আলম অবাক হয়ে বলল, আরে তুমি! নায়লা হাসতে হাসতে বলল, আমাকে কেমন লাগছে আগে বলুন।
সুন্দর! অসম্ভব সুন্দর!
শাদী শাড়ি পরে আছি, বিধবার মত লাগছে না তো?
তোমাকে শ্বেতপরীর মত লাগছে। এত সুন্দর সাজ করা কোন মেয়ে আমি জীবনে দেখিনি।
আর কোনদিন দেখবেনও না। আমি চলে যাচ্ছি।
কোথায় চলে যাচ্ছ?
আপনার বন্ধুর কাছে। চাকরি-টাকরি গিয়ে ওর একাকার অবস্থা। দেশের বাড়ি চলে গেছে। ওখানে গ্রামের স্কুলে মাস্টারি করবে।
আলম বিস্মিত হয়ে বলল, তুমি সেখানে যাচ্ছ?
হুঁ।
জঙ্গলে পড়ে থাকবে?
নায়লা হাসতে হাসতে বলল, কি আর করা আমি আপনার কাছে বিশেষ কাজে এসেছি।
কাজটা কি?
আপনি আমাকে ঢাকা রেল স্টেশনে পৌঁছে দেবেন এবং একটা ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট কেটে দেবেন। আমার কাছে টাকা নেই।
তুমি একা একা যাবে?
হ্যাঁ, একা একা যাব এবং শেষ রাতে আপনার বন্ধুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে চমকে দেব।
বল কি?
আপনাকে আরেকটা কাজ করতে হবে। আমার মার বাসায় গিয়ে আমি যে নেত্রকোনা যাচ্ছি এই খবরটা দিতে হবে। মা কিছু জানেন না।
অবশ্যই উনাকে আমি খবর দেব।
আর নুরুকে বলবেন সে যেন বাবুকে এবং আমাদের জিনিসপত্র নেত্রকোনায় পৌঁছে দেয়।
আচ্ছা। আর কি আদেশ?
আদেশ হচ্ছে, দেরি না করে অরুনাকে বিয়ে করুন। এরকম মেয়ে পাবেন না।
আদেশ পালিত হবে।
তাহলে চলুন রওনা হওয়া যাক। ট্রেনের বেশি দেরি নেই।
ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। প্রথম শ্রেণীর একটা কামরায় নায়লা একা। সে জানালা দিয়ে মুখ বের করে আছে।
আলম বলল, একা একা যেক্তে ভয় লাগছে না তো?
নায়লা বলল, একা কোথায়? ট্রেন ভরতি যাত্রি।
নায়লা হাসল। আলম চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে সঙ্গে আসছে। এক সময় সে থমকে পঁড়িয়ে গিয়ে বলল, নায়ল! ভাবী, তুমি ভাল থেকো।
অনেক দিন পর আলম তাকে ভাবী ডাক। নায়লা হাত নাড়ছে। তার শাদা শাড়ি উড়ছে পত পত করে।
নায়লার মনে হচ্ছে, সমস্ত দুঃসময়, সমস্তু গ্লানি ও হতাশা পেছনে ফেলে এই ট্রেন তাকে নতুন কোথাও নিয়ে যাচ্ছে–ট্রেন যেন এগুচ্ছে মায়াময় কোন ছায়াবীথির দিকে।
Osomvob sundor golpo.