র উগমুকথমব্যথায়ৈ স্তভূনাতু বৃহৎসাম প্রতিষ্ঠিত্যা অন্তরিক্ষ ঋষয়স্তা। প্রথমজা দেবেযু দিবো মাত্রয়া বরি প্রথন্তু বিধৰ্ত্তা চায়মধিপতিশ্চ তে ত্বা সর্বে সংবিদানা নাকস্য পৃষ্ঠে স্বর্গে লোকে যজমানং চ সাদয়৷১১৷৷ সম্রাডসি প্রতীচী দিগাদিত্যাস্তে দেবা অধিপতয়ো বরুণো হেতীনং প্রতিধর্তা সপ্তদশস্থা স্তোমঃ পৃথিব্যাং শ্ৰয়তু মরুত্বতীয়মুক্ৰথমব্যথায়ৈ শুভূতু বৈরুপং সাম প্রতিষ্ঠিত্যা অন্তরিক্ষ ঋষয়স্তা প্রথমজা দেবেষু দিবো মাত্রয়া বরিশ্ন প্রথন্তু বিধর্তা চায়মধিপতিশ্চ তে ত্বা সর্বে সংবিদানা নাকস্য পৃষ্ঠে স্বর্গে লোকে যজমানং চ সাদয়।১২। স্বরাডসুদীচী দি মরূতস্তে দেবা অধিপতয়ঃ সোয়মা হেতীনাং প্রতিধকৈবিংশষ্যা স্তোমঃ পৃথিব্যায়ং শয়তু নিক্কেবল্যমুকথমব্যথায়ৈ স্তুভনাতু বৈরাজং সাম প্রতিষ্ঠিত্যা অন্তরিক্ষ ঋষয়া প্রথমজা দেবেষু দিবো মাত্রয়া বরিশ্ন প্রথন্তু বিধতা চায়মধিপতিশ্চ তে ত্বা সর্বে সংবিদানা নাকস্য পৃষ্ঠে স্বর্গে লোকে বজমানং চ সাদয়ন্তু৷৷১৩৷ অধিপত্নসি বৃহতী দিগ্বিশ্বে তে দেবা অধিপতয়ো বৃহম্পতিহেঁতীনাং প্রতিধর্তা ত্ৰিণবত্রয়স্ত্রিংশৌ ত্বা স্তোমৌ পৃথিব্যং শ্ৰয়তাং বৈশ্বদেবাগ্নিমারূতে উথেহব্যথায়ৈ স্তনীং শাকৃররৈবতে সামনী প্রতিষ্ঠিত্যা অন্তরিক্ষ ঋষয়স্তা প্রথমজা দেবেষু দিবো মাত্রয়া বরি প্রথন্তু বিধর্তা চায়মধিপতিশ্চ তে ত্বা সর্বে সংবিদানা নাকস্য পৃষ্ঠে স্বর্গে লোকে যজমানং চ সাদয়৷৷১৪৷৷ অয়ং পুরো হরিকেশঃ সূর্যরশ্মিস্তস্য রথগৃৎসশ্চ রথৌজাশ্চ সেনানা-গ্রামণ্যে। পুঞ্জিকস্থলা চ ক্রতুস্থলা চারসৌ। দঙক্ষুবঃ পশববা হেতিঃ পৌরুষেয়য়া বধঃ প্রহেতিস্তেভ্যো নমো অস্তু তে নোহবন্তু তে নো মৃড়য়ত্ত তে যং দ্বিষ্মে যশ্চ নো দ্বেষ্টি তমেষাং জম্ভে দঃ ॥১৫৷৷ অয়ং দক্ষিণা বিশ্বকর্মা তস্য রথস্বনশ্চ রথেচিত্ৰশ্চ সেনানীগ্রামণ্যে। মেনকা চ সহজন্যা চাল্পরসৌ যাতুধানা হেতী রক্ষাংসি প্রহেতিস্তেভ্যো নমো অস্তু তে নোহবস্তু তে নো মৃভয় তে যং দ্বিম্মে যশ্চ নো দ্বেষ্টিতমেষং জম্ভে দঃ১৬। অয়ং পশ্চাদ্বিশ্ববাচস্তস্য রথভোতশ্চাসমরথশ্চ সেনানীগ্রামণৌ। প্রশ্লোচন্তী চানুস্লোচন্তী চান্সারসৌ ব্যাঘ্রা হেতিঃ সর্পাঃ প্রহেতিস্তেভ্যো নমো অস্তু তে নোহবন্তু তে নো মৃভয়ন্তু তে যং দ্বিষ্মে যশ্চ নো দ্বেষ্টি তমেষাং জম্ভে দগ্ধ৷১৭৷৷ অয়মুত্তরাৎ সংযদ্বসুস্তস্য তাéশ্চারিষ্টনেমিস্ট সেনানীগ্রামণৌ। বিশ্বাচী চ ঘৃতাচী চাঙ্গরসাবাপো হেতির্বাতঃ প্রহেতিস্তেভ্যো নমো অস্তু তে নোহবন্তু তে নো মৃডয়ন্তু তে যং দ্বিয়ো যশ্চ নো দ্বেষ্টি তমেষাং জম্ভে দঃ ১৮। অয়মুপর্যবাথসুস্তস্য সেনজিচ্চ সুযেণশ্চ সেনানীগ্রামণ্যেী উর্বশী চ পূর্বচিত্তিশ্চাঙ্গরসাবস্ফুর্জ হেতির্বিদ্যুৎপ্রহেতিস্তেভ্যো নমো অস্তু তে নোহবন্তু তে নো মৃডয়ন্তু তে যং দ্বিগ্নে যশ্চ নো দ্বেষ্টি তমেষাং জম্ভে দঃ ॥১৯। অগ্নিমূর্ধা দিবঃ ককুৎপতিঃ পৃথিব্যা অয়ম্। অপাং রেংসি জিতি।২০৷ অয়মগ্নিঃ সহর্ষিণো বাজস্য শতিনস্পতিঃ মূর্ধা কবী রয়ীণা৷২১। স্বামগ্নে পুষ্করাদধ্যথা নিরমন্থত। মূৰ্ধো বিশ্বস্য বাঘতঃ।২২৷ ভুবো যজ্ঞস্য রজসশ্চ নেতা যত্রা নিযুঙিঃ সচসে শিবাভিঃ। দিবি মূর্ধানং দধিষে স্বর্যাং জিহ্বমগ্নে চকৃষে হব্যবাহম্ ॥২৩৷৷ অবোধ্যগ্নিঃ সমিধা জনানাং প্রতি ধেনুমিবায়তীমুযামস্। যহা ইব প্র বয়ামুজ্জিহানাঃ প্র ভানবঃ সিতে নাকমচ্ছ৷৷২৪৷ অবোচাম কবয়ে মেধ্যায় বচো বন্দারু বৃষায় বৃষ্ণে। গবিষ্ঠিরো নমসা স্তোমমগ্নেী দিবীব রুক্মমুরুব্যঞ্চমশ্রেৎ।২৫৷৷ অয়মিহ প্রথমে ধায়ি ধাতৃভি হোতা যজিষ্ঠো অধ্বরেদ্বীড্যঃ। যমপ্নবানো ভৃগবো বিরুরুচু বণেষু চিত্ৰং বিম্বং বিশে বিশে৷৷২৬৷৷ জনস্য গোপা অজনিষ্ঠ জাগৃবিরগ্নিঃ সুদক্ষঃ সবিতায় নব্যসে। ঘৃতপ্রতীকো বৃহতা দিবিশৃশা দুমদ্বিভাতি ভরতেভ্যঃ শুচিঃ।২৭৷৷ ত্বমগ্নেঅঙ্গিরসো গুহা হিতমন্ববিঞ্ছিশ্রিয়াণং বনে বনে। স জায়সে মথ্যমানঃ সহহ মহত্ত্বামাহুঃ সহসম্পুত্ৰমঙ্গিরঃ ৷৷২৮৷৷ সখায়ঃ সং বঃ সম্যঞ্চমিষং স্তোমং চাগ্নয়ে। বর্মিষ্ঠায় ক্ষিতীনামূৰ্জো নত্রে সবস্বতে৷৷২৯৷৷ সংসমিবসে বৃষন্নগ্নে বিশ্বানর্য আ, ইডম্পদে সমিধ্যসে স নো বন্যা ভর৷৷৩০৷৷ ত্বাং চিত্রশ্রবস্তম হবন্তে বিক্ষু জন্তবঃ। শোচিষ্কেশং পুরুপ্রিয়াগ্নে হব্যায় বোঢ়বে।৩১। এনা বো অগ্নিং নমসোর্জো নপাতমা হুবে। প্রিয়ং চেতিষ্ঠমরতিং স্বধ্বরং বিশ্বস্য দূতমমৃত৷৷৩২৷৷ বিশ্বস্য দূতমমৃতং বিশ্বস্য দূতমমৃত। স যোজতে অরুষা বিশ্বভোজসা স দুদ্রবৎ স্বাহুতঃ।৩৩৷৷ স দুদ্রবৎ স্বাহুতঃ স দুরবৎস্বাহুতঃ। সুব্রহ্মা যজ্ঞঃ সুশমী বসূনাং দেবং রাধো জনানা৷৩৪৷ অগ্নে বাজস্য গোমত ঈশানঃ সহসো যহো। অস্মে ধেহি জাতবেদো মহি শ্ৰবঃ ৩৫৷ স ইধানো বসুন্ধবিরগ্নিরীডেন্যো গিরা। রেবদষ্মভ্যং পুর্বণীক দীদিহি৷৷৩৬৷৷ ক্ষপো রাজদ্ভুত আনাগ্নে বস্তোরুতোষসঃ। সতিগ্রজম্ভ রক্ষসোদহ প্রতি৷৩৭৷৷ ভদ্রে নো অগ্নিবাহুতো ভদ্রা রাতিঃ সুভগ ভদ্ৰো অধ্বরঃ। ভদ্রা উত প্রশস্তয়ঃ ॥৩৮৷ ভদ্রা উত প্রশস্তয়ো ভদ্রং মনঃ কৃণুত্ব বৃত্রর্ষে। যেনা সমৎসু সাসহঃ ॥৩৯৷৷ যেনা সমসু সাসোহব স্থিরা তনুহি ভূরি শর্তা বনেমা তে অভিষ্ঠিভিঃ ॥৪০৷ অগ্নিং তং মন্যে যো বসুরস্তং যং যন্তি ধেনবঃ। অস্তমন্ত আশবোহস্তং নিত্যাসসা বাজিন ইষং স্তোতৃভ্য আ ভর।৪১। সো অগ্নিৰ্যে বসুর্গণে সংযমায়ন্তি ধেনবঃ। সমৰ্বন্তো রঘুব সং সুজাতাসঃ সূরয় ইষং স্তোতৃভ্য আ ভর৷৪২৷৷ উভে সুশ্চন্দ্র সর্পিযোদবী শ্ৰীণীষ আসনি। উতোন উৎপুপূৰ্যা : উথেষু সবসম্পত ইষং স্তোতৃভ্য আ ভর৷৪৩৷৷ অগ্নে তমদ্যাশ্বং ন স্তোমৈঃ ক্রতুং ন ভদ্রং হৃদিম্পৃশ। ঋধ্যামা ত ওহৈঃ৪৪। অধা হ্যগ্নে ত্রুতোর্ভদ্রস্য দক্ষস্য সাধোর। রথীঋতস্য বৃহততা বভূথ ৪৫৷ এভির্নো অর্কৈৰ্ভবা নো অর্বা স্বর্ণজ্যোতিঃ অগ্নে বিশ্বেভিঃ সুমনা অনীকৈঃ॥৪৬। অগ্নিং হোতারং মন্যে দাস্বন্তং বসুং সূনুং সহসো জাতবেদসং বিপ্রং ন জাতবেদসম্ য ঊর্ধ্বয়া স্বপ্নরা দেবো দেবচ্যা কৃপা। ঘূতস্য। বিভ্রাষ্টিমনু বষ্টি শশাচিষা হইজুহুনস্য সর্পিষঃ ॥৪৭৷ অগ্নে ত্বং নো অন্তম উত ত্রাতা। শিববা ভবা বরুথ্যঃ। বসুরগ্নিসুবা অচ্ছা নক্ষি দুমত্তমং রয়িং দাঃ। তং ত্বা শোষ্ঠি দীদিবঃ সুন্মায় নূনমীমহে সখিভ্যঃ॥৪৮৷৷ যেন ঋষয়স্তপসা সত্ৰমায়ন্ধিানা অগ্নিং স্বরাভরন্তঃ। তস্মিন্নহং নি দধে নাকে অগ্নিং যমাহুর্মনব স্তীর্ণ বহিষ৷৷৪৯৷ তং পত্নীভির গচ্ছেম দেবাঃ পুলভ্রাতৃভিরুত বা হিরণ্যৈঃ। নাকং গৃণানাঃ সুকৃতস্য লোকে তৃতীয় পৃষ্ঠে অধি বোচণে দিবঃ ॥৫০৷ আ বাচো মধ্যমরুহঙুর«রয়মাগ্নিঃ সৎপতিশ্চেকিতানঃ। পৃষ্ঠে পৃথিব্যা নিহিত দবিদ্যুতদধম্পদং কৃণুতাং যে পৃতন্যবঃ ॥৫১। অয়মগ্নিৰ্বীরতমো বয়োধাঃ সহস্রিয়ো দ্যোততামপ্রযুচ্ছ। বিভ্রাজমানঃ সরিরস্য মধ্য উপ প্র যাহি দিব্যানি ধাম৷৷৫২৷৷ সম্প্রচ্যবধ্বমুপ সম্প্রতাগ্নে দেবযানান্ কৃণুধ্বম্। পুনঃ কৃথানা পিতরা যুবানাহুম্বংসীৎ ত্বয়ি তন্তুমেত৷৫৩৷৷ উবুধ্যস্বাগ্নে প্রতি জাগৃহি ভূমিষ্টাপুর্তে সং সৃজেথাময়ং চ। অস্মিধস্থে অধত্তরস্মিন্ বিশ্বে দেবা যজমানশ্চ সীদত৷৷৫৪৷৷ যেন বহসি সহস্রং যেনাগ্নে সর্ববেদস। তেনেমং যজ্ঞং নো নয় স্বর্দেবেষু গন্তবে।।৫৫৷৷ অয়ং তে । যোনিঋত্বিয়ো যতো জাতে অবোচথা। তং জানন্নগ্ন আ লোহাথা নো বর্ধয়া রয়ি৷৷৫৬৷৷ তপশ্চতপস্যশ্চ শৈশিরাবৃতু অগ্নেরন্তঃশ্লেযোহসিকল্পেংদ্যাবাপৃথিবী কল্লামাপ ওষধয়ঃ কল্পন্তামগ্নয়ঃ পৃথঙ মম জ্যৈষ্ঠ্যায় ব্রতাঃ। যে অগ্নয়ঃ সমনসোহরা দ্যাবাপৃথিবী ইমে। শৈশিরাবৃত্ অভিকল্পমানা ইন্দ্ৰমিব দেবা অভিসং বিশন্তু তয়া দেবতয়াহঙ্গিরস্বদ ধ্রুবে সীদত৷৷৫৭৷৷ পরমেষ্ঠী ত্বা সাদয়তু দিবষ্ঠে জ্যোতিষ্মতী। বিশ্বস্মৈ প্রাণায়াপনায় ব্যানায় বিশ্বং জ্যোতির্যচ্ছ। সূর্যস্তেহধিপতিস্তয়া দেবতয়া অঙ্গিরস্বদ বা সীদ।৫৮৷৷ লোকাং পৃণ ছিদ্রং পৃণাথো সীদ ধ্রুবা ত্বম্। ইন্দ্রাগ্নী ত্বা বৃহস্পতিরস্মিন্ যোনাবসীষদ৷৷৫৯৷৷ তা অস্য সূদদোহসঃ সোমং শ্ৰণন্তি পৃশ্লয়ঃ। জন্মন্দেবানাং বিশস্ত্রি নোচনে দিবঃ৷৷৬০৷৷ ইং বিশ্বা অবীবৃধসমুদ্রব্যচসং গিরঃ। রথীতমং রথীনাং বাজানাং সৎপতিং পতি৷৬১। পোথদশ্বে নযবসেহবিষ্যন্যদা মহঃ সংবরণাধ্যস্থাৎ। আদস্য বাতো অনুবাতি শোচিরধ স্ম তে ব্রজনংকৃষ্ণমস্তি।।৬২। আযোষ্ট্রা সদনে সাদয়াম্যবতচ্ছায়ায়াং সমুদ্রস্য হৃদয়ে। রশীবতীং ভাস্বতীমা যা দ্যাং ভাস্যাপৃথিবী-মোর্বন্তরিক্ষ৷৬৩৷৷ পরমেষ্ঠী ত্বা সাদয়তু দিবপৃষ্ঠে ব্যচস্বতীং প্রথস্বতীং দিবং যচ্ছ দিবং দৃংহ দিবং মা হিংসীঃ। বিশ্বম্মৈ প্রাণায়াপনায় ব্যায়োদানায় প্রতিষ্ঠায়ৈ চরিত্রায়। সূর্যাভি পাতু মহা স্বস্ত্যা ছর্দিষ শম্ভমেন তয়া দেবতয়াহঙ্গিরস্ব ধ্রুবে সীদত৷৷৬৪৷৷ সহস্রস্য প্রমাহসি সহস্রস্য প্রতিমাহসি সহস্রস্যোন্মাহসি সাহস্লোহসি ত্বা।৬৫৷৷
[কণ্ডিকা-৬৫, মন্ত্র ১৩৬]
.
মন্ত্ৰার্থঃ– (এই অধ্যায়ে পঞ্চম চিতির মন্ত্রগুলি বলা হয়েছে। সর্বপ্রথম পাঁচটি অসপত্না সংজ্ঞক ইষ্টকা ধারণীয়)
১। হে অগ্নি! আমাদের উৎপন্ন শত্রুগণকে প্রকর্ষের সাথে বিনষ্ট করো। হে উৎপন্ন মাত্রকে জ্ঞাত (জাতবেদা) অগ্নি! আমাদের যে শত্রু উৎপন্ন হতে চলেছে-তাদেরও তুমি বিনষ্ট করে। বিনা ক্রোধে প্রসন্ন মনে তুমি সপক্ষপাত আপন কথন ব্যক্ত করো বা যজ্ঞবিদ্যা উপদেশ করো। হে অগ্নি! আমরা যেন তোমার পরিচর্যা করে সদঃ-হবিধান-আগ্নী নামে তিন বিভাগযুক্ত তোমার সুখ-সমৃদ্ধিকারী যজ্ঞগৃহে সদা বিদ্যমান থাকতে পারি।
২। হে অগ্নি! বল অর্থাৎ সেনাগণের সাথে উৎপন্ন আমাদের শত্রুগণকে নষ্ট করো এবং হে জাতবেদা অগ্নি! উৎপন্ন হবে এমন শত্রুদেরও সন্তপ্ত করো। প্রসন্নতা ধারণ করে আমাদের অধিক আপন করো বা বলো। আমরা যেন সদা প্রসন্ন থাকি। হে অগ্নি! আমাদের শত্রুদের বিনষ্ট করো
৩। পনেরো কলাযুক্ত এক পক্ষে বা আবৃত্তিযুক্ত যোড্রশস্তোম এবং বলরূপ ধনস্বরূপা তুমি। হে ইষ্টকা! আমি তোমাকে এই পঞ্চম চিতিতে নির্বাচন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি চতুশ্চত্বারিংশস্তোম এবং ব্রহ্মচর্য রূপ ধন। আমি তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি অভক্ষক অগ্নি এবং পঞ্চদশ কলাশালী চন্দ্রের পূরণকর্তী। সেই তুমি হেন ইষ্টকাকে বিশ্বদেবগণ সংস্তুত করেন। স্তোমসমূহ, পৃষ্ঠসমূহ এবং হোম করার ঘৃতের সাথে যুক্ত হয়ে, হে ইষ্টকা! তুমি এই স্থানে প্রতিষ্ঠিত হও। আমাদের পুত্রযুক্ত ধন প্রদান করো ৷
৪। (বিরাট সংজ্ঞক ইষ্টক ধারণীয়)–সকল প্রাণীর গমনাগমনের এই ভূলোকই এব-ছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি এব-ছন্দস্বরূপা। আমি তোমাকে চয়ন করছি। প্রভামণ্ডল হতে আব্রিয়মাণ এই অন্তরিক্ষই বরিব-ছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন তৎস্বরূপাকে আমি চয়ন করছি। সকলের সুখকারী এই দ্যুলোকই শম্ভু ছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন….। পরিতঃ বর্তমান এই দিকসমূহই পরিভূ-ছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন….। আপন রসে শরীরমাত্রকে আচ্ছাদিতকারী অন্নই আচ্ছাচ্ছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন তৎস্বরূপাকে….। প্রজাপতিই মনচ্ছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন তৎস্বরূপাকে….। সর্ব জগৎকে ব্যাপ্ত করণশীল এই সূর্যই ব্যচচ্ছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন….। নাড়িসমূহের দ্বারা শরীরে বেষ্টনশীল প্রাণই সিন্ধু ছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন….। মনই সমুদ্রছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন….। মুখকুহর হতে অভিসৃত (নির্গত)-শালী বাই সরিরছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন….। প্রাণকে ককু ছন্দ বলে। হে ইষ্টকা!….। পীত (পানকৃত) জলকে। তিন প্রকারে শরীরে ধারিত করণশীল উদান বায়ুই ত্রিককুছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন…। বেদত্রয়ই কাব্যছন্দ। হে ইষ্টকা!….। কুটিল গতিশীলা এই জলই অঙ্কুপছন্দ। হে ইষ্টকা!…। ক্ষরণরহিতা এই দুলোকই অক্ষরপংক্তিছন্দ। হে ইষ্টকা!…. এই ভূলোকই পদপংক্তিছন্দ। হে ইষ্টকা!….। বস্তুসমূহের বিস্তারের সাথে যুক্ত এই দিসমূহই বিষ্টারপংক্তিছন্দ! হে ইষ্টকা!….। স্বরূপে লঘু হলেও তীব্ৰলেখন সমর্থ এই সূর্যই ক্ষুরোভ্ৰজছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন তৎস্বরূপাকে আমি চয়ন করছি৷৷
৫৷ অন্নই আচ্ছচ্ছন্দ, অন্নই প্রচ্ছচ্ছন্দ, রাত্রিই সংমচ্ছচ্ছন্দ, দিবাই বিয়চ্ছন্দ, এই দ্যুলোকই বৃহচ্ছ, এই ভূমণ্ডলই রথন্তরছন্দ, সতত শব্দকারী বায়ুই নিকায়চ্ছন্দ, অন্তরিক্ষই বিবধচ্ছন্দ, অন্নই গিরচ্ছন্দ, অগ্নিই ভজচ্ছন্দ, বাই সংস্তূপ-অনুষ্টুপ ছন্দ, পৃথিবীই এবচ্ছন্দ, অন্তরিক্ষই বরিবচ্ছন্দ, অন্নই বয়চ্ছন্দ, আপন শক্তির ন্যূনাধিকতার দ্বারা বাল্য প্রভৃতি অবস্থাসমূহকে করণশীল এই জঠরাগ্নিই বয়স্কৃচ্ছন্দ, ঐ স্বৰ্গই বিস্পর্ধাচ্ছন্দ, এই ভূতলই বিশালছন্দ, এই অন্তরিক্ষই ছদিচ্ছন্দ, ঐ আদিত্যই দুরোহণছন্দ, পংক্তিই তন্দ্রছন্দ, এবং জলই অঙ্কাঙ্কছন্দ। হে ইষ্টকা! তুমি হেন সেই সেই স্বরূপাকে আমি চয়ন করছি৷৷
৬। হে ইষ্টকা! তেজোবৃদ্ধিকর অন্নের দ্বারা সত্যের নিমিত্ত বেদিতে চয়িতা হয়ে তুমি সত্যকে প্রীণিত (তর্পিত বা প্রীত) করো। অন্নের দ্বারা ধর্মের নিমিত্ত চয়িতা হয়ে তুমি ধর্মকে প্রীণিত করো। অন্নের দ্বারা, হে ইষ্টকা! দ্যুলোকের নিমিত্ত চয়িতা হয়ে তুমি দ্যুলোককে প্রীণিত করো। অন্নের দ্বারা অন্তরিক্ষের নিমিত্ত চয়িতা হয়ে তুমি অন্তরিক্ষকে প্রীণিত করো। হে ইষ্টকা! অন্নের দ্বারা পৃথিবীর নিমিত্ত চয়িতা হয়ে তুমি পৃথিবীকে প্রীণিত করো। প্রাণের ধারক অন্নের দ্বারা বৃষ্টির নিমিত্ত চয়নকৃতা হয়ে, হে ইষ্টকা! তুমি বৃষ্টিকে প্রেরিত করো। অন্নের দ্বারা দিনের নিমিত্ত চয়নকৃতা হয়ে তুমি দিনকে প্রীণিত করো। অনের দ্বারা রাত্রির নিমিত্ত চয়িতা হয়ে তুমি রাত্রিকে প্রীণিত করো। হে ইষ্টকা! বসুগণের নিমিত্ত চয়নকৃতা হয়ে তুমি বসুগণকে প্রীণিত করো। অন্নের দ্বারা আদিত্যগণের নিমিত্ত চয়নকৃতা হয়ে তুমি আদিত্যগণকে প্রীণিত করো।
৭। হে ইষ্টকা! অন্নের দ্বারা গো-অশ্বধনের নিমিত্ত আহৃতা হয়ে তুমি গো-অশ্বধনকে প্রীণিত করো। হে ইষ্টকা! অন্নের দ্বারা শাস্ত্রজ্ঞানকে অর্পিতা হয়ে তুমি শাস্ত্রকে প্রীণিত করো। হে ইষ্টকা! অন্নের দ্বারা ওষধিসমূহের নিমিত্ত আহৃত হয়ে তুমি ওষধিসমূহকে প্রীণিত করো! হে ইষ্টকা! অন্নের দ্বারা শরীরের নিমিত্ত উপহিতা তুমি শরীরকে প্রীণিত করো। হে ইষ্টকা! অন্নের দ্বারা অশ্বধনের নিমিত্ত আহৃতা হয়ে তুমি অশ্বধনকে প্রীণিত করো। হে ইষ্টকা! অন্নের দ্বারা তেজের নিমিত্ত আহৃত হয়ে তুমি তেজকে অভিবৃদ্ধ করো।
৮। হে ইষ্টকা! তুমি অন্নস্বরূপা। অন্নের নিমিত্ত তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি অনুবাদ (বা অন্ন) স্বরূপা। অন্নের নিমিত্ত তোমাকে বেদিতে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা তুমি সম্পদ (বা অন্ন) স্বরূপা! সম্পদের নিমিত্ত আমি তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি তেজ (বা অন্ন) স্বরূপা। বেগের নিমিত্ত তোমাকে চয়ন করছি৷
৯। হে ইষ্টকা! তুমি কৃষি, বৃষ্টি ও বীজরূপ ত্রিবৃৎ (বা অন্ন)। ত্রিবৃতের নিমিত্ত আমি তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি প্রবৃৎ (অন্ন) স্বরূপা ভূতবর্গের আবরক প্রবৃতের নিমিত্ত আমি তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি বিবৃৎ (অন্ন) শব্দপা প্রাণিবর্গে বিশেষরূপ বর্তমান বিবৃতের নিমিত্ত আমি তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি সবৃৎ (অন্ন) স্বরূপা। একত্রে বর্তমান সবৃতের নিমিত্ত তোমাকে চয়ন করেছি। হে ইষ্টকা! তুমি অক্রম (অন্ন) স্বরূপা। ক্ষুধার পরাভবের নিমিত্ত তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি সংক্রম (অন্ন) স্বরূপা। দেহের সংক্রামণের নিমিত্ত আমি তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি উক্ৰম (অন্ন) স্বরূপা। বীজের পরিণতির নিমিত্ত তোমাকে চয়ন করছি। হে ইষ্টকা! তুমি উক্রান্তি (অন্ন) স্বরূপা। উক্রান্তি অর্থাৎ গমন যোগ্যতার নিমিত্ত তোমাকে চয়ন করছি। হে। ইষ্টকা! তুমি অধিপতি হয়ে আমাদের বলবীর্যকে প্রীণিত (অভিবৃদ্ধ) করো।
১০। হেইষ্টকা! তুমি পূর্বদিকে শোভামানা। বসুগণ তোমার পালক দেবতা। শত্রুগণের দ্বারা প্রযুক্ত অস্ত্রশস্ত্রসমূহের নিবারণকর্তা অগ্নি। ত্রিবৃৎ স্তোম তোমাকে পৃথিবীর উপর স্থাপিত করুক।প্র বো দেবায় অগ্নেয় প্রভৃতি আজ্য সংজ্ঞক উথ শস্ত্র অচলতার নিমিত্ত তোমাকে স্তম্ভিত করুক। অন্তরিক্ষলোকে প্রতিষ্ঠার নিমিত্ত, হে ইষ্টকা! তোমাকে রথন্তর সাম স্তম্ভিত করুক। প্রথমোৎপন্ন সপ্তপ্রাণ দ্যুলোকের বিস্তারের অনুরূপই দেবগণে তোমাকে প্রথিত করুক। ধারক বাক্ এবং অধিপতি মনও তোমাকে প্রথিত করুক। হেইষ্টকা! এরা সকলে ঐকমত্য প্রাপ্ত হয়ে স্বর্গলোকে তোমাকে ও যজমানকে প্রতিষ্ঠিত করুক৷৷
১১। হে ইষ্টকা! বিশেষ রূপে রাজমানা (বা শোভমানা) তুমি দক্ষিণ দিক। রুদ্রগণ তোমার অধিপতি দেবতা। ইন্দ্ৰ শত্ৰুগণের আয়ুধসমূহকে প্রতিরোধকারী। পঞ্চদশস্তোম তোমাকে পৃথিবীতে স্থিত করুক। তোমার অচলতার নিমিত্ত বায়ুরগ্রেগা প্রউগৎ সংজ্ঞক উথ শস্ত্র তোমাকে দৃঢ় করুক। বৃহৎ সামও তোমাকে অন্তরিক্ষ লোকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নিমিত্ত স্তম্ভিত (দৃঢ়তার সাথে ধারণ করুক। প্রথমোৎপন্ন প্রাণ দ্যুলোকের বিস্তারের মতোই তোমাকে দেবতাগণের মধ্যে প্রথিত করুক (বিস্তার দান করুক)। এই বাক ও মনের অভিমানী দেবতাও তোমাকে প্রথিত করুক। ঐ সকল দেবগণ ঐকমত্য প্রাপ্ত হয়ে দ্যুলোকের উচ্চে স্বর্গস্থানে যজমান ও তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করুক৷
১২। হে ইষ্টকা! সম্যক রাজমানা তুমি পশ্চিম দিক। আদিত্যগণ তোমার অধিপতি দেবতা। বরুণ শত্রুবর্গের অস্ত্রসমূহের নিবারণকর্তা। সপ্তদশ স্তোম তোমাকে পৃথিবীতে উচ্ছিত (উন্নত) করুক। আ ত্বা রথং যথোতয়েইত্যাদি সংজ্ঞক উকথশাস্ত্র অচলতার নিমিত্ত তোমাকে দৃঢ়রূপে ধারণ করুক। বৈরূপ সাম তোমাকে অন্তরিক্ষে প্রতিষ্ঠা প্রাপ্তির নিমিত্ত দৃঢ় করুক। প্রথমোৎপন্ন প্রাণ দ্যুলোকের উরুত্ব (অর্থাৎ বিশালত্ব) ও বিস্তারের ন্যায় তোমাকে দেবগণের মধ্যে প্রথিত করুক। এই বাক্ ও মনের অভিমানী দেবতাও তোমাকে সর্বথা প্রথিত করুক। ঐ সকল দেবতা ঐকমত্য প্রাপ্ত হয়ে দ্যুলোকের উত্তম স্থান স্বর্গে যজমান ও তোমাকে স্থাপিত করুক৷
১৩। হে ইষ্টকা! স্বয়ংই শোভমানা তুমি উত্তর দিক। মরুৎবর্গ তোমার অধিপতি দেবতা। শত্রুর প্রযুক্ত আয়ুধসমূহের নিবারণ কর্তা সোম। হে ইষ্টকা! একবিংশ স্তোম তোমাকে পৃথিবীতে উচ্ছিত করুক। অভি ত্বা শূর নোনুমঃ প্রভৃতি নিষ্কর্বল্য শস্ত্র তোমাকে অচলতার নিমিত্ত দৃঢ় করুক। অন্তরিক্ষে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নিমিত্ত বৈরাজসাম তোমাকে দৃঢ় করুক। প্রথমোৎপন্ন প্রাণ দুলোকের বিশালত্ব ও বিস্তারের ন্যায় তোমাকে দেবগণের মধ্যে প্রথিত করুক। এই বাক্ ও মনের দেবতাগণও তোমাকে প্রথিত করুক। ঐ সকল দেবতা ঐকমত্য প্রাপ্ত হয়ে দ্যুলোকের উত্তম স্বর্গস্থানে যজমান ও তোমাকে ধারণ করুক৷
১৪। হে ইষ্টকা! তুমি, সর্বপালনকী ঊর্ধ্ব দিক। বিশ্বদেবগণ তোমার অধিপতি দেবতা। শত্রুর আয়ুধসমূহের নিবারক বৃহস্পতি দেবতা। ত্রিণব-ত্রয়স্ত্রিংশ স্তোম তোমাকে পৃথিবীতে উন্নত করুক। তৎসবিতুৰ্বণীমহে এবং বৈশ্বানরায় পৃথুপাজসা ইত্যাদি অগ্নিমারতত শস্ত্র তোমাকে অচলত্বের নিমিত্ত দৃঢ়রূপে ধারণ করুক। অন্তরিক্ষে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নিমিত্ত শার ও রৈবত সাম তোমাকে দৃঢ় করুক। প্রথমোৎপন্ন প্রাণ তোমাকে দ্যুলোকের বিশালত্ব এবং বিস্তারের ন্যায়ই দেবগণে প্রথিত করুক। বাক্ ও মনের অভিমানী দেবতা তোমাকে প্রথিথ করুক। ঐ সকল দেবগণ ঐকমত্য প্রাপ্ত হয়ে দ্যুলোকের উত্তম স্থান স্বর্গে যজমান ও তোমাকে ধারণ করুক৷৷
১৫। সম্মুখে চয়নকৃত এই যে অগ্নি বর্তমান, যার কেশ জ্বালা রশ্মিময়, তথা যে সূর্যের ন্যায় রশ্মিময়শালী। যে অগ্নির রথবহনে কুশল রথগৃৎস এবং রথ-যুদ্ধে কুশল রথৌজা নামক দেবসেনানী ও গ্রামণী (বা গ্রামের অধিপতি) আছে। সেই দুই পরিচারক হলো বসন্ত ঋতুর দুই মাস-ফাল্গুন ও চৈত্র। দিক্-উপদি রূপ পুঞ্জিকস্থা ও ক্রতুস্থলা নামে দুই অপ্সরা পরিচারিকা আছে। দশনশীল ব্যাঘ্র ইত্যাদি পশুই তার হেতি (বজ্র) ও প্রহেতিরূপ (প্রকৃষ্টরূপ) আয়ুধ। সেই অগ্নির পৌরুষেয়বধ (অর্থাৎ পরস্পর একে অপরকে বধ)-ই হনন। হে ইষ্টকা! তুমি এইরকম সেই অগ্নির স্বরূপশালিনী। সেই অগ্নি, তার সেনানী-গ্রামণী, সেই অপ্সরা পরিচারিকাদ্বয় এবং আয়ুধ ইত্যাদিকে সর্বথা নমস্কার। তারা সকলে আমাদের সুখী করুক। তারা সকলে আমাদের রক্ষা করুক। যে মনুষ্যের আমরা অহিত চিন্তা করি, এবং যারা আমাদের অহিত চিন্তা করে তাদের আমরা অগ্নি ইত্যাদির মুখের চোয়ালে (অর্থাৎ দংষ্ট্ৰাকরালে) প্রক্ষিপ্ত করছি।
১৬। দক্ষিণ দিকে অতিশয়ত্ব প্রাপ্ত এই সর্বকর্মকারী বায়ু আছে। রথে স্থিত শব্দকারী রথস্কন সেই বায়ুর সেনাপতি এবং রথে আরোহিত হয়ে বিচিত্র রকমের যুদ্ধশালী রথচিত্র তার গ্রামণী। (গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠমাস– এই দুটি)। মেনকা ও সহজন্যা সেই বায়ুর দুই অপ্সরা পরিচারিকা। যাতুন তার হেতি এবং রাক্ষস তার প্রহেতি (আয়ুধ)। ঐ সকলের নিমিত্ত নমস্কার। তারা আমাদের রক্ষা করুক। তারা আমাদের সুখী করুক। আমরা যাকে দ্বেষ করি এবং যারা আমাদের দ্বেষ করে, তাদের আমরা এদের মুখে ধারণ করছি।
১৭। পশ্চিম দিকে গতি করণশীল এবং সর্বত্র ব্যাপনশীল এই সূর্য বিশ্ববাচা (অর্থাৎ সর্বত্র উদয়ের দ্বারা প্রকাশশীল)।রথোত এর সেনাপতি ও অসমরথ এর গ্রামপতি। (এই দুটি বর্ষা ঋতুর আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস)। প্রম্নোচন্তী ও অনুম্নোচন্তী এর দুই অপ্সরা পরিচারিকা। ব্যাঘ্র এর হেতি এবং সর্প এর প্রহেতি। তাদের সকলকে নমস্কার। তারা আমাদের রক্ষা করুক। তারা আমাদের সুখ প্রদান করুক। আমরা যাকে দ্বেষ করি এবং যারা আমাদের দ্বেষ করে, আমরা তাদের সকলকে এদের মুখে নিক্ষেপ করছি৷৷
১৮। এই উত্তর দিকে প্রসিদ্ধ প্রাপ্ত এবং ধনের নিমিত্ত আশ্রয়ণীয় যজ্ঞ। তাক্ষ (গরুর) এর সেনানী তথা অরিষ্ট (অহিংসিত) নেমি এর গ্রামনায়ক। (এরা শরৎঋতুর আশ্বিন ও কার্তিক মাসদ্বয়)। বিশ্বাচী ও ঘৃতাচী অপ্সরা এর পরিচারিকা। জল, এর হেতি এবং বায়ু-এর প্রহেতি নামক দুই অস্ত্র। যজ্ঞ সহ তাদের সকলকে নমস্কার। তারা আমাদের রক্ষা করুক। তারা আমাদের সুখী করুক। আমরা যাদের দ্বেষ করি এবং যে আমাদের প্রতি দ্বেষ করে, তাদের আমরা এদের মুখে নিক্ষেপ করছি৷৷
১৯। এই উপর-উপর স্থিতিশীল পরন্তু নিম্নে বর্ষাধন বিস্তারকারী (বর্ষণকারী) পর্জন্য রয়েছে। সেনাগণকে জয়কারী সেনজিৎ-এর সেনাপতি। সুন্দর সেনাসম্পন্ন সুষেণ এর গ্রামনায়ক। (এই উভয়ে হেমন্ত ঋতুর অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাস)। উর্বশী ও পূর্বচিত্তি এর দুই অপ্সরী পরিচারিকা। বজ্রনির্ঘোষ এর হেতি এবং বিদ্যুৎ এর প্রহেতি (অস্ত্রদ্বয়)। পর্জন্য সহ তাদের সকলকে নমস্কার। তারা আমাদের রক্ষা করুক। তারা আমাদের সুখী করুক। যাদের আমরা দ্বেষ করি এবং যে আমাদের দ্বেষ করে, তাদের আমরা এদের মুখবিবরে নিক্ষেপ করছি৷
২০। দুলোকের মূর্ধার বা মস্তকের সমান (অর্থাৎ অত্যন্ত শ্রেষ্ঠ), অত্যন্ত মহান্ এবং পৃথিবীর স্বামী (বা পালক) এই অগ্নি জলের কারণকে (মেঘকে) প্রীণিত করছে। (অর্থাৎ আহুতির পরিণাম বর্ষা-কারক)।
২১। এই অগ্নি শত-সহস্ৰকমূল্যক অন্নের পালক, ধনের মূর্ধা বা মস্তক (অর্থাৎ শ্রেষ্ঠধনস্বরূপ) এবং ক্রান্তদর্শী। (আমরা তার স্তুতি করছি)।
২২। হে অগ্নি! সকল ঋত্বিকগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ অথবা নামক ঋষিবর্গ তোমাকে সর্বপ্রথম কমলাপত্রের উপর মন্থন করেছিলেন৷৷
২৩। হে অগ্নি! যখন তুমি হবিকে বহনকারী আপন জ্বালসমূহ প্রকট করে থাকো–তখন তুমি যজ্ঞের নেতা ও যজ্ঞের পরিণামস্বরূপ বর্ষণশীল জলের নেতা হয়ে থাকো–যেখানে তুমি কল্যাণকারী বায়ুর নিযুত সংজ্ঞক (বা সংখ্যক) অশ্বসমূহে সঙ্গত হয়ে থাকো, অর্থাৎ অন্তরিক্ষে (বর্ষা ধারণ করো) এবং দ্যুলোকে স্বর্গদাতা সূর্যকে ধারণ করে থাকো।(হে অগ্নি! যজ্ঞে প্রসন্ন হয়ে তুমি লোকের উপকারার্থে অন্তরিক্ষে বর্ষা এবং সুখকারী সূর্যকে দুলোকে ধারণ করে থাকো)৷
২৪৷ সমিধের দ্বারা সমিদ্ধমান অগ্নি প্রজ্বলিত হয়েছে; যেভাবে আসন্ন উষায় গাভীকে দোহনের নিমিত্ত জাগ্রত করা হয়। পূর্ণ প্রজ্বলিত এই অগ্নির রশ্মিসমূহ আকাশের ঐ দিকে উত্থিত হয়ে বিস্তৃত হয়ে পড়ছে; যেমন জাতপক্ষ পক্ষী (উড্ডীয়মানে সমর্থ হয়ে) প্রাতঃকালে আহারের অন্বেষণে বিস্তৃত অন্তরিক্ষে (অর্থাৎ আকাশে) উড্ডীয়মান হয়ে থাকে৷৷
২৫। ক্রান্তদ্রষ্টা, যজ্ঞের যোগ্য, শ্রেষ্ঠ বা কামনাসমূহের বর্ষক এবং সদা সেচনসমর্থ (অর্থাৎ যুবা) অগ্নির নিমিত্ত আমরা উদগাতাগণ বন্দনাময় বাক্য উচ্চারণ করেছি। এক্ষণে বাণীতে (অর্থাৎ মন্ত্রে) অচ্যুতমতি হোতা (যাজ্যা–অনুবাক্যার দ্বারা) অগ্নিতে অন্নকে আসঞ্জিত করবে (অর্থাৎ হোম করবে); যেমন বহুগমনশীল সূর্য স্বর্ণময় হয়ে দ্যুলোকে আসঞ্জিত (বিন্যস্ত বা সঙ্গত) হয়ে থাকে৷৷
২৬। দেবগণকে আহ্বানকারী, অত্যন্ত যজনশীল এবং যজ্ঞে অত্যন্ত প্রশংসনীয় এই। আহ্বানীয় অগ্নিই সর্বপ্রথম অগ্ন্যাধান করণশীল ঋত্বিকদের দ্বারা স্থাপিত হয়েছে বা ধৃত হয়েছে; চায়নীয় এবং প্রজায়-প্রজায় (অর্থাৎ যজমানে-যজমানে) ব্যাপক যে অগ্নিকে পুত্র-পৌত্র ইত্যাদির সাথে ভৃগুগণ বনে প্রজ্বলিত করেছিলেন৷৷
২৭। ভক্ত যজমানের রক্ষক, যজ্ঞকালে অবিচ্ছেদে জাগরণশীল, শুভ বলসম্পন্ন বা কুশল, ঘৃতকে জ্বালারূপ মুখে ধারণকারী এবং পাবক অগ্নি নবতর যজ্ঞের নিমিত্ত প্রবুদ্ধ হয়েছে। ঐ ঋত্বিকগণের কল্যাণের নিমিত্ত নিজের বৃহৎ ও দুলোককে স্পর্শকারী জ্বালাসমূহের সাথে প্রকাশিত (দীপ্যমান) হচ্ছে।
২৮৷ হে অগ্নি! পলায়ন পূর্বক গহন জলে প্রবিষ্ট তোমাকে অঙ্গিরা ঋষিগণ প্রাপ্ত হয়েছিল। পুনরায় পলায়ন করে কাষ্ঠে কাষ্ঠেও প্রবিষ্ট তোমাকে সেই অঙ্গিরসগণ প্রাপ্ত হয়েছিল। বলের মথনেও সেই তুমি উৎপন্ন হয়ে থাকো। হে অঙ্গির অগ্নি! তোমাকে সেইজন্য অঙ্গিরস ঋষিজন বলের পুত্র বলে থাকেন। (অরণি কাষ্ঠে বলের সাথে মথ্যমান হয়ে অগ্নির উৎপত্তি হয়)৷
২৯৷ হে মিত্র ঋত্বিকগণ! মনুষ্যগণের অত্যন্ত বৃদ্ধ (পুরাতন) অর্থাৎ পূজ্য, জলের পৌত্র এবং বলের সাথে যুক্ত অগ্নির নিমিত্ত হবিঃ এবং পঞ্চদশ প্রভৃতি স্তোমসমূহকে সম্পন্ন করো।
৩০। হে অগ্নি! হে সেচনসমর্থ! স্বামী তুমি সকল ফলকে যজমানে সঙ্গত করে থাকো। তুমি উত্তর বিদিতে প্রজ্বলিত হয়ে থাকে, সেই তুমি, হে অগ্নি! আমাদের বিবিধ ধন আহৃত (আহরণ) করে দাও
৩১। হে অত্যন্ত স্পৃহনীয় কীর্তি অগ্নি! হে বহুপ্রিয়! জ্বালাকেশশালী তুমি হেন অগ্নিকে প্রজাগণের মধ্যে অনেক ঋত্বিক ও যজমান দেবগণের নিকট হবিঃ উপস্থাপিত করার নিমিত্ত আহ্বান করছেন৷
৩২। হে ঋত্বিক ও যজমানবৃন্দ! তোমাদের এই হবির দ্বারা আমি ব্রহ্মা (ঋত্বিক) জলের পৌত্র প্রিয়, অত্যন্ত চেতনা দানশীল, বিশ্রামরহিত সুষ্ঠু অধ্বর (যজ্ঞ) বান, বিশ্ব (অর্থাৎ সকল) যজমান ইত্যাদির দূত ও অমৃত স্বরূপ অগ্নিকে আহ্বান করছি।
৩৩। সকল যজমান ইত্যাদির দূত, অমৃতস্বরূপ, সকলের দূত ও মরণরহিত সেই অগ্নিকে আহ্বান করছি। তিনি বিশ্বকে (সকলকে) ভোজন দানে সমর্থ আপন রক্তাভ দুই অশ্বকে আপন রথে সংযোজিত করেন। সেই রথে সেই সম্যক্ আহুতি প্রাপ্ত অগ্নি যজ্ঞস্থানের প্রতি শীঘ্র গমন করেন।
৩৪৷ সম্যক্ আহুত সেই অগ্নি যজ্ঞস্থানে ধাবিত হন-সু-আহুত সেই অগ্নি যজ্ঞস্থানে ধাবিত হন–যেখানে জ্ঞানবান্ ব্রহ্মা ঋত্বি হোতা আছে; যেখানে যজ্ঞই থাকে; যেখানে বিবিধ যজ্ঞকর্ম পূর্ণ করা হতে থাকে এবং যেখানে ধনী যজমানগণের দেবধন হবিঃ বিদ্যমান থাকে।
৩৫। হে অগ্নি! গাভীর দ্বারা যুক্ত ধনের স্বামী (পালক), বলের পুত্র এবং উৎপন্ন-জ্ঞান তুমি; তুমি আমাদের মহৎ অন্ন ধারিত (বা প্রদান) করো ৷
৩৬। হে বহুজ্বালামুখ অগ্নি!ইন্ধন প্রাপ্ত, ধনস্বরূপ কিংবা বাসহেতু, ক্রান্তদ্রষ্টা এবং স্তুতিবাক্যে প্রশংসনীয় তুমি আমাদের নিমিত্ত ধনযুক্ত হয়ে প্রজ্বলিত হও; (আমাদের আহুতি সমুদায় গ্রহণ পূর্বক আমাদের ধন প্রদান করো।
৩৭। হে শোভমান! হে তীক্ষ্ণ দংষ্ট্রা-সম্পন্ন অগ্নি! স্বয়ংই রাক্ষসগণের বিনাশক তুমি, দিবা ও রাত্রির রাক্ষসগণকে প্রতিদগ্ধ করে ফেলো।
৩৮। হে সুষ্ঠু ঐশ্বর্যবন্ অগ্নি! আহ্বায়মান চিত্যগ্নি কল্যাণকারী হোক এবং তার দান আমাদের নিমিত্ত কল্যাণকারী হোক। সেই অগ্নির নিমিত্ত ক্রিয়মাণ যজ্ঞও কল্যাণকারী হোক। আমাদের অগ্নি সম্মন্ধী সম্পাদিত স্তুতি-প্রশক্তিগুলি কল্যাণকারিণী হোক৷
৩৯। হে অগ্নি! আমাদের দ্বারা কৃত তোমার স্তুতিসমূহ কল্যাণকারিণী হোক। তুমি নিজের সেই মনে আমাদের পাপরূপ বৃত্রকে হিংসনে কুশল হও– যে মনে তুমি যুদ্ধে শত্রুগণকে বিনাশ করে থাকো।
৪০। হে অগ্নি! আপন যে মনে তুমি যুদ্ধে শত্রুগণকে অভিভূত করে থাকো–সেই আপন শত্রুদের অভিভূত করণশালী মনের দ্বারা আমাদের প্রতি অত্যাধিক বল প্রদানকারী শত্রুগণকে আক্রমণ পূর্বক তাদের ধনুষগুলিকে শিথিল করো (অর্থাৎ ধনুকগুলিকে জ্যা রহিত করো)। হে অগ্নি! আমরা উচিত পন্থায় তোমার ধন প্রাপ্ত হবো।
৪১। আমি সেই-ই অগ্নিকে মানি, যে ঘনস্বরূপ; যাকে হোমের উদ্দেশ্য করে দোহনার্থে গাভীগণ গৃহে গমন করে, শীঘ্রগামী অশ্ব ঘর প্রাপ্ত, হয় এবং সতত গমনশীল অশ্বও যজমানের গৃহে গমন করে। হে অগ্নি! স্তুতিকারীগণের নিমিত্ত তুমি অন্ন বা বর্ষা আহৃত করো।
৪২। যে অগ্নি ধনস্বরূপ; যাকে উদ্দেশ্য করে গাভীগণ ঘরে গমন করে; তীব্রগতি অশ্বগণ ঘরে আগমন করে; যাকে উদ্দেশ্য করে উৎকৃষ্ট কুলজাত ঋত্বিকগণও যজমানের গৃহ সপ্রাপ্ত হয়–সেই অগ্নি আমাদের দ্বারা স্থূয়মান হয়ে থাকে। হে অগ্নি! স্তুতিকারী যজমানগণের নিমিত্ত ধন আনয়ন করো।
৪৩। হে সুষ্ঠু আহ্বায়ক অগ্নি! আপন মুখে ঘৃতের আহুতি প্রাপ্তির নিমিত্ত তুমি আপন দুই জুহুরূপ জ্বালাকে আশ্রয়ণ করে থাকো; (যেমন বালক তার মাতার স্তন্যকে আপন মুখে গ্রহণ করার নিমিত্ত নিজের দুটি হস্তকে আশ্রয়ণ করে)। হে বলের স্বামি অগ্নি! যজ্ঞে প্রসন্ন হয়ে তুমি আমাদের ধনধান্যে ভরপূর করে দাও। হে অগ্নি! স্তোতাগণের নিমিত্ত বর্ষা (বা ধন) আনয়ন করো।
৪৪। হে অগ্নি! তোমার ফল-প্রদায়ক স্তুতিসমূহের দ্বারা আজ আমরা আপন ধনধান্যের আরও সমৃদ্ধি করছি; যেমন অশ্বমেধ যজ্ঞের অশ্বকে স্তোমের দ্বারা আরও অধিক মেধ্য করে তোলা হয় এবং হৃদয়ে স্থিত শুভ সঙ্কল্পকে বিবিধ কল্পনাসমূহে সমৃদ্ধ করা হয়।
৪৫। হে অগ্নি! এক্ষণে প্রসন্ন হয়ে আমাদের কল্যাণকারী, ফলাচ্য (যজ্ঞফল-সম্পন্ন), স্বর্গ ইত্যাদি সাধক, অবিতথফল (সত্যফল-সম্পন্ন) এবং মহৎযজ্ঞের নির্বাহক। হও; যেমন সারথি রথকে অভীষ্ট দেশে প্রাপ্তকরণশীল হয় (নিয়ে যায়)।
৪৬। হে অগ্নি! আমাদের দ্বারা পঠিত এই স্তোমসমূহের দ্বারা অত্যন্ত প্রসন্ন মনশালী হয়ে তুমি আপন সম্পূর্ণ জ্বালামুখগুলির সাথে আমাদের অভিমুখ (অর্থাৎ অনুকূল) হও; যেমন উদিত সূর্য আপন জ্যোতিতে সকলের সম্মুখবর্তী হয়ে থাকে৷
৪৭। আমি সেই দেবগণকে আহ্বানকারী, দাতা, বাসের হেতু, বলের পুত্র এবং উৎপন্ন-জ্ঞান ব্রাহ্মণের সমান জাতপ্রজ্ঞ অগ্নিকেই অগ্নি বলে মানি, যে সুন্দর যজ্ঞশালী ও দ্যোতমান অগ্নি ঊর্ধ্বমুখ অথচ দেবগণকে প্রাপ্ত হওয়ার যোগ্য জ্বালার দ্বারা হৃয়মান ঘৃতের বিগব্যাপিনী ধারাকে লাভ করতে ইচ্ছা করে ৷৷
৪৮। হে অগ্নি! তুমি সদা আমাদের নিকটবর্তী হও; রক্ষক, কল্যাণকৃত এবং গৃহস্বরূপ হও। ধন প্রদান করার কারণে কীর্তিযুক্ত অগ্নি নিবাসের হেতু। হে অগ্নি! আমাদের অভিমুখ হও। তুমি আমাদের অত্যন্ত দীপ্যমান ধন প্রদান করো। হে অত্যন্ত শোধক বা প্রদীপ্ত অগ্নি! মিত্রগণকে ধন ইত্যাদি প্রাপ্ত হওয়ার নিমিত্ত আমরা দেদীপ্যমান তোমাকে সংস্তুত করছি৷৷
৪৯। মন ও ইন্দ্রিয়সমূহের একাগ্রস্বরূপ যে পরম তপের দ্বারা অগ্নিকে প্রজ্বলিত করে তথা যজনের ফলভূত স্বর্গলাভের দ্বারা স্বর্গকে প্রাপ্ত করে মুনিগণ যজ্ঞকে পূর্ণ করেছিলেন–সেই তপকে প্রাপ্ত হওয়ার পর (অর্থাৎ মন ও ইন্দ্রিয়গুলিকে একাগ্র করে) আমি (যজমান) স্বর্গলোক-নিমিত্তক অগ্নির আধান করছি–যে অগ্নিকে বিচারশালগণ তীর্ণবহিষ। (যজনীয়) বলেছেন।
৫০। হে সুপ্রজ্ঞ ঋত্বিকগণ! পুণ্যের দ্বারা প্রাপ্তব্য স্থান (পৃথিবী) এবং এই প্রকাশমান দুলোকেরও তৃতীয় স্থলের অর্থাৎ অন্তরিক্ষের উপরে স্থিত স্বৰ্গকে স্বীকার করে আমরা আপন ভ্রাতা, পুত্র, ধন ও পত্নীগণের সাথে সেই অগ্নিরই পরিচর্যা করি।
৫১। তিন লোকের ভরণকারী, শ্রেষ্ঠসমূহের পালক, তথা আপন উপাসককে জ্ঞাতশীল এই অগ্নি চয়ন-স্থানের উপরে আরূঢ় হয়েছে। বেদীর মধ্যভাগে নিহত এই অগ্নি প্রদ্যোতিত হচ্ছে। এই অগ্নি আমাদের সেই শত্রুগণকে পদদলিত করে দিক, যারা আমাদের প্রতি সেনা আক্রমণের কামনা করে থাকে৷
৫২। বীরতম, অন্নদাতা ও সহস্রদা এই অগ্নি প্রমাদ না করে দীপ্যমান হোক। তিন লোকের মধ্যে প্রকাশিত হয়ে, হে অগ্নি! দিব্যস্থানে গমন করো।
৫৩। হে যজমান ও ঋত্বিকবৃন্দ! তোমরা এই অগ্নিকে অনুপ্রাপ্ত হও এবং এর অনুকূল হয়ে চলো। হে অগ্নি! তুমি দেবগণকে প্রাপ্তিযোগ্য পথ নির্মিত করো। হে অগ্নি! ক্ষীণ হয়ে যাওয়া বাণী ও মনরূপ মাতা-পিতাকে। পুনরায় যুবায় পরিণত করে ঋষিগণ তোমার মধ্যে এই যজ্ঞসূত্র বিস্তারিত করেছে।
৫৪। হে অগ্নি। তুমি উদ্বুদ্ধ (বা সাবধান) হও এবং যজমানকেও জাগৃত করে রাখো (অর্থাৎ যজমান যেন সদা জাগরুক বা সাবধান থেকে যজন করতে থাকেন)। এই যজমান ইষ্ট (অর্থাৎ যজ্ঞ ইত্যাদির ফল) এবং পূর্ব (অর্থাৎ কূপ-ধর্মশালা ইত্যাদি নির্মাণের ফল) হতে সংগত হোন। হে বিশ্বদেবগণ! এই উত্তম দ্যুলোক রূপ সহস্থানে এই নিষ্কলুষ যজমান চিরকাল অবধি স্থিত থাকুন।
৫৫। হে অগ্নি! নিজের যে সামর্থ্যের দ্বারা সহস্র-দক্ষিণাযুক্ত যজ্ঞকে উত্তীর্ণ করো এবং যে সামর্থ্যে সর্বস্বদক্ষিণা-সম্পন্ন যজ্ঞকে পূর্ণ করে থাকো, নিজের স্বর্গে দেবতাগণের মধ্যে আমাদের গমনের নিমিত্ত সেই সামর্থ্যে আমাদেরও এই যজ্ঞকে বহন করে নিয়ে যাও
৫৬। হে অগ্নি! এই তোমার ঋতুপ্রাপ্ত জন্মভূমি, যে স্থানে উৎপন্ন হয়ে তুমি প্রকাশিত (দীপ্ত) হয়ে থাকে। আপন সেই জন্মভূমিকে জ্ঞাত হয়ে তুমি সেই বেদিতে স্থিতি গ্রহণ করো; আমাদের গো-অশ্বময়ী সম্পত্তিতে বর্ধন করো।
৫৭। (দুই পদ্যা ঋতব্যা ইষ্টকাকে ধারণীয়)- মাঘ ও ফাল্গুন হলো শিশির (শীত) ঋতুর দুটি মাস। হে ইষ্টকা! তুমি এই বেদির মধ্যে সংশ্লিষ্টশালিনী।দ্যাব-পৃথিবীকে অনুকূল করো। জল ও ওষধিসমূহকে অনুকূল করো। এই চিতিতে চয়নকৃত সকল ইষ্টকা মিলিতভাবে আমার জ্যেষ্ঠত্বকে সিদ্ধ করুক। সমান মনস্ক যে অগ্নিসমূহ এই দ্যাব-পৃথিবীর মধ্যে বিদ্যমান (অর্থাৎ যে ইষ্টকাগুলি এই চিতিতে বিদ্যমান), তারা এই শিশির ঋতু সম্বন্ধী ইষ্টকাগুলিকে নিজেদের অধিপতিরূপে স্বীকার করুন; যেমন দেবগণ ইন্দ্রকে নিজেদের অধিপতি রূপে স্বীকার করে থাকে। (এই প্রকারে প্রজাগণ আমার যজমানকে নিজেদের অধিপতি স্বীকার করুক এবং আমারই আশ্রয়ণ করুক)। হে ইষ্টকা! আপন সেই শিশির ঋতু রূপ দেবতার দ্বারা অনুজ্ঞাত হয়ে তুমি এই চিতিতে ধ্রুবভাবে স্থির হও–যেমন তুমি অঙ্গিরা ঋষির যজ্ঞে ধ্রুবতার সাথে স্থির হয়ে অবস্থিত ছিলে।
৫৮। (বিশ্বজ্যোতি সংজ্ঞক ইটের উপর যজমানের দ্বারা কৃত বিশ্বজ্যোতি ইষ্টকাকে ধারণীয়)–পরমেষ্ঠী প্রজাপতি, হে ইষ্টকা! তুমি হেন জ্যোতিষ্মতী ইষ্টকাকে দ্যুলোকে উত্তম স্থানে স্থাপিত করুক–সম্পূর্ণ প্রাণ-অপান-ব্যানের নিমিত্ত। তুমি আমাদের সমস্ত জ্যোতি প্রদান করো। হে ইষ্টকা! সূর্য তোমার অধিপতি দেবতা। সেই আপন অধিপতি দেবতার দ্বারা অনুজ্ঞাত হয়ে তুমি এই চিতিতে ধ্রুবভাবে নিহিত হও; যে রকমে তুমি অঙ্গিরা ঋষির চিতিতে ধ্রুবতার সাথে স্থিত হয়েছিলে।
৫৯। (লোকংপৃর্ণা ইটকে পুনরায় ধারণীয়)–হে লোকশৃণা। ইষ্টকা! তুমি চিতিতে যত্র-তত্র অবশিষ্ট ভাগকে পূর্ণ করে দাও। যে কোনও বিদ্যমান ছিদ্র ইত্যাদিকেও পূর্ণ করে দাও। তারপর তুমি এই চিতিতে ধ্রুব হয়ে স্থিত হও। ইন্দ্র, অগ্নি, বৃহস্পতি তোমাকে এই বেদিতে স্থাপিত করেছিল।
৬০। দেবগণের জন্মভূত বার্ষিক সোমযাগে এই যজমানের যজ্ঞের ত্রিসবন সোমরসকে জলে যুক্ত অন্নমিশ্রিত করে থাকে।
৬১। রথের উপর আরোহণ করে যুদ্ধশালীদের মধ্যে অত্যন্ত বীর, অন্নের প্রদাতাগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং সমুদ্রের ন্যায় গম্ভীর হৃদয়শালী ইন্দ্রকেই সকল স্তুতিগুলি অভিবর্ধিত করছে৷৷
৬২। (স্বয়মাতৃগ্না সংজ্ঞক দুটি ইটকে ধরে সেগুলির মধ্যে একটি অন্য বিকর্নী ইট ধারণীয়)– যখন এই অগ্নি আপন আবরণীয় কাষ্ঠখণ্ড হতে (অরণি মথনে) উখিত হয়ে থাকে, তখন সে সাঁই-সাঁই ধ্বনি করে থাকে–যেমন অশ্ব ঘাস প্রাপ্ত হয়ে ভোজনের সময় হ্রেষাধ্বনি করে। তারপর (অর্থাৎ বহ্নিজ্বলন শব্দের পর) বায়ুর অনুকূলে তার (অর্থাৎ অগ্নির) জ্বালা (বা শিখা) অর্থে বর্ধিত হয়। এবং সেই দিকে বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে। হে অগ্নি! তখন তোমার গমন পথ নিশ্চয়ই কৃষ্ণবর্ণ হয়ে যায়।
৬৩। (অন্য স্বয়মাতৃগ্না ইষ্টকাকে ধারণীয়)–জগতের পালক বা দীপ্যমান সূর্যের আশ্রয়ভূত ও প্রধান স্থানে আমি তোমা হেন রশ্মিযুক্তা এবং ভাসমানা ইষ্টকাকে স্থাপিত করছি–যে তুমি দুলোককে আভাসিত করে থাক, পৃথিবীকে আভাসিত করে থাক এবং এই বিস্তৃত অন্তরিক্ষকেও (আভাসিত বা দীপ্ত করে থাক)।
৬৪। হে ইষ্টকা! পরমেষ্ঠী প্রজাপতিই তোমা হেন সাবকাশ ও বিস্তারশীলাকে দ্যুলোকের উত্তম স্থানে স্থাপিত করুক। তুমি দ্যুলোককে আমাদের প্রাপ্ত করাও। দ্যুলোককে দৃঢ় করো। সমস্ত প্রাণ-অপান-ব্যান-উদান, প্রতিষ্ঠা ও সঞ্চরণের নিমিত্ত তুমি দ্যুলোককে হিংসিত করো না। মহতী কল্যাণ-পরম্পরার ছায়া ও শান্তির সাথে সাথে সূর্য তোমাকে রক্ষা করুক। হে ইষ্টকা! সেই সূর্যরূপী অধিদেবতার দ্বারা অনুশাসিত হয়ে তুমি আমাদের এই চিতিতে ধ্রুবভাবে স্থিত হও; যেমন তুমি অঙ্গিরা ঋষির যজ্ঞে ধ্রুবতার সাথে স্থির হয়ে ছিলে।
৬৫৷ (নিষ্পন্ন হওয়া বেদির উপর জলসিঞ্চন)-হে বেদিকা! তুমি সহস্র ইষ্টকের প্রমাণ; তুমি সহস্র ইষ্টকের প্রতিনিধিভূতা (প্রতিমা) এবং তুমি সহস্র ইষ্টকের সদৃশা। তুমি সহস্র মূল্যের (অর্থাৎ সহস্র ইষ্টকের যোগ্যা)। তুমি সহস্র (অর্থাৎ অনন্ত) ফল প্রাপ্তির নিমিত্তস্বরূপা। আমি তোমাকে প্রেক্ষিত করছি৷